চট্টগ্রামের হালিশহরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে বিভিন্ন ধরনের ২৬টি যান পুড়ে গেছে। এ সময় মোহাম্মদ আলী নামে একজন দগ্ধ হন। তিনি ওই গ্যারেজের প্রহরী বলে জানা গেছে।
রোববার দিবাগত গভীর রাতে হালিশহর থানার বউ বাজার এলাকায় খাজা হোটেলের পাশে একটি অটোরিকশার গ্যারেজে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে গ্যারেজে থাকা ২০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৫টি মোটরসাইকেল ও একটি রিকশা পুড়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. লোকমান হোসেন বলেন, ‘প্রহরী যেখানে থাকে ওখানে আগুন দেখে আমি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিই। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে কাজ করে। আগুন থেকে মাত্র একটি সিএনজি অটোরিকশা বের করতে পারছে। ভেতরে থাকা বাকি সবকিছু পুড়ে গেছে।’
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা খান খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা রাত পৌনে ২টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েছি। আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বিভিন্ন ধরনের ২৬টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কায়সার হামিদ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস আর গ্যারেজ মালিক জাহাঙ্গীর আলমের দেয়া তথ্যানুযায়ী, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে ওই আগুন লেগেছিল। আগুনে ওই গ্যারেজের প্রহরী দগ্ধ হয়েছেন, তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বার্ষিক ক্রয়-বাস্তবায়ন পরিকল্পনার (অনুন্নয়ন রাজস্ব) টাকা হরিলুট করার অভিযোগ উঠেছে। সংস্কার কোটেশন বা আরএফকিউ/ডিএমপি নামে ২০২২-২৩ অর্থবছরের অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যানের (এপিপি) এসব টাকার বেশির ভাগই কাজ না করে উত্তোলন করা হয়েছে।
আর এসব আত্মসাৎ করা হয়েছে পাবনা পাউবোর শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে। এভাবে প্রতি অর্থবছরেই কাজ না করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করছেন তারা।
প্রাপ্ত তথ্য জানা গেছে, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৭২টি প্রকল্পের কাজ হয়েছে। প্রকল্প প্রতি ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে ই-জিপির মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে ২৮টি, বাকিগুলো সম্পন্ন হয়েছে ম্যানুয়াল টেন্ডারের মাধ্যমে। ই-জিপি টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়া প্রকল্পগুলো কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও ম্যানুয়াল টেন্ডারের প্রকল্পের ক্ষেত্রে হরিলুট হয়েছে। ম্যানুয়াল টেন্ডারের ৪৪টি প্রকল্পের অধিকাংশেরই নামে মাত্র কাজ হয়েছে। এর মধ্যে ১০-১৫টি প্রকল্পের কাজ কিছুই করা হয়নি। অথচ এসব প্রকল্পের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বিল পরিশোধ হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দীন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) খলিলুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী (এসএই) সুমিরা খাতুন এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে এসব টাকা হরিলুট করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) খলিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি ঢাকায় (বদলি) চলে আসছি। এসব কাজ না করেই টাকা উত্তোলন নিয়ে আমি কিছু জানি না।’ এরপর ফোন কেটে দেন, পরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
পাবনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসএই) সুমিরা খাতুন বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এখন নদীর ক্যানেল ভেঙে যাচ্ছে, চলে যাচ্ছে এগুলোর কাজ না করে কীভাবে আমরা টাকা উত্তোলন করে খেয়ে নেব। এগুলোর বেড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের হতে পারে, আমাদের (পাবনা) না, আমাদের সব প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবেই হয়েছে। কাজ হয়নি এমন প্রকল্প নেই।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের সব প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা।’
উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া, রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকা ঘন কুয়াশায় পঞ্চগড়ের শীতার্ত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দুর্ভোগে পড়েছে অসহায় ছিন্নমূল মানুষ। হালকা বৃষ্টিপাতের ফলে হঠাৎ করেই গত রাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকে, সেই সঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে আসা হিমেল হাওয়া জনজীবনকে করে ফেলে বিপর্যস্ত। শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকায় ব্যাঘাত ঘটছে।
আজ রোববার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাসেল শাহা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে। এদিকে অব্যাহত শীতে দরিদ্র মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে।
সন্ধ্যার পরপরই পাহাড় থেকে নেমে আসছে হিম বাতাস ফলে ঠাণ্ডা বাড়ছে, ঘরমুখী হয়ে পড়ছে মানুষ। সন্ধ্যার পর পর শহরের রাস্তা-ঘাট, গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারগুলো হয়ে পড়ছে জনশূন্য। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাতে হচ্ছে অনেককে।
জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে যে পরিমাণ শীতবস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। ইতোমধ্যে শীতবস্ত্রের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’
রংপুর সিটি করপোরেশন ঘোষণার পরই জমিজমার দাম বেড়ে যায়। তখন থেকে ভূমিদস্যুদের তৎপরও শুরু হয়। এই ভূমিদস্যুর কবলে পড়ে দুটি পরিবার আজ হুমকির মুখে। এ বিষয়ে এখনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। সম্প্রতি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী অন্যের জমি অবৈধভাবে দখল করলে ৭ বছরের জেলের বিধান রেখে ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ পাস হলেও আইনটিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জাল দলিল তৈরি করে জোর করে জমি দখল করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার ১৭নং ওয়ার্ডের পীরজাবাদ নামক গ্রামে রিপন মিয়া ও রফিকুল ইসলামের সম্পত্তি নিয়ে ঘটনাটি ঘটে। ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা তাদের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দিনাতিপাত করছেন। অবশেষে জমির মূল কাগজপত্র ভুক্তভোগীর নামে থাকা সত্ত্বেও ভূমিদস্যুরা জাল দলিল বানিয়ে জমির প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে রংপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীরা বর্তমানে বিভিন্নভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভূমিদস্যুর মূলহোতা পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মনোয়ার হোসেন, আনারুল ইসলাম। তারা জোর করে ভুক্তভোগী রিপন মিয়া ও রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে জমি দাবি করে সহকারী জজ আদালত, রংপুরে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ভূমিদস্যুরা হেরে গিয়ে ভুক্তভোগীর বাসার নির্মাণকাজে বাধা দেয় এবং বিভিন্নভাবে রাজমিস্ত্রিসহ অন্য নির্মাণ শ্রমিকদের হুমকি দেয়, তারা যেন কাজ ছেড়ে চলে যায়। বর্তমানে ভুক্তভোগীরা অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ভূমিদস্যুরা তাদের ক্ষমতা ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে নাজেহাল করছে ভুক্তভোগীদের।
এলাকাবাসী জানায়, ভুক্তভোগী রিপন মিয়া ও রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এ জমিতে বসবাস করে আসছে। আরও জানা যায়, ভুক্তভোগী রিপন মিয়া ও রফিকুল ইসলামের পূর্বপুরুষরা এ জমিতে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছিলেন, যা আদি নিবাস বলে পরিচিত ছিল; কিন্তু জমির মূল মালিক মারা যাওয়ার পর থেকে ভূমিদস্যুরা জাল দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে রিপন মিয়া ও রফিকুল ইসলামকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের ঘরবাড়ি ছাড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ জমিতে বসবাস করে থাকার পরও তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তাই আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে জীবনযাপন করছি। ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মনোয়ার হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তবে তার কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে দড়িকান্দি বাস স্ট্যান্ড এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মাইনউদ্দিন নামের মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার রাত পৌনে ৮ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মাইনউদ্দিন কুমিল্লার লাঙ্গলকোট উপজেলার মনিরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দড়িকান্দি বাসট্যান্ড এলাকায় আজ রোববার রাত পৌনে ৮ টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা থেকে কুমিল্লার দিকে যাচ্ছিল মাইনউদ্দিন। এ সময় দ্রুতগামী একটি গাড়ি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল চালক ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক বলেন, মরদেহ ও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এক গরু ব্যবসায়ীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পিএবি সড়কের বরুমচড়া রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
গরু বিক্রির টাকা নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ীর নাম ফজলুল কাদের মাস্টার (৭০)। বারখাইন ইউনিয়নের দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ গ্রামে ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত গুরু মিয়ার পুত্র সে।
আহত মাস্টার ফজলুল কাদের জানান, সরকার হাট নামক জায়গা থেকে আনোয়ারায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিতে ওঠেন তিনি। সেখানেই সিএনজিতে যাত্রী বেশে বসে ছিল আরও দুজন লোক। কিছুদূর আসার পর তারা ধস্তাধস্তি শুরু করে। এক পর্যায়ে কোমর থেকে ছুরি বের করে আঘাত করতে থাকেন তাকে। এলোমেলো ছুরি চালানোর সময় নিজেকে প্রাণে রক্ষা করতে পারেন তিনি। তবে সঙ্গে থাকা ১৬ লক্ষ টাকা ও ব্যাংকের চেকবই ছিনিয়ে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার তৈলারদ্বীপ এলাকায় নিজস্ব গরুর ফার্ম রয়েছে কাদের মাস্টারের। দীর্ঘদিন তিনি সরকার হাটসহ বিভিন্ন বাজারে গরু বেচাকেনা করে আসছিলেন। টাকাগুলো সিরাজগঞ্জে পাঠানোর জন্য ব্যাংকে যাচ্ছিলেন তিনি।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি বাসা থেকে মোসাম্মৎ জান্নাত (২২) বছর বয়সী এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক রাত পৌনে ৮টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার এলাকায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খিলগাঁও থানার উপ পরিদর্শক (এস.আই) নিপেন বিশ্বাস।
তিনি জানান, আজ সন্ধ্যার দিকে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ৭ তলার ভবনের (বাড়ি নং- ২৯/ঝ/) ঘর থেকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে এস.আই আরও জানান, পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পেলে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর কক্ষে ফুয়াদ আল খতিব নামে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ রোববার বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথমে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম।
মৃত ফুয়াদ সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজিবপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে তিনি।
হলের অন্য শিক্ষার্থীরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফুয়াদ গ্রামের বাড়িতে যান। গতকাল শনিবার রাত ৩টার দিকে ফিরে এসে হলের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারপর আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত সহপাঠীরা তাকে মুঠোফোনে সংযোগ না পেয়ে কক্ষে আসেন এবং অচেতন অবস্থায় তাকে দেখতে পান। পরে হল প্রশাসনের সহায়তায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম আরও বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ফুয়াদকে অচেতন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে ফুয়াদ মারা গেছে বলে চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। তবে মারা যাওয়ার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
মাদিহা নামের এক দেড় বছর বয়সী শিশুর পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুরের কালকিনিতে নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল সে।
আজ রোববার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। নিহত মাদিহা উপজেলার শিকারমঙ্গল গ্রামের এনায়েত মুন্সির মেয়ে।
হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার চর বিভাগদী গ্রামে মায়ের সঙ্গে নানাবাড়ি বেড়াতে যায় মাদিহা। ঘরের পাশে একটি পুকুর পাড়ে খেলতে গিয়ে পা পিছলে পুকুররে পানিতে পড়ে যায় সে। পরে তাকে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে এলাকাবাসি। উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মাদিহার নানু আফসানা বেগম জানান, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আমার নাতি মাদিহা খেলতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে।
এ ব্যাপারে শিকারমঙ্গল গ্রামের ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী জানান, আসলে বিষয়টি দুঃখজনক। বাচ্চাটি পানিতে ডুবে মারা গেল।
কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ডুবোচরে আটকে পড়া সেন্টমার্টিনগামী একটি পর্যটকবাহী জাহাজের যাত্রীদের উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। পর্যটকদের উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নাফনদীর মোহনায় নাইক্ষ্যংদ্বীয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাহাজের নাবিকের অদক্ষতার কারনে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি।
তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে পর্যটকবাহী জাহাজ “এম ভি গ্রিন লাইন-১” ডুবোচরে আটকা পড়ে। আমাদের একাধিক উদ্ধারকারীদল ঘটনাস্থল থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করে। পরে তাদের স্পীডবোটে করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন পর্যটক অসুস্থত হয়ে পড়েলে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, রোববার সকালে টেকনাফস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাট হতে ৪৪ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে বের হয় জাহাজটি। সেন্টমার্টিনের চার নটিক্যাল মাইল উত্তরে একটি ডুবোচরে আটকে যায় জাহাজটি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সেন্টমাটিনে যাওয়ারপথে পর্যটকবাহী এমভিগ্রিন লাইন-১ নামে জাহজটি ডুবোচরে আটকে যায়। পরে কোস্টগার্ডকে খবর দিলে তাদের উদ্ধার করা হয়। পর্যটকবাহি অন্য জাহাজগুলো নিরাপদে সেন্টমার্টিনে পৌঁছে গেলেও চালকের অদক্ষতার কারনে গ্রিনলাইন জাহাজটি আটকে যায়।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজটি ডুবোচরে আটকা পড়েছিল। পরে কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে। বিষয়টি তদন্ত করে জাহাজ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নোয়াখালীতে পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ফখরুল ইসলাম (৫৫) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন।
রোববার সকালে সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের সোনাপুর-রামগতি সড়কের মান্নান নগর চৌরাস্তা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ফখরুল লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আলম মিয়ার ছেলে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে একটি অটোরিকশায় রামগতি থেকে সোনাপুরের উদ্দেশে যচ্ছিলেন ফখরুল। মন্নান নগর চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ফখরুলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।’
পাবনার বেড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত তিন তলাবিশিষ্ট বেড়া পৌর মার্কেটের প্রধান ফটকে টাঙানো রয়েছে ‘একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামে বিশালাকৃতির এক ডিজিটাল নোটিশ। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ওই নোটিশের কোনো গুরুত্ব দেয়নি। কর্তৃপক্ষও কেবল নোটিশ টাঙিয়েই দায় সেরেছে।
পৌর কর্তৃপক্ষের টাঙানো ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বেও এই ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে ভবনের ব্যবসায়ীদের মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনেই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। পুনরায় ব্যবসায়ীদের মালামাল স্থানান্তরের অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় জানমালের কোনো ক্ষতি হলে পৌর কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। গত দশ বছর ধরেই চলছে এ অনুরোধের আসর।
বেড়া পৌর মার্কেটটিকে ২০১৩ সালে প্রথম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর একাধিকবার মার্কেটের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীকে পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মালামালসহ সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু বিকল্প যাওয়ার জায়গা না থাকায় ঝুঁকি জেনেও ব্যবসায়ীরা এই ভবনেই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
তবে এই ভবনে ব্যবসা চালাতে গিয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা সব সময়ই ভবনটি ধসে যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন। এর ওপর ভূমিকম্প হলে তো কথাই নেই। আতঙ্ক এমন চরমে ওঠে যে, তখন অনেকেই এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। গত শনিবার সকালে সংঘটিত ভূমিকম্পের সময়েও প্রাণভয়ে অনেককে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯২ সালে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় সাবেক পৌর কর্তৃপক্ষ একটি তিন তলা ভবন গড়ে তোলে। অথচ বিধি মোতাবেক ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, ওই সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দুর্বল অবকাঠামোর ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর ফলে নির্মাণের ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
এদিকে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও ব্যবসায়ীদের বিকল্প কোনো স্থানে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। এমনকি ভবনটির কোনো রকম সংস্কারের উদ্যোগও নেয়া হয়নি। ফলে এটি দিন দিন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই এই ভবনের বিম ও ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়েছে। এতে করে কখনো ভবনের ব্যবসায়ী আবার কখনো ক্রেতা কিংবা পথচারীরা আহত হচ্ছেন।
পৌর সুপার মার্কেটের উত্তর-পশ্চিম দিকের ১৭ নম্বর দোকান ভাড়া নিয়ে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা চালাতেন মো. মনিরুজ্জামান। দশ দিন আগে তিনি মার্কেট থেকে তার দোকানটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দোকানের সামনের অংশ ও ভেতরের ছাদ থেকে প্রায়ই ইটের টুকরা ও প্লাস্টার খুলে পড়ে। মাস-তিনেক আগে দোকানের ভেতরে ছাদ থেকে বড় একটি অংশ আমার সামনে খুলে পড়েছিল। সেদিন অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’
পৌর মার্কেটে থাকা মুদি দোকানি লিটন চৌধুরী, কাঁসা-পিতল ব্যবসায়ী আব্দুল মোমিনসহ চার-পাঁচজন ব্যবসায়ী জানান, দোকান ছেড়ে দিলে আয়ের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মারাত্মক ঝুঁকি জেনেও তারা এই মার্কেটে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
পৌর মার্কেটের সঙ্গে একেবারে লাগোয়া আব্দুল জলিল সুপার মার্কেটের মালিক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘পৌর মার্কেট ভবনটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তির ওপর অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ দিকের ১০ থেকে ১২টি দোকান পুরোপুরি আড়ালে পড়ে গেছে। এসব দোকানে প্রবেশের রাস্তা একেবারেই সরু হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- পৌর মার্কেটের ভবনটি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে আমাদের সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।’
বেড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজুল আলম বলেন, ‘সম্প্রতি ভবনটির অবস্থা-সংক্রান্ত একটি ডিজিটাল নোটিশ বিজ্ঞপ্তি আকারে ভবনে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে মার্কেটটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাসিক ভাড়া স্থগিত করা হয়েছে। তৃতীয় তলায় থাকা পাবলিক লাইব্রেরিটিও সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি ভেঙে ফেলার ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অতিদ্রুত আমি কথা বলব।’
নোয়াখালীর চাটখিলে ছুরি দেখিয়ে ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে উপজেলার রামনারায়নপুর কৃষি ব্যাংক শাখায় এ ঘটনা ঘটে। আটক আব্দুল মজিদ (৫০) একই উপজেলার শাহাপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
কৃষি ব্যাংক রামনারায়নপুর শাখা ম্যানেজার অলোক কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘দুপুর দেড়টার দিকে এক ব্যক্তি টুপি মাথায় মুখে মাস্ক পরে ব্যাংকে ঢুকে কাশিয়্যারকে ছুরি দেখিয়ে টাকা লুটের চেষ্টা করে। এসময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিরাপত্তা প্রহরী শাহ আলমকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া করে তাকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। আহত নিরাপত্তা প্রহরী চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।’
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রাহক সেজে ব্যাংকে ঢুকে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে মজিদকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংক কতৃপক্ষ এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রূপগঞ্জে একটি বৃক্ষ ঘিরে রয়েছে নানা কল্প-কাহিনি। বৃক্ষটির বয়স নিয়েও রয়েছে নানান মত। কারও মতে ৩০০ বছর, কারও মতে আরও বেশি। তবে কত বছর ধরে এটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে, তা কারও সঠিক জানা নেই। বৃক্ষটিকে সবাই ‘অচিন বৃক্ষ’ বলেই চেনে।
জায়গাটিকে সবাই চেনে ‘অচিনতলা’ হিসেবে। উদ্ভিদ বিভাগের কাছেও গাছটি অচেনা। কথিত আছে, এ বৃক্ষের ডালাপালা কেউ ভয়ে ছিঁড়ে না। ছিঁড়লে পেট ব্যথা করে। তবে রোগ-বালাইয়ের জন্য এ বৃক্ষের পাতা খুবই উপকারী। মানত করলে উপকার হয়। সুনিবিড় ছায়ায় বিশ্রাম নিলে ক্লান্ত পথিক আরাম বোধ করেন। তাই গাছটি ‘ছায়াবৃক্ষ’ হিসেবে পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সদর ইউনিয়নের জাঙ্গীর গ্রামে অচিন গাছটির অবস্থান। দৈত্যাকৃতির গাছটি কবে, কীভাবে, কে রোপণ করেছিল, তা কারোর ধারণা নেই। তবে গাছটি নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা কিংবদন্তি। এ গাছের ডাল কেটে রক্তবমি করে মারা গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তারপর থেকে কেউ ডাল কাটে না। এমন কাহিনি বলতে ও বিশ্বাস করতে এলাকার লোকজন অভ্যস্ত। বন বিভাগ ও গাছপালা নিয়ে গবেষণা করেন যারা, তাদের কেউ কেউ মাঝেমধ্যে গাছটি দেখতে আসেন। দেখে চলে যান, কিন্তু আজ পর্যন্ত গাছটির প্রকৃত নাম শনাক্ত করতে পারেননি কেউ।
স্থানীয়রা বলেন, গাছটির অজানা কাহিনি শুনলে গা-শিউরে উঠবে। গাছটির বয়স হবে প্রায় ৩০০ বছর। ব্রিটিশ আমলে এখানে গভীর জঙ্গল ছিল। সেখানে ভয়ে মানুষ উঁকিও দিত না। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের দিকে অজানা এক সাধু আচমকা গাছটির নিচে আশ্রয় নেন। তার কানে ছিল দুল। মাথায় ঝাঁকড়া চুল। পায়ে ঘুঙুর। পরনে থাকত পাটের চট। বাক-প্রতিবন্ধী এ সাধু ক্ষিধে পেলে অচিন গাছের পাতা চিবিয়ে খেতেন। তার পাশে সব সময় জলন্ত আগুনের কুণ্ডলী থাকত। আর বাঁশের তৈরি হুক্কা দিয়ে হুক্কা খেত। ধীরে ধীরে মানুষের যাতায়াত শুরু হয়। একসময় মানুষ সাধুর কাছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য পানি পড়া আনত। উপকার পেয়ে অনেকে নানান কিছু মানত করত। তার সঙ্গে সব সময় বালতি থাকত। তাই ওই সময় তাকে সবাই বালতি সাধু বলে চিনতেন।
জাঙ্গীর সুন্নি মাদ্রাসার মাওলানা ফাইজুদ্দিন বলেন, বালতি সাধু ইরাকের বাগদাদ শহরের এক পীরের শিষ্য। তাই তাকে নুরা বাগদাদী বলে ডাকতেন অনেকে।
সত্তোর বছর বয়সি হুমায়ুন মাস্টার। এলাকার লোকের কাছে সম্মানীয়। অচিন গাছের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দাদা ডেঙ্গুরি ভূঁইয়া প্রায় ১৩০ বছর বেঁচে ছিলেন। বাবা সোলায়মান ভূঁইয়া বেঁচে ছিলেন ৯০ বছর। তাদের মুখে ছোটকালে শুনেছি এ অচিন গাছের রূপকথার গল্প।’ তিনি বলেন, গাছটি অনেক পুরোনো। নুরা বাগদাদের আগমন না হলে অচিন গাছ ও অচিন দ্বীপের সৃষ্টি হতো না। উদ্ভিদ বিভাগের লোকজনও গাছটির পরিচয় চিহ্নিত করতে পারেননি। ফলে এলাকাবাসী গাছটিকে অচিন গাছ বলেই চেনেন। আর জায়গাটিকে চেনে অচিনতলা হিসেবে।
গাছটি দেখতে আশপাশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। মানত করে। তবে অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে অচিন গাছ ও নুরা বাগদাদীর মাজারটি। কথিত রয়েছে, অচিন বৃক্ষটির ঝরে পড়া পাতাও কেউ কুড়িয়ে নেয় না। বছরে দু-তিনবার পাতা ঝরে। আবার ঝরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন পাতায় পল্লবিত হয়ে ওঠে শাখা-প্রশাখা। গাছের ডাল কিংবা পাতা অকারণে ছিঁড়লে পেটে ব্যথা হয়। তবে মনোবাসনা কিংবা রোগ-বালাইয়ের জন্য কেউ যদি পাতা ছিঁড়ে চিবিয়ে খায়, সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয় না। উল্টো রোগ ভালো হয়ে যায়। বৃক্ষটির পাতা দেখতে অনেকটা তেজপাতার মতো। ফুল হয় না, তবে ছোট আকারের ফল হয়। দেখতে কিশমিশের মতো।
কথা হয় মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গাছটির সম্পর্কে শুনেছি। তবে দেখা হয়নি। যদি সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা আসে তাহলে উদ্ঘাটনের চেষ্টা করব।’
উপজেলা বন কর্মকর্তা রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ মৃধা বলেন, ‘শুনেছি এমন একটি গাছ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে গাছটির পরিচয় জানার চেষ্টা করব।’