কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম সম্প্রতি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি ২৯তম বিসিএস ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে খোরশেদ আলম ময়মনসিংহ রেঞ্জে (ক্রাইম এন্ড অপস্) যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি’র কার্যালয়ে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার পদে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত শেরপুর জেলা পুলিশের এই চৌকস কর্মকর্তাকে র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি মো. শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম (বার)।
ওইসময় শেরপুরের পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএমসহ ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিস ও রেঞ্জের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে মো. খোরশেদ আলমকে পুলিশ সুপার পদে এই পদোন্নতি প্রদান করা হয়। তিনি ২৯ তম বিসিএস ক্যাডারের মাধ্যমে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
খোরশেদ আলম ১৯৯৯ সালে মনোহরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে ১ম বিভাগ (স্টারমার্কসহ) ও ২০০১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসিতে ১ম বিভাগে (স্টারমার্কসহ) উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে জোনায়েদ শেখ নামের ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসাপড়ুয় এক শিশু আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তারাশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জোনায়েদ তারাশী গ্রামের মৃদুল শেখের ছেলে ও পিনজুরী কওমী মাদ্রাসার তৃতীয় জামাতের ছাত্র।
শুক্রবার বিকেল ফাঁকা ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয় জোনায়েদ। বিকেল ৫ টার দিকে জোনায়েদের মা আছিয়া বেগম ঘরের বন্ধ দেখে ও কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় জোনায়েদ কে দেখতে পান। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত জোনায়েদের চাচা রাসেল শেখ বলেন, কয়েকদিন আগে জোনায়েদ মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আসে। এরপর আর মাদ্রাসায় যেতে চাচ্ছিল না। এ নিয়ে মায়ের সাথে তার মনোমালিন্য ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মায়ের উপর অভিমান করে হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, পরিবার ও এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ না থাকায় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার সকালে তারাশী কবরস্থানে শিশু জোনায়েদের দাফন সম্পন্ন হয়।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সাগর নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয়ে বেপরোয়া চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাগর রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও রামগতি বাজারের ইলেকট্রনিক ব্যাবসায়ী।
ভুক্তভোগী বড়খেরী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মোঃ মেহেরাজ অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাগর নিজেকে কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনো সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকাতে বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করে যাচ্ছে। তিনি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তার ভয়ে রামগতি মাছঘাটের সাধারণ মাছ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সবসময় আতঙ্ক থাকেন।
আরেক ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম মাছ ব্যাপারী বলেন, সাগরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ মানুষ। সাগর কিছুদিন আগে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা মাফিক চাঁদা না দেওয়ায় তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হেনস্তা করেন। বিশেষ করে মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা তার যন্ত্রণায় তটস্থ। সে নিজেকে সেনাবাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। মুলত ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই সাগরের মুল উদ্দেশ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, ৫ আগস্টের পর বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের রামগতি বাজার, রামগতি মাছঘাট এলাকার সাধারণ জেলে ও মাছ ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত সাগর। সাগরের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অনেকটা অসহায় তারা। এমন অবস্থায় সাগরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ মানুষ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাগর বলেন, অভিযোগকারী কাউকে আমি চিনিনা। তারা কেন এসব মিথ্যা অভিযোগ করলো? তাছাড়া আমি তো এলাকায় থাকিনা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিশেষ অনুরোধ জানান তিনি।
রামগতি সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীর কোন সোর্স নেই। এগুলো এক প্রকার প্রতারণা। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ কবির হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এই ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা এ উপজেলা এখন দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। আকাশ পরিষ্কার থাকলেই এখান থেকেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব সৌন্দর্য। সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, মহানন্দা নদীর তীর, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ও তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারসহ নানা দর্শনীয় স্থান দেখতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে।
কিন্তু এসবের বাইরে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে একটি গাছ। তেঁতুলিয়ার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছ এখন সেজেছে একেবারে নতুন সাজে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।
স্থানীয়রা বলছেন,বহু বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই তেঁতুল গাছ স্থানীয়দের কাছে যেমন ঐতিহ্য, ছায়া ও বিশ্রামের প্রতীক ছিল, পর্যটকদের কাছেও এটি এক ধরনের ঐতিহাসিক কৌতূহল। কিন্তু দীর্ঘদিন তেমন গাছটি অবহেলিত থাকায় গাছটির প্রতি তেমন কোনো নজর দেয়া হয়নি।
সম্প্রতি তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। পাশাপাশি নেওয়া হয় ব্যতিক্রমী আলোকসজ্জার উদ্যোগ। এখন প্রতিদিন সন্ধ্যা নামতেই গাছটি ভরে ওঠে নানা রঙের ঝলমলে আলোয়। দূর থেকে মনে হয়, যেন কোনো শিল্পকর্ম সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
এই দৃশ্য পর্যটকদের নজর কেড়েছে দারুণভাবে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে আলোকিত তেঁতুল গাছের ছবি।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা আব্দুর রহমান নামে এক পর্যটক বলেন,আগেও তেঁতুলিয়ায় এসেছিলাম, তখন এই তেঁতুল গাছ অবহেলিত অবস্থায় ছিল,তেমন কোন উদ্যােগ চোখে পড়েনি। এবার এসে দেখি একেবারে অন্যরকম রূপ। রাতে আলো জ্বললে মনে হয় না এটি সেই পুরোনো গাছ। বরং যেন নতুন এক সৃষ্টি। খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
রংপুর থেকে আসা পর্যটক মালিয়া খানম জানান,তেঁতুলিয়ায় এসে প্রথমেই চোখে পড়েছে ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি। দিনের বেলায় সাধারণ মনে হলেও রাতে আলোকসজ্জার কারণে একেবারে অন্যরকম লাগে। অনেক ছবি তুলেছি।
স্থানীয়রা মনে করেন, এই উদ্যোগ শুধু একটি গাছকে আলোকিত করেনি, বরং তেঁতুলিয়ার পর্যটন খাতেও এনেছে নতুন মাত্রা।
পর্যটন নিয়ে কাজ করা তেঁতুলিয়ার নর্থবাংলা ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজমের পরিচালক আহসান হাবিব বলেন,এই ঐতিহাসিক গাছটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। উপজেলা প্রশাসন সেটিকে নতুন সাজে সাজিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা চাই, এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তেঁতুলিয়ার পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ হোক।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন,ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছটি এই অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও স্মৃতি বহন করে। দিনে মানুষ গাছের ছায়ায় বসে, আর রাতে আলোকসজ্জার কারণে উপভোগ করে ভিন্ন এক সৌন্দর্য। আমরা গাছটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছি এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছি। পর্যটকরা এতে দারুণ আনন্দ পাচ্ছেন।”
তিনি আরও জানান, তেঁতুলিয়ার পর্যটনকে নতুন রূপ দিতে শুধু তেঁতুল গাছ নয়, পাশাপাশি আরও নানা প্রকল্প নেয়া হয়েছে।আমরা ইতোমধ্যে তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নার ও মহানন্দা পার্ক ঢেলে সাজাচ্ছি। মহানন্দা নদীর ধারে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। শিশুদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আলাদা পার্ক। আমরা চাই, তেঁতুলিয়া পর্যটকদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গন্তব্য হয়ে উঠুক।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে রোগাক্রান্ত গরু জবাই করার পর একই গ্রামের অন্তত ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে সাত জন গাইবান্ধা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আক্রান্তরা গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম ও রাবেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নেন। গুরুতর আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন- মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমান।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স আক্রান্তদের চিকিৎসা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক ডা. মো. মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স জানান, সাত জন রোগীর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদের হাতে, মুখে, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা ও পচন ধরেছে। জ্বর, ব্যথা, ঘা ও চুলকানিতে ভুগছেন তারা। প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত বা রোগাক্রান্ত পশু থেকেই এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্তরা একটি অসুস্থ গরু জবাই ও মাংস কাটার কাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ওই সময় তাদের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এটি কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয়। আক্রান্তরা এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকেও জানানো হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠবেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
কিশামত সদর গ্রামে বাসিন্দা বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মো. হাফিজার রহমান জানান, গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গ্রামের মাহবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামের অন্তত ১২০ জনের মধ্যে ভাগ করা হয়। জবাই ও মাংস কাটাকাটির কাজে ১০–১৫ জন সরাসরি যুক্ত ছিলেন। চার দিন পর থেকেই তাদের শরীরে ফোসকা ও ঘা দেখা দেয়। এর মধ্যে আক্রান্ত কয়েকজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও শহরের ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪-৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাইবান্ধা ও রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাদের উপসর্গ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি অ্যানথ্রাক্স।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, পাশের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ ছিল, এখন সুন্দরগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা ও পৌরসভা এলাকায় এ রোগ শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় টিকা প্রদান চলছে।
তার ভাষায়, ‘আক্রান্ত পশু পরিচর্যা বা জবাই করলে মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্স ছড়াতে পারে। তবে মাংস খেলে এ রোগ ছড়ায় না। তাই কোনও অবস্থাতেই রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা যাবে না।’
এদিকে, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোর কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস। তিনি জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে এলাকায় লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্ত পশু জবাই না করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টির অজুহাতে ফের দামে চড়া কৃষি নির্ভর সবজি উৎপাদনে সেরা জেলা মেহেরপুরের সবজির বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজি দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।
তবে কৃষকরা বলছেন, অতি বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় ফসল নষ্টের পাশাপাশি কমেছে উৎপাদন। তারপরও ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত।
আর সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি কিংবা পূজা যেকোনো অযুহাত পেলেই চলবে। অটোমেটিক সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। বলা কিংবা দেখার কেউ নেই।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার জেলার ঐতিহ্যবাহী সবজি বাজার বামন্দী বাজারে, প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৫০-৬০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি ঝিঙা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা, যা আগে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ৩৫-৪০ টাকায়, পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, উস্তা ১২০ টাকা, কচুর লতি ৮০-৯০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা করে,বাধা কপি ৬০ টাকা করে, আর সবচেয়ে আকাশ চুম্বি দামে বিক্রি হচ্ছে সাদা ও লাল আলতাপাটি আলু, আলতা পাটি লাল আলু ৩৫০ টাকা ও সাদা আলতাপাটি আলু ২৫০ টাকা কেজি, এবং আঞ্চলিক টমেটো ১৭০ টাকা,কাচ কলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা।
সবজি বিক্রেতা ইকবাল বলেন, পূজার ছুটির কারনে দেশের বাহির থেকে কাঁচামরিচ আমদানি কমে গেছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে এই এলাকার মাঠ থেকেও মরিচ কম উঠেছে। যার ফলে মরিচের দাম বেড়েছে।
সবজি বিক্রেতা নাঈম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারে দেশীয় সবজির সরবরাহও কিছুটা কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা করে বেড়েছে। তাছাড়া চাষিরা ক্ষেত থেকে সবজি কম সংগ্রহ করতে পারছে। সেজন্যও তারাও বাড়তি দাম ছাড়া সবজি দিতে চাইছে না।
বেগুন চাষি গোলাম হোসেন বলেন, বৃষ্টির সাথে বাতাস হওয়াই মাঠে এবার গাছ মরে যাওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। তারপর বেগুনে প্রচুর পরিমাণে পোকা লাগছে। কিটনাশক প্রয়োগেও মিলছে না সমাধান।
যার ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য দাম কিছুটা বেশি। আমরা বাজারে যে দামে বেগুন বিক্রি করে আসলাম। পরে শুনি তার দ্বিগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
আরেক সবজি চাষি আইনাল হক বলেন,বেশ কয়েকদিন বৃষ্টির সাথে বাতাস বইছে। বৃষ্টি আর বাতাস এক সাথে হলে ঝাল গাছের গোড়া নড়ে গিয়ে গাছ মারা যায়। যার ফলে গাছ বাচাতে গেলে মরিচ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে যায়। তারপরও এখন বামন্দী বাজারে মরিচ পাইকারি বিক্রি করে আসলাম ২৫০ টাকা কেজি হিসেবে। আর এখন বাড়ি এসে শুনছি খুচরা কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা করে। আর বেগুন পাইকারি বিক্রি করলাম ৪০ টাকা করে। আর বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা করে। আমরা চাষিরা কষ্ট করেও ন্যায্য দাম পাইনি। অথচ ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে কিনে আমাদের সামনেই ডবল দামে বিক্রি করছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক সামসুল আলম বলেন, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত একটু বেশিই হয়েছে। অনেক মাঠে জলাবদ্ধতা আছে এটা ঠিক। তবে আমরা চাষিদের সব সময় বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে আসছি। এবং ফসলের রোগ বালায় দেখা দিলে তা থেকে কিভাবে প্রতিকার পাবে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দির বিভিন্ন চলাঞ্চলে ফুটেছে নয়নাভিরাম কাশফুল, যা নীল মেঘের নিচে আলাদা সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। কাশফুলের শুভ্রতার ছোঁয়ায় আকৃষ্ট হচ্ছেন পর্যটকরা। ফুলের সাথে নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা ভিড় করছেন সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর চরে।
বগুড়া সারিয়াকান্দির ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে একটি ইউনিয়ন যমুনা নদী বিধৌত। তাই এ উপজেলার বিশালাকার চরাভূমি রয়েছে। এসব চরাভূমির ওপরে দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ। নীল আকাশের নিচেই ফুটে রয়েছে সারি সারি কাশফুল, যা প্রখর রোদের সাথে মিতালি করে এক ভিন্ন ধারার সৌরভ ছড়াচ্ছে, যে সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে প্রকৃতি প্রেমীদের। উপজেলার চরাঞ্চলে বিশালাকার কাশফুলের বাগান রয়েছে, সেখানে যেতে হয় নৌকাযোগে।
তবে উপজেলার কালিতলা গ্রোয়েনবাঁধ, প্রেম যমুনার ঘাট এবং মথুরাপাড়া গ্রোয়েনবাঁধের সামনে জেগে ওঠা চরেও ফুটেছে কাশফুল। এসব পয়েন্টে হেঁটেই যাতায়াত করা যাচ্ছে অনায়াসে। তাই পর্যটকরা এসব পয়েন্টে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং নিজেকে কাশফুলের সাথে ক্যামেরাবন্দি করতে ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিনিয়নত। প্রতিদিন এসব পয়েন্টে শতশত তরুণ-তরুণীদের আগমন ঘটছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর যমুনা বুকে জেগে ওঠা চর-কাজলা, বাটিয়া, শালুকা, কুড়িপাড়া, পাকুরিয়া, বাগবেড়, দিঘলকান্দি, মথুরাপাড়া, নাড়াপালাসহ বিভিন্ন কাশবনে শ্বেত-শুভ্র কাশফুল মুগ্ধতা ছড়িয়ে বাতাসের দোলায় ঢেউ খেলে যাচ্ছে। কাশফুল শুধু মুগ্ধতাই ছড়ায় না, এর অর্থনৈতিক নানা দিকও রয়েছে। কাশফুল ও এর পাতা মাটিতে ঝরে জৈবসার তৈরি করে, যা জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়। সবুজ কাশ গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কাশফুলের বাগানেই উপজেলার মহিষের বাথানের খাবারের একমাত্র অবলম্বন। প্রতি বছর শরৎকাল এলেই যমুনার তীরে জন্ম নেওয়া এসব কাশফুল নতুন করে প্রাণ এনে দেয় চরে। কাঠখোট্টা বালুচরে এ যেন এক নতুন সৌরভ। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে দোল খায় সাদা কাশফুল, বাতাসে দুলে দুলে জানান দেয় ঋতুর আগমন বার্তা। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়তেই কাশফুলগুলো ঝলমল করে ওঠে এক অপার্থিব সৌন্দর্যে।
উপজেলার পৌর এলাকার সিরাজুল ফুল বলেন, কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এ উপজেলায় প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষরা বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসেন। বিভিন্ন বয়সী এসব মানুষের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যাই বেশি। তবে এ ফুল বেশিদিন থাকে না। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই ফুলগুলো বাতাসের সাথে উড়ে যায়। অর্থাৎ কয়েকদিন পরেই এ ফুল আর দেখা যাবে না।
সারিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান বলেন, কাশফুল এবং যমুনা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বগুড়া জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সারিয়াকান্দিতে পর্যটকদের আগমন ঘটে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তারা নির্বিঘ্নে এ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের সৌন্দর্য উপভোগ করে নিরাপদে বাড়িতে ফিরছেন।
ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতে আজ শানবার মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন রাজবাড়ীর ও গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদী সহ দেশের বিভিন্ন নদনদী-সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অভিযানে মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কাজ করবে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলেদের সহায়তায় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হবে।
মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞায় রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে প্রচার। এই সময়ে কাজ না থাকায় জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেবে সরকার। বরাদ্দ পেতে সঠিকভাবে তালিকা তৈরির দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
অভিযান সফল করতে প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবে নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড। নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে জেলে পল্লীগুলোতে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকায় করা হয়েছে মাইকিং।
স্থানীয়রা বলছেন, জেলেরা এখন অনেক সচেতন। সরকারের আইন অমান্য করে নদীতে কেউ যাবে না।
এদিকে, ইলিশ বন্ধের খবর শুনে ক্রেতারা ইলিশ কিনতে ছুটছে মৎস্য ঘাটগুলোতে। ক্রেতারা বলেছেন, ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ ২২ দিন নদীতে কঠোর নজরদারিতে থাকবে। আমরা এ বিষয়ে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘জেলেদের ২২ দিন ধৈর্য ধরে মা ইলিশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সরকার এ সময় বিকল্প কর্মসংস্থান ও সহায়তা দেবে। তবুও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নামে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মো. নাহিদুর রহমান জেলেদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিষিদ্ধ সময় নদী থেকে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষেধ। যারা এই আইন অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিকেল নামলেই হাওরপারের গ্রামগুলো চঞ্চল হয়ে ওঠে। জেলেরা নৌকা নিয়ে ভেসে যান হাওরের বুকে। কেউ সারা রাত নোকার মাঝে ভেসে থাকেন পানিতে, কেউ আবার ফাঁদ পেতে রেখে সন্ধ্যার পর ফিরে আসেন বাড়িতে। তবে ভোর হওয়ার সাথে সাথে আবার ছুটে যান ফাঁদ সংগ্রহ করতে। এই ব্যস্ততার মূল কারণ চিংড়ি, যাকে স্থানীয় লোকজন ‘ইছা মাছ’ বলেন। আবার কেউ কেউ অন্যজাতের ছোট মাছ ধরার জন্য ফাঁদ ব্যবহার করেন যার নাম দাড়কি। সিলেট অঞ্চলে দড়ি নামেই পরিচিত।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার অন্তেহরি গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার বর্ষাকালে এই হাওরে চিংড়ি ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের প্রধান ভরসা ‘কিরণমালা’ নামে পরিচিত এক বিশেষ ফাঁদ। প্লাস্টিকের তৈরি এই ফাঁদে টোপ দেওয়া থাকে মাছের খাদ্য। টোপের আকর্ষণে চিংড়ি ঢুকে পড়ে ফাঁদের ভেতরে। তারা নৌকা বোঝাই করে এই ফাঁদ নিয়ে হাওরে যান।
প্রতিটি নৌকা বোঝাই কিরণমালা ফাঁদ। সন্ধ্যা ঘনাতেই অন্তেহরির ভেতর থেকে আরও নৌকা হাওরের দিকে ছুটতে লাগল। আবার কিছু জেলে মাছ ধরে নৌকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তাদের চেহারায় সারা দিনের রোদে পোড়া ক্লান্তি।
জেলেরা জানান, মাছ ধরা তাদের পেশা। বর্ষা এলে মাছ ধরেই তাদের সংসার চলে। প্রতিদিন শতাধিক নৌকা হাওরে নামে শুধু চিংড়ির টোপ ফেলতে। প্রতিদিন এসব ফাঁদে দুই থেকে চার কেজি পর্যন্ত চিংড়ি ধরা পড়ে। কখনো আরও বেশি। পাইকারি দরে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। আষাঢ় থেকে কার্তিক পর্যন্ত এভাবেই চলে চিংড়ি শিকার। তবে বর্ষা মৌসুমে সংসার চলে ভালোভাবে।
অন্তেহরি গ্রামের উজ্জ্বল বিশ্বাস এই প্রতিবেদককে জানান, চিংড়ি ধরার জন্য ‘কিরণমালা’ একটি অভিনব ও কার্যকর ফাঁদ, যা প্লাস্টিকের বোতল, দড়ি এবং বাঁশের কুঠি দিয়ে তৈরি হয়। এই ফাঁদে টোপ বা মাছের খাবার দেওয়া থাকে, যা চিংড়ির আকর্ষণ করে এবং ফাঁদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়, এরপর চিংড়ি আটকা পড়ে। জেলেরা নৌকাযোগে হাওরে গিয়ে সারারাত ধরে এই ফাঁদগুলো পেতে রাখে এবং পরের দিন সকালে চিংড়ি ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
অন্যদিকে কাদিপুর গ্রামের মিঠুন সরকার জানান, ৪০০টি ফাঁদ নিয়ে তিনি হাওরে যাচ্ছেন। যে যার সুবিধামতো হাওরের পানিতে ফাঁদগুলো পেতে রাখেন। কেউ কাছাকাছি ফাঁদ ফেলে রাতে ফিরে আসেন, আবার কেউ হাওরের অনেকটা ভেতরে চলে যান। হাওরেই রাত কাটান।
একই গ্রামের সংকর সরকার বলেন, মাছ ধরা তাদের পেশা। বর্ষা এলে মাছ ধরেই তাদের সংসার চলে। প্রতিদিন শতাধিক নৌকা হাওরে নামে শুধু চিংড়ির টোপ ফেলতে। যা দিয়ে তাদের জীবন চলে, চলে সংসার বাচ্চাদের পড়াশোনাসহ চিকিৎসা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসীর পক্ষ থেকে জেলার সফল ২৩ নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা ও দুজন প্রবীণ ফুটবলার ও সংগঠককে আজীবন সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান প্রবাসী রেজা হায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তারই আগ্রহে জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪, ইয়ুথ উইমেন্স ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম ২০২৫-এর রাজশাহী বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ দলের ১৮ জন নারী ফুটবলারের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫-এ চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী দলে অংশগ্রহনকারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ জন নারী ফুটবলারের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে উপহার ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সেই সাথে নারীদের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে কাজ করা কোচ সেতাউর রহমানকে দেয়া হয় ক্রেস্ট ও ২৫ হাজার টাকা উপহার। অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদানের জন্য দু'জন প্রবীণ ফুটবলার ক্রীড়াসংগঠক ইসরাইল সেন্টু ও মজিবুর রহমান খানকে আজীবন সন্মাননা স্মারক ও প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে উপহার প্রদান করা হয়। গতকাল শুক্রবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী জেসমিন খাতুন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নারীদের খেলাধুলাকে আরো এগিয়ে নিতে এমন উদ্যোগ বিশেষ ভুমিকা রাখবে বলে উলে¬খ করেন, সেই সাথে সবসময় পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ তাঁর বক্তব্যে নারীদের ফুটবলের উন্নয়নে সরকারি সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সালমা আক্তার জাহান, ডা. তড়িৎ কুমার সাহা, রোটারিয়ান আজাদুল হক আজাদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইসলাম তোফাসহ অনান্যরা।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারা দেশে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীর দিনে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাজধানীসহ সারা দেশের নদী ও পুকুরে চলে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ভিড় দেখা যায়। ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে বিজয়ার প্রার্থনা করেন। এরপর শোভাযাত্রা করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জন স্থলে। ঢাক-ঢোল, উলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনিতে মুখর ছিল পরিবেশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর আনন্দ, শান্তিতে পূজা উদযাপন হয়েছে।
সারাদেশে এ বছর ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫৮ টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে শুরু হয় একে একে প্রতিমা বিসর্জন। এ সময় বিসর্জন দেখতে মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল।
তবে বৈরী আহাওয়া থাকায় প্রতিমা বিসর্জনে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে ভক্তদের। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ছাড়াও নগরীর পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায়, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বৃহম্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ট্রাকবাহী প্রতিমা নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পূজারী ও ভক্তরা জড়ো হতে শুরু করেন পতেঙ্গা সৈকতে। এরপর শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জনের পালা।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. সুলতান আহসান উদ্দীন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সাগরে প্রতিমা বিসর্জন দিচ্ছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে গত রোববার সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিন ধূপধুনচি, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যের তালে আসনে অধিষ্ঠিত হন দেবী দুর্গা। বোধনের ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়েই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ৫ দিনব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।
এবার নগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ জেএমসেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৯২টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় মোট পূজামন্ডপের সংখ্যা ২ হাজার ২০২টি। এর মধ্যে প্রতিমা পূজামন্ডপের সংখ্যা এক হাজার ৫৮৫টি এবং ঘট পূজার সংখ্যা ছিল ৬১৭টি।
গাংনী প্রতিনিধি জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উসৎব দুর্গা পুজা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি এবারে নির্বিঘ্নে পুজা উদযাপনের লক্ষে সীমান্ত এলাকার পুজামন্ডব গুলোতে টহল সহ নিরাপত্তায় কাজ করছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি ।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিজয়া দশমীতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ পূজামণ্ডব পরিদর্শন করেন কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)র সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আহসান হাবীব পিএসসি, জি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লেঃ কর্ণেল মো. মাহবুব মোর্শেদ রহমান পিএসসি, অধিনায়ক কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি, মেজর মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত পরিচালক, কুষ্টিয়া সেক্টর।
পরির্দশনকালে পূজা কমিটির সদস্যদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তাদের হাতে উপহার তুলে দেন।
কর্ণেল আহসান হাবীব পিএসসি, জি, সেক্টর কমান্ডার কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) জানিয়েছেন, বিজিরি মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনা ছিল, আমরা বিজিবি সদস্যরা সিমান্তের নিকটবর্তী এবং দায়িত্বপূর্ণ এলাকা আছে। সেই জায়গাগুলোতে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করব যাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনেরা উৎসবমুখর পরিবেশে নিবিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারে। আপনারা জানেন বাংলাদেশে আবহমান কাল থেকেই সুন্দর একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছে। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের যে উৎসব আছে সেগুলো উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে পালন করি। ঠিক একই ভাবে এবারো পালন করছি। আমাদের মহাপরিচালকের নির্দেশনা আছে বিজিবি হবে সিমান্তের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক। সেই আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক আমরা সবার সাথে মিলে মিশে আপনাদের পাশে আছি। যে কোনো অনুষ্ঠানে দুর্যোগ কিংবা কল্যানে জনগনের সাথে আছি।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোণায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজার মহানবমী অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ৫১৪টি পূজামনণ্ডপে দুর্গাপূজার মহানবমীতে ভক্তরা দেবীর পায়ে ফুল, বেরপাতা দিয়ে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন। ঢাকেরবাদ্য, উলুধনি, চন্ডীপাঠ, পূজাঅর্চনা ও ভক্তদের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল মণ্ডপগুলো। এ ছাড়াও প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবীর প্রতি অঞ্জলি নিবেদনের সময় দেশ ও সমাজের শান্তি, রক্ষায় প্রার্থনা করেন। নেত্রকোনা জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোতেও একইভাবে ছিল উৎসবে সরব। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ও পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানি, জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. আনোয়ারুল হক, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিলালিসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। পূজাণ্ডপের নিরাপত্তায়, আনসার, সেনা বাহিনী, র্যাব ও বিজিবির টহল দল কাজ করছে।
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষদিন বিজয়া দশমীতে প্রতীমা বিসর্জনকে ঘিরে লাখো মানুষের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বৃহস্পতিবার সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা।
জেলার সাত উপজেলার মণ্ডপের প্রতীমা ট্রাকে করে সৈকতে আনা হয়। পাশাপাশি পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকেও প্রতিমা বহর যোগ দেয়। অন্যদিকে চকরিয়া ও পেকুয়ার প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়া হয় মাতামুহুরী নদীতে। বিকেল পাঁচটার দিকে মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে প্রতিমাগুলো সাগরে বিসর্জন দেওয়া হয়।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, ‘প্রশাসনের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দূর-দূরান্ত থেকে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সাগর তীরে একত্রিত হয়ে মা দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন।’
তিন স্তরের নিরাপত্তা: আয়োজনকে ঘিরে সৈকতে ছিল কঠোর নিরাপত্তা। সকাল থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা টহল দেন। জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন একটি কন্ট্রোল রুমও চালু করে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তিন স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকদের নির্বিঘ্ন ভ্রমণ নিশ্চিতে প্রশাসন সবসময় সচেষ্ট রয়েছে।’
পর্যটকের ঢল: বিজয়া দশমী ও চার দিনের ছুটি ঘিরে কক্সবাজারে পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে বলে জানিয়েছে হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি। সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘হোটেলগুলোর শতভাগ রুম আগেই বুক হয়ে গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতীমা বিসর্জন দেখতে আসা ব্যবসায়ী রাতুল দে বলেন, ‘কক্সবাজারের আয়োজনটাই দেশের সবচেয়ে বড়। মা-কে বিদায় দিতে এসেছি। প্রশাসনের সেবা প্রশংসনীয়।’
এদিকে সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করেছে।
সী সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘লাইফগার্ড সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। তবে গুপ্তখাল এলাকায় গোসল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পর্যটকদের সচেতন থাকা জরুরি।’
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ‘পূজা এখন সার্বজনিন। সবাই মিলে মিশে বাঙালিয়ানা উৎসব পারন করেছি। এখানে কোনো বেধাবেদ ছিল না, বাঙালি উৎসব পেলেই মাতে। হোক সেটা পূজা কিংবা ঈদ। এবার নিরাপদে নির্বিঘ্নে দূর্গাপূজা পালন হয়েছে। আজসহ বিগত দুই দিনে ২৫টি পূজামণ্ডপ পরিদশর্ন শেষে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির সদেস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া। বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ উপজেলা কায়েত পাড়া ইউনিয়ন নয়া মাটি,দেল পাড়া নাওড়া সহ কয়েকটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন সভাপতি রূপগঞ্জ থানা বিএনপি, কায়েত পাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট গোলজার হোসেন ভুইয়া, আনোয়ার মোল্লা, বকতিয়ার উদ্দিন আহমেদ, ফরিদ আহমেদ যুবরাজ, আমিনুল ইসলাম প্রিন্স ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রূপগঞ্জ থানা যুবদল,নুর হাসান বাবুল সদস্য সচিব রূপগঞ্জ থানা যুবদল, হাজী সেলিম সভাপতি কায়েত পাড়া ইউনিয়ন বিএনপি, মো. কামাল নাছের সভাপতি কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল, মো. মামুন মিয়া সাধারণ সম্পাদক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল, শিপলু জাহান শান্ত, মো. আবু বকর ছিদ্দিক ভূইয়া সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন যুবদল,আকতার হোসেন সভাপতি ৫ নং ওয়ার্ড যুবদল,সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক, মো. নাসির উদ্দিন সিনিয়র সহ সভাপতি ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি, ফারুক ভূইয়া সাধারণ সম্পাদক কায়েত পাড়া ইউনিয়ন কৃষক দল,দীল মোহাম্মদ দিলু সাংগঠনিক সম্পাদক ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি,আলি আহমেদ সহ সাধারণ সম্পাদক ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপিসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন, এবং দিপু ভূইয়ার পক্ষ থেকে পূজামণ্ডপগুলোতে নগদ আর্থিক সহযোগিতা করেন মো. মামুন মিয়া।
সিলেট ব্যুরো জানান, পাঁচ দিনের পূজা-অর্চনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুরমা নদীর তীরে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বির্সজন দেওয়া হয়। সুরমার তীরজুড়ে ছিল বিষাদের সুর।
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই বিকেল থেকে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনার তালে তালে বিভিন্ন মন্দির, পাড়া ও মহল্লা থেকে শোভাযাত্রা নেওয়া হয় সুরমার তীরে। পরে নৌকায় নদীর মাঝখানে দেওয়া হয় বিসর্জন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম, এসএমপি পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিক, নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যঞ্জয় ধর ভোলা, হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সিলেট জেলার আহ্বায়ক ও কল্যাণ ফ্রন্টের ট্রাস্ট্রি সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, সিলেট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সিলেট জেলার সদস্য সচিব কল্লোল জ্যোতি বিশ্বাস, মহানগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মলয় লাল ধর, মুন্না ঘোষ, হিরন্ময় দেব, রনি পাল, বাপ্পি বড়ুয়া।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সিলেট জেলা ও মহানগরে ৬১৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সিলেট নগরে সার্বজনীন ১৪২টি ও পারিবারিক ২০টি পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া জেলায় সার্বজনীন ৪২৭টি ও পারিবারিক ২৯টি পূজা হয়।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহ নগরীর কাচারিঘাট সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে আনন্দঘন পরিবেশে মহানগরের সব প্রতিমার বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ।
প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতারু উল আলম, র্যাব-১৪ এর মহাপরিচালক মহিবুল ইসলাম খান, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মজিদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
বিসর্জনকে ঘিরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে। র্যাব সদস্যরা নৌকা নিয়ে নদীতে বিশেষ টহল দেয়।
এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় ৭৮১টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই জেলার প্রতিটি উপজেলায় পূজা সম্পন্ন হয়।
ইসরায়েলের জলসীমা থেকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌকা আটকের ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইউরোপের দেশ ইতালি, গ্রিস, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড এবং তুরস্ক ছাড়াও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মালয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্ব নেতারা।
ইতালির শহর রোম, নেপলস, মিলান ও তুরিনে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ও ‘সবকিছু বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন শুরু হলে রোম এবং নেপলসে মেট্রো স্টেশন এবং রেলস্টেশন বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
গ্রিসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে, তারা যেন আটক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং কনস্যুলার সুরক্ষার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেয়।
আটক হওয়া আদারা নৌকায় থাকা নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতা সেলেস্টে ফিয়েরোকে মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের বিক্ষোভকারীরা।
বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন,আমাদের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা, নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়া এবং দ্রুত দেশে ফেরানোই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিনস বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে। মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্তদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আমাদের সকলের জন্যই উদ্বেগের বিষয়।
ফ্লোটিলায় থাকা ফরাসি নাগরিকদের কনস্যুলার সেবা দিতে এবং বিলম্ব ছাড়াই ফ্রান্সে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফ্লোটিলায় আটক মালয়েশীয় নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সব ধরনের বৈধ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার অগ্রাহ্য করেনি, বরং বৈশ্বিক বিবেককেও পদদলিত করেছে।
একটি ছাড়া ফ্লোটিলার সব জাহাজ আটক, গ্রেপ্তার ৩১৭ স্বেচ্ছাসেবী
গাজা উপত্যকার উদ্দেশে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। অন্তত ৩১৭ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজাগামী ত্রাণবাহী ৪৪টি জাহাজের মধ্যে একটি জাহাজ ছাড়া সবগুলোকে আটক করা হয়েছে।
আটক হওয়া কর্মীরা এসেছেন নানা দেশ থেকে—স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল, তুরস্ক, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ৩৭টি দেশের নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, আটককৃতদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে নেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।
ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, মিকেনো নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। তবে উপকূল থেকে মাত্র ৯.৩ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই এর সিগন্যাল হারিয়ে যায়।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বহু বছরের ইসরায়েলি অবরোধ চ্যালেঞ্জ করতে তারা গাজা অভিমুখে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজ ঘিরে ফেলে।
অ্যাক্টিভিস্টরা জানান, জ্যামিংয়ের কারণে জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর জাহাজ বহরের কাছে পৌঁছে দিক পরিবর্তনের নির্দেশ দিচ্ছে।
‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা’ জানায়, আমরা এখন জায়নিস্ট (ইসরায়েলি) সেনাদের হামলার শিকার।
তারা আরও জানায়, আমাদের জাহাজগুলোকে অবৈধভাবে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সামরিক বাহিনী জাহাজে প্রবেশ করেছে।
ফ্লোটিলার নৌযানগুলোর মধ্যে মাত্র চারটির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে
ইসরায়েলের নৌবাহিনী ১৩টি নৌযান আটকের পর বাকি যে ৩০টি নৌযান গাজার উপকূলের উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছিল, সেগুলোর মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৪টির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এই নৌযানগুলো হলো শিরিন, সামারটাইম জং, মিকেনো এবং মেরিনেত্তি। বাকি ২৬টি নৌযান কী অবস্থায় আছে, সেগুলো যাত্রা অব্যাহত রেখেছে না কি ইসরায়েলের নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে— সেসব তথ্য কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ট্র্যাকার সিস্টেম ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
শিরিন এবং সামারটাইম জং বহরের নৌযান হলেও সেগুলোতে ত্রাণসামগ্রী ছিল না। এ দুটি নৌযানে ছিলেন আইনজীবীরা। গত ৩১ আগস্ট গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মিশন শুরু হওয়ার পর আইনি সাহায্যের জন্য এই দুটি নৌকায় আইনজীবীদের রাখা হয়েছিল।
অন্যদিকে ত্রাণবাহী নৌযান মিকেনো এবং মেরিনেত্তি গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল। যাত্রা অব্যাহত থাকলে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুরের মধ্যে গাজার উপকূলে নোঙ্গর ফেলার কথা ছিল নৌযান দুটির।
কিন্তু বাংলাদেশ সময় ১১টা ২১ মিনিটের পর থেকে মিকেনো, মেরিনেত্তি, শিরিন এবং সামারটাইম জং-এর কোনো খবর পাচ্ছে না ফ্লোটিলা ট্র্যাকার।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা—এই চার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ঐক্যমঞ্চ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে খাদ্য ও ওষুধে পূর্ণ ৪৩টি নৌযানের বহর নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা এবং তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
বুধবার ভূমধ্যসাগরের গাজা উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর। সেদিন সন্ধ্যার পর গাজা উপকূল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় নৌবহরের চারপাশ ঘিরে ধরে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এবং বহরের ১৩টি নৌযান আটক করে। আটক নৌযানগুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম জানা গেছে— স্পেক্টার, অ্যালমা, সাইরাস, হুগা, মালি প্রভৃতি।
আটক নৌযানগুলোতে ছিলেন দুই শতাধিক যাত্রী এবং ক্রু। তাদের সবাইকে ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কিন্তু ১৩টি নৌযান আটকের পরও গাজার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল বাকি ৩০টি নৌযান।
দীর্ঘ আড়াই বছর পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কেওক্রাডং। ফলে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম ঘটেছে এই পর্বতশৃঙ্গে। বৃহস্পতিবার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং পর্বতের অবস্থান বান্দরবানের রুমায়। নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রায় আড়াই বছর অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুরা এই পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১ অক্টোবর থেকে উন্মুক্ত হওয়ায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটে কেন্দ্রটিতে।
রুমা টুরিস্ট গাইডের লাইনম্যান লাল রৌকল বম জানান, ‘কেওক্রাডং পর্বত ভ্রমণ করতে ৬৩০ জন পর্যটক গিয়েছিলেন। আজ দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০০’র বেশি পর্যটক গমন করেছে। দিনের বাকি অংশে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কেওক্রাডং পর্বত কেন্দ্রটি আরও জনপ্রিয় এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ওই এলাকায় বিশ্রামাগার, শৌচাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার সীমিত ও বগালেক পরবর্তী অংশে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধকরণে বর্তমান ছুটি পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।