বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
২১ কার্তিক ১৪৩২

সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করায় বন্ধুকে খুন

গ্রেপ্তার আসামি রাসেল
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২২ ১৭:৩৬

সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করায় জামিনে বেরিয়ে এসে বন্ধুকে খুনের অপরাধে রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেলকে (৩১) নোমে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর মিরপুর থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে গ্রেপ্তার করেছ।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব ত্যথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি বলেন. গত ১ জুন দুপুর ১২ টার দিকে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ওভার ব্রীজের উপর রাকিব হোসেনকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। পরে এ ঘটনায় রাকিব এর বড় ভাই শাকিল হোসেন সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা করেনে। মামলার অভিযোগপত্রে প্রধার আসামি করা হয় রাসেলকে। মামলার পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেল এর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে গতকাল

সোমবার তাকে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ৭ বছর আগে চক বৌদ্ধনাথপুর এলাকার লাবণ্য সিদ্দিকা সাথীর (২৬) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের রেদোয়ান আহমেদ রোজ নামে ৫ বছরের এক সন্তান রয়েছে। গত ২৩ মার্চ দস্যুতার অপরাধে তাকে নাটোর সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর পর থেকে সে জেলহাজতে ছিল। সে জেলহাজতে থাকাবস্থায় স্ত্রী সাথী রাসেলকে তালাক দিয়ে তার বন্ধু রাকিবকে বিয়ে করে। রাসেল এ সংবাদ পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়। সে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাকিবকে খুন করা পরিকল্পনা করে। গত ৩১ মে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে রাকিবকে খুঁজতে থাকে। পরে ১ জুন দুপুরে রাকিবকে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নম্বর ওভারব্রিজের উপর কৌশলে ডেকে নিয়ে আসে। রাকিবে ওভারব্রিজে এসে রাসেলকে দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় রাসেল তার সহযোগীদের সহায়তায় রাকিবকে ধাওয়া করে তার পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। রাকিবকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

তিনি আরো জানান, মো. রাসেল এর বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, চুরি, নারী নির্যাতন, অন্যান্য ধারায় ১৪টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ২টি মামলা তদন্তাধীন ১২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে

বিষয়:

টেকনাফে বিএনপির নেতার মরদেহ ব্রিজ থেকে উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে মোহাম্মদ ইউনুস সিকদার (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী সংলগ্ন সড়কের আনোয়ার প্রজেক্ট নামক স্থান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ইউনুস সিকদার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলী পাড়া এলাকার মো. কাশেমের ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য (মেম্বার) এবং উপজেলা আরাফাত রহমান খোকো ক্রীড়া সংসদের টেকনাফ উপজেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

জানা গেছে, সকালে পথচারীরা রঙ্গিখালী আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকার পাশে এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। তার পরনে শুধু একটি ফুল প্যান্ট ছিল, তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

নিহতের স্বজনরা জানান, ইউনুস সিকদার দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি আরাফাত রহমান খোকো ক্রীড়া সংসদের উপজেলা সভাপতি হিসেবে ক্রীড়াঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন। তবে তিনি কীভাবে রঙ্গিখালী এলাকায় গিয়েছিলেন এবং মৃত্যুর কারণ কী- তা তারা জানাতে পারেননি। স্বজনরা দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) হিমেল রায় বলেন, ‘সকালে রঙ্গিখালী মৎস্য ঘেরের পাশে স্থানীয়রা এক ব্যক্তির মৃতদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।’

এদিকে, মোহাম্মদ ইউনুস সিকদারের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী। তিনি এক বিবৃতিতে দ্রুত হত্যার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।


চান্দিনা-বাগুর বাসস্ট্যান্ডে আবারও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা-বাগুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে সওজ বিভাগ। বুধবার সকাল ১১টার দিকে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের উভয় পাশে সওজের জায়গা দখল করে প্রভাবশালী মহল বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এসব দোকানিদের কাছ থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করত প্রভাবশালীরা।

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ১৬ নভেম্বর একই স্থানে প্রথমবারের মতো অভিযান চালিয়ে প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রশাসন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পুনরায় একই স্থানে নতুন দোকান গড়ে ওঠে। পরে গত ১৮ মে দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালিয়ে আবারও প্রায় দুই শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়।

তবে মাত্র ছয় মাস না যেতেই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পুনরায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় তৃতীয়বারের মতো এই অভিযান পরিচালনা করে সওজ বিভাগ।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম ভূইয়া। অভিযানে সহযোগিতা করেন হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ থানার ওসি রুহুল আমিন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর একটি টিম।

সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘মহাসড়কের চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কেউ যেন পুনরায় সরকারি জায়গা দখল না করতে পারে, সে বিষয়ে আমরা নিয়মিত নজরদারি রাখব।’

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসনের বারবার উচ্ছেদ অভিযানের পরও একই স্থানে অবৈধ দোকান গড়ে ওঠা দুঃখজনক। তারা দখলদারদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।


সরকার পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবস্থা প্রবর্তনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: শিল্প উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সরকার দেশীয় শিল্পের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি চলমান ব্র্যান্ড সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য এটলাসের নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ ইলেকট্রিক বাইক উৎপাদন ও বিপণনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে টঙ্গীর এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় নিজস্ব ব্র্যান্ড ‘এটলাস ইভি’ নামক ইলেকট্রনিক মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণ কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্তিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শিল্প উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবস্থা প্রবর্তনে ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটলাস বাংলাদেশের মতো একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের এই উদ্যোগটি ইলেকট্রিক ভেহিকেল সংক্রান্ত জাতীয় নীতি বাস্তবায়নে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল আমাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করবে না জীবাশ্ম জ্বালনির পেছনে ব্যয় হওয়া মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ ইস্পাত প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আলমসহ এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ডিলাররা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা কারখানা সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।


ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের জমি অধিগ্রহণ শুরু

৪-লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস এম শাহীন, বরিশাল

দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা সেতুর প্রত্যাশিত সুফল থেকে বঞ্চিত হলেও অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটছে। ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পের অধীনে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উদ্যোগে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি, রহমতপুর ও মাধবপাশা ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় মোট ৪০.৭৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। জমির মালিকদের দ্রুত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দাবির আবেদন দাখিলের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে এবং শিগগিরই ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেন বরিশালের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সমাপ্তি রায়।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলাধীন এলাকার জমি অধিগ্রহণের নোটিশ উপজেলা নির্বাহী অফিসে সাঁটানো হয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে নোটিশ বোর্ডে সংশ্লিষ্ট জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর দেওয়া হয়েছে, যাতে জমির মালিকরা সহজেই নিজেদের জমি শনাক্ত করে আবেদন করতে পারেন। আমরা পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও জনবান্ধবভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, ভাঙ্গা-কুয়াকাটা মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে আরও গতিশীল, এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

উল্লেখ্য, বরিশাল-ফরিদপুর এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলার মানুষের মূল যোগাযোগ পথ। ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতু ও সংযুক্ত এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পুরোপুরি পেতে হলে এই মহাসড়কের উন্নয়ন অপরিহার্য।

২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে বরিশাল অঞ্চলের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনা, যানজট ও ভোগান্তি বেড়েছে। বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের গতি কমে যাওয়ায় যাত্রীদের সময় ক্ষয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি খুব শিগগিরই চারলেনে উন্নীত হবে বলে আমরা আশাবাদী। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। ঢাকা থেকে বরিশাল ও উপকূলীয় জেলাগুলোর যাতায়াত সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনাও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আশা করছে, ভাঙ্গা-কুয়াকাটা ৪ লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতুর প্রকৃত সুফল অবশেষে তারা ভোগ করতে পারবে।


কুমিল্লায় শিক্ষার্থী তুহিন হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মেধাবী ছাত্র মো. তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিহত তুহিন (১৭) বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং শ্রীপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের পুত্র। গত ২০ অক্টোবর পাশের গ্রাম গোবিন্দপুরের বখাটে সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুহিনকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। পরে গরুর খামারে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে।

স্থানীয়রা খবর পেয়ে তুহিনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।

ঘটনার পর নিহতের পিতা মোসলেম উদ্দিন ২৩ অক্টোবর বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম বাবু এখনো গ্রেফতার হয়নি।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে বুড়িচং এরশাদ কলেজের শিক্ষার্থী, নিহত তুহিনের পরিবার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মানববন্ধন করেন। পরে তারা কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘ঘাতক সাইফুল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় কুমিল্লা থেকে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।এসময় উপস্থিত ছিলেন ইষ্টার্ণ ইয়াকুব প্লাজার সভাপতি মঞ্জুর আলম, সমাজসেবক ইকবাল হোসেন, রাসেদ, তানজিনা, সাব্বির, ফারুকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। ভিডিও ও তথ্য চিত্রে কুমিল্লা থেকে তরিকুল ইসলাম তরুন।


মাধবপুরের একটি রাস্তা এক বছর ধরে পানির নিচে, ভোগান্তি চরমে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি গুরুত্বপূর্ণ এলজিইডি রাস্তা দীর্ঘ এক বছর ধরে পানির নিচে ডুবে আছে। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকা ও সরকারি উদ্যোগে ভরাট কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে থমকে গেছে তাদের পথ চলাচল।

উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের কমলপুর হযরত শাহজালাল আলিয়া মাদ্রাসা থেকে গোপীনাথপুর পর্যন্ত প্রায় ১.৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তাটি বর্তমানে রজব আলী টেইলারের বাড়ির অংশে সম্পূর্ণ ডুবে আছে। ওই এলজিইডি রাস্তার আইডি নং ৬৩৬৭৩৫০২৩।

এই রাস্তাটি দিয়ে স্থানীয় ৮টি গ্রামের (কমলপুর, নয়নপুর, দেবীপুর, কালিকাপুর, রামনগর, চৈতন্যপুর, গোপীনাথপুর ও হরিণখোলা) প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। বিশেষ করে হযরত শাহজালাল আলিয়া মাদ্রাসা, আজিজুর রহমান স্কলার একাডেমি ও গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এটি তাদের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় কিছু ব্যক্তি রাস্তার পাশের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তারা মানেননি। ফলে বর্ষাকালে এলাকাটি তীব্র জলাবদ্ধতায় ডুবে যায় এবং কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, রাস্তাটি সংস্কারে বিভিন্ন সময়ে আমরা আবেদন করেছি, কিন্তু এখনো কোনো কাজ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী টেইলার বলেন, আগের চেয়ারম্যান কিংবা বর্তমান চেয়ারম্যান কেউই এ বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। আমরা চাই জরুরি ভিত্তিতে এটি মেরামত করা হোক।

মাধবপুর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউন্নবী বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হলাম। এই রাস্তা পাকা করার জন্য স্থানীয় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আনিসুর রহমান আবেদনের ভিত্তিতে আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। জলাবদ্ধতা নিরসনেরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ওই রাস্তা জরুরি ভিত্তিতে পাকা করার জন্য প্রধান প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), আগারগাঁও, ঢাকা-এর কাছে সুপারিশ করা হলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


হাটহাজারীতে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ পুনরুদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাটহাজারী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হাটহাজারীতে জেলা প্রশাসনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় দশ কোটি টাকার সরকারী সম্পদ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারি শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র) মো. ইসরাফিল জাহান এর নেতৃত্বে হাটহাজারী পৌরসভার কাচারি সড়কে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযান সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘ বছর ধরে একটি ভূমিদস্যু চক্র চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের (ছয় শতক) এসব সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে দাপটের সাথে স্থাপনা নির্মাণ করে তাতে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। ঘটনারদিন সকালে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা পরিষদের লোকজন পর্যাপ্ত পরিমাণ জেলা ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে আসলে প্রথমে কয়েকজন দোকানদারের বাঁধার মুখে পড়েন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এসময় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে নির্মিতব্য স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে টিনের ঘেরা তৈরি করে তাতে জেরা পরিষদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়। এ অভিযানের সরকারী প্রায় দশ কোটি টাকার সম্পদ পুনরুদ্ধার হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কিছু ব্যবসায়ীরা প্রশাসন তাদের গায়ের জোরে আইন বহির্ভুতভাবে তাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন।

অভিযান পরিচালনার সময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার, হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান, মডেল থানার ওসি মনজুর কাদের ভুঁইয়া, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ফ্রন্ট ডেস্ক ও ই-সেবা কেন্দ্র) মো. ইসরাফিল জাহান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, ‘সরকারি জায়গা কেউ দখল করে রাখতে পারবেনা, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।


জমিদার বাড়ির বিশেষ অতিথিকে আপ্যায়ন করানো হতো মণ্ডা দিয়ে

২০০ বছর ছাড়িয়েছে মুক্তাগাছার মণ্ডার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

দুইশ বছর আগের কথা। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় তখন মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর ‘মহাদাপট’। ওই সময় মুক্তাগাছায় মণ্ডা নামের এক ধরণের মিষ্টান্ন তৈরি করতেন গোঁপাল পাল নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। ছানা ও চিনি দিয়ে তৈরি হত এ সুস্বাদু খাবার। একদিন মণ্ডা গেল জমিদার সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর বাড়িতে। মণ্ডার স্বাদ নিলেন স্বয়ং মহারাজ। মহারাজের খুব পছন্দ হয় সে মিষ্টান্ন। এরপর থেকে নিয়মিতই জমিদার বাডিতে নেওয়া হতো মণ্ডা। জমিদার বাড়িতে বিশেষ কোন অতিথির আগমন ঘটলেও তাকে মণ্ডা দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো বলে জানা যায়।

দুইশ বছর পরও মুক্তাগাছায় তৈরি হয় সেই মণ্ডা। মণ্ডার কারিগর গোঁপাল পাল নেই। তবে গোঁপাল পালের বংশধরেরাই এখনো তৈরি ও বিক্রি করে আসছেন মণ্ডা। দুইশ বছরের পথ চলায় মণ্ডার পরিচয় ঘটেছে যেন বিশ্বব্যপী। ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মণ্ডা পেয়েছে জিওগ্র্যাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জিআই)। হয়ে ওঠেছে গৌরবময় ঐতিহ্য। বর্তমান প্রজন্ম মণ্ডা খেতে যেমন পছন্দ করে, তেমনি মণ্ডার দোকানে গেলে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করতে ভুলে না।

সম্প্রতি মণ্ডার খোঁজ নিতে যাওয়া হয় মহারাজ সূর্যকান্তের ছোঁয়া লেগে থাকা মুক্তাগাছায়। সেখানে জগৎ কিশোর রায় সড়কে এখনো গোঁপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকানটি রয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর আসছেন ক্রেতা। প্যাকেটে করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দোকানে বসেও খাচ্ছেন অনেকেই। দূর-দূরান্ত থেকে মোটরসাইকেলে করে আসছেন তরুণ ক্রেতারা। তরুণ ক্রেতারা মণ্ডা খাওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ফোনে নানা ধরণের ছবি তুলছেন সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করবেন বলে।

মণ্ডার দোকানের ম্যানেজার লিটন মিয়া জানান, প্রতিদিনই এরকম তরুণেরা আসেন। তারা মণ্ডা খাওয়ার পাশাপাশি ছবি তুলেন। মণ্ডার ইতিহাস জানতে চান।

কথা হয় মণ্ডার দোকানের পাশের বাড়ির বাসিন্দা পরিতোষ করের সঙ্গে। তার বয়স সত্তর ছাড়িয়েছে। পরিতোষ কর স্মৃতির জাবর কেটে ষাটের দশকের মণ্ডার বর্ণানা দেন। তিনি বলেন, ওই সময় আট আনা দিয়ে একটা বড় আকারের মণ্ডা কিনে খেতাম। মনে আছে একবার ৫ টাকায় এক সের মণ্ডাও কিনেছিলাম। দুপুর বেলায় প্রায়ই শিশুরা দল বেধে মণ্ডার দোকানের সামনে দাঁড়ালে পয়সা ছাড়াও মণ্ডা খাওয়াতো।

জানা যায়, মণ্ডার রয়েছে একটি গোপন রহস্য। দুইশ বছর ধরে কেবল গোঁপাল পালের বংশধররাই নিজেদের হাতে তৈরি করছেন এ মণ্ডা। দোকানে অনেক কর্মচারি থাকলেও যে ঘরে মণ্ডা তৈরি করা হয় সেখানে বংশধরদের বাইরে কেউ যেতে পারেন না। বর্তমানে গোঁপাল পালের পঞ্চম পুরুষেরা পরিচালনা করছেন মণ্ডার ব্যবসা। এ পরিবারে যারা উচ্চশিক্ষিত হয়ে বাইরে চাকরি করছেন, তারাও ছুটিতে মুক্তাগাছায় গেলে মণ্ডার তৈরিতে হাত লাগান।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গোঁপাল পাল ১৮২৪ সালে এ প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৭ সালে গোঁপাল পাল মারা যান। এরপর তার উত্তরসূরি রাঁধানাথ পাল, কৈঁদারনাথ পাল, দ্বাঁরিকানাথ পাল এ মণ্ডার দোকান চালান। বর্তমানে গোঁপাল পালের পঞ্চম প্রজন্মের হাত ধরে চলছে মণ্ডার ব্যবসা।

ইউকিপিডিয়াতে আরও উল্লেখ করা রয়েছে, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মত ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ অঞ্চলে গেলে এ মণ্ডার স্বাদ নিতেন। মাওলানা আব্দুল হাামিদ খান ভাসানী চীনের মাও সে তুংয়ের জন্যও মুক্তাগাছার মণ্ডা নিয়ে গিয়েছিলেন।


আয় বাড়ানোর উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে নগরবাসীর মাঝে চরম অসন্তোষ

*কুয়াকাটায় বিসিসির রিসোর্ট প্রকল্পে ব্যয় শত কোটি টাকা *বিসিসি কর্তৃপক্ষের দাবি আয় বাড়বে সিটি করপোরেশনের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল ব্যুরো

বরিশাল নগরীতে দুর্ভোগের পাহাড়, তবুও শতকোটি টাকার রিসোর্ট প্রকল্প করছে সিটি করপোরেশন। টাকা আছে, তবে তা নগরীর দুর্ভোগ মোচনে নয়, বিলাসবহুল রিসোর্ট বানানোর জন্য। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও জরুরি জনদুর্ভোগ রেখে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় জমি কিনে রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)।

নগরজুড়ে অচল বর্জ্য ও পানি শোধনাগার, ভাঙাচোরা রাস্তা এবং যানজটের মতো অসংখ্য সমস্যা বিদ্যমান, ঠিক তখনই বিসিসির ‘উচ্চাভিলাষী’ এমন সিদ্ধান্ত নেয়। যা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিসিসি কর্তৃপক্ষের দাবি এতে সিটি করপোরেশনের আয় বাড়বে।

এদিকে জমি কিনতে এরই মধ্যে ১৯ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করে বিসিসি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৈকতের কাছাকাছি সড়কের পাশে কমপক্ষে ৩ একর জমি কেনা হবে। আগ্রহী জমি মালিকদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়।

বিসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান শাকিল জানিয়েছেন, দরপত্র অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩টি আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে একটিতে ৮ একর এবং অন্য দুটিতে ৬ একর করে জমি রয়েছে। বিসিসি ৮ একরের জমিটির প্রতি আগ্রহী। মাসিক সভায় রিসোর্ট করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুয়াকাটা সৈকত থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে সড়কের পাশে প্রতি শতাংশ জমি গড়ে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে ১ একরের দাম হবে ১৫ কোটি টাকা। বিসিসি ৮ একর কিনলে দাম পড়বে ১২০ কোটি টাকা। আধা কিলোমিটারের বাইরে পৌর এলাকার মধ্যে প্রতি শতাংশ বিক্রি হয় ১০ লাখ টাকায়। সে ক্ষেত্রে ১ একরের দাম ১০ কোটি এবং ৮ একরের দাম ৮০ কোটি টাকা। কুয়াকাটায় জমি কেনাবেচার সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ জমির দামের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে কুয়াকাটায় জমি কিনে রিসোর্ট করার বিসিসির সিদ্ধান্তে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নগরবাসী।

বরিশাল জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সিটি করপোরেশন পানি শোধনাগার চালুর উদ্যোগসহ সার্বিক জনবান্ধব উন্নয়নের উদ্যোগ না নিয়ে কুয়াকাটায় জমি কিনছে, অথচ বরিশালে কোনো আধুনিক বর্জ্যব্যবস্থাপনা নেই। শহরের মধ্যে ৫৮ বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলা হয়। অচল হয়ে থাকা দুটি পানি শোধনাগার আজ পর্যন্ত চালু হয়নি। বহু রাস্তাঘাট-ড্রেন সংস্কার করা হয়নি। এসব বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া অতি জরুরি হলেও বাজেট ঘাটতির কথা বলে কোনো কাজ করা হচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নগরীতেই বহুমুখী সংকট। তার মধ্যে কী করে তারা কুয়াকাটায় রিসোর্ট স্থাপনের মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের কথা চিন্তা করে। নগরী থেকে যানজট দূর করতে বাস টার্মিনাল অপসারণ করতে পারছে না, যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই, পর্যাপ্ত রাস্তাঘাট নেই। নাগরিক সুযোগ- সুবিধার কথা চিন্তা না করে বিলাসিতার জন্য রিসোর্ট করতে চাইছে। আশা করি, তারা এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।

জেলা বাসদের সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় একজন প্রশাসক এভাবে বিপুল অর্থ খরচ করে কুয়াকাটায় রিসোর্ট করতে পারেন না। দেশের এত আর্থিক সংকটের মধ্যে সরকার এ ধরনের বিলাসী প্রকল্প হাতে নিতে বিসিসিকে অনুমতি দিয়েছে কি না, তাও স্পষ্ট করেনি কর্তৃপক্ষ।

নিজেদের সীমানার বাইরে জমি কিনতে চাইলে সরকারের পূর্বানুমোদনের প্রয়োজন হয়। অথচ এটি নেওয়া হয়েছে কিনা, তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা এ ধরনের প্রকল্প চাই না।

এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, কুয়াকাটায় রিসোর্ট করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি। গত ২০ মার্চ পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় সেখানে জমি কেনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়। তাই কমপক্ষে ৩ একর জমি কেনার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। রিসোর্ট ভাড়া দিলে বিসিসির আয় বাড়বে।


দেশে জলবায়ু খাতে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবির প্রতিবেদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় তহবিলের (বিসিসিটি) অর্ধেকেরও বেশি বরাদ্দে দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৮৯১টি প্রকল্পে সংঘটিত দুর্নীতির প্রাক্কলিত পরিমাণ ২৪৮ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এসব তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিসিসিটি থেকে মোট ৪৫৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশ বরাদ্দ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ট্রাস্টি বোর্ড ও কারিগরি কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প অনুমোদনের প্রবণতা দেখা গেছে। অথচ তহবিল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তারা দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল মিলিয়ে বছরে গড়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬.২ মিলিয়ন ডলার—যা প্রয়োজনের মাত্র ০.৭ শতাংশ।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও ব্যর্থতার কথাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১.৬ শতাংশ) মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১,৫১৫ দিনে পৌঁছেছে; অর্থাৎ ১৩৩.৮ শতাংশ বৃদ্ধি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৪ বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় লেগেছে ১৪ বছর।
একইভাবে আন্তর্জাতিক তহবিলের প্রকল্পেও বিলম্বের চিত্র পাওয়া গেছে। ৫১টি প্রকল্পের মধ্যে ২১টির (৪১.২ শতাংশ) মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গড়ে মেয়াদ ১,৯৫৮ দিন থেকে বেড়ে ২,৯৭৮ দিনে দাঁড়িয়েছে; ৫২.১ শতাংশ বৃদ্ধি।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে জাতীয় তহবিলের ৫৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অর্থের সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও তা দুর্নীতির কারণে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রভাবশালীরা এ অর্থ লুটপাট করেছে।’


৩৭ কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাবজ্জীবন বা ৩০ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা রেয়াতসহ ২০ বছর বা তার বেশি সাজা ভোগ করেছেন, এমন ৩৭ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন (নং-১৪৩) জারি করেছে। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে তা কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
কারা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি বন্দিদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। জেলা কারাগারগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী এই ৩৭ জন বন্দির অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই রেয়াতসহ ২০ বছর বা তার বেশি সময় সাজা ভোগ করেছেন।
কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, ‘যাদের সাজা ৩০ বছর বা যাবজ্জীবন ছিল, তাদের মধ্যে যেসব বন্দি রেয়াতসহ ২০ বছর অতিক্রম করেছে, তাদের মামলা বিচারিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। বয়স, আচরণ ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে সরকার তাদের অবশিষ্ট সাজা মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আদেশ অনুযায়ী, সর্বশেষ সিদ্ধান্তে ৩৭ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। কারও অবশিষ্ট সাজা ছিল ১০ বছর, কারও ৭ বছর বা ৬ বছর। সবগুলোই মওকুফ করাতে এবার তারা মুক্তি পাবেন। এদের মধ্যে কোনো নারী বন্দি নেই, যদিও প্রস্তাবে নারী-পুরুষ উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।’


‘নিষিদ্ধ’ ছাত্রলীগের ৩৮৫ জনের তালিকা প্রকাশ ঢাবির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত সহিংসতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩৮৫ জন কর্মীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত ঘটনাগুলোর তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্থায়ী বহিষ্কার প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটি ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়। গত ১৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় তাদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

পরবর্তীতে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির দ্বিতীয় সভায় আরও ৩৮৫ জন শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, যার মধ্যে আগের ১২৮ জনও অন্তর্ভুক্ত।

তালিকায় নাম রয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ মোট ৩৮৫ জনের।

প্রক্টর অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কৃত অপরাধের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না- তার কারণ দর্শিয়ে লিখিত জবাব বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ (সাত) কার্য দিবসের মধ্যে প্রক্টর অফিসে লিখিত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক আপনাদের বিরুদ্ধে একতরফা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিপুলসংখ্যক জীবিত ঘোড়া ও ঘোড়ার মাংস জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিক্রি নিষিদ্ধ বিপুল পরিমাণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় ৩৭টি জীবিত ও ৮টি জবাইকৃতসহ মোট ৪৫টি ঘোড়া উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদের নেতৃত্বে স্থানীয় কসাইখানায় গাজীপুর জেলার প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, র‍্যাব-১ ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিত টের পেয়ে কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, শফিকুল ইসলামের বাবা জয়নাল আবেদীন হায়দারাবাদ (রথখলা) মৌলভী বাড়ির পাশেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক বছর ধরে নিয়মিতভাবে ঘোড়া কিনে জবাই করতেন। এরপর নিষিদ্ধ এই ঘোড়ার মাংস বিভিন্ন উপায়ে রাজধানী উত্তরাসহ দেশের নানা জেলায় সরবরাহ করতেন।

প্রতিদিন রাতে ৩০ থেকে ৪০টি ঘোড়া জবাই করত শফিকুল। সেই মাংস সারাদেশে পাঠাত। রাতে নিয়মিত ঘোড়া জবাইয়ের শব্দ, দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। রাতভর জবাইয়ের শব্দে ছোট বাচ্চারা লেখাপড়া করতে পারে না। দুর্গন্ধে ঘরেও থাকা যায় না। আমরা বহুবার প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কিছু হয়নি। পুরো পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছিল। এ ধরনের নিষিদ্ধ কাজ আর যেন না হয়। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।



গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদ জানায়, ‘এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও দণ্ডনীয় কার্যক্রম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তাকে ৩বার জরিমানা করা হয়েছিল। তবুও সে থামেনি। এবার বড় আকারে অভিযান চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও অভিযান চলবে। নিষিদ্ধ প্রাণী জবাইয়ের অভিযোগে মামলা রুজু করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যেই ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়েছিল। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি তাই উদ্ধারকৃত ৩৭টি জীবিত ও ৮টি জবাইকৃতসহ মোট ৪৫টি জব্দকৃত ঘোড়ার ৫ মন মাংস স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।’

তিনি আরো জানায়, বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সেগুলোকে গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। উদ্ধার হওয়া ঘোড়াগুলোর অধিকাংশ রুগ্ন এবং মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর।

র‍্যাব-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) শহিদুল ইসলাম জানায়, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হায়দারাবাদ (রথখলা) এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গোপনে ঘোড়া জবাইয়ের কার্যক্রম চলছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। অভিযানে বিপুলসংখ্যক জীবিত ঘোড়া, জবাইয়ের সরঞ্জাম ও মাংস সংরক্ষণের নানা প্রমাণ পেয়েছি।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুর দিকে গাজীপুরের হায়দারাবাদ (রথখলা) এলাকায় শুরু হয় ঘোড়ার মাংস বিক্রি। ধীরে ধীরে বিষয়টি চারপাশে ব্যাপক সাড়া ফেলে। পরে জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত মাধ্যমে ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করেন। এরপর কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও ফের গোপনে কসাইখানায় আবার শুরু হয় ঘোড়ার মাংস বিক্রি।


banner close