শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

কমে যাচ্ছে খেলার মাঠ

টাঙ্গাইল পৌরসভার বিভিন্ন মাঠে খেলাধুলার জন্য নেই পর্যাপ্ত জায়গা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১৪:২২
শামীম আল মামুন, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত
শামীম আল মামুন, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১৪:২১

৩৬ বছরের পুরোনো ২৯ দশমিক ৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে খেলার মাঠ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সচেতন পৌর বাসিন্দাদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চা করার মাঠগুলোতে গড়ে উঠেছে বড় বড় অট্টালিকা। কোনো কোনো মাঠে বসানো হয়েছে কাঁচাবাজার। আবার অনেক মাঠের জায়গার মালিকরা প্লট আকারে বিক্রি করে দিয়েছেন তাদের ব্যক্তিগত জায়গা।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে হারিয়ে গেছে ১৬টি খেলার মাঠ। আরও কয়েকটি খেলার মাঠ হারাতে বসেছে। কারণ, বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে কয়টি খেলার মাঠ এখনো রয়েছে সেগুলোও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, বছরজুড়ে মাঠগুলো বাণিজ্য মেলাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকে। তাদের অভিযোগ, উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ না পাওয়ায় ধীরে ধীরে আসক্ত হচ্ছে মোবাইল ফোনে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) গবেষণায় জানা গেছে, শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রতিদিন ন্যূনতম এক ঘণ্টা করে খেলাধুলা ও শারীরিক সক্রিয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকা প্রয়োজন।

টেকসই নগরায়ন সংক্রান্ত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএন-হ্যাবিটেটের তথ্য অনুযায়ী, হাঁটার দূরত্বে খেলার মাঠ থাকা উচিত। অতিঘন নগর এলাকায় প্রতি অর্ধবর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা বিবেচনায় ন্যূনতম একটি করে খেলার মাঠ থাকা প্রয়োজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে খেলার মাঠের জায়গায় বসতভিটা গড়ে উঠেছে। এই ওয়ার্ডের থানাপাড়া এলাকার রেঞ্জার মাঠ, সবুজ সেনা মাঠ, থানাপাড়া ইস্টার্ন ক্লাব মাঠের (বাবুর্চির মাঠ) জায়গায় এরই মধ্যে বসতি গড়ে উঠেছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই ওয়ার্ডে ৩টি খেলাধুলার ক্লাব থাকলেও তাদের কোনো খেলার মাঠ নেই।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরবাড়ির মাঠটি মালিকানা দ্বন্দ্বে এলাকার শিশু-কিশোরদের ওই মাঠে খেলাধুলা প্রায় বন্ধ। স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে বর্তমানে শিশু-কিশোররা ওই মাঠে খেলাধুলার সুযোগ পেলেও ভবিষ্যতে ওই মাঠের জায়গা প্লট আকারে বিক্রির আলোচনা চলছে।

তিনি জানান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জা মাঠ ও হাউজিং মাঠে নিকট অতীতে ওই এলাকার শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করত। এ ছাড়া সকাল ও বিকেলে স্বাস্থ্য সচেতন লোকজন শরীরচর্চা করত এই মাঠ দুটিতে। বর্তমানে মাঠগুলোতে বসতি গড়ে উঠেছে।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ পাড়ার বালুর মাঠে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল ইমারত। একই এলাকার পানির ট্যাংকের মাঠে এখন আর শিশু-কিশোরদের প্রবেশাধিকার নেই।

একই চিত্র ১১ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড় মাঠে। গড়ে উঠেছে বসতি; খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট কারীবাড়ী খেলার মাঠ ও কেওছার মাঠের এখন আর অস্তিত্ব নেই। এ ছাড়া নজরুল সেনা মাঠের জায়গায় গড়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান।

এই ওয়ার্ডের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে একসময় টাঙ্গাইল শহরের এলাকার শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি খেলাধুলা ও শরীরচর্চায় ব্যস্ত থাকত। বর্তমানে এই মাঠের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে বসেছে ট্রাকস্ট্যান্ড। ফলে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই মাঠটি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য এখন আর ব্যবহার করতে পারছে না।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিমুলতলী এলাকার বালুর মাঠে এখন গড়ে উঠেছে বসতি ও বিভিন্ন ধরনের ফল ও গাছের বাগান। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোদালিয়া মাঠটি এখন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাডেমিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা।

শহরের নামকরা একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয় শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে। সে জানায়, বিকেল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে পৌর উদ্যানে আড্ডা দিই। একসময় আমার ওয়ার্ডে তিনটি খেলার মাঠ থাকলেও বর্তমানে কোনো খেলার মাঠ নেই। খেলাধুলার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকটা বাধ্য হয়েই পৌর উদ্যানে এসে আড্ডা দিই।

সরকারি সৈয়দ মহাব্বত আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘পৌর শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ না থাকার ফলে শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে আসক্ত হচ্ছে মোবাইল ফোনে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইল আসক্তি থেকে রক্ষা করার জন্য পৌর এলাকায় শিশু পার্ক ও খেলার মাঠের কোনো বিকল্প নেই। পৌর শহরে যে কয়টি খেলার মাঠ এখনো অবশিষ্ট আছে, সেগুলো রক্ষা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন মাঠগুলোর ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের করণীয় কিছু নেই, তবে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ, জেলা পরিষদ মাঠ ও শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য কিছু জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই মাঠগুলো পরিষ্কার করে আবার খেলাধুলার উপযোগী করা হবে। এ ছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাউজিং স্টেটে শিশু-কিশোরদের জন্য একটি খেলার মাঠ তৈরি করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।’

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঈদগাহ মাঠকে যত দ্রুত সম্ভব খেলাধুলার উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। এ বিষয়ে পৌর মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য টাঙ্গাইল পৌর শহরের অদূরে দাইন্যা ইউনিয়নের বাসাখানপুরে নির্মিত হচ্ছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলাধুলাকে গুরুত্ব দেন বলেই দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’

বিষয়:

কক্সবাজার রামুতে ট্রেনে কাটা পড়ে দুই যুবক নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার রামুতে ট্রেনে কাটা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৩ টার দিকে কক্সবাজার-ঢাকা রেলরুটের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রামু থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন- রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়ার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ওয়াহিদ (২৫) ও আব্দুল মজিদের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (১৯)।

স্থানীয়দের বরাতে ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে রামু উপজেলার মাছুয়াখালী এলাকায় স্থানীয় দুই যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছিল। এসময় কক্সবাজারমুখি একটি ট্রেনের সামনে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক। এতে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং দুই যুবক কাটা পড়ে নিহত হয়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ঘটনাটি রেলওয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়।

রেলওয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর মৃতদেহ দুইটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।


ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি

বাংলাদেশি ২০ জেলে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি 

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় নৌকাসহ ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ২০ জেলে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে এসব জেলেদের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে টেকনাফে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়ার কাছাকাছি এলাকা থেকে এসব জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের আলী আহমদের ছেলে শাহ আলম (২৮), শফি উল্লাহর ছেলে আসমত উল্লাহ (১৮), নুরুল আলমের ছেলে আবদুস শুক্কুর (৩২), মৃত নজু মিয়ার ছেলে আবুল হোছন (৪৫), মৃত নাজির হোছনের ছেলে আয়ুব খান (৪৮), মৃত মোঃ ইউসুফের ছেলে নুর হোছন (৪৫), মৃত বশির আহমদের ছেলে মোঃ বেলাল (২৯), মৃত নুর আমিনের ছেলে সলিম (৩৫), মৃত জাকারিয়ার ছেলে আবদুল কাদের (২৫), মৃত সোলতান আহমদের ছেলে মোঃ হাশিম (৩৫), মোঃ আলমের ছেলে মোঃ হোছেন (২৮), ইলিয়াছের ছেলে মহি উদ্দিন (২৬), মোঃ ইউনুছের ছেলে এনায়েত উল্লাহ (৩০), মৃত মোঃ ইউনুছের ছেলে নুর হাফেজ (৪০), মৃত মছন আলীর ছেলে মোঃ ইয়াছিন (৩৫), আমির সাদুর ছেলে আবদু রহিম (৪৪), মৃত বাচা মিয়ার ছেলে হাছান আলী (৫৩), আবদু শুক্কুরের ছেলে ওসমান গণি (৩০), মহেষখালী উপজেলার নাছির উদ্দিনের ছেলে ইন্নামিন (২৭) এবং উখিয়া উপজেলার হাছন শরীফের ছেলে আবদু শুক্কুর (৪৬)।

বিজিবি টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ ট্রলারঘাট এলাকা থেকে ২০ জন বাংলাদেশি জেলে ১৫টি হস্তচালিত এবং ২টি ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে গমন করে। জেলেরা মাছ ধরতে ধরতে একসময় ভূলবশতঃ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শুন্য লাইন অতিক্রম করে মিয়ানমারের জলসীমার নাইক্ষ্যংদিয়া নামক স্থানে ঢুকে পড়ে। এসময় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে নৌকাসহ ২০ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আরাকান আর্মির সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগের মাধ্যমে ২০ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনা হলো।

তিনি জানান, ২০ বাংলাদেশি নাগরিককে নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ সাপেক্ষে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।


চসিকের মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন শাহাদাত হোসেন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন।

আজ রোববার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকেও অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় আসেন। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফিরে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন চসিকের নতুন মেয়র।

নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে গিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, ‘নতুন মেয়রকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানাই। স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- তিনি একটি বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের একটি প্রধান নগরীর মেয়র হয়েছেন। তার দায়িত্ব এ বিপ্লবের প্রত্যাশাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পেছনের সব ধ্যান-ধারণা, চিন্তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের যে অর্জনের জন্য তাদের আত্মত্যাগ রয়েছে, সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য বৈষম্যহীন শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে দেখতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের।’

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম ৩ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

পরে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন শাহাদাত। তার অভিযোগ, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনের ফলাফলে ইসি কর্মকর্তারা কারচুপি করেছিলেন।

মামলার এজাহারে শাহাদাত অভিযোগ করেন, তিনটি ভোটকেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হলেও তিনদিন পর ২৮টি কেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হয়- যা অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়।

মামলায় ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফল কারচুপির অভিযোগে তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেন।

রায় ঘোষণার সাতদিন পর ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঘোষণা সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তবে মেয়র হিসেবে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবেন না শাহাদাত হোসেন। তিনি সর্বোচ্চ ১৪ মাস দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।


আজ রাত থেকে ফের জাল ফেলবেন জেলেরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:২৯
বাসস

জাটকা সংরক্ষণ ও মা-ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে আজ ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। তাই আজ রোববার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষে নদী-সাগরে ট্রলার, নৌকা ভাসিয়ে আবারও মাছধরা শুরু করবেন জেলেরা। এ জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, জেলেদের মধ্যে কেউ ট্রলার মেরামত করছেন, কেউ ট্রলারে রং করছেন, কেউ ট্রলার ধোয়ামোছা করছেন, আবার কেউবা ট্রলারে জালসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছেন। সমুদ্র যাত্রার প্রস্তুতিতে উপকূলের জেলেরা এ ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলেসহ মৎস্যসংশ্লিষ্টরা এখন মাছ ধরার স্বপ্নে বিভোর। তাদের আশা, এবার তাদের জালে ধরা পড়বে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বরগুনার জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনেছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাবেন তারা। জেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হক জানান, জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনেছেন। সরকারের বরাদ্দ অনুযায়ী প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল সহায়তা দেয়া হয়েছে। জেলেদের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ সময় সামুদ্রিক মাছ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ছিল। ২২ দিনের অবরোধ সফল করতে তৎপর ছিল মৎস্য বিভাগ সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও। যারা এই সময়ের মধ্যে মাছ ধরতে গিয়েছে তাদের অনেক জেলেকে সাগর ও নদীতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও কারাদণ্ড দিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

রাঙ্গবালী উপজেলার মৌডুবী এলাকার জেলে সোহেল মিয়া বলেন, অবরোধ মেনে আমরা এই ২২ দিন কর্মহীন সময় পার করেছি। এ নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের মাত্র ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। পরিবারের ৫ জন্য সদস্যের এই চালে কিছুই হয়নি। তাই এই ২২ দিনে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার মতো দেনায় পড়েছি। সাগরে মাছ পেলে আশা করছি পেছনের ধার দেনা কাটিয়ে উঠতে পারব। মহিপুরের জেলে ইয়াসিন হোসেন বলেন, আমি ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত জেলের পেশায় আছি। কিন্তু সরকারি প্রণোদনার তালিকায় আমার নাম নেই। যারা অন্য পেশায় জড়িত দেখেছি তারা সরকারি চাল পেয়েছে। আগামীকাল (রোববার) রাতে আমরা গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করব। তাই ট্রলারে জাল ও বরফসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছি। গতকাল আমাদের ট্রলারের রং করার কাজ শেষ হয়েছে।

এদিকে কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, কলাপাড়ার নিবন্ধিত ১৮ হাজার ৩০৭ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে সরকারি প্রণোদনার চাল দেওয়া হয়েছে। অবরোধ শতভাগ সফল করতে সাগর ও নদীতে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌ-বাহিনী ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছেন। আমরা আশা করছি, জেলেরা প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাবেন। তাদের ধারদেনাসহ পেছনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।


নওগাঁয় ভটভটি উল্টে প্রাণ গেল গরু ব্যবসায়ীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় গরু বোঝাই একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি উল্টে গিয়ে ভটভটির নিচে চাপা পড়ে রেজাউল ইসলাম (৪২) নামে এক গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে আত্রাই উপজেলার বজ্রপুর তাতীপুকুর ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রেজাউল ইসলাম বজ্রপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে।

দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন জানান, নিহত রেজাউল ইসলাম গরু কেনা-বেচার ব্যবসা করতেন। শনিবার সকালে গরু বিক্রি করার উদ্দেশ্যে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি করে পাশ্ববর্তী হাটে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হলে বজ্রপুর তাতীপুকুর এলাকায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে যায়। এতে রেজাউল ইসলাম ভটভটির নিচে চাপা পড়ে বুকে ও পিঠে মারাত্মক আঘাত পায়।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে তাঁর মৃত্যু হয় বলেও জানান তিনি।

আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে ঘটনার বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।'


ভোলায় আরও ১৯টি গ্যাস কুপ খননের পরিকল্পনা আছে: জ্বালানি উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ভোলায় ২০২৮ সালের মধ্যে আরো ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, গ্যাস সংকট দূর করতে ভোলাতে পরিকল্পনা করে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫টি গ্যাস কূপ খনন করা হবে। আর ২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১৪টিসহ মোট ১৯টি গ্যাস কূপ খনন করার পরিকল্পনা আছে।

আজ শুক্রবার ভোলার ইলিশা-১ গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি গ্যাসের সংকট রয়েছে। ফলে গ্যাস আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। আমাদের এখন ৪ হাজার এমসি গ্যাস দরকার, সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ২ হাজার। আমরা বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে গ্যাস আমদানি করছি, এতে আমাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। ঘাটতি মেটানোর জন্য বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হয়। আমরা জোড়ালোভাবে চেষ্টা করছি নতুন-নতুন গ্যাস ফিল্ড তৈরি করে গ্যাসের উৎপাদনমুখী হওয়ার।

ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না এবং টেন্ডারের মাধ্যমে যার কাছে ভালো প্রস্তাব পাওয়া যাবে তাকে কাজ দেয়া হবে। এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নেয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা সব বড়-বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছি। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনটাকে গুরুত্ব দেইনি, তাই দুর্নীতি বেশি হয়েছে এই ধরনের বড় প্রকল্পে। আমরা জনগণের চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে চাই।

এ মুহূর্তে বাসা-বাড়িতে গ্যাস দেয়া হবে, আমাদের জন্য এটি মিথ্যা আশ্বাস। আমি যেহেতু রাজনীতি করবো না, তাই এই ধরনের মিথ্যা আশ্বাস দেবো না। বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের প্রসঙ্গ টেনে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, তবে ভবিষ্যতে সারা দেশে গ্যাস সরবরাহ বাড়লে তখন এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।

এ সময় ভোলার বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান ও গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন তিনি। ভোলায় একদিনের সরকারী সফরে তিনি এখানকার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র, ভোলা নর্থ-১, নর্থ-২ ও ইলিশা-১ নং গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। বিকেলে তিনি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার গ্যাসচালিত ২২৫ ও ২২০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও পরিদর্শন করেন।

এসময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম মঈন আহমেদ, পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান, ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


ইউপিডিএফের ৩ কর্মীকে গুলি করে হত্যা

আগামীকাল খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
আপডেটেড ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১৯:৫৭
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের গুলিতে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের তিন কর্মী নিহত হয়েছেন।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের শুকনাছড়ির শান্তিরঞ্জন পাড়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পানছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- সিজন চাকমা, শাসন ত্রিপুরা ও জয়েন চাকমা। তারা ইউপিডিএফ-এর সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।

স্থানীয়রা জানান, ওই তিন জন শান্তিরঞ্জন পাড়ায় একটি বাড়িতে বসে থাকার সময় মুখোশ পরে কয়েকজন এসে তাদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

অংগ্য মারমা জানান, নিহতরা ওই এলাকার স্থানীয়ভাবে সাংগঠনিক কাজ করতেন। ১৩/১৪ জনের একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। এই ঘটনার জন্য তিনি নব্য ‘মুখোশ বাহিনী’কে দায়ী করেছেন।

পানছড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিমউদ্দীন দুপুরে বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলটি দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। সেখানে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনীদের গ্রেপ্তার-শাস্তির দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ। গতকাল দুপুরে এক বিবৃতিতে অবরোধের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর আগে গত বছর এই সন্ত্রাসীরা পানছড়ির পুজগাঙে বিপুল চাকমাসহ চার জনকে হত্যা করলেও তাদের বিরুদ্ধে সরকার-প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’


দেশের ৮ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের ৮ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো- জয়পুরহাট, রাজশাহী, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, শরীয়তপুর ও নাটোর।

আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পদমর্যাদার এসব কর্মকর্তাকে ডিসি নিয়োগ দিয়ে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর মধ্যে পরিকল্পনা বিভাগের উপপ্রধান আফরোজা আকতার চৌধুরীকে জয়পুরহাট, চট্টগ্রাম ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার আফিয়া আখতারকে রাজশাহী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞাকে রাজবাড়ী, সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জের ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. তৌফিকুর রহমানকে কুষ্টিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. রফিকুল ইসলামকে দিনাজপুর, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনকে শরীয়তপুর এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব আসমা শাহীনকে নাটোরের ডিসি করা হয়েছে।


কোটিপতি বনে যাওয়ার পেছনের গল্প ‘ক্রসফায়ার বাণিজ্য’

অভিযোগ থাকার পরও বহাল তবিয়তে অপরাধের গডফাদার আমিন # মাদকের তকমা দিয়ে ক্রসফায়ারের হুকুম
মো. আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:০১
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

একসময়ে বাজারের ছোট্ট একটি মাইকের দোকান নিয়ে মাইকিং করতেন আমিনুল হক। এক চালা ঘরে পরিবারের লোকজন নিয়ে থাকতেন ঠাসাঠাসি করে। মাইকের দোকান নিয়ে চলছিল না তার পরিবার। তাই যুক্ত হন পুলিশের সোর্স হিসেবে। এভাবেই চেনা হয় চোরাচালানের অলিগলি এবং গডফাদারদের। কাজ শুরু করেন ওসি প্রদীপের বিশ্বস্ত সোর্স হিসেবে। এর সূত্র ধরে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নে মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করেন। কোটি টাকার চাঁদা আদায়ের দায়িত্ব দেন ওসি প্রদীপ তাকে। তখন আমূল বদলে যান তিনি। টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে হয়েছে তার কোটি টাকার বাড়ি। কোটি কোটি টাকার জায়গা কিনে রেখেছেন। হঠাৎ শূন্য থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া আমিনের পেছনের গল্প প্রদীপ ‘ক্রসফায়ার বাণিজ্য’।

প্রদীপের রাজত্বের ছোঁয়ায় রাতারাতি ধনী বনে যাওয়া এ ব্যক্তির নাম আমিনুল হক প্রকাশ মাইক আমিন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবার, যে মামলায় আসামি রয়েছে প্রদীপসহ কয়েকজন পুলিশ অফিসার। অনেক নিরীহ মানুষকে প্রদীপের ভয় দেখিয়ে যেসব টাক আত্মসাত করেছেন, সেগুলোর জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

টেকনাফ কক্সবাজার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দফাদার আমিনের বিরুদ্ধে প্রদীপের রাজত্বের সুযোগে ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে প্রবাসী এবং মাদক কারবারিদের কাছ থেকে ঘুস গ্রহণ, চাঁদাবাজি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।

স্থানীয়দের দাবি, আমিনুল হক ও প্রদীপ নিজে মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। ক্রসফায়ার দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে সরাসরি জড়িত ছিলেন আমিন। প্রদীপের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে তল্লাশির নামে নিরীহ মানুষের ঘরে লুটপাট, নিরীহ ব্যক্তিদের আটক করে টাকা আদায় করতেন তিনি। ওসি প্রদীপে মাধ্যমে ইয়াবা সিন্ডিকেটকে অর্থের বিনিময়ে নির্বিঘ্নে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ পেয়েটিলেন তিনি। এছাড়া আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ঘরছাড়া করা, টাকা না পেলে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যার করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছিল তার দায়িত্ব। সে টাকায় এখন আলিশান জীবন যাপন করছেন মো. আমিন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ হোয়াইক্যংয়ে দুটি ফ্ল্যাট তিনি থাকেন, যার মূল্য দুই কোটি টাকা। বিভিন্ন জায়গায় দুই কানি তার নামে জমি রয়েছে। ২০১৯ সালে চৌকিদার পদে যোগদান করেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের আমিনুল হক। ২০২০ তিনি প্রদীপের হয়ে মাঠে ময়দানে কাজ শুরু করেন।এরপর থেকে তিনি ফুলেফেঁপে উঠতে থাকেন। এরপর ক্রসফায়ার ব্যবসার টাকায় রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক হতে শুরু করে নিজের ও বউয়ের পরিবার। নুর হাফেজ বলেন, খুব নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেও ৩৮ শতক জমি কিনেছেন। তার কৃষিজমি রয়েছে ৫০ বিঘার মতো। শুধু গ্রামের বাড়িতে নয়, কক্সবাজার শহরেও তার তিনতলা বাড়ি আছে। আর এ সবই করেছেন নানা ধরনের অপরাধ করে।

ভুক্তভোগী মো, ইসমাইল বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ২য় প্রদীপ ছিল মো. আমিন। আমাদের এলাকায় একধরনের রাজত্ব কায়েম করেন তিনি। প্রদীপের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি টাকার আত্মসাত করেন আমিন। আমার ভাইকে মাদকের তকমা দিয়ে ২০ লাখ নিয়েও ক্রসফায়ার দেন আমিন ও প্রদীপ। আলোচিত মেজর সিনহা ঘটনার আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করি।’ আরেক ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, ফাঁসির আসামি সাবেক ওসি প্রদীপ যখন ক্রসফায়ার দেওয়া শুরু করেন, তখন ঘুষ বার্ণিজ্য করতে নেমে যান আমিন। অসহায় অসংখ্য মানুষকে হয়রানির শিকার করেন। আমাকে মামলায় ঢুকাবে বলে ৫ লাখ টাকা নেয় আমিন। স্থানীয় রাশেল জানান, তার মতো অন্যদেরও প্রশ্ন- কী করে এত দ্রুত কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেলেন পুলিসের সোর্স আমিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আমিন বলেন, ‘আমি প্রদীপের হুকুম পালন করতাম। আমি যে টাকা নিতাম সে টাকা প্রদীপকে বুঝিয়ে দিতাম। সেখান থেকে আমি কিছু পেতাম।’ বাকি গুলো মিথ্যা বলে মোবাইল ফোন কেটে দেন। রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একজন সাধারণ ইউনিয়নের দফাদার হয়ে বিলাস বহুল মার্কেটে রয়েছে তার নামে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, আমিন প্রদীপের সহযোগী এবং ক্রসফায়ারে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। এসব অভিযোগ থাকার পর তিনি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। আমার দাবি তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’ এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালা উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’


অভিযান সত্ত্বেও বন্ধ নেই ইলিশ নিধন

১৫ জেলে আটক। ১ লাখ ৭৫ হাজার মিটার জাল ও ৩০ কেজি ইলিশ জব্দ
মা ইলিশ ধরা বন্ধে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে অভিযান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১৭:০১
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রজনন মৌসুমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা চলছেই। মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযান সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না মা ইলিশ নিধন। বিস্তারিত প্রতিবেদকদের পাঠানো প্রতিবেদনে।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার উপজেলার কুঠিবয়ড়া এলাকায় এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অফিসার সুদীপ ভট্টাচার্য।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যমুনা নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধে অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

শিবচর (মাদারীপুর):

মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১৫ জেলেকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পাঁচজনকে পাঁচ হাজার করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ১০ জনকে আট দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা মৎস্য অফিস। এর আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচ জেলেকে আটকসহ ৪০ হাজার মিটার জাল জব্দ করে তারা।

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ রক্ষায় রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পদ্মা নদীতে অভিযান চালায় মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রশাসন ও নৌপুলিশ। দুপুর পর্যন্ত অভিযানে পাঁচ জেলেকে আটক করা হয়। এসময় ৩০ কেজি ইলিশ ও ৪০ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়।

এরপর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযানে ১৫ জন জেলেকে আটক এবং ১ লাখ ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৩০ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।

পরে উদ্ধারকৃত ইলিশ স্থানীয় ২টি এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৫ জেলের ১০ জনকে ৮ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং পাঁচজনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল মালেক আটক জেলেদের এ সাজা দেন। শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম বলেন, ইলিশ রক্ষায় আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। নদীতে অভিযানের পাশাপাশি পদ্মার পাড়ে গড়ে ওঠা অস্থায়ী ইলিশের হাটেও অভিযান চালানো হয়েছে।


ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে প্রেমিক-প্রেমিকার আত্মহত্যা

একসঙ্গে দাফনের আকুতি
আপডেটেড ২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:৫৬
কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রেমিকা দেশে, প্রেমিক বিদেশে। দুজনে ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে আত্মহত্যা করেছেন। গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়ায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।

নিহত গৃহবধূ খাদিজা আক্তার উর্মি (১৬) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে। সে চৌয়ারা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। প্রেমিক ওমানপ্রবাসী সাফায়েত হোসেন একই উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

ঘটনাস্থল থেকে নিহত গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ এবং মরদেহের পাশে থাকা তার লিখে রাখা চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ অক্টোবর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় উর্মির। বিয়ের ১৩ দিনের মাথায় প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে সে। ওই সময় তার ওমানপ্রবাসী প্রেমিক সাফায়েত হোসেনও আত্মহত্যা করেন। তাদের দুজনের কাছ থেকেই চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিঠিতে একসঙ্গে দাফনের আকুতি জানিয়েছেন নববধূ।

উর্মি চিরকুটে লিখেন, ‘চাইছিলাম দুজনে একসঙ্গে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না। এটা সত্যি যে ও আমার প্রথম সঙ্গী। ওরে আমি বিয়ে করছি। কিন্তু ওর জায়গায় আমি অন্য কাউকে দিতে পারি নাই, পারবও না। তোমরা সুখে থেক। আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না।’

উর্মি আরও লিখেন, ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম। ওরে আমার সঙ্গে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা থাকবে। বাবা-মা ও ভাইবোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু একসঙ্গে থাকতে দেও নাই, আমাদের দাফনটা যেন একসঙ্গে হয়। একদিন আগে-পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে। সে চাওয়াটা যেন পূরণ করেন আপনারা।

অন্যদিকে প্রেমিক ওমানপ্রবাসী সাফায়াতের মরদেহের পাশেও একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। পরে সেটির ছবি তুলে সাফায়াতের পরিবারকে পাঠানো হয়।

তিনি মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখেছেন, ‘শেষ ইচ্ছা পূরণ করার দায়িত্ব আপনাদের। আমার মৃত্যুর কারণ একমাত্র ওর ফ্যামিলি। আমার মোবাইলে সব রেকর্ড করা আছে। সবকিছু ভিডিও করা আছে। আমার মৃত্যুর জন্য কে কে দায়ী সবকিছু আমার মোবাইলে রেকর্ডসহ ভিডিও করা আছে। আমার মোবাইল তার প্রমাণ। আমার মোবাইল চেক করলে সব পাবেন। রেকর্ড অপশনে আর গ্যালারিতে সব আছে। আমার ৮টা ভিডিও আছে। সবগুলো দেখবেন। লক খুলে রেকর্ড অপশনে ঢুকবেন, ইমোতে দুটি আর বাকিগুলো গ্যালারিতে পাবেন। তার দেওয়া চিঠি আছে আরিফ নামের আইডিতে। আমাদের মৃত্যুর কারণ তারা। কোনো দিন ক্ষমা করব না।’

উর্মির মা নুরুন্নাহার বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাফায়াত নামে এক প্রবাসী ছেলের সম্পর্ক ছিল। গত ১৪ অক্টোবর সম্মতি নিয়েই মেয়েকে বিয়ে দেই। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি উর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়াত ভিডিওকলে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। প্রবাসী ছেলেটাই আমার মেয়ের মাথা খারাপ করে দিয়েছে।’

সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, ‘এক বছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আমার ছেলের সঙ্গে উর্মি নামে এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে ভিডিওকলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।’

বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেসহ দুটি জীবনের আলো নিভে গেছে। তিনটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য মেয়ের বাল্যবিয়েই দায়ী।’

আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করবেন বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের চিরকুট হাতে পেয়েছি। তা ছাড়া মৃত্যুর আগে আমার ছেলের থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মেয়ের মা।’

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘বিয়ের ১৩তম দিনে নববধূ প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিওকলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি, প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার রাত অনুমান ১১টায় নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশে এটি লিখেছিল। এই ঘটনায় নববধূর ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।


চমেকে ৭৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, রুম দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ৭৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ১৪ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি ৮৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আর ১১ জন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে না জানিয়ে দিয়েছে মুচলেকা।

সোমবার দুপুরে কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, চমেকে বিভিন্ন সময়ে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে এই ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মাঝে ৭ জনকে ২ বছর, ৫৪ জনকে ১ বছর এবং বাকি ১৪ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ১৬ মার্চ ৪ শিক্ষার্থীকে হোস্টেলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে ৭ জনকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে, কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে সংঘাতের সৃষ্টি করেছে। এর আগে এ ধরনের ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একক কর্তৃত্ব ও গোষ্ঠীগত আধিপত্যের জন্য ছাত্র রাজনীতির নাম ব্যবহার করেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবৈধভাবে প্রবেশ, রুম দখল, অঙ্গীকার ভঙ্গ, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, যারা বহিষ্কার হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, যাদের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। তাদের কয়েকজনকে পূর্বে কয়েকবার বহিষ্কার করা হয়েছিল।


চাঁদপুরে তেলবাহী জাহাজে আগুন, আহত ৬

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১৮:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চাঁদপুর শহরে ডাকাতিয়া নদীতে ‘এমভি সাদিয়া অনিক’নামে একটি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে।

আজ রোববার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই নদীর পদ্মা ওয়েল কোম্পানির জেটির অদূরে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মোরশেদ আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই নদীর পদ্মা ওয়েল কোম্পানির জেটির অদূরে ডাকাতিয়া নদীতে ‘এমভি সাদিয়া অনিক’নামে একটি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ারসার্ভিস ও কোস্ট গার্ড এক ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তাৎক্ষণিকভাবে ওই জাহাজে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা।


banner close