আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে আসার মধ্যদিয়েই বাংলাদেশের বিজয়ের পূর্ণতা পায়।
আজ বুধবার সকালে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। তবে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে আমাদের বিজয়ও ছিল অসম্পূর্ণ। বিজয়ের মহানায়ক নেই, বিজয়ও যেন অনুপস্থিত। ১০ জানুয়ারি যখন তিনি এলেন, তখনই ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় পূর্ণতা পেল।’
তিনি বলেন, ‘৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারো উল্টো পথে যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ ২১টি বছর দেশ আবারো পাকিস্তানি ও সাম্প্রদায়িক ধারায় চলে যায়। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, ষড়যন্ত্র, রক্তপাত ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পদে পদে নানা চ্যালেঞ্জ আমরা অতিক্রম করেছি।’
তিনি আরও বলেন, আজকের দিন আমাদের অঙ্গীকার, আমাদের দেশে এখন সম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির যে বীজবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করেছে, এই সাম্প্রদায়িক বীজবৃক্ষকে উৎপাটন কওে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়কে সংহত করে, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
ভাঙা সড়ক আর তীব্র যানজটে অতিষ্ট কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দারা। এছাড়াও জেলা শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ শাসনগাছা-আলেখারচর সড়কটি ভেঙে বাড়তি ভোগান্তি যোগ করেছে। এ নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই।
সরেজমিনে, কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশের পশ্চিমের শাসনগাছা আলেখারচর সড়কটির প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখে বোঝার উপয় নেই, এটি একটি সড়ক। সড়কটি ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। কাদাপানি মাড়িয়ে যানবাহনগুলো নগরীতে প্রবেশ করছে। সড়কের দুপাশে ফুটপাতের একই অবস্থা। হাঁটাচলা করতে পারেনা পথচারীরা। এছাড়াও নোয়াপাড়া পাসপোর্ট অফিসের সামনে এবং শাসনগাছা ফ্লাইওভার পর্যন্ত বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
দিঘীরপাড়ের বাসিন্দা ষাটোর্ধ নোয়াব আলি বলেন, এখানে থাকি বহু বছর। মেঘের সিজন আইলে আর চলন যায় না। নোয়াব আলী যোগ করেন গেলো এক বছর ধরে এমন অবস্থায় আছে সড়কটি।
এই সড়কের পাশের একটি গ্যারেজ মালিক আবুল হোসেন। তিনি বলেন, জেলা শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির এমন বেহাল অবস্থা হবে কেন। এই সড়কটির কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
নোয়াপাড়ার স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা হয়। কিছুদিন আগে অটোরিকশা উল্টে দুইজন আহত হয়েছে। খুবই ভয়াবহ অবস্থা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, সড়কগুলো খুব দ্রুতই সংস্কার করা হবে। এই সড়ক দিয়ে অনেক ভারী যানবাহন চলাচল করে। এবার ক্রংকিটের ডালাই করা হবে।
শাসনগাছা হয়ে কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশ করলেই রানীর বাজার নজরুল অ্যাভিনিউ, ইপিজেড সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের অবস্থাও ভয়াবহ। সড়কগুলো ভেঙে চলাচল অনুপোযোগী হয়ে আছে। এই ভাঙাচোরা সড়কের সাথে যোগ হয়েছে তীব্র যানজট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে মোট ১১০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে, ৫ কিলোমিটারের মত কাঁচা সড়ক রয়েছে। নানান অনিয়মের কারণে এসব সড়কের অর্ধেকেরও বেশি এলাকায় যানজট নিত্য দিনের ভোগান্তি। ছুটির দিনেও যানজটের কবলে পরতে হয় সাধারণ মানুষকে। অবৈধ পার্কিং, অবৈধ দোকানপাট ও হকার, মাত্রারিক্ত ইজিবাইক ও অটোরিকশার বিশৃঙ্খলা, সড়ক নির্মান ও মেরামত, অপর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পুলিশের জনবলের অভাব এবং সচেষ্টার অভাবে এই যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছে না সাধারণ নাগরিকরা। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে চেয়ে মানুষ এখন অধৈর্য্য হয়ে উঠছে।
গেলো কয়েকদিনে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভয়াবহ যানজটের চিত্র। বিশেষ নগরের কান্দিরপাড় থেকে পুলিশ লাইন্স সড়ক, টমছমব্রিজ সড়ক ও রাণীর বাজার সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে। এছাড়াও নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, মোগলটুলি, ফৌজদারী মোড়, পুলিশ লাইন্স, বাদুরতলা, সালাউদ্দিন মোড়, টমছমব্রিজ, শাসনগাছা, বাদশা মিয়ার বাজার, রেইসকোর্স, রানীর বাজার বেশ কয়েকটি স্থানে যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। এসব এলাকায় সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা/১০টা পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে থেমে থেমে।
কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সারোয়ার মোঃ পারভেজ বলেন, লোকবলের প্রচণ্ড সংকট। এ জেলায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে ৭৯ জন। যেখানে অন্তত ২শ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত ট্রাফিক সদস্য দিয়েই যানজট নিরসন করার চেষ্টা আমরা করি।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন জানান, যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের একটি কমিটি আছে। তারা কাজ করছেন। আমরা শুধু সাধারণ মানুষ হাঁটার জন্য ফুটপাত দখল মুক্ত করে দিতে অভিযান পরিচালনা করতে পারি এবং সেটি পরিচালনা করছি। তবে এসব অভিযানও কোন ফল দিচ্ছে না এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমরা উচ্ছেদের কাজ করছি। আমাদের অন্যান্য কাজও রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচীব (ঐকমত্য) সাংবাদিক মনির হায়দার বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পর এদেশে সব চাইতে বড় ঘটনা হলো জুলাই অভ্যুত্থান। মুক্তিযুদ্ধের পর গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে এত বড় ঘটনা আর ঘটেনি। শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর কোনো জায়গায় এতবড় ঘটনা ঘটেনি। যে ঘটনার মধ্যে দিয়ে সরকার, মন্ত্রী এমপি এমনকি মসজিদের ইমাম পর্যন্ত পালিয়ে গেছে।
আজ শনিবার বিকালে গাংনী মিনি স্টেডিয়ামে জুলাই অভ্যুত্থান ফুটবল টূর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলার উদ্বোধনপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মনির হায়দার আর বলেন, জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে বিএনপি জামায়াতে ইসলামী এনসিপিসহ অন্যান্য দল থাকবে। শুধু ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ থাকবেনা। এদেশ ফ্যাসিবাদ আর কখনো ফিরে আসতে পারবেনা উল্লেখ করে মনির হায়দার বলেন, বিএনপি জামায়াত এনসিপি রাজনৈতিক কারণে তর্ক বিতর্ক বা ঝগড়া করবে কিন্তু ফ্যাসিবাদের ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা কেউ কারোর শত্রু না, আমাদের একমাত্র শত্রু ফ্যাসিবাদ।
মনির হায়দার বলেন, ফুটবল টূর্ণামেন্ট শুধু একটি খেলা নয়, খেলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দেই। জুলাই ২৪ আমাদের শিখিয়েছে ২০২৪ এর আগে এবং পরের বাংলাদেশে রাত আর দিনের সমান তফাৎ।
তিনি জুলাই প্রসঙ্গে আরও বলেন জুলাইয়ের ঘটনা আমাদের আফন করতে হবে। জুলাই আন্দোলনকে আমাদের চলাই বলাই রাতে দিনে সব সময় স্বরণ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্ণী জেনারেল অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ,।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, জেলা মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার সামসুল আলম সোনা,ফুটবল টুর্ণামেন্টের আয়োজক গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু প্রমুখ।
পরে প্রধান অতিথি মনির হায়দার দু দলের ফুটবলাদের সাথে কিশল বিনিময় করেন। এছাড়া ফুটবলে কিক দিয়ে খেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
হাজার হাজার নারী পুরুষ ফাইনাল খেলাটি উপভোগ করেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে'র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন বলেছেন, আগামীতে ক্ষমতায় যেয়ে যারাই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারি আচরন করবে তাদের পরিনতিও শেখ হাসিনার মতই হবে।
শনিবার (৯ আগস্ট ২০২৫) প্রেসক্লাব মিলনায়তনে
ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসানে 'জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভা ও দিনাজপুরের শহীদ পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ফাঁসির কাষ্টে ঝুলেছে। সাড়ে ১৫ বছর সাংবাদিকরা আন্দোলনের বাইরে থাকতে পারেনি। ১৫ বছর বিএনপি সমর্থক কোন পত্রিকা কোন ক্রোড়পত্র পায়নি। কিন্তু এবারে সব পত্রিকা ক্রোড়পত্র পেয়েছে।
তিনি সাংবাদিক সংগঠনের পাশাপাশি রাজনৈতি দলগুলোকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারি মহাসচিব ড. সাদেকুল ইসলাম স্বপন, দপ্তর সম্পাদক আবু বকর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম।
এ সময় খুরশিদ আলম বলেন, গত ১৬ বছরে ৬৬ জন সাংবাদিক জীবন দিয়েছে। সর্বশেষ গাজীপুরে আসাদুজ্জামান শাহিন জীবন দিয়েছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যতক্ষন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষে থাকেন ততক্ষন ভাল। কিন্তু যখন তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করেন তখন শত্রু হয়ে যান। সাংবাদিকরা কারো বন্ধু না।
জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, জুলাই বিপ্লব চূড়ান্ত বিপ্লব নয়। আরো বিপ্লব হবে। সাংবাদিদের ইসপাত দৃঢ় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতী আধিপত্যবাদি শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা যদি দিনাজপুরে দৃশ্যমান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারি তাহলে দিনাজপুর অনেক দুর এগিয়ে যাবে। আমরা একটা স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কথা আমরা ভুলে গেছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে হবে। আপনারা বিভাজন সৃস্টিকারিদের কোন অবস্থায় আশ্রয় দিবেন না।
বক্তারা আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবের মুল চেতনা ধরে রাখতে হবে। সাংবাদিকসহ সকলের মধ্যে বিভাজন মিটিয়ে ফেলতে হবে।
পৃথিবীতে যে পেশাজীবীদের অবদান অনস্বীকার্য সে পেশাটি হচ্ছে সাংবাদিক। নিরস্ত্র মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী জীবন দিয়েছে সাংবাদিকরা। ঘাতকদের বিচার না হওয়ায় সাংবাদিকরা জীবন দিয়ে যাচ্ছে।
যতদিন স্বৈরাচার থাকবে ততদিন সাংবাদিকদের তৎপরতা থাকবে।
সাহর-রুনির মামলা সারা পৃথিবীতে রেকর্ড হয়েছে কতবার পিছিয়েছে।
তারা আরো বলেন, অন্যায়ভাবে বেগম জিয়াকে জেলে রেখে মানসিক নির্যাতন করেছে। এ ভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকার তাদের পতনের প্রেক্ষাপট তৈরী করেছিল। সাংবাদিকদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান।
যে সন্তানরা যে ছাত্ররা মোবাইলে আসক্তন ছিল সেই সন্তানরাই সেই ছাত্রসমাজই আমাদের মুক্ত করেছে। আজকে আমাদের স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। সকল শ্রেনি পেশার মানুষ অংশগ্রহন করে জুলাই বিপ্লবকে সফল করেছে।
তারেক রহমান বলেছেছেন, সংসার চলার মত সম্মানি সাংবাদিকদের দিতে হবে।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন, সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সহ-সভাপতি শামিম কবির, শহর জামায়াতের আমির সিরাজুস সালেহীন, ইসলামী ছাত্রশিবির দিনাজপুর শহর শাখার সভাপতি মোশফিকুর রহমান, এনসিপি শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেজাউল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক একরামুল হক আবির ও শহীদ রবিউল ইসলাম রাহুলের পিতা মুসলেম উদ্দিন।
আলোচনা শেষে দিনাজপুরে শহীদ রবিউল ইসলাম রাহুলের পিতা মুসলেম উদ্দিননের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার প্রতিবাদে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার বেলা ১১ টায় সোনাইমুড়ী বাইপাস চত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সোনাইমুড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আল মাহমুদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনের বক্তব্য রাখেন সোনাইমুড়ী সভাপতি বেলাল হোছাইন ভূঁইয়া, সাবেক সভাপতি সামছুল আরেফিন জাফর, নাজমুল হক নাজিম, খোরশেদ আলম, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন সুমন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম মিয়া, সাবেক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মানিক, সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ শহিদুল ইসলাম রায়হান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সবুজ, সাংবাদিক আবদুল মতিন, জসিম উদ্দীন রাজ।
বক্তব্যে বক্তারা গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি অতিসত্বর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি তুলেন।
বক্তারা আরো বলেন, যদি আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হয়, তাহলে আরো কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
গ্রামের মেঠোপথ ধরে চলতে চলতে চোখে পড়ে মাঠের পর মাঠ, যেখানে এখন আধুনিক যন্ত্রের ছোঁয়ায় চলছে চাষাবাদ। কিন্তু কোথাও যেন হারিয়ে গেছে সেই পরিচিত দৃশ্য-লাঙল টেনে নিয়ে গরুর জোয়ালে বাঁধা কৃষকের ঘামে ভেজা মাঠ। একসময় যা ছিল বাংলার গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই লাঙল-জোয়ালের ব্যবহার আজ শুধু স্মৃতির পাতায়। একসময় বাংলার কৃষিকাজ বলতে বোঝানো হতো লাঙল-জোয়ালের যুগল প্রয়োগ। কৃষকের শক্ত হাতে লাঙলের হাতল ধরা, গরুর ঘাড়ে জোয়াল রাখা, আর সেই সঙ্গে জমির কোণে কোণে কাঁদামাটির গন্ধ-এটাই ছিল বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতির হৃদস্পন্দন। কৃষকদের বিশ্বাস ছিল লাঙল দিয়ে জমি চাষ করলে তা উর্বর হয়, আর প্রকৃতির সঙ্গে গভীর যোগাযোগ তৈরি হয়। বর্তমান সময়ে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ও অন্যান্য আধুনিক যন্ত্র এসে জায়গা করে নিয়েছে। এগুলোর ব্যবহার সহজ, কম সময়সাপেক্ষ এবং কম শ্রমনির্ভর। ফলে কৃষকরা ধীরে ধীরে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি থেকে সরে গিয়ে যান্ত্রিকতার দিকে ঝুঁকেছেন। কিন্তু এই যান্ত্রিক চাষাবাদের কারণে শুধু লাঙল-জোয়ালই নয়, হারিয়ে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক। আজও কিছু প্রবীণ মানুষ লাঙল- জোয়ালের দিনগুলো স্মরণ করে। তাদের কণ্ঠে শোনা যায়, "গরুর জোয়ালের আওয়াজে যেন মাঠে প্রাণ জেগে উঠত। লাঙলের ফলা মাটি কাটত আর মনে হতো জমির সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তা গড়ে উঠছে।" এই স্মৃতিগুলো শুধু এক প্রজন্মের নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গল্প। যান্ত্রিক পদ্ধতির চাষাবাদ যেমন সহজ হয়েছে, তেমনই এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মাটির প্রাকৃতিক উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে এবং গরুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় গোবর সার তৈরির ঐতিহ্যও বিলীন হতে চলেছে। লাঙল- জোয়ালের ব্যবহার কেবল একটি প্রযুক্তি নয়, এটি ছিল প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সমন্বয়ের নিদর্শন। লাঙল- জোয়ালের হারিয়ে যাওয়া কেবল কৃষি প্রক্রিয়ার পরিবর্তন নয়; এটি একটি সংস্কৃতির হারিয়ে যাওয়া। এই ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন হয়তো কঠিন, কিন্তু আমাদের উচিত স্মৃতিতে এই ইতিহাস ধরে রাখা। হয়তো একদিন কেউ আবার প্রথাগত পদ্ধতির দিকে ফিরে তাকাবে এবং সেই পুরোনো দিনের গন্ধে ভরে উঠবে বাংলার মাটি। লাঙল-জোয়াল হারিয়ে গেলেও স্মৃতির কোণে তার ঠাঁই চিরস্থায়ী। এই ঐতিহ্যের গল্পগুলো যেন কখনোই হারিয়ে না যায়।
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে চোরাই পথে আনা ১১ বস্তায় ২৯৭ বোতল ভারতীয় মদসহ একটি প্রিমো প্রাইভেটকার জব্দ করেছে পুলিশ।
গেল রাতে পাচারকালে শহরের ঢাকা বাস স্টেশন এলাকা থেকে এসব ভারতীয় মদ জব্দ করা হয়। তবে, টহলরত পুলিশের গাড়ি দেখে আগেই প্রাইভেটকারটি রেখে পালিয়ে যায় কারবারিরা। পুলিশ জানিয়েছে, জব্দকৃত আলামত বাজার মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।
পুলিশ জানায়, চোরাচালান রোধে রাত্রীকালীন নিয়মিত টহলের সময় ঢাকা-নালিতাবাড়ী মহাসড়ক পথে পুলিশের একটি পিকআপ নালিতাবাড়ী শহরের দিকে যাচ্ছি। এসময় ঢাকা বাস স্টেশনের দক্ষিণ পাশে আসা মাত্রই ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার পুলিশের পিকআপ দেখে রাস্তার পাশে থাকা বাড়ির সামনে কারটি রেখে দ্রুত পেছন দিয়ে পালিযে যায় কারবারিরা। পরে পুলিশের সন্দেহ হলে প্রাইভেটকারে তল্লাসী চালায়। এসময় কারের পেছনের ছিট ও বেক ডালায় রাখা মোট ১১ বস্তা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভারতীয় মদ জব্দ করা হয়। পরে ওইসব বস্তা খোলে ২৯৭ বোতল ম্যাজিক মোমেন্ট, ইম্পেরেয়িাল ব্লু, ম্যাগডুয়েলস ও রয়েল স্ট্যাগ মদ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ প্রাইভেটকারসহ ওইসব মদ জব্দ করে থানা হেফাজতে নেয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করতে কাজ চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, দেশে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন পরিচালনাকারী পুলিশ, প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা দেখেছে এসব প্রতিষ্ঠান ঠিকমত কাজ করে না। তাই তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল (৯ আগস্ট) সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিগত নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, শিক্ষকদের নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবছি। আমরা চেষ্টা করছি যথাসাধ্য তাদের ব্যবহার না করা। কিন্তু আমরা তো নতুন করে কাউকে নিয়োগ দিতে পারবো না, বিদেশ থেকে মানুষকে আমদানী করতে পারবো না। দেশের মানুষকে দিয়েই নির্বাচন করতে হবে। ওদের মধ্যে থেকে এদিক-ওদিক করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যতক্ষন পর্যন্ত হুশ রয়েছে, ততক্ষন পর্যন্ত আমি কারো পক্ষে থাকবো না। নির্বাচনের আইন-কানুন মেনে প্রফেশনালী ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। আমি অফিসারদের এটি নিয়ে মোটিভেট করছি। আমার মনে হয় তারাও কারো পক্ষের হয়ে কাজ করবে না। তারা দেশের ১৮ কোটি জনগণের পক্ষে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে সচেতনতা কার্যক্রম চালাবো। আমাদের সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে আশ্বস্ত করবো একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের। সকল দলের জন্য নির্বাচনের মাঠ সমতল থাকবে। তারা নির্বাচনের সমতল মাঠ দেখে বিবেচনা করবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি। আর যাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই কোন প্রমাণ ছাড়া তাদের দেশদ্রোহী বলা যাবে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইদানিং অনেকে মোবাইল নিয়ে কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই ফেসবুক সাংবাদিক হচ্ছে। এআই ব্যবহার করে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ছবি দিয়ে যা ইচ্ছা তাই লিখে ফেসবুকে ছেড়ে দিল। সেই পোস্ট মানুষ যাচাই-বাছাই না করে দ্রুত ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে তা রিকভার করা সম্ভব হয় না। তাই ফ্যাক্ট চেক করে মন্তব্য করতে হবে।
এরপর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রংপুর বিভাগের ৮ জেলার জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে মতবিনিময় করেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) চিকিৎসাসেবা আধুনিকায়ন ও স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে আবারও সড়ক অবরোধে নেমেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ছাত্র জনতা ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গত ১৪ দিন ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। আজ ছিল মহাসড়ক অবরোধের ব্লকেট তৃতীয় দিন। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছিলেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, রোগী হয়রানি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের কারণে সাধারণ মানুষ ন্যূনতম চিকিৎসা পাচ্ছে না।
আন্দোলনকারীদের মূল তিন দাবি হলো,
স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া,শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আধুনিকায়ন
জনগণের জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা,
আন্দোলনকারী ছাত্র সাব্বির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে রোগীরা সঠিক সেবা পান না, বরং বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন। ডাক্তাররা রোগীদের নিজেদের ক্লিনিকে পাঠানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে স্লিপ ধরিয়ে দেন। হাসপাতালের অনেক সরঞ্জাম অকেজো করে রাখা হয়, অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যায় না। অথচ পুরো হাসপাতাল চলে জনগণের টাকায়।
সংগঠক মহিউদ্দিন রণি বলেন,শুধু আশ্বাসে হবে না, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নিজে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
অবরোধের কারণে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত বাস ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ে। বিপাকে পড়েন হাজারো যাত্রী, যাদের মধ্যে অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিকল্প পথে যেতে বাধ্য হন। পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং কুয়াকাটার সঙ্গে বরিশালের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। এদিকে এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন সিকদার বলেন, নথুল্লাবাদ এলাকায় যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের জনদুর্ভোগ বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীতে বেকেরবাজার-জর্বাপুকুর রাস্তা বিলীন হওয়ায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও যথাযথ মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের কাজী বাড়ী ও আকবর ফকির বাড়ির মাঝামাঝি কাটাখালী নদী সংলগ্ন ভাঙ্গন স্থানের পাশেই এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শামছুল হক নকুর সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দিন এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুল উদ্দিন, ইউনিয়ন বিএনপি'র যুগ্ম আহবায়ক কবির আহম্মদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক হারিছ আহাম্মদ পেয়ার প্রমুখ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোতাহের হোসেন বাবুল, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, উপজেলা যুবদলের সদস্য আলাউদ্দিন আলো, যুবদল নেতা নুরুল আবছার, সাহাব উদ্দিন, আশ্রাফ হোসেন রাহাত, মুজাহিদুল ইসলাম, শাহ আলম, সুমন, মিন্টু,জাফর, আবদুল্লাহ আল নোমান আদর, মাইনুল হোসেন, জাহিদ হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের গণস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জিয়া উদ্দিন জাবেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নুর মোহাম্মদ পলাশ, উপজেলা ছাত্রদল নেতা ইয়াছিন স্বপন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির আহমেদ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন,ওই স্থানটিতে ১৫ দিনের মধ্যে নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও যথাযথ মেরামত না করলে ফেনী-নোয়াখালী সড়ক অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এসময় তারা অতীতে মেরামত সঠিকভাবে হয়নি বলে অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটির সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, “পার্বত্যবাসীকে বাদ রেখে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকারকে উদার মানসিকতার পরিচয় দিয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।”
শনিবার (৯ আগস্ট) রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
উষাতন তালুকদার বলেন, “বাংলাদেশে যত সরকারই এসেছে, কোনো সরকারই আদিবাসীদের অধিকার স্বীকৃতি দেয়নি। অথচ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আদিবাসীদের কথা উল্লেখ করেছেন। এ কারণে অনেকেই অযথা সমালোচনা করছেন, এমনকি ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলছেন। না হলে পদত্যাগ করতে হবে। কি মানসিকতা কি মনুষত্ববোধ কি মানুষ আমরা। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আদিবাসী বলাতে অপরাধ করে ফেলেছেন। তাই আদিবাসী হয়ে আমরা অপরাধ করেছি। তিনি বলেন, আপনি বাঙালী আপনি পরিচয় দেন তাতে তো আমাদের কোন আপত্তি নাই। তিনি বলেন, আমাদের দেশে আদিবাসী শব্দ নিয়ে খুবই বিতর্কিত ,ভুল বুঝাবুঝি হয়। জাতিসংঘ, কারা আদিবাসী হবে সেটা বোঝার জন্য একটা সংজ্ঞাও নির্ধারন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, আগামী সংবিধানে আমাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। থাইল্যান্ড সম্প্রতি আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়েছে, বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকবে না। নতুন বাংলাদেশ গঠনের যে প্রত্যাশা ছিল, তার বাস্তব ফল আমরা দেখতে চাই।”
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, সংস্কার কমিশনে নিরুপা দেওয়ান ও ইলোরা দেওয়ানকে নারী কমিশনে রাখা হলেও আদিবাসীদের থেকে অন্য সংস্কার কমিশনগুলোতে কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি, যা হতাশাজনক। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে দেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামকে শত্রুভাবাপন্ন আচরণ করলে এর পরিণতি সুখকর হবে না।”
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে উষাতন তালুকদার বলেন, “আমাদের ভাগ্য নিয়ে এখন বিশ্বপরাশক্তিরা খেলা করছে—আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারতসহ প্রতিবেশী মিয়ানমারেরও নজর এই অঞ্চলে। ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিলেও তা কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা অনেকাংশে আন্তর্জাতিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করছে।”নির্বাচন কমিশনে সিইসিকে চিঠি লিখেছেন নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য । কিন্তু চিঠি লিখলেও এখনো মানুষের মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে আদৌ ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচন হবে কিনা । কেননা এটা আমেরিকা কি চায় তার উপর নির্ভর করছে। আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন ভিতরে ভিতরে ভারতও কিন্তু পরাশক্তির পথে। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে তাদের উপর আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে। আরাকানদের কি হবে? রোহিঙ্গাদের কি হবে মায়ানমারের কি হবে? বাংলাদেশের মানুষের কি অবস্থা দাঁড়াবে।
উষাতন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এখানে তথাকথিত বিপ্লবী পার্টি আছে তারা আদিবাসী স্বীকার করে না তারা বলে জাতিসত্বা। তারা বলছে, জনসংহতি সমিতি জাতের মাথা খাচ্ছে। এম এন লারমা আড়াই বছর জঙ্গলে কাটিয়েছেন। জীবন বাজি রেখে আমরা লড়াই করেছি। আমার ভাইয়েরা আমার সামনে মারা গেছে। অমিও মারা যেতে পারতাম । তাই অস্বীকার করার কোন জো নাই। এম এন লারমা ,সন্তু লারমা কি করেছে যারা বলছে, জাতের মাথা খাচ্ছে যারা বলছে তাদেরকে বলছি , জনগণকে বিভ্রান্ত করে আমাদের আন্দেলনেকে নসাৎ করে দেয়া হচ্ছে। “পাহাড়ি ছাত্র পরিষদকে বিভক্ত করা, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে গাফিলতি এবং আন্দোলনকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। জনগণ ন্যায়-অন্যায় চেনা পর্যন্ত ভোগান্তি পোহাতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চল সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন খীসা। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ শিশির কান্তি চাকমা, মানবাধিকার নেত্রী নিরূপা দেওয়ানসহ স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠান শেষে রঙিন পোশাকে সজ্জিত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি পৌরসভা প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিমনেসিয়াম মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
নাটোরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বসার জায়গা না পেয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উপস্থিতিতেই হট্টগোলে জড়িয়েছেন জুলাই যোদ্ধারা। এছাড়া পুলিশের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠান বর্জন করেছে জেলা বিএনপির নেতারা। শনিবার (৯ আগস্ট) নাটোরের কানাইখালিতে সদর উপজেলা মিনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আগে ও পরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এদিন দুপুর ১২টার দিকে স্টেডিয়াম উদ্বোধন শেষে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় যোগ দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এসময় জুলাই যোদ্ধারাও আলোচনা সভায় অংশ নেয়। সেখানে তাদের জন্য নির্ধারিত আসন না থাকায় দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। একপর্যায়ে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে হট্টগোলে জড়িয়ে যায়। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের বসার জায়গার ব্যবস্থা করলে শান্ত হয় পরিস্থিতি। অন্যদিকে, শহরের বড় হরিশপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আমন্ত্রিত হয়ে সদর উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যায় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। স্টেডিয়ামের ভেতরে প্রবেশের সময় তাদের বাধা দেয় ডিবি পুলিশ। এসময় বিএনপি নেতারা অনুষ্ঠান বর্জন করে চলে আসেন।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব জানান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের প্রবেশে বাধা দেয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে একসাথে সকল নেতাকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ না করার অনুরোধ করা হয়েছিল।
গত আট বছর ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা সব চিকিৎসকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘অধ্যাপক ডা. এ. টি. এম. ফরিদ উদ্দিনসহ একটি চিকিৎসক দল বিগত আট বছর ধরে আমার মায়ের অর্থাৎ সারা দেশের মানুষ যাকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হিসেবে চেনে সেই মানুষটিকে চিকিৎসা দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে এবং পরিবারের সদস্য হয়েও আমরা যারা এই সময়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পাশে থাকতে পারিনি, আমরা আমাদের অন্তরের অন্তরস্থল থেকে এই চিকিৎসকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন। আজ রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ এবং পরিচালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি সন্তান হিসেবে, পরিবারের সদস্য হিসেবে যা করতে পারিনি ওই কয়েজন চিকিৎসক তা করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে একজন সন্তানের চেয়ে তারা কোন অংশে কম নয়। ক্ষেত্রবিশেষে সন্তানের চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালন করেছেন। এ জন্য সামগ্রিকভাবে পুরো চিকিৎসক সমাজের কাছে আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’
এসময় তিনি রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়ায় ড্যাবের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে বহু সাধারণ মানুষ যারা কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না, কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন এবং প্রতিবাদ করতে গিয়ে এই মানুষগুলো বিভিন্নভাবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন, আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। ড্যাবের সদস্যরা এই নির্যাতিত মানুষের চিকিৎসা করেছেন, সেবা দিয়েছেন। তাই চিকিৎসা প্রাপ্ত সকল মানুষের পক্ষ থেকেও আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী যত চিকিৎসক আছেন সবার কাছে আমার একটি চাওয়া সেটি হচ্ছে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে যে দাবিটি আছে তা বাস্তবায়ন করতে হলে আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ কেবল আমাদের দলের সংসদ সদস্য বা নেতাদের দিয়ে এগুলো সব বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।’
নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশাকে বাস্তবায়নের জন্য সবার কন্ট্রিবিউট করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ গত ১৫ বছরে যারা জীবন দিয়েছে, বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে তাদের প্রত্যাশা আমরা সকলে মিলে যদি পূরণ করতে পারি তবেই আমরা আমাদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। এজন্য আমাদের প্রত্যেককে একটু করে হলেও কন্ট্রিবিউট করতে হবে।’
বাংলাদেশের একসময় পাট শিল্প ছিল অর্থনৈতিক চাবিকাঠি, সারা বাংলাদেশের ন্যায় কুমিল্লার অঞ্চলের অধিকাংশ উপজেলার কৃষকরা পাট চাষ করত। বর্তমান সময়ে নানান কারণে অধিকাংশ এলাকায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা। কারণ হিসেবে অনেকে বলছেন, অতীতের ন্যায় বর্ষা মৌসুমে পানি না থাকা এবং পাটজাত পণ্যের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় চাষিরা আগ্রহ হারাচ্ছে। কুমিল্লার সর্ববৃহৎ পাটের বাজার ছিল গৌরীপুর, রামচন্দপুর, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ, চান্দলা, সিদলাই, দুলালপুরসহ বিভিন্ন হাট। এগুলোতে পাটের আড়তদার ছিল, ময়াল থেকে বড় বড় গহনা, কবুত কুসা, সরাঙ্গ নৌকা নিয়ে গ্রামের কৃষক দের কাছ থেকে পাট কিনে পাট ব্যাবসায়ীরা গুদাম ঘরে রেখে নারায়ণগঞ্জ শীতালক্ষার নদীর তীরে নিতাইগঞ্জ পাট বাজারে। বড় বড় আড়তদাররা বিদেশে রপ্তানি করত। আবার কখনো দেশের চাহিদা মেটাত, তখন বিখ্যাত জুট মেইল ছিল নারায়ণগঞ্জের আদমজী, চট্টগ্রামের আমিন জুট মেইল। এই বৃহৎ মেইলগুলোতে পাট শিল্প হারিয়ে যাওয়ার ফেলায় বাংলাদেশের কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। সরেজমিনে দৈনিক বাংলার প্রতিবেদকের চোখ পড়ে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কৃষকদের নানা সমস্যার চিত্র।
এদিকে, পাট শিল্প ও পাট উৎপাদন নিয়ে কৃষকদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ, তারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে পাটের দরপতন, কৃষি উপকরণের মূল্য ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, পাট পঁচানোর পানির অভাব ও শ্রমিক সংকটের কারণেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
চান্দলা, বলাকিয়া, সিদলাই, দুলালপুর, ছাতিয়ানি গ্রাম ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণ তুলে ধরেন ওই এলাকার কৃষক আবদুল মতিন, হক ভূইয়া, ফারুক আহমেদ, আবদুল কাদেরসহ অনেকেই বলেন, পাটের বদলে রবি ফসল, বোরো ও আমনসহ অন্যান্য লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
ফলে দিন দিন ব্রাহ্মণপাড়াসহ কুমিল্লার নিচু অঞ্চলগুলোতে পাটের আবাদ কমে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, ব্রাহ্মণপাড়ায় এ বছর ৫৩ হেক্টর লক্ষ্য মাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে পাট চাষের জন্যে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে মাত্র ৩০ হেক্টর। বিভিন্ন ইউনিয়নে গত বছর ভয়াবহ বন্যা হওয়ায় কৃষকেরা পাট চাষ সময় মতো জমি তৈরি করতে পারেনি। এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলো নিচু হওয়ার সময় মতো জমি চাষাবাদ ও তৈরি করতে অনেক কৃষকের বেগ পেতে হয়েছে।
তাই কৃষকেরা পাট চাষে কিছুটা আগ্রহ হারাচ্ছে। পাট চাষিরা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সিদলাই ইউনিয়ন এর কৃষক আবদুল হান্নান জানান, পাট চাষে খরচ বেশি এছাড়াও কয়েক বছর ধরে বন্যা না হওয়ায় আমরা পাট চাষ করতে সমস্যা হচ্ছে। পাট চাষে আমাদের খরচ পুষে না তাই আমরা পাট চাষের বদলে অন্যান্য ফসল করছি।
ব্রাহ্মণপাড়া সদর ইউনিয়নের আটকিল্লার পাড় গ্রামের কৃষক ইউনুস মিয়া বলেন, পাটের আবাদ করে বেশ কয়েকবার লাভের মুখ দেখতে পারিনি। গত বছর ৩০ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করলেও, এবার সংসারের প্রয়োজনে জ্বালানি হিসেবে মাত্র ৭ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছি।
দুলালপুর ইউনিয়নের বালিনা গ্রামের কৃষক তাহের মিয়া বলেন, ‘গত দুবছর পাটচাষ করে পানির অভাবে পাট পঁচাতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এছাড়া পাটের আঁশ ছাড়াতে শ্রমিক পাওয়া যায় না।
তিনি আরো বলেন, চাষিদের নিকট থেকে পাট কিনে লাভের একটি বড় অংশ হাতিয়ে নিচ্ছেন মধ্যস্থতার ব্যাবসায়ীরা, কারণ অতীতে সরাসরি বাড়িতে পাট ব্যাবসায়ীদের নৌকা আসত, এখন পানি না থাকায় মধ্যেস্থতার কাছে বিক্রি করতে হয়। এ বিষয়ে সচেতন মহলের কয়েকজন বলেন, সোনালী আঁশ পাট এখন কৃষকের গলায় ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার অচিরেই উদ্যোগ না নিলে গ্রামবাংলা থেকে পাট চাষ হারিয়ে যাবে। সরকারের উচিত কৃষকদের ভর্তুকি দিয়ে পাট চাষিদের বাঁচিয়ে রেখে পাট শিল্পকে উন্নয়ন করে বিদেশে পূর্বের ন্যায় রপ্তানি করে কর্মসংস্থান বাড়ানো।