মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় হামুন

ছবি: দৈনিক বাংলা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:৩৬

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এর অগ্রভাগ বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে পরবর্তী ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপকূল অতিক্রম শুরু করে হামুন। আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায়

সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’

তিনি জানান, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে স্থলভাগে উঠে আসতে থাকায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তবে গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত রাজধানীতে এর প্রভাব তেমন দেখা যায়নি।

ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অফিস জানায়, হামুনের প্রভাবে উপকূলের ১৫টি জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এসব জেলায় সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এ সময় বরগুনা, ভোলা, সন্দ্বীপ, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ ১০টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এসব দুর্গত এলাকার ১৫ লাখ মানুষকে মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে অতি ভারী বৃষ্টিতে ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাস, ৫ জেলায় ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

সেই সঙ্গে সারা দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় গতকালই পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে চার নম্বর নামিয়ে ৭ নম্বর এবং কক্সবাজারে ৬ ও মোংলায় ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে নদীবন্দরের সংকেতও।

এদিকে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি) বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (১৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে। এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। খোলা হয়েছে মরিটরিং সেল। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জনসাধারণকে সচেতন, সতর্ক করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলো। এ ছাড়াও ঝড় চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন ছাড়াও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের মোবাইল নম্বরে ফোন করেও জরুরি সেবা গ্রহণ করা যাবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর হচ্ছে ১৬১৬৩ ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের মোবাইল নম্বর হচ্ছে ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল থেকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলবর্তী জেলাগুলোর সব ফায়ার স্টেশন থেকে গণসংযোগ ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে এই প্রচারণার কাজ চালানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়-পূর্ব, ঘূর্ণিঝড় সময়কালীন এবং ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সব কাজ সমন্বয় করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে সদর দপ্তর ঢাকায় খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল। মনিটরিং সেল থেকে উপকূলবর্তী এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

আরও জানানো হয়, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার সব ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে স্ট্যান্ডবাই ডিউটিতে রাখা হয়েছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি ফায়ার স্টেশনে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম, প্রাথমিক চিকিৎসাকারী দল এবং একটি করে ওয়াটার রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারদেরও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স, চেইন স, হ্যান্ড স, রোটারি রেসকিউ স, স্প্রেডার, মেগাফোন, র‌্যামজ্যাক বা এয়ার লিফটিং ব্যাগ, ফাস্ট এইড বক্সসহ যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজসহ রাস্তাঘাট যান চলাচল উপযোগী করার কাজে ফায়ার সার্ভিস নিয়োজিত থাকবে। এসব এলাকায় জীবন ও মালামাল সুরক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো কাজে দিবা-রাত্রি ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণ করা যাবে। সব আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রয়োজনে উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলোতেও জনগণ আশ্রয় নিতে পারবেন। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষসহ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সারাক্ষণ সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে।

চট্টগ্রামে ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে ১১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ে নগরবাসীকে তথ্য সরবরাহ ও জরুরি সেবা দিতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে চসিক।

মঙ্গলবার নগরীর দামপাড়া এলাকার বিদ্যুৎ উপবিভাগের কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এ সময় প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের বিপদ এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা জনগণকে দ্রুত নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ জানান, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় সিটি করপোরেশনের ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দুপুর থেকে মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে রেডক্রিসেন্টের সহযোগিতায় চসিকের কর্মীরা উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে মাইকিং করেছে। দুর্গত ব্যক্তিদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের নেতৃত্বে কাজ করছে রেসকিউ টিম।’

দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত কন্ট্রেল রুমে ২৪ ঘণ্টা ০২৩৩৩৩৫৩৬৪৯ নম্বরে যোগাযোগ করলে সেবা দেয়া হবে হবে বলে জানান তিনি।

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামসহ চসিকের বিভাগীয় সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে মাইকিং করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলবর্তী এলাকার মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় ৩৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু আছে। আরও আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে।

পটুয়াখালীতে ৭০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে গতকাল সারা দিনই পটুয়াখালীসহ উপকূলজুড়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, থেমে থেমে দমকা হওয়া বইছিল। এদিকে ৭নং বিপৎসংকেত থাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। পায়রা সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ রেখে কার্গো জাহাজসহ সব সরঞ্জাম নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেয়। দুর্যোগ মোকাবিলায় সভা করে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৬০০ টন চাল ও ১০ লাখ নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট তাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

এদিকে, পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় কুয়াকাটায় আসা পর্যটকরা কুয়াকাটা ছাড়তে শুরু করেছেন।

আবাসিক হোটেল সি গোল্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল-আমিন মুসল্লি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে পর্যটকরা কুয়াকাটা ছাড়তে শুরু করেছেন। আবহাওয়া এমন থাকলে এ সপ্তাহে পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে না।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘আমরা সবসময় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছি। গতকাল থেকেই আমরা মাইকিং করছি এবং তাদের নিরাপদে থাকতে অনুরোধ করছি।’

কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উত্তাল ছিল কক্সবাজারে সমুদ্র। বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান বলেন, ‘বিপৎসংকেতের ব্যাপারে পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাইকিং ও টহল জোরদার রয়েছে। আমাদের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।’

মোংলায় সকালে প্রভাব পড়েনি, বিকেলে সাগর উত্তাল

মোংলা প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। মোংলা বন্দরে ৫ নম্বর সংকেত চললেও বন্দরে থাকা ১১টি দেশি-বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিক ছিল। তবে সাগর উত্তাল থাকায় সব মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়।

নোয়াখালীর সাথে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সোমবার দুপুর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে হাতিয়া-ঢাকা লঞ্চ চলাচল, হাতিয়া-চট্টগ্রাম স্টিমার চলাচল ও হাতিয়া-বয়ারচর-চেয়ারম্যান ঘাটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর সংকেত চলছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের সব ধরনের নৌযান চলাচল ও যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া মাছ ধরার নৌকাগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে তীরবর্তী এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় এনেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুটের ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট ঘাট থেকে স্পিডবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বরগুনায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, জেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় তিন লাখ মানুষ এতে আশ্রয় নিতে পারবেন।

বিষয়:

নীলফামারীতে ৮ম জেলা কাব ক্যাম্পুরীর সমাপ্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

‘করব, সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নীলফামারীতে ৮ম জেলা কাব ক্যাম্পুরী হয়েছে। গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্যাম্প ফায়ার ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পুরীর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।

এ সময় বক্তারা বলেন, কাব স্কাউটদের নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে এ ধরনের ক্যাম্পুরী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্কাউটিং কার্যক্রম শিশু-কিশোরদের দেশপ্রেম, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে।

অনুষ্ঠানে জেলা স্কাউটসের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, শিক্ষক, কাব স্কাউট লিডার ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাব স্কাউটরা উপস্থিত ছিলেন।


কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাব নির্বাচন

* সভাপতি ইমারত, * সম্পাদক হুমায়ুন, * সাংগঠনিক সম্পাদক আফসার নির্বাচিত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক (২০২৫-২৭) নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে সভাপতি মো. ইমারত হোসেন (দৈনিক জনকণ্ঠ) ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর (দৈনিক আজকালের খবর) ও সাংগঠনিক সম্পাদক (দৈনিক বাংলা) কালিয়াকৈর উপজেলা প্রতিনিধি আফসার খাঁন বিপুল নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ নির্বাচন হয়। নির্বাচন পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম ফখরুল হোসাইন।

সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়। পরে ভোট গণনা শেষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কালিয়াকৈর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার ও উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুল আলীম, অপর নির্বাচন কমিশনার ও দীপ্ত টেলিভিশনের গাজীপুর প্রতিনিধি, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ বিভিন্ন প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ও নেতারা। নবগঠিত প্রেসক্লাবের ১৫ সদস্য কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহসভাপতি মাসুদ রানা, যুগ্ম সম্পাদক সাগর আহম্মেদ, অর্থ সম্পাদক ফজলুল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাসুদুর রহমান, যুব ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক লুৎফর রহমান, আইন ও সাহিত্য সসম্পাদক কামরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোরশেদুল আলম পালন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন, নির্বাহী সদস্য মোশারফ সিকদার ও জাকির হোসেন।


মিশ্র ফলের বাগান করে তরুণ শিক্ষকের সফলতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি   

কমলা, মালটাসহ মিশ্র ফলের বাগান করে সফলতা এসেছে মাগুরা সদর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামের সাদমান সাকির সোহাগের ঘরে।

সোহাগ সদর উপজেলার আলাইপুর আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক। বাবা দেলোয়ার মণ্ডলের রেখে যাওয়া সাতশ শতাংশ জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বাগান।

শিক্ষকতা করে যা অর্জন করতেন তাই দিয়ে এখনকার সমাজে সংসার চালানো খুবই কঠিন। এছাড়া গাছ লাগানোর প্রতি তার আগ্রহটা ছিল একটু বেশি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাগান করার চিন্তাটা তার মাথায় আসে।

২০২০ সাল থেকে বাগান করার উদ্যোগ নেন। যে বয়সে তরুণরা টাকা আয় করার জন্য শহরে পাড়ি জমায়, সে বয়সে সাদমান সাকির কষ্টকে তুচ্ছ করে নিজ গ্রামেই গড়ে তুলেছেন এই বাগান। যেখানে স্থান পেয়েছে নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলের চারা। তার বাগানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির বারোমাসি কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, কদবেল, ডালিম, আমড়া এবং আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ।

এছাড়া বাগানের একপাশে পুকুর কেটে তাতে বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ করছেন। সেখানে আছে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ।

এর মধ্যে বেশি সফলতা অর্জন করেছেন কমলার চাষ করে। প্রথমে চারশত কমলা গাছের চারা লাগিয়ে শুরু করেছিলেন বাগান। বেশ সুস্বাদ, রসালো এবং ভালো ফলন হওয়ায় তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তার বাগানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের বারোমাসি কমলালেবুর গাছ রয়েছে যেমন, দার্জিলিং, ভুটান, পাকিস্তান এবং থাই-টু। বর্তমানে তার বাগানে ১৪ শত কমলার গাছ রয়েছে। ভরা মৌসুমে সব খরচ বাদ দিয়েও তার লাভ থাকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা। ১৩০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন বাছাই করে ৪ থেকে প্রায় ৫ শত কেজি কমলা ক্যারেটে করে ট্রাকযোগে আড়তে বিক্রি করা হয়। যা খুচরা বাজারে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। সারা বছরই কোনো না কোনো ফল থাকে তার বাগানে। তবে বিদেশি ফল হলেও মাগুরার মাটিতে কমলার ফলন ভালো হওয়ায় এই কাজে উৎসাহিত হচ্ছেন অন্য তরুণরা। মিশ্র ফলবাগানে আরও ৮-১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।

জমিতে নিয়মিত পানি সরবরাহের জন্য বাগানের এক পাশে ১৪ হাজার ৪ শত ওয়ার্ডের সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। যার দ্বারা ১১ হর্স পাওয়ারের মটর চলে। শুধু নিজের জমিতেই নয় আশেপাশের আরও ২০০ বিঘা জমিতে পানির চাহিদা পূরণ করে বাড়তি আয় করছেন তিনি।

তরুণ উদ্যোক্তা সাদমান সাকির সোহাগ বলেন, ‘শিক্ষকতা আমার পেশা আর গাছ লাগানো আমার শখ। সেই শখ এবং গাছের প্রতি ভালোবাসার কারণেই গড়ে তোলা আমার এই মিশ্র ফল বাগান। এই বাগানকে ঘিরে আরও কয়েকজন যুবকের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি এটা আমার একটি বড় পাওয়া। আমি চাই আমার মতো আরও শিক্ষিত বেকাররা স্বাবলম্বী হোক। বসে না থেকে বাড়ির আশেপাশে যার যতটুকু জায়গা আছে ততটুকু জায়গার মধ্যেই কিছুনা কিছু গাছ লাগাক। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা পাবে তেমনি দেশের বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে।’

কমলার বাগানে কর্মরত ইকরামুল জানান, প্রতিদিন আমরা কমলা গাছসহ অন্যান্য গাছের যত্ন নেই। এছাড়া গাছ থেকে ফল ছিড়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। এ কাজের জন্য সোহাগ ভাই আমাদের প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে দেন। এতে আমাদের সংসার মোটামুটি চলে যায়। এই ফল বেশ সুস্বাদু এবং রসালো হওয়ায় মাগুরায় এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

সোহাগের বাগানের কমলা বহনকারী গাড়ির ড্রাইভার জানান, আমরা প্রতি বছর সোহাগ ভাইয়ের মিশ্র ফলবাগান থেকে কমলা ক্যারেটে ভরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যাপারীরা এসে কিনে নিয়ে যায়।

মাগুরা সদর উপজেলার নবাগত কৃষি অফিসার মাসুদ রানা বলেন, ‘মাগুরার একজন তরুণ উদ্যোক্তা সাদমান সাকিব সোহাগ তার মিশ্র ফল বাগানের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করছে। আমরা তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এই ধরনের কাজ আমাদের দেশের সম্পদ। কৃষি বিভাগ এই ধরনের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সর্বদা সাহায্য করে থাকে। এবং কৃষি বিভাগ সব সময় এইসব উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে।’


পঞ্চগড়ে ব্রি-ধানের নতুন জাতের বীজ বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

এলএসটিডি প্রকল্পের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) স্যাটেলাইট স্টেশন পঞ্চগড় তত্ত্বাবধানে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া প্রযুক্তি গ্রামে (ব্রি) উদ্ভাবিত আধুনিক ধানের জাত ও প্রযুক্তির জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে প্রায়োগিক পরীক্ষণ ও মূল্যায়নের বীজ বিতরণ কার্যক্রম হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ ঘটিকায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ব্রি-স্যাটেলাইট স্টেশন, পঞ্চগড়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা। তিনি জানান, বোরো ২৫-২৬ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের মাঝে ব্রি-উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।

বিশেষ অতিথি এলএসটিডি প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রিফা তানজিম বলেন, বিতরণ করা জাতগুলোর মধ্যে ছিল ব্রি-ধান-৮৯, ব্রি-ধান-১০২, ব্রি-ধান-১০৪ এবং ব্রি-হাইব্রিড ধান-৮। যেখানে ব্রি-হাইব্রিড ধান-৮-এর বীজ প্রথমবারের মতো পঞ্চগড় জেলায় প্রদান করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পঞ্চগড় সদরের কৃষি কর্মকর্তা হরি নারায়ণ রায় উপসহকারী। তিনি বলেন, কৃষকদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন জাতের জীবনকাল উন্নত পদ্ধতিতে চারা তৈরি সঠিক সময়ে চারা রোপণ, সুষম সার ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন ব্যতিক কৌশল বিশ ধরনের মাঝে বিধান বৃদ্ধির কৌশল বিষয়ে ধারণা দেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার কৃষক মো. আফিজ উদ্দীনের উঠানে প্রায় ৫০ জন কৃষকের মাঝে ব্রি-ধান বীজ বিতরণ করা হয়।


হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা -২০২৩ এর আলোকে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বৎসরে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত ও সংস্কার কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়ন এর আঙ্গুরউলি হাওরে ডুবন্ত বাঁধের ব্রীচ উদ্ভোদনের মাধ্যমে হাওড় রক্ষা বাঁধের কাজের উদ্ভোদন করা হয়।

তাহিরপুর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী পাউবো মনির হেসেন এর সঞ্চালনায় এবং তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে কাজের উদ্ভোদন করেন,পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকার অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাউবো সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাইছার আলম, তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) শাহরুখ আলম শান্তনু, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী।

উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব দপ্তর সম্পাদক রোকন উদ্দিন, সদর ইউনিয়নের সদস্য তোজাম্মিল হক নাসরুম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের সকল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সুনামগঞ্জ জেলাকে। অন্য জেলা থেকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট সুনামগঞ্জে বেশি দিচ্ছি। আমরা আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে বাঁধের কাজ সম্পূণ© করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হলে মার্চ মাসের মধ্যেই সব টাকা পরিশোধ করা হবে।

উল্লেখ্য, বালিজুরি ইউনিয়ন এর আঙ্গুরালী হাওরের উপপ্রকল্পের আওতায় ১.১৫ কিলোমিটার বাঁধের কাজের উদ্বোধন করা হয়।


চবি উপউপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় দেওয়া ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে- এই ধারণা রীতিমতো অবান্তর’ এ বক্তব্যের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খানের পদত্যাগ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ভবনে তালা লাগানো শেষে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনায় সভায় উপউপাচার্য শামীম উদ্দিন খান স্যার পাকিস্তানিদেও যোদ্ধা বলেছে। অথচ এই পাকিস্তানি বাহিনী এদেশের জনগণকে হত্যা করেছে। আমাদের মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট করেছে। তার এ বক্তব্যর জন্য ক্ষমা চেয়ে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ ছাড়া আমরা তালা খুলব না।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চবি উপউপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সংহতি জানিয়ে এসময় গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, প্রচার সম্পাদক মুশরেফুল হক রাকিব, সদস্য ও অতীশ দীপংকর হল সংসদের ভিপি রিপুল চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদ শাহরিয়ার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সংগঠক চন্দনা রানী, ছাত্র ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক শেখ জুনায়েদ কবির ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার উপস্থিত ছিলেন।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘শামীম স্যারের বক্তব্যকে আমরা ঘৃণাভরের প্রত্যাখ্যান করেছি। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে বুঝা যায় তিনি ১৯৭১ সালে যদি তিনি থাকতেন, তাহলে রাজাকারের ভূমিকায় পালন করতেন। আমরা অবশ্যই তার পদত্যাগ দাবি করছি।

এর আগে, গত রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চবি প্রশাসনের আলোচনা সভায় অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন নির্ধারিত ছিল। তারা (পাকিস্তান সেনাবাহিনী) ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা জীবিত না মৃত অবস্থায় ফিরবে- সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে- এই ধারণা রীতিমতো অবান্তর। এটি একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। এই দেশকে অন্য একটি দেশের করদরাজ্যে পরিণত করার লক্ষ্যেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে বলে বক্তব্যে বলেন তিনি।


অনাবাদি জমিতে কুল চাষ, ভাগ্য বদল ২ তরুণের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

সকালের নরম রোদে বোয়ালখালীর খিতাপচর গ্রামের মাটির পথ ধরে এগোতেই চোখে পড়ে সারি সারি সবুজ গাছ। গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা কুল। বাতাসে দুলছে ডালপালা, আর সেই সঙ্গে দুলছে দুই তরুণ ভাইয়ের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের এই গ্রামেই বাবার ফেলে রাখা অনাবাদি জমিকে আঁকড়ে ধরে নতুন পথ খুঁজে নিয়েছেন তানভিরুল হক ইমন ও সাইদুল হক তুহিন। চাকরির পেছনে না ছুটে তারা বেছে নিয়েছেন মাটি আর গাছের সঙ্গ।

এই যাত্রার শুরু ২০২০ সালে। তখন মাত্র ৭০টি কুল গাছ। উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া সেই চারা দিয়েই শুরু হয় তাদের বাগানের গল্প। চারদিকে তখন অনেকেই সন্দেহে তাকিয়েছিলেন- পতিত জমিতে ফলের বাগান কতটা সফল হবে?

পাঁচ বছর না যেতেই সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে গাছের ডালে ডালে।

এখন তাদের বাগানে কুল গাছের সংখ্যা ৪৬৫টি। বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি ও আপেল কুল- চার জাতের কুলে ভরে উঠেছে তিন একর জমি। শুধু কুল নয়, আশপাশে ছড়িয়ে আছে আম, লিচু, পেয়ারা আর মাল্টার বাগান। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে একটি পরিকল্পিত ফলের খামার।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কুল তোলা। প্রতিদিন ভোর থেকে দুই ভাইয়ের ব্যস্ততা। ঝুড়ি ভরে কুল নামছে গাছ থেকে। দিনে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ কেজি কুল। প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।

তানভিরুল হক ইমন বলছিলেন, ‘ছাত্র থাকতেই ভাবতাম- বাবার এই জমিগুলো পড়ে থাকবে কেন? কৃষি অফিসে গিয়ে কথা বললাম। ওদের পরামর্শে সাহস পেলাম। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করি, এখন আল্লাহর রহমতে বাগানটাই আমাদের জীবনের ভরসা।’

তিনি জানান, বাইরে থেকে রাসায়নিক সার না কিনে নিজেরাই জৈব সার তৈরি করেন। এতে খরচ কমে, মাটিও ভালো থাকে। এ বছর কুল বাগানে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অথচ দুই মাসে কুল বিক্রি করে আসতে পারে ১২ লাখ টাকারও বেশি।

এই সাফল্যের গল্পে রয়েছে পরিশ্রমের ছাপ, আছে ধৈর্য আর বিশ্বাসের শক্তি।

ভাই সাইদুল হক তুহিনের কণ্ঠে শোনা যায় আত্মবিশ্বাস, আমরা দুই ভাই অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু গাছ কখনো বেঈমানি করে না। যত্ন নিলে সে ফিরিয়ে দেয়।

বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহানুর ইসলাম মনে করেন, এই বাগান শুধু দুই ভাইয়ের সাফল্য নয়, এটি একটি উদাহরণ।

তিনি বলেন, এই এলাকায় জোয়ার-ভাটার লবণাক্ত পানির কারণে অনেক জমি অনাবাদি থাকে। সরজন পদ্ধতিতে ফলের বাগান করে পতিত জমি চাষের আওতায় আসে।

খিতাপচরের এই বাগান তাই শুধু কুলের গল্প নয়- এটি সম্ভাবনার গল্প। যেখানে মাটির সঙ্গে লেগে থাকা দুই ভাই দেখিয়ে দিচ্ছেন, গ্রামেই লুকিয়ে আছে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ।


অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে লাখ টাকা জরিমানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম‍্যমান আদালেতের নির্বাহী ম‍্যাজিস্ট্রেট।

গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার চন্দনবাইশা ইউনিয়নে এবং কুতুবপুর ইউনিয়নে অভিযানটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান। এ সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে একজনকে ১লাখ টাকা জরিমানা এবং বালু উত্তোলন কাজে ব‍্যবহৃত পাইপ ভেঙে ফেলা হয়।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলাধীন চন্দনবাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারি ও কুতুবপুর ইউনিয়নের ধলিরকান্দি নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৫(১) ধারা অনুযায়ী ধরিরকান্দি এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে জড়িত লিটন আহমেদকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল রহমান বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।


গোপালপুরে বিনামূল্যে বকনা গরু বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

‘গরু পালনে তুলনা নাই, চলো আমরা এগিয়ে যাই’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) অর্থায়নে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কামদেব বাড়ি ও জাংগালিয়া গ্রামের ৭টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ৭টি বকনা গরু বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিতরণকৃত গরুগুলোকে বিনামূল্যে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজের টিকা প্রদান করা হয়।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর শহরের মধুপুর ভট্ট কার্যালয়ে এ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও গরু বিতরণ করা হয়।

উন্নত জীবনের সন্ধানের (ঊষা) নির্বাহী পরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিলের সভাপতিত্বে এবং সুতী নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জামিল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোর্শেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. এখলাছ মিয়া, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেল এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন মিয়া। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, উপকারভোগী পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ছিলেন।

বক্তারা বলেন, গরু পালনের মাধ্যমে হতদরিদ্র পরিবারগুলো আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


শ্রীমঙ্গল বিসিক শিল্পনগরীতে কারখানা নেই, জঙ্গলঘেরা স্থাপনা পিচঢালা সড়কে জন্মেছে ঘাস

৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত প্রকল্পে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্পকারখানা
আপডেটেড ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৪
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি 

চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প বিকাশের লক্ষ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত বিসিক শিল্পনগরী আজও কার্যত অচল পড়ে আছে। ২০১২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে সব অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলেও উদ্বোধনের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি। ফলে এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে ঘাস ও গাছ জন্মেছে।

শিল্পনগরীতে ১২২টি প্লটের মধ্যে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোক্তা কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেননি। নিরাপত্তার ঘাটতি ও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে গ্যাস সাবস্টেশন ও বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বিসিকের মূল উদ্দেশ্য ছিল, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করা। কিন্তু প্লটের উচ্চমূল্য ও প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাদের মতে, আশপাশের জমির তুলনায় এখানে প্লটের দাম অনেক বেশি হওয়ায় ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কেউ।

বিসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুর এলাকায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে শিল্পনগরী নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালে শেষ হয়। দীর্ঘদিন প্লট খালি থাকায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ দিকে জেলার বাইরের কয়েকজন উদ্যোক্তার নামে ৫৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবুও এখনো কোনো স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়নি।

এ শিল্পনগরীতে তিন ধরনের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে- এ ক্যাটাগরি (৬০×১০০ ফুট), বি ক্যাটাগরি (৪৫×৯০ ফুট) এবং এস ক্যাটাগরি (৩,৮০০×৮,১০০ বর্গফুট)। ৯৯ বছরের জন্য প্রতি বর্গফুটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯৯ টাকা ৫১ পয়সা।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন ছাড়া শিল্পনগরীর প্রায় পুরো এলাকাজুড়ে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে। পিচঢালা সড়ক ফেটে সেখানে ঘাস ও গাছ জন্মেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দ্বিতীয় প্রবেশ গেটটি গাছপালায় ঢেকে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে নেই কোনো ট্রান্সফরমার। ভবনের ভেতরে পড়ে আছে কিছু খোলা যন্ত্রাংশ, মিটারগুলো ঢেকে গেছে লতাপাতায়। এলাকাটি এখন সাপ, বোলতা, মৌমাছিসহ নানা প্রাণীর আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলাতেও একা চলাচল করা কঠিন বলে জানান স্থানীয়রা।

শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল মিয়া বলেন, ‘এখানকার প্লটের দাম আশপাশের এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। তার ওপর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’

প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত রাহুল গুড়া মসলার মালিক রঞ্জিত দাশ জানান, শিল্পকারখানা স্থাপনের ইচ্ছা থাকলেও বর্তমানে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে আমি কারখানা করেছি। শ্রীমঙ্গলে আনার ইচ্ছে ছিল; কিন্তু এখানকার প্লটের দাম অত্যাধিক এবং নিরাপত্তাও দুর্বল। তাই ঝুঁকি নিতে চাইনি।’

শিল্পনগরীর নৈশপ্রহরী বিশ্বজিৎ সরকার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘চারদিকে জঙ্গল হয়ে গেছে। বিশাল এলাকা একা পাহারা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। ট্রান্সফরমার চুরির পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। একাধিকবার চোর-ডাকাতের ঝুঁকির মুখে পড়েছি।’

শ্রীমঙ্গল বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. মুনায়েম ওয়ায়েছ জানান, ২০১৯ সালে বরাদ্দ পাওয়া ৫৬টি প্লটের কোনো উদ্যোক্তাই এখনো কাজ শুরু করেননি। গত অক্টোবরের শেষ দিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু ও বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পুনঃসংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎকে জানানো হয়েছে। গ্যাস সাবস্টেশনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনঃস্থাপনে খরচের হিসাব করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বরাদ্দ পাওয়ার পরও কাজ শুরু করেননি, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া চলছে।’


বর্ণাঢ্য র‌্যালি হলেও এবার হচ্ছে না হারমোনি ফেস্টিভ্যাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বহুসাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজন করা হলেও এবার উৎসবটি স্থগিত করা হয়েছে। অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামী ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য হারমোনি ফেস্টিভ্যাল সিজন–২ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শহরে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিতে খাসি, গারো, ত্রিপুরা, মনিপুরীসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশগ্রহণ করেন, যা শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি করে।

র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহিবুল্লাহ আকনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

র‌্যালি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, শ্রীমঙ্গলে বসবাসরত ২৬টি গেজেটভুক্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য দেশ-বিদেশে তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রতিবছর হারমোনি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়। গত বছর সফলভাবে ফেস্টিভ্যালের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হলেও চলতি বছর অনিবার্য কারণে দ্বিতীয় আসর স্থগিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) নুজহাত ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১৮-২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগান মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। উৎসবটির পরবর্তী তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সিদ্ধান্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে।


দৌলতপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ মাদকসেবির কারাদণ্ড ও জরিমানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ জন মাদকসেবিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামালপুর গ্রামের মৃত ওয়ারেশ মল্লিকের ছেলে সালাম হোসেন (৫০) কে মাদকদ্রব্য সেবনের দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৭ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। একই গ্রামের মৃত কালু মণ্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলামের ছেলে (৪৩) কে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া দৌলতপুর এলাকার মৃত আকসেদ আলীর ছেলে জামরুল ইসলাম (৫০) এবং একই এলাকার এসকেন্দারের ছেলে মেহেদী হাসান (২৮) কে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও ৫০ টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন আদালত।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, “ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ৪ মাদক সেবিকে জরিমানা ও কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এসময় তিনি বলেন সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।”


গোয়ালন্দে টমেটোর বাম্পার ফলন, ভালো দামে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ী জেলায় পদ্মার তীরে বন্যা পরবর্তিতে জেগে ওঠা চরে চাষ করা হয়েছে উন্নত জাতের টমেটো। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম চাষ করা এই টমেটোর এবার বাম্পার ফলন ফলেছে। দামও ভালো পাওয়ায় লাল সবুজ টমেটো হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে। ক্ষেতে উৎপাদিত এই টমেটো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সঠিক দিক নির্দেশনায় উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের কারণে টমেটোর ভালো ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের টমেটো বিউটি প্লাস বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকার মত। হাইব্রিড জাতের টমেটো যেমন বিউটি প্লাস আবাদ করে কৃষকের প্রতি বিঘায় টমেটোর ফলন পাচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ মন করে। এছাড়াও বাজারে টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছে কৃষকেরা।

কৃষক শুকুর আলি জানান, এবার মাচা পদ্ধতিতে হাইব্রিড বিউটি প্লাস টমেটো চাষ করেছি ফলন ভালো হয়েছে আর বাজারে ভালো দামও পাচ্ছি। প্রতি কেজি টমেটো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। এবার আমি আধুনিক পদ্ধতিতে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড টমেটো আবাদ করেছি। হাইব্রিড টমেটো আবাদে খরচ কম লাভ বেশি।

আরেক কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছরে ৭ বিঘা জমিতে হাইব্রিটি বিউটি প্লাস আগাম জাতের টমেটো আবাদ করেছি এবং ভালো ফলনও হয়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে টমেটোর ফলন হচ্ছে প্রায় ১ শত থেকে ১২০ মন করে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছে। ক্ষেতের৷ খরচ বাদ দিয়ে এবার অনেক টাকা লাভ হবে আশা করা যাচ্ছে।

গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামের চাষি সোবান শেখ বলেন, ‘এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা হয়েছে। আমরা ভালো দাম পেয়ে খুশি।’

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানান, চলতি বছরে এই উপজেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে এছাড়াও টমেটোর ফলনও ভালো হয়েছে, বাজারে দামও বেশি পাচ্ছে কৃষককেরা।

তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সেক্স ফরোমোন ফাঁদ দ্বারা ক্ষতিকর পোকা দমন, টমেটোর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই, উন্নত জাত সম্পর্কে ধারণা ও সুষম মাত্রায় সার, কীটনাশক ব্যাবহারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষক লাভের মুখ দেখছেন। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন কৃষকরা।


banner close