কানাই চক্রবর্ত্তী, বাসস
বয়সে অনেক ছোট হলেও শেখ রাসেলের হৃদয়টা ছিল অনেক বড় ও উদার। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের প্রতি ছিল তার প্রগাঢ় ভালোবাসা। শিশু বয়সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর মানসিকত ছিল তার মধ্যে।
তার শিশু সুলভ সমস্ত আচরণ বা কর্মকান্ডের মধ্যে কেবলই সরলতা নয়, আদর্শিক ও দার্শনিক একটা ভাবও ছিল। এমনকি কোন বিষয়ে কঠিন অবস্থানে থাকলেও যুক্তি দিয়ে তাকে বশ করানো যেতো।
কাল ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের ৫৯-তম জন্মদিন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠসন্তান শেখ রাসেলকে নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন, তার (রাসেল) গৃহশিক্ষক গীতালি চক্রবর্ত্তী (দাসগুপ্তা)। ১৯৭২-এর আগস্ট থেকে ১৯৭৫এর ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রাসেলের গৃহশিক্ষক ছিলেন তিনি। গীতালি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের বাঙলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস করছেন। এর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করে ২০০৫সালে অবসরে যান।
শেখ রাসেলকে নিয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি টেলিফোনে কথা বলেছেন ‘বাসস’ এর সঙ্গে। তবে, গীতালি আগেই জানিয়ে দেন, শেখ রাসেল ও তাঁর সম্পর্কটা ছিল এক বিচিত্র সুরে বাঁধা। সেখানে প্রচলিত সুর-তাল-লয় বা ছন্দের বালাই ছিল না। ছিল নিত্য নব নব আনন্দের ও গভীর ভালোবাসার অনুরণিত অনুরাগ। ‘ওর সম্পর্কে আমার মুখে বলা যত সহজ, লেখা তত সহজ নয়। অনুভব গভীর হলে, ভাষা সেখানে অসহায়’ বলেন শেখ রাসেলের এই শিক্ষক।
সাধারণ মানুষের প্রতি রাসেলের কেমন ভালোবাসা ও দায়িত্ব বোধ ছিল তার একটি ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছেন গীতালী। তিনি বলেন, তখন শীতের দিন। ৩২ নম্বরের পাশের বাড়িতে রাসেল নামে আর একটি শিশু ছিল। রাসেল প্রায় সময় তার সাথে খেলতো। এদিন এক বুড়ি (বৃদ্ধা) পাশের বাড়িতে ভিক্ষা করতে আসেন। এসময় বাড়ি থেকে বলা হয়, ভিক্ষা নয়, বাড়ির কি একটা কাজ করে দিলে এক টাকা দেয়া হবে। বুড়িটি রাজি হন। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পর বুড়িকে মাত্র ২৫ পয়সা প্রদান করা হয়। এতে তিনি কান্নাকাটি করতে করতে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। এ ঘটনা কিশোর রাসেলের মনে সাংঘাতিক দাগ কাটে এবং কষ্ট দেয়। রাসেল সেই বুড়িমাকে পরম যতেœ তুলে এনে গেটের সামনে বসিয়ে রাখেন। বলেন আব্বা (বঙ্গবন্ধু) আসলে কথা বলিয়ে দিবেন। বিচার চাইতে হবে। তিনি বিচার করে দেবেন। দুপুরে তাকে খাবারও দেয়া হয়। এ দিকে শীতে বুড়িমার জুবুথুবু অবস্থা। কখন কি হয় বলা যায় না। কিন্তু রাসেলের এক কথা ‘ আব্বা আসলে বিচার হবে। তার পর বুড়িমা যাবেন।’ পরে রাসেলকে প্রস্তাব দেয়া হয়, বুড়িকে যদি রাতের খাবার এবং আরো বেশি টাকা দেয়া হয়, তাহলে ছেড়ে দেয়া যাবে কিনা। সম্ভবত ‘বেশি টাকা দেয়া হবে, এই প্রস্তাবে শেখ রাসেল রাজি হয় বুড়িকে ছেড়ে দিতে। তবে, আব্বা আসলে বুড়ির পক্ষ থেকে এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে বিচার চাওয়া হবে বলে জানান দিয়ে রাখে সে।
পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকের নির্মম বুলেট মাত্র ১১ বছরেই কেড়ে নিয়েছিল ইতিহাসের শেখ রাসেলের প্রাণ।
গীতালি রাসেলকে আদর করে ডাকতেন বুঁচু। রাসেল তার শিক্ষককে সম্বোধন করতেন আপা, আপু এবং শেষ দিকে আপুমনি বলে। তিনি বলেন, ১৯৭২ জুলাই কি আগস্ট মাস থেকে ছোট্ট রাসেলকে ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতেই পড়াতে যেতেন। অবশ্য অল্প কিছুদিন গনভবনেও পড়িয়েছেন। সবশেষ পঁচাত্তরের ১৪ আগস্ট পড়িয়েছেন। এদিনেই ছিল রাসেলকে পড়ানোর শেষ দিন। এদিন রাত ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত তিনি ৩২নং-এর বঙ্গবন্ধু ভবনে ছিলেন। পরের দিন আর সুযোগ হয়নি পড়ানোর। কারণ, এদিন কাল রাতে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মত এই নিষ্পাপ শিশুকেও ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়।
এদিন সন্ধ্যার আগে গীতালি যখন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে পড়াতে যান তখন রাসেল বাড়িতে ছিলেন না। মায়ের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। গীতালি একা একা অপেক্ষা করছিলেন। একটা সময় চলে যাওয়ার কথাও ভাবেন। এমন সময় বঙ্গবন্ধু উপরে এসে স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে বলে উঠেন “মাস্টার তুই একা কেন। ছাত্র কোথায়?” বঙ্গবন্ধু গীতালিকে মাস্টার বলে ডাকতেন। রাসেল বাড়িতে নেই শুনে তিনি গীতালিকে নিচে বঙ্গবন্ধুর গাড়ি আছে, তাতে করে চলে যাওয়ার কথা বলেন। তখন রমা বলে রাসেল আপুকে থাকতে বলেছেন। এসে পড়বে। বঙ্গবন্ধু তখন ফোন করে জেনে নেন এবং গীতালিকে আবার উচ্চস্বরে বলেন ‘মাস্টার তোমার ছুটি নাই। তোমার ছাত্র আসতেছে।’
গীতালি সাধারণত বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠা কন্যা শেখ রেহানার ঘরেই রাসেলকে পড়াতেন। সবসময় তালামারা থাকে এমন একটি কক্ষেও রাসেলকে পড়িয়েছিলেন তিনি। তবে, শেষ পড়ানোটা হয়েছিল সম্ভবত শেখ রেহানার কক্ষে। পড়তে এসেই রাসেল আপুকে জানায় ‘ওদিনতো কোক খাইতে দেন নাই। আইজ কোকটা আনি। জামাল ভাই খাইতে পারে নাই। কোল্ডড্রিংকস বিশেষ করে কোকের প্রতি রাসেলের ছিল সাংঘাতিক দুর্বলতা। প্রতিদিন একটি করে কোক তার জন্য বরাদ্ধ থাকতো। তবে, প্রতিদিন যাতে রাসেল কোক না খায় সে ব্যাপারে চেষ্টা করতেন গীতালি। বুঝাতেন কোকে দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। আরো আরো অনেক ক্ষতি হয়। পরে সিদ্ধান্ত হলো প্রতিদিন খাওয়া হবে না। যেদিন খাবেন অর্ধেক। পরের দিকে দেখা যেতো ফ্রিজে কোক থাকতো না। শেখ জামাল ফ্রিজে রাখা রাসেলের জন্য বরাদ্ধকৃত কোক কখনো কখনো খেয়ে ফেলতেন। এ নিয়ে রাসেল ‘জামাল ভাইয়া তার কোক খেয়ে ফেলেন,’ এমন অনুযোগ করতেন আপুর (গীতালি) কাছে। একসময় জামাল ভাইয়ের কোক খাওয়া বন্ধের জন্য অভিনব এক পন্থা আবিষ্কার করে রাসেল। নিচে নেমে লাউ গাছের বড় পাতা ছিড়ে এনে, তা দিয়ে ঢেকে রাখতেন কোকের বোতল। যাতে জামাল দেখতে না পান এর ভেতর কোক আছে।
না, সেদিন রাসেলকে কোকটা খেতে দেয়া হয়নি। পরের দিন খাওয়ার কথা বলা হয়। পড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেন তারা। তবে, কোক খাওয়া না হলেও শাস্তি হিসাবে দুটো কানমলা খেতে হয়েছিল রাসেলকে। কানমলা এবং কানধরে উঠবস করার শাস্তিটাও কিন্তু রাসেল নিজেই নির্ধারণ করেছিলেন। তবে, কথা ছিল শাস্তির সময় দরজা বন্ধ থাকবে এবং বড়রা যাতে কেউ না দেখে। গীতালি বলেন, রাসেল যখন নিজেই নিজেই কানমলা দিত তখন কান লাল হয়ে যেতো। কখনো ফাঁকি দিতে চাইতো না। এজন্য গীতালীই বেশির ভাগ কান মলে দিতেন। পচঁত্তরের ১৪ আগস্টের এ রাতেও অংক ভুল করে রাসেল। এজন্য কানমলা না কানধরে উঠবস করতে হবে জানতে চায় রাসেল। গীতালি বলেন, তিনি নিজেই কানমলা দেবেন। রাসেল তখন হাসতে হাসতে বলে, আপনার কান মলাতো পিপড়ার কামড়ের মত। কোন ব্যাথাই পাওয়া যায় না।’ গীতালি জানান, এদিন তিনি মোট দুটো কানমলা দিয়েছিলেন রাসেলকে। রাত সাড়ে ১১টায় তিনি বঙ্গবন্ধুর বাড়ি থেকে রওনা দেন। সে রাতে তিনি ৭ নং মিন্টুরোডে তার জ্যাঠামশায় তখনকার খাদ্যমন্ত্রী ফণিভূষণ মজুমদারের বাসায় অবস্থান করেন। ৩২ নম্বর ছাড়ার আগে ঘূর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি এ বাড়িতে তার পদচিহৃ আর পরবে না। রাসেলেরও আর জীবনে কোক খাওয়া হবে না। রাসেলকে কোক খেতে না দেয়ার এই মর্মবেদনা সারা জীবন বয়ে যেতে হবে।
গীতালি বলেন, ‘একদিন, বুঁচুকে ৫টি অঙ্ক দেয়া হয় করার জন্য। অঙ্কে ছিল ওর ভীষণ অনীহা। ৫টা অঙ্ক দেবার পর সে যখন অঙ্কগুলো করেছিল, তখন একটা অঙ্ক সাহায্য নিয়ে করা হয়েছিল বলে তিনি রাসেলকে আরও একটা অঙ্ক দেন। এতে বুঁচু ক্ষেপে গিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। একটু পরে সে মাকে সঙ্গে করে পড়ার ঘরে এলো। ঘরে ঢুকেই কাকীমা (বঙ্গমাতা) খুব রাগের সুরে গীতালিকে বললেন, ‘কি রে তুই না-কি রাসেলকে ৫টা অঙ্ক করার কথা বলে ৬টা অঙ্ক দিছিস?’ বলেই একটা চোখ টিপ দিলেন। এরপর বললেন, ‘এ রকম আর করবি না কখনও।’ আমিও মুখ ভার করে মন খারাপ করে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম।’ রাসেলের যখন পড়তে ইচ্ছে করত না তখন পড়ার জন্য জোর করলেই বলত, ‘কাল থিকা আপনি আর আসবেন না, আমি আপনার কাছে আর পড়ব না।’ গীতালীও ওর মতো মুখের ভাব করে বলতাম, ‘আচ্ছা আর আসব না। তবে, আজ যখন আসছি তখন কষ্ট করে একটু পড়। কাল থেকে আর আসব না। সেও বলত, ‘আসবেন না।’
তিনি বলেন, এরপরের ঘটনা আরও মজার ছিল। আসার সময় আমি সেই সিরিয়াস মুখ করে কাকীমাকে গিয়ে বলতাম, ‘কাকীমা কাল থেকে আর পড়াতে আসছি না, আজই শেষ।’ বলেই কাকীমাকে একটা প্রণাম করে ফেলতাম। রাসেল এ সময় কাকীমার শাড়ির ভেতরে লেপটে থাকত। ব্যাস শাড়ির ভেতর থেকে রাসেল কাকীকে ঠেলত আর বলত, ‘মা আসতে বল কালকে, আসতে বল।’
এক দিন শেখ রেহানার ঘরে রাসেলকে পড়াচ্ছিলেন তিনি। পড়ার মাঝখানে রোজ চা-জলখাবার দিয়ে যেত রমা বা ফরিদ। এরা দু'জন-ই বেশিরভাগ সময় চা-খাবারটা দিয়ে যেত। চায়ের সাথে যে দিন মিষ্টি থাকতো, সেদিন শুধু চা টাই খেতেন গীতালি। মাঝে মাঝে হয়তো বা একটা মিষ্টি খেয়ে নিতেন। হঠাৎ পড়তে পড়তে রাসেল জিজ্ঞেস করলো, আপা, আপনি এক দিনও মিষ্টি খান না কেন ? গীতালি বলেন, ক্যানো, খাইতো। জবাবে রাসেল বলে, মাঝে মাঝে খান। রোজ মিষ্টি খান না কেন ? আমি মিষ্টি পছন্দ করি না যে, তাই খাই না। রাসেলেরও তাৎক্ষণিক জবাব “আমিওতো পড়তে পছন্দ করি না, তবে আমারে রোজ রোজ পড়ান ক্যান ?
পড়ার সঙ্গে মিষ্টি খাওয়ার কি সম্পর্ক জানতে চাইলে দু'ঠোঁটে দুষ্টুমির মিষ্টি হাসি দিয়ে হাতের কাঠ পেন্সিলটা দু'আঙ্গুলের ফাঁকে, সেটা ডানে বামে দুলিয়ে দুলিয়ে সম্পর্ক আছে বলে জানায় রাসেল। এসময় রাসেল রমাকে মিষ্টির প্লে¬টটা নিতে মানা করে বলে আপা মিষ্টি খাবে, তুই মিষ্টি নিবি না। মিষ্টিটা খাবেন না, নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেই বলে, আপনি মিষ্টি পছন্দ করেন না বলে মিষ্টি খান না, আমিওতো পড়তে পছন্দ করি না। তবে আমিও পড়বো না। একথা বলেই, হাতের কাঠ পেন্সিলটা টেবিলের উপর রেখে বইখানা বন্ধ করে দেয় রাসেল। এর আগে পড়া লেখা কে আবিষ্কার করেছে, তা নিয়ে ছিল তার রীতিমত গবেষণা। তাকে পাওয়া গেলে রীতিমত মারার হুমকিও দিতেন রাসেল।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা তথ্য অফিসের সমন্বয়ে এবং ইউনিসেফের সহায়তায় ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন এনডিসি ৩.০ বা জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান নির্ধারণের লক্ষ্যে কিশোর কিশোরী ও তরুণদের নিয়ে সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউজে মঙ্গলবার দিন ব্যাপি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল এর সভাপতিত্বে এবং ইউনিসেফের সোসাল এন্ড বিহেভিয়র চেঞ্জ অফিসার উম্মে হালিমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসের উপ পরিচালক শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ। বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের সিলেট অফিসের চীফ অব ফিল্ড অফিসার কাজী দিল আফরোজা ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মোহাইমিনুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তাই পরিবেশ বিপর্যয় এড়াতে আমাদের জীবন যাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। বেশি করে গাছ লাগাতে হবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এমনভাবে ভোগ করতে হবে যেন সেগুলো দিয়ে কয়েক প্রজন্ম চলে যায়। বৈশ্বিক বাণিজ্য হচ্ছে পরিবেশগত পরিবর্তনের অন্যতম মাধ্যম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ভ্যালেনটিনা স্পিনেডি, কমিউনিকেশন অফিসার নুসরাত শবনম তুর্ণা, ইউরিপোর্ট অফিসার সিহাব উদ্দিন সানি এবং তরুণ জলবায়ুকর্মী ফাজানা ফারুক ঝুমু।
কিশোরগঞ্জে ভৈরবে দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রতিনিধিকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক সোহেলুর রহমানকে হত্যার চেষ্টায় কুখ্যাত মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী শাহিনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।
সাংবাদিক সোহেলুর রহমান ভৈরব প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ভৈরব প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় ভৈরব প্রেসক্লাব, টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন, বিএমইউজে ভৈরব উপজেলা শাখাসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্ত শাহিনসহ তার মূল হোতাদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
লিখিত অভিযোগে সুত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই সোমবার সাংবাদিক সোহেলুর রহমান তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুখ্যাত ও একাধিক মাদক মামলার আসামি শাহিনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে পোষ্ট দেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিন তার দলবল নিয়ে গভীর রাতে ভৈরবপুর মধ্যপাড়ায় অবস্থিত সোহেলুর রহমানের বাস ভবনে গিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় । এঘটনায় রাতেই বিষয়টি ফোনে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কে অবগত করেন। পরবর্তীতে আজ সকালে সোহেলুর রহমান বাড়ি থেকে বের হয়ে ভৈরব বাজারে যাওয়ার পথে মনামরা ব্রীজ সংলগ্ন জান্নাত ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনতে গেলে অভিযুক্ত শাহিন ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসে । এসময় আশপাশের লোকজন এসে শাহিনকে দুরে সরিয়ে দিয়ে সাংবাদিককে রক্ষা করে ।
এবিষয়ে সাংবাদিক সোহেলুর রহমান জানান, মাদক ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে আমি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। শাহিন মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী। গত কয়েক দিন আগে জেল থেকে জামিনে এসে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে তার দলবল নিয়ে গভীর রাতে আমার বাড়িতে এসে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় । আজ সকালে আবার ভৈরব বাজারে যাওয়ার পথে জান্নাত ফার্মেসীর সামনে ধারালো অস্ত্র আমাকে হত্যার চেষ্টা করে । এসময় লোকজন তাকে বাধাঁ দিলে সে পালিয়ে যায়। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো জনগণ ও ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া এসেছে। আমরা বলেছি, এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে এবং এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচিত যেই সরকারে আসুক, তাকে এই সংস্কার বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে। আমরা আশা করি, ৫ আগষ্টের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে জেলা শহরের রাজবাড়ী সড়কে আয়োজিত পদযাত্রা শেষে গাজীপুর মহানগর ও জেলা এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সেনাবাহিনীকে রাজমিস্ত্রীতে পরিণত করেছিলেন। পুলিশকে রাজনৈতিক লাঠিয়ালে পরিণত করেছিলেন। এখন পুলিশ সংস্কার হচ্ছে, যাতে কেউ পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে না পারে। সেনাবাহিনীকে আধুনিক করতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, আমরা এনসিপি সুযোগ পেলে সেনাবাহিনীকে সমৃদ্ধ করব।
এনসিপির সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আর বক্তব্য দেন, অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, এম এম সোহাইব, এম এম মুহিত, নাহিদা সারওয়ার নিভা প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে ডা. তাসনিম জারা, শামান্তা শারমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই। আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ হিসেবে লড়াই চলমান আছে। আজকেও দেখেছেন গাজীপুরের সন্ত্রাসীরা টহল দিচ্ছে মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভয় দেখিয়ে নাগরিক পার্টি জাতীয় গণঅভুত্থানের শক্তিকে তারা রুখে দেবে।
তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জেও আমাদের বাঁধা দিয়ে রাখা যায় নাই। আমরা গোপালগঞ্জের মাটিতে গিয়েছি। আমরা গাজীপুরের মাটিতেও এসেছি। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আমরা গিয়েছি, যাবো। আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণঅভুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের সঙ্গে থাকবেন তাদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
এসময় স্থানীয় এনসিপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শ্রীপুরের মাওনায় আয়োজিত পদযাত্রায় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।
নরসিংদীতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে শিল্পী আক্তার নামে এক তরুণী তার স্বামীর বাড়িতে অনশন করছে। ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের বাড়িতে। অনশনরত শিল্পী আক্তার নরসিংদীর পলাশ উপজেলার দড়িহাওলা গ্রামের জালাল মিয়ার মেয়ে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে সাতপাখিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে তরুণী অবস্থান করছে। এ খবর পেয়ে শিল্পী আক্তারের স্বামী ও তার পরিবারের লোকেরা ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনশনরত শিল্পী আক্তারের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে লেবালন প্রবাসী মো: ইমরান মোল্লার সাথে মোবাইল ফোনে তার পরিচয় ঘটে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় ২ মাস পূর্বে ইমরান মোল্লা প্রেমের টানে লেবালন থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসে। অতপর গত ১২.০৬.২৫ইং তারিখে তাদের পরিবারের সম্মতি না নিয়ে ৩ লাখ টাকা কাবিনমুলে ইসলামী শরিয়ত মতে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী নরসিংদী শহরের তরোয়া মহল্লায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। সুখেই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু শিল্পী আক্তারের পরিবার গরিব বিধায় তার শ্বশুর-শাশুরী বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।
প্রায় দেড় মাস ঘর সংসার করার পর শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা পরিবারের চাপ সহ্য করতে না পেরে সে তার স্ত্রী শিল্পী আক্তারকে ফেলে রেখে পিত্রালয়ে চলে যায়। এদিকে অসহায় শিল্পী আক্তার কোন উপায়ন্তর না দেখে তার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর দাবি নিয়ে অনশন করতে থাকে। পরে শিল্পী আক্তারের স্বামী ইমরান মোল্লা ও তার পরিবারের লোকেরা এসে শিল্পী আক্তারকে মারধর করতে থাকে। এ সময় শিল্পী আক্তার ত্রিপল ৯৯৯ এ খবর দিলে শিবপুর থানা পুলিশ অনশনরত শিল্পী আক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশের সহযোগিতায় তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ইমরান মোল্লাকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে সবকুল হারিয়ে শিল্পী আক্তার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। না পারছে পিত্রালয়ে থাকতে, না পাচ্ছে স্বামীর স্বীকৃতি। সে স্থানীয় প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
শিবপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, এব্যাপারে কোন পক্ষ থেকে অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা দেবিদ্বারে গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদককে লাল কার্ড দেখিয়ে দেশপ্রেমের শপথ নিয়েছে ২০০ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপজেলার বরকামতা নলিণী শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে সংগঠনের সদস্যদের জমানো টিফিনের টাকায় গাছের চারা কিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেলের সভাপতিত্বে গাছের চারা বিতরণে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জ্যোৎস্না রানী কর, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ ভূইয়া, দেবিদ্বার শাখার সভাপতি ইয়াছিন মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক রাগীব মাহতাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বিন জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ সরকার, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাহেদ ইসলাম, সদস্য ফারহান, শাকিল, সোলাইমান, ফাহাদ প্রমুখ।
লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল জানান, সংগঠনটির সব সদস্য শিক্ষার্থী। তারা এক দিনের টিফিনের জমানো টাকায় গাছের চারা কিনে সারাদেশে বিতরণ করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গাছের চারা বিতরণ কর্মসূচি চলমান। তাঁরা এবছর বিনামূল্যে ৫০ হাজার গাছের চারা বিতরণ করবেন। তিনি শিক্ষার্থীদের গাছের চারা হাতে নিয়ে মাদক, বাল্য বিবাহকে না ও দেশপ্রেমে জাগ্রত হওয়ার শপথ পাঠ করান।
পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত নদ নদী গুলোতে ক্ষতিকর গ্যাস ট্যাবলেট বা রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষ। এতে মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এসব মাছ বিক্রী হচ্ছে হাট বাজারে। বিষাক্ত জীবানু আক্রান্ত এসব মাছের ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের দেহে। পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় ৪৫ টি নদ নদী। এসব নদ নদীতে রয়েছে নানা প্রজাতির দেশী মাছ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নদীতে পানি না থাকা এবং নদ নদীতে বোরো ধানের আবাদের কারণে অনেক নদীতে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায়না। অনেক প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তের পথে। এসব নদ নদীর মাছ মুলত: এ অঞ্চলের মানুষের আমিষের চাহিদা মিটাতে বিরাট ভূমিকা রাখে। মাছ ধরেই জেলায় প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক জেলে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন। এসব নদী থেকে পয়া, গচি, মাগুর, শিং, শোল, বৈরালী, চিতল, চিলি,পুঁুটি,শাটি সহ আরও বিভিন্ন প্রকার মাছ পাওয়া যায়। অনন্য স্বাদের এসব মাছ হাট বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রী হয়। করোতোয়া, মহানন্দা, ডাহুক, চাওয়াই, তালমা,পাথরাজ হচ্ছে এই জেলার সবচেয়ে বড় নদী। এসব নদীতে সারা বছর দেশী মাছ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এসব নদীতে রাতের অন্ধকারে গ্যাস ট্যাবলেট বা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করা হয়। জেলে এবং স্থানীয় অসাধুরা এভাবে মাছ শিকার করছেন। অনেকে বলছেন জেলেরা রাতের বেলা প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে নদীর একটি বিশেষ স্থানের পানিতে গ্যাস ট্যাবলেট অথবা বিষ মিশিয়ে দেয়। ১ থেকে দু ঘন্টা পর মাছেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক মাছ মারাও যায়। মাছেরা অসুস্থ হয়ে পানিতে ভেসে বেড়ায়। এসময় জাল দিয়ে অসুস্থ এবং মৃত মাছগুলোকে তুলে আনেন তারা। এই বিষ বা গ্যাস ট্যাবলেট কয়েক কিলোমিটার জুড়ে নদ নদীর পানিতে মিশে যায়। নদীর মৎস্য অভয়াশশ্রমগুলোর আশে পাশেই বেশি বিষ প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় সচেতন মহল এবং পরিবেশ কর্মীরা বলছেন বিষ প্রয়োগে নদ নদীতে মাছ শিকারের ফলে এর নানা ধরনের খারাপ প্রভাব পড়ছে। নদ নদীর মাছ সহ জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। এসব মাছ জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রী করে স্থানীয় জেলে এবং মাছ ব্যাবসায়িরা। বিষ আক্রান্ত এসব মাছ খেলে স্বাস্থ্যগত সমস্যার আশংকাও করছেন তারা। বোদা উপজেলার ফুলতলা গ্রামের শামসুল ইসলাম জানান, সরকারী ভাবে করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে মাছের অভয আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে এসব আশ্রমে দেশী মাছ সংরক্ষন করার কথা থাকলেও সমিতির অন্তর্ভুক্ত জেলেরা যোগসাজশে রাতের আঁধারে আশ্রমের মা মাছ শিকার করে পাশ্ববর্তী জেলায় বিক্রি করছে। প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা কারিগরের নির্বাহী পরিচালক সরকার হায়দার জানান, পঞ্চগড়ের ৫০ নদ নদী থেকে কয়েকশটন মাছ উৎপাদিত হয়। যা এই জেরার আমিষের চাহিদার একটি বড় অংশ পুরন করে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অবৈধ পন্থায় মাছ শিকারের কারণে ধীরে ধীরে দেশী মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জেলে এবং নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এটা ভয়ংকর অপরাধ। এই মাছ খেয়ে মানুষের ক্যানসার সহ নানা রকম ভয়ংকর রোগ হতে পারে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন নদ নদীতে বোরো আবাদে সার কিটনাশক প্রয়োগ করা হয়। অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এটা অপরাধ। এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন কে অবহিত করা হয়েছে। তারপরও অবৈধ ভাবে মাছ শিকার থামেনি। এ বিষয়ে জেলে এবং নদী পাড়ের মানুষদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কে এম হালিম বলেন বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। উপজেলা মৎস্য অফিসে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জেলেদের কাছে বার্তা পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় টিনশেড ঘরে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসদাইর এলাকার তারা মিয়ার টিনশেড ঘরের ভাড়াটিয়াদের বাসায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবরপেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে আগুনে বাড়ির মালামাল পুড়ে গেছে। আগুনে অন্তত ২০টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান বলেন, মন্ডলপাড়া ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত্র হয়ে। তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে উজানের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই। মঙ্গলবার দুপুর ২ টা দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর পাটাতনের অনেক স্থানে ২-৩ ইঞ্চি পানি উঠতে শুরু করেছে।
রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরতে আসা পর্যটক নাসির বলেন, বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর তাই ঘুরতে আসলাম কিন্তু এসে কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেলো ব্রীজের উপর পানি আসতে শুরু করেছে।
রাঙামাটি পর্যটন বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পেলে প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে যায়। আজকে সকাল থেকে সেতুর পাটাতনে পানি ছুই ছুই অবস্থা। যেকোন সময় সেতু পানিতে তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সেতু ডুবে গেলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায় ,পর্যটকরা আর ঝুলন্ত সেতুতে বেড়াতে আসেনা।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারনে উজানের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারনে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে পানি প্রায় ছুই ছুই।মনে হচ্ছে শীঘ্রই পাটাতন ডুবে যাবে। তিনি বলেন,যদি সেতু ডুবে যায় নিরাপত্তার স্বার্থে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দর্শনার্থীদের চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখবো।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ সময় হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৯ এমএসএল। হ্রদে পানি রয়েছে ১০৫.২৪ এমএসএল। ৫টি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হলেও ১০৫ এমএসএল হলেই প্রতি বছর ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগের কথা বললেও কার্যকর কোনও ভূমিকা চোখে পড়েনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব আমাদের একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু পদক্ষেপের কারণে এ অর্জন বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের আয়োজনে এবং সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিবেটিং ক্লাবের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত “জুলাই স্মৃতি প্রথম আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন,“যে প্রজন্ম ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক আন্দোলনে যুক্তি, বুদ্ধিমত্তা এবং ত্যাগের মাধ্যমে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল আজকের এই বিতার্কিক তরুণরাই সেই চেতনার ধারক। আমরা চাই, যুক্তির চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির আলোয় শিক্ষার্থীরা গড়ে উঠুক মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বে।”
এর আগে ফার্মেসি বিভাগ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল প্রতিযোগিতায় ফার্মেসি বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ রানার আপ হয়। তানজিম পাটোয়ারী ‘ডিবেটার অব দ্য ফাইনাল’ এবং আশিকুর রহমান আকাশ ‘ডিবেটার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান। সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি নাহিদ হাসান রাসেল এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৮ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মনিজা খাতুন, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বেইলর এবং নয়াপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ০৪ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৬.৫ কি.মি এলাকার প্রায় ২০০০ টি আবাসিক বার্ণারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে, ২”ডায়া বিশিষ্ট ২১৫ ফিট, ১.৫" ডায়া বিশিষ্ট ৫০ ফিট, ১.২৫" ডায়া বিশিষ্ট ৭০ ফিট এমএস লাইন/পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়। অবৈধ বিতরণ/সার্ভিস লাইন উচ্ছেদপূর্বক উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
একই দিনে, আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ-নারায়ণগঞ্জ এর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টীম কর্তৃক আবিবি-নারায়ণগঞ্জ এর অধীনস্থ জোবিঅ-মুন্সীগঞ্জ এবং আবিবি-সোনারগাঁও এর আওতাধীন জোবিঅ-মেঘনাঘাট এলাকায় ভোর ৬.০০ টা থেকে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে ১. আপন বোর্ড মিলস (৩৭০-০০০০২৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে পোর্টগুলো কিলিং এবং ওয়েল্ডিং করা হয়)। ২.স্টার ফিশিং এন্ড টুয়াইন ফ্যাক্টরী (৮৭০-০০০০৪৬) পরিদর্শনকালে পরিলক্ষিত অতিরিক্ত পাজিং পয়েন্ট কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৩. আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলস লিঃ (৩৭০-০০০০০৯) (হাউস লাইনে অতিরিক্ত পোর্ট পরিলক্ষিত হওয়ায় পোর্টগুলা কেটে ওয়েল্ডিং করে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়। ৪. এভারেস্ট পাওয়ার জেনারেশন লিঃ-এর গ্রাহক আঙ্গিনা পরিদর্শনকালে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি এবং ৫. মেসার্স তন্ময় ফিসিং নেট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ পূর্বের বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহক। পরিদর্শনের লক্ষ্যে গ্রাহক আঙ্গিনায় প্রবেশ করলে গ্রাহক প্রতিনিধি কর্তৃক বাধা প্রদান করায় পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি।
১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।
‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।
১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’
কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে খাটিয়া (গরু বা ছাগল বেঁধে রাখার খুটিতে আঘাত করার বস্তু) দিয়ে আঘাত করে হত্যার দায়ে মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওই গৃহবধুর নাম রানী বেগম। তিনি জেলার মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আনিসুর রহমান সাকিদারের মেয়ে।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
আদলত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোস্তাফিজুর তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী রানী বেগমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে কাঠের খাটিয়া দ্বারা মাথায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত এবং জখম করে হত্যা করেন। উক্ত ঘটনায় রানীর বাবা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষী এবং আসামি পক্ষ থেকে ২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় মামলায় আসামি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ।
পাবনার সাঁথিয়ায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার হাতে দুই ডাকাত আটক হয়েছে।আটককৃতরা হলেন সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুণ্ডুরিয়া গ্রামের সুজন (২২) ও একই গ্রামের বেলানন ব্যাপারীর ছেলে রাজীব হোসেন (২০)।
তাদের সাঁথিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে জনতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের চাউল পট্টিতে হানা দেয় দুই যুবক। তারা চাউল পট্টিতে খান রাইস মিলের মালিক শামসুর রহমানের দোকানে ঢুকে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও জনতা এগিয়ে এসে ডাকাতদের হাতেনাতে খেলনা পিস্তলসহ আটক করে। আটকৃত ডাকাতদের জনতা সাঁথিয়া থানা পুলিশর কাছে হস্তান্তর করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডাকাত দুইজনকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।