গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাসের ধাক্কায় সাইফুল শেখ (২৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ সোমবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাটিয়াপাড়া ফ্লাইওভার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইফুল টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে।
ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. তোফাজ্জেল হক জানান, ভাটিয়াপাড়া ফ্লাইওভার এলাকায় কালভার্টের পাশে সংস্কার কাজ করছিলেন সাইফুল। সকাল ৯ টার দিকে নড়াইল থেকে ঢাকাগামী নড়াইল এক্সপ্রেসের একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘাতক বাসটিকে পুলিশ আটক করতে পারলেও বাসের চালক পালিয়েছে।
তিনি আরও জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অস্বচ্ছলদের স্বাবলম্বী করতে জাকেরদের মাঝে কর্মসংস্থান সহায়তা হিসেবে পুঁজি ও মূলধন বিতরণ করেছে হযরত শাহ্ চন্দ্রপুরী জাকের কল্যাণ ফাউন্ডেশন। বুধবার বাদ ফজর ফরিদপুরের সদরপুরে ঐতিহ্যবাহী চন্দ্রপাড়া দরবার শরীফে এ সহায়তা দেয়া হয়।
দরবার শরীফের গদীনশীন পীর ও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ্ সূফী সৈয়দ কামরুজ্জামান এই অনুদান প্রদান করেন। অস্বচ্ছলদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একক আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী উপকরণ প্রদান করা হয়, যা তাদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করবে বলে ফাউন্ডেশন থেকে জানা যায়।
একই অনুষ্ঠানে দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা জামানার মোজাদ্দেদ হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরী (রহ.) নকশোবন্দী মোজাদ্দেদী পীর কেবলাজানের বেছালত উপলক্ষে আসন্ন বার্ষিক ওরছ শরীফের তারিখ ২০২৬ সালের ৭ জানুয়ারি রোজ বুধবার ঘোষণা করা হয়। ওরছ পাকের প্রস্তুতি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বাদ আসর থেকে বুধবার ফজর পর্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ওয়াজ নসিহতের মধ্য দিয়ে জলসায়ে ওরছ পাক-এ-শাহ্ চন্দ্রপুরী অনুষ্ঠিত হয়। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশ-বিদেশের অসংখ্য মুরিদ, আশেক-জাকের ও ভক্তরা দরবার শরীফে সমবেত হতে থাকেন। বাদ জোহর থেকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ-কিয়াম, জিকির-আজকার ও শরিয়ত-তরিকত সম্পর্কিত ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বাদ ফজর পবিত্র রওজা মোবারক জিয়ারত ও আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের সুখ-শান্তি ও মহান আল্লাহর নৈকট্য কামনা করা হয়।
বাংলাদেল সুপ্রীম কোর্টের জ্যেষ্ঠ্য আইনজীবী ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপিলস পার্টির (এনপিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা ১১ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক। বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দশী চৌরাস্তা মোড়ে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। বুধবার ধানের শীষের পক্ষে নড়াইল জেলা শহরে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি শোভাযাত্রা করেন। শহরের পুরানো বাস টার্মিনাল চত্বর থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আদালত চত্বরে শেষ হয়।
পথ সভায় ড.ফরিদুজ্জামান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপিসহ আমার দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। হামলা-মামলা, বাড়ি-ঘর ভাংচুরসহ লুটপাট করে নেতাকর্মীদের পথের ফকির বানিয়েছে। বাড়ি-ঘরে কেউ রাতযাপন করতে পারেনি। আমি যেহেতু আইন পেশার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে দাড়িয়ে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, আমার বাড়িও ভাংচুরসহ লুটপাট করেছে। কিন্তু আমি মামলা করিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা বাংলার রাখাল রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বড় সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের সঙ্গে আমার লন্ডনে দেখা এবং কথা হয়েছে। সেখানে মনোনয়নের ব্যাপারেও কথা হয়েছে। তিনি আমাকে এলাকায় গিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করতে বলেছেন। জনগণের কাছে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চাইতে বলেছেন।
পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এনপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা ১১ দলীয় জেটের প্রধান সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নড়াইল জেলা কমিটির সভাপতি শরীফ মুনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খান আনোয়ার হোসেনসহ প্রমুখ। এ সময় নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. বেল্লাল হোসেন, নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তফা কামাল মোস্ত, এনপিপি লোহাগড়া উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোল্যা বদিয়ার রহমানসহ ইউনিয়ন কমিটির নেতারা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর দুর্গম চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় ৩ জন নিহতের মামলা করা হয়েছে। মণ্ডল গ্রুপের নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় চরমপন্থি নেতা কাকন বাহিনীর প্রধান কাকনসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজার নিচ খানপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজশাহীর বাঘায় বসবাসরত মণ্ডল বাহিনী ও দৌলতপুরের কাকন বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও দুজন গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গোলাগুলির খবর পেয়ে নিকটস্থ বাঘা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ গুলির খোসা, কয়েকটি তাজা গুলি ও রক্তমাখা ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনাস্থলটি কোন থানার আওতাধীন- তা নির্ধারণ করতে রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সারাদিন মাঠে থাকেন, যার ফলে মামলা কার্যক্রমে বিলম্ব হয়। পরে নির্ধারিত হয়, ঘটনাস্থল কুষ্টিয়ার জেলার দৌলতপুর থানার আওতায়।
জানা গেছে, গোলাগুলিতে নিহত ব্যক্তিরা হলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিচ খানপাড়া এলাকার মিনহাজ মণ্ডলের ছেলে আমান মণ্ডল (৩৬) এবং শুকুর মণ্ডলের ছেলে নাজমুল মণ্ডল (২৬)। নিহত ব্যক্তিরা মূলত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন; নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তারা বাঘার নিচ খানপাড়ায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।
অন্যদিকে সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পদ্মা ঘাট থেকে লিটন (৩০) নামের আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা নৌপুলিশ। নিহত লিটনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি ওই ইউনিয়নের ঘোষপাড়া এলাকার মৃত জামরুল ঘোষের ছেলে। পেশায় তিনি কসমেটিকস ব্যবসায়ী ছিলেন এবং কাকন বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচিত।
দৌলতপুর থানার ওসি সোলাইমান শেখ বলেন, নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পদ্মার চরাঞ্চলটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ অভিযানে রয়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থলের সীমানা নিয়ে জটিলতা ছিল, আমরা সরেজমিনে তা নির্ধারণ করেছি- এটি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার আওতাধীন এলাকা। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণে গুলির খোসা ও রক্তাক্ত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে কাকনসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন মণ্ডল গ্রুপের নিহতের পরিবার। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
অভিযুক্ত কাকন বাহিনীর প্রধান কাকন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের মাঝদিয়াড় গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয়ে পদ্মা নদীর বালুমহাল ও চরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতেন।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে গত ৫৪ বছরেও তৈরি করা হয়নি পাকা সড়ক। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় এসব গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় তেমন মানোন্নয়ন হয়নি। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে কাদা এবং শুকনায় ধুলোবালির কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার টিটা-পানাইল, শিকারপুর, টিটা, ইকড়াইল ও কুমুরতিয়া গ্রামে ১০টি জামে মসজিদ, একটি কারিগরি কলেজ, দুটি উচ্চবিদ্যালয়, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি সাব পোস্ট অফিস, দুটি বড় বাজার এবং ১০টির বেশি মাছ ও গবাদিপশু খামার রয়েছে।
এসব গ্রামের কৃষকরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য, গাভীর দুধ এবং বাঁওড়ের বিপুল পরিমাণ মাছের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী কাশিয়ানী উপজেলা সদরের বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করেন। এছাড়া আলফাডাঙ্গার সদর ও গোপালপুর বাজারসহ বিভিন্নস্থানেও এখানকার কৃষিপণ্যের কদর রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সময়মতো ও অক্ষত অবস্থায় বাজারে নিতে পারছেন না, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় কৃষক ও অর্থনীতি।
স্থানীয় কৃষক নাছির মিয়া বলেন, ‘ভালো সড়ক না থাকায় সবজি ও দুধ মাথায় কিংবা বাইসাইকেলে করে কাদা-ধুলো পেরিয়ে কাশিয়ানী বাজারে নিয়ে যেতে হয়। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, সরকার যেন এই গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ করে মানসিক স্বস্তি এনে দেয়।’
ইকড়াইল গ্রামের বাসিন্দা মো. ‘ইমদাদুল হক বলেন, ইটের ভাঙা রাস্তা দিয়ে আমাদের সন্তানদের চলাচল করতে হচ্ছে। এলাকার মানুষ রাস্তার কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। এখানকার মানুষ অন্য এলাকা থেকে ফিরে এসে আফসোস করে-আমাদের এলাকায় কেন একটিও পাকা রাস্তা নেই।’
ওই এলাকার টিটা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিউটি সুলতানা বলেন, ‘ভাঙা ইটের রাস্তার কারণে ভ্যান, অটোরিকশাও ঠিকমতো চলতে পারে না। তাই বাড়ি থেকে হেঁটে হেঁটে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হয়।’
টিটা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান শিকদার বলেন, ‘একসময় এই পাঁচ গ্রাম ছিল মধুমতি নদী বেষ্টিত। এলাকাবাসীর উদ্যোগে ও নিজস্ব অর্থায়নে ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি ভাসমান (ড্রাম) সেতু নির্মাণ করা হয়, যা এখনো চলছে। সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি, এই অবহেলিত এলাকায় দ্রুত পাকা সড়ক নির্মাণ করা হোক। তাহলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও সমাজ নির্মাণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।’
টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আবু সাইদ মিয়া বলেন, ‘অনেকবার রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানিয়েছি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। শুধু আশ্বাস মিলেছে; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) রাহাত ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। প্রধান সমস্যা হলো, এই গ্রামে প্রবেশ করতে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ ভাসমান সেতু পার হতে হয়, নয়তো বিকল্প একটি দুর্বল কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। রাস্তা পাকাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী রোলার সরঞ্জাম বর্তমানে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ওই এলাকার রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূল হলে এবং বর্ষা মৌসুম শেষ হলে আগামীতে টেন্ডারের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কার্পেটিং কাজ শুরু করা হবে। মধুমতি বাঁওড়ে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলেও তা বিভিন্ন কারণে বাতিল হয়েছে। আমরা গুরুত্ব বিবেচনা করে শিগগিরই পুনরায় প্রস্তাব পাঠাব।’
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল বলেন, ‘সড়ক বানাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এলজিইডি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, আপাতত সড়ক করার মতো পরিবেশ অনুকূল নয়। বর্ষা শেষ হলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছানোর ব্যবস্থা হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কর্তৃক বাংলাদেশে মনোনীত এনজিও ‘রাইটস্ যশোর’ মাদারীপুর শাখার উদ্যোগে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন টিভি ও প্রিন্টিং মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য অভিবাসীদের ক্ষমতায়নে আই.ও.এমের ‘সিনেমা আঙিণা’ শীর্ষক সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার ওই অনুষ্ঠানটি মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদারীপুর ‘সিনেমেরিনা প্রকল্পের’ ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মোখলেছুর রহমান পিন্টুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও ডিরেক্টর অব প্রোগ্রাম এস,এম আজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সংস্থার প্রধান কার্যালয় যশোর জেলা থেকে আগত প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েটস অমল বিশ্বাস, সিনিয়র মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার তারেক মাহমুদ, ডিরেক্টর অব প্রোগ্রাম-প্রদীপ দত্ত, মাদারীপুর জেলা ম্যানেজার ‘সিনেমেরিনা’ প্রকল্পের মো. মোখলেছুর রহমান পিন্টুসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এ সময় সংস্থার এফ,এস,টি,আই,পি প্রকল্পের মাদারীপুরের ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম অফিসার বায়োজিদ মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এতে জেলার বিভিন্ন টেলিভিশন, প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ২৩ জন সিনিয়র সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন বিটিভির সাবেক সাংবাদিক মাহাবুবুর রহমান বাদল, জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক সুবল বিশ্বাস, দৈনিক বাংলার সাংবাদিক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর, সাংবাদিক বেলাল রিজভী, সাগর তামিম, রিপন চন্দ্র মল্লিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সংস্থাটির জনকল্যামুখী সব কর্মকাণ্ড সাংবাদিকদের তুলে ধরার আহ্বান জানান।
কিশোরগঞ্জ জেলার অখণ্ডতা রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা। সমাবেশ থেকে কিশোরগঞ্জ জেলা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রোপাগান্ডা ছড়ানো এবং আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বুধবার কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
আয়োজকরা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের ৬৫তম জেলা গঠনের দাবিতে ভৈরব ও বাজিতপুরের কিছু ব্যক্তি আন্দোলন করছেন, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বক্তারা বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ অখণ্ড ছিল, আছে এবং থাকবে।’
তারা আরও অভিযোগ করেন, জেলার দাবিতে আন্দোলনকারীরা রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন। এমনকি যাত্রীবাহী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাজিতপুর উপজেলাকে ৬৫তম জেলা ঘোষণার দাবিতে ‘বাজিতপুর জেলা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে স্থানীয়রা মশাল মিছিল করেন। মিছিলটি বাজিতপুর পৌরশহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আলোছায়া মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জের সাবেক আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ বিএনপির দায়িত্বে রয়েছেন শরীফুল আলম। আপনারা চাইলে তার মাধ্যমে আপনাদের দাবি সচিবালয়ে, মন্ত্রণালয়ে বা উপদেষ্টাদের নিকট পৌঁছাতে পারেন। কিন্তু ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, হামলা-ভাঙচুর কোনো আন্দোলন নয়, এটা ফ্যাসিবাদের কাজ। আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া, সাবেক সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স, হয়বত নগর বয়েজ ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জনি, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নুসরাত জাহান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম লিমন। সমাবেশ পরিচালনা করেন গুরুদয়াল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছির তুসি।
ইউপিডিএফের গুলিতে নিহত তিনজন পাহাড়ি যুবকের হত্যার বিচার দাবিতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)। বুধবার শহরের বনরূপা আলিফ মার্কেট চত্বরে সংগঠনটির জেলা শাখার উদ্যোগে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি রাঙামাটি জেলা সহসভাপতি কাজী জালোয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূর হোসেন, পিসিসিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, সহসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, এবং সরকারি কলেজ শাখার নেতা নয়ন বড়ুয়া।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মিথ্যা ধর্ষণ ইস্যু উসকে দিয়ে খাগড়াছড়ির গুইমারা ও আশপাশের এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরির পর ইউপিডিএফের সশস্ত্র সদস্যরা গত ২৮ সেপ্টেম্বর রামসু বাজার এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে পাহাড় থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন সাধারণ পাহাড়ি যুবক- আখ্র মারমা, আথুইপ্রু মারমা ও থৈইচিং মারমা নিহত হন।
বক্তারা বলেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়কে অশান্ত করে সেনাবাহিনী ও সরকারকে বিতর্কিত করার একটি বড় রাজনৈতিক পরিকল্পনা ছিল। তারা অভিযোগ করেন, ইউপিডিএফ স্বায়ত্তশাসন দাবিকে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার কৌশল হিসেবে সাধারণ জনগণকে সামনে ঠেলে দিয়ে সহিংসতা উসকে দেয়।
সমাবেশে বক্তারা নিহত তিন যুবকের হত্যায় জড়িত ইউপিডিএফের সশস্ত্র সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পাশাপাশি পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি অটুট রাখতে সকলকে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দাবি পূরণ না হলে পিসিসিপি পর্যায়ক্রমে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশে শিশু অধিকার ও সুরক্ষার বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পটুয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘শিশু অধিকার পরিস্থিতি উপস্থাপন’ শীর্ষক আলোচনা সভা। বুধবার এ অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে লাল সবুজ সোসাইটি এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার, স্থানীয় সরকার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জুয়েল রানা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদ উল আলম। লাল সবুজ সোসাইটির প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইসরাফিল সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, ‘পরিবার ও বিদ্যালয় হলো- শিশুর প্রথম আশ্রয়স্থল। এই দুই স্থানেই একটি শিশুর বেড়ে ওঠার ভিত্তি গড়ে ওঠে। তাই পরিবার ও বিদ্যালয়ে শিশুদের প্রতি ভালোবাসা, যত্ন এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
আলোচনা সভায় লাল সবুজ সোসাইটির প্রতিনিধি মোমেনা সিফা রুমকি শিশু অধিকার পরিস্থিতির সচিত্র তুলে ধরে বলেন, জানুয়ারি থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত দেশের ১২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ১,২৮৯টি শিশুবিষয়ক সংবাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এর মধ্যে ১,০৬৯টি ছিল নেতিবাচক এবং মাত্র ২২০টি ইতিবাচক সংবাদ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য বৈষম্য ও নিপীড়ন, শিশু ধর্ষণ ও হত্যা, এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যু- এই তিনটি কারণই শিশু সুরক্ষার সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সর্বাধিক সংখ্যক ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে, যা নগর ও গ্রামের মধ্যে শিশু সুরক্ষায় বৈষম্যের ইঙ্গিত দেয়।
ফরেস্টার পদে বন বিভাগে চাকরিতে যোগদান। এক পদেই তাদের কেটেছে কারও ৩০ বছর, কারও ৩৫ বছর, কারও কর্মজীবনে কেটেছে ২৬টি বছর। পদোন্নতিহীন চাকরি জীবনে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বন ও বনজসম্পদ রক্ষায় জীবন বাজী রেখে দায়িত্ব পালন করেছে। বনভূমি, বন, বনজসম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে পতিত হয়েছে কখনো কখনো মৃত্যুর মুখোমুখি। বনখেকো বনদস্যুদের আক্রমণে হামলা-মামলার শিকার হয়েছে। হয়রানি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-রাঘব বোয়ালদের কত রক্ত চক্ষুর কাল দৃষ্টির শিকার হয়েছে তার শেষ নেই। উপেক্ষা করতে হয়েছে নানা হুমকিধমকি। দেশের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে অনেক মামলা রুজু করতে হয়েছে বন ভূমিদস্যু ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। কতবার দেশের এক প্রান্ত অন্য প্রান্তে মামলার সাক্ষী দিতে যেতে হয়েছে। পরিবার-পরিজন রেখে কাটাতে হয়েছে বনের টিলা টাঙ্গর হাওর-বাঁওড় বন-জঙ্গলের অফিসে অফিসে। এভাবেই কেটে গেছে তাদের জীবন-যৌবনের দীর্ঘসময়। তবুও বঞ্চিত হতে হয়েছে পদোন্নতি থেকে। প্রদোন্নতি বঞ্চনা যেন তাদের কুরে কুরে খেয়েছে। কর্মজীবনের শেষ প্রান্তে এসে ধরা দেয় তাদের স্বপ্নের পদোন্নতি। ফরেস্টার থেকে এখন তারা ডেপুটি রেঞ্জার পদ প্রাপ্তিতে তারা উদ্বেলিত উচ্ছ্বসিত। তাদের নিজ নিজ কর্ম এলাকায় ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। আনন্দে ভাসছে তারা। কর্মস্পৃহা আগের থেকে বেড়েছে। আনন্দে-খুশিতে কাটছে এ প্রাপ্তি। এসব সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনার কথা জানিয়েছে বন বিভাগের টাঙ্গাইলসহ দেশের পাঁচ শতাধিক ফরেস্টার থেকে ডেপুটি রেঞ্জার পদে পদোন্নতি প্রাপ্তরা।
সম্প্রতি দেশের প্রায় ৪৫৩ জন বন বিভাগের ফরেস্টার থেকে ডেপুটি রেঞ্জার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুর রেঞ্জের দায়িত্ব প্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টা সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০ বছর তার চাকরি জীবনে এ পদোন্নতি পেয়ে খুশি। তারমতে, মাঠ পর্যায়ে সারাদেশেই কাজের গতি আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। আরও কয়েকজন জানান, ৪৫৩ জনের অনেকেই এখন পদোন্নতি পেয়ে এসিএফের মতো ঊর্ধ্বতন পদে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় সারাদেশের ৫ শতাধিক বন কর্মকর্তার মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। তাদের পদোন্নতির বিষয়ে আবেদন স্মারকলিপি দৌড়ঝাঁপ করেছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বনবিদ কেন্দ্রীয় কমিটির পরিশ্রমী সংগঠক আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ।
এ ব্যাপারে মৌলবী বাজারের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বাংলদেশ ডিপ্লোমা বনবিদ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ জানান, সারাদেশের ৪৫৩ জন তাদের পদোন্নতি পেয়েছে। তিনি ৩৬ বছর পূর্বে ফরেস্টার পদে যোগদান করেছিলেন। একই পদে ৩৬ বছর চাকরি করে আবার অনেকেই অবসর নিয়েছেন এবং অনেকের অবসরের সময় চলে আসছে। বনের ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতির বিধান থাকলেও ফরেস্টার পদ থেকে অজ্ঞাত কারণে পদোন্নতি না দিয়ে বন বিভাগের মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ এ পদের কর্মকর্তারদের বঞ্চিত করে রেখেছিল বলে তিনি মনে করেন। যথাসময়ে পদোন্নতি হলে তিনি এত দিনে সহকারী বন সংরক্ষক থাকত বলে জানান।
এ জন্য তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানান।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে সাক্ষাৎ করে দাবি তুলে ধরেন ডিপ্লোমা বনবিদ পরিষদের নেতারা। পরে তাদের দাবি আমলে নিয়ে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গ্রহন করে এবং সম্প্রতি পদোন্নতির বিষয়ে গেজেট আকারে প্রকাশ করে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ডিপ্লোমা বনবিদ পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা সুনামগঞ্জ সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল হলো- ফরেস্টারদের ডেপুটি রেঞ্জার পদে প্রমোশন। তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানান। কিন্তু তাদের চাকরির মেয়াদও বেশিদিন নেই। তাই দ্রুত চাকরির নীতিমালা মোতাবেক ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে বলেও তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সারাদেশের ফরেস্টারদের পদোন্নতি আটকা ছিল। বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়ের ঐকান্তিক সানুগ্রহে ৩৬ বছর থেকে বঞ্চিত ফরেস্টাররা ডেপুটি রেঞ্জার হয়েছে।’ তিনি বলেন, অনেকের চাকরির মেয়াদ শেষের পথে। এরপরেও অবসরে যাওয়ার পূর্বে পদোন্নতি লাভ করায় তারা ডিপার্টমেন্টের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নেত্রকোনায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নেত্রকোনা-২ (নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা) আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে নতুন জাগরণের হাওয়া। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, ২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। রাজনৈতিক মাঠে তার উপস্থিতি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিদিনই তিনি ছুটে চলেছেন গ্রাম থেকে গ্রামে, করছেন গণসংযোগ, পথসভা, মতবিনিময় সভা। তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের মাঝে তৈরি করছেন আস্থার নতুন সেতু। দেশ ও গণমানুষের সেবায় আন্দোলনই আমার পথ বললেন, কোটা বাতিল আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, ‘গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমি ১১ মাস কারাভোগ করেছি, ২২ বার হামলার শিকার হয়েছি তবুও থামিনি। অন্যায়, স্বৈরাচার আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এখনো চলছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে নেত্রকোনার মাঠে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে দেশের লাখো শিক্ষার্থীর আস্থা অর্জন করেছিলেন হাসান আল মামুন।
এবার তিনি সেই পরিবর্তনের ধারা গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে দিতে চান নেত্রকোনায়। উন্নয়নের রূপরেখা: ‘স্বনির্ভর, আধুনিক ও মানবিক নেত্রকোনা গড়ব’ হাসান আল মামুনের নির্বাচনী অঙ্গীকারে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে স্থানীয় উন্নয়নের বাস্তব পরিকল্পনা স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লব: প্রতিটি ইউনিয়নে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস; রোগীকে ঘর থেকে হাসপাতালে এবং প্রয়োজনে ঢাকায় স্থানান্তরের নিশ্চয়তা। আধুনিক সদর হাসপাতাল: নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট স্থাপন।
কৃষি পুনরুজ্জীবন: কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হিমাগার নির্মাণ, হাওড় অঞ্চলে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মাছ সংরক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। মানুষের কষ্ট, স্বপ্ন ও সম্ভাবনা জাতির সামনে তুলে ধরছেন। আপনাদের সহযোগিতায় নেত্রকোনাকে আমরা গড়ব উন্নয়নের অগ্রযাত্রার পথে। ‘ট্রাক’ প্রতীকে পরিবর্তনের ডাক, নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী হাওড় অঞ্চল আজ নতুন আশায় মুখর। তরুণ নেতৃত্বের এই উত্থান স্থানীয় রাজনীতিতে তৈরি করছে নতুন ধারা। গণ অধিকার পরিষদের প্রতীক ‘ট্রাক’ নিয়ে হাসান আল মামুন এখন মানুষের দ্বারে পৌঁছে দিতে চান একটি বার্তা, গণমানুষের অধিকারই আমার রাজনীতি, আর উন্নত নেত্রকোনা গড়াই আমার স্বপ্ন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জয়পুরহাট শহরের হাড়াইল থেকে রেলগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। এতে শহরে প্রধান সড়কের একাংশে যানজট কমেছে। এতে শহরবাসী ফিরে পেয়েছে স্বস্তি। তবে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে নতুন সড়কেই এখন গাড়ি পার্কিং করতে হচ্ছে, যা আবারও শৃঙ্খলা নষ্টের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
সচেতন শহরবাসীর প্রত্যাশা, পরিকল্পিত পার্কিং ও কঠোর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে জয়পুরহাট শহরের চার লেন সড়ক প্রকল্প সত্যিকারের সফল হবে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট শহরের হাড়াইল থেকে রেলগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ, পানি, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন স্থানান্তর ও রেলগেট উন্নয়ন বাবদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে সর্বমোট ১০৪ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৯ টাকা পরিশোধ করা হয়। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণেই ব্যয় হয়েছে ৯০ কোটি ২০ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮০ টাকা।
এছাড়া সড়কের দুপাশে প্রায় ৫ কিলোমিটার নালা নির্মাণে ৩০ কোটি ও সড়ক প্রশস্তকরণে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়। নকশা অনুযায়ী সড়কটির হবে ৬০ ফুট প্রশস্ত। এক পাশে ২৪ ফুট, আরেক পাশে ২৪ ফুট প্রশস্ত। মাঝখানে থাকবে ৪ ফুট প্রশস্ত ডিভাইডার। পুরো সড়কের দুপাশে থাকবে ড্রেনসহ ৫ থেকে ৯ ফুট প্রশস্ত ফুটপাত।
আরও জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর চার লেন সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই দফায় কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে চুক্তি অনুযায়ী কাজ করেনি। এ কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করে সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নাভানা কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। সড়কের দুপাশে মোট প্রায় ৫ কিলোমিটার নালা নির্মাণ ও আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণের জন্য পুনরায় পৃথক দরপত্রের আহ্বান করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সড়কের দুপাশে নালা নির্মাণের কাজটি পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিনুল হক লিমিটেড ও চার লেন সড়কের কাজ পায় জয়েন ভেঞ্চার রিলায়েন্স বিল্ডার্স লিমিটেড ও হাসান টেকনো। ২০২২ সালের ২০ জুলাই নালা ও সড়ক নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে শুধু দুপাশে নালা নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়। চলতি বছরের শুরুতেই চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। নকশা জটিলতাসহ নানা কারণে চার লেন সড়কের কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। পরে আবার কাজ শুরু করা হয়। এখন সড়কের কাজ শেষ হয়েছে।
শহরের আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, পাঁচুর মোড় থেকে আমতলী পর্যন্ত যানজট প্রবণ এলাকায় সড়কের দুপাশে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করছে। এই এলাকায় সড়কের দুপাশে যত্রতত্র গাড়ি পাকিং করা হয়েছে। এতে সড়কে কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আবার সড়ক ডিভাইডারে লোকজন যে যার ইচ্ছামতো গাছ লাগিয়েছেন। ডিভাইডারে একজন শ্রমিক ঘাস নিড়ানি দিচ্ছেন। রেলেগেটের পশ্চিম অংশে আগের মতো যানজট রয়েছে। সড়কের এই অংশ চার লেন করা হয়নি।
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকচালক আপেল মাহমুদ শান্ত বলেন, ‘আগে এই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকত। এখন সড়কের এক পাশে যানবাহন আসে, অন্য পাশে দিয়ে যায়। এখন আর এতটা যানজট লাগে না। তবে পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় অনেকে সড়কের ধারে গাড়ি রাখছে।’
শহরের ব্যবসায়ী মো. আল-আমিন বলেন, ‘শহরের প্রধান সড়কটা এখন অনেক সুন্দর হয়েছে। তবে দোকানপাটের সামনে গাড়ি রাখার কারণে আবারও যানজটের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। পৌরসভা যদি নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে এ সমস্যা থাকবে না।’
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জেলা শাখার সাধারণ ইসমাইল হোসেন বলেন, শহরের রেলগেট থেকে হাড়াইল পর্যন্ত চার লেন সড়ক করা হয়েছে। কিন্তু সড়কের ওপর যত্রতত্র গাড়ি পাকিং আবার যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে। তবে রেলগেটে পশ্চিম অংশের সড়ক চার লেন করা হয়নি। সেই অংশে আগের মতো যানজট হচ্ছে।’
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভিগীয় প্রকৌশলী মেহেদী খান বলেন, ‘আমরা সড়ক ডিডাইডারে কোনো গাছ রোপণ করিনি। লোকজন যে যার মতো ডিভাইডারে গাছ লাগিয়েছেন।’
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাজস খান বলেন, ‘চার লেন সড়ক চালুর পর শহরে যানজট অনেকটাই কমে গেছে। এছাড়া শহরে গাড়ি পার্কিং সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় দীর্ঘ ১০ মাস ধরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজারের পদ শূন্য রয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন সরোয়ার ইউসুফ জামান এবং একাডেমিক সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিলন হোসেন। শিক্ষা কর্মকর্তা অবসরে যান এবং একাডেমিক সুপারভাইজার বদলি হয়ে অন্যত্র যোগদান করেন। এরপর থেকে এ দুই পদে কেউ নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে গাবতলী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সারিয়াকান্দির কার্যক্রম দেখছেন। তবে একাধারে দুই উপজেলার দায়িত্ব পালন করায় সারিয়াকান্দিতে প্রয়োজনীয় নজরদারি ও তদারকি হচ্ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
এ অবস্থায় বিদ্যালয়গুলোতে নানা প্রশাসনিক ও একাডেমিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের কাজের সমন্বয়, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, বিদ্যালয় পরিদর্শন এবং শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাকী মো. জাকিউল আলম বলেন, “দীর্ঘদিন শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। ফাইলপত্র জমা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় শিক্ষকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।”
মথুরপাড়া কাজী বছির উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, “নিয়মিত শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় শিক্ষার মান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষকদের সমস্যা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে।”
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আতিকুর রহমান বলেন, “বিষয়টি শিক্ষা বিভাগের হলেও আমি ইতোমধ্যে জানার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। দ্রুত পদায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশা করছি।”
বগুড়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, “সারিয়াকান্দির শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আপাতত গাবতলীর শিক্ষা কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বে কাজ করছেন। দ্রুত পদ পূরণের চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় শিক্ষাবন্ধুরা মনে করছেন, দ্রুত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজার নিয়োগ না হলে উপজেলার শিক্ষার মান আরও পিছিয়ে পড়বে।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাগলা গ্রামের হাওলাদারপাড়া থেকে বারঘর হয়ে কিল্লার রোড পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক ৪০ বছরেও পাকা হয়নি। কাঁচা এই সড়কটি বর্ষা মৌসুমে কাদা ও জলাবদ্ধতায় দুঃসহ হয়ে ওঠে। বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত রাস্তাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নজরবিহীনই থেকে গেছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই সড়কটি। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার বা পাকা করণের উদ্যোগ না থাকায় শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী ও শ্রমজীবী মানুষকে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
স্থানীয় বাসিন্দা আকবর হোসেন আরজু হাওলাদার বলেন, “এই সড়কটি ৪০ বছর ধরে কাঁচা রয়ে গেছে। বর্ষায় বাজারে যাওয়া বা রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। বহুবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো উন্নয়ন হয়নি।”
আরেক বাসিন্দা মাওলানা ওসমান গনি বলেন, “সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। বর্ষায় হাঁটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়ে। অবিলম্বে এ রাস্তা পাকা করা প্রয়োজন।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন জানান, “সড়কটি পাকা নির্মাণের জন্য সাবেক সংসদ সদস্যের কাছে বহুবার অনুরোধ জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে দ্রুত রাস্তাটি পাকা নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।”
চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. হারুন বলেন, “এটি ইউনিয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর একটি। ৪০ বছরে কোনো উন্নয়ন হয়নি, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল কাদের মোজাহিদ বলেন,“সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত-উজ-জামান জানান, “স্থানীয়দের ভোগান্তির বিষয়টি জানা হয়েছে। দ্রুত উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।”