বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
৭ কার্তিক ১৪৩২

অচিন বৃক্ষ!

আপডেটেড
১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৪
রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ
প্রকাশিত
রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৪

রূপগঞ্জে একটি বৃক্ষ ঘিরে রয়েছে নানা কল্প-কাহিনি। বৃক্ষটির বয়স নিয়েও রয়েছে নানান মত। কারও মতে ৩০০ বছর, কারও মতে আরও বেশি। তবে কত বছর ধরে এটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে, তা কারও সঠিক জানা নেই। বৃক্ষটিকে সবাই ‘অচিন বৃক্ষ’ বলেই চেনে।

জায়গাটিকে সবাই চেনে ‘অচিনতলা’ হিসেবে। উদ্ভিদ বিভাগের কাছেও গাছটি অচেনা। কথিত আছে, এ বৃক্ষের ডালাপালা কেউ ভয়ে ছিঁড়ে না। ছিঁড়লে পেট ব্যথা করে। তবে রোগ-বালাইয়ের জন্য এ বৃক্ষের পাতা খুবই উপকারী। মানত করলে উপকার হয়। সুনিবিড় ছায়ায় বিশ্রাম নিলে ক্লান্ত পথিক আরাম বোধ করেন। তাই গাছটি ‘ছায়াবৃক্ষ’ হিসেবে পরিচিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সদর ইউনিয়নের জাঙ্গীর গ্রামে অচিন গাছটির অবস্থান। দৈত্যাকৃতির গাছটি কবে, কীভাবে, কে রোপণ করেছিল, তা কারোর ধারণা নেই। তবে গাছটি নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা কিংবদন্তি। এ গাছের ডাল কেটে রক্তবমি করে মারা গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তারপর থেকে কেউ ডাল কাটে না। এমন কাহিনি বলতে ও বিশ্বাস করতে এলাকার লোকজন অভ্যস্ত। বন বিভাগ ও গাছপালা নিয়ে গবেষণা করেন যারা, তাদের কেউ কেউ মাঝেমধ্যে গাছটি দেখতে আসেন। দেখে চলে যান, কিন্তু আজ পর্যন্ত গাছটির প্রকৃত নাম শনাক্ত করতে পারেননি কেউ।

স্থানীয়রা বলেন, গাছটির অজানা কাহিনি শুনলে গা-শিউরে উঠবে। গাছটির বয়স হবে প্রায় ৩০০ বছর। ব্রিটিশ আমলে এখানে গভীর জঙ্গল ছিল। সেখানে ভয়ে মানুষ উঁকিও দিত না। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের দিকে অজানা এক সাধু আচমকা গাছটির নিচে আশ্রয় নেন। তার কানে ছিল দুল। মাথায় ঝাঁকড়া চুল। পায়ে ঘুঙুর। পরনে থাকত পাটের চট। বাক-প্রতিবন্ধী এ সাধু ক্ষিধে পেলে অচিন গাছের পাতা চিবিয়ে খেতেন। তার পাশে সব সময় জলন্ত আগুনের কুণ্ডলী থাকত। আর বাঁশের তৈরি হুক্কা দিয়ে হুক্কা খেত। ধীরে ধীরে মানুষের যাতায়াত শুরু হয়। একসময় মানুষ সাধুর কাছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য পানি পড়া আনত। উপকার পেয়ে অনেকে নানান কিছু মানত করত। তার সঙ্গে সব সময় বালতি থাকত। তাই ওই সময় তাকে সবাই বালতি সাধু বলে চিনতেন।

জাঙ্গীর সুন্নি মাদ্রাসার মাওলানা ফাইজুদ্দিন বলেন, বালতি সাধু ইরাকের বাগদাদ শহরের এক পীরের শিষ্য। তাই তাকে নুরা বাগদাদী বলে ডাকতেন অনেকে।

সত্তোর বছর বয়সি হুমায়ুন মাস্টার। এলাকার লোকের কাছে সম্মানীয়। অচিন গাছের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দাদা ডেঙ্গুরি ভূঁইয়া প্রায় ১৩০ বছর বেঁচে ছিলেন। বাবা সোলায়মান ভূঁইয়া বেঁচে ছিলেন ৯০ বছর। তাদের মুখে ছোটকালে শুনেছি এ অচিন গাছের রূপকথার গল্প।’ তিনি বলেন, গাছটি অনেক পুরোনো। নুরা বাগদাদের আগমন না হলে অচিন গাছ ও অচিন দ্বীপের সৃষ্টি হতো না। উদ্ভিদ বিভাগের লোকজনও গাছটির পরিচয় চিহ্নিত করতে পারেননি। ফলে এলাকাবাসী গাছটিকে অচিন গাছ বলেই চেনেন। আর জায়গাটিকে চেনে অচিনতলা হিসেবে।

গাছটি দেখতে আশপাশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। মানত করে। তবে অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে অচিন গাছ ও নুরা বাগদাদীর মাজারটি। কথিত রয়েছে, অচিন বৃক্ষটির ঝরে পড়া পাতাও কেউ কুড়িয়ে নেয় না। বছরে দু-তিনবার পাতা ঝরে। আবার ঝরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন পাতায় পল্লবিত হয়ে ওঠে শাখা-প্রশাখা। গাছের ডাল কিংবা পাতা অকারণে ছিঁড়লে পেটে ব্যথা হয়। তবে মনোবাসনা কিংবা রোগ-বালাইয়ের জন্য কেউ যদি পাতা ছিঁড়ে চিবিয়ে খায়, সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয় না। উল্টো রোগ ভালো হয়ে যায়। বৃক্ষটির পাতা দেখতে অনেকটা তেজপাতার মতো। ফুল হয় না, তবে ছোট আকারের ফল হয়। দেখতে কিশমিশের মতো।

কথা হয় মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গাছটির সম্পর্কে শুনেছি। তবে দেখা হয়নি। যদি সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা আসে তাহলে উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করব।’

উপজেলা বন কর্মকর্তা রিয়াজউদ্দিন আহম্মেদ মৃধা বলেন, ‘শুনেছি এমন একটি গাছ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে গাছটির পরিচয় জানার চেষ্টা করব।’


টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ইসিজি মেশিন হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের আর্থিক সহযোগিতায় ২টি ইসিজি মেশিন ও ৩টি অক্সিজেন পালস মেশিন হস্তান্তর করেছে জিএমপি ভারপ্রাপ্ত কমিশনার। বুধবার হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (ভারপ্রাপ্ত) কমিশনার অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল হাসান।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে জিএমপি (ভারপ্রাপ্ত) কমিশনার জাহিদুল হাসান বলেন, ভালো কাজের কোনো প্যারামিটার হয় না। সমাজের সামর্থবান মানুষ দায়িত্বশীল আচরণ করলে দেশ পরিবর্তন সম্ভব। পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নয় পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডেও সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে। ভবিষ্যতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীদের সুবিধার্তে প্রয়োজনীয় আরও কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খাইরুল কবির রাজিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আফজালুর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মহিউদ্দিন আহমেদ, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সিনিয়র জোনাল ম্যানেজার মনসুর হেলাল, হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. ফারহানা আহমেদ, টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান, ছাত্র প্রতিনিধি ও জাতীয় যুবশক্তি গাজীপুর মহানগর শাখার মুখ্য সংগঠক আকাশ ঘোষ, যুগ্ম সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম আকাশ, এনসিপি নেতা আসাদুজ্জামান দিপুসহ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।


রূপগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ সড়কে গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তি

সিএনজি অটোরিকশাই ভরসা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা

ঢাকা শহরের অতি সন্নিকটে রূপগঞ্জ, অথচ রূপগঞ্জ থেকে ঢাকা শহরে যাতায়াতের নাই কোনো গণপরিবহন। এমনকি জেলা সদরে যেতেও সিএনজি আর অটোই ভরসা। ঢাকা শহরে যাতায়াত করতে অনেকে নৌকা বা ট্রলার ব্যবহার করে থাকেন। মামলা-সংক্রান্ত কাজে আদালতে যেতে হয়, যা নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত। সরাসরি গণপরিবহন না থাকায় রূপগঞ্জের মানুষ অটো বা সিএনজিতে যাতায়াত করতে হয়। রূপগঞ্জ থেকে ঢাকা শহরে অনেকেই চাকরি ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। কিন্তু পরিবহন সংকটের কারণে প্রায় সঠিক সময় গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না।
শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জ। কয়েক হাজার শিল্পকারখানা, পূর্বাচল উপশহরসহ বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের কারণে রূপগঞ্জ হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। তবে জেলার সঙ্গে এই উপজেলায় যোগাযোগের সরাসরি কোনো গণপরিবহন ব্যবস্থা নেই। ফলে দুর্ভোগ নিয়েই প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
নারায়ণগঞ্জ আদালতে কর্মরত নারায়ণ সরকার বলেন, ‘প্রতিদিনই আমাকে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন গাড়ি পরিবর্তন করে আসা-যাওয়া করতে হয়। যদি রূপগঞ্জ থেকে সরাসরি একটি বাস সার্ভিস নারায়ণগঞ্জে চলাচল করত তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো। এখন সময় যেমন বেশি লাগে, তেমনি অতিরিক্ত খরচও হয়।’
ব্যবসায়ী মিজান মিয়া জানান, ‘রূপগঞ্জের মানুষকে শহরে যেতে হলে একাধিক গাড়ি বদল করে যেতে হয়। যে কারণে কর্মজীবী যাত্রী সাধারণকে ভেঙে ভেঙে অথবা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যানবাহন রিজার্ভ নিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে হয়। সরাসরি গণপরিবহন চালু না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক।’
তারাব পৌর এলাকার বাসিন্দা রাহুল পরাজী আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে তার একটি মামলা চলমান রয়েছে। এ কারণে মাসে একাধিকবার তাকে জেলা সদরে যেতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা হলে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে নারায়ণগঞ্জের অফিস আদালতের কাজ করতে পারবে।’
অ্যাডভোকেট আবুল বাশার রুবেল জানান, ‘তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। প্রতিদিনই তাকে সিএনজি রিজার্ভ করে আর না হয় বিভিন্ন গাড়ি বদল করে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টির দিনে ঝামেলা পোহাতে হয় অনেক বেশি। এ বিরম্বনা থেকে মুক্তি পেতে নারায়ণগঞ্জেই বাসা ভাড়া করে থাকেন এখন।’
রূপগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের সরাসরি পরিবহন সেবা চালু হওয়া জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিবহন ব্যবসায়ী ও শুভসংঘ বাস সার্ভিসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘রূপগঞ্জের মানুষের সরকারি সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নানা কাজে, প্রতিনিয়তই নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রূপগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে সরাসরি কোনো গণপরিবহন চালু না থাকায় এ জনপদের বাসিন্দাদের ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুভসংঘ বাস সার্ভিস থেকে ভৈরব রোডে আমাদের বেশ কিছু গাড়ি চলাচল করছে। শুভসংঘ বাস সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভুলতা গাউছিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে।’
রূপগঞ্জের বর্তমান অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, ‘এই উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস চালু করতে হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’


বিমানবন্দরে আগুন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নাশকতার অংশ: আমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমানবন্দরে আগুন লাগার ঘটনাকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নাশকতার অংশ হিসেবে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশে বসে শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের ক্ষতি করা হচ্ছে। সুতরাং, বিমানবন্দরের আগুনের ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৯০-র গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমান বলেন, তার (হাসিনার) প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে- এই ঘটনাসহ সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ওই সময়ই নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচন নিয়েও নানা ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনের পথে বাধা দিতে চাইবে, জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।
স্মরণসভায় আমান সাইফুদ্দিন আহমেদ মনিকে স্মরণ করে বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র ঐক্যের অন্যতম নেতা ছিলেন মনি ভাই। তিনি আদর্শ রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং রাজনীতির বাইরে কোনো চিন্তা করেননি।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব খোকন চন্দ্র দাস। অনুষ্ঠানে ‘৯০-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের’ সাবেক ছাত্রনেতারা, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও ১২-দলীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


বাড়ি ফেরা হলো না সিপিজি সদস্য সিরাজ মিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সিরাজ মিয়া (৬৫) কমিউনিটি পেট্রোলিং বন টহল দলের সদস্য (সিপিজি) নিহত হয়েছেন। নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ডলুছড়া গ্রামের বাসিন্দা।

বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোরে লাউয়াছড়া বন বিটের আওতাধীন জানকিছড়া ক্যাম্পের রাতের ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় দ্রুতগামী গাড়ির চাপায় তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়,কমলগঞ্জ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার ডলুছড়া বন টহল দলের (সিপিজি) একজন সদস্য হিসেবে দীর্ঘ সময় থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মত রাতের ডিউটির দায়িত্ব পালন শেষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ সড়কে পায়ে হেটে মো. সিরাজ মিয়া বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাকে পেছন থেকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগ, কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেন।

এবিষয়ে জানতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ জনক দেববর্মা বলেন, দূর্ঘটনার খবর পেয়ে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সহ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আমরা লাউয়াছড়া সহ-ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য ও বনবিভাগ নিহত সিরাজ মিয়ার পরিবারের পাশে আছি। এসময় তাৎক্ষণিক ভাবে সিরাজ মিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা করা হয়।

বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো মাহফুজুল কবির বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


ভৈরবে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালো পুলিশ সদস্য নাজমুল 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি 

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালো পুলিশ সদস্য নাজমুল (২৮)।

সে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার চরমান্দার কান্দি এলাকার রাজু মিয়ার ছেলে।

টাঙ্গাইল জেলার গোড়াই থানা হাইওয়ে থেকে ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর ভৈরব থানায় যোগ দেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত। তার স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কালিকাপ্রসাদ এলাকায় এই দুর্ঘটনায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব হাইওয়ে থানার এএসআই বিল্লাল হোসেন, নাজমুল, আনিসুর রহমান, শাহ আহসান হাবিবসহ রাত্রীকালীন জরুরী ডিউটি চলাকালীন ভৈরব থানাধীন কালিকা প্রসাদ বাজারের দক্ষিণ পাশে কিশোরগঞ্জ ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব গামী লেনের পাশে দাঁড়িয়ে ঢাকা মেট্রো ড-১২-৫৮১৫ ট্রাকের চালকের সাথে কথা বলার সময় ভৈরবগামী দ্রুত বেপরোয়া গতিতে অজ্ঞাতনামা একটি ট্রাক এসে পুলিশ পিকআপ ভ্যানের ডানপাশে সজরে ধাক্কা দিলে পিকআপ ভ্যানটি বাম পাশে নিচে পড়ে যায়। এসময় গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে পুলিশ সদস্য নাজমুল মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এবিষয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে জরুরি ডিউটি চলাকালীন সময়ে বেপরোয়া একটি অজ্ঞাতনামা একটি ট্রাকের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নাজমুল গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।


উল্টো পথে বাস, চাপা পড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইক চালকের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর প্রতিনিধি  

রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামে এক ইজিবাইক চালক নিহত হয়েছেন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানের সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক মোতালেব হোসেন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাম দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকে আছে। উৎসুক লোকজন, স্কুল শিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছেন। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনা শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাম থেকে ডান দিকের লেনে হাই স্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটো গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।

পাশের আরেক দোকান মালিক জিয়াউর প্রামনিক বলেন, প্রায়ই দেখি উল্টো পাশ দিয়ে গাড়ি এই স্ট্যান্ডে ওভারটেক করে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।

তারাগঞ্জ হাইওয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অটোরিকশা চালক মোতালেব হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।


হিজলার মেঘনা নদীতে নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বিশেষ অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হিজলা (বরিশাল) সংবাদদাতা

বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বিশেষ আভিযানিক টিম কর্তৃক ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে।

গত সোমবার দিনব্যাপী নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বিশেষ টিম ও নৌপুলিশ বরিশাল অঞ্চল যৌথভাবে হিজলার মেঘনা নদীতে বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। নৌপুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ানের সার্বিক নির্দেশনায় ও নৌপুলিশের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান পিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে সরকার ঘোষিত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫ উপলক্ষে এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে ৮ লাখ ২৫ হাজার মিটার অবৈধ জাল ও ১৮০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ এবং ৭টি নৌকা উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া ২৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করাসহ ৩ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে নিয়মিত মামলা রুজু করে প্রয়োজনীয় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অভিযানে জব্দকৃত জাল ধ্বংস করা হয় এবং মাছ স্থানীয় গরিব, অসহায় ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

ওই অভিযানে নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফাইনান্স) মাসুমা আক্তার, নৌপুলিশ বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার এসএম নাজমুল হক বিপিএম (বার), পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল পিপিএম (বার), মো. ইমরান হোসেন মোল্লা পিপিএম, সহকারী পুলিশ সুপার (বরিশাল/ পটুয়াখালী জোন) ও সোহেল মিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার (প্রকিউরমেন্ট)-সহ নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত অফিসার ও ফোর্স অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ আভিযানিক টিমের পাশাপাশি ওইদিন নৌপুলিশের বরিশাল অঞ্চলের হিজলা নৌপুলিশ ফাঁড়ি, কালীগঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়ি ও অস্থায়ী ক্যাম্পসমূহ তাদের চলমান অভিযান জোরদারভাবে অব্যাহত রাখে। অপারেশনাল কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি আদেশ অমান্য করে অবৈধ কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন জাল দিয়ে মা ইলিশ ধরা জেলেদের কার্যক্রম সনাক্ত করার জন্য হিজলা এলাকাধীন মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা চলাকালে করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে লিফলেট বিতরণ ও জনসচেতনামূলক প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ নৌপুলিশ। এ লক্ষ্যে নৌপুলিশের বিভিন্ন ইউনিট অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে দিনে-রাতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। উল্লেখ্য গত ৪ অক্টোবর থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে এবং আজ ২২ অক্টোবর (বুধবার) পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।


চান্দিনায় চেষ্টা নারী সংগঠনের উদ্যোগে সেলাই মেশিন বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চান্দিনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা

কুমিল্লার চান্দিনায় মানবিক সংগঠন ‘চেষ্টা’-এর উদ্যোগে দুঃস্থ নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন ও উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। গত সোমবার চান্দিনা পৌরসভার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে চারজন দুঃস্থ নারী ও একজন বীর কন্যার হাতে মোট পাঁচটি সেলাই মেশিন এবং বিভিন্ন উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। আয়োজনে ছিল ‘চেষ্টা’ সংগঠন এবং সহযোগিতায় ‘চান্দিনা আল রাজি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার’। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চান্দিনা উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফয়সাল আল নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন চেষ্টা সংগঠন এর সভাপতি লায়লা নাজনীন হারুন ও চান্দিনা আল রাজি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের চেয়ারম্যান আল আমিন।

ঢাকা থেকে আগত ‘চেষ্টা’ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক গুলসান নাসরীন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ শারমিনা খানম, সাংগঠনিক সম্পাদক কানিজ মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক সাকেরা খান এবং সদস্যরা দিলরুবা মাহমুদ রুবি, সাহনাজ মান্নান, মনোয়ারা তাহির ও আইভী মামুন। সভায় অতিথিরা বলেন, ‘চেষ্টা’ একটি অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, সংগঠনটি সুদীর্ঘ ১৫ বছর থেকে, মানবতার সেবায় নিয়োজিত। এই সংগঠনটি ২০১৩ সালে নারী ও শিশু অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত। সংগঠনটি সমাজে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর এবং ৭১ এর বীর কন্যাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

সভাপতি লায়লা নাজনীন হারুন, ‘চেষ্টার’ কার্যক্রম অতিথী ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেন।

সেক্রেটারি গুলসান নাসরীন চৌধুরী, মানবতার পক্ষে ‘চেষ্টা’ সংগঠন কীভাবে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছে, সে বিষয়ে উপস্থিত সন্মানিত অতিথিদেরকে অবহিত করেন।

অতপর, সিমা রানী সাহা, ফারজানা বেগম, রোকসানা ইসলাম, লুৎফা বেগমসহ ৫ জন অবহেলিত মহিলাকে ৫ টি সেলাই মেশিন, শাড়ি ও উপহারগুলো তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। চেষ্টার সভাপতি সমাজের বিত্তবানদের কাছে এই মহৎ কাজে সহযোগিতা কামনা করেন।


মাদারীপুরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী দীপ্তি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইজিবাইক চালক মো. সাজ্জাদ হোসেন খানকে (৫০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও আসামিকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ হোসেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার সিরাজুল ইসলাম খানের ছেলে।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবীর।

তিনি জানান, দীর্ঘ ছয় বছর বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।

মামলা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের বাবা মজিবর ফকির মরদেহটি তার মেয়ের বলে শনাক্ত করেন। ঘটনার পর মজিবর ফকির মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় তদন্তে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৮। তদন্তে বেরিয়ে আসে ইজিবাইকচালক সাজ্জাদ হোসেন কিশোরী দীপ্তিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, সাজ্জাদ হোসেন পূর্বেও শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। ২০১১ সালে মুক্তি পান। ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির দিনে দীপ্তি তার ইজিবাইকে ওঠেন চরমুগরিয়া যাওয়ার উদ্দেশে। অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় সাজ্জাদ জোর করে দীপ্তিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেন। পরে মরদেহ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে কয়েকটি ইটসহ পুকুরে ফেলে দেন। পরে ১৩ জুলাই তার মরদেহ এলাকাবাসী দেখতে পেলে পুলিশে খবর দেয়। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও দ্রুত বিচারের দাবিতে ফেটে পড়ে নিহতের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী।

নিহত দীপ্তির বাবা মজিবর ফকির বলেন, আমার মেয়ের হত্যাকারীর আজ (মঙ্গলবার) ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি।

মামলার পিপি শরীফ সাইফুল কবীর বলেন, মামলায় একমাত্র আসামি সাজ্জাদ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দশ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস একটি হত্যা ও ধর্ষণ মামলা। আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।


দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ২০ মাসে প্রাণ গেছে ৩০ জনের

৭২ লেভেল ক্রসিংয়ের ৫৬টিতে ব্যারিয়ার ও গেটম্যান নেই
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আহসান হাবিবুল আলম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন চালু হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। আধুনিক এ রেলপথ ঘিরে উন্নয়ন, যোগাযোগ আর পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছিল। নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছিল পর্যটন নগরী কক্সবাজারের মানুষের জন্য। তবে সময়ের ব্যবধানে এ সম্ভাবনার রেলপথই যেন এখন এক ‘মরণফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের গত আগস্ট পর্যন্ত ২০ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন।

এ রেলপথের ৭২টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৫৬টিতে কোনো ব্যারিয়ার ও গেটম্যান নেই। অরক্ষিত এসব ক্রসিংয়ের দুপাশে পথচারী ও চালকদের জন্য সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড বসিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গেট ও গেটম্যান রয়েছে মাত্র ১৬টিতে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইসলামাবাদ-রামু সেকশনে ১৭টি ক্রসিংয়ের মধ্যে গেটম্যান রয়েছে মাত্র একটিতে।

তথ্য মতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২০ মাসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে অন্তত ৩০টি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। শুধু গত ১ বছরে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এছাড়া রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইনে মোট ৯টি সেকশন রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ইসলামাবাদ-রামু সেকশনে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৭টি লেভেল ক্রসিং। কিন্তু গেট ও গেটম্যান রয়েছে মাত্র একটিতে। বাকি ১৬টিতে কোনো ব্যারিয়ার ও গেটম্যান নেই ।

রামু-কক্সবাজার সেকশনে ৮টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে মাত্র একটিতে গেটম্যান আছে। ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুলাহাজারা-ইসলামাবাদ সেকশনের ১২টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে মাত্র একটিতে গেটম্যান আছে। ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ চকরিয়া-ডুলাহাজারা সেকশনে ৯টি ক্রসিংয়ের মধ্যে ৩টিতে গেটম্যান আছে।

হারবাং-চকরিয়া সেকশনের ৪টির মধ্যে ২টিতে, লোহাগাড়া-হারবাং সেকশনের ৫টির মধ্যে ১টিতে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সেকশনের ৮টির মধ্যে ৩টিতে, দোহাজারী-সাতকানিয়া সেকশনের ৮টির মধ্যে ৪টিতে এবং হাসিমপুর-দোহাজারী সেকশনের ১টিতেও গেটম্যান নেই। এগুলো উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে।

রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী আবু রাফি মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হোছাইন বলেন, দোহাজারী চট্টগ্রাম রেলপথের লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে কিছু ম্যান-গেট ও কিছু আনম্যান-গেট আছে। যানবাহন চলাচলের পরিমাণ কম থাকায় গেটম্যান থাকে না। যানবাহন চলাচল বাড়লে সেগুলো বিবেচনা করা হবে।

রামুর স্থানীয় বাসিন্দারা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপককে চিঠি দিয়ে ব্যারিয়ারার ও সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সেই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

হারবাং এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, রেললাইনটি আমাদের গ্রামের মাঝ দিয়ে গেছে। ট্রেন কাছাকাছি না এলে শব্দ শোনা যায় না। ফলে আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। শুধু মানুষ নয়, রেললাইনে হাতির মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একাধিক হাতি মারা গেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথে ট্রেনের হুইসেল শুনে তাড়াহুড়ো করে মানুষ সরে যান। অরক্ষিত অবস্থার কারণে রেলপথটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালেও যেতে হয় রেলপথ অতিক্রম করে। রেলপথটির কিছু স্থানে বাঁক থাকায় দূর থেকে ট্রেন আসছে কি না, তা দেখা যায় না।

দুর্ঘটনা এড়াতে ক্রসিংগুলোতে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ভবিষ্যতে এই রেলপথে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে, ফলে ঝুঁকিও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমাম বলেন, ক্রসিংয়ের যানবাহন চলাচলের সংখ্যার বিষয়ে সঠিকভাবে জরিপ করা হয়েছে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তারা ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, তত্ত্বাবধান হয়েছে বলে মনে হয় না।

তিনি বলেন, বেশি যানবাহন চলাচলকারী ব্যস্ত লেভেল ক্রসিংয়ে অবশ্যই প্রতিবন্ধকতা দিতে হবে, সার্বক্ষণিক গেটম্যান রাখতে হবে। দূর থেকে ট্রেন দেখা যায় না, এমন বাঁকও রয়েছে।

রেলপথে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেল ট্র্যাকে এটি করা সহজ। দুপাশে সিগন্যাল বাতি থাকবে, যখন ট্রেন যাবে তখন ঘণ্টা বাজবে ও লাল বাতি জ্বলবে। প্রকল্পের মধ্যে এটি কেন যুক্ত করা হয়নি, তা বোধগম্য নয়।

দোহাজারী-কক্সবাজাররেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীণ বলেন, ‘প্রকল্পে আরও বেশি ক্রসিং ছিল। ইতোমধ্যে ৪৬টি ক্রসিং আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে আন্ডারপাসে রূপান্তর করেছি। রেলের নির্ধারিত ম্যানুয়াল অনুসারে এবং জিআইবিআরের অনুমোদনক্রমে ক্রসিংয়ের গেটম্যান ও ব্যারিয়ার নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যা হয় যখন এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর), পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ অনেক সময় রাস্তা প্রশস্ত বা পাকা করে, কিন্তু আমাদের কিছু জানায় না। তবুও আমরা দুর্ঘটনার পর প্রকৌশলীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছি। কোন ক্রসিংয়ে গেটম্যান ও ব্যারিয়ার লাগবে, তা বিবেচনা করে তারা সুপারিশ করবেন। এটি জিআইবিআরে পাঠানো হবে।’

সিগন্যাল সিস্টেমের বিষয়ে তিনি বলেন, স্টেশনকে কেন্দ্রে করে কিছু সিগন্যাল আছে। তবে এটি ভালো পরামর্শ। সিগন্যাল ও ঘণ্টা দেয়া গেলে মানুষ দূর থেকে বুঝতে পারবেন, ট্রেন আসছে। এটি বিবেচনা করা হবে।

১১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৩ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথে প্রথমে এক জোড়া ট্রেন চললেও এখন চলছে চার জোড়া ট্রেন। প্রকল্পটি সমাপ্ত না হলেও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।


সার্টিফিকেট নয়, দক্ষ মানবসম্পদ গড়াই বাউবির লক্ষ্য: উপাচার্য

বাউবির ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৫ মঙ্গলবার গাজীপুর ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী নানা বর্ণাঢ্য কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা ও বাউবি পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। তার সঙ্গে প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও রঙিন বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

পতাকা উত্তোলন শেষে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত স্মারক ‘জুলাই জাগরণীতে’ শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

এরপর কেন্দ্রীয় সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়: দ্যুতিময় এক বছর’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। উপাচার্য তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. এম. শমসের আলী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, ‘বাউবি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো- অবহেলিত ও কর্মজীবী জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া। এখন আমরা সেই লক্ষ্য পূরণের পথে আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি।’

স্বাগত বক্তব্যে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস ও জনবলের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে বাউবির কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে। পরীক্ষায় নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ায় একাডেমিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. খালেকুজ্জামান খান।

একইসঙ্গে দেশের সকল আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রেও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়।


দাবি মোদের একটাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খোরশেদ আলম, নোয়াখালী

বিভাগ ঘোষণার দাবিতে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী জেলার বাসিন্দারা সভা সমাবেশ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। বর্তমানে এ ইস্যুতে উত্তাল নোয়াখালী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী ও সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সোনাইমুড়ী বাইপাস চত্বরে প্রায় ১ ঘণ্টার ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচি পালন উপলক্ষে সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্কুল মাদ্রাসা থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সোনাইমুড়ী বাইপাস চত্বরে জড়ো হন। এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘দাবি মোদের একটাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই’। এতে তিন দিকের সড়কে বেশ কিছুক্ষণ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ভোগান্তিতে পড়ে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা।

এ সময় কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘দাবি মোদের একটাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই’। এই দাবি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। দাবি আদায় না মানলে আরও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাজনৈতিক নেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির প্রোফাইল সরব রয়েছে বিভাগের দাবিতে।

নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। নোয়াখালী জেলার মোট আয়তন ৪২০২.৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২০০৭’ থেকে ২৩০০৮’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০০৫৩’ থেকে ৯১০২৭’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে নোয়াখালী জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৭১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৩৬ কিলোমিটার। এ জেলার পূর্বে চট্টগ্রাম জেলা ও ফেনী জেলা, উত্তরে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে লক্ষ্মীপুর জেলা ও ভোলা জেলা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।


খননের ৩ বছরেই ফের ভরাট জয়পুরহাটের চিরি নদী

নদী খননের সুফল পাচ্ছেন না দুইপাড়ের মানুষরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

খননের ৩ বছর না পেরোতেই আবারও ভরাট হয়ে যাচ্ছে জয়পুরহাটের চিরি নদী। প্রায় ২২ কিলোমিটার এ নদীর কোথাও কোথাও ভরে গেছে কচুরিপানায়। নদীর কোনো কোনো স্থানে পানি থাকলেও আবার অনেক স্থানে পানি নেই। এতে নদী খননের পর যে সুফল পাওয়ার আশা ছিল তা পাচ্ছেন না নদীর দুইপাড়ের মানুষরা। এতে উপকারের চেয়ে অপকারই হচ্ছে বেশি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নদী আন্দোলনের নেতারা জানান, অপরিকল্পিত খননে বালু ও মাটি আবারও নদীতে মিশে যাওয়া, বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আবারও ভরাট হচ্ছে এই নদী। তাই নদীর নাব্য টিকিয়ে রাখতে শুধু খনন করলেই হবে না, প্রয়োজন এর রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।

জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে ৪টি নদী। এর মধ্যে আক্কেলপুর থেকে সদর পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার রয়েছে চিরি নদী। এটি শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রায় ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি নদীর খননকাজ শুরু হয়, যা শেষ হয় ২০২২ সালের জুন মাসে। নদী খননের প্রকল্পের উদ্দেশ্যে ছিল জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সারা বছর সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা, পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে আনা, পুনঃখননের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করা, নৌচলাচলের মাধ্যমে সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করা, পরিবেশ ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। কিন্তু চিরি নদীতে এসব বেশিরভাগ উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নদী খননের ফলে সারা বছর পানি থাকার আশা থাকলেও শুকনো মৌসুমে কোথাও পানি থাকছে, কোথাও থাকছে না। নদী খনন করার সময় বাঁধের ওপর রাখা মাটি আবারও নদীতে মিশে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও নদী ভরে আছে কচুরিপানায়। কোথাও পানি থাকলেও ময়লার কারণে হয়ে পড়েছে ব্যবহার অযোগ্য। এতে দিন দিন নদীটি নাব্য হারিয়ে ফেলছে। নদী রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।

সদর উপজেলার খঞ্জনপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, ‘নদী খনন করার আগে আমাদের বাড়ির কাছে চিরি নদীতে কিছু পানি থাকত। আমরা প্রতিদিনের কাজে পানি ব্যবহার করতাম। কিন্তু খননের পর আর পানি থাকছে না। নদী সংস্কার করেই আমাদের অসুবিধা হয়ে গেছে। পানি পাচ্ছি না, আবার কচুরিপানায় ভরে গেছে।’

একই এলাকার রমজান আলী বলেন, ‘ছোটবেলায় নদীতে অনেক মাছ ধরা হতো। মনে হয়েছিল নদী খনন করার পর নাব্য ফিরে আসবে। কিন্তু এখন তা দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি হলেও বেশিরভাগ জায়গায় পানি নেই। আগে মাছ ধরা হতো। এখন পানি না থাকার কারণে মাছ ধরা যায় না। গোসল করা যায় না। নদী আমাদের কোনো উপকারে আসছে না।’

সদরের কুঠিবাড়ী ব্রিজ এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করা হলো, পানি থাকবে বলে। কিন্তু নদীতে কোনো পানি নেই। উপকারের জন্য খনন করা হলো এখন উপকারের চেয়ে অপকারই হচ্ছে বেশি।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলার সমন্বয়ক লুৎফুল্লাহিল কবির আরমান বলেন, ‘চিরি নদী খনন করা হয়েছে পুরোপুরি অপরিকল্পিতভাবে। নদী খননের সময় মাটি ও বালু নদীর পাড়ের ওপর রাখা হয়েছিল। পরে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে আবার নদীতে পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কোনো সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। জনগণের কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করে কোনো লাভই হয়নি। নদী রক্ষাসহ পরিবেশ রক্ষা করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আমাদের সবার সচেতন হতে হবে।’

জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘১২০ কোটি ৬৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে জয়পুরহাটের ৪টি নদীর খননকাজ করা হয়েছে। এ থেকে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। নদীগুলো খনন করায় বন্যার ঝুঁকি একেবারে কমে গেছে। তবে নদীগুলো বড় কোনো নদীর সঙ্গে সংযুক্ত না থাকার কারণে পানি কম থাকে। আর চিরি নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে বা কচুরিপানা জমে গেছে এ বিষয়ে আমাদের কেউ জানায়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে কচুরিপানা সরানো বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা হবে।’


banner close