বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে বস্তাবন্দী শিশুর মরদেহ উদ্ধার

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৫:৫৬

মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে বস্তাবন্দী অজ্ঞাত এক শিশুর (১০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার সকালে শিবচর উপজেলার বাবলাতলা এলাকায় আড়িয়াল নদের পাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে আড়িয়াল খাঁ নদে পাড়ে মরদেহটি ভেসে থাকতে দেখে এলাকাবাসি। পরে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে জানানো হলে পুলিশ গিয়ে বস্তা কেটে লাশটি উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধারে করে। ধারণা করা করা হচ্ছে শ্বাসরোধে হত্যা করে বস্তাবন্ধী করে নদীতে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এখন পর্যন্ত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।’


চট্টগ্রামে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত সাড়ে ৭টায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়।
বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) শিক্ষা বিভাগ।

প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব সৈয়দ আলাউদ্দিন আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদটির পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আহমদুল হক।

চসিকের শিক্ষা বিভাগের সমাজকল্যাণ ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন প্রান্তে আরো ৯টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টায় এসব মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদুল আজহার অন্যান্য জামাতগুলো হলো- লালদীঘির পাড় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শাহী জামে মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ (র.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুবাজার জামে মসজিদ এবং সাগরিকা এলাকার মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ।

এছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহে স্থানীয়রা ঈদের জামাত আয়োজন করবেন।


সিলেটে বৃষ্টি কমেছে, তবুও বাড়ছে নদ-নদীর পানি

সিলেটে নদীর পানি বৃদ্ধিতে প্লাবিত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

সিলেটে বৃষ্টি কমলেও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের প্রধান কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজান থেকে ঢল নামা অব্যাহত থাকায় নদীগুলোর পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সিলেটে গত সোমবার সকাল থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরপর দিনে আর তেমন বৃষ্টি হয়নি।

নদীর পানি বাড়লেও গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি। তবে জকিগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম ও রাস্তা এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। তবে জকিগঞ্জ বাজার থেকে পানি নেমে গেছে। এর আগে গত সোমবার কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে জকিগঞ্জ বাজার প্লাবিত হয়েছিল।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৬৯ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৯৪ মিটার ওপরে। অমলশিদ পয়েন্টে ১৭ দশমিক ৩৬ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৯৬ মিটারের ওপরে। শেওলা পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৫২ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৪৭ মিটার ওপরে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯ দশমিক ৯৮ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫৩ মিটার ওপরে। এ চারটি পয়েন্টেই আগের দিনের চেয়ে পানি বেড়েছে।

সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার ধলাই, লোভা, সারি ও ডাউকি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। শুধু সারি-গোয়াইন নদীর পানি কিছুটা কমেছে।

স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও ওসমানীনগর উপজেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। জকিগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। এছাড়া বেশ কিছু গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেকেই পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে বন্যাকবলিত মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছেন।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বল্বন, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুটি পরিবারের মোট ৯ জন ঠাঁই নিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটে বৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে এলেও ভারত থেকে সীমান্তবর্তী নদ-নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢল আসা অব্যাহত আছে। এতে বৃষ্টি কমলেও পানি বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, ভারতেও বৃষ্টি কমে আসছে। এছাড়া ভাটিতেও পানি দ্রুত গতিতে চলে যাচ্ছে। তাই নতুন করে বৃষ্টি না হলে দু-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আমরা ধারণা করছি।


দৌলতপুরে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে উন্নত জাতের ঘাস চাষ প্রকল্পের অর্থ প্রদানে নয় ছয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালে উন্নত জাতের ঘাস চাষ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খামারীকে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর ‘‘শীর্ষক” প্রকল্পেরে আওতায় দৌলতপুর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন থেকে প্রতি ইউনিয়নে ২জন করে নির্বাচিত ২৮ জন খামারীকে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ঘাস চাষ প্রর্দশনী প্লট স্থাপন বাবদ জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি এ বরাদ্দকৃত অর্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খামারীদের প্রদান করেন জনপ্রতি ৪৪০০ টাকা। এতে খামারিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের খামারী ময়না খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কত টাকা বরাদ্দ সেটা ঠিক জানিনা, তবে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে মোট ৮৮০০ টাকা আমাকে দিয়েছে।

মরিচা ইউনিয়নের মাজদিয়াড় গ্রামের খামারী জোয়াদুর রহমানসহ একাধিক খামারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের বরাদ্দ ৫০০০ টাকা থাকলেও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে ৮৮০০ টাকা সকলকে দিয়েছে। কেন কম দিলো সেটা আমরা জানিনা।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কমিউনিটি এক্সট্রেনশন এজেন্ট শাহারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানিনা স্যার যা বলেছে আমি তাই করেছি, আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ মাহমুদুল ইসলাম খামারীদের প্রাপ্য অর্থ কম দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অডিট ও মাঠ পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য টাকা কম দেয়া হয়েছে। এসকল খরচ তো আমি পকেট থেকে দেবনা। তাই খামারীদের ৬০০ টাকা করে কম দেয়া হয়েছে। আপনি অফিসে আসেন কথা বলি।


বেহাল সড়কে সিলিন্ডারবাহী ট্রাক উল্টে বিস্ফোরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিরাসার এলাকায় একটি সিলিন্ডারবাহী ট্রাক খাদে পড়ে উল্টে গেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে আশপাশের দোকান ও স্থাপনায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বুধবার (৪ জুন) ভোর ৪টার দিকে বিরাসার এলাকার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য বিরাসার এলাকার সড়কের অবস্থা বেহাল। সকালে সিলিন্ডারবাহী ট্রাকটি খানাখন্দে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। পরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, তার পরপরই ট্রাকটিতে আগুন ধরে যায়।

তারা আরও জানান, সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনাস্থলের পাশের ৩/৪টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে কয়েকটি ভবনের জানালার কাঁচও ফেটে যায়। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক নিউটন দাস জানান, ট্রাকটিতে বিপুলসংখ্যক গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় খাদে পড়ে গেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তবে কেউ হতাহত হননি। কতসংখ্যক সিলিন্ডার বহন করা হচ্ছিল, তা নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।


শাহরাস্তিতে মৃত্যুর ১০ মাস পর আ.লীগ নেতার লাশ উত্তোলন

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চাঁদপুর প্রতিনিধি

মৃত্যুর ১০ মাস পর চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা মো. মোস্তফা কামাল মজুমদারের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ওই ইউনিয়নের শোরসাক মজুমদার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে তাঁর লাশ তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার থানা-পুলিশের সহযোগিতায় এ লাশ উত্তোলন করেন।

জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট গভীর রাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ডোবায় ডুবে মোস্তফা কামালের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পরদিন ৬ আগস্ট বাড়ির পার্শ্ববর্তী ডোবা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে দাফন করা হয়। মৃত্যুর ছয় মাস পর ৪ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা কামালের স্ত্রী ফাতেমা কামাল বাদী হয়ে শাহরাস্তি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বাদী ফাতেমা কামালের দাবি, তাঁর স্বামীকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা সংঘবদ্ধভাবে বাড়িতে হামলা করে হত্যা করেছে। দেশের তৎকালীন পরিস্থিতি ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি তাঁর স্বামীর হত্যার বিচার দাবিতে দেরিতে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।

মোস্তফা কামালের ভাই হুমায়ূন কবির মজুমদার বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চাই।’ নিরপরাধ কেউ যেন এ ঘটনায় হয়রানির শিকার না হয়, প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার গণমাধ্যমকে জানান, মোস্তফা কামালের স্ত্রীর করা মামলা ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার বলেন, আদালতের নির্দেশে সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদারের লাশ উত্তোলন করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।


না.গঞ্জে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে প্রায় ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে আসা ভারতীয় পণ্য কোস্ট গার্ড ও কাস্টমস-এর যৌথ অভিযানে জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১ জুন শনিবার মধ্যরাত ৩ টা হতে ভোর ৫ টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ড স্টেশন পাগলা ও কাস্টমস্ এর সমন্বয়ে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন কাঁচপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে ঢাকা গামী সন্দেহজনক একটি কালো মাইক্রোবাস তল্লাশি করে শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে আসা প্রায় ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন ধরনের ৯ হাজার ৭ শত ১৮ পিস মোবাইলের ডিসপ্লে জব্দ করা হয়। পাচারকারীরা কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

পরবর্তীতে জব্দকৃত মালামাল ও মাইক্রোবাসের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ২৪ ঘন্টা টহল জারি রেখেছে। যার মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের আওতাধীন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার অস্থিত্বকে ‘চ্যালেঞ্জ’ জানাচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রবিউল ইসলাম শ্যামমনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে গেল কয়েক বছর ধরে নানামুখী প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তীরবর্তী অংশে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ব্যাপক নির্ভরশীলতার পাশাপাশি রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা বৃদ্ধির মতো ক্ষতিকর প্রভাব। এছাড়া সুন্দরবনকে আবর্তিত করে ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাস এখন নিত্যকার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

তবে এতসব শত্রুর মোকাবিলা করে টিকে থাকা এ বনাঞ্চলের উপর মনুষ্যসৃষ্ট নতুন প্লাস্টিক-পলিথিন ব্যবহার যোগ হয়েছে

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপচনশীল বস্তু হিসেবে প্লাস্টিক-পলিথিন সুন্দরবনের প্রাণীকুল ও প্রকৃতির মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। যা পরোক্ষভাবে মানবদেহের জন্যও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে। এছাড়া নতুন নতুন গাছ-গাছালি বিস্তারের ক্ষেত্রেও তা খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এলাকার অসচেতন লোকজনের কারণে সুন্দরবনের বৈচিত্র্যকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।

সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, সুন্দরবনে প্রতি লিটার পানিতে অন্তত দু’টি এবং প্রতি কেজি মাটিতে প্রায় সাড়ে সাত শতাধিক মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন নদ-নদী এবং খাল হতে শিকারকৃত প্রতি কেজি মাছ গড়ে ১০–১৫ মিলিগ্রাম মাইক্রোপ্লাস্টিক বহন করছে। ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি থাকার পাশাপাশি কিডনি ও লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে সক্ষম উক্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক সুন্দরবনের প্রকৃতি ও পরিবেশসহ উদ্ভিদ এবং প্রাণীকুলেরও মারাত্মক ক্ষতি করছে।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন কদমতলা, হরিনগর, নীলডুমুর ও কৈখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাশের নদীসমূহে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক-পলিথিন ভেসে বেড়াচ্ছে। খাবারের কাজে ব্যবহৃত প্লেটের (একবার ব্যবহারযোগ্য) পাশাপাশি ভাসমান সেসব প্লাস্টিকের মধ্যে রয়েছে কোমল পানীয়সহ খাবার পানির বোতল। এছাড়া চানাচুর, চিপস, বিস্কুটসহ নানা প্রকার খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট ছাড়াও উপকরণাদি বহনের কাজে ব্যবহৃত পলিথিন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে প্লাস্টিকের একবার ব্যবহারযোগ্য প্লেট ও গ্লাস ব্যবহারের জনপ্রিয়তা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পারিবারিক সকল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারসমূহে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে প্লাস্টিক-পলিথিন। ব্যবহারের পর পরিত্যক্ত সেসব প্লাস্টিক-পলিথিন ধ্বংস না করে বরং নানাভাবে তা পাশের নদী ও খালে ফেলা হচ্ছে।

পরক্ষণে জোয়ার-ভাটার সুযোগে সেসব পরিত্যক্ত বস্তুসমূহ সুন্দরবনসহ আশপাশের নদ-নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে। তাতে সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন নদ-নদী মারাত্মকভাবে দূষণের শিকার হওয়ায় ঝুঁকিতে পড়ছে স্থানীয় জীব ও প্রাণবৈচিত্র্য। শিকার করা মাছের পেটে প্লাস্টিক-পলিথিনের অস্তিত্ব পাওয়ার দাবি করে স্থানীয়রা জানান, পলিথিনে আটকে মাছ ও কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তারা। এছাড়া অপচনশীল এসব বর্জ্যের আধিক্যে সুন্দরবনের চর ও ফাঁকা জায়গায় গাছের বিস্তৃতি ভয়ংকরভাবে হ্রাস পেয়েছে।

প্লাস্টিক-পলিথিনের মারাত্মক উপস্থিতি সেখানকার প্রাণীকুলের জন্য নানাভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। তিনি জানান, আরও বেশি ক্ষতি হওয়ার আগেই সুন্দরবনের নদ-নদীসমূহকে প্লাস্টিক-পলিথিনের দূষণমুক্ত করা দরকার। সেজন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ আইনের কঠোর প্রয়োগ খুবই জরুরি। গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা মাসুদুল আলম বলেন, প্লাস্টিক-পলিথিনে সুন্দরবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকসহ পলিথিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার সুন্দরবনের অস্থিত্বকে রীতিমতো ‘চ্যালেঞ্জ’ জানাচ্ছে। উপকূলের সুরক্ষা ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করা এ তরুণের দাবি, সুন্দরবনের নদ-নদীতে থাকা প্লাস্টিক-পলিথিনের কারণে মাছসহ উদ্ভিদের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনি বৈচিত্র্যে ভরা সুন্দরবন তার অনুকূল পরিবেশ হারাচ্ছে


জাল নোট দিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে প্রতারক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ব্যাংক থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে জাল নোট দিয়ে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। চাঞ্চল্যকর এ প্রতারণার ঘটনা ঘটে ফুলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখায়। তবে এ ঘটনায় জড়িত প্রতারকের সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও তার পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি ব্যংক কর্তৃপক্ষ।

জানাগেছে, গত সোমবার ফুলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখায় টাকা তুলে গণনা ও ছেড়া ফাটা নোট চেক করার সময়ে প্রতারকের খপ্পড়ে পড়েন মোছা.আছমা আক্তার নামের প্রবাসীর স্ত্রী। তিনি উপজেলার পলাশতলী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী বাবুল মিয়ার স্ত্রী।

ভুক্তভোগী মোছা.আছমা আক্তার জানান, ঈদ উপলক্ষে পারিবারিক প্রয়োজনে তার স্বামী প্রবাস থেকে ফুলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকে ৯০ হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠান। পাঠানো টাকা উত্তোলন করে ব্যংকেই টাকাগুলোর ছেড়া ফাটা দেখছিলেন । এমন সময় ওই নারী কে তার কাছে থাকা খুচরা টাকাগুলোর বিনিময়ে ১ হাজার টাকার নোট দেওয়ার প্রস্তাব দেন ব্যাংকের ভিতরে অবস্থান করা এক প্রতারক। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী নারী প্রতারককে ৫০হাজার টাকা দিযে ৫০ টি ১ হাজার টাকার নোট বুজে নিযে বাড়ি চলে যান। পরে গতকাল ফুলবাড়িয়া কমিউনিটি পুলিশ ব্যাংকে সঞ্চয়ের টাকা জমা দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন প্রতারকের কাছ থেকে নেওয়া ৫০ টি ১ হাজার নোটই জাল টাকা। সেখানের ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই টাকাগুলো জাল সনাক্ত করে ছিদ্র করে দেন। পরে ভুক্তভোগী নারী গতকাল বিকেলে ফুলবাড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাল টাকার বিষয়ে আজ জানতে পেরেছি, ওই প্রতারকের সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। প্রশাসন ফুটেজ চাইলে তাদেরকে সার্বিক সহায়তা করা হবে। এ ঘটনার পর থেকে তাদের নজরদারি ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কুষ্টিয়ায় ২১টি বালুমহাল থেকে বছরে লোপাট দুইশ’ কোটি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আতিয়ার রহমান; দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় ২১ টি বালুমহাল থেকে বছরে লোপাট হয়েছে দুই’শ কোটি টাকা, এ থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র আড়াই কোটি। জেলার দুইটি নদী পদ্মা ও গড়াই থেকে প্রকাশ্যে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন ও কেনাবেচা। বালুমহাল গুলোতে পাহারায় থাকে অস্ত্রধারী বাহিনী। রাতে পাহারা হয় আরও জোরদার। কোন রকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দেদারসে চলছে বালু উত্তলন। এর ফলে হুমকিতে রয়েছে শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু।

২১টি বালুমহালের মধ্যে বালু তোলা যায় চারটি স্পট থেকে। এর মধ্যে ইজারা আছে দুইটির। নাব্য পরিস্থিতি, পরিবেশ, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ও আইনী জটিলতায় বাকি ১৭টি থেকে উত্তোলন নিষেধ। অথচ দুই নদীর পাড় ঘেষে প্রকাশ্যে চলছে বালু উত্তলনের মহোৎসব। মূলত রানৈতিক নেতারাই এ বালু স¤্রাজ্য পরিচালক বলে অভিযোগ আছে।

জেলার দুই নদীর তীরেই রয়েছে বালুর সা¤্রাজ্য। এখানকার বালুর চাহিদা পুরো বিভাগজুড়ে। নদী থেকে তোলা বালু বিক্রি হয় ঘাটেই, সেখান থেকেই প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ড্রাম্প ট্রাকে করে চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। সরেজমিনে গিয়ে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখান থেকে বছরে কয়েক’শ কোটি টাকার অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু একটা নির্দিষ্ট লেভেলে ফাউন্ডেশন করা। ওখান থেকে বালু তুললে গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে আশপাশের পিলারে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

স্থানীয়রা জানান, সবাই ভালো বালু চায়। তাই যতদূরের লোকই হোক না কেনো, এদের প্রধান টার্গেট থাকে এই দুই নদী। আরেকজন জানান, এখানে গ্রুপ তো অনেক। ঘাট নিয়ন্ত্রণ, বালু তোলা ও ইজারা নিয়ে সমস্যা হতে পারে। এজন্য কেউ ঝামেলায় না গিয়ে যে যার মতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, বালুমহাল দখল নিয়ে এখানে বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে। সশস্ত্র পাহারা থাকে প্রতিদিন, রাতে পাহারা হয় আরও জোরদার।

রাতের বেলা পরিচয় গোপন রেখে কয়েকজন সংবাদকর্মীরা যায় স্পটে। দেখা যায়, গভীর রাত, অথচ অবৈধভাবে বালু তোলায় কোনো বিরতি নেই। যেখানে সাধারণের প্রবেশও নিষেধ। শুধু একটি স্পট থেকে বালুবোঝাই করে বেরিয়ে যায় সাতটি ট্রাক।

এগুলোর নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে, অনুসন্ধান চলে সে বিষয়েও। যে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেলো, তারা কেউ বালুমহালে আসেন না সাধারণত। তবে স্থানীয় রাজনীতিতে তারা বেশ প্রভাবশালী। শেষ পর্যন্ত ক্রেতা সেজে যোগাযোগ করা হয় তেমন কয়েকজনের সঙ্গে।

কুমারখালী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিলন প্রামাণিক ফোনে বলেন, ওই ঘাট পাড়ে আমাদের পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বালু পাবেন। আমার কথা বললে কম দামে দেবে।

মনোয়ার হোসেনের সঙ্গেও যোগযোগ করা হয়। তিনি বলেন, দাম ১৮ হাজার টাকার মতো, আপনার কাছে হয়তো একটু কম নেয়া যাবে, সাড়ে ১৭ হাজারের মতো। পরে কথা হয়, চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জানবার হোসেনের সঙ্গেও।

বালুমহালে রাজনৈতিক এই প্রভাবের বিষয় নিয়ে কথা হয় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে। বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, বর্তমানে যারা বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের সঙ্গে নিশ্চয়ই যোগসূত্র আছে। অবশ্য তিনি দাবি করেন, বালু উত্তোলনে তার নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দীন বলেন, আমরা অনেক কিছু অনুভব করি, কিন্তু বলাটা কঠিন। যারা অবৈধ উত্তোলনের অভিযোগ করছে, তারাই একসময় এটা করতো। আমরা বাধা দেয়ার পর তারা আর এসব অপকর্ম করতে পারছে না। তাই উল্টাপাল্টা অভিযোগ দিচ্ছে বলে দাবি তার।

তবে এসব বালুমহাল আগাগোড়াই প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে। অদৃশ্য ভয় দেখিয়ে আড়ালেই থেকে যায় তারা। এই বালু যেনো স্থানীয়দের কাছে সোনার খনি। রহস্যময় সেই খনির সঙ্গে মিলিয়ে এটিকে তারা বলেন এল ডোরাডো।

কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান লাকী বলেন, এখানকার বালু মানে স্বর্ণ। তাহলে এই দামি জিনিস কীভাবে অপব্যবহার হয় প্রশ্ন রাখেন তিনি। যেই দল ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেই দলের ছত্রছায়ায় বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ থাকে বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, এখানে যারা ডিসি হিসেবে আসেন, তারা আর বদলি হতে চায় না। আরও থাকার চেষ্টা করে। কেনো করে? ঘুষের কোনো প্রমাণ পাবেন না। কিন্তু আমরা জানি এখানে অনেক লেনদেন হয়।

এই একটি ঘাট থেকে তিন ধরনের বালুতে প্রতিদিন লেনদেন কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। শুষ্ক মৌসুম তো আছেই, বালু তোলা হয় এমনকি ভরা বর্ষাতেও। একুশটি ঘাট থেকে বছরে গড়ে লেনদেন দুইশ কোটি টাকা। আর গত বছর সরকার পেয়েছে মাত্র দুই কোটি ৮৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এতো ফারাকের কী কারণ? জানতে চাওয়া হয় জেলার রাজস্ব শাখায়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এখানে সরকারের বঞ্চিত হওয়ার শেষ নেই। যেখানে বালু লোড-আনলোড করে, পুলিশ সঙ্গে থাকে। তবে ওখানকার অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর। ফায়ারিংয়ের প্রস্ততি নিয়ে যেতে হয়। এমন অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এর আগে সাংবাদিকদেরও ডুবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল।

ইজারা দেয়নি জেলা প্রশাসন, তারপরেও কীভাবে হচ্ছে প্রকাশ্যে এ চুরি? এমন প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, কেউ চুরি করলে সেটা তো চুরি। প্রকাশ্যে হচ্ছে বালু তোলার কাজ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে করাচ্ছি, বিষয়টি এমনও না।

প্রভাবশালীদের ভয়ে অভিযোগ করে না কেউই। এ ধরণের ঘটনায় মামলাও নেই। অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ থাকে প্রশাসন। যদিও অবৈধ বালু উত্তোলনে একদিকে হুমকির মুখে পরিবেশ-প্রকৃতি, অন্যদিকে মোটা অংকের রাজস্ব ক্ষতি। এছাড়াও বালুবোঝাই ডাম্প ট্রাকে সড়কে বেড়েছে মৃত্যু।


প্রবল বৃষ্টিতে রেলস্টেশনে সন্তান প্রসব, ৯৯৯ নম্বরে ফোনকলে উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যশোরের একটি রেলস্টেশনে এক নারী সন্তান প্রসব করলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোনকলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) ভোর পৌনে চারটায় যশোরের কোতোয়ালী থানার রূপদিয়া রেলস্টেশনে এমন ঘটনা ঘটেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৯৯৯ নম্বরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার এমন তথ্য জানিয়েছেন।

এতে বলা হয়, স্টেশন মাস্টার বাবুল আক্তার ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে জানান, স্টেশনের প্লাটফর্মে একজন নারী সন্তান প্রসব করেছেন, তখন সেখানে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। মা এবং সন্তানের জীবন বাঁচাতে দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য ৯৯৯ এর কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলটি রিসিভ করেছিলেন ৯৯৯ কলটেকার কনস্টেবল দ্বীন ইসলাম। কনস্টেবল দ্বীন তাৎক্ষণিকভাবে যশোর কোতোয়ালী থানায় এবং ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে বিষয়টি দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জানায়।

৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল এবং ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুল্যান্স রেলস্টেশন হাজির হয়। প্রসূতি ও নবজাতক ছেলে সন্তানকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুল্যান্সযোগে যশোর জেলা হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড-২ এ ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, প্রসূতির বয়স আনুমানিক ২৫ এবং তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়, মা এবং নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।


সুরমা-কুশিয়ারার ৪ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপরে

নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার শঙ্কা
আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৫ ১৩:১৭
সিলেট ব্যুরো

ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা উজানি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে করে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদী দুটির চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বইছে ১৩ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায়। যেখানে বিপৎসীমা হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। অমলশিদে কুশিয়ারা নদীর পানি বইছে ১৭ দশমিক ২৫ মিটার উচ্চতায়, যেখানে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। শেওলায় কুশিয়ারা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায় বইছে, যেখানে বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৪৬ মিটার ওপরে রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বইছে ৯ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় যা বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৩৪ মিটার বেশি।

পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদনদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে উজানের ঢলের প্রভাব বেশি পড়ছে সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলোতে।

এদিকে, জেলার ধলাই নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো—সারি, ডাউকি ও সারি-গোয়াইন নদ-নদীর পানি কমতির দিকে আছে।

জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ভারতের দিক থেকে হঠাৎ করে ঢল নামায় কুশিয়ারা নদীর পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড়ঘেঁষে অনেক ঘরবাড়ি আছে, এখনই পানি না নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত হওয়ার ভয় আছে। আগে থেকে যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। নিচু এলাকা ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। প্রত্যন্ত ও প্লাবনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।


লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা, রুখতে জাল দিয়ে ঘেরা হবে সুন্দরবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রবিউল ইসলাম (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সুন্দরবন বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় প্রায়ই বাঘ চলে আসে। সম্প্রতি এই ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই লোকালয়ে বাঘের প্রবেশ রুখতে বাঘ প্রকল্পের বিস্তীর্ণ অংশ ঘেরা রয়েছে জালের বেড়া দিয়ে। তবে বহু অংশে জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রয়েছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় এখনও দেওয়া হয়নি জালের বেড়া। এবার বন্যপ্রাণী বিশেষ করে বাঘের প্রবেশ থেকে বাসিন্দাদের সুরক্ষিত করতে পুরনো নেট পরিবর্তন করে নতুন নেট লাগানো হবে। একইসঙ্গে, এখনও পর্যন্ত যেসব এলাকা অরক্ষিত রয়েছে সেগুলি প্রথমবার জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে।

বাঘ প্রকল্পের দুটি রেঞ্জে ১০০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে জালের বেড়া রয়েছে। এই পুরো এলাকা জুড়ে নতুন জাল লাগানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন আধিকারিকরা। জুলাইয়ের শেষ থেকে তাঁরা এই কাজ করতে চাইছেন। সে বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন আধিকারিকরা। এই অবস্থায় কথাটা যার প্রয়োজন? কত খরচ পড়বে? তার হিসেবে চলছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বন বিভাগের কাছে প্রস্তাব দেবেন আধিকারিকরা। এবিষয়ে বাঘ প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন জানিয়েছেন, এ নিয়ে এখনও পরিকল্পনা চলছে। জুলাইয়ের শেষ থেকে এই কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন। প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে সুন্দরবনে। যার ফলে বিভিন্ন অংশে জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। আর সেই সুযোগে বার বার লোকালয়ে এসে পড়ে বাঘ। তাছাড়া, বহুদিন ধরে নতুন জল লাগানো হয়নি। অনেক জায়গায় জলের বেড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এসব কারণেই নতুন জাল লাগাতে উদ্যোগী হয়েছেন বা প্রকল্পের আধিকারিকরা।

উল্লেখ্য, বিশেষ করে গত বছর সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামগুলিতে বাঘের আনাগোনা বেড়েছিল। এইসবের কারণে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। সে কথা মাথায় রেখেই ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় কোনও বনাঞ্চল রাখতে চাইছেন না আধিকারিকরা। তাই বাসিন্দাদের সুরক্ষায় যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত জালের বেড়ার সুযোগে বাঘ লোকালয়ে প্রবেশ না করতে পারে তারজন্য নতুন জল টাঙানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছেন বাঘ প্রকল্পের আধিকারিকরা।


কুরবানি সামনে রেখে পাথরঘাটায় জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাথরঘাটা(বরগুনা)প্রতিনিধি

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা।আসন্ন কুরবানীকে কেন্দ্র করে পাথরঘাটায় জমে উঠেছে গবাদি পশুর হাট।গত কয়েকদিন থেকে থেমে থেমে ঝিরিঝিরি ও মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে পাথরঘাটায়। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও পাথরঘাটার সব থেকে বড় গরুর হাট নাচনাপাড়া মানিকখালী বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোরবানিকে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে গরু।আজ সোমবার(২জুন) সকাল থেকে শুরু করে দুপুর তিনটা পর্যন্ত ছোট-বড়-মাঝারি আকারের গরু, কয়েক বছর লালন পালনের পর বিক্রির জন্য হাটে তুলেছেন খামারিরা। এদিন সরবরাহ বেশি থাকায় মূল হাটের আশেপাশেও গরু বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন ক্রেতারা।

হাটে ক্রেতা আনাগোনা থাকলেও বিক্রি ছিল কিছুটা কম। অধিকাংশই দেখেছেন, যাচাই করছেন দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ছোট আকারের দুই থেকে চার মন ওজনের গরু, বিক্রি হয়েছে ষাট হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। মাঝারি আকারের তিন থেকে পাঁচ মন ওজনের গরুর দাম, ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। বিশাল আকারের গরু এই বাজারে তেমন ছিল না।

নাচনাপাড়া ইউনিয়নের জ্ঞানপাড়া গ্রামের রুস্তম আলী জানান, বাজারে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার গরুর চাহিদা বেশি। যারা ছোট গরু বাজারে এনেছেন তারা কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন। বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় বিক্রিও কম। খুব বেশী লাভ হচ্ছে না।

নাচনাপাড়া ইউনিয়নের খামারি ফারুক "প্রতিদিনের সংবাদকে" বলেন, পশু পালনে খরচ বেড়েছ। কিন্তু সে তুলনায় মিলছে না দাম। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর ২ হাজার টাকায় যে খড় পাওয়া যেত এবছর তার দাম ৩ হাজার টাকা। ভূষি, খুদ, কুড়ার দামও প্রায় আগের তুলনায় ৫০ ভাগ বেড়েছে। খরচ বাড়লেও গরুর দাম আগের মতোই।

ক্রেতাদের ভাষ্য, বৈরি আবহাওয়ার জন্য ক্রেতা কম। এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে যারা বড় বড় গরু কিনতেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে তাদের বেশিরভাগ পলাতক। ফলে বাজারে গরু বেচাকেনা কম। সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ। এ কারণে বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা।

রাসেল নামের এক ব্যাপারী "প্রতিদিনের সংবাদকে" বলেন, যারা পলাতক তারা অনেক টাকার মালিক ছিল। অনেকগুলো কোরবানি দিত। বড় থেকে শুরু করে পাতি নেতারাও গরু কিনত। সেই অংশটা বাজারে না আসায় চাঙ্গা ভাবটা নেয়।

জ্ঞানপাড়া গ্রামের নসির মীর গরু কিনতে এসে বলেন, আমি একটি গরু আগেই কিনেছি এখন, ঘুরে ঘুরে গরু দেখছি। বাজেট আর পছন্দ মতো হলে আরও একটা কিনব।তিনি আরো বলেন, কোনো হাটেই জমজমাট বেচাকেনা হচ্ছে না। বড় গরুর বিক্রি নেই বললেই চলে। বড় গরুর খামারিদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

ইজারাদার হাবিবুর রহমান "প্রতিদিনের সংবাদ"কে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর হাটে গরু বেচা কেনা খুবই কম। আগে এমন সময় হাটে প্রায় ১০০ গরু বিক্রি হতো আর এ বছর ৫০ টা ও বিক্রি হচ্ছে না। তবে শেষ দিকে গরু বিক্রি বাড়বে বলে প্রত্যাশা এই ইজারাদারের।তিনি ক্রেতা- বিক্রেতাদের উদ্দেশ্য আরো বলেন, হাটে পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন তারা।


banner close