দেশজুড়ে চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সারা দেশের মতো ফরিদপুরেও রোববার সকাল ৮টা থেকে এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এদিন সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর-২ আসনের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন মো. সুজাত মাতুব্বর (৪০) নামে একজন। সুজাত ইউসুফদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। দুটি পা নেই তার।
ভোট দিতে আসার অনুভূতি জানাতে গিয়ে গণমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি পছন্দমতো তাকে দিব।’
তিনি বলেন, ‘আজকে নির্বাচনের পরিবেশ খুবই ভাল মনে হচ্ছে। তাই পা না থাকা সত্বেও নির্ভয়ে হুইলচেয়ারে চেপে সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছি।’
পার্শ্ববর্তী সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ১১০ বছর বয়সি মোফাজ্জেল মাতুব্বর। তিনি বলেন, ‘এটাই হয়ত আমার জীবনের শেষ ভোট। তাই কষ্ট হলেও দিতে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চোখে কম দেখি। তারপরেও ভোটের পরিবেশ ভাল মনে হইতেছে।’
জোগারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভোট দিতে আসেন ১৫ সন্তানের জননী শত বছর বয়সী কাঞ্চন বেগম। তিনি বলেন, ‘এই বয়সে ভোট দিতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে। ভোট ভাল হইতেছে। কোথাও কোনো গ্যাঞ্জাম নেই।’
ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের ১১৫টি ভোটকেন্দ্র ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মোট ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৬৭ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৮ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯।
সালথার গট্টি ইউনিয়নের জয়ঝাপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বুলেট বৈরাগী বলেন, ‘কোথাও কোনো ধরণের সমস্যা নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ বিকাল ৫:৩০ মিনিটে রাজধানীর উত্তরা সার্বজনীন মন্দির পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার-ভিডিপি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা যেন সবার অংশগ্রহণে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয়, সে লক্ষ্যে আনসার-ভিডিপি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা আনসার-ভিডিপি এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় উত্তরা সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি নৃপেন চন্দ্র আনসার-ভিডিপির সদস্যদের দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে বলেন, পূজার ৫ দিনসহ পূজার আগে ৩ দিন এবং পূজার পরে ১ দিন—মোট ৯ দিনব্যাপী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের উদ্যোগ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তার আস্থা আরও বৃদ্ধি করবে। তিনি মহাপরিচালকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পূজামণ্ডপে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, “এবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তরুণ আনসার সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, আধুনিক প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল রিপোর্টিং সিস্টেম এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বিত কার্যক্রম—সব মিলিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী ও কার্যকর।”
মহাপরিচালকের এ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপ-মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, উপ-মহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আশরাফুল আলম, পরিচালক (ঢাকা মহানগর আনসার) মো. আসাদুজ্জামান গণি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও জিঞ্জিরাম নদীর তীব্র ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, স্কুল, মসজিদ মাদ্রাসাসহ গ্রামের পর গ্রাম। ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
সোমবার দুপুরে উপজেলার পুল্যাকান্দি মধ্যপাড়া ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে স্থানীয়দের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে কয়েকশ মানুষ অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মুসা আলম, শিক্ষক মাহমুদুন নবী উজ্জল, আইয়ুব আলী, রবিউল ইসলামসহ অন্যান্যরা। এ সময় বক্তারা বলেন, নদী বেষ্টিত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা তিনটি নদী দীর্ঘদিন থেকে ভাঙন কবলিত। নদী ভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বহু মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। এখনই ভাঙন রোধ করা না গেলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা। এ সময় স্থায়ী বাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ করে স্লোগান দেন।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার অভিযোগে যুবলীগের তিন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাতে বুড়িচং থানা পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করে।
সোমবার বিকেলে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রবিবার রাতে বুড়িচং থানা পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন মোকাম ইউনিয়নের আবিদপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আনোয়ার, আবুল হাসেমের ছেলে মোখলেসুর রহমান এবং আবু মুসার ছেলে মো. শাহজাহান। তারা তিনজনই মোকাম ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় সদস্য।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যায় মোকাম ইউনিয়নে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে বিশেষ অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনের নেতৃত্ব দেন বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. মজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও মজিবুর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, যুবলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে কেক কাটা, স্লোগান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এরপর রাতেই পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে যুবলীগের ওই তিন নেতাকে আটক করে।
এ বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ভিডিওতে তাদের উপস্থিতি ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের প্রমাণ মিলেছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি আশপাশের আবাসিক এলাকাকে সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। হামলার কারণে আতঙ্কিত রোগীরা অসুস্থ অবস্থায় নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গাজানগরী দখলের জন্য স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরই অংশ হিসেবে এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা চালানো হচ্ছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার চিকিৎসকরা গত রোববার ইসরায়েলি হামলার ‘ভয়াবহ দৃশ্যের’ বর্ণনা দিয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা পরিচালক হাসান আল-শাইর বলেন, কঠোর পরিস্থিতি ও আতঙ্কের মধ্যেই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অন্তত ১০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন, হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল এমন দাহ্য অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা নির্দিষ্ট একটি এলাকা পুড়িয়ে দিতে সক্ষম। সেনারা হাসপাতালের চারপাশে বিস্ফোরকবাহী গাড়ি মোতায়েন করেছে।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফাকে চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা আল-হেলু হাসপাতালেও বোমা হামলা চালিয়েছে। সেখানে ক্যান্সার ও নবজাতক বিভাগে অপরিপক্ব অবস্থায় জন্ম নেওয়া ১২টি শিশু চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসাকর্মীরা ওয়াফা সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, আল-হেলু হাসপাতালে ৯০ জনের বেশি চিকিৎসক, নার্স ও রোগী আটকে আছেন। ইসরায়েলি ট্যাংক হাসপাতালের চারপাশে অবস্থান নিয়েছে। ঢোকা ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গত রোববার মক্কা টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনে বোমাবর্ষণ করেছে। এর আগে রেমাল ও সাবরা অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে এলাকা ছেড়ে দিতে সতর্ক করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহে গাজা নগরীর অন্তত ৫০টি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল।
আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ব্যাপক ও বেপরোয়াভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ভারী গোলাবারুদ, ড্রোন এবং বোমা ব্যবহার করে ভবনের ভিত্তি পর্যন্ত ধ্বংস করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় রাস্তার মূল ফটকে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে বাসায় প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে চিকিৎসক ও তার পরিবার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত দোকান উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে ইউএনও বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন গরুহাটার বটতলাসংলগ্ন কাঁচাবাজার এলাকায় সিরাজগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. শহীদুল ইসলাম খান তার পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তার বাসার প্রধান ফটকের সামনেই অনুমোদনহীনভাবে চায়ের দোকান বসানো হয়েছে। এতে করে তাদের বাসায় প্রবেশ-প্রস্থান ব্যাহত ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে সোমবার পুরাতন গরুহাটার বটতলাসংলগ্ন কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে শহীদুল ইসলাম খান এর বাসার গেইটের সম্মুখে বাশের খুঁটি ও তাঁবু টানিয়ে চায়ের দোকান দেওয়া হয়েছে। দোকানটির এক পাশ দিয়ে টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া। আরেক পাশ দিয়ে দোকানের লোকজন বসার জন্য চেয়ার বিছিয়ে রাখা হয়েছে। গেটের সামনে প্রতিবন্ধকতা থাকায় সরু পথ দিয়ে ন্যুব্জ হয়ে কোনোরকমে পরিবারটিকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সম্পূর্ণ গেটিটি খুলতে না পারায় তাও মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে।
ডা. শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও উপজেলা প্রশাসন দুবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দোকানটি উচ্ছেদ করেছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় আবার দোকান বসানো হয়েছে। এতে আমাদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ থেকে রেহাই পেতে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
অন্যদিকে বাসার প্রবেশপথে দোকান দেওয়া চা দোকানি অভিযুক্ত মো. আরিফ দাবি করেন, দোকানটি অবৈধ নয়। তিনি বলেন তারা অবৈধভাবে দোকান বসায়নি । এটা তাদের নিজস্ব জমি। জমির বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে। তবে সেসময় তিনি কাগজপত্র দেখাননি।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওই স্থানে দোকান বসানো ও একাধিকবার উচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। এতে শুধু সংশ্লিষ্ট পরিবার নয়, আশপাশের এলাকাবাসীর মধ্যেও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অস্থায়ীভাবে দোকান দিয়ে ডাক্তারকে বেকায়দায় ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক শেখ তাকী তাজওয়ারকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও তাদের আশ্রয়দাতা কক্সবাজারের স্থানীয়দের জন্য মৌলিক অবকাঠামো এবং জরুরি সেবার জন্য ৫৮.৬ মিলিয়ন ডলারের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এডিএফ) অনুদান এবং ২৮.১ মিলিয়ন ডলারের স্বল্প সুদে একটি ঋণের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এডিবি সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে এডিএফ অনুদান দিয়ে থাকে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং আজ বাংলাদেশ ও এডিবি’র পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ঢাকায় ইআরডি কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এডিবি’রর কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয়দের স্থিতিশীলতা ও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ জোরদারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থী শিবিরগুলার বাসিন্দা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করছি।
তিনি আরো বলেন, নতুন এই অনুদান জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আমাদের পূর্ববর্তী সহায়তা ও এর অতিরিক্ত অর্থায়নের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এডিবি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের সুবিধার্থে মোট ১৭১.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ঋণ প্রদান করেছে।
‘ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস অ্যান্ড লাইভলিহুড ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটিজ ইমপ্রুভমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য, সড়ক ও সেতু, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুত এবং দুর্যোগ সহনশীলতা উন্নত ও সম্প্রসারিত করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার ও ভাসান চর অঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এবং আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগণের জন্য পৃথক পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা হবে।
প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজারে সোলার-পাওয়ারড স্ট্রিটলাইট স্থাপন বা প্রতিস্থাপন, ভাসান চরে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন এবং রান্নার জন্য বায়োগ্যাস উৎপাদনকে সমৃদ্ধ করা হবে।
কক্সবাজার ও ভাসান চরে প্রাকৃতিক সমাধানে ড্রেনেজ খাল পুনঃস্থাপন করা হবে এবং নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সুবিধা বাড়াতে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের ৯টি উপজেলায় মিনিপাইপড পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের নয়টি উপজেলাজুড়ে ক্ষুদ্র পাইপযুক্ত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হবে।
টেকনাফের পানি সংকটাপন্ন এলাকায় পরিশোধিত পানি সরবরাহের জন্য পালংখালী ইউনিয়ন ও উখিয়ায় একটি ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে এবং একটি ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। কক্সবাজার ও ভাসান চরে রাস্তার উন্নয়নের ফলে গতিশীলতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ বাস করছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী ও শিশু। নোয়াখালী জেলার ভাসান চরে ৩৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়েছে।
এডিবি হলো একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার বর্তমানে সদস্য ৬৯টি। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য ৫০টি।
‘প্রতিটি হৃদয়ের স্পন্দনের যত্ন নিন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ব হৃদরোগ দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এ র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় র্যালীটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে বেশকয়েকটি সড়কটি প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ব্রি. জেনারেল জিএম মনিরুল ইসলাম, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবুল হাসনাত জাফর, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক আরিফ মোহাম্মদ সোহানসহ আরো অনেকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে অল্প বয়সে মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একটু সচেতন হলেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। পরিমিত পরিমাণ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামসহ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে এ রোগ থেকে সকলে মুক্তি পাবে। আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল, ডায়েবেটিস, ব্লাড সুগার ও ব্লাড প্রেসার কত আছে সবসময় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সহায়তা প্রদান করা হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে বসতবাড়িতে ও মাঠে চাষযোগ্য শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেন উপজেলা কৃষিপুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।
এ সময় সুবিধাভোগী কৃষকদের উপস্থিতিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আউলিয়া খাতুন।
অন্যান্যের মাঝে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সৈয়দ শাকিল আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সুরাইয়া আক্তার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মশিউর রহমান, বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার মনি ফকির, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, কৃষি উপসহকারী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) মনজুরুল আলম, আয়নাল হক, সফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মোট ৮৪০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এদের ৩০০ জন কৃষকের মাঝে বসতবাড়িতে চাষযোগ্য শীতকালীন সবজি বেগুন, পালংশাক, লালশাক, মটরশুটি, লাউ, মুলা, বাটিশাকসহ ৭ ধরনের ৫০০ গ্রাম বীজের ৯ প্যাকেট দেওয়া হয়।
মাঠে চাষযোগ্য সবজি প্রণোদনার অংশ হিসেবে ৫৪০ জনের মাঝে প্রত্যেকের ২০ শতাংশ জমির জন্য বিভিন্ন ধরন এবং পরিমাণের লাউ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া ও শশা বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেককে ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে।
‘কোনো দয়ালু মানুষ যদি আমারে একটা ঘর বানাইয়া দিতো আর একটা টিউবওয়েল বসাইয়া দিত, আমি সারাজীবন নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করতাম। রাতে যদি একটু শান্তিতে নামাজ পড়তে আর ঘুমাতে পারতাম, তবে সব দুঃখ ভুলে যাইতাম।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজা বেগমের বয়স এখন ৭৩ বছর। ২০ বছর আগে বিধবা হওয়া এই নারী এখন একেবারেই নিঃস্ব। ভাঙা মাটির ঘর ছাড়া তার কোনো জমিজমা নেই। চারপাশের মাটির বেড়া হেলে পড়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। মরিচাধরা টিনের চালের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকে পড়ে। ফলে ঝড়-বৃষ্টির দিনে তার দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। রাতে একটি পুরোনো জলচৌকির ওপর বিছানো জায়নামাজে ঘুমাতে হয় তাকে।
অন্যের টিউবওয়েল থেকে পানি আনা ও ল্যাট্রিন ব্যবহার করতেও অপমানজনক কথা শোনতে হয় তাকে। তাই নতুন একটি ঘরের পাশাপাশি নিজস্ব টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন চান তিনি, যাতে অন্তত নিরাপদভাবে জীবনযাপন করতে পারেন।
চোখে ছানি পড়ায় কয়েক বছর আগে অপারেশন করা হলেও এখন চশমার সাহায্যে আবার কোরআন পড়তে পারেন ফিরোজা। কিন্তু প্রতিরাতে আতঙ্কে থাকেন- এই বুঝি ঝড়-বৃষ্টি এলো! বয়সের কারণে চলাফেরার শক্তি কমে গেছে, শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ।
ফিরোজা বেগমের তিন ছেলে থাকলেও তারা সংসারের টানাপোড়েনে মায়ের জন্য কোনো সহায়তা দিতে পারছেন না। ফলে এক ভাঙা ঘরেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে।
প্রতিবেশীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই এ দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ফিরোজা। কোনো সরকারি সহায়তা তিনি এখনো পাননি। স্থানীয়রা মনে করেন, দ্রুত সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে তার জন্য একটি ঘর, টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করা উচিত। পাশাপাশি তাকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনাও জরুরি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি, শিগগিরই তার জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, ফিরোজা বেগমকে সরকারি সহযোগিতার আওতায় আনা হবে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু সে দাবি এখনো পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে জনসাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালপত্র পরিবহন করেত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীদের।
গজারিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন বলেন, এই ব্রিজটা প্রথম অবস্থায় বাঁশের সাঁকো ছিল। পরে আমাদের এলাকাবাসীর উদ্যোগে কাঠের সাঁকোতে রূপ দেওয়া হয়। বর্ষার সময় এই সাঁকো পুরোটা ডুবে যায়। এই ব্রিজটা যদি পাকাকরণ করা হয়, তাহলে আশেপাশের সকল গ্রামের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারব।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রিজটা করে দিত, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে প্রায় ডুবে যায়। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। এ জন্য অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয় না। এতে আমরা পড়াশোনায় পিছিয়ে যাই। সরকারের কাছে অনুরোধ যেন ব্রিজটা সুন্দর করে দেওয়া হয়, যাতে আমরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারি।
গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ব্রিজ না থাকায় আমাদের হাটে-বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোনো রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়। এই রাস্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে থাকে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারত।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের ওপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করব। অনুমোদনসাপেক্ষে এটা পরবর্তীতে উন্নয়ন হবে আশা করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে কাজটি দ্রুত করার চেষ্টা করব।
নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি বাংলাদেশের একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টি, সম্প্রতি এ মিষ্টি জি.আই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। মিষ্টিটি আকারে বালিশের মতো বড় না হলেও দেখতে অনেকটা বালিশের মতো এবং এর উপরে ক্ষীরের প্রলেপ থাকাতে একটি আবরণীসমেত বালিশের মতো দেখা যায়। এই মিষ্টি গয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত। বিয়ে, জন্মদিন, ঈদ, পূজা, নতুন জামাইয়ের শশুর বাড়ি আগমনসহ বিভিন্ন উৎসবে জেলার মানুষ বালিশ মিষ্টি বেশ আগ্রহের সাথে কিনে নিয়ে যান।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেত্রকোণায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপিয়াসী মানুষ বালিশ মিষ্টির স্বাদ নিতে আসেন জেলা শহরের বারহাট্টা রোডের গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। জেলার ঐতিহ্যবাহী এ মিষ্টি এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পরিচিত একটি পণ্য। দেশের বাহিরে যাওয়ার সময় অনেকে ভালোবেসে নিজ জেলার স্মারক হিসেবে নিয়ে যান এ মিষ্টান্ন।
বালিশ মিষ্টি তৈরি হয় দেশীয় গাভির খাঁটি দুধ-ছানা, চিনি ও ময়দা দিয়ে। প্রথমে দুধের ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে মন্ড তৈরি করা হয়। এর পরে বানানো হয় বিভিন্ন সাইজের বালিশ। পরে তা ভাজা হয় চিনির গরম রসে। এর পর ঠান্ডা করেও চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয় অনেকক্ষণ। এক সময় তা রসে টইটম্বুর হয়ে যায়। বিক্রির সময় বালিশের ওপর দেয়া হয় ক্ষীরের প্রলেপ বা দুধের মালাই। এছাড়াও বালিশ বানানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা গোপনীয়তা আছে যা ব্যবসার স্বার্থে প্রকাশ করতে চান না কারিগররা।
পূর্বে দাম কম তুলনামূলক কম থাকলেও বাজারে বালিশ মিষ্টির কাঁচামালের দাম বাড়ায় বেড়েছে এ মিষ্টির দামও। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন আকৃতি ও দামে বিক্রি করা হয় এ মিষ্টি।
এ মিষ্টিটি ৩০, ৫০, ১০০, ৩০০, ৫০০, ১০০০ টাকা দামে বিভিন্ন আকৃতিতে পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। বড় আকৃতির বালিশ মিষ্টি একা খাওয়া সম্ভব হয় না, এক হাজার টাকার বালিশ মিষ্টি ৫/৬ জনে অনায়েসে খাওয়া যায়।
গয়ানাথের অন্যতম স্বত্বাধিকারী বাবুল মোদকসহ কারিগড়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বালিশ মিষ্টির জনক গয়ানাথ ঘোষ। হিন্দুদের মধ্যে ঘোষ পরিবার মিষ্টি তৈরিতে বিখ্যাত।
নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোডের ‘গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার'-এর স্বত্বাধিকারী গয়ানাথ ঘোষ শত বছরেরও বেশি সময় আগে বালিশ মিষ্টি উদ্ভাবন করেন। গয়নাথের স্বপ্ন ছিল নতুন ধরনের মিষ্টি আবিষ্কার করা। একদিন তিনি বিশাল সাইজের একটি মিষ্টি তৈরি করলেন এবং ক্রেতাদের খেতে দিলেন এবং ক্রেতারা খুব প্রশংসা করল। তাই ক্রেতাদের পরামর্শে মিষ্টিটির নাম রাখেন বালিশ। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় অল্পদিনেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বালিশের নাম। এর উদ্ভাবক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান গয়ানাথ ঘোষও। তাই এক সময় তার নামটিও জড়িয়ে যায় বালিশের সঙ্গে। লোকমুখে বালিশের নাম হয়ে ওঠে ‘গয়ানাথের বালিশ’।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় ঘোষ পরিবারের অনেকেই ভারতে চলে যান। কিন্তু গয়ানাথ ঘোষ যাননি। কিন্তু পরিবারের টানে গয়ানাথ ঘোষ ১৯৬৯ সালে ভারতে চলে যান। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠানটি বালিশ তৈরির প্রধান কারিগর নিখিল মোদকের কাছে তা বিক্রি করেন। নিখিলের মৃত্যুর পর এটি এখন পরিচালনা করছেন, তার তিন ছেলে বাবুল, দিলীপ ও খোকন মোদক।
বড় ছেলে বাবুল মোদক জানান, ‘গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের প্রতিষ্ঠাতা গয়ানাথ ঘোষ, উনি একশত বছর আগে এ দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন। গয়ানাথ ১৯৬৫ সালে আমার বাবা নিখিল চন্দ্র মোদকের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দেন। আমার বাবা তার প্রতিষ্ঠানে মিষ্টি তৈরির প্রধান কারিগর ছিলেন, ১৯৬৫ সালে বাবা এই প্রতিষ্ঠান কেনার পর থেকে আমরা তা পরিচালনা করে আসছি। নেত্রকোনা ব্যাতিত আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোথাও কোন শাখা নেই। আমরা অনলাইনে পার্সেলেও এ মিষ্টি বিক্রি করি না, যদি কেউ বালিশ মিষ্টির স্বাদ নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নেত্রকোনায় এসে গয়নাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকেই নিতে হবে। এটি জি.আই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা নেত্রকোনাবাসী গর্বিত।’
জি.আই পণ্যের স্বীকৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান গণমাধ্যমকে জানান, ‘নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি সারাদেশেই পরিচিত, নেত্রকোনার নাম মুখে নিলেই বালিশ মিষ্টির কথা সবার স্মৃতিপটে ভেসে উঠে, আমরা নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টিকে জি.আই পণ্যে ঘোষণার জন্যে সকল প্রসিডিওর মেইনটেইন করে পত্র লিখেছি এবং যতটুকু শুনতে পেরেছি এটির অনুমোদন হয়ে গেছে। অফিশিয়াল চিঠি পেলেই আমরা এই জি.আই পণ্যের যে সার্টিফিকেট তা গ্রহণ করার জন্যে যাব এবং এটিকে উদযাপন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর পূর্বে আমরা জেলার বিজয়পুরের সাদামাটি জি.আই পণ্যের সার্টিফিকেট আমরা গ্রহণ করেছি, এখন যদি আমরা বালিশ মিষ্টির জি.আই সার্টিফিকেটটি পাই তাহলে অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের আরো একটা ধাপ এগোল। জেলায় এমন আরো কোন পণ্য থেকে থাকলে সেগুলো অনুসন্ধান করে সেগুলো যেন জি.আই পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় সে প্রচেষ্টা আমরা অভ্যাহত রাখব।’
এ অঞ্চলে বালিশ মিষ্টির ঐতিহ্য নিয়ে প্রচলিত বহু ছড়া যুগ যুগ ধরে চলছে আমজনতার মুখে মুখে। বালিশ নিয়ে এমন একটি লোকজ ছড়া হলো-
‘জাম, গোল্লা পেয়ে শ্বশুর করল চটে নালিশ,
কথা ছিল আনবে জামাই নেত্রকোনার বালিশ’
গয়ানাথের বালিশ মিষ্টি এতটাই জনপ্রিয় যে, প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসেও এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে। স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকরা বালিশ মিষ্টিকে নিয়ে ছড়া-কবিতাও লিখে থাকেন।
ছড়াকার সঞ্জয় সরকার লিখেছেন,
‘নগদ টাকায় কাজ হয় না
হয় না তেল মালিশে
বসের মন তুষ্ট করে নেত্রকোনার বালিশে’
জেলা শহরের বারহাট্টা রোডের সেই ছোট্ট গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এখন অনেক বড় হয়েছে। সারাদিন ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকে।
বারহাট্ট রোডের প্রধান শাখায় বালিশ মিষ্টি তৈরির নিজস্ব কারখানা রয়েছে। জেলা শহরের স্টেশন রোড ও মেছুয়া বাজারে দুটি শাখা রয়েছে, জেলা শহরের বাহিরে তাদের কোথাও কোনো শাখা নেই।
সূত্র: বাসস
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙ্গাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু, সে দাবি এখনও পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালামাল পরিবহন করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীর।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রীজটা তাড়াতাড়ি করে দিতো, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে ডুবে থাকে। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয়না। এতে আমরা পড়াশুনায় পিছিয়ে যাই।
গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ব্রীজ না থাকায় আমাদের হাঁটে বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোন রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারতো।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঘবেড়-গোহালিয়া খালের উপর সাঁকোটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা হবে।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের উপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোন প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করবো। আশা করি অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তীতে উন্নয়ন কাজ সাধিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল রনী বলেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে সোহেল মেম্বার (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল মেম্বার উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সোহেল মেম্বার অজ্ঞাত তিনজন সহযোগীকে নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এসময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেল মেম্বারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল মেম্বারকে আটক করে এবং গ্রামবাসীকে খবর দেয় ।
খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেল মেম্বারকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পরে মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।
আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দীন জানান, “ আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। তবে কি কারণে তাকে মারা হলো বিষয়টা এখনও জানা যায়নি।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
প্রসঙ্গত, সোহেল মেম্বার আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজু সহ গ্রেপ্তার করেছিল।