খুলনায় বৃষ্টিতে গোসল করতে গিয়ে বাসার ছাদ থেকে পড়ে নুসরাত জাহান লাকি (২০) নামে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে মহানগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পা পিছলে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত লাকি নগরের খালিশপুর থানাধীন মুজগুন্নী পার্ক এলাকার মো. আব্দুল হামিদের মেয়ে। লাকি খুলনা মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
খালিশপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসমত আলী বলেন, ‘ওই ছাত্রী মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় বোনের বাসায় ঘুরতে এসেছিলেন। দুপুরের বৃষ্টিতে গোসলের সময় ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পা পিছলে নিচে পড়ে যান। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ৩ টার দিকে তিনি মারা যান।
সিলেট থেকে সরাসরি হজ ফ্লাইট আগামী ১৪ মে থেকে শুরু হচ্ছে। এ দিন ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের মদিনার উদ্দেশে উড়াল দিবে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট।
বাংলাদেশ বিমানের সিলেটের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটের হজযাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এ বছর পাঁচটি ফ্লাইট সরাসরি সিলেট থেকে পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ফ্লাইট যাবে সরাসরি মদিনায়। বাকি চারটি ফ্লাইট ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৯ মে সিলেট-জেদ্দা রুটে পরিচালিত হবে।
রোড টু মক্কা কর্মসূচির অধীনে হজ্জ যাত্রীদের জন্য দুই দেশের ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্নের সুযোগ থাকলেও সিলেট থেকে পরিচালিত ফ্লাইটের যাত্রীদের সৌদি ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে করা হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সিলেট জোনের সভাপতি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান জানান, সিলেট থেকে এ বছর ২৭ শ মুসল্লী হজে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৫ জন সিলেট থেকে বিমানের ফ্লাইটে এবং অন্যরা যাবেন ঢাকা থেকে।
এ অঞ্চলের হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সিলেটের তিনটি শীর্ষ এজেন্সির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আজ শনিবার (০৩ মে) খিঁলগাও উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এর উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থানা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় সোসাইটির জনগন এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্নতা কর্মী, স্বাস্থ্য বিভাগের মশক কর্মীদের দ্বারা উত্তর শাহজাহানপুর আবাসিক এলাকা, ঝিল ও সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়।
পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, বর্ষার মৌসুমকে মাথায় রেখে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা দুটি স্তরে কার্যক্রম শুরু করেছি, প্রথমটি হলো নিয়মিত মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। দ্বিতীয়টি হল বিশেষ মশক নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম এবং জনগনকে সম্পৃক্তকরণ জনসচেতনতামূলক র্যালি যা পর্যায়ক্রমে ডিএসসিসির দশটি অঞ্চলে পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে যাত্রাবাড়ী ও ধানমন্ডিতে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
প্রশাসক আরো বলেন, নগরবাসীকে সচেতনত হতে হবে এবং বাসার ভেতরে, ফুলের টব, চৌবাচ্চা ও বারান্দায় জমে থাকা পানি তিনদিনের ভেতরে নিজ উদ্যোগে ফেলে দিতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন এবং নগরবাসীকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এ ছাড়াও অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র্যালি হয়।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো: জিল্লুর রহমান, সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞা সহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকার শিক্ষাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে বান্দরবানের দুর্গম ত্রীমতিপাড়ায় প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছে বিজিবি।
আজ শুক্রবার বিজিবির আলীকদম ব্যাটালিয়ন (৫৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মেহেদী দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকার শিক্ষাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে বিজিবির আলীকদম ব্যাটালিয়নের (৫৭ বিজিবি) ব্যবস্থাপনায় ওয়াংরাইপাড়া বিওপির উদ্যোগে থানচির রেমাক্রি ইউনিয়নের দুর্গম সীমান্তবর্তী ত্রীমতি কারবারী পাড়ায় প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার তিনি (অধিনায়ক) বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি ২৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রাথমিক পাঠ্যবই, শিক্ষা উপকরণ, বিস্কুট ও চকলেট বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে এলাকার হতদরিদ্র আরও ২০টি পরিবারকে মশারি বিতরণ করা হয় এবং আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, অত্যন্ত দুর্গম এই ওয়াংরাইপাড়ায় আগে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এলাকার ৫টি পাড়ার ৪২টি পরিবারের শিশুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। বিজিবির তত্ত্বাবধান ও আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় কারবারী ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মিত এই বিদ্যালয়টি গতকাল উদ্বোধন করা হলো। বিজিবির এ উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কারবারী ও সাধারণ জনগণ।
এ বিষয়ে আলীকদম ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আরও বলেন, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে বিজিবি কেবল সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বই পালন করছে না বরং মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিজিবি সবসময়ই বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাহাড়ী ও বাঙালিদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ়করণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই ধারাবাহিকতায় দুর্গম এই সীমান্তবর্তী এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করলো বিজিবি।
জেলার বেদানা লিচু জিআই পণ্যের তালিকায় এবার যুক্ত করা হয়েছে। অপূর্ব স্বাদ, পাতলা খোসা, রসালো শাঁস ও ছোট বীজের জন্য খ্যাত এই লিচু এবার পেল সরকারি স্বীকৃতি।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুরে আলম এই তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধা সম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দিনাজপুর জেলার পক্ষে জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জিআই সনদ গ্রহণ করেছেন।
তিনি জানান,ঢাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সেখানে আরও জানানো হয়, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে, যার মধ্যে এবার একসঙ্গে নতুন ২৪টি পণ্য যুক্ত করা হলো।
জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় জেলার কৃষকরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি দেশের কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতিতে এই বেদানা লিচু নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে বলে এই জেলার সংশ্লিষ্ট সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এবারে জিআই তালিকা ভুক্ত পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, সুন্দরবনের মধু, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, ভোলার মহিষের দুধের দই, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, সিরাজগঞ্জের গামছা, এবং আরও কয়েকটি পণ্য।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাফর ইকবাল বলেন,নতুন করে জেলায় বেদানা লিচুর উৎপাদন বাড়াতে লিচু চাষীদের উৎসাহ দিয়ে সহযোগিতা করবেন কৃষি বিভাগ। যে পরিমাণ বেদানা লিচু এই জেলায় উৎপাদন হয়, এখন বাইরের দেশে রপ্তানির জন্য তিন গুণ লিচু চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে তিনি ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ফুটবল খেলার সময় পাহাড় ধসে দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৩টি শিশু আহত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালের দিকে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের কেপিজেড পাহাড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- বৈরাগ এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে রোহান (১২) এবং ইমরান হোসেনের ছেলে মিসবাহ (১৩)। অন্যদিকে আহতরা হচ্ছে- মোস্তাক মিয়ার ছেলে সিয়াম (১১) আবুল কাশেমের ছেলে সিফাত (১০)।
স্থানীয়রা জানান, সকালে বৈরাগ এলাকার কেপিজেড পাহাড়ের একটি মাঠে বন্ধুরা মিলে ফুটবল খেলার সময় পাহাড় ধসে বেশ-কয়েকজন আহত হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি ৩ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, পাহাড়ের পাদদেশে খেলতে গিয়ে পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে।
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাহাড়ে ধসে আহত হওয়া কয়েকটি শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখান থেকে দুটি শিশু মৃত্যুবরণ করে। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।
তবে স্থানীয়রা দাবি করছেন, কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) দিনের পর দিন পাহাড় কাটায় এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
দেশের আট বিভাগেই অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশের সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রংপুর, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়া, রাজধানী ঢাকাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে গতকাল (বুধবার) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে খালপাড়ের খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী লিটন আহমেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী জহিরুল ইসললাম।
আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খুররাম শাহ মুরাদ। তিনি বলেন, ‘যে স্থানকে চিহ্নিত করে এই হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে তা একেবারেই অনভিপ্রেত। কারণ ওই স্থানে হাট বসানোর কোন পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই। এই হাট বসানোর ইজারা গৃহীত হলে ঈদ-উল আযহার সময় আবাসিক এলাকার মানুষের বাসা-বাড়ির গেটের সামনে পশুর হাট বসে যায়। ফলে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এছাড়া পশুর হাট বসানো হলে আবাসিক এলাকার কোন মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না। সবকিছু বিবেচনা করে হাইকোর্ট মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানোর ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।’
গত ২১ এপ্রিল ১১টি স্থানকে চিহ্নিত করে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর লক্ষ্যে ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন লিগ্যাল রাইটস এর পক্ষে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন সিকদার।
ফেনীর পরশুরামে মুহুরি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে আওয়ামী লীগ নেতা মিরু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে এবং নাগরিক কমিটির সংগঠক ইমাম হোসেন সজীবসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
পরশুরাম পৌর ভ‚মি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধিত) ৪/৫/১১/১৫ ধারায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারে বলা হয়, মুহুরী নদীর বিলোনীয়া খেয়াঘাটের ১০০ গজ দক্ষিণ থেকে বাউরখুমা মৌজার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত মুহুরি নদীর বালুমহাল (প্রথম অংশ) ১৪৩০ বাংলা সনে পূর্ণ মেয়াদে শাপলা টেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মিরু চৌধুরীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ইজারাদারদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ও অবস্থানগত ছাড়পত্র জমা দেবেন এই শর্তে মিরু চৌধুরীকে ইজারা চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মিরু চৌধুরী ছাড়পত্র জমা না দেওয়ায় তাকে ওই বালুমহালের কার্যাদেশ ও দখল দেয়নি জেলা প্রশাসক। এরপর ১৪৩২ বাংলা সনে ইজারার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলেও অদ্যাবধি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ১৪৩১ বাংলা সনের শুরু হতে অদ্যাবধি ওই বালুমহাল ইজারাবিহীন অবস্থায় আছে।
বালু মহালের কার্যাদেশ ও দখল প্রদান না করা সত্ত্বেও আইন অমান্য করে মিরু চৌধুরী ইমাম হোসেন সজিবের সঙ্গে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বালুমহাল সাবলীজ দেয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এরপর সজিবের নেতৃত্বে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুহুরি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বেআইনিভাবে দুই কোটি পচিশ লাখ টাকার নয় লাখ ঘনফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদীর উভয় পাড়ে বিক্রির উদ্দেশে স্তুপ করে রাখে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে নদীর পাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং নদীর পাড়ের জমি ও বসতঘর ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মীর আহমেদ চৌধুরী (৬০), মো. ইমাম হোসেন সজীব (৩৫), হাবিব উল্যা (৫০), পিংকু ভুঞা (৩৮), মো. হারুন ভুঞা (৩৫), ছায়দুল হক হাজারী (৩৫), আলী হোসেন (৪০), আবদুল মুনাফ (৪৮), আবদুল কাদের (৩৭) আবদুস সামাদ (৩৪), মো. মোস্তফা আবদুল হামিদ (৩৩), মো. রিপন (৪০), মো. এমরান (৪২), স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর (২৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মো. ফারুক (২৭), মো. শিশু (৩৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মো. শাহজালাল (৩৩), মো. ছিদ্দিক (৩৫), মো. আলম (২৯), মোহাম্মদ বাবুল (২৯), মনছুর আলী (৫০), মাহবুল হক (৫১), উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাহার সর্দার (৪৫), বাবুল মিয়া (৩৯), আবদুর রহিম (৪০), হারেছ মিয়া (৩৮), জাহিদুল করিম (৩৯), মোহাম্মদ বাবু (২৫), মোহাম্মদ কাইয়ুম (৩৬), নুরুন্নবী (হোনা মিয়া) (৪৫), আমির হোসেন (৪২), জাকির হোসেন (৪০),
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, নুরুল হাকিম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কর্তৃক বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্প বিশেষ করে ফসিল ফুয়েল ও এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) প্রকল্পে বিনিয়োগের বিরোধিতা করেছে পরিবেশ সচেতন নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন সংগঠন।
এডিবির ৫৮তম বার্ষিক সভার পূর্বে জ্বীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ না করার দাবিতে যৌথভাবে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) এবং বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট)।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নগরীর কর্নফুলীর মইজ্যাটেকে আয়োজিত প্রতিবাদ সভা থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘এডিবি এখন পর্যন্ত ২৮৮৪.৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ৪০০ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে ৮২ দশমিক ৯ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পে। মাত্র ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ সৌরবিদ্যুতে, এবং বায়ুশক্তিতে কোনো বিনিয়োগই করা হয়নি। জীবাশ্মভিত্তিক প্রকল্পে প্রতি মেগাওয়াটে ২০ লাখ ৪ হাজার ডলার বিনিয়োগ হলেও, সৌরবিদ্যুতে তা মাত্র ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার।’
চট্টগ্রাম ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সদস্য ও অধিকার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওসমান জাহাঙ্গীর বলেন, এডিবি খুলনার ১৫০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল প্ল্যান্টে উন্নীত করতে অতিরিক্ত ১০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেছে। অথচ গত ১১ বছরে এই প্রকল্পের পেছনে সরকারকে ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবুও গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা না থাকায় প্রকল্পটি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। একইভাবে, খুলনায় রূপসার মতো ৮০০ মেগাওয়াটের এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলেও, এখনও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি, ফলে এই প্রকল্পগুলো অচল সম্পদে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যার ফলে সরকারকে বিপুল অঙ্কের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হতে পারে।
ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও তরুণ পরিবেশ কর্মী সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, ‘যখন বিশ্ব নবায়ণযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন এডিবির এই ধাঁচের বিনিয়োগ জলবায়ু সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে এবং বাংলাদেশের মতো জলবায়ুঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।’
ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ জরুরি। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, পরিবেশ ও সমাজকেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তারা এডিবিকে আহ্বান জানান, অবিলম্বে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় নবায়ণযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগের দিকে অগ্রসর হতে।
আয়োজকরা জানান, ৫৮তম এডিবি বার্ষিক সভার প্রাক্কালে এ ধরনের প্রতিবাদী কার্যক্রম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে, যাতে এডিবি ও অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলো তাদের বিনিয়োগ নীতিতে জলবায়ু ন্যায্যতা ও টেকসই উন্নয়নের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়।
আলোচনা ও প্রচারাভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন আইএসডিই বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা রইসুল ইসলাম, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট চট্টগ্রামের মেন্টর রাসেল উদ্দীন, যুব ক্যাব কর্নফুলী উপজেলা সভাপতি আরফিন সুমন, যুব গ্রুপের সদস্য জহির উদ্দীন হিমেল, সাজ্জাদ হোসেন রনি, ডলি আক্তার, ইমতিয়াজ হোসেন মিরাজ, সাদিয়া জাহান সিথী, জাহেদুল ইসলাম, মুহিবুল ইসলাম মুহিব প্রমুখ।
নড়াইলের কালিয়ায় প্রতিপক্ষের বাড়ির পেছন থেকে রফিকুল মোল্যা নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের রিকাইল শেখের বাড়ির পেছন থেকে রফিকুলের লাশটি উদ্ধার করে কালিয়া থানা পুলিশ।
নিহত রফিকুল মোল্যা (৩৮) ওই গ্রামের আজিজুল মোল্যার ছেলে।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ এপ্রিল কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে আফতাব মোল্যা গ্রুপের ফরিদ মোল্যা (৫৭) নামে একজন নিহত হন। পরে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা করা হয়। এ হত্যা মামলায় মিলন মোল্যা পক্ষের রফিকুলকে আসামি করা হয়। তিনি পলাতক ছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে রফিকুলের পা বাধা লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে কালিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ হেফাজতে নেয়।
ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
শীতকালে সরকারের বরাদ্দকৃত কম্বল বিতরণ না করে ফেলে রাখা হয়েছে মৌলভীবাজারের নাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে। এতে শীতকালে শীতবস্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছেন হতদরিদ্র শীতার্তরা।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে শীতবস্ত্র বিতরনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয় কম্বল। শীত চলে গেলেও মৌলভীবাজারের নাজিরাবাদ ইউনিয়নে এখনো পড়ে রয়েছে এসব কম্বল।
অভিযোগ রয়েছে, নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ নিজের পছন্দমতো ব্যক্তিদের এসব কম্বল বিতরণ করছেন। তাই নিজের ইউনিয়ন অফিসের একটি কক্ষে সরকারের এসব বরাদ্দকৃত কম্বল ফেলে রেখেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্য বলেন, শীত চলে যাচ্ছে কম্বলগুলো হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করার জন্য আমরা বারবার বলেছি। কিন্তু চেয়ারম্যান শীতার্তদের মাঝে এটি বিতরণ না করে ইউনিয়ন অফিসে স্টক করে রেখেছেন। এটা এক রকমের দায়িত্বে অবহেলা ও খামখেয়ালি। এ বিষয়ে নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হৃষিকেশ চৌধুরী বলেন, কতটি বরাদ্দ পেয়েছি সঠিক মনে নেই। যা বরাদ্দ ছিলো বিতরণ করা হয়েছে। শীতের বরাদ্দ পাওয়া কিছু কম্বল এখনও রয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্ত মো. তাজউদ্দিন বলেন, এরকম করার কোন সুযোগ নেই, ব্যবস্থা নিচ্ছি।
জনগণের নেতৃত্বে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনাবিষয়ক জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার ১৭টি ওয়ার্ডের ১০৬টি স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবা সংক্রান্ত জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার লেকশোর হোটেলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) এই উদ্যোগ পরিচালনা করেছে, এই প্রকল্পে সহায়তা করেছে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) এবং যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)।
এই পরিকল্পনা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (সিডাব্লিউএসআইপি) জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করবে।
কর্মশালায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, ব্রিটিশ হাইকমিশন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ ৮০ জনেরও বেশি অংশীজন অংশ নেন। এই সভার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের পরিকল্পনার ফলাফল উপস্থাপন, অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ, প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিতকরণ এবং পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পরবর্তী পদক্ষেপে ঐকমত্যে পৌঁছানো।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধীনে জলবায়ু ঝুঁকির বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম ওয়াসার অনুমোদনক্রমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরিকল্পনাটি স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট চাহিদা ও দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা ওয়ার্ড ও মহানগর পর্যায়ে ধারাবাহিক পরামর্শের মাধ্যমে যাচাই ও পরিমার্জন করা হয়েছে।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন একটি বাস্তব চ্যালেঞ্জ। অভিযোজনকে কার্যকর করতে এটিকে জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বিত এবং স্থানীয় প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
জিসিএ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. এম ফয়সাল রহমান বলেন, ‘জনগণের এই পরিকল্পনা সিডাব্লিউএসআইপি প্রকল্পে বাস্তবায়নের পাশাপাশি চট্টগ্রামের নগর কর্তৃপক্ষের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ ও মানসিকতার পরিবর্তনের ওপর জোর দেন। তিনি ওয়াটারএইডকে সব ওয়াসার সঙ্গে এই ফলাফল আদান প্রদানের আহ্বান জানান।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের এবিএম ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘এই পরিকল্পনা জলবায়ু সহিষ্ণু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং জাতীয় নগরনীতির জন্য সহায়ক হবে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এই পরিকল্পনাকে তাদের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
চট্টগ্রাম ওয়াসার সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে সকল নাগরিকের জন্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা আশাবাদী, তবে ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটাতে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।’
তেত্রিশ বছর পেরিয়েও টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সেন্টমার্টিনের আকাশে-বাতাসে এখনো ভেসে বেড়ায় কান্নার শব্দ। ১৯৯১ সালের ভয়াল ২৯ এপ্রিল রাতে প্রকৃতির নির্মম থাবায় হারিয়ে যায় হাজারো প্রাণ, ভেসে যায় শত শত স্বপ্ন।
টেকনাফের দক্ষিণ প্রান্তে, নাফ নদীর মোহনার ঠিক গা ঘেঁষে থাকা এই ছোট্ট দ্বীপটিতে সেই রাতে সাগরের উন্মত্ত ঢেউ যেন গিলে খেয়েছিল মানবসভ্যতাকে। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দ্বীপের হাজারো ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে যায়, অগণিত মানুষ হারিয়ে যায় ঢেউয়ের গ্রাসে।
আজ ২৯ এপ্রিল স্মৃতির পাতায় বিভীষিকার রাত
চারপাশে শুধু পানি আর আর্তচিৎকার। শিশুরা মায়ের কোলে চেপে চুপ হয়ে গিয়েছিল। মায়েরা সন্তানকে বাঁচাতে নিজের প্রাণ দিয়েছিল। -চোখের কোণে পানি নিয়ে বলেন শাহপরীর দ্বীপের প্রবীণ বাসিন্দা খালেদ। ওই রাতের তাণ্ডবে হারিয়ে যান তার স্ত্রী ও তিন সন্তান। এখনো নাফ নদীর পাশে দাঁড়ালে তিনি শুনতে পান সেই রাতের হাহাকার। ভোরের আলো ফুটলেও চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ। স্মরণ করেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, সাবরাং, হ্নীলা, টেকনাফ সদরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা সেই রাতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পরিবার হারানো মানুষগুলো এখনও চোখের জলে স্মরণ করেন সেই বিভীষিকাময় রাতের কথা।
স্থানীয় প্রবীণ আব্দুল আজিজ (৬৫) বলেন, ‘রাতে হঠাৎ দেখি পানি আমাদের ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারদিক অন্ধকার আর পানির তোড়ে ভেসে যায় সব কিছু। অনেক মানুষ সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল, কিন্তু কেউ কাউকে বাঁচাতে পারেনি।’
ক্ষয়ক্ষতি আর হারানোর হিসাব
সরকারি হিসাবে, পুরো কক্সবাজার জেলায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ১ লাখ ৩৮ হাজার। শুধু শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনেই দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটে, যদিও স্থানীয়দের মতে প্রকৃত সংখ্যা ছিল তার চেয়েও বেশি। গোটা দ্বীপজুড়ে দেখা গিয়েছিল লাশের স্তূপ, উধাও হয়েছিল পানির নিচে ফসল, গবাদি পশু, জীবন-জীবিকা।
দুর্যোগের পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বীপটি ছিল বিচ্ছিন্ন; খাবার, পানি, চিকিৎসা কিছুই পৌঁছাতে পারেনি। বহু পরিবার বাধ্য হয়েছিল ঘরছাড়া হতে। কেউ কেউ জীবিকার আশায় ভিন্ন জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হয়।
বর্তমানের চ্যালেঞ্জ
তিন দশক পেরিয়ে গেলেও শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন এখনো ঝুঁকির মধ্যে। সামুদ্রিক ভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপের আয়তন দিনদিন ছোট হচ্ছে। কয়েকটি বাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টার তৈরি হলেও তা এখনো পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
‘বাঁধ ভেঙে গেলে আমরা আবারও সেই দিনের মতো হারিয়ে যাব। আজ ২৯ এপ্রিল আমাদের শুধু ইতিহাস নয়, সতর্কবার্তাও।’- বলেন স্থানীয় শিক্ষক কলিম উল্লাহ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, দুর্যোগ পূর্বাভাস ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং স্থানীয় জনগণকে সচেতন করে তোলার ওপর জোর দিতে হবে এখনই, নইলে ভবিষ্যতের ঘূর্ণিঝড় আবার নতুন করে বেদনার ইতিহাস লিখবে।
ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা
পরিবেশবিদদের মতে, শাহপরীর দ্বীপসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া ভবিষ্যতের বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নয়। সচেতনতা, টেকসই অবকাঠামো ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নই হতে পারে আগামী দিনের প্রতিরক্ষাকবচ।
এদিকে জলবায়ুর প্রভাবে বদলে যাচ্ছে শাহপরীর দ্বীপ উপকূলবর্তী মানুষের জীবনযাত্রা। নাফ-সাগরের এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে, কিন্তু জীবনযুদ্ধে উপকূলের মানুষের দুঃখ শেষ হয় না জালিয়াপাড়ার বাসিন্দাদের। ভাঙাগড়ার যুদ্ধে মানুষ চিন্তিত তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রতি বছরই নাফ নদ-সাগর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবুও অসহায় এসব মানুষ নাফের পাড়ে থাকার সংগ্রাম করছেন। শাহপরীর দ্বীপ নাফের পাড়ে জালিয়াপাড়া ও গোলারপাড়া। সেখানে এখনও ১ শ পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই বলে নাফের ধারেই আশ্রয় নিয়ে বাঁচার যুদ্ধ করছেন তারা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘নদী ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে। তাদের সরকারি সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। আর বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে দ্রুত।’