সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় হামুন

ছবি: দৈনিক বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:৩৬

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এর অগ্রভাগ বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে পরবর্তী ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপকূল অতিক্রম শুরু করে হামুন। আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায়

সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’

তিনি জানান, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে স্থলভাগে উঠে আসতে থাকায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তবে গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত রাজধানীতে এর প্রভাব তেমন দেখা যায়নি।

ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অফিস জানায়, হামুনের প্রভাবে উপকূলের ১৫টি জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এসব জেলায় সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এ সময় বরগুনা, ভোলা, সন্দ্বীপ, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ ১০টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এসব দুর্গত এলাকার ১৫ লাখ মানুষকে মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে অতি ভারী বৃষ্টিতে ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাস, ৫ জেলায় ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

সেই সঙ্গে সারা দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় গতকালই পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে চার নম্বর নামিয়ে ৭ নম্বর এবং কক্সবাজারে ৬ ও মোংলায় ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে নদীবন্দরের সংকেতও।

এদিকে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি) বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে। এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। খোলা হয়েছে মরিটরিং সেল। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জনসাধারণকে সচেতন, সতর্ক করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলো। এ ছাড়াও ঝড় চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন ছাড়াও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের মোবাইল নম্বরে ফোন করেও জরুরি সেবা গ্রহণ করা যাবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর হচ্ছে ১৬১৬৩ ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের মোবাইল নম্বর হচ্ছে ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল থেকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলবর্তী জেলাগুলোর সব ফায়ার স্টেশন থেকে গণসংযোগ ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে এই প্রচারণার কাজ চালানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়-পূর্ব, ঘূর্ণিঝড় সময়কালীন এবং ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সব কাজ সমন্বয় করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে সদর দপ্তর ঢাকায় খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল। মনিটরিং সেল থেকে উপকূলবর্তী এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

আরও জানানো হয়, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার সব ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে স্ট্যান্ডবাই ডিউটিতে রাখা হয়েছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি ফায়ার স্টেশনে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম, প্রাথমিক চিকিৎসাকারী দল এবং একটি করে ওয়াটার রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারদেরও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স, চেইন স, হ্যান্ড স, রোটারি রেসকিউ স, স্প্রেডার, মেগাফোন, র‌্যামজ্যাক বা এয়ার লিফটিং ব্যাগ, ফাস্ট এইড বক্সসহ যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজসহ রাস্তাঘাট যান চলাচল উপযোগী করার কাজে ফায়ার সার্ভিস নিয়োজিত থাকবে। এসব এলাকায় জীবন ও মালামাল সুরক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো কাজে দিবা-রাত্রি ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণ করা যাবে। সব আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রয়োজনে উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলোতেও জনগণ আশ্রয় নিতে পারবেন। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষসহ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সারাক্ষণ সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে।

চট্টগ্রামে ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে ১১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ে নগরবাসীকে তথ্য সরবরাহ ও জরুরি সেবা দিতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে চসিক।

মঙ্গলবার নগরীর দামপাড়া এলাকার বিদ্যুৎ উপবিভাগের কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এ সময় প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিপদ এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা জনগণকে দ্রুত নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ জানান, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় সিটি করপোরেশনের ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দুপুর থেকে মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে রেডক্রিসেন্টের সহযোগিতায় চসিকের কর্মীরা উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে মাইকিং করেছে। দুর্গত ব্যক্তিদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের নেতৃত্বে কাজ করছে রেসকিউ টিম।’

দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত কন্ট্রেল রুমে ২৪ ঘণ্টা ০২৩৩৩৩৫৩৬৪৯ নম্বরে যোগাযোগ করলে সেবা দেয়া হবে হবে বলে জানান তিনি।

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামসহ চসিকের বিভাগীয় সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে মাইকিং করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলবর্তী এলাকার মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় ৩৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু আছে। আরও আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে।

পটুয়াখালীতে ৭০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে গতকাল সারা দিনই পটুয়াখালীসহ উপকূলজুড়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, থেমে থেমে দমকা হওয়া বইছিল। এদিকে ৭নং বিপৎসংকেত থাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ রেখে কার্গো জাহাজসহ সব সরঞ্জাম নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেয়। দুর্যোগ মোকাবিলায় সভা করে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৬০০ টন চাল ও ১০ লাখ নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট তাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

এদিকে, পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা কুয়াকাটা ছাড়তে শুরু করেছেন।

আবাসিক হোটেল সি গোল্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল-আমিন মুসল্লি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে পর্যটকরা কুয়াকাটা ছাড়তে শুরু করেছেন। আবহাওয়া এমন থাকলে এ সপ্তাহে পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে না।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘আমরা সবসময় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছি। গতকাল থেকেই আমরা মাইকিং করছি এবং তাদের নিরাপদে থাকতে অনুরোধ করছি।’

কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উত্তাল ছিল কক্সবাজারে সমুদ্র। বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান বলেন, ‘বিপৎসংকেতের ব্যাপারে পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাইকিং ও টহল জোরদার রয়েছে। আমাদের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’

মোংলায় সকালে প্রভাব পড়েনি, বিকেলে সাগর উত্তাল

মোংলা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। মোংলা বন্দরে ৫ নম্বর সংকেত চললেও বন্দরে থাকা ১১টি দেশি-বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক ছিল। তবে সাগর উত্তাল থাকায় সব মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়।

নোয়াখালীর সাথে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সোমবার দুপুর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে হাতিয়া-ঢাকা লঞ্চ চলাচল, হাতিয়া-চট্টগ্রাম স্টিমার চলাচল ও হাতিয়া-বয়ারচর-চেয়ারম্যান ঘাটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর সংকেত চলছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল ও যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া মাছ ধরার নৌকাগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে তীরবর্তী এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় এনেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুটের ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট ঘাট থেকে স্পিডবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বরগুনায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, জেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় তিন লাখ মানুষ এতে আশ্রয় নিতে পারবেন।

বিষয়:

অনাবাদি জমিতে কুল চাষ, ভাগ্য বদল ২ তরুণের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

সকালের নরম রোদে বোয়ালখালীর খিতাপচর গ্রামের মাটির পথ ধরে এগোতেই চোখে পড়ে সারি সারি সবুজ গাছ। গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা কুল। বাতাসে দুলছে ডালপালা, আর সেই সঙ্গে দুলছে দুই তরুণ ভাইয়ের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের এই গ্রামেই বাবার ফেলে রাখা অনাবাদি জমিকে আঁকড়ে ধরে নতুন পথ খুঁজে নিয়েছেন তানভিরুল হক ইমন ও সাইদুল হক তুহিন। চাকরির পেছনে না ছুটে তারা বেছে নিয়েছেন মাটি আর গাছের সঙ্গ।

এই যাত্রার শুরু ২০২০ সালে। তখন মাত্র ৭০টি কুল গাছ। উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া সেই চারা দিয়েই শুরু হয় তাদের বাগানের গল্প। চারদিকে তখন অনেকেই সন্দেহে তাকিয়েছিলেন- পতিত জমিতে ফলের বাগান কতটা সফল হবে?

পাঁচ বছর না যেতেই সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে গাছের ডালে ডালে।

এখন তাদের বাগানে কুল গাছের সংখ্যা ৪৬৫টি। বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি ও আপেল কুল- চার জাতের কুলে ভরে উঠেছে তিন একর জমি। শুধু কুল নয়, আশপাশে ছড়িয়ে আছে আম, লিচু, পেয়ারা আর মাল্টার বাগান। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে একটি পরিকল্পিত ফলের খামার।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কুল তোলা। প্রতিদিন ভোর থেকে দুই ভাইয়ের ব্যস্ততা। ঝুড়ি ভরে কুল নামছে গাছ থেকে। দিনে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ কেজি কুল। প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।

তানভিরুল হক ইমন বলছিলেন, ‘ছাত্র থাকতেই ভাবতাম- বাবার এই জমিগুলো পড়ে থাকবে কেন? কৃষি অফিসে গিয়ে কথা বললাম। ওদের পরামর্শে সাহস পেলাম। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করি, এখন আল্লাহর রহমতে বাগানটাই আমাদের জীবনের ভরসা।’

তিনি জানান, বাইরে থেকে রাসায়নিক সার না কিনে নিজেরাই জৈব সার তৈরি করেন। এতে খরচ কমে, মাটিও ভালো থাকে। এ বছর কুল বাগানে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অথচ দুই মাসে কুল বিক্রি করে আসতে পারে ১২ লাখ টাকারও বেশি।

এই সাফল্যের গল্পে রয়েছে পরিশ্রমের ছাপ, আছে ধৈর্য আর বিশ্বাসের শক্তি।

ভাই সাইদুল হক তুহিনের কণ্ঠে শোনা যায় আত্মবিশ্বাস, আমরা দুই ভাই অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু গাছ কখনো বেঈমানি করে না। যত্ন নিলে সে ফিরিয়ে দেয়।

বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম মনে করেন, এই বাগান শুধু দুই ভাইয়ের সাফল্য নয়, এটি একটি উদাহরণ।

তিনি বলেন, এই এলাকায় জোয়ার-ভাটার লবণাক্ত পানির কারণে অনেক জমি অনাবাদি থাকে। সরজন পদ্ধতিতে ফলের বাগান করে পতিত জমি চাষের আওতায় আসে।

খিতাপচরের এই বাগান তাই শুধু কুলের গল্প নয়- এটি সম্ভাবনার গল্প। যেখানে মাটির সঙ্গে লেগে থাকা দুই ভাই দেখিয়ে দিচ্ছেন, গ্রামেই লুকিয়ে আছে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ।


অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে লাখ টাকা জরিমানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম‍্যমান আদালেতের নির্বাহী ম‍্যাজিস্ট্রেট।

গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার চন্দনবাইশা ইউনিয়নে এবং কুতুবপুর ইউনিয়নে অভিযানটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান। এ সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনকে ১লাখ টাকা জরিমানা এবং বালু উত্তোলন কাজে ব‍্যবহৃত পাইপ ভেঙে ফেলা হয়।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলাধীন চন্দনবাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারি ও কুতুবপুর ইউনিয়নের ধলিরকান্দি নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৫(১) ধারা অনুযায়ী ধরিরকান্দি এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে জড়িত লিটন আহমেদকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।


গোপালপুরে বিনামূল্যে বকনা গরু বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

‘গরু পালনে তুলনা নাই, চলো আমরা এগিয়ে যাই’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) অর্থায়নে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কামদেব বাড়ি ও জাংগালিয়া গ্রামের ৭টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ৭টি বকনা গরু বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিতরণকৃত গরুগুলোকে বিনামূল্যে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজের টিকা প্রদান করা হয়।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর শহরের মধুপুর ভট্ট কার্যালয়ে এ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও গরু বিতরণ করা হয়।

উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) নির্বাহী পরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিলের সভাপতিত্বে এবং সুতী নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জামিল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোর্শেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. এখলাছ মিয়া, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন মিয়া। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, উপকারভোগী পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন।

বক্তারা বলেন, গরু পালনের মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারগুলো আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


শ্রীমঙ্গল বিসিক শিল্পনগরীতে কারখানা নেই, জঙ্গলঘেরা স্থাপনা পিচঢালা সড়কে জন্মেছে ঘাস

৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত প্রকল্পে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্পকারখানা
আপডেটেড ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৪
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি 

চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প বিকাশের লক্ষ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত বিসিক শিল্পনগরী আজও কার্যত অচল পড়ে আছে। ২০১২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে সব অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলেও উদ্বোধনের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। ফলে এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে ঘাস ও গাছ জন্মেছে।

শিল্পনগরীতে ১২২টি প্লটের মধ্যে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোক্তা কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেননি। নিরাপত্তার ঘাটতি ও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে গ্যাস সাবস্টেশন ও বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বিসিকের মূল উদ্দেশ্য ছিল, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করা। কিন্তু প্লটের উচ্চমূল্য ও প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাদের মতে, আশপাশের জমির তুলনায় এখানে প্লটের দাম অনেক বেশি হওয়ায় ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউ।

বিসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুর এলাকায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে শিল্পনগরী নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে শেষ হয়। দীর্ঘদিন প্লট খালি থাকায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ দিকে জেলার বাইরের কয়েকজন উদ্যোক্তার নামে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবুও এখনো কোনো স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়নি।

এ শিল্পনগরীতে তিন ধরনের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে- এ ক্যাটাগরি (৬০×১০০ ফুট), বি ক্যাটাগরি (৪৫×৯০ ফুট) এবং এস ক্যাটাগরি (৩,৮০০×৮,১০০ বর্গফুট)। ৯৯ বছরের জন্য প্রতি বর্গফুটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯৯ টাকা ৫১ পয়সা।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন ছাড়া শিল্পনগরীর প্রায় পুরো এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে সেখানে ঘাস ও গাছ জন্মেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দ্বিতীয় প্রবেশ গেটটি গাছপালায় ঢেকে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে নেই কোনো ট্রান্সফরমার। ভবনের ভেতরে পড়ে আছে কিছু খোলা যন্ত্রাংশ, মিটারগুলো ঢেকে গেছে লতাপাতায়। এলাকাটি এখন সাপ, বোলতা, মৌমাছিসহ নানা প্রাণীর আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলাতেও একা চলাচল করা কঠিন বলে জানান স্থানীয়রা।

শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল মিয়া বলেন, ‘এখানকার প্লটের দাম আশপাশের এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। তার ওপর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’

প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত রাহুল গুড়া মসলার মালিক রঞ্জিত দাশ জানান, শিল্পকারখানা স্থাপনের ইচ্ছা থাকলেও বর্তমানে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে আমি কারখানা করেছি। শ্রীমঙ্গলে আনার ইচ্ছে ছিল; কিন্তু এখানকার প্লটের দাম অত্যাধিক এবং নিরাপত্তাও দুর্বল। তাই ঝুঁকি নিতে চাইনি।’

শিল্পনগরীর নৈশপ্রহরী বিশ্বজিৎ সরকার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘চারদিকে জঙ্গল হয়ে গেছে। বিশাল এলাকা একা পাহারা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। ট্রান্সফরমার চুরির পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। একাধিকবার চোর-ডাকাতের ঝুঁকির মুখে পড়েছি।’

শ্রীমঙ্গল বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. মুনায়েম ওয়ায়েছ জানান, ২০১৯ সালে বরাদ্দ পাওয়া ৫৬টি প্লটের কোনো উদ্যোক্তাই এখনো কাজ শুরু করেননি। গত অক্টোবরের শেষ দিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু ও বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পুনঃসংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎকে জানানো হয়েছে। গ্যাস সাবস্টেশনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনঃস্থাপনে খরচের হিসাব করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বরাদ্দ পাওয়ার পরও কাজ শুরু করেননি, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া চলছে।’


বর্ণাঢ্য র‌্যালি হলেও এবার হচ্ছে না হারমোনি ফেস্টিভ্যাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বহুসাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজন করা হলেও এবার উৎসবটি স্থগিত করা হয়েছে। অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য হারমোনি ফেস্টিভ্যাল সিজন–২ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শহরে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিতে খাসি, গারো, ত্রিপুরা, মনিপুরীসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশগ্রহণ করেন, যা শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি করে।

র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহিবুল্লাহ আকনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

র‌্যালি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, শ্রীমঙ্গলে বসবাসরত ২৬টি গেজেটভুক্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য দেশ-বিদেশে তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রতিবছর হারমোনি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়। গত বছর সফলভাবে ফেস্টিভ্যালের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হলেও চলতি বছর অনিবার্য কারণে দ্বিতীয় আসর স্থগিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) নুজহাত ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১৮-২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগান মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। উৎসবটির পরবর্তী তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সিদ্ধান্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে।


দৌলতপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ মাদকসেবির কারাদণ্ড ও জরিমানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ জন মাদকসেবিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামালপুর গ্রামের মৃত ওয়ারেশ মল্লিকের ছেলে সালাম হোসেন (৫০) কে মাদকদ্রব্য সেবনের দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৭ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। একই গ্রামের মৃত কালু মণ্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলামের ছেলে (৪৩) কে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া দৌলতপুর এলাকার মৃত আকসেদ আলীর ছেলে জামরুল ইসলাম (৫০) এবং একই এলাকার এসকেন্দারের ছেলে মেহেদী হাসান (২৮) কে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও ৫০ টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন আদালত।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, “ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ৪ মাদক সেবিকে জরিমানা ও কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এসময় তিনি বলেন সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।”


গোয়ালন্দে টমেটোর বাম্পার ফলন, ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ী জেলায় পদ্মার তীরে বন্যা পরবর্তিতে জেগে ওঠা চরে চাষ করা হয়েছে উন্নত জাতের টমেটো। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম চাষ করা এই টমেটোর এবার বাম্পার ফলন ফলেছে। দামও ভালো পাওয়ায় লাল সবুজ টমেটো হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। ক্ষেতে উৎপাদিত এই টমেটো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সঠিক দিক নির্দেশনায় উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের কারণে টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের টমেটো বিউটি প্লাস বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার মত। হাইব্রিড জাতের টমেটো যেমন বিউটি প্লাস আবাদ করে কৃষকের প্রতি বিঘায় টমেটোর ফলন পাচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ মন করে। এছাড়াও বাজারে টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছে কৃষকেরা।

কৃষক শুকুর আলি জানান, এবার মাচা পদ্ধতিতে হাইব্রিড বিউটি প্লাস টমেটো চাষ করেছি ফলন ভালো হয়েছে আর বাজারে ভালো দামও পাচ্ছি। প্রতি কেজি টমেটো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। এবার আমি আধুনিক পদ্ধতিতে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড টমেটো আবাদ করেছি। হাইব্রিড টমেটো আবাদে খরচ কম লাভ বেশি।

আরেক কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছরে ৭ বিঘা জমিতে হাইব্রিটি বিউটি প্লাস আগাম জাতের টমেটো আবাদ করেছি এবং ভালো ফলনও হয়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে টমেটোর ফলন হচ্ছে প্রায় ১ শত থেকে ১২০ মন করে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। ক্ষেতের৷ খরচ বাদ দিয়ে এবার অনেক টাকা লাভ হবে আশা করা যাচ্ছে।

গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের চাষি সোবান শেখ বলেন, ‘এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা হয়েছে। আমরা ভালো দাম পেয়ে খুশি।’

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানান, চলতি বছরে এই উপজেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে এছাড়াও টমেটোর ফলনও ভালো হয়েছে, বাজারে দামও বেশি পাচ্ছে কৃষককেরা।

তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সেক্স ফরোমোন ফাঁদ দ্বারা ক্ষতিকর পোকা দমন, টমেটোর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই, উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা ও সুষম মাত্রায় সার, কীটনাশক ব্যাবহারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষক লাভের মুখ দেখছেন। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন কৃষকরা।


সরিষাবাড়ীতে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন, ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি

আপডেটেড ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৪৭
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) থেকে

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বিলে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায় উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের রামনন্দনপুর গ্রামে। বিষ প্রয়োগের ফলে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের রামনন্দপুর গ্রামের স্থানীয় ১৬ জন সদস্য মিলে কামারকুড়া মৎস চাষ প্রকল্প সমিতি করে ১০ বিঘা জমিতে মাছ চাষ প্রকল্প শুরু করেন। এসময় ১৮৬ কেজি পাঙ্গাস, ২৭ মন সরপুঁটি, বাটাসহ দেশীয় সকল মাছ চাষ করেন।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিলের পানিতে মাছ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা সমিতির সদস্যদের খবর দেয়। পরে সদস্যরা গিয়ে পুকুরে থাকা পাঙ্গাশসহ দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ মরা অবস্থায় ভাসতে দেখে।

কামারকুড়া মৎস চাষ সমিতির সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান মজনু,

মমিনুল ইসলাম সাবু বলেন, আমাদের পাশের পুকুরের মালিক সম্প্রতি তার পুকুরে নেট দিয়ে বেড়া দিয়েছে। তারপর থেকেই মাছ মরতেছে। তারা হয়তো নেট দিয়ে বেড়া দেয়ার সময় এমন কাজ করতে পারে। আমাদের মৎস চাষ প্রকল্পে বিষ দেয়ার কারনে আমাদের সকল মাছ মরে ভেসে উঠতেছে। এতে করে আমাদের ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।


টঙ্গীতে খাবারের হোটেলে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ২০ হাজার টাকা জরিমানা

আপডেটেড ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:৩৪
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের টঙ্গীতে খাবারের হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এসময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও পরিবেশনের অপরাধে হোটেলটিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা শাখার সহকারী পরিচালক আফসানা পারভীনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলা শাখার কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

এসময় তিনি বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় পালকি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অবৈধ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে খাবার উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের অপরাধে হোটেলটিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।


ফুয়েল লোডিংয়ের পুর্বে বাসের মাধ্যমে রুপপুর প্রকল্পের প্রচারাভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

ফুয়েল লোডিংয়ের প্রারম্ভে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে মাসব্যাপী ব্যাপক প্রচারণামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে।

‎এ কর্মসূচি আওতায় রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঈশ্বরদী শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর, উঠান বৈঠক ও কুইজ প্রতিযোগিতাসহ ব্যতিক্রম সব কর্মসূচি। আগামী ২০ ডিসেম্বর ’গম্ভীরা পরিবেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সচেতনতামূলক সরাসরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রাশিয়ার রসাটম এ কার্যক্রমের আয়োজন করেছে।

‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট (গণমাধ্যম) ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক তথ্য কর্মকর্তা সৈকত আহমেদের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান।

‎প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ কর্মসূচির আওতায় নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক আয়োজন ’গম্ভীরা’ ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়মূলক কার্যক্রম এবং ’উঠান বৈঠক’বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

‎আরও জানানো হয়, দেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ সমগ্র জাতির জন্য গর্বের প্রতীক। বিশেষত পাবনাবাসীর জন্য এ প্রকল্পের গুরুত্ব আরও বেশি। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই প্রকল্পকে ঘিরে নানা প্রশ্ন, ভুল ধারণা, উদ্বেগ ও কৌতূহল নিরসনে প্রকল্প সম্পর্কে সহজ, স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রোসাটম যৌথভাবে নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর আয়োজন করেছে। এ বাস ট্যুরের মাধ্যমে জেলার সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত এবং আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। পারমাণবিক তথ্যকেন্দ্র, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ক বিতর্ক ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্ক অনুষ্ঠানে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রোসাটমের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও চলতি মাসে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

‎এর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ’গম্ভীরা: স্বপ্ন পূরণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে একাধিক উঠান বৈঠক। ’টেকসই, নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ মূলভাবের উপর নির্মিত এ গম্ভীরা স্থানীয় জনসাধারণকে বিনোদন ও যুক্তির মাধ্যমে রূপপুরের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরবে। ’উঠান বৈঠক’ স্থানীয় মানুষকে রূপপুর সম্পর্কে অবগত, সচেতন করা বা তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক ও তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদান করে তাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষে ইতিবাচক জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে আশা করা হয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশিয়ার রোসাটম বিশ্বাস করে, ধারাবাহিক ও অংশগ্রহণমূলক জনসচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে এবং দেশের টেকসই উন্নয়নে এ প্রকল্পের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে।

‎এ অবস্থায় ফুয়েল লোডিংয়ের মধ্য দিয়ে অতি শীঘ্রই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে যা জাতীয় গ্রিডে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করবে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবির অভিযানে বিদেশী পিস্তল ও গুলি উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ৪ টি বিদেশী পিস্তল, ৯ টি ম্যাগাজিন ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকায় সোমবার সকালে এ অভিযান চালানো হয়।
সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের এ তথ্য জানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান ।
তিনি জানান, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীকে গুলির ঘটনার পর থেকেই বিজিবি সীমান্তে বিশেষ টহল, চেকপোষ্ট ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে গোপালপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চলাকালে, দুজন মোটর সাইকেল আরোহীকে থামার সংকেত দিলে তারা দ্রুততার সাথে বাঁক পরিবর্তন করে পালিয়ে যায়। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে একটি ব্যাগ পড়ে যায়, পরে পড়ে যাওয়া ব্যাগ থেকে ৪ টি বিদেশী পিস্তল, ৯ টি ম্যাগাজিন ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যরা।
তিনি জানান, দুস্কৃতিকারীরা বাংলাদেশের অভ্যান্তরে বড় ধরনের নাশকতার পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে অবৈধ পথে অস্ত্র গোলাবারুদ আনার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এমন ধারনা থেকে সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।


জন্মস্থান চকরিয়ায় জাতির সূর্য সন্তান ৭ বীর মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা দৃশ্যমান স্মৃতিফলক নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ বিন হোছাইন, প্রতিনিধি (চকরিয়া - পেকুয়া) কক্সবাজার
    ৫৪বছর পরও শহীদ আবদুল হামিদ ও শহীদ হাবিলদার আবুল কালামসহ ৭ বীর সেনানীর সম্মানে নেই স্মৃতিফলক

পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শোষন আর শৃঙ্খলা থেকে মুক্ত হয়ে সম্ভাবনার বাংলাদেশ একটি লাল সবুজের পতাকা অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছে ৫৪বছর আগে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ অনেকে সম্মুখযুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য আত্মাহুতি দেন হাজারো বীর সেনানী। তাদের মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধা অন্যতম।

জাতির এই সূর্য সন্তানরা যুদ্ধ করে মাতৃভুমির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে শহীদ হলেও স্বাধীনতার ৫৪বছর পরও সেই বীর সেনানীর সম্মানে দৃশ্যমান কোন স্মৃতি নেই আপন জম্মস্থানে। ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে চকরিয়া উপজেলাবাসীর কি পরিমান অবদান ছিল সেই সম্পর্কে কিছুই জানেন না নতুন প্রজন্ম। এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশ গড়তে চকরিয়া উপজেলার শহীদ ৭ বীরের বীরত্বগাঁথা অবদান সম্পর্কে ওয়াকিবহালও নন এই প্রজম্মের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা।

মহান মুক্তিযুদ্ধে চকরিয়ার যাদের আত্মত্যাগ:

তথ্য সুত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আনুষ্টানিক ভাবে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙ্গালী জাতির সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৭ জন কৃতি সন্তান প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় যুদ্ধকালীন সময়ে তারা দেশের জন্য জীবন দেন পাক হানাদার বাহিনীর হাতে।

যাদের রক্তের বিনিময়ে চকরিয়া আজ গৌরবোজ্জ্বল তারা হলেন, চকরিয়া উপজেলার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের শহীদ আবদুল হামিদ, চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালী গ্রামের শহীদ হাবিলদার আবুল কালাম, তাঁর ভাই শহীদ আবুল হোছাইন,

উপজেলার কেয়ারবিল ইউনিয়নের শহীদ এনামূল হক, খিলছাদক গ্রামের শহীদ সিপাই আকতার হোসেন, চিরিংগা ইউনিয়নের পালাকাটা গ্রামের শহীদ গোলাম কাদের ও হারবাং ইউনিয়নের কালা সিকদার পাড়া গ্রামের শহীদ গোলাম সাত্তার।

জানা গেছে, শহীদ আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্রগ্রাম সরকারী বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র থাকা অবস্থায় দেশ মাতৃকার টানে লেখাপড়া গুটিয়ে ভারত থেকে গেরিলা প্রশিক্ষন নিয়ে দেশে এসে পার্বত্য লামা আলীকদম ও লোহাগাড়ার পুটিবিলা এলাকায় যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৭১ সালের ৪ নভেন্বর র্বামা সীমান্তে ফুরুইক্যা বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে ককসবাজার অবস্থানরত পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন রিজভীর হাতে সোর্পদ্দ করে। সেখানে টান ১৫ দিন পাকবাহিনী তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ১৯ নভেম্বর টেকনাফে নিয়ে গিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে।

শহীদ হাবিলদার আবুল কালাম ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক। তিনিও দেশ মাতৃকার টানে সেসময় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন ১ নম্বর সেক্টরে। র্পাবত্য চট্রগ্রামের কেরানী পাড়ায় তিনি পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হন।

শহীদ এনামূল হক ছিলেন সেনা বাহিনীর ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য। তিনি সরকারী চাকুরী ছেড়ে দেশের টানে অংশ নেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে।

একাত্তর সালের ২৫ মার্চ পাকবাহিনী এনামুল হকসহ ১২ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার উদ্যেশে নিয়ে যাবার পথে তারা গাড়ী চালককে হত্যা করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ৯ ডিসেম্বর র্পাবত্য চট্রগ্রামের কেরানী পাড়ায় পাকবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন এনামুল হক।

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর সদস্যরা আমেরিকা থেকে সমুদ্র পথে সোয়াথ জাহাজ যোগে মুক্তিকামী বাঙ্গালী নিধনের জন্য অস্ত্রের চালান তুলছিলেন চট্রগ্রাম বন্দরে। ওই সময় অস্ত্র নামানো পতিহত করতে চেষ্টাকালে গুলিতে শহীদ হন হারবাং ইউনিয়নের কালা সিকদারপাড়া গ্রামের সূর্য সন্তান গোলাম সাত্তার।

২৫ মার্চ যুদ্ধের প্রথম দিকে শহীদ হয়েছেন চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের পালাকাটা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কাদের। একইভাবে সিপাই আকতার হোসেন পাক বাহিনীর নিমর্ম নারকীয়তায় শহীদ হন একইসময়ে। একইসময়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাকবাংলোর সামনে পাকবাহিনীর সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে শহীদ হাবিলদার আবুল কালামের ছোট ভাই শহীদ আবুল হোছাইনকে। তাঁর রক্তমাখা জামা এখনো পরিবারের কাছে সংরক্ষিত আছে।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ উপজেলার জাতির সূর্য সন্তান ৭ বীরের অবদান অনস্বীকার্য বলে স্বরন করেছেন চকরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হাজী আবু মো.বশিরুল আলম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে শোষনহীন ও সমৃদ্ধশালী হিসেবে প্রতিষ্টায় বীর শহীদদের আত্মত্যাগ বতর্মান প্রজম্মকে অবশ্যই জানানো উচিত। তবে এ ব্যাপারে সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে।

সরকারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন চাইলে এই ৬ বীর শহীদদের স্মৃতি প্রতিষ্টা করে তাদের অবদান ও আত্মত্যাগের প্রতিচ্ছবি দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরতে পারে। এতে করে বর্তমান প্রজম্মের তরুন, যবুক, শিক্ষার্থীরা চকরিয়া উপজেলার শহীদ ৭ বীর সেনানীর সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে।

শহীদের স্বরণে কিছুটা অবদান:

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৫৪ বছর আগে। কিন্তু চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন কিংবা রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারকরা চকরিয়ার শহীদ ৭ বীর সেনানীর মর্যাদা প্রতিষ্টায় কিছু করতে না পারলেও আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি জাফর আলম চকরিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র থাকাকালে অনুকম্পা দেখিয়েছেন এক বীর শহীদের স্মৃতির প্রতি।

২০০৯ সালে চকরিয়া পৌরশহরে নবনির্মিত পৌরবাস র্টামিনালকে শহীদ আবদুল হামিদ পৌরবাস র্টামিনাল নামে ঘোষানা করে একটি দায়বদ্ধতা পূরণ করেছেন সাবেক এমপি জাফর আলম।

একইভাবে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বমুবিলছড়িতে শহীদ আবদুল হামিদের নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করে দিয়েছেন। একইভাবে শহীদ হাবিলদার আবুল কালামের নামে একটি স্মৃতি পাঠাগার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এসকে সামসুল হুদার নামে একটি সড়কের নামকরন করে দিয়েছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, এসব নামকরণ এখনো কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বাস্তবে কোনটার প্রতিফলন খুঁজে পাচ্ছে না চকরিয়া উপজেলাবাসি।


শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে পারবেন সার্জেন্টরা : পরিবেশ উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ পুলিশের সার্জেন্টসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারবেন, যা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

তিনি বলেন, আইন থাকলেই যথেষ্ট নয়, তার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশকে আইনপ্রয়োগের ক্ষমতা প্রদানসহ বিভিন্ন অংশীজনকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আয়োজিত নির্দেশনামূলক সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু জরিমানা নয়, জনসচেতনতা তৈরি করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

শব্দদূষণ এখন আর ছোট সমস্যা নয়- এটি জনস্বাস্থ্য, শিশুদের মানসিক বিকাশ এবং নগরজীবনের স্বস্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এ জন্য পরিবহন, নির্মাণকাজ, মাইক ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের থার্টি-ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি, পটকা ও ফানুস ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ, শিক্ষার্থীদের সচেতন করার অনুকরণযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানকে ক্রেস্ট ও ধন্যবাদপত্র দেয়া হয়।

এছাড়া, এ সময় মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্টদের জন্য ৫০টি সাউন্ড মিটার প্রদানের অংশ হিসেবে অতিরিক্ত কমিশনারের হাতে একটি সাউন্ড মিটার তুলে দেওয়া হয়।

পরে পরিবেশ উপদেষ্টা ব্র্যাক সিডিএম, রাজেন্দ্রপুরে আয়োজিত লেড রিমেডিয়েশন প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, লিড দূষণের উৎস চিহ্নিত করে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যথাযথ নজরদারি ছাড়া কারখানা স্থানান্তর করলে সমস্যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে পারে। জাতীয় পর্যায়ে একটি লেড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন, উৎসভিত্তিক তালিকা, সময়বদ্ধ কর্মপরিকল্পনা, পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানে কঠোর চেকলিস্ট এবং অংশীদারিত্বভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে লিডমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।


banner close