নেত্রকোণার পূর্বধলায় ‘পূর্বধলা কাচারী আশ্রায়ন’ প্রকল্পে’র ৮ বছরের শিশু ধর্ষণে’র অভিযোগে ঘটক আবু তাহেরকে আটক করেছে পূর্বধলা থানার পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় পশ্চিম পূর্বধলা কাচারী আশ্রায়ন প্রকল্প এলাকার নিজ বসত ঘর-৩ নং থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আবু তাহের (৫৫) উপজেলার পূর্বধলা সদর ইউনিয়নে’র মৃত ঝাটু চৌকিদারে’র ছেলে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিশুটি বোবা। তাকে মঙ্গলাবার সন্ধ্যায় আশ্রায়ণ প্রকল্পে’র নিজ বসত ঘরে ডেকে এনে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরদিন বুধবার ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পূর্বধলা থানার মামলা নং-৪।
পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এসআই এস.এম শফিউল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাকে আটক করে।
ওসি রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘পশ্চিম পূর্বধলা আশ্রায়ন প্রকল্পে শিশু ধর্ষণে’র অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আবু তাহের নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে নেত্রকোণা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, হজ ব্যবস্থাপনা সহজ করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে অতিতের মতো কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে পারবে না ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সকলে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে হাজীদের জিম্মি করার যে প্রবনতা ছিল তা এখন শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তত্ত্বাবধায়নে হাজীদের বাড়ি ভাড়াসহ সকল কাজ সম্পন্ন করায় গত বছর সাড় আট কোটিরও অধিক টাকা হাজীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নাটোর জেলা মডেল মসজিদ উদ্বোধন শেষ উপদেষ্টা এই কথা বলেন তিনি এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, এজমা, হৃদরোগ ও ক্যান্সারেরর রোগীদের হজে যেতে নিষেদ করেছে সৌদি সরকার। তাই ধর্ম মন্ত্রাণালয় এইসব রোগীদের হজে যেতে দেবে না। কোনো চিকিৎসক এইসব রোগীদের সুস্থ বলে সার্টিফিকেট প্রদান করে তাহলে সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বয়স্কদের হজে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে উডদেষ্টা বলেন, হজে অনেক পরিশ্রম হয়। তা বয়স্ক মানুষদের কঠিন হয়। তাই তিনি বয়স্কদের হজে না যেতে আহ্বান করেন।
এছাড়া হজের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে উপদেষ্টা বলেন হজের জন্য সর্বোচ্চ কম খরচ করার চেষ্টা চলছে বলে জানান। পরে তিনি জেলার আরও দুটি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন।
এ সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাবসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুরে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ওই আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, মাদারীপুর জেলা শাখা।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার জেলা শাখার সভাপতি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মাদারীপুর সদর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান।
আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি এনায়েত হোসেন নান্নু, সহসভাপতি প্রফেসর (অব.) মো. মকবুল হোসেন, বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব রেজাউল হক রেজা, আসক ফাউন্ডেশন জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মিজান ফরাজী, কোষাধ্যক্ষ নূরুল হক সরদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাবেক কেন্দ্রীয় নীরিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ এনায়েত হোসেন, অ্যাডভোকেট (এজিপি) মো. সাইফুর রহমান, সংগঠক ও মানবাধিকার প্রতিনিধি এসকান্দার মাতুব্বর, সিনিয়র সাংবাদিক সুবল বিশ্বাস, আসক ফাউন্ডেশন মাদারীপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারহানা ইসলাম কান্তা, সমাজকল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদরুন নাহার কলি, ত্রাণ, কোষাধ্যক্ষ নূরুল হক সরদার, সদর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি জাকির মাতুব্বর অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর সব ক্ষেত্রে মানবাধিকার শতভাগ বাস্তবায়নসহ, দুর্নীতিবন্ধে সামাজিক-সাংগঠনিকভাবে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলেচনা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এরপর একটি র্যালি ডিসি অফিস প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন পেয়েছেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ। প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তালিকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ও নতুন মুখের প্রাধান্য দেখা গেছে। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন পেয়েছেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এনসিপির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য খোকন বর্তমানে মুখের চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় রয়েছেন। সুস্থ হয়ে দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন। ওই দিনের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গুলিতে খোকনের ঠোঁট, মাড়ি, নাক-মুখের অংশের মাংস প্রায় খুলে পড়ছে। তার মুখ ও পুরো শরীর রক্তাক্ত। এই অবস্থায় তিনি একজনের হাত ধরে উঠে দাঁড়ান। খোকন নিজেই আঙুলের ছাপ দিয়ে মোবাইলের লক খোলেন। সেই মোবাইল থেকে একজন খোকনের বড় ভাই খোকা চন্দ্র বর্মণকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর জানান।
আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় পৌর শহরের নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের তার সমর্থক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আমার প্রতি জনপদের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আছে, সে জন্য আমি মানুষের পাশের থাকার প্রতিজ্ঞা নিয়েছি উল্লেখ করে মতবিনিময় সভায় দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন বলেন, আমার জীবনের বাকি দিনগুলো আমি জনগণের সাথে থাকতে চাই, জনগণের জন্য কাজ করতে চাই। সে জন্য আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় (সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর) কাঙ্ক্ষিত যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়য়নের দিক দিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে সুনামগঞ্জ। আমরা এর পরিবর্তন চাই, বৈষম্যের নিরসন চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে আমি সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে চাই। সুনামগঞ্জের মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে সে জন্য সন্ত্রাস- চাঁদাবাজমুক্ত ও সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ চাই, আর এ জন্যই আমি নির্বাচন করতে চাই।
দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চারবারের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে তিনি বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নাম ঘোষণা করেন। ওইদিন রাতেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ডেন্টাল এক্স-রে মেশিন, ডেন্টাল চেয়ার ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে দাঁত উঠানো, রুট ক্যানেল, ফিলিং, স্কেলিং ও দাঁতে ক্যাপ পড়ানোসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাসেবা প্রদানে বিঘ্ন ঘটছে। এতে থাকায় চরম ভোগান্তি ও কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলা ছাড়াও জেলার পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল ও গোপালপুর উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতশত রোগীরা এ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নেন। রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে শুধুমাত্র ব্যথা ও গ্যাসের ট্যাবলেট নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। ফলে প্রায় কার্যত ডেন্টাল চিকিৎসা সেবা অচল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ডেন্টাল বিভাগ ছাড়াও হাসপাতালটি চিকিৎসক সংকটেও ভুগছে। হাসপাতালের ভেতরের পরিবেশ অনেকটা নাজুক। শৌচাগার দুর্গন্ধময় ও অপরিচ্ছন্ন এবং সেবাগ্রহীতারা প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ডেন্টাল চিকিৎসা নিতে আসা রোগী তানিয়া বেগম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তিনি দাঁতে ব্যথায় ভুগছিলেন। পরে চিকিৎসা সেবা নিতে তিনি হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসক তার দাঁত জানায় দাঁত তুলতে হলে আগে এক্স-রে লাগবে। কিন্তু এখানে এক্স-রে করার ব্যবস্থা নেই। পরে বাধ্য হয়ে বাহিরের ক্লিনিক থেকে তিনি এক্স-রে করেন।
অপর রোগী কাওছার মন্ডল বলেন, তাকে এক্স-রে করতে বাইরে যেতে বলা হয়েছে। তিনি গরিব মানুষ, তার কাছে টাকা নেই। হাসপাতাল থেকে শুধু প্যারাসিটামল দেওয়া হয়, এতে দাঁতের ব্যথা যায় না। তাছাড়া এ হাসপাতালে ব্যথা, গ্যাসটিক ও স্যালাইন ছাড়া কোনো ছাড়া তেমন কোনো ওষুধ মেলে না।
হাসপাতালে আসা এক রোগী বলেন, তিনি গরিব মানুষ, তার কাছে টাকা নেই। হাসপাতাল থেকে শুধু প্যারাসিটামল দেওয়া হয়, এতে দাঁতের ব্যথা যায় না। তাছাড়া এ হাসপাতালে ব্যথা, গ্যাসটিক ও স্যালাইন ছাড়া কোনো ছাড়া তেমন কোনো ঔষধ মেলে না। তাকে এক্স-রে করতে বাইরে যেতে বলা হয়েছে।
ভূঞাপুর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুক জানান, তিনি একজন সহকারী চিকিৎমক নিয়ে প্রতিদিন শতাধিক জন রোগীকে দাঁতের চিকিৎসা দেন। কিন্তু ডেন্টাল বিভাগের এক্স-রে মেশিন, ডেন্টাল চেয়ার ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ নেই, যার কারণে তারা পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা দিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান আজাদ বলেন, এ হাসপাতালে ভূঞাপুর ছাড়াও আরও পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলার রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসে। ফলে রোগীর চাপ বেশি। ডেন্টাল বিভাগের চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতির সংখ্যা কম। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ডেন্টালের কিছু যন্ত্রাংশও বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে তিনি উর্ধতন দপ্তরে জানিয়েছেন।
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হাঁসের পিছু নিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে সাবাব মন্ডল (৩) ও তোহা মন্ডল (২) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের নতুনগ্রাম দিঘলাপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যাদুরচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সাবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুনগ্রাম দিঘলাপাড়া এলাকার শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং তোহা মন্ডল একই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। নিহত দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে।
পারিবারিক-স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে শিশুদের বাবা ও মায়েরা ব্যস্ত ছিলেন গৃহস্থালির কাজ নিয়ে। এদিকে সাবাব মন্ডল ও তোহা মন্ডল নামের দুই শিশু খেলছিল। এমন সময় বাড়ির পালিত হাঁসের পিছু নিয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পরিবারের লোকজন পানি থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা মাঠে নিহত দুই শিশুর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি থেকে মনোনিত সংসদ সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান, তার ছোট ভাই জামায়াতে ইসলামীর মনোনিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফিউর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রৌমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ না থাকায় নিহত দুই শিশুর মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে।
মাঠ ভরা সরিষা ফুলে স্বপ্ন বুনছে দুই জেলার কৃষক। এর মধ্যে মেহেরপুরে অনাবাদি ও দুই ফসলি জমিতে সরিষা আবাদ করে লাভের আশা করছেন চাষিরা। আর হেমন্তের কুয়াশায় সোনালি স্বপ্ন যশোরের কেশবপুরে সরিষা চাষে বাম্পার সম্ভাবনায় উৎসবে কৃষক। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
জুলফিকার আলী কানন মেহেরপুর থেকে জানান, মেহেরপুরে অনাবাদি ও দুই ফসলি জমিতে সরিষা আবাদ করে লাভের আশা করছেন চাষিরা। ভালো ফলন পেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অনুকূল আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষকদের খরচ কমাতে ও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে জেলা কৃষি বিভাগ দিয়েছে সব ধরনের সহযোগিতা। সরিষার ফুলের সঙ্গে কৃষকের আশার আলোও ছড়িয়ে পড়েছে মাঠময়। ভালো আবহাওয়া থাকলে এই মৌসুমে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে মেহেরপুরের কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে অন্যান্য আবাদের সাথে সরিষার রঙিন উৎসব। মাঠের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। একেবারে যেন হলুদের কারুকাজে সাজানো প্রকৃতি। বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার সবুজ পাতার ওপর হলুদের ঘ্রাণ; সেই সঙ্গে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। অনাবাদি ও দুই ফসলি জমিতে সরিষা আবাদ করে পরিবারে তেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করার আশা করছেন চাষিরা।
মাইলমারী গ্রামের কৃষক আমাদের যেসব জমি অমন আবাদের পর কিছুদিন পড়ে থাকে সেসব জমিগুলোতে সরিষার আবাদ করি। এতে অল্প খরচে এবং চাষে নিজের বাড়ির তেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি একটি মোটা অঙ্কের টাকা আয় হয়।
ভাটাপাড়া গ্রামের কৃষক ফরমান আলী বলেন, সরিষা আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি। তাই এই চাষের ফলে পতিত জমিটুকু থেকেও আমরা একটি মোটা অঙ্কের আয় করি।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এই খেত থেকে ১১ হাজার মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। সরিষা চাষে আগ্রহ তৈরি করতে জেলায় ৬ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সন্জিব মৃধা জানান, সরিষা তেলজাতীয় একটি আবাদ। আমন চাষের পর কিছুদিন জমি পতিত থাকে। সে সময় কৃষকরা এই চাষটি করে থাকেন। তারা অল্প খরচে অল্পদিনেই একটা ভালো আয় করেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষটি উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের প্রণোদনাসহ নানাভাবে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকি।
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর) থেকে জানান: যশোরের কেশবপুর উপজেলার হেমন্তের সকাল। পাতলা কুয়াশার চাদর সরিয়ে নরম রোদ উঠতেই ফসলে দোলতে থাকা সরিষা ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন। বাতাসে ভাসে সরিষা ফুলের মাদকতাময় সুবাস। চারদিকে চোখ যতদূর যায় শুধুই হলুদের সমারোহ। প্রকৃতির এমন নৈসর্গিক রূপে সোনালি স্বপ্ন বুনছেন এখানকার কৃষকরা।
এ বছর কেশবপুরের ১১টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে যেন সরিষা চাষের এক উৎসব নেমে এসেছে। আগাম জাতের বারি সরিষা চাষে যেমন ফলনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, তেমনি কৃষকের মুখেও ফুটে উঠেছে আশার হাসি।
সরকারি প্রণোদনায় আবাদ বেড়েছে ৫০৫ হেক্টর। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর সরকারি প্রণোদনা হিসেবে ৪ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। গত বছর কেশবপুরে সরিষা আবাদ হয়েছিল ১ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে- যা গত বছরের চেয়ে ৫০৫ হেক্টর বেশি। লক্ষ্য ছিল ১ হাজার ৫৭০ হেক্টর, সেটি ছাড়িয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাষ করেছে কৃষকরা।
বারি-১৪, বারি-৯, বারি বীনা-৯, বারি-১৮, বারি-১৭ ও টরি-৭ জাতের উচ্চফলনশীল সরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। আগাম জাত হওয়ায় সরিষা কাটার পর একই জমিতে সহজেই বোরো ধানের আবাদ করা যায়। ফলে কৃষকরা একসঙ্গে দুই ফসলের লাভ তুলতে পারছেন।
৭০-৮০ দিনের মধ্যেই ঘরে তোলা যায় এই ফসল। মজিদপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, এই মৌসুমে নতুন করে টরি-৭, বারি-৯, বারি বীনা-৯, বারি-১৭ ও বারি-১৮ জাতের সরিষা চাষ শুরু হয়েছে। এসব জাত ৭০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। তাই কৃষকরা বোরো আবাদ শুরুর আগেই সরিষা কাটতে পারেন, ফলে সরিষা চাষে তারা ঝুঁকছেন বেশি।
কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি। পাঁজিয়া গ্রামের নিয়ামুল ইসলাম, কামরুল ও বিধান দাসসহ সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান ও আজিজুর রহমান জানান, গত বছর বৃষ্টির পানি বেশি থাকলেও ফলন কম ছিল। এ বছর পানি কম হলেও ফলন ভালো। বিঘাপ্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ করে ৬-৭ মণ সরিষা পাব বলে আশা করছি। বাজারদরও ভালো থাকবে।
আবহাওয়া অনুকূলে লক্ষ্য ছাগানোর আশাবাদী কৃষক অফিস। উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, এবার কেশবপুরে ২ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠজুড়ে ভালো ফলনের আভাস মিলছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা খুব সহজেই সরিষা ঘরে তুলতে পারবেন।
প্রকৃতির রূপ, কৃষকের পরিশ্রম আর সরকারি সহায়তায় কেশবপুরে সরিষা চাষ যেন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। হেমন্তের কুয়াশা ভেদ করে সোনালি সরিষার হাসি কৃষিজীবী মানুষের ঘরে আনতে পারে সমৃদ্ধির বার্তা।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে খোলা ট্রাকে বালু-মাটি বহন করা হচ্ছে। সড়ক দিয়ে চলাচলরত পথচারী, চালক ও যাত্রীদের চোখে-মুখে বালু ঢুকছে। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে ভরাট বালু ও কাটা মাটি ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে বহন করা হচ্ছে। এই বালু-মাটি বিভিন্ন বসতবাড়ির ভিটা উঁচুকরণ ও গর্ত ভরাটসহ ইট ভাটায় নেওয়া হয়। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ট্রাকে বালু-মাটি বহনের ক্ষেত্রে কাপড় দিয়ে ঢেকে বহন করার কথা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা না করে ইচ্ছেমতো বহন করছেন। ফলে চলন্ত গাড়ি থেকে বালু-মাটি উড়ে পথচারীদের চোখে-মুখে লাগছে। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। গাড়ির পেছনে থাকা যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেলচালকরা চোখে-মুখে বালু ঢুকে দুর্ঘটনার শিকার হন।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার কয়েক স্থানে স্থানীয় বেশ কিছু লোকজন বালু ব্যবসা করেন। গুরুত্বপূর্ণ এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ফেরিতে ওঠানামা করছে। দৌলতদিয়ার ৫ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বালুর চাতাল। ফেরি থেকে পরিবহন ওঠানামার সময় ওই চালাতের বালু বহনকারী ট্রাক থেকে ধুলা-বালু উড়ে চোখে-মুখে লেগে যাত্রীদের চরম বিড়ম্বনায় ফেলছে। বালু ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে সাহস পান না। আবার যানবাহন চালক বা সহকারী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে উল্টো ভয়ভীতি দেখানো হয়।
বাস চালক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ফেরিতে ওঠার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। সবাই জানালা আটকে গাড়িতে বসে থাকেন। মাঝে মাঝে এলোমেলো বাতাসে সড়কের পাশে থাকা স্তূপের বালু উড়ে চোখে-মুখে লাগে। এ সময় গাড়িতে থাকা যাত্রীরা চরম বিরক্তি প্রকাশ করে। চলতি পথে ফেরি ঘাটে ধুলা-বালুর সমস্যা নিয়ে কে কাকে কী বলবে? কোনও ঝামেলায় জড়াতে চান না বলে চুপচাপ সহ্য করেন।’
দৌলতদিয়া ঘাটে কথা হয় মোটরসাইকেল চালক সাজ্জাদ হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে কয়েক স্থানে দাঁড়াতে হয়েছে, সড়কে প্রচুর ধুলা-বালু উড়ছে। এগুলো সাধারণত ড্রাম ট্রাক থেকে সড়কে পড়ে ছিটে মানুষের চোখে-মুখে ও গায়ে লাগছে। প্রশাসনের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আরেক রিক্সা চালক মোবারক খাঁ বলেন, কি বলবো, কাকে বলব? বালু-মাটির ট্রাকগুলো সড়ক দিয়ে অনেক গতিতে চলাচল করে, কিছু বলতে গেলে ওরা আমাদের মারতে আসে। এদিকে কোন পুলিশ- প্রশাসনের কোন গাড়ি আটকাতে দেখিনা। আমরা গরিব মানুষ চুপ করে থাকি, কিছু করার নেই।
আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার ওসি. মিজানুর রহমান জানান, আমরা ইতিমধ্যে মাটি ও বালুবাহী ড্রাম ট্রাক, নসিমন, ইটবহনকারী ট্রলির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি, মহাসড়কে অবৈধ যানের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাথী দাস বলেন, ‘সড়কে খোলা গাড়িতে করে বালু-মাটি বহন করা ঠিক না। এতে চলন্ত গাড়ির পেছনে থাকা যাত্রী বা পথচারীদের চোখে-মুখে ধুলা-বালু ঢুকে সমস্যা হয়। উপজেলা প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কুমিল্লার হোমনায় মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিশাদ (২৬) নামের এক সৌদি প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তার বন্ধু ইফাত (১৫)। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ওয়াইব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নিশাদ রামকৃষ্ণপুর বাঁশগাড়ি গ্রামের মমিন মেম্বারের ছেলে। আহত ইফাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ঝুনারচর গ্রামের মো. জিলানীর ছেলে। দুর্ঘটনায় তার মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বন্ধু ইফাতকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াইব্রিজ এলাকায় ঘুরতে বের হয়েছিলেন নিশাদ। ব্রিজের ওপর উঠতে গিয়েই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশার সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন নিশাদ, তার মাথা ফেটে দুভাগ হয়ে যায়। স্বজনরা উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এমন হঠাৎ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল।’
নোয়াখালীর হাতিয়া থানাধীন চেয়ারম্যান ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড স্টেশন হাতিয়া। এতে উক্ত এলাকায় সন্দেহজনক ১টি ফিশিং বোটে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধভাবে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মায়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে বহনকৃত প্রায় ৩১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের ২৪৭ বস্তা হলুদ, ২৩৩ বস্তা মাসকালাই ডাল, ৩২ বস্তা কাঠ বাদামসহ ১২ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়।
বুধবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বিকাল ৪টা হতে আজ ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বুধবার মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ড স্টেশন হাতিয়া কর্তৃক এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জব্দকৃত বোট, আলামত ও আটককৃত পাচারকারীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত জাহাঙ্গীর বাহিনী সুন্দরবনের শিবসা নদীর ছোট ডাগরা খাল এলাকায় কয়েকজন জেলেকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ‘কোস্ট গার্ড স্টেশন কয়রা’ কর্তৃক ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ওই এলাকা হতে ১টি একনলা বন্দুক, ৪ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ৭ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজসহ জিম্মি থাকা ৮ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা বনের ভেতর পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করে।
উদ্ধারকৃত জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্যরা তাদের ৭ দিন ধরে জিম্মি করে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে নির্যাতন করছিল। পরে তাদের পরিবারের নিকট উদ্ধারকৃত জেলেদের হস্তান্তর করা হয় এবং জব্দকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জনান সিয়াম-উল-হক।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখতে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত ৪২০০ কেজি ঘনচিনি আটক করা হয়েছে। সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল, ঢাকা এর সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস হাউস চট্টগ্রামের গোয়েন্দা টিম কর্তৃক এ আটক সম্পন্ন হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এজাজ ট্রেডিং, ৪৭ হাজী নাদের হোসেন রোড, নামাবাড়ি, কেরানিগঞ্জ, ঢাকা, পটাশিয়াম ক্লোরাইড ঘোষণায় চীন থেকে একটি কন্টেইনারে ২২,০৮৮ কেজি পণ্য আমদানি করে, যা বিগত ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে চট্টগ্রাম বন্দরে অবতরণ করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃক উক্ত পণ্যের খালাস স্থগিত করা হয় এবং গত ০৬/১১/২০২৫ তারিখে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাকালে দুই ধরনের পণ্য পাওয়া যায় যার নমুনা উত্তোলনপূর্বক কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রামের ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে উক্ত দুই শ্রেণির পণ্যের মধ্যে একটিতে ১৭,৮০০ কেজি পটাশিয়াম ক্লোরাইড পাওয়া গেলেও বাকি ৪২০০ কেজি পণ্যকে ঘনচিনি হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ঘনচিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক যা সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কনডেন্সড মিল্ক এবং শিশু খাদ্য তৈরিতে সাধারণ চিনির পরিবর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ক্ষতিকারক কৃত্রিম উপাদানটি ব্যবহার করে থাকে। ঘনচিনি দিয়ে তৈরি খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘনচিনির দ্বারা প্রস্তুত খাদ্য ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর বিধায় সরকার আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুসারে পণ্যটিকে আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
নিষিদ্ধ ঘনচিনি আমদানি করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর বিধান মোতাবেক পণ্যচালানটি কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃক আটক করা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। উল্লেখ্য যে, বিগত ১৬/০৯/২০২৫ এবং ২৮/১০/২০২৫ তারিখে দুইটি পৃথক চালানে আমদানিকৃত প্রায় ১০০ টন ঘনচিনির দুইটি পণ্যচালান কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃক আটক করা হয়েছিল যার আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
সূত্রঃ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের দূরবর্তী টেপ্রীগঞ্জ এলাকায় কমলা চাষ করে নজর কেড়েছেন সুতপাড়া গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের ও আশপাশের এলাকার পৈতৃক ১০০ শতাংশ জমিতে তিনি প্রায় চার শতাধিক গাছ নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি পরিপাটি কমলা বাগান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের তেরপুপাড়া গ্রামের ‘আবরার অরেঞ্জ গার্ডেন’-এ গিয়ে দেখা যায়, জেলার নানা প্রান্ত থেকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
দর্শনার্থীরা জানান, কম দামের টাটকা কমলা, নিজ হাতে গাছ থেকে ফল ছিঁড়ে নেওয়ার সুযোগ এবং ছবি তোলার আনন্দই তাদের আগমনের প্রধান কারণ। প্রতিদিনই এখানে মানুষ এসে কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও ক্রেতা রাকিবুল ইসলাম রকি জানান, এই কমলাগুলো দেশের বাইরে থেকে আসা কমলার মতোই লাগছে। আমরা এখানে এসে দেখলাম দামও তুলনামূলক কম, এজন্য ভালোই লাগছে।
অপর এক দর্শনার্থী লালচান বাদশা জানান, দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে আছে, আমরা বাগান ঘুরে দেখে ফল ছিঁড়ে খেলাম, মোটামুটি সুস্বাদু আছে।
বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় জানান, আমি বাগান দেখাশোনা ও পরিচর্যা করি। নভেম্বরের শেষের দিকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি, এখন ২০০/২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে কিনে নিয়ে যায়, আমার বেশ ভালো লাগে।
কমলা চাষে আগ্রহের কারণ ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাগান মালিক রংপুর বিভাগে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (পিবিআই) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি আমার বেশ আগ্রহ ছিল। শৈশবে প্রিয় বইও ছিল কৃষি শিক্ষা, সেখান থেকেই আগ্রহের জন্ম। এরই ধারাবাহিকতায় পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতক জমিতে প্রথম কমলা গাছ লাগাই।
পরে আশানুরূপ সাফল্য পেলে ধীরে ধীরে সহোদরদের নিয়ে প্রায় ১০০ শতক জমিতে কমলার চাষ শুরু করি। এই জাতটি সম্ভবত চায়না ও দেশির মিশ্রণ। আর এই অঞ্চলের মাটি বেলে-দোআঁশ। এখানে পার্শ্ববর্তী দার্জিলিং ও হিমালয়ের আবহাওয়ার সাথে মিল রয়েছে, তাই এখানেও কমলা চাষ হবে বলে মনে হয়েছে।
নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কমলা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, সাথে ভিটামিন সি-এর চাহিদাও পূরণ করছে। আর এখন অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী। কেউ চাইলে আমি গাছের চারা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ বলেন, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কমলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সঠিক পরিচর্যা করলে এখানকার চাষিরা ভালো ফলন পাবেন। আমরা নতুন কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দিতে সবসময় প্রস্তুত।