বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া পলাতক আসামি মোশারফ হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি দৈনিক বাংলাকে জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি দল রোববার রাতে রাজধানীর গুলশান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোশারফকে গ্রেপ্তার করে।
মোশারফের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তার বাবার নাম মেহতাব উদ্দীন। এক দশক ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন মোশররফ।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশে দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ২১ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ আসামির মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মোশাররফ নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবনে দণ্ডিত হলেও পলাতক ছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে হাইকোর্টও ওই মোশাররফ হোসেনের সাজা বহাল রাখেন।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ৬ শতাধিক হতদরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে চক্ষুসেবা দেওয়া হয়েছে। সোমবার দিনব্যাপী ব্র্যাক মাইক্রোফিন্যান্স কর্মসূচির উদ্যোগে এই চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
ক্যাম্পে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওষুধ, চশমা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া ক্যাম্প থেকে শতাধিক রোগী বাছাই করে বগুড়ায় গাক চক্ষু হাসপাতালে বিনা খরচে ছানি অপারেশন করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী হোসেন শাহ, বগুড়া ব্র্যাক ডিভিশনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, জয়পুরহাট জেলা সমন্বয়কারী আরিফুল ইসলাম, এলাকা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম ও বগুড়া রিজিওনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন হাসান উল কবিরসহ বিভিন্ন ডাক্তার ও নার্সরা।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা-ছেলেকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে।
সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ব্রি-কালিয়াকৈর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিক আজিজুল হাকিম সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত নান্ন মিয়া ও সম্পি বেগমকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে আজিজুল হাকিমের পরিবারের সাথে চাচাতো ভাইয়ের বউ মধুমালার বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সোমবার সকালে মধুমালা বেগম, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, বোন রংমালা আক্তার, বোন জামাই মবজেল ও মধুমালার বাবা তোতা মিয়াসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অভিযুক্তরা ঘরে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগীর ভাই নান্ন মিয়া প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলার সময় তাদের মা সম্পি বেগম বাধা দিতে গেলে তাকেও কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মেরে জখম করা হয়। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্যাস সংকটে প্রায় ২০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এতে প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কারখানা বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া সার সংকটের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে কারখানার সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার।
কারখানা সুত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল কারখানাটি। কিন্তু গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও বিভিন্ন ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও উত্তরাঞ্চলের রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ প্রায় ২০টি জেলার আড়াই হাজার ডিলারের মাধ্যমে যমুনার সার সরবরাহ করা হয়।
গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানাসংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহনের চালক, হেলপার, কারখানার আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হোটেল মালিকরা। দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্যাস সংযোগ পেয়ে পুনরায় উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় ২৬ ফেব্রুয়ারি গত বুধবার রাত ৭টার পর অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। দীর্ঘ ২০ মাস ধরে বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি টাকা হারে লোকসান হচ্ছে বলেও জানা যায়। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় সার সংকট হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দ্রুত গ্যাস সংযোগ দিয়ে বৃহৎ এ শিল্প কারখানাটি সচল রাখতে না পারলে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান যমুনা সার কারখানা পরিদর্শন করতে আসেন। এ সময় স্থানীয় শ্রমিক, ডিলার ও ব্যবসায়ীরা গ্যাস সংযোগের দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস দেন বিসিআইসির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান।
কারখানার দৈনিক মজুরিভিত্তিক একাধিক শ্রমিক, ট্রাক পরিবহন শ্রমিকসহ একাধিক শ্রমিক বলেন, কারখানার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাক, ট্যাংক ও লড়ি পরিবহন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। কারখানা এভাবে বন্ধ থাকলে এক সময় চিনি ও পাটশিল্পের মতো এ শিল্পও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে যমুনা সারকারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম তালুকদার বলেন, আমরা কারখানাটি চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে অতি তারাতাড়ি গ্যাস সংযোগ দেবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ বলেন, ‘যমুনার সারের গুণগত মান ভালো। যমুনার সার জমিতে ব্যবহারের ফলে ফসল বৃদ্ধি পায় ও উৎপাদন ভালো হয়। গাছও সতেজ থাকে। আমদানি করা ও অন্য কারখানার সারগুলোর গুণগত মান ভালো না। আমদানিতকৃত সারগুলো দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় মজুত করে রাখায় জমাট বেধে শক্ত হয়ে যায়। ফলে এটি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। যমুনা সার কারখানাটি চালু করা অতি প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের কারখানাটি এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা আশ্বাস পেয়েছি যে আগামী মাস নাগাদ যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। গ্যাস সংযোগ পেলে আমরা পুনরায় পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের (উনি শাখা-২) ১৫/৯/'২৫ ইং তারিখের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার (১৫৭২৮)-কে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব আমিনুল ইসলাম এর স্বাক্ষরিত চিঠি মোতাবেক তার বর্তমান দায়িত্ব থেকে পদায়ন করে যুগ্ম-সচিব পদে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যান বিভাগে বদলী করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত উক্ত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুলাই-আগষ্ট/'২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পরে তাকে মাদারীপুরর ডিসি হিসাবে পদায়ন করা হয়েছিলো।মাদারীপুরে যোগদানের পর থেকে তিনি সুনামের সাথে তার নিজ দায়িত্ব পালন করে মাদারীপুরবাসির মধ্যে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সরকারী দায়িত্বের পাশাপাশি অফিস টাইমের পরেও তাকে অনেক সময় কাজ করতে দেখা গেছে। তার কাছে অফিস ও জনসমস্যা সংক্রান্ত যে কোনো কাজ নিয়ে মাদারীপুরের যে কেউ গেলে তিনি তা অধীর আগ্রহে শুনতেন, ব্যবস্থা নিতেন। তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্য পরায়ণতাকে মানুষ পজিটিভ চোখে দেখেছে, অনেকে মনে করছেন যে, মাদারীপুরবাসি একজন অত্যন্ত দক্ষ, কর্মনিষ্ঠ ও জনবান্ধব ডিসিকে হারালো।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে পদ্মা ডিপো থেকে রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে জ্বালানি তেল। বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) এর নিয়ম ভেঙে ডিপো কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে লাখ লাখ টাকার তেল চুরি হচ্ছে।
গত রোববার রাতে তেল চুরির প্রস্তুতিকালে দুটি গাড়ি আটক করে বিপিসি কর্মকর্তারা। এ সময় র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইলেও ডিপোতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি গণমাধ্যমকর্মীদের।
সোমবার বিকেল ৫ টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত গাড়ি দুটি ডিপোর ভেতরে আটক ছিল।
জানা গেছে, পদ্মা অয়েল কোম্পানি গোদনাইল ডিপো থেকে সাড়ে ১৩ হাজার লিটার ডিজেল নেওয়ার চালান করেন মাসুদ রানা ট্রেডার্স।
তখন তেল চোর হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ডিস্ট্রিবিউশন ওনার্স এসোসিয়েশন গোদনাইল পদ্মা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহম্মেদ ডিপো থেকে তেল লোড করার জন্য বশির ও কানা মাসুমের কাছ থেকে ১৮ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার দুটি ট্যাংকলরি ভাড়া করেন। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গাড়ি দুটি ডিপোতে প্রবেশ করে তেল লোড করার সময় বিপিসির একটি টিম গিয়ে গাড়ি
দুটি আটক করেন। তবে তার আগেই ১৮ হাজার লিটারের গাড়িতে সাড়ে ১৩ হাজার লিটার তেল লোড করে ফেলে। ডিপো কর্তৃপক্ষ চালানে বাই মিটার (গাড়িতে যে পরিমাণ তেল লোড করা যায়) হাতে লিখে দেন। অর্থাৎ সাড়ে ১৩ হাজার লিটারের বৈধতা থাকলেও তেল লোড করা হতো ১৮ হাজার লিটার।
এ সময় র্যাব-১১ বাহিনীর সদস্যরা তেলের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে ডিপো কর্তৃপক্ষ চালান দেখালেও ব্যাংক পে-অর্ডার দেখাতে পারেনি।
র্যাব সদস্যরা কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করে যাচাই-বাছাই ও বৈধ কাগজপত্র দেখতে গড়িগুলো ডিপো কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রেখে যান।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিপিসির নিয়ম অনুযায়ী যে পরিমাণ তেল লোড করার কথা ঠিক সে পরিমাণ ধারণক্ষমতার গাড়িতে তেল লোড দিতে হবে। আটককৃত গাড়িগুলোতে ছিল সাড়ে ৪ হাজার লিটার বেশি। তার মধ্যে একটি গাড়ি কোনো চালান বা পে-অর্ডার ছিলনা। গাড়ি দুটি লোড করতে পারলে সাড়ে ২২ হাজার লিটার তেল চুরি হতো। যার মূল্য প্রায় সাড়ে ২২ লাখ টাকা।
র্যাব-১১ অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অনিয়ম তদন্তের জন্য র্যাব সদস্যরা ডিপোতে গিয়েছিলেন। কোনো অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনিয়ম ও তেল চুরির বিষয়ে জানতে ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. শাকিল মাসুদকে একাধিকবার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে আরেক কর্মকর্তা (পরিচালক) আব্দুর রহিম বলেন, রাতে র্যাব সদস্যরা এসে তদন্ত করে গেছেন। সাড়ে ১৩ হাজার লিটার তেলের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গাড়ির পরিবর্তে ১৮ হাজার লিটারের গাড়ি কেনো প্রবেশ করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জের পদ্মা ডিপোর তেল চুরি ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ পেড্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান ও উর্ধ্বতন মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক ও অপারেশন্স) মণি লাল দাসকে ফোন করলে রিং হলেও তারা রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশের অসংখ্য নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে ‘রহস্যজনকভাবে’ মিয়ানমারে অভ্যন্তরে যাতায়াত করছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। যে পদক্ষেপে রাডার থেকে তথ্য সংগ্রহ, ড্রোন, নাইট ভিশন ডিভাইস এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই প্রযুক্তিতে ধরা পড়ছে বাংলাদেশের নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমার যাতায়াতের দৃশ্য।
বিজিবির পর্যবেক্ষণের তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের দুইটি অন্যতম প্রধান পথ তৈরী হয়েছে। যে পথে অধিকাংশ চোরাচালান হচ্ছে। আর ৮০ শতাংশ মাদকই সাগর উপকূলীয় এলাকা দিয়ে চোরাচালানের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিজিবির কাছে রয়েছে। ওই রুটগুলো ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে আসা মাদকদ্রব্য শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে না, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের দেশের যুব সমাজ ও অর্থনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ।
সোমবার দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বিজিবির উর্মি রেস্ট হাউজের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিবির ওই সেক্টর কমান্ডার।
সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত নিরাপত্তা, অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালান রোধে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে জানিয়ে গত ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাদকদ্রব্য উদ্ধারের তথ্য অবহিত করা হয়ে।
এই দুমাসে ২৮ লাখের বেশি ইয়াবা, প্রায় ১ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস সহ ৮৮ কোটি টাকার বেশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এই সময়ে সীমান্ত দিয়ে আসা ২২ টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো মিয়ানমার থেকে আসা। দেশটির রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠিটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত সমুদ্র থেকে আরাকান আর্মি হাতে ২২৮ জন জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, আটকদের মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় ১২৪ জনকে ফেরত আনা হয়েছে। এখনও ১২ টি ট্রলার সহ ১০৪ জন জেলে আরাকান আর্মির হাতে আটক রয়েছে। যার মধ্যে ৯৫ জন বাংলাদেশি এবং ১৩৩ জন রোহিঙ্গা।
তাদের ফেরত আনতে বিজিবির নিজস্ব কৌশলে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে সেক্টর কমান্ডার বলেন, আরাকান আর্মির সাথে আমাদের অফিশিয়াল কোনো যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। নানা মাধ্যমে কৌশলে যোগাযোগ করতে গিয়ে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশের পর আটক হয়েছে। আমাদের জলসীমায় এসে আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সাহস কারও নেই।
সাগর পথে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির সক্ষমতা না থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের গোয়েন্দা তথ্য ও ডিজিটাল তথ্য-উপাত্য দিয়ে সাগরে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ নেভী ও কোস্ট গার্ডকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবি আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম, মাইন বিষ্ফোরন, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সীমান্ত এলাকায় জনসচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ, ও মাইকিং পরিচালনা করা হচ্ছে। জনমত তৈরী ও জেলেদের নাফ নদীতে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম না করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি। এছাড়া বিজিবি প্রান্তিক জনসাধারণের জন্য চিকিৎসা সহায়তা, মাইন বিস্ফোরণে আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও সীমান্তের যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রামু সেক্টরের অধীন বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অধিনায়করা উপস্থিত ছিলেন।
বান্দরবানে রুমা বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে টোল-ট্যাক্স (হাসিল) আদায়ে অনিয়ম ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টায় রুমা বাজারে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ইজারাদার মোহাম্মদ খালেদ বিন। তিনি রুমা বাজার ও বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সম্প্রতি অধিকাংশ স্থানে বেআইনিভাবে টোল-ট্যাক্স আদায় করছেন। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ইজারাদার কর্তৃক জোরপূর্বক জবরদস্তি করে টোল-টেক্স আদায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
ভুক্তভোগী ও খক্ষ্যংঝিরি বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. খালেক মেম্বার অভিযোগ করে তার বক্তব্যে বলেন, খক্ষ্যংঝিরি বাজার জেলা পরিষদের বাজার ফন্দের অধীনস্থ নয়। কিন্তু বটতলী, আমতলী ও বাগানপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে জোরপূর্বক টোল-ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ সেপ্টেম্বর ও ৩ সেপ্টেম্বর রুমা উপজেলার সীমানার বাইরে রোয়াংছড়ি উপজেলায় তারাছা ইউনিয়নের ম্রোংগো বাজারে গিয়ে তাদের ট্রাক থেকে মোট ৩,৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ দুটি রশিদও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রদর্শন করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রুমা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. এদ্রিছ মিয়া, মোহাম্মদ বাবুল এবং খক্ষ্যংঝিরি বাজারের ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ খালেদসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বক্তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পরিমাণের বাইরে ইজারাদারের নিজের ইচ্ছেমতো টোল-ট্যাক্স আদায়ের অধিকার নেই। অবিলম্বে এই অনিয়ম বন্ধ না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
প্রশাসনের কাছে দাবি করে বক্তারা বলেছেন, অবৈধ টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ব্যবসায়ীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, রুমা বাজার সেডটির একটি কুচক্র ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমল থেকে নিজের সম্পদ হিসেবে দখল করে রেখেছে। ফলে হাটবাজার দিনে দূর-দূরান্ত থেকে শাকসবজি ও ফলমূল পিঠে বহন করে নিয়ে আসা নারীরা বাজার শেড স্থান না পাওয়ায় রাস্তার ধারে শাকসবজিগুলো ফেলে রেখে বিক্রি করছেন। এতে দুরকম পাহাড় থেকে শাকসবজি বিক্রি করতে আসে নর-নারীরা একদিকে ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন সময় ভোগান্তিতে শিকার হচ্ছে , অন্যদিকে দোকানদারের কাছে অশুভ আচরণে তিরস্কার শিকার হচ্ছে। এসব ভোগান্তি দূরীকরণে রুমা বাজার শেড নিচতলায় নিজের স্থায়ী সম্পত্তির মতো সবজি দোকান করা ওইসব ব্যবসায়ীদের একটা নিয়মের ভেতরে আনতে হবে যাতে উভয় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কেউ গারো সম্প্রদায়ের। কেউ কোচ-বর্মণ। কারও হাতে দা-বটি। কারও হাতে বাঁশের ফালি। কেউ চটা কাটছে। কেউবা আবার করছে বুননের কাজ। তাদের নিপুণ হাতে ফুটে উঠেছে বাঁশের শৌখিন বাহারি পণ্যে। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের ফুলবাগ চালা ইউনিয়নের পীরগাছা বর্মন পল্লির কথা।
পীরগাছা গ্রামটি মধুপুর শহর থেকে ১২-১৩ কি. মি. উত্তরে অবস্থিত। এ গ্রামের সিংহভাগ বসতি গারো কোচ সম্প্রদায়ের। কোচদের বেশি বসতি গ্রাম এটিই।
এখানে তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। তাদের নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি অনেকটাই হারিয়ে গেলেও এখনো টিকে আছে বাঁশের কাজ। কোচ নারীরা বাড়িতেই কুটিরশিল্পের কাজ করে থাকে। নারী-পুরুষরা কৃষি ও বাঁশের কাজ তাদের প্রধান পেশা। কমবেশি সারা বছরই তারা বাঁশের কাজ করে থাকে। তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় হাত পাখা, কলমদানি, প্রিন্ট ট্রে, পেন হোল্ডারসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে।
পীরগাছা বর্মনপাড়ায় গিয়ে কোচ নারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের পাড়ায় কেউ কেউ গৃহস্থালি, কেউ কেউ দিন মজুরি, কেউবা ক্ষুদ্র ব্যবসা, কেউ কেউ বাঁশের কাজও করে থাকে। এক সময় নিজের সংসারের কাজের পাশাপাশি সারা বছরই বাঁশের কাজ করত। এখন বাঁশের দাম বেড়ে যাচ্ছে। প্লাস্টিকের পণ্যের চাহিদা
ও দাপটে তাদের পণ্যের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাদের গ্রামের প্রায় ২৫০ ঘরের নারীরাই কমবেশি বাঁশের কাজ করে থাকে বলে জানালেন সঞ্চিতা রানী।
বিভিন্ন জেলার লোকজন এসে তাদের বাঁশের তৈরি কিনে নেয়। পুঁজির অভাবে তারা কুটিরশিল্পের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। এ জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে সংসার চালিয়ে থাকে। প্রতি সপ্তাহেই অনেক পরিবারের কিস্তি গুণতে হয়। বাঁশের কাজ করেও তাদের অভাব থেকেই যাচ্ছে। তারা সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি জানান।
উদ্যোক্তা লিটন নকরেক (৪৭) বলেন, তার পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। অর্ডার আসলে তৈরি করে দেন। সে প্রতি মাসে ৫-৬ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারে বলে জানান তিনি।
পীরগাছা গ্রামের বাঁশের কাজ করা নারী রাঁধা রানী (৪০) বলেন, ‘তার বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর আগে। সে তার বাবার বাড়িতে থাকতেই পরিবারের সাথে বাঁশের কাজ করত। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসেও এ কাজই করছে।’
সঞ্চিতা রানী (৩০) বলেন, ‘দুই ছেলে-মেয়ের সংসার। স্বামীর সংসারে সহযোগিতার জন্য সে বাঁশের কাজ করে থাকে। তার এক মেয়ে ক্লাস সেভেনে পড়ে। ছেলে কেজিতে পড়ে। পড়াশোনা শিখে তারা যেন ভালো মানুষ হয় এমনটাই তার চাওয়া। বাঁশের কাজে উপার্জিত অর্থ স্বামীকে দিয়ে সহযোগিতা করে।’
কোচ পল্লীর অহলা রানী (৪০) বলেন, ‘সে ২০০৮ সালে কাজ শেখেন। দেখাদেখি তার কাজ শেখা। তালাই, পাখা, ধারি, গাছেক, ফুলদানিসহ বিভিন্ন শৌখিন পণ্য তৈরি করে। তার অর্জিত অর্থ দিয়ে সংসারের কাজ লাগান। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচসহ বিভিন্ন প্রয়োজন মেটান। জলছত্র গ্রামের মুন্নি মৃ (৪০) বলেন, ‘তার স্বামী বাঁশ-বেতের কাজ করে। বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা ভালোই। চাহিদা বেশি তবে দাম কম। পোষাতে পারে না। সংসার চলাতে কষ্ট হয়। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান তিনি।’
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘মধুপুরের নারীরা বিভিন্ন ধরনের কুটিরশিল্পের কাজ করে থাকে। তাদের তৈরিকৃত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ে তিনি বলেন, কুটিরশিল্পে মধুপুরে কাজের সাথে জড়িতদের তালিকা ঊর্ধ্বতন অফিসে পাঠানো হয়েছে।
নীলফামারীতে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়ক নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়ন।
সোমবার দুপুর ১২টায় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল মোহাব্বতের সভাপতিত্বে বক্তৃতা দেন ট্রাক মালিক সমিতির নেতা ও জেলা বিএনপির সদস্য আনিছুর রহমান কোকো, জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জামিয়ার রহমান, সহসম্পাদক আব্দুর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক মোফাখখারুল ইসলাম চিনু প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘নীলফামারী মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হওয়ার দীর্ঘসময় পার হলেও এখনো আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়নি। জেলায়
ব্যক্তি মালিকানাধীন তিন শতাধিক ট্রাক ও ড্রাম-ট্রাক রয়েছে। এসব যানবাহন রাখার জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় চালকদের সড়কের পাশে যেখানে- সেখানে গাড়ি থামাতে হচ্ছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন চালকরা অপর দিকে ট্রাফিক পুলিশের দ্বারা জরিমানারও শিকার হচ্ছেন।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে জেলা শহরের বাইপাস সড়কটি নির্মাণ
করা হয়েছে। অনেক বড় বড় বাক থাকার ফলে ট্রাক, বাসচালক ও সাধারণ মানুষের জন্য এই বাইপাস রাস্তাটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে প্রাণহানি ও যানবাহনেরও ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে দ্রুত আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়ক নির্মাণ করতে হবে।’
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসককে স্বারকলিপি প্রদান করেন ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচিতে জেলা ট্রাক-ট্যাংকলড়ী শ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক মালিক সমিতির নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী তরুণ মোড় থেকে হাসিমপুর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন হাজারও মানুষ। এই সড়ক দিয়েই সদকি, জগনাথপুর ইউনিয়ন এর পাশাপাশি খোকসা উপজেলারও বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়ত করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ফলে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ, ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, খানাখন্দে ভরা এই সড়ক প্রতি বর্ষায় হয়ে ওঠে আরও ভয়ংকর। প্রতিনিয়ত ঘটে ছোটো বড় দুর্ঘটনা।
যানবাহন-ভ্যান উল্টে যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে যায় বারবার। পথচারী আশিকুর রহমান বলেন ‘রোগী নিয়ে যাওয়া যেন বিপদজনক সড়কের কারণে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে।
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আপান ইসলাম বলেন, মাঝেমধ্যেই দেখি যাত্রীরা পড়ে গিয়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শিশু-বৃদ্ধরা বেশি আহত হন। স্কুলের শিশুদের নিয়ে সবসময় ভয়ে থাকেন অভিভাবকরা।’
উপজেলা শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়কের এই যদি হয় হাল। ট্রাকচালক রুস্তম আলী বলেন, মাঝেমধ্যেই এই সড়ক দিয়ে যাতায়ত করি। উঁচুনিচু গর্ত সড়ক হওয়ায় গাড়ির নানা যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে প্রায়ই। এগুলো ঠিক করতে করতেই আমাদের লাভ-ক্ষতি প্রায় সমান হয়ে যায়। কুমারখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিডি) মো. নাজমুল হক বলেন, এই রাস্তার স্টেমেট পাঠাইছি দেখি বরাদ্দ পাইলে কি করা যাই। তবে উপজেলার আইডিভুক্ত সড়ক কত কিলোমিটার জানতে চাইলে তিনি বলেন,এভাবেতো বলা যায় না অফিসে আসতে হবে ফাইল-টাইলের ব্যাপার স্যাপার।
স্থানীয়রা বলছেন, বরাদ্দের অজুহাত না দেখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না করলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি আঞ্চলিক সড়ক দীর্ঘ ৫ বছর ধরে খানাখন্দে ভরা রয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই বেহাল পথে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। যানবাহন, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দুরবস্থা।
সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের হলুদ দালান মেইন সড়ক থেকে ভাসানচর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও কাদামাটি, কোথাও আবার হাটুসম গর্ত তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে পুরো কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কটি প্রায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে।
রসুলপুর ৪নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু তাহের মাঝি বলেন, এই সড়ক দিয়ে রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড ও চরমানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুধু কষ্ট নয়, অনেক সময় জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
একই এলাকার চা দোকানি জাহাঙ্গীর জানান, ২০১১ সালে সড়কটি নির্মাণের পর প্রায় ৮-৯ বছর মানুষ চলাচল করেছে। কিন্তু গত ৫ বছর ধরে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে গাড়ি ও পথচারী সবাই মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক শফিউল্লাহ সবুজ বলেন, জরুরি রোগী পরিবহন করতে গিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। মানুষের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কেউই নজর দিচ্ছেন না।
ওই সড়কে নিয়মিত অটো রিকশা চালক বশির ও বেলাল জানান, এই সড়কে রিকশা চালাতে গিয়ে বারবার যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। যা আয় করি তার বেশির ভাগই মেরামতে চলে যায়। তাই দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
চরফ্যাশন উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাদ জগলুল ফারুক জানান, সড়ক সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ওই আঞ্চলিক সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, গ্রামবাসীর ভোগান্তির বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ‘আগামীর অগ্রনায়ক’ শীর্ষক বুকলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে বুকলেট বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সাবেক সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
বুকলেট বিতরণকালে অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা আগামীর পজিটিভ বাংলাদেশ। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলেই বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলে দাড়াবে। বাংলাদেশের জনগণ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক হবেন। যেখানে দারিদ্র্যতা ও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানসহ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাস্তবায়নের পথ দেখানো হয়েছে। আমাদের এই ভাবনাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের সকল নেতাকর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই এই ৩১ দফার অ্যাম্বাসেডর।
বুকলেট ও গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ পৌরসভা বিএনপির সহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, কাঁচপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সোহেল আরমান, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিক ভূইয়া, সোনারগাঁ পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতা রাব্বি জুয়েল, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা বাবু, বৈদ্দ্যের বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আদিব ইকবাল প্রমুখ।
একটি সভ্য সমাজে এই মব সংস্কৃতি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই, তবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে অভিজ্ঞতা দরকার, তার ঘাটতির কারণেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। দেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
সোমবার দুপুর ১২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রহমাতুল্লাহ বলেন, নির্বাচন ছাড়া দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা তাদের দায়িত্ব। স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না করে সেই অঙ্গীকার পূরণ করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে সরকারের ব্যর্থতা জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যখন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় উদ্যোগের অভাবের কথা স্বীকার করেন, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য দুঃখজনক।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হন। পরে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।
রহমাতুল্লাহ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হলে জাতীয় নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তাই এখন থেকেই সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা আবারও হুমকির মুখে পড়বে। দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় হলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু, সহসভাপতি জাকির হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আলম ফরিদ, কমল সেন গুপ্ত, সাইফুর রহমান মিরণ, সৈয়দ মেহেদী, তারিকুল ইসলাম তুহিনসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।