গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমির প্রচারণায় এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন ছোটভাই তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) কাপাসিয়ার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগকালে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান নৌকাকে পাস করিয়ে সরকার গঠন করে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নৌকার কোনো বিকল্প নেই। ভাসানী, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গতাজ, শেখ হাসিনার নৌকা বর্তমানে রিমির নৌকা। সেই নৌকায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হবে।
নির্বাচনকে বানচাল করার দেশি-বিদেশি চক্রান্তকে রুখে দিতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে চক্রান্তকারীদের সমোচিত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সোহেল তাজ আরও বলেন, ১৯৫৪ সালে বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদকে যেভাবে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন, ঠিক সেভাবেই বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানান। এ সময় উপস্থিত নৌকার প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমি বলেন, নৌকার বিজয় হবে, শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। আমি বিজয়ী হতে পারলে কাপাসিয়ার প্রতিটি গ্রামকে একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলব।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আমানত হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজগর রশীদ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মাজহারুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ দর্জি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন সেলিম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বজলুর রশিদ মোল্লা, মজিবুর রহমান মিলন, টোক ইউপি চেয়ারম্যান এম এ জলিল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ওয়াহিদ প্রমুখ।
নিজেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার না দেওয়া হলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় অপমান হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে অপরাধ ও অভিবাসন সমস্যাকে তিনি ‘অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে সেনা মোতায়েনের ঘোষণাও দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নিজেকে নানা যুদ্ধ ও সংঘাতের মীমাংসার নেপথ্য নায়ক হিসেবে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার না দেওয়া হলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে বড় এক “অপমান”।
মঙ্গলবার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “আমি নোবেল পুরস্কার পাব? অবশ্যই না। ওরা সেটা দিয়ে দেবে এমন কাউকে, যে কিছুই করেনি। এটা আমাদের দেশের জন্য বিরাট অপমান।”
ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ভেতর থেকেই এক ধরনের যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে। আর সেটি অপরাধ ও অভিবাসন সমস্যার কারণে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের আহ্বানে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মার্কিন জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের উদ্দেশে তিনি জানান, ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন বেশ কয়েকটি শহরে অপরাধ দমনে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে।
মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা একে একে সেগুলো ঠিক করব। আর এ কাজের বড় অংশের দায়িত্ব নিতে হবে আপনাদের মধ্যে অনেককে। এটাও যুদ্ধ, এটা ভেতর থেকে আসা যুদ্ধ।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি ইতোমধ্যেই সেনাদের জন্য একটি বিশেষ কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স গঠনের নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন। তার ভাষায়, “কারণ এটা ভেতরের শত্রু, আর তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই আমাদের সামলাতে হবে।”
ট্রাম্প এসময় সংবাদমাধ্যমের ওপরও ক্ষোভ উগরে দেন। এমনকি সাংবাদিকদের “অসম্মানিত বা ঘৃণ্য ব্যক্তি” বলেও আখ্যা দেন তিনি।
মানুষের কাছে হাত না পেতে বৃদ্ধ বয়সে জীবন সংগ্রামে প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন একাই। জয় পরাজয় বুঝেন না, বাঁচার জন্য খেতে হবে। ঘরে বসে থাকলে খাবার আসবে না। কাজ করেই খেতে হবে। কাজ না করলে ভিক্ষা করে খেতে হবে। মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করতে আব্দুর রশিদ মিয়ার লজ্জা করে। তাই তো জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও হাল ছাড়েননি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াবো গ্রামের আব্দুর রশিদ (৯০)। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও প্রতিদিন সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে তিনি শুরু করেন জীবনের লড়াই। চন্ডীতলা এলাকার এক বকুল গাছের নিচে পড়ে থাকা ফুল কুড়িয়ে তিনি নিজেই মালা গেঁথে বাজারে বিক্রি করেন।
এত ব্যবসা থাকতে ফুল বিক্রি করেন কেন জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলেন, একটা সময় আমিও ফুল খুব ভালবাসতাম। আজ সে ভালবাসা পেটের দায়ে টাকায় বিক্রি করি। বাবাগো এত শুধু ফুল বিক্রি না, ভালোবাসা বিক্রি করি, জীবন সংগ্রামের নামে আমি ভালোবাসা বিক্রি করি। ভালোবাসার প্রতিক ফুল। আজো মানুষ ভালোবাসে তাই ফুল কিনা ভালোবাসার মানুষকে দেয়, আমারও ভালো লাগে। আয়ও মন্দ না, চলে যায় মোটামুটি।
প্রতিটি মালা মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। দিনের পরিশ্রম শেষে প্রায় এক হাজার থেকে বারোশো টাকা আয় হয় তার। তবে সবদিন সমান যায় না—কখনো বিক্রি কম হয়, আবার কখনো ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ভালো দামও পান। আব্দুর রশিদ নিজেই স্মৃতিচারণ করে বলেন, “পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় একদিন আমি দুইটা মালা নিয়ে গিয়েছিলাম। একজন ক্রেতা খুশি হয়ে আমাকে ৭০০ টাকা দিয়েছিলেন। তখন মনে হয়েছিল, এখনও মানুষ ভালোবাসা দিতে জানে।
৯০ বছরের এই বৃদ্ধের সংসারে রয়েছে দুই ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেরা নিজের মতো কাজকর্ম করেন, তবে সংসারের খরচ টানতে আব্দুর রশিদ এখনো নিজের শ্রমে নির্ভরশীল। রাজধানীর খিলক্ষেত, বসুন্ধরা, পূর্বাচল ৩০০-ফিট, গাউছিয়া—এসব এলাকার রাস্তা ঘুরে ঘুরে তিনি ফুল বিক্রি করেন।
জীবনের কঠিন বাস্তবতা সত্ত্বেও আব্দুর রশিদের মুখে নেই কোনো অভিযোগ। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, শরীর যতদিন সায় দেবে, ততদিন নিজের হাতেই উপার্জন করে খাবো।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রশিদ একজন পরিশ্রমী ও সৎ মানুষ। তার বয়সকে অতিক্রম করে কাজ করার ক্ষমতা দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হন। জীবনের সংগ্রাম আর শ্রমের মধ্য দিয়েই তিনি যেন এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন—কষ্টকে জয় করার অদম্য শক্তি নিয়েই তিনি পথ চলছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, এত বয়সেও উনি কাজ করেন, এ জন্য উনাকে আমার পক্ষ থেকে স্যালুট জানাই। আমার সাথে যোগাযোগ করলে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দিব। অন্যান্য সুযোগ থাকলে তাও দেখব।
পাবনার সাধুপাড়ায় পূর্ব শত্রুতা জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (০১ অক্টোবর) গেল রাত এক টার দিকে সদর উপজেলা দোগাছি ইউনিয়ন দক্ষিণ চর-সাধপাড়া ব্রিজের পাশে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রায়হান শেখ আকাশ (২৩) পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে দক্ষিণ চর-সাধপাড়া এলাকার মো: সোহেল শেখ ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুক্তারের স্ত্রী কাজ করে বাড়ি ফেরার পথে মিল্লাত নামে এক যুবক উত্তপ্ত করলে আকাশ তার প্রতিবাদ করে। এ নিয়েই বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল রাতে মিল্লাত আব্দুল রশিদ, রাজু পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে গুরুতর যখন করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তৃবরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ উদ্ধার করে থানার মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবেল হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে আব্দুল গফুর শেখ (৪১) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার মতিগঞ্জ লইয়ারকুল ব্রিজের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল গফুর ওই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার মুসলিমবাগ এলাকার বাসিন্দা।
আহতরা হলেন— লক্ষীনারায়ণ সিং এর ছেলে অজয় সিং (৪২), নিউ পূর্বাসা এলাকার বাসিন্দা, এবং মো. তানভীর হোসেন (জনি), রেলগেইট এলাকার বাসিন্দা। অজয় সিং বর্তমানে মৌলভীবাজার লাইফ লাইন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর তানভীর হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার মো. নাজিম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
শ্রীমঙ্গল সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শারমিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির সেই স্কুলছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষায় কোনো ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা চিকিৎসক।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের পরীক্ষায় রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর শরীরের ভেতরে ও বাইরে ধর্ষণের কোনো চিহ্ন মেলেনি।
২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে সদর থানায় মামলা করেন। পর দিন ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বাধীন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. জয়া চাকমা বলেন, ধর্ষণের আলামত শনাক্ত করার ১০টি সূচকের সবগুলোই স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে তার সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন আরও দুই চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের আহমেদ জানান, প্রতিবেদনটি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সেনা রিজিয়ন কমান্ডাররা অভিযোগ করেছেন, ইউপিডিএফ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড় অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে ইউপিডিএফ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পেছনে ইউপিডিএফ দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ডাকে। তবে দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের আশ্বাসে তা আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
গত কয়েকদিনের সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ স্থানীয়রাও আহত হয়েছেন। সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিস, দোকানপাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল। বর্তমানে খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে সূর্যোদয় সূর্যাস্তের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটায় বিপুল সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে। আজকে ব্যাপক পর্যটকের আনাগোনা। ইতোমধ্যে আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোর অধিকাংশই আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এখনো বুকিং এর জন্য অনেক পর্যটকরা যোগাযোগ করছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠন হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
মঙ্গলবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির বন্ধ। চার দিনের এ লম্বা ছুটিকে ঘিরে আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্টসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো আগত পর্যটকদের বরণে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ধুয়ে মুছে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
শারদীয় উৎসবকে ঘিরে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এবার পূজোর ছুটিতে লক্ষাধিক লোক সমাগমের আশা করছেন ব্যবসায়িরা। পুজোর ছুটির পর অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যটন মৌসুম শুরু হবে। পূজোর ছুটির মধ্যদিয়ে এ-মৌসুমের ঘাটতি কাটিয়ে উঠবে এমনটাই মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়িরা।
এদিকে বিপুলসংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন কে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সদস্যদের নজরদারিতে থাকবে সৈকত এলাকা। আগতরা যাতে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন কতৃপক্ষ।
আগত পর্যটকদের বরণে এরইমধ্যে প্রস্তুত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফিসফ্রাই, আচার ঝিনুক, বারমিজ প্রসাধনী ব্যবসায়ীসহ মোট ১৬টি পেশার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক। দেশের চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আসছে পর্যটন মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে বলে জানান পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা। এজন্য তারা দেশের অস্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকারের কাছে আহবান জানান তারা।
তা নাহলে পর্যটনে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবাসিক হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটায় ছোট বড় মিলে আড়াই শতাধিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলোর বেশির ভাগই বুকিং রয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতেও ৫০-৬০ ভাগ আগাম বুকিং রয়েছে। তবে শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে এমনটাই আশা তাদের।
আবাসিক হোটেল সৈকত এর ম্যানেজার রাজিব হোসেন জানান, তাদের হোটেলে ৭০টি রুম রয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত একটানা বুকিং রয়েছে। এখনো অনেক পর্যটকরা রুমের জন্য ফোন দিলেও তারা রুম দিতে পারছেন না।
পর্যটন করপোরেশনের মোটেল ইয়ুথ ইন ও হলিডে হোমস কতৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের মোটেলে ৭৭টি রুম রয়েছে। এরই মধ্যে ৯০ ভাগ রুম আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
অভিজাত আবাসিক হোটেল সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড বিলাসের এজিএম আল-আমিন খান উজ্জ্বল বলেন, ২৮-৩০ সেপ্টেম্বর ৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে।আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রিসোর্ট এবং ভিলা শতভাগ বুক হয়েছে। এছাড়াও ৪-৬ অক্টোবর পর্যন্ত আশানুরূপ বুকিং রয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম. এ মোতালেব শরীফ জানান, চলতি সপ্তাহে দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলে লম্বা ছুটিকে কাজে লাগাতে এরইমধ্যে কুয়াকাটায় থাকা প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেলের প্রায় শতভাগ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। ছোট-বড় আবাসিক হোটেল গুলোতেও ৬০-৭০ শতাংশ হোটেল কক্ষ হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, পূজো ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় প্রচুর সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আগত পর্যটক দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত সহ তারা যেন নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারে এজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ দর্শনীয় স্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ টহল থাকবে।
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো ইয়াসিন সাদেক বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় পৌর কতৃপক্ষ, মহিপুর থানা পুলিশ, ব্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সড়ক মহাসড়ক সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেক পোস্টের মাধ্যমে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা ইউনিয়নে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে উর্বর তিন ফসলি জমি, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
জানা যায়, চাপিতলা গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে মীর আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন করছেন। পাইপলাইন সংযোগ দিয়ে উত্তোলিত মাটি কখনো অন্য ফসলি জমি, আবার কখনো পুকুর বা গর্ত ভরাটে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তিন ফসলি জমি জলাশয়ে পরিণত হয়ে আশপাশের কৃষি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
অপর দিকে উপজেলার সিমানাপাড় ২টি ড্রেজার, কোরবানপুর জিএম উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে পুকুরের ভেতরে ১টি ও তার আরও ৪০০ মিটার দক্ষিণে ২ এবং কোরবানপুর নতুন কবরস্থানের পাশে ১টি ড্রেজার দেদারসে চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, ড্রেজার সিন্ডিকেট প্রথমে একটি জমিতে গর্ত সৃষ্টি করে, পরে আশপাশের জমি ভেঙে পড়তে শুরু করলে মালিকদের জিম্মি করে কম দামে জমি বিক্রিতে বাধ্য করা হয়। এতে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, অবৈধ ড্রেজিং কার্যক্রমে শুধু জমিই নয়, আশেপাশের রাস্তা ও ঘরবাড়িও হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানান তারা।
সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস জানান, আলমগীর বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এই ড্রেজার ব্যবসা করছে যা খুবই নিন্দনীয়। আমরা চাই এই এলাকায় কোণো ড্রেজার না চলুক।
অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যবসায়ী মীর আলমগীর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ড্রেজার ভাড়ায় এনেছি আমার নিজস্ব জমি ভরাটের জন্য।
মুরাদনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খান বলেন, ‘অবৈধ ড্রেজিং বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গ্রামীণ কাঁচা রাস্তার বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার তিন লাখ মানুষ। রাস্তাগুলোতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও টনক নড়ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও-বাগমারা গ্রামের সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি পরিণত হয় জলাশয়ে। ফলে প্রতিদিন হাজারও মানুষের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ সবাই পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। একটু বৃষ্টিতেই কাদা হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। বড় বড় গর্ত আর রাস্তায় পানি জমে থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই পথচারীদের। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় গর্ত। কোথাও আবার বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বহুদিন ধরে সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনা বেগম বলেন, ‘এলাকার মানুষকে নিয়ে আমি নিজেও বিপাকে আছি। বর্ষায় রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি, আশা করছি শিগগিরই এই রাস্তার উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পাল জানান, ‘রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কমলগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী মো.আব্দুর রকিব বলেন, গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। এ রাস্তার বিষয়টি তালিকাভুক্ত রয়েছে, ধাপে ধাপে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে রাস্তা পাকা করা হবে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘এলাকার জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ইতোমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, শীতকালীন পেঁয়াজ, চিনাবাদাম, মসুর ও খেসারি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬ হাজার ৬৭০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এতে খুশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা। এছাড়া গত অর্থবছরে মাসকলাই ২০০ জন কৃষক, তিল ১ হাজার জন, পাট ৩৫০ জন, রোপা আমন ১ হাজার ৩৫০ জন, শাকসবজি ৮০ জন ও বোরো হাইব্রিড ধানের ১ হাজার ৬০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা দেয়। এর মধ্যে উপজেলার অর্জুনাতে ৯৯৫ জন, গাবসারায় ৮৫৫ জন, ফলদায় ১৪১০ জন, গোবিন্দাসী ৭৭০ জন, অলোয়া ১ হাজার ৭০ জন, নিকরাইল ৭২৫ জন এবং পৌরসভায় ৮৪৫ জন কৃষক প্রণোদনা পান।
প্রণোদনা পেয়ে চর অলোয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনার আওতায় সরিষার বীজ ও সার পেয়েছি। জমিতে চাষ করে এবার প্রচুর ফলন হয়েছে। এ ধরনের সহযোগিতা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বাগবাড়ী গ্রামের কৃষক কুদ্দুস বলেন, প্রণোদনা হিসেবে ভুট্টার বীজ ও সার পেয়েছি। নিজের জমিতে চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। এ উদ্যোগ আমাদের কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা রাখছে। তারা বিনামূল্যে বীজ ও সার তাদের কাছে সরাসরি পৌঁছেছে এবং তারা কৃষি অফিসের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কৃষি প্রণোদনা চান ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা।
এদিকে সম্প্রতি উপজেলা কৃষি অফিসের অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ পরিবেশ করে। যা ভুল ও মিথ্যা তথ্যে ভিত্তিতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসানুর রহমান।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রবি মৌসুমে প্রণোদনা কার্যক্রম সঠিকভাবে বিতরণ সম্পন্ন করা হয়। কোনো অনিয়ম হয়নি।
শারদীয়া দুর্গাপূজা ঘিরে কেউ অসাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়াতে চাইলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান। তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি জানান- তাদের বিশেষ ইন্টেলিজেন্স টিমের মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের তথ্য দ্রুত পৌছে যাবে এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার মহাঅষ্টমিতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটস্থ পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা বাস মালিক সমিতি ও জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির দুটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন র্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান। পরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা যাতে নিরাপদে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে পূজা উদযাপন করতে পারে তার জন্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের প্রথমস্তরে পেট্রোল টিম প্রতিটি পূজামন্ডপ পরিদর্শন করছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয়স্তরের বিশেষ ইন্টেলিজেন্স টিম মন্ডপের আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে৷ কেউ যদি কোন প্রকার অসাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়াতে চায়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তাহলে সেই তথ্য দ্রুত পেয়ে যাব এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান সিদ্দিকী, ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের স্কোয়াড্রন লিডার তারিকুল ইসলাম, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, জেলা বাসমালিক পূজামণ্ডপের সভাপতি সূর্যনাথ দাস, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার ঘোষ, কোষাধক্ষ্য মানিক চৌধুরী মিঠু, মিনিবাস মালিক সমিতির পূজামণ্ডপের সভাপতি মৃত্যঞ্জয় দাস মনা, সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ সাহা পিয়াস উপস্থিত ছিলেন।
পূজার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। আমরা আর পশ্চাতে যেতে পারব না। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক অর্থনীতিকে যাতে সমৃদ্ধির দিকে নিতে পারি সেটার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা নিয়োজিত আছি। আজকের (মঙ্গলবার) এই পূজার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করব।
তিনি বলেন, যার যা দায়িত্ব তা আমরা পালন করব। সার্বিক দায়িত্ব ভোটে অংশগ্রহণ করা। যা এই সময়ের একটি অনিবার্য প্রেক্ষিত। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর জে এম সেন হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পূজা পরিদর্শনে শেষে এক অনুষ্ঠানে বলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা এসব কথা।
বাঙালির জাতীয় চেতনার মধ্যে দুর্গোৎসব অনাদিকাল থেকে জীবনের অংশ মন্তব্য করে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, এবারের আয়োজনকে সাবলীল করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছে। এটার সার্বিক একটা রূপ আছে। যেমন ধর্মীয় আছে, তেমনি নানা ধর্মের মানুষ উৎসব আয়োজনে শামিল হয়।
উপদেষ্টা বলেন, সকাল থেকে আমি কয়েকটি মণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে কাঠগড়ে একটি মণ্ডপে গিয়েছি। পরিসর সংকীর্ণ হলেও তাদের হৃদয় প্রসারিত এবং আনন্দের উচ্ছ্বাসও উপলব্ধি করা গেছে। আগ্রাবাদে একটি মণ্ডপে গিয়েছি। একতা গোষ্ঠী, তারা সম্প্রীতির এক অনন্য প্রদর্শনী আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা, জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে অষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অঞ্জলী দেন ভক্তরা। তারা সকাল থেকে উপবাস করে পূজার অঞ্জলি দেন, তারপর চরণামৃত ও প্রসাদ নিয়েছেন। এ সময় নগরের বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপগুলোয় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
‘আসেন আসেন, হাতে বোনা, টেকসই, মসলিনের বিকল্প বাংলার ঐতিহ্য আসল জামদানি শাড়ি, আমরাই বেচি। নিয়ে নেন, সুলভ মূল্যে, অরিজিনাল জামদানি নেন, বিভিন্ন স্থান থেকে নকল শাড়ি কিনে ঠকবেন না। আমাগোডা একেবারেই খাঁটি হাতে বোনা জামদানি, নেন ভাই নেন। শাড়িতেই নারী, না কিনলে ফস্তাবেন। প্রতিটা নারীর বহুল কাঙ্কিত এ জামদানি, নেন ভাই। এমন হাঁকডাকে মুখর পুরো জামদানির হাট।
শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে রূপগঞ্জের তারাব পৌর এলাকার নয়াপাড়ায় জামদানি হাটটি মধ্যরাতের পর শুরু হয়ে সূর্যোদয়ের আগেই শেষ। অনেকের কাছেই এটি অবিশ্বাস মনে হবে।
এটি আহামরি কোন হাট নয়। তারপরও প্রতি হাটে কোটি টাকার জামদানি কাপড় লেনদেন হয়। হাটে সেড নেই। ঠায় দাঁড়িয়ে কিংবা মাটিতে চট বিছিয়ে শাড়ি বেচাকেনা চলে। হাটের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। নয়াপাড়া জামদানি পল্লীর মাঠেই এ হাট বসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বহু আগে রূপগঞ্জের নোয়াপাড়ায় প্রতি মঙ্গলবার জামদানির হাট বসত। নানা প্রতিকূলতার কারণে তা এক সময় চলে আসে ডেমরা বাজারে। বর্তমানে আবার এ হাট নোয়াপাড়ায় বসে প্রতি শুক্রবার। মধ্যরাত থেকে ক্রেতা বিক্রেতা আসতে শুরু করে। বেচাকেনা শুরু হয় ৩টার পর থেকে। পার্শ্ববর্তী এলাকার জামদানি তাঁতীরা এর বিক্রেতা। নির্জন রাত গাড়ি ঘোড়া কিছুই চলে না। হেঁটে কিংবা নৌকায় চড়ে তাঁতীরা চলে আসেন হাটে। পাইকারদের কেউ কেউ আগে থেকেই হাটে অবস্থান নেয়। সারাদেশ থেকে দল বেধে আসেন অনেক পাইকার।
তাঁতীদের সবার হাতে থাকে ২/১ টি জামদানি শাড়ি। ওরা নিজেরাই এ শাড়ির শিল্পী। পার্শ্ববর্তী নোয়াপাড়া, রূপসী, মৈকুলী, খাদুন, পবনকুল, কাজীপাড়া, মোগরাকুল, সোনারগাও ও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আসেন তাঁতীরা। ক্রেতারা আসেন সারা দেশ থেকে। তবে অধিকাংশ ক্রেতাই রাজধানী ঢাকার কাপড় ব্যবসায়ী। স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ীরাও এখানে হাট করতে আসেন। এক একটি শাড়ি দেড় হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিকায় এখানে। জামদানি শাড়ি ছাড়া অন্য কোন কাপড় কিংবা পন্য এ হাটে মিলে না।
ভোর ৪টায় পুরো জমজমাট হয়ে ওঠে হাট। তখন ফঁড়িয়া, দালাল, জামদানি তাঁতী, ব্যবসায়ীতে পূর্ণ থাকে। দাড়িয়ে পায়চারি করে তাঁতীদের শাড়ি প্রদর্শন করতে হয়। কেউ কেউ ৩ সপ্তাহ বোনা শাড়ি আবার কেউ ৪ সপ্তাহ বোনা শাড়ি বলে হাকডাক দিয়ে থাকেন। পছন্দ হলেই ক্রেতারা তা দরদাম করে কিনে নেন। প্রতি হাটে এখানে বিক্রি হয় ৫ থেকে ৭ হাজার পিস শাড়ি। লেনদেন হয় প্রায় এক কোটি টাকার ওপরে। শাড়ি পিছু ইজারা দিতে হয় ৫০ থেকে ১শ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর বেশিও আদায় করা হয়।
বেচাকেনার জন্য নির্দিষ্ট স্থান কিংবা শেড নির্মাণ করা হয়নি। ফলে খোলা আকাশের নিচে হাকডাক দিয়ে তাঁতীদের শাড়ি বিক্রি করতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই ক্রেতা বিক্রেতারা ভিজে একাকার হন। কখনও দামি সব শাড়ি ভিজে নষ্ট হয়।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার শ্রী শ্রী গৌরি-নিতাই আখড়া ধাম পূজা মণ্ডপ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার চীনতলা চণ্ডী মন্দির সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। শারদীয় দুর্গাপূজা–২০২৫ উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবেই এ পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। শারদীয় দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যেকোনো উসকানি ও গুজব প্রতিহত করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা হয়েছে।
নরসিংদীতে পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার-ভিডিপি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং দায়িত্ব পালনে সতর্কতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। এসময় তিনি বলেন, “আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আনসার-ভিডিপি সর্বদা সজাগভাবে দায়িত্ব পালন করছে।”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, “সম্প্রীতির বন্ধন এবং সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।” আনসার মহাপরিচালক এবং স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
নরসিংদীতে কর্মসূচি শেষে মহাপরিচালক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চীনতলা চণ্ডী মন্দির সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সার্বিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় উসকানি ও গুজব ছড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত পদক্ষেপে প্রতিহত করা হয়েছে এবং কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও এই সম্মিলিত নিরাপত্তা প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জনগণের বাহিনী হিসেবে সকল নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে একযোগে যেকোনো নিরাপত্তাবিঘ্নকারী প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। মহাপরিচালক আশা প্রকাশ করেন যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে শারদীয় দুর্গাপূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।
মহাপরিচালকের এ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, উপ-মহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আশরাফুল আলম, নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম, মেজর এ কে এম রিয়াদুল ইসলাম (উপ-অধিনায়ক, ৫১ এমএলআরএস রেজিমেন্ট আর্টিলারি), নারায়ণগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, নরসিংদী জেলা কমান্ড্যান্ট এস. এম. আকতারুজ্জামান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।