বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মসজিদের সোয়া তিন কোটি টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী
প্রকাশিত
মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী
প্রকাশিত : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:২৩

নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ মসজিদের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে সোয়া তিন কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিরণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
রোববার ঋণখেলাপির দায়ে নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। পরে ওই দিন রাতে এমপির অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইসলামী ব্যাংকের একটি পে-অর্ডারের ছবি দিয়ে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি প্রচার করেন। এতে দেখা যায়, গত ২৬ নভেম্বর মামুনুর রশিদ কিরণ ইসলামী ব্যাংকের একটি পে-অর্ডারে এএসটি ভেভারেজ কোম্পানির অ্যাকাউন্টে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করেছেন। আবার ওই দিনই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মসজিদের হিসাব থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা এবং ২৩ নভেম্বর সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে দুই কোটি তোলা হয়।
জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বড় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমপি কিরণের অনুসারী সামছুল হক দায়িত্ব পালন করছেন। চৌমুহনী বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের নামে সাউথইস্ট ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চৌমুহনী বাজার শাখায় দুটি হিসাব রয়েছে। দৈনিক বাংলার হাতে আসা ব্যাংক দুটির হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, এ বছরের ২৩ নভেম্বর সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে দুই কোটি এবং ২৬ নভেম্বর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা তোলা হয়েছে ।
নোয়াখালী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতার জন্য দাখিল করা সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণে মনোনয়নপত্রে দেখা যায়, প্রস্তাবকারী হিসেবে ওই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং সমর্থনকারী হিসেবে এমপি কিরণের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মসজিদের হিসাব বিবরণী থেকে পাওয়া একটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি চৌমুহনী মিতালি বেকারির মালিক ও মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারি হাজি মোহাম্মদ খলিলুর রহমানের। মুঠোফোনে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ওই মসজিদের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। মসজিদের সভাপতি, সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার প্রস্তাব করলেও এমপি সাহেবের ইচ্ছায় শুধু সভাপতি ও সেক্রেটারির স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়। আমার ৮০ বছর বয়স। তাই এ বছরের শুরুতে দায়িত্ব ছেড়ে দিই। পরে শামসুল হককে দায়িত্ব দেন এমপি সাহেব। আমি দায়িত্ব ছাড়ার সময় দুটি ব্যাংকে মসজিদের নামে অ্যাকাউন্টে আনুমানিক চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা ছিল। এখন ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মসজিদের টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখা হয়। টাকা উঠাতে হলে সদস্যদের প্রস্তাব ও রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে কী কাজ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেখানে কেউ সিগনেচার অথরিটি আছেন বিধায় পারসোনাল কাজে টাকা ওঠাবেন, এটা কোনো নিয়মের ভেতর পড়ে না- এটা নিন্দনীয়। একটি মসজিদের টাকা তছনছ করে তিনি অনৈতিক কাজ করেছেন।’
ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘চৌমুহনী বড় মসজিদের একটি অ্যাকাউন্ট এ ব্যাংকে আছে। মসজিদের সভাপতি এবং সেক্রেটারি রেগুলেশনের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করেন। আদালতের অনুমতি ছাড়া আমি কোনো অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে পারি না। আপনিই বলেন আপনার নিজের অ্যাকাউন্টের কোনো তথ্য যদি কেউ জানতে চায়. তা আমি কি দিতে পারব?’
এ বিষয়ে জানতে সাউথইস্ট ব্যাংক চৌমুহনী শাখার ব্যবস্থাপক নুর উদ্দিন আবসার মুঠোফোনে বলেন, ‘ব্যাংক হিসাবের বিষয়ে মসজিদ কমিটি বলতে পারবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া আমরা কোনো তথ্য দিতে পারব না।’
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আপনাকে বলব, আমি এখন ব্যস্ত আছি। মসজিদের সংস্কার কাজ চলছে। তারপর আপনি যখন জানতে চেয়েছেন আমি আপনাকে ফোন দেব। এখন রাজনৈতিক কারণে ব্যস্ত আছি।’
এমপি মামুনুর রশিদ কিরণের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের মুঠোফোনে টাকা তুলে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘এটা যারা চেক দিয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করেন, কার নামে দিয়েছে’ বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘টাকাগুলো রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে যারা মসজিদে আসে না, মিটিংয়ে আসে না, মসজিদের উন্নতি চায় না। আমি তো কখনো মসজিদের ক্ষতি করিনি। যেকোনো কাজ করি নিঃস্বার্থভাবে। আমরা এস আলমের কাছে ফ্যাক্টরি বিক্রি করেছি, জানুয়ারিতে টাকা দেবে। তাদের (মসজিদ কমিটি) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে ছয় মাস, ছয় মাস না আমরা দু-তিন মাসের মধ্যে টাকা দিয়ে দেব, আগামী মাসেই টাকা দিয়ে দেব। এগুলো আমরা হাওলাত নিয়েছি, তা পরিশোধ করে দেব,এটা এমন কী,এটা তো কোনো সমস্যা না।’
ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা অনলাইন নিউজ পোর্টালে যা লিখেছে তা সঠিক নয়। আমাদেরকে এস আলম ১৫ কোটি টাকা দিয়েছে। ওখান থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা টাকা পে অর্ডার করে দিয়েছি।’


গাজীপুরে এআই প্রযুক্তিনির্ভর কারখানা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করল অনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশ্বিক এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেমের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড অনার বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অত্যাধুনিক কারখানা উদ্বোধন করেছে। এর মাধ্যমে দেশের ভেতরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় উৎপাদন কার্যক্রমের সূচনা করল ব্র্যান্ডটি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, অনারের নেতৃত্ববৃন্দ এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ কারখানার উদ্বোধনের মাধ্যমে অনার বাংলাদেশে তাদের পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নিল। এখানে সংযোজিত ডিভাইসগুলো খুব শিগগিরই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল নিয়ে দেশের বাজারে আসবে।

বাংলাদেশে বৈশ্বিক এআই উদ্ভাবন ও স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতার সমন্বয়ে উৎপাদন উৎকর্ষের নতুন এক মানদণ্ড স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে স্থাপন করেছে অনার।

নিজেদের স্মার্ট ডিভাইসগুলোতে উন্নত এআই প্রযুক্তি সংযোজনের জন্য বাজারে পরিচিতি রয়েছে অনারের। বাংলাদেশে উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে ব্র্যান্ডটি। কারখানায় যন্ত্রাংশ সংযোজনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোতে এআই প্রযুক্তিচালিত অটোমেশন ব্যবহার করা হয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে নির্ভুলভাবে ও কার্যকরী উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বিটিআরসি-এর পরিচালক মোঃ নূরন্নবী, এসইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি., বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং এবং গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেরিক ডেং অনারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। তার সাথে ছিলেন বাংলাদেশে অনারের কান্ট্রি ম্যানেজার ল্যাং গুও, হেড অব বিজনেস আবদুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলাম।

প্রারম্ভিক পর্যায়ে কারখানাটি একটি প্রোডাকশন লাইন দিয়ে প্রতিদিন ১,৫০০ ইউনিট উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে পরিচালিত হবে। এছাড়া, প্রথম বছরের মধ্যেই অনার চারটি প্রোডাকশন লাইন চালুর পরিকল্পনা করেছে, যা ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে উৎপাদন সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে।

অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব দেশের চলমান ডিজিটাল রূপান্তরের গুরুত্ব এবং ডিভাইস ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে ডিজিটাল রূপান্তর যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমাদের নিজেদের দক্ষতার যে ঘাটতি রয়েছে, তা কমাতে হবে। ডিভাইসের সহজলভ্যতা আরও বাড়াতে হবে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে। এই উদ্বোধনের মাধ্যমে স্মার্ট ও অনার বাংলাদেশে অর্থবহ কর্মসংস্থান তৈরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নের দিকে সত্যিকার অর্থেই একটি বড় পদক্ষেপ নিল।”

অনার স্মার্ট কারখানাগুলো কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই কারখানা লাইনগুলো বাস্তবিক অর্থেই কর্মসংস্থানবান্ধব করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। । একটি লাইন ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে এবং আগামী বছরে চারটি লাইন চালু হবে। এর মাধ্যমে দেশে উল্লেখযোগ্য দক্ষ জনবল তৈরি হবে, দক্ষতা-বিনিময়ের সুযোগ বাড়বে, এবং এই শিল্পকে ঘিরে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ তৈরিতে উৎসাহিত হবেন”।

এছাড়া নীতিগত সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার স্থানীয় মোবাইল/ স্মার্টফোন বাজারকে শক্তিশালী করতে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

“আমরা শিগগিরই অবৈধ স্মার্টফোন আমদানি মোকাবিলায় ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)এর কাজ শুরু করছি এবং শুল্ক কাঠামো সংস্কার করছি, যাতে স্থানীয় উৎপাদন আমদানির তুলনায় আরও আকর্ষণীয় হয়। এদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ সাবমেরিন কেবল যুক্ত হওয়ায় ডেটার দামও কমে যাবে”, বলেন তিনি।

ডিজিটাল গভর্নেন্স কাঠামো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বৃদ্ধি করবে বলে তিনি মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সাইবার নীতি, ডেটা সুরক্ষা নীতি এবং ডেটা গভর্নেন্স/ নিয়ন্ত্রণ কাঠামো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য নিশ্চিত করবে এবং ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে জনগণের আস্থাকে আরও দৃঢ় করবে। সঠিক প্রণোদনা থাকলে স্মার্টফোন ব্যবহার ৪০ শতাংশ থেকে ৭০ এমনকি ৮০ শতাংশেও পৌঁছাতে পারে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং বাংলাদেশ নিয়ে অনারের লক্ষ্য তুলে ধরে বলেন, “এই কারখানা শুধুই একটি অবকাঠামো নয়। এটি অনার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে এক অংশীদারিত্বের প্রতীক—যেখানে বৈশ্বিক দক্ষতা ও স্থানীয় সক্ষমতার সম্মিলন ঘটেছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা নয়; এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে স্থানীয় পেশাজীবিদের দক্ষতা বিকশিত হবে, প্রযুক্তি অগ্রসর হবে এবং সম্প্রদায় আরও সমৃদ্ধ হবে। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা উৎপাদনে নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব এবং সততার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার আমাদের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করছি।”

স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের বাজারে অনার ফোন ইতিমধ্যে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে। তবে ব্যবহারকারীরা আরও সাশ্রয়ী দামে অনারের ফোন কিনতে চান। স্থানীয় এ চাহিদা মেটাতেই আমরা এই কারখানা স্থাপন করেছি। আমাদের প্রাথমিক উৎপাদনক্ষমতা ৬০ হাজার ইউনিট, এবং চাহিদা বাড়লে তা আরও বৃদ্ধি করা হবে। নতুন স্থাপিত হওয়া কারখানা শুধুই একটি কারখানা বা ইটের স্থাপনা নয়; এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক। এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ ডিজিটাল রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং একক রপ্তানিমুখী শিল্পের ওপর নির্ভরতা কমাচ্ছে।পাশাপাশি, ভবিষ্যতে বৈশ্বিক প্রযুক্তি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বাংলাদেশের সক্ষমতারও প্রমাণ এটি"

২০২৩ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে অনার। এরপর থেকে ব্র্যান্ডটি দ্রুতই জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর একটি হিসেবে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করে। বর্তমানে, ব্র্যান্ডটির দেশের বাজারে প্রায় ৩ শতাংশ বাজারহিস্যা রয়েছে, যা আগামী বছর ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে প্রত্যাশা করছে অনার।

অনারের এই এআই প্রযুক্তিনির্ভর কারখানাটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি স্থানীয় কর্মীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখবে। দেশের মধ্যেই এমন একটি উদ্যোগ আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস সাপ্লাই চেইনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতেও ভূমিকা রাখবে।


অচল অবস্থায় পড়ে আছে ১৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 বেনাপোল প্রতিনিধি

আট বছর আগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোরের বেনাপোল পৌরবাস টার্মিনালটি কোন কাজে আসছে না। সেখানে যাত্রীবাহী কোন বাস না থাকায় টার্মিনালটি খাঁখাঁ করছে।বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ২০১৭ সালে বাসটার্মিনালটি নির্মাণের পর দুইবার উদ্বোধন করা হলেও এখান থেকে কোনো বাস ছাড়া হয়না, কোনো বাস দাঁড়ায়ও না। যে কারণে কাজে আসছে না মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নির্মিত এই টার্মিনাল।

আর এই টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মাদকসেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা এই ভবনটিকে নিরাপদ স্থান করে নিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে সন্ধ্যার পর পর চলে এই টার্মিনালের মধ্যে চলে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি। এখানে দুর দুরান্ত থেকে মাদক সেবীরা এসে সেবন করে যায়। এর সাথে স্থানীয় অনেক উঠতি বয়সের তরুনরাও ঝুকে বসেছে মাদক সেবনে। বাস চালূ হলে এখানে রাত দিন লোক সমাগম থাকলে মাদক সেবীরা ও মাদক ব্যবসায়িরা হয়ত আর আড্ডা দিতে পারত না।

বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট মুক্ত রাখতে টার্মিনালটি নির্মাণ করেছিল বেনাপোল পৌরসভা। কিন্তু বাসমালিক ও শ্রমিকসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সার্থের কারনে সফল হচ্ছে না। ফলে যাত্রী ও সাধারণ নাগরিকের সীমাহীন ভোগান্তি রয়েই গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রধান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বেনাপোলে অবস্থিত। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দিনে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করে। প্রধান সড়কের শেষ প্রান্তে নোম্যান্সল্যান্ড-সংলগ্ন স্থানে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহনের চাপে সেখানে এবং যশোর রোডের বেনাপোল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেনাপোল পৌরসভা শহরের প্রবেশমুখে কাগজপুকুর এলাকায় মহাসড়কের ধারে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন টার্মিনালটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করেন তখনকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেই থেকে এখনও পর্যন্ত টার্মিনালটি ব্যবহৃত হয়নি।

মালিক-শ্রমিকরা তাদের যানবাহন আগের মতোই নোম্যান্সল্যান্ডের কাছাকাছি চেকপোস্ট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান। যশোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাহারুল ইসলামের নির্দেশনায় তিনি গত বছর ৭ নভেম্বর টার্মিনালটি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ দফায়ও মাত্র সাত দিনের মতো সচল ছিল টার্মিনালটি। পরে যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা টার্মিনালে গাড়ি না ঢুকিয়ে আগের মতো ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় নিয়ে যান। মালিক-শ্রমিকরা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সব সময় টার্মিনালে দু-একটি বাস রাখছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নতুন টার্মিনালটি যাতে ব্যবহৃত না হয়, তার পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের শীর্ষে আছেন বেনাপোল এর এক শ্রেনীর প্রভাবশালী ব্যবসায়ি সংগঠন’। এসব সংগঠন কারন দেখিয়ে বলছে পৃথিবীর কোনো দেশের সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল নেই। এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণ করা অবাস্তব চিন্তা। সে কারণে টার্মিনালটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।’স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেকপোস্ট থেকে দূরবর্তী স্থানে টার্মিনাল করার সিদ্ধান্তটি কতটা যুক্তিপূর্ণ ছিল- তা নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ আছে।

জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ডা.কাজী নাজিব হাসান বলেন, ‘গত বছর এর ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন বাসটার্মিনালটি চালু করেছি। সেখানে নামাজের স্থান,ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আনসারদের থাকার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাসমালিকরা এই টার্মিনাল ব্যবহার না করে নোম্যান্সল্যান্ডের কাছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপ পরিচালিত টার্মিনালে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওই টার্মিনালটি শুধু আন্তঃদেশীয় বাস প্রবেশের জন্য নির্ধারিত।


টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বুধবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।


তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বুধবার ভোর ৫টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ ও নৌবাহিনী এর সমন্বয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন কোনাপাড়া লবণের মাঠ সংলগ্ন এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ৯ রাউন্ড তাজা গোলা, ২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৭ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ, ১৩ রাউন্ড ফাঁকা কেইস, ২টি দেশীয় বিস্ফোরক, ২টি দেশীয় অস্ত্র এবং ৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়। এসময় যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকের নিমিত্তে কোস্ট গার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে।

জব্দকৃত আলামতের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূলে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যানুয়াল রিস্ক কনফারেন্সে ভবিষ্যতমুখী ঝুঁকি কৌশল প্রণয়নের আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও শক্তিশালী গভার্ন্যান্স, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং আগাম প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃবৃন্দরা। ব্যাংকটির অ্যানুয়াল রিস্ক কনফারেন্স ২০২৫-এ এই আহ্বান জানানো হয়।

আয়োজনে অভিজ্ঞ ব্যাংকার ও ঝুঁকি বিশেষজ্ঞরা মানিলন্ডারিং এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং ইকোসিস্টেমে বাড়তে থাকা ঝুঁকি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে দ্রুত পরিবর্তনশীল রিস্ক ল্যান্ডস্কেপের মুখোমুখি হচ্ছে, সেই বিষয়গুলোও নিয়েও কথা বলেন। অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি পুনর্মূল্যায়নের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সমস্যা মোকাবেলায় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে ঝুঁকি সম্পর্কে সহকর্মীদের জ্ঞান বাড়ানো এবং কার্যকর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা তৈরির ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

২৯ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি হাইব্রিড ফরম্যাটে আয়োজিত দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে ১,০০০-এরও বেশি ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ অপারেশনস ম্যানেজার এবং সাব-ব্রাঞ্চ ইন-চার্জ উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। আয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক সুরভী ঘোষ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন ‘ম্যাক্রোইকোনমিক আউটলুক – এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অ্যান্ড ট্রেড ট্যারিফ’ বিষয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেন। এ সময় স্বতন্ত্র পরিচালক আনিতা গাজী রহমান এবং লীলা রশীদ উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম হাসান, সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ইডিজিই এএমসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ খান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান ‘ইকোনমিক ফরকাস্টিং অ্যান্ড ব্যাংক’স রেডিনেস— আ রোডম্যাপ ফর ২০২৬’ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিআরও আহমেদ রশীদ জয়।

ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালেক আহমেদ আবুল মাসরুর, স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড অডিট কমিটির চেয়ারপারসন চৌধুরী এমএকিউ সারোয়ার এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শেখ মোহাম্মদ আশফাক ‘বিল্ডিং আ ডেটা-ড্রিভেন, পিপল-পাওয়ার্ড এএমএল ফ্রেমওয়ার্ক’ বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড ক্যামলকো চৌধুরী মঈনুল ইসলাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের যুগ্মপরিচালক মাহমুদা হক ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগ’ বিষয়ে একটি সেশন পরিচালনা করেন। ভার্চুয়াল প্ল্য্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে দুবাই ইসলামিক ব্যাংকের হেড অব ক্রেডিট–রিটেইল, এসএমই অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট কাজী ফারুক কামাল ‘রিস্ক ল্যান্ডস্কেপ—রিটেইল লেন্ডিং’ বিষয়ে নিজের প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন।

কাজী ফারুক কামাল বলেন, “রিস্ক কালচার এবং স্ট্রেস টেস্টিং একটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি সচেতনতা এবং টেকসইতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। স্ট্রেস টেস্টিং পিরিয়ডিক ভিত্তিতে না করে ধারাবাহিকভাবে করা উচিত, যাতে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজের দুর্বলতাগুলো সহজেই চিহ্নিত করতে পারে। একটি শক্তিশালী রিস্ক কালচার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ঝুঁকি চিহ্নিত করতে এবং সমাধান করতে উৎসাহিত করে। এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয় এবং টেকসইতা বৃদ্ধি পায়।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক সুরভী ঘোষ বলেন, “ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি একটি স্বাভাবিক বিষয়, যা বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সমস্যাগুলো আরও কার্যকরভাবে মোকাবেলার জন্য নতুন নীতিমালা এবং সুপারভিশন ডিপার্টমেন্টের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে কাজ করছে।”

সম্মেলনে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম হাসান বলেন, “প্রতিদিনই ব্যাংকগুলো নানা ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হয়, যা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। আমাদের ফ্রন্টলাইন সহকর্মীদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা আজকের এই সম্মেলনটি ঝুঁকি ও এর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান বৃদ্ধি করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজকের আয়োজন থেকে অর্জিত জ্ঞান তাঁরা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঝুঁকি মোকাবেলা করতে পারবেন।”

ব্র্যাক ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালেক আহমেদ আবুল মাসরুর বলেন, “একটি মূল্যবোধনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা উন্নত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই। আমাদের এ যাত্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে এবং দায়িত্বশীল ব্যাংকিংয়ে নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”


কামরুজ্জামানকে ভুলে গেছে জামায়াত: ডা. প্রিয়াঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

বিএনপির মনোনীত সর্ব কনিষ্ঠ এমপি প্রার্থী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রের মা, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতিক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন করায় এবং চিকিৎসা করতে না দেয়ায়, আজ তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা আমাদের মায়ের রোগমুক্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

তিনি আরও বলেন, শেরপুর-১ আসনে এর আগে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন মরহুম কামারুজ্জামান চাচা। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার ফাঁসি দেয়া নিয়ে সত্য-মিথ্যার বেড়াজাল রয়েছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছে না। তারা কামারুজ্জামান চাচাকে ভুলেই গেছে। আমি এমপি হতে পারলে কামরুজ্জামান চাচার স্বপ্ন চক্ষু হাসপাতালসহ সবগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব। তিনি আরও বলেন উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকাগুলোতে অবশ্যই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করব। ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা ২ ও ৩ ডিসেম্বর শেরপুর পৌরসভার তাতালপুর এবং নওহাটা এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় শেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশীদ পলাশ, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ এমদাদুল হক মাস্টারসহ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


জামালপুরে দলিল লেখক সমিতির সভাপতির ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুর সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান নওশাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হামলার শিকার রাশেদুল হাসানের ছেলে তানভীর আল হাসান, স্ত্রী চামেলী আক্তার, ভাই এরশাদ হোসেন, জাহিদ হাসান জুয়েল, বোন নাদিয়া ইসলামসহ এলাকাবাসী।

এ সময় বক্তারা বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বুড়ির দোকান মোড় এলাকায় একদল সন্ত্রাসী রাশেদুল হাসানের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় রাশেদুল হাসানের ছেলে তানভীর আল হাসান বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করে।

তানভীর আল হাসান বলেন, হত্যার উদ্দেশে আমার বাবার মাথায় একাধিক আঘাত করা হয়েছে। এখনো তিনি মৃত্যুশয্যায় হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানার ওসি নাজমুস সাকিব বলেন, আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারলাম। আদালতের কোন আদেশ এখনো হাতে পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের স্মরণীয় দিন ছিল ৩ ডিসেম্বর

ঠাকুরগাঁওয়ে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

গৌরবময় মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব মাঠে স্থাপিত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংবলিত স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর দখল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয় সীমান্তবর্তী এই জেলা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী লড়াই এবং সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় শত্রুবাহিনীকে পরাজিত করে ঠাকুরগাঁওয়ে উড়ে যায় বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা।

ঐতিহাসিক এই দিনটিকে সকালে স্মরণ করে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংবলিত স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আলোচনা সভা, র্যালি, দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলাজুড়ে পালিত হচ্ছে মুক্ত দিবস।

জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর কেবল একটি তারিখ নয় এটি ঠাকুরগাঁওবাসীর আত্মমর্যাদা গৌরব এবং স্বাধীনতার স্বাক্ষর। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এ দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।’

দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ণিলভাবে উদযাপিত হচ্ছে ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস, আর সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে আনন্দ ও গর্বের আবহ।

স্থানীয় সূত্রে জানায়, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় জেলার ১০টি থানা মিলে ওই মহকুমা ছিল। এ অঞ্চলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণান্তকর লড়াই আর মুক্তিকামী জনগণের দুর্বার প্রতিরোধে নভেম্বরের শেষ দিক থেকেই পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। চূড়ান্ত বিজয় আসে ৩ ডিসেম্বর এই দিনটিতে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাক হানাদাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের নিরীহ মানুষের ওপর। এ সময় হানাদাররা গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এরপর ১৫ এপ্রিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও। ঠাকুরগাঁওয়ের ইসলামনগর থেকে ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী, ইয়াকুব আলী, মাজারুল, দবিরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান ও সিরাজউদ্দীনকে ধরে এনে হানাদার বাহিনী ঠাকুরগাঁও ক্যাম্পে আটক করে রাখে। পরে তাদের হত্যা করে টাঙ্গন নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হয়। যেখানে বর্তমানে বধ্যভূমি গড়ে তোলা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও তখন ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। কমান্ডার ছিলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার এম খাদেমুল বাশার। এ সেক্টরে প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল। ২৯ নভেম্বর এ মহকুমার পঞ্চগড় থানা প্রথম শক্রমুক্ত হয়। পঞ্চগড় হাত ছাড়া হওয়ার পর হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। এরপর তারা প্রবেশ করে ঠাকুরগাঁওয়ে।

২ ডিসেম্বর রাতে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচুর গোলাগুলি শুরু হয়। ওই রাতেই শক্রবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটে ২৫ মাইল নামক স্থানে অবস্থান নেয়। ৩ ডিসেম্বর ভোরে ঠাকুরগাঁও শহর শক্রমুক্ত হয়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ফাড়াবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধার বাবা শেখ শহর আলী ও তার ভাই শেখ বহর আলীসহ ১৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হত্যা করে। তাদের মরদেহ আব্দুর রশিদ ডিগ্রি কলেজের পাশের একটি কূপে ফেলে দেয়। হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা গণহত্যা চালায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গ্রামে। সেখানে স্থানীয় কিছু লোকের সহায়তায় আশ-পাশের অনেক গ্রামের প্রায় ৩ হাজার নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হানাদার বাহিনী গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। পরে তাদের মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক স্থানে গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা।


সীমান্ত সুরক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির মতবিনিময়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

সীমান্ত অঞ্চলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে বিজেপির মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পৃথক দুটি বিওপি এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় তেঁতুলবাড়ীয়া বিওপি এলাকার তেঁতুলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এবং রংমহল বিওপি এলাকার খাসমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পৃথক দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুটি সভাতেই স্থানীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানগুলো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি। তিনি তাঁর বক্তব্যে সীমান্ত সুরক্ষায় স্থানীয় জনগণের অপরিহার্য ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “সীমান্ত আইন মেনে চলা এবং যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে জানানো প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব।”তিনি আরও সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের আইনি জটিলতা, সামাজিক ক্ষতি এবং মাদক চোরাচালানের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেন।

মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান কিভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে—তাও তিনি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন। এসব অপরাধ থেকে দূরে থাকতে এবং অন্যদের সচেতন করতে তিনি স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, “এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি ও সাধারণ জনগণের পারস্পরিক সমন্বয় অপরিহার্য।”

সভা শেষে স্থানীয়রা বিজিবির এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং সীমান্ত সুরক্ষায় সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ভোরে মেহেরপুরের গাংনী সীমান্তের তেঁতুলবাড়ীয়া সীমান্ত দিয়ে নারী-পুরুষ, শিশুসহ ৩০ বাংলাদেশিকে ভোরে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।


অতিথি পাখির কলতানে মুখর রাউজানের পুকুর-দিঘি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রতি বছর শীতের শুরুতে আমাদের দেশে নাম না জানা রং-বেরঙের অনেক অতিথি পাখি বেড়াতে আসে। নদী, বিল, জলাশয় ও পুকুরে এসে ভরে যায় এসব পাখির কাকলিতে। তেমনি চট্টগ্রামের রাউজানে প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই পাখিদের আগমন দেখা যায়। হালদা নদী, ঈসা খাঁ দিঘি, পরীর দিঘি, ইউসুফ খাঁ দিঘি, নরসরত বাদশা দিঘি, জল পাইন্ন্যা দিঘি, রায় মুকুট দিঘি, ভিক্ষু ভানুপুর দিঘিসহ বড় আকৃতির জলাশয়গুলোতে এসব পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে এসে জলখেলিতে আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করছেন। আমাদের দেশে অতিথি পাখিরা অতটা পথ পাড়ি না দিলেও তারা অনেক দূর থেকেই আসে। বরফ শুভ্র হিমালয় এবং হিমালয়ের ওপাশ থেকেই বেশির ভাগ অতিথি পাখির আগমন ঘটে। এসব পাখিরা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ান ইন্ডিয়ান ফ্লাইওয়ে দিয়ে আমাদের দেশে প্রবেশ করে।

এছাড়া ইউরোপ, দূরপ্রাচ্য সাইবেরিয়া থেকেও এসব পাখি আসে। এরা কিছুদিন থাকার পর আবার ফিরে যায় নিজ দেশে। আগত অতিথি পাখিগুলো অনেক সময় শিকারির কাছে ধরা পড়ে। এটা ঘোরতর অপরাধ। এসব দুষ্কর্মে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে এ দেশে আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে- সোনাজঙ্গ, খুরুলে, কুনচুষী, বাতারণ, শাবাজ, জলপিপি, ল্যাঞ্জা, হরিয়াল, দুর্গা, টুনটুনি, রাজশকুন, লালবন মোরগ, তিলে ময়না, রামঘুঘু, জঙ্গী বটের, ধূসর বটের, হলদে খঞ্চনা, কুলাউ ইত্যাদি। রাউজান উপজেলা নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন ঈসা খাঁ দিঘিতে কয়েক হাজার অতিথি পাখির দেখা গেছে। কিচিরমিচির শব্দে এই এলাকায় আনন্দঘন পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়।

রাউজানের প্রতিটি জলাশয়, দিঘি, খাল, বিলে অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যায়। প্রতি বছর শীত মৌসুমে ঈসা খাঁ দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আগত অতিথি পাখিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নোয়াজিষপুর এলাকার সকল মানুষ আন্তরিকভাবে দেখভাল করে। এই এলাকার মানুষ অতিথি পাখি দেখতে এই দিঘিতে আসে। পাখিদের সাথে ছবি ধারণ করেন।

অপরদিকে ঈসা খাঁ দিঘি নানা মনোমুগ্ধকর পরিবেশে আশ্রিত পাখিদের জলখেলি দেখতে পাখিপ্রেমীরা দিঘিতে আসেন বলে স্থানীয়রা জানান।

আর জলাশয়ের জলে নেমে স্নান, আবার ডানা মেলে আকাশে উড়ে বেড়ানো- এসব দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন স্থানীয় মানুষ ও দূর-দূরান্তের পাখিপ্রেমীরা ভিড় করছেন দিঘির পাড়ে। কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, পৃথিবীতে প্রায় ১০ হাজার প্রজাতির পাখির অস্তিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে ৭১৪ প্রজাতি। এর মধ্যে প্রায় ৩২০ প্রজাতির অতিথি পাখি প্রতি বছর শীতে বাংলাদেশে আগমন করে। রাউজানের জলাশয়গুলোতে দেখা মিলছে সোনাজঙ্গ, বাতারণ, খুরুলে, কুনচুষী, ল্যাঞ্জা, শাবাজ, জলপিপি, হরিয়াল, ধূসর বটের, কুলাউসহ নানা প্রজাতির পাখির। পাশাপাশি ধূসর ও গোলাপি রাজহাঁস, বালি হাঁস, সরালি, পাতিহাঁস, নীলশীর পিয়াং, কালোহাঁস, রাঙামুড়ি, চখাচখি, পানি মুরগি ও কমনচিলও এসেছে এবারও।

সম্প্রতি উপজেলার নোয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের বিপরীতে থাকা শিব মন্দিরের বিশাল পুকুরে দেখা গেছে, শত শত অতিথি পাখি কিচিরমিচির শব্দে পানিতে জলকেলিতে ব্যস্ত।

পুকুর পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, সকালে তাদের ঘুম ভাঙে পাখির কুঞ্জনে। শীতের শুরুতেই হাজার হাজার পাখি নেমেছে নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের ইতিহাস খ্যাত ঈশা খাঁ দিঘিতে। এই দিঘির পাড়ে আছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল্লাহ আনছারী বলেন, ‘ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এসেছে লস্কর উজির দিঘিতে। ভিনদেশি অতিথি পাখিগুলো হয়ে ওঠেছে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। তবে এবার কদলপুরের মানছি পুকুরেও বেশ অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে।’

নোয়াপাড়ার জালোয়ার দিঘি এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতিদিন বেলা ১১-১২টার মধ্যে এই দিঘিতে অতিথি পাখিসহ হাজার হাজার পাখি অবস্থান করে। পাখিদের ওড়াউড়ি স্থানীয়দের আনন্দ দেয়। অনেকে ঢিল মেরে পাখির নাচন দেখতে চায়। সন্ধ্যায় এসব পাখি চলে যায় অন্য অজানা স্থানে।’

রাউজান উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. জয়িতা বসু জানান, শীত প্রধান দেশ-হিমালয়, সাইবেরিয়া, রাশিয়া, ফিলিপাইন, ফিনল্যান্ডসহ বরফাচ্ছন্ন অঞ্চলে খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাব দেখা দিলে এসব পাখি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় এবং প্রায় ৬-৭ মাস অবস্থান করে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বিচারে শিকার চলতে থাকলে অতিথি পাখির আগমন ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রাউজানে প্রায় সময় জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে, পাখির বাসস্থান নষ্ট হচ্ছে, তাই প্রাকৃতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এসব পাখিকে রক্ষার আহ্বান জানান তিনি।


গুদামে জমাছে ইউরিয়া সার, ডিএপির সরবরাহ না থাকায় ক্ষতির মুখে ডিলার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কৃষকের চাহিদা কম থাকায় ডিলারদের ঘরে দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইউরিয়া সার। এতে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন।

কিন্তু ডাই এনোমোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও প্রয়োজনীয় সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে ডিলার ও কৃষকদের মাঝে এক প্রকার হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা সহ নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খানিকটা উঁচু এলাকা হওয়ায় গোয়ালন্দ উপজেলায় রবি মৌসুম শুরু হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে। যা চলবে আগামী ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। এ অঞ্চলের কৃষকরা সবজি, মাছের খামার, কলা বাগান সহ নানা ধরনের ফসলের আবাদে ডিএপি সার বেশি ব্যবহার করছেন।

কৃষকরা জানান, জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর কার্যকারিতা থাকে সর্বোচ্চ ১০দিন। এ সারে থাকে শুধু নাইট্রোজেন। সেখানে ডিএপি সারের কার্যকারিতা থাকে অন্তত ৩ মাস। এ সারের মধ্যে ইউরিয়া ও টিএসপির সংমিশ্রণ থাকে। যে কারনে তারা এই সার ব্যবহার করতে অধিক আগ্রহী।

গোয়ালন্দ উপজেলায় সরকার নিযুক্ত বিসিআইসি ডিলাররা জানান, কৃষকের চাহিদা বিবেচনায় এনে তারা গত সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার ৫ জন বিসিআইসি ডিলারের জন্য ৫০০ মেট্রিক টন এবং বিএডিসি'র ৪ জন ডিলারের জন্য ২০০ মেট্রিক টন ডিএপি সারের চাহিদা জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি'র কাছে লিখিত আবেদন করেন।

বিষয়টি অক্টোবর মাসের জেলা সার ও বিজ মনিটরিং সভায় আলোচনা ও রেজুলেশন ভুক্ত করা হয়।

কিন্তু অক্টোবর মাসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সার না দিয়ে কতৃপক্ষ তাদের ৯ ডিলারকে সমবন্টন করে সর্বমোট মাত্র ২১২.৭৫ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ দেয়।

ঘাটতি মেটাতে আশপাশের কম চাহিদা সম্পন্ন উপজেলা হতে এনে বিক্রির অনুমতি চাইলেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাতে সায় দেননি। তারপর থেকে এভাবেই ডিএপি'র সংকট চলছে।

এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে খুচরো পর্যায়ে কোন কোন বিক্রেতা অধিক মূল্যে ডিএপি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তার দায়ভারও বিসিআইসি ডিলারদের উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে।

ডিলাররা জানান, প্রয়োজন না থাকলেও তাদের ৫ জন বিসিআইসি ডিলারকে প্রতি মাসে মোট ২৭৭ মেট্রিকটন করে ইউরিয়া সার দেয়া হচ্ছে। এর অন্তত ৩০ শতাংশ সার অবিক্রীত অবস্হায় প্রতিমাসে গুদামে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিন আলাপকালে গোয়ালন্দ বাজারের বিসিআইসি ডিলার মেসার্স নুরুজ্জামান মিয়ার স্বত্বাধিকারী হোসনে জামান বলেন, নভেম্বর মাসে তার বরাদ্দ ১২৪০ বস্তা হতে এখনো পর্যন্ত অবিক্রীত পড়ে রয়েছে ৯৮৪ বস্তা।

মেসার্স হোসেন আলী বেপারির প্রতিনিধি (ছেলে) ওহিদুল ইসলাম বলেন, নভেম্বর মাসে তার ইউরিয়ার সরবরাহ ছিল ৬২ মেট্রিক টন। বিক্রি বাদে এখনো ৭০০ বস্তা বা ৩৫ টন গুদামে পড়ে রয়েছে।

মেসার্স সপ্তবর্ণা ট্রেডার্স এর প্রতিনিধি প্রনব কুমার দাস জানান, গত ৪ মাসে তাদের গুদামে ৭৬ বস্তা অবিক্রীত ইউরিয়া সার দলা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। খুচরো হিসেবে ১৩২৫ টাকা বস্তা দরে এতে তাদের লোকসান হয়েছে ১ লক্ষাধিক টাকা।

মেসার্স স্বপন কুমার সাহার স্বাত্তাধিকারী পলাশ কুমার সাহা বলেন, ইউরিয়া সারের সরকারী ডিলার মূল্য ১২৫০ টাকা বস্তা। সাব ডিলারদের কাছে আমাদের ১৩২৫ টাকা বস্তা বিক্রি করার কথা। কিন্তু গুদামে থেকে নষ্ট হওয়ার ভয়ে বিক্রি করছি ১২৮০ টাকা করে । অথচ ডিএপির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও দিতে পারছি না।

ডিলাররা আরও জানান, এভাবে প্রত্যেক ডিলারের ঘরেই ইউরিয়া সার অবিক্রিত অবস্হায় পড়ে আছে।

এর মধ্যে নতুন করে আবার ডিসেম্বরের জন্য ডিলার প্রতি ১১২০ বস্তা করে ৫৬০০ বস্তা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এমতাবস্থায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। প্রতি মাসে বরাদ্দকৃত সার না তুললে তাদের লাইসেন্স বাতিলেরও ঝুঁকি রয়েছে।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রায়হানুল হায়দার বলেন, এ উপজেলায় মোট আবাদি জমি ও তাতে সার ব্যবহারের নির্দিষ্ট পরিমান হিসেব করে সরকার বিভিন্ন ধরনের সারের বরাদ্দ দিয়ে থাকে। গোয়ালন্দের অনেক কৃষক কৃষি বিভাগের অনুমোদিত পরিমানের চাইতে বেশি পরিমানে ডিএপি সার ব্যবহার করে। যে কারনে এখানে ডিএপি'র ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের আরো সচেতন হতে হবে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এ জেলায় ডিএপি সারের কোন ঘাটতি নেই। সারের চাহিদা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে নেয়া হয়। গোয়ালন্দে ডিএপি'র ঘাটতির বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিলারের গুদামে পড়ে থাকা ইউরিয়া সার চলমান রবি মৌসুমে শেষ হয়ে যাবে আশা করছি।


গোয়ালন্দে মেডিকেল  টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের  কর্মবিরতি, দুপুর পর্যন্ত সেবা পাননি রোগীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিন কর্মবিরতি পালন করছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি ও ফার্মেসির সামনে রোগীদের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে আগত রোগীরা। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে প্যাথলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত কর্মদিবস বন্ধ ঘোষণা করে ব্যানার টাঙ্গিয়ে অর্ধদিবস পালন করছে।

বেশ কয়েকজন রোগী আক্ষেপ করে বলেন, সকাল ৯টার পর হাসপাতালে এসেছি। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখানোর পর পরীক্ষা দিলে প্যাথলজিতে গিয়ে পরীক্ষা করাতে পারছি না। প্যাথলজিতে লোক নেই। প্যাথলজির লোক হাসপাতালের বাইরে ব্যানার টাঙ্গিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে। তারা আরো বলেন, মেডিসিন কর্নারে গিয়েও কোন লোক পাওয়া যায়নি। দরজা তালাবন্ধ।এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি সেবা না পেয়ে সকাল থেকে নিরলস বসে থাকতে হয় হাসপাতাল চত্বরে অনেক রোগীকে।

কর্মবিরতি পালন সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আমিরুল ইসলাম রনী ও ফার্মাসিস্ট প্রদীপ দাস বলেন, আমরা নিরলসভাবে উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছি। সেই তুলনায় আমাদের মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা ১০ম গ্রেড পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য। এজন্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। ৩০ নভেম্বর থেকে নির্ধারিত সময় ধরে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। ৩ নভেম্বর আমরা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছি।

মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা ৪ ডিসেম্বর থেকে শাট ডাউন কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


মুরাদনগরে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু

তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুরাদনগর (কুমিল্লা)

সারা দেশের মতো কুমিল্লার মুরাদনগরেও তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার সব স্কুলে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষকরা উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এসময় শিক্ষকরা ঘোষণা দেন, তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত এই শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।

তিন দফা দাবিগুলো হলো - বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান সংশ্লিষ্ট জটিলতার সমাধান ও সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, মুরাদনগরের সভাপতি

জামাল হোসেন, উপজেলা মডেল সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন, দৌলতপুর পূর্ব সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন- সহকারী শিক্ষক সৈকত জামান দোলন, আব্দুল জলিল, সামছুন্নাহার, শারমিন ফাতেমা, জান্নাতুল ফেরদৌস, মাসুমা আক্তার, ওমর ফারুক, রঞ্জন কুমার পোদ্দার।

উপস্থিত ছিলেন— প্রশিক্ষক মহিউদ্দিন, ফাইজুর মনির, মনির শিকদার, বাবুল আক্তার, মোশাররফ হোসেন, মজিবুর রহমান, কামরুল হাসান, রায়হান, আলাউদ্দীন, সুমন, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন, আতিকুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, নির্মল, আলেকজান্ডার, তাসলিমা আক্তার, লুৎফা বেগম, রহিমা আক্তার, কানন, সৈয়দা নার্গিস, রাখি প্রমুখ।

শিক্ষকরা জানান, ২০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষকই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নে যখনই গড়িমসি দেখা যায়, তখনই আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হই। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন চলবে।


কুলাউড়ায় মালিকবিহীন ৩ লাখ টাকার ভারতীয় সিগারেট আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ৩ লাখ ২ হাজার টাকার ভারতীয় সিগারেট আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী দত্তগ্রাম এলাকা থেকে সিগারেটগুলো জব্দ করে শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)।

শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দত্তগ্রাম সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় মালিকবিহীনভাবে ফেলে রাখা অবস্থায় ভারতীয় এসব সিগারেট উদ্ধার করা হয়।


banner close