মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর পাঁচ বছর পার হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত দুই বার তাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। এদিকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার স্থানীয় জনগোষ্ঠী দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে নানা কারণে। রোহিঙ্গারা যেমন নিজ দেশে ফিরতে চায়, একইভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠীও চায়, দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হোক।
এই অবস্থায় ঢাকায় গত বৃহস্পতিবার চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের জান্তাসরকার আগ্রহী। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রোহিঙ্গাদের মধ্যে যেমন নিজ দেশে ফেরার আশা আবার জেগেছে, একইভাবে দিন গুনতে শুরু করেছে কক্সবাজার ও বান্দরবানের স্থানীয় জনগোষ্ঠী।
শরণার্থীবিষয়ক কমিশন বলছে, ৮ লাখেরও বেশি তালিকা থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৬০ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে নিজ দেশের বাসিন্দা হিসেবে বাছাই করছে মিয়ানমার। ক্যাম্পগুলোতে তাদের শনাক্তও করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষ। নিবন্ধনও হয়েছে। তারা স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী। তবে এই প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে, তা এখনো নিশ্চিত না।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রুর শূন্যরেখায় পরিবার নিয়ে অবস্থানরত রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হলে স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরবে। তবে মিয়ানমারের যে এলাকায় রোহিঙ্গাদের নেয়ার কথা বলা হচ্ছে, সে সব এলাকায় এখন চলছে যুদ্ধপরিস্থিতি। বিদ্রোহীদের সঙ্গে যে সংঘাত পরিস্থিতি, তাতে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। এমনও হতে পারে যেকোনো হামলার দায় চাপিয়ে আবারও বিতাড়িত করবে।’
কয়েক বছর আগেও মিয়ানমারের দোভাষী হয়ে বাংলাদেশে আসা-যাওয়া ছিল দিল মোহাম্মদের। সীমান্তে বিজিপি-বিজিবির বৈঠকগুলোয় বড় ভূমিকা থাকত তার। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দিল মোহাম্মদকেও বিতাড়িত হতে হয়। সেই থেকে তিনি তুমব্রুর শূন্যরেখায় পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন। এই ক্যাম্পের প্রতিনিধিত্বও করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি মিললে যেতে আগ্রহী বেশির ভাগ রোহিঙ্গা। নিরাপত্তার বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর জোরালো চাপ সৃষ্টি করে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নতুন নেতা মাস্টার মোহাম্মদ জুবাইয়ের। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের দায়িত্ব এখন তার কাঁধে। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, দিনের বেলাতেও তাদের জীবনটা অন্ধকারের মতোই। ক্যাম্প জীবন থেকে তারা মুক্তি চান। মিয়ানমার তাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। তার পরও একটু শান্তির আশ্বাস পেলেই ফিরবেন নিজ দেশে।
জুবাইয়ের আরও বলেন, একজন দুজন করে নয়, পুরো পরিবার নিয়ে স্বদেশে ফিরতে চান তারা। যেখানে নাগরিক হিসেবে সব অধিকার থাকবে। থাকবে না কোনো বাধা বা নির্যাতন। সেটা মিয়ানমারকে অক্ষরে অক্ষরে লিখিত দিতে হবে। হঠাৎ করে কী উদ্দেশ্যে তারা নিতে এত আগ্রহ দেখাল তা নিয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কুতুপালং ক্যাম্প-২ ইস্টের রোহিঙ্গা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমাহীন নির্যাতন ও জুলুমের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি। বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছি পাঁচ বছরের বেশি হবে। এটা তো আমাদের দেশ নয়। আমরা তো অবশ্যই আমাদের দেশে ফিরে যাব।’ আরেক রোহিঙ্গা মৌলভি আজিজ বলেন, ‘জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা আমাদের অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবে বলেছিল। পাঁচ বছর পার হয়ে যাচ্ছে, নিজ দেশ মিয়ানমারে পাঠানোর কোনো চেষ্টা কেউ করছে না। সবাই ভুলে গেছে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীও
রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশের উখিয়া- টেকনাফের জনগোষ্ঠীও এখন চায়, তারা নিজ দেশে ফিরুক। উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের কুতুপালং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত যাওয়া খুবই জরুরি। নয়তো বড় বিপদে পড়বে এই অঞ্চল। পাহাড়-নদী দূষণের শিকার হচ্ছে, নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।’
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বর্তমানে টেকনাফের ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গার অবস্থান। তাদের কাছে এখন স্থানীয়রা সংখ্যালঘু হয়ে গেছে। এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বেড়েছে নানা অপরাধ। দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রয়োজন। না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে উঠবে। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীর কণ্ঠেও একই কথা। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হোক। না হয় উখিয়া-টেকনাফের মানুষ চরম কষ্টে পড়বে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমি সাধারণ একজন মানুষ। ন্যায়বিচারের দাবি যার, সে-ই ন্যায়ের পক্ষে ভাবে। যদি সৎ নেতৃত্ব আসে, তবে পাঁচ বছরেই দেশ বদলে যাবে। আল্লাহ যেনো দেশকে এমন নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন, যিনি ন্যায়ের উপর অটল থাকবেন।’
আজ রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়ত আমির বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনো রাজতন্ত্র নয়, অথচ গত ১৫ বছরে যা হয়েছে, তা রাজতন্ত্রেও হয় না।’
তিনি বলেন, ‘সাড়ে ১৬ বছর আমাকে আপনাদের সামনে আসতে দেওয়া হয়নি। এ সময়ের মধ্যে অনেকেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের সামনে উপস্থিত হতে পারলে ভালো হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে তিনবার দীর্ঘ সময় জেলে রাখা হয়েছে। গুম করা হয়েছে অনেককে। সিলেটের ইলিয়াস আলী আজও নিখোঁজ। সে বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে- তার পরিবারও জানে না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে। ভয় আর নিপীড়নের মধ্যে মানুষ কথা বলার সাহস হারিয়েছে। অথচ সেই সময়ও বলা হতো, দেশ উন্নয়নের রোল মডেল।’
৩০০ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমি সারা দেশেই নির্বাচন করবো। যারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করবে, আমি তাদের সঙ্গেই থাকবো।’
উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, ঢাকার পল্টন থানা জামায়াত আমির শাহীন আহমেদ খান, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, শ্রীপুর জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শামসুল হক, প্রিন্সিপাল আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক মনির উদ্দিন চৌধুরী, কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির দপ্তর সম্পাদক এনামুল ইসলাম প্রমুখ।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়ায় বেনাপোল চেকপোষ্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাচ্ছিদের। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরনের (Sub variant), কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমুহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইসহ শরীরের তাপমাত্রা মাফতে দেখা গেছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, দশদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমা রানি বলেন, একমাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরন (Sub variant) সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বৈশাখী সিনেমা হলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনের সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রচারে বিঘ্ন ঘটায় উত্তেজিত দর্শকরা ভাঙচুর চালিয়েছেন।
গতকাল ঈদের দিন শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি দেখতে শুরু থেকেই দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ২৫০ আসনবিশিষ্ট বৈশাখী সিনেমা হলে রাতের শো চলাকালীন সময়ে হঠাৎ কারিগরি সমস্যার কারণে সিনেমা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় দর্শকরা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ার, ফ্যান ও টিকিট কাউন্টারে ভাঙচুর চালান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিনেমা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেও কোনো সুরাহা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি। পরে টিকিটের টাকা ফেরতের দাবি জানাই, তখন হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।’
বৈশাখী হলের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাতের শো চলাকালে সার্ভারজনিত সমস্যা দেখা দেয়, যা প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী ছিল। তখন কিছু দর্শক উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর চালান। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
এদিকে এ বিষয়ে কালুখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। হল মালিকও যোগাযোগ করেননি।’
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত আলোচিত ছবি রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তান্ডব’-এ অভিনয় করেছেন মেগাস্টার শাকিব খান, সাবিলা নূরসহ আরও অনেকে।
ঢাকা–বগুড়া মহাসড়কে ট্রাক উল্টে এক গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন।
শনিবার (৭ জুন) বিকালে মহাসড়কের বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরের রাজাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজলুর রহমান (৪৫) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাস্থলে একটি গরু বহনকারী মিনি ট্রাক পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং ট্রাকটি মহাসড়কের ওপর উল্টে যায়। এতে ফজলুর রহমান গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ দুর্ঘটনায় গরু ব্যবসায়ীর সহকারীসহ অন্তত আরও ১৫ জন আহত হন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি গুরুতর আটজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ফেরি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজের সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শনিবার ভোরে উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে অটোরিকশাটি মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টার দিকে নদী থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। অটোরিকশার ভেতর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৃত দুই নারী হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার রসুলাবাদ এলাকার মোসাদ্দেক হোসেনের স্ত্রী খালেদা বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে সাগর হোসেনের স্ত্রী ফারজানা বেগম (১৯)।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ফেরি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজের সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শনিবার ভোরে উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে অটোরিকশাটি মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টার দিকে নদী থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। অটোরিকশার ভেতর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৃত দুই নারী হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার রসুলাবাদ এলাকার মোসাদ্দেক হোসেনের স্ত্রী খালেদা বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে সাগর হোসেনের স্ত্রী ফারজানা বেগম (১৯)।
কোরবানির পশু জবাই করার পর তা তিন ভাগের একভাগ গোশত জমা রাখা হয়। আর এ গোশত জমা রাখাকেই বলা হয় 'পঞ্চায়েত'। কালক্রমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পঞ্চায়েত প্রথা হারিয়ে গেলেও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বৈলাজান গ্রামে আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এলাকাবাসী। বংশপরম্পরায় এই সামাজিক ঐতিহ্য ধরে রেখে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছেন তারা। এবার ঈদ উল আজহা উপলক্ষে দেশের অন্যতম এ কোরবানির মাঠে ১৫৩টি খাসি ও ৭৬টি গরু কোরবানী করা হয়েছে। কোরবানির মাংসের সামাজিক বন্টন করা হয়েছে ১৬শত ২০টি। কেউ কেউ ঐতিহ্যবাহী কোরবানির মাঠকে দেশের বৃহত্তম কোরবানির মাঠ বলে বলেও দাবী করেন ।
স্থানীয়রা বলছেন, বৈলাজান গ্রামের কোরবানির মাঠটি পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও ঐক্যের প্রতীক। সম্প্রীতি ধরে রাখতে দুটি ঈদগাহ ও সাতটি মসজিদ সমাজ নিয়ে এ কোরবানি মাঠ গঠিত। এ কোরবানির সমাজে এ বছর ১৫৩টি খাসি ও ৭৬টি গরুসহ ২২৯ টি পশু কোরবানি করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৈলাজান কোরবানির মাঠে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় পশু জবাই, গোশত প্রসেসিংয়ের কাজ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে জমাকৃত তিনের একাংশ গোশত কোরবানি সমাজের ১৬২০টি খানার মধ্যে তা সমহারে বন্টন করে যার যার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ উপলক্ষে মাঠে বিরাজ করে আনন্দ ঘন পরিবেশ। মাঠের এক পাশে বসে দোকান। সেখানে ছোট ছেলে মেয়েরা আনন্দ উল্লাস করে থাকে।
পঞ্চায়েত সভাপতির দায়িত্ব থাকা ইব্রাহিম মাস্টার বলেন, আমাদের এ কোরবানির মাঠ কবে থেকে শুরু হয়েছে তা আমরা কেউই বলতে পারব না। আমাদের পূর্বপুরুষরা এই মাঠে কুরবানি করেছেন। আমার দাদা করেছে আমার বাবা করেছে আমরাও কোরবানি করছি।
স্থানীয় হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বলেন, এই কোরবানির মাঠ আমাদের ঐতিহ্য। এটি আমাদের ভাতৃত্ববোধ ও ঐক্যের বন্ধনকে সুদৃড় করেছে। যুগযুগ ধরে এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা সকলেই বদ্ধপরিকর।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২ জন।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পশ্চিম তালদিঘি ফকির বাড়ি ও গাছতলা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
পশ্চিম তালদিঘি এলাকায় নিহতরা হলেন- নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সানারপাড় গ্রামের মো. পারভেজ মিয়া (৩৫), তার ছেলে মো. হাসান মিয়া (৮)। এদিকে, গাছতলা এলাকায় নিহতরা হলেন ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার পিঠাসুটা গ্রামের মো. মন্নাছ মিয়ার ছেলে মো. শরীফ মিয়া (২৫) ও একই উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান হবি (৪৫)।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. টিপু সুলতান জানান, ঈদ উদযাপন করতে নারায়ণগঞ্জ থেকে শেরপুরের হালুয়াঘাটে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন পারভেজ মিয়া (৩৫)। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। যাত্রীবাহী একটি বাসে তারা ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম তালদিঘি এলাকায় পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি মসজিদে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পারভেজ ও তার ৮ বছর বয়সী ছেলে হাসান মারা যান। আহত হন আরও অন্তত ১২ জন, যাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে এবং নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
একই সময়ে কাছাকাছি এলাকায়—উপজেলার গাছতলা এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে আরও দুইজন নিহত হন। নিহতরা হলেন, পিঠাসুটা গ্রামের শরীফ মিয়া (২৫) এবং সাধুপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হবি (৪৫)।
শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নান্নু খান জানান, সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি ময়মনসিংহের দিকে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালক শরীফ এবং যাত্রী হাবিবুর নিহত হন।
বাসটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। নিহতদের মরদেহ পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত কার্যক্রম চলছে।
গত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। তবে আগের দিনের চেয়ে বৃষ্টি কিছুটা কমে আসে গতকাল। আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। সেই দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, এমন প্রশ্ন অনেকের। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, ঈদের দিন দেশের অন্তত তিন বিভাগের কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। বাকি বিভাগগুলো একেবারে বৃষ্টিহীন না–ও হতে পারে। তবে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মৌসুমি বায়ু এখন সক্রিয়। তবে এর প্রভাব কমে এসেছে। শুক্রবার (আজ), শনিবার ঈদের দিন এবং তার পরের দিন বৃষ্টি অপেক্ষাকৃত কমে আসতে পারে।
চলতি জুন মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি চলছে। আসলে গত মে মাসের শেষের দিক থেকেই এ বৃষ্টির শুরু। শেষ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে দেখা দেয় গভীর নিম্নচাপ। এর প্রভাবে দেশজুড়ে বৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ২৪ মে দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে। নির্ধারিত সময়ের অন্তত এক সপ্তাহ আগেই এবার আগমন ঘটে দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরানো এ বায়ুর। এর পর থেকে বৃষ্টি কমবেশি চলছে। তবে আজ শুক্রবার থেকে বৃষ্টি কমে আসতে পারে বলে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন।
বজলুর রশীদ বলেন, ঈদের দিনও অপেক্ষাকৃত শুকনো থাকবে। তবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি হবে না। রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা অনেকটাই কম। রাজধানীসহ ঢাকা বিভাগে সামান্য কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। রাজধানীতে বৃষ্টি হলেও এক পশলা হতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জে—২৭ মিলিমিটার। আগের দিন দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি ছিল ৫৫ মিলিমিটার। এটা হয়েছিল কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। গতকাল রাজধানীতে এক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
থেমে থেমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কিন্তু খুব কমছে না। বরং ভ্যাপসা গরম পড়ছে বৃষ্টির পরপরই। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় এমন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ঈদের দিনও গরম ও ভ্যাপসা ভাবটা থাকতে পারে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তবে ঈদের পর সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
ঈদযাত্রার শেষ দিনেও ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছে উত্তরবঙ্গের ঘরমুখো মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী যাত্রীরা। শত কষ্ট উপেক্ষা করেও বাসের ছাদে ও খোলা ট্রাক-পিকআপে করে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন সবাই।
আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মহাসড়কের সেতু এলাকা থেকে করটিয়া করাতিপাড়া বাইপাস পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, সেতুর উপর গাড়ি বিকল হওযাসহ বিভিন্ন কারণে বুধবার (৪ জুন) ভোর ৪টা থেকে শুরু হওয়া এই যানজট শুক্রবার দুপুর পর্যন্তও অব্যহত রয়েছে।
এলেঙ্গা বাস স্টেশন, রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন সড়কের লোকাল বাস, লেগুনায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। মহাসড়কে বাসের চেয়ে ট্রাক ও পিকআপ বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। গণপরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক-পিকআপ ও বাসের ছাদে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
পুলিশ, চালক ও যাত্রীরা জানান, দুই ঘণ্টার রাস্তা পার হতে সময় লাগছে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা। মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন বিকল হওয়া ও দুর্ঘটনার ফলে এই ভোগান্তি। অন্যদিকে যমুনা সেতুর ধারণক্ষমতা কম থাকায় স্বাভাবিকভাবে গাড়ি পারাপার করতে পারছে না। ফলে উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী গাড়িগুলো ভূঞাপুর দিয়ে ঘুরিয়ে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরীফ গণমাধ্যমকে বলেন, মহাসড়কে একাধিক বাস বিকল হয়েছে। সেনাবাহিনী-পুলিশ যৌথভাবে যানজট নিরসনে কাজ করছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় সংঘটিত দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া, এ ঘটনায় ৪ জন রেল কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
বরখাস্ত হওয়া চার রেলকর্মী হলেন— পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকো মাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকো মাস্টার আমিন উল্লাহ, এবং অস্থায়ী গেট কিপার (টিএলআর) মাহবুব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে ওই দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও পাহাড়তলী, চট্টগ্রামের ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে ঢাকা অভিমুখী একটি ট্রেন সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে একটি শিশুসহ তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুতে প্রবেশ করামাত্র অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এ ছাড়াও মোটরসাইকেলস আরও কয়েকটি ছিল যানবাহনে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।
সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ঢাকামুখী লেনে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যমুনা সেতু পশ্চিমপাড় থেকে সায়দাবাদ পর্যন্ত পুরোপুরি অচলাবস্থায় রয়েছে ঢাকামুখী লেন। যাত্রীদের সুবিধা ও উত্তরবঙ্গমুখী গাড়ির গতি ঠিক রাখতে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই লেনের টোল আদায়। ফলে সেতু এলাকা ও সংযোগ মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে চরম অচলাবস্থা।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে এ যানজটের সৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়ক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকামুখী লেনে ট্রাক, বাস ও প্রাইভেট কারগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। যানবাহনগুলো প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে, তবে উত্তরবঙ্গমুখী লেনে রয়েছে স্বাভাবিক গতি ও শৃঙ্খলা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকামুখী যেসব যানবাহন রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে চালক ও হেলপার ছাড়া যাত্রী নেই বললেই চলে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে যাত্রী ও গাড়ির চাপ ব্যাপক হলেও যানজট নেই। তাই মানুষের সুবিধার্থে আপাতত ঢাকামুখী লেনের টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে, কিন্তু উত্তরবঙ্গমুখী লেনে টোল আদায় চলছে।
এদিকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউফ জানান, উত্তরবঙ্গমুখী যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যমুনা সেতু পার হওয়ার পর আর কোনো বড় ধরনের জট নেই। মানুষ নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরছে।
যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ টানা কাজ করছে। তারা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করছে।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর সীমান্তে ঈদ-উল আযহাকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তায় পুশ-ইন, গবাদি পশু চোরাচালান ও পশুর চামড়া পাচার রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার প্রাগপুর বিজিবি ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, ৪৭ বিজিবি ব্যাটায়িলনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় খামারিদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিজিবি ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালান রোধে অতিরিক্ত টহল, অস্থায়ী চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও বিশেষ অপারেশন ব্যবস্থা চালু করেছে।
একইভাবে, ঈদের পর কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় স্থানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম মোতায়েন করে চামড়ার পাচার রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে যৌথ অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধেও বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিপক্ষ বিএসএফ’র সাথে পতাকা বৈঠক, লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে ।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের জনগণকে একটি নিরাপদ ও স্বস্থিদায়ক ঈদ উদযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে শিশুসহ তিনজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর পূর্ব প্রান্তে বোয়ালখালী উপজেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চান্দগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, দূর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি শিশু। সবাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে জানালিহাট স্টেশনের দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ট্রেনটি দ্রুতগতিতে সেতুর ওপর উঠে গিয়েছিল। সেতুর ওপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ছিল। সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে সব গাড়ি সেতু থেকে নামতে পারেনি।
ট্রেনচালক সংকেত অমান্য করেছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নেজাম উদ্দিন বলেন, নিয়ম হলো ট্রেন পূর্ব প্রান্তে এসে দাঁড়াবে। এরপর লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে সেতুতে উঠবে। কিন্তু ট্রেনচালক এ নিয়ম না মেনে দ্রুতগতিতে সেতুতে উঠে যান। আবার উল্টো দিক থেকে গাড়ি আসছিল। এ কারণে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।