কুমিল্লা বার্ডের বন কুটির যেন একখন্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা গ্রেজুয়েট তাদের নিয়ে কুমিল্লাস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েন এই আয়োজন করে।
শনিবার দিনব্যাপী এই আয়োজনে পরিবার নিয়ে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আনন্দে মেতে উঠেন। দীর্ঘদিন পর বন্ধু বড় ভাই বোনদের পাশে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা।
একে অপরের সঙ্গে মুঠোফোনে সেলফি তোলার পাশাপাশি একে অন্যের অবস্থান সম্পর্কেও জেনে নিয়েছেন। এ সময় তাদের মধুর স্মৃতিচারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন দিনগুলোর কথা মনে পড়েছে।
এছাড়া যে যেই হলে ছিলেন সেই হলের রেপ্লিকার সামনে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন। পাশাপাশি আলোচিত সেই মধুর ক্যান্টিন, হাকিম চত্বর, রোকেয়া হল, কার্জন হল, পলাশী চত্বর মুক্তি স্বাধীনতা ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষনিকের জন্য সবাই ফিরে গেলেন ছাত্র জীবনে।
কুমিল্লাস্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের আয়োজক জামাল নাছের, মৃনাল কান্তি গ্বোসামী, নিলুফার সুলতানা, মুহিবুবুল হক, শাহনুর আলম, ড. সফিক, শহিদুল ইসলাম। তারা জানান, বন কুটিরে তারা তৈরী করেছেন হাকিম চত্বর, কার্জন হল মুক্তি ও স্বাধীনতা, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি ও ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া আদলে রেপ্লিকা। যা দেখে সবাই বেশ আবেগাপ্লুত হয়েছে। এই আয়োজনকে ঘিরে কুমিল্লার ও কুমিল্লায় কর্মরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের এক অভূতপূর্ব মিলনমেলা তৈরী হয়েছে।’
প্রতি বছরই আয়োজনের এ ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখার চেষ্টা করবেন বলে আয়োজকরা জানান।
পবিত্র ঈদুল আজহা সমানে রেখে জমতে শুরু করেছে জেলার ৫টি পশুর হাট।
সপ্তাহে ১দিন করে এ পশুহাটে গুরু-ছাগল কেনাবেচা হয়। পশুহাটগুলো হলো আলমডাঙ্গা পশু হাট, প্রতি সপ্তাহে বুধবার এ হাটটি বসে। ডুগডুগি পশু হাট সোমবার বসে।
শিয়ালমারি পশুহাট বৃহস্পতিবার বসে, গোকুলখালি পশুহাট শুক্রবার ও ৯ মাইল ভূলটিয়া পশু হাট বসে শনিবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও বেশি কেনাবেচা হয় আলমডাঙ্গা পশু হাটে। সাপ্তাহিক এই পশুহাটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
কুরবানির হাট উপলক্ষে খামারি ও কৃষকেরা তাদের গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন হাটে। গরু ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুহাট।
আজ শনিবার সদরের ৯ মাইল ভূলটিয়া পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ও ছাগল পালনকারীরা তাদের পশু নিয়ে হাটে আসছেন। গরু-ছাগলের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আজ হাটে ক্রেতা কম। দূর থেকে ব্যাপারীও কম এসেছে। হাট মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, হাটে বেচাকেনা কিছুটা কম। আগামী হাটে গরু-ছাগল বেশি উঠবে, বেচাকেনা বেশি হবে বলে আশা করছি। বর্তমানে ৩ মন মাংস হবে এমন গরু ৯০/৯৫ হাজার টাকায় বেচা কেনা হচ্ছে। এর থেকে বড় অর্থাৎ ৬/৭ মন ওজনের গরু কিনলে দাম কিছুটা কম হবে। কোরবানির আগে ৯ মাইলে আগামী শনিবার আর মাত্র ১টি হাট বসবে।
গত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক শিয়ালমারি পশুহাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতে বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও গরু কেনাবেচা তেমন বাড়েনি। অনেকেই হাট ঘুরে ঘুরে কুরবানির গরু ও ছাগল পছন্দ করে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার দরকষাকষি করছেন। যেহেতু কোরবানি সময় এখনও ১৫ দিন বাকী রয়েছে। সেই কারণে অনেকেই অপেক্ষা করছেন। আবার কেউ দুই এক দেখে আগামী হাটে কেনার পরিকল্পনা করছেন।
অধিকাংশ ক্রেতারা দেশি জাতের মাঝারি সাইজের গরু পছন্দ করছেন। ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে গরু গুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় বড় গরু নিয়ে খামারিদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে দুই লাখ টাকার বেশি দামের গরু গুলো কম বিক্রি হতে দেখা গেছে।
গরু বিক্রি করতে আসা খামারি সামাদ আলী বলেন, কুরবানির হাটে বিক্রি করবো বলে তিনটি গরু বাড়িতে পুষে আজ বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। গরু নিয়ে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি তেমন কেউ গরুর দামই জিজ্ঞেস করছে না। একজন পার্টি তিনটি গরু সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম বলেছে। অথচ ২ মাস আগে এই তিনটি গরুর দাম বলেছিলো ৭ লাখ টাকা। বর্তমান বাজারে গরুর খুদ, ভূষি, বিচালির দাম অনেক বেশি। গরু তিনটি লালন পালন করতে যত টাকা ব্যয় হয়েছে তাতে করে এই দামে বিক্রি করলে অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে। আরেক গরু বিক্রেতা শাহজামাল হোসেন বলেন, একটি দেশি জাতের গরু বাড়িতে লালনপালন করে আজ বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। হাটে আসার সাথে সাথে অনেকেই গরুর দাম দর শুরু করে দেয়। আনুমানিক ৪ মনের ওজনের গরুটি ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।
কুরবানির ছাগল কিনতে আসা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে একটা কুরবানির ছাগল কিনতে এসেছি। হাটে অনেক ছাগল এসেছে দেখছি।
দামদরে যদি সস্তা মনে হয় তাহলে কিনবো তা না হলে আগামী সোমবার ডুগডুগি পশুহাট থেকে কিনবো। পশুহাটে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা মূল্যের অনেক বড় গরু আমদানি হয়েছে। কিন্তু বড় গরু বিক্রি অনেক কম হতে দেখা গেছে। তবে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলার ৪ উপজেলায় কোরবানি উপযোগী গরু পালন করা হয়েছে ৫১ হাজার, ছাগল পালন করা হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ও ভেড়া পালন করা হয়েছে ৩ হাজার ৯শ। জেলায় সব মিলিয়ে কোরবানির জন্য গরু, ছাগল ও ভেড়া প্রয়োজন ১ লাখ ২৪ হাজার। অতিরিক্ত পশু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যাবে।
এক কিলোমিটার কাঁচা সড়কের জন্য যুগের পর যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের চর ইসলামপুর, চর ইছামতি ও গোবিন্দপুর গ্রামের মানুষ। সারা দেশে বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ কাঁচা সড়ক পাকা হলেও বদলায়নি চর ইসলামপুর ও গোবিন্দপুর সড়কের চিত্র। বেহাল এ কাঁচা সড়কটির কারণে বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের ১০ হাজার মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েও মেলেনি উন্নয়নের প্রকল্প।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। এ সড়কের কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েছে এলাকা। সারা দেশে গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া, কাঁচা সড়ক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এ সময় সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের চর ইসলামপুর ও গোবিন্দপুর গ্রামের সড়কটি দেখলে বোঝা যায়, কতটা নাজুক জায়গাটি।
আধুনিক যুগে এসেও এভাবে কাদা মাড়িয়ে চলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, বারবার আশ্বাস দিলেও কথা রাখেননি জনপ্রতিনিধিরা। বহুলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর পশ্চিমপাড়া আবু সিদ্দিকের বাড়ি-সংলগ্ন হেরিংবোন রাস্তার মাথা থেকে চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েও রাস্তাটি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কৃষিপণ্য শহরে নিতে ভোগান্তি পড়ে এ অঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয় শিক্ষক মো. আবুল হাসেম, আসাদুজ্জামান মানিক ও সুমাইয়া ইসলামের ভাষ্য, শিশুদের লেখাপড়া, কৃষিকাজ, ফসল আনা-নেওয়া, গ্রাম থেকে শহরে যেতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে কষ্টের সীমা থাকে না। অনেক সময় এলাকাবাসী নিজেরাই ইটের খোয়া ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। এতে বর্ষায় ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। একটু বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ কাদা মাড়িয়ে চলতে হয় মানুষকে। কাঁচা সড়কের বেহালদশার কারণে সন্তানদের বিয়ে দিতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অভিভাবকদের। প্রতিদিন চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কওমি মাদ্রাসা, মসজিদে যেতেও দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। একটি সড়কের কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পিছিয়ে পড়েছে এ তিনটি গ্রামের মানুষ। সড়কটি পাকা করতে বারবার আশ্বাস দিলেও কথা রাখেননি জনপ্রতিনিধিরা। দ্রুত সড়কটি পাকা করে ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, বহুলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর পশ্চিমপাড়া আবু সিদ্দিকের বাড়ি-সংলগ্ন হেরিংবোনবন্ড রাস্তার মাথা থেকে চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে প্রায় ২ বছর আগে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েছি। পরবর্তী সময় সরেজমিনে প্রকৌশলীরা এসে সড়কটি পরিদর্শন করে মাপ-জরিপ করে নিয়ে গেলেও এখনো সড়কটির কাজ শুরু হয়নি। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ তিনটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী রোমানা আফরোজ বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। রাস্তাটি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে রাস্তাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পালনকারীদের মধ্যে। ক্রেতারা খুঁজছেন বাজেটের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু। আর মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা চাইছেন বাড়তি মুনাফা। বিপরীতে গরু পালনকারী প্রান্তিক চাষি ও খামারিরা চাইছেন ন্যায্য মূল্য, যাতে করে সব খরচ বাদ দিয়ে থাকে বাড়তি মুনাফা।
ত্রিমুখী চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে আকারে বড় গরু পালনকারী প্রান্তিকচাষিরা। কেননা, গোখাদ্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আকারে বড় গরু পালন করতে প্রতিদিন একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়তি পরিচর্যার খরচ। কেননা, গরমে বৈদ্যুতিক লোডশেডিং বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকারে বড় পশুগুলোর স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তেমনি একজন বড় গরু পালনকারী চাষি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের হাউশ আলী। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ঈদের সময় বিক্রির জন্য আকারে বড় একটি পশু পালন করে আসছেন, যাকে ঘিরে থাকে পরিবারের অনেক স্বপ্ন। নিজের সন্তানের মতো করে লালন-পালন করা পশুটি কোরবানির ঈদে বিক্রি করে কাঙ্ক্ষিত মূল্য পেলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা মেলে।
সেই স্বপ্ন ধারণ করে দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গরু কিনেছিলেন। সেই গরুটির নাম রাখা হয়েছে রাজাবাবু। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা এই পশুটির বতর্মান ওজন ১ হাজার কেজির বেশি হবে। স্থানীয় বাজারে এতবড় পশুর চাহিদা না থাকায় তাকে নেওয়া হবে ঢাকার পশু হাটে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন পালনকারী। ৯ ফুট লম্বা আর ৮ ফুট উচ্চতার রাজাবাবুর দাম তিনি হাঁকিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। বড় আকারের গরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে দেখতে আসেন অনেকেই। সাদা কালো বর্ণের গরুটির খাবারের তালিকায় প্রতিদিন থাকে, কাঁচা ঘাস, গমের ভূষি, ভাত ও শুকনা খড়সহ অন্যান্য সামগ্রী। গড়ে বতর্মানে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাচ্ছে রাজাবাবু।
প্রচণ্ড গরম আর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে হাউশ আলীর মতো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বড় গরু পালনকারী সব চাষি ও খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
বড় গরু পালনকারী রিপন হোসেন বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদে আমি একটি গরু লালন-পালন করেছিলাম। যার ওজন হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ কেজি। ভালো দাম পাব বলে আমি ঢাকার হাটে নিয়ে গিয়েছিলাম বেচতে। সেখানে গিয়ে বিপদ। কেউ গরুর ন্যায্য মূল্য দিতে চায় না। সবাই কম দাম বলে। শেষে আমি রাগ করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে গরু ফেরত এনে স্থানীয় হাটে বিক্রি করেছি। আমি ভাবলাম আমার যা লস হইছে হোক। লাভ করলে আমার এলাকার লোক করুক।’
আরেক চাষি ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বড় বড় তিনটি গরু ছিল। বিশ দিন আগে একটা গরু গরমে স্ট্রোক করে মরে গেছে। আরেকটি অসুস্থতাজনিত কারণে জবাই করে মাংস বিক্রি করেছি। মূলত বড় গরু আমরা কষ্ট করে পালন করি ঠিকই। কিন্তু ভালো দাম পাই না। যার কারণে যাদের বাড়ি কিংবা খামারে আকারে বড় গরু আছে, তারাই বতর্মানে চিন্তার মধ্যে আছেন।’
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, ভৌগোলিক কারণে এই জেলায় প্রাকৃতিক গোখাদ্যের কমতি নেই। তাই বাজারে গোখাদ্যের দাম বাড়লে এখানকার চাষি ও খামারিদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ার কথা না। তা ছাড়া এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এই জেলার পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। বাকি উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। এ জেলা ধানের জন্য বিখ্যাত হলেও বর্তমানে এটি আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। জেলায় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করছেন চাষিরা। রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে লাভবান হচ্ছেন জেলার শত শত চাষি।
জানা যায়, সাধারণত গৌরমতি, আমরুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগোতে ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়। এতে কীটনাশক ব্যবহারের দরকার পড়ে না। প্রাকৃতিক উপায়ে রোগমুক্ত এ আমের চাহিদাও তাই বেশি। এ বিশেষত্বের কারণে এখানকার আম বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক আম চাষিরা।
নওগাঁর পোরশা উপজেলার বন্ধুপাড়া এলাকার আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে ব্যাগ। আর তার মধ্যেই সুরক্ষিত পরিপুষ্ট আকর্ষণীয় গৌরমতি, আম রুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো জাতের আম। এই আমের চাহিদা রয়েছে দেশসহ বিদেশে। কীটনাশক না দিয়ে পরিবেশসম্মতভাবে আম চাষ করার এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি।
ফ্রুট ব্যাগিংয়ের পাশাপাশি আমের ব্র্যান্ডিং ও এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করে। এটি হলো কোনো পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়, নাম এবং গুণগত বৈশিষ্ট্যসহ বাজারজাত করার কৌশল। এর মাধ্যমে পণ্যটি ভোক্তাদের কাছে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বা গুণগত মানের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ঠিক তেমনিভাবে নওগাঁর আম ব্র্যান্ড বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরা যেতে পারে।
নওগাঁর আম শুধু দেশে নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ বছর আরও বড় পরিসরে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চীন সরকারিভাবে আম আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর প্যাকেজিং, উৎসভিত্তিক পরিচয় ও সনদিকরণের অভাবে এই আম বিদেশে গিয়ে হয়ে যায় বাংলাদেশি আম। নওগাঁ নামটি আড়ালে থেকে যায়। নওগাঁ নামটি স্বীকৃতি পায় না। ফলে এর স্থানীয় পরিচয় হারিয়ে যায়। এতে করে সঠিক মূল্যায়ন এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে জেলার স্বতন্ত্র ভূমিকা প্রতিফলিত হয় না।
পোরশার সফল আম চাষি রায়হান আলী জানান, চলতি বছর ৬০ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন। এসব আম কীটনাশকমুক্ত। আবার পোকামাকড়ের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা পাবে। ফলন ভালো হবে। বেশিদিন গাছে আম সংরক্ষণ করা যাবে এবং আমের গায়ের রং ভালো ও ঝকঝকে পরিষ্কার থাকবে। এসব আম বিদেশে রপ্তানি করার আশায় তিনি ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ করেছেন। আর এতে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
রায়হান আলী বলেন, পোকামাকড় ও বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আম রক্ষা করতে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এছাড়াও ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি আম সংরক্ষণ করার একটি সহজ ও উপযুক্ত পন্থা। যা আমের গুণগত মান ও রং সতেজ রাখতে খুবই কার্যকর।
তার আমবাগানে কর্মরত শ্রমিক শরিফুল ইসলাম, কাদের ও সোলায়মান আলী জানান, লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে এই বাগানে কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালানো হয়। সারা বছর ১৫-২০জন শ্রমিক এই আম বাগানে কাজ করেন। তারা সবাই এই উপার্জন দিয়েই সংসার চালান।
সাপাহারের আমচাষি সোহেল রানা বলেন, নিরাপদ আমে খরচ কিছুটা বেশি হলেও লাভজনক। ফ্রুট ব্যাগিং করা আম দেরিতে পরিপক্ব হওয়ায় বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। প্রতি বছর সুপার শপে নিরাপদ আমের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এ বছর তিনি ১ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন বলে জানান।
পত্নীতলার আমচাষি মঞ্জুর এলাহী বলেন, আম রফতানির আগে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। আমে যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে না পারে, সেজন্য প্রথমে ফ্রুট ব্যাগিং এর কাগজ দিয়ে প্রতিটি আমের শরীর জড়িয়ে দেয়া হয়। বাগান থেকে আম রফতানির ১৫ দিন আগে থেকে গাছে কীটনাশক স্প্রে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর আম পেড়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মোড়কজাত করা হয়। এতে আম নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি আমের গায়ের রং সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
পোরশা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, আধুনিক ও পরিবেশসম্মত আম চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফ্রুট ব্যাগিং মূলত ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে আমকে রক্ষা করে। তাই এতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। এতে আমের পচন রোধ হয়। ফলে কৃষক কীটনাশক মুক্ত আম বেশি দামে দেশে ও বিদেশে বিক্রি করে বেশি লাভবান হতে পারেন।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাটি ও জলবায়ুর বিশেষত্বের কারণে দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় নওগাঁর আম বেশি সুস্বাদু। যেটাকে নিজেদের ভাগ্য বদলের চাবিকাঠি হিসেবে নিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। অন্য জেলাগুলোয় যখন আমের মৌসুম শেষের পথে তখনও এখানে প্রচুর আম রুপালি আম পাওয়া যায়। এজন্য প্রতি বছর জেলায় আমের বাগান উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
তিনি বলেন, স্বাদে সেরা হওয়ায় দেশীয় সুপার শপে নওগাঁর নিরাপদ আমের কদর বেশি। নিরাপদ আম উৎপাদনে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে রফতনিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে চাষিদের ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ব্যাগসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৫০ লাখ ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫ গুণ বেশি। চলতি বছর জেলায় কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: বাসস
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতেই ধসে গেছে দুধকুমার নদীর ডানতীর রক্ষা বাঁধ। বন্যার আগেই বাঁধ ধসে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন শিরোনামে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা বিভিন্ন প্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সেই প্রকল্পের আওতায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নদীভাঙন রোধে নদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম পাউবো। ৫০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা। ঢাকার মগবাজারের (টি আই পিভিএল জেড) আই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে।
এটি ২০২২ সালের মাঝামাঝি শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও কাজ এখনো চলমান। এর মধ্যেই প্রকল্পটির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই গত কদিনের বৃষ্টিপাতে ইসলামপুর সামাদের ঘাট এলাকায় বাঁধের ১২ মিটার অংশ ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
বন্যা মৌসুম শুরু না হতেই অল্প বৃষ্টিতে বাঁধ ধসে যাওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নদী থেকে বালু তুলে সেই বালু দিয়েই ব্লক তৈরি করেছেন। এটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় মিশানো হয়নি। বালু তোলার কারণে বাঁধের নিচে মাটি না থাকায় অল্প বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধসে গেছে। এছাড়া দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি তাদের মনমতো কাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম; কিন্তু কাজ শেষ না হতেই অল্প বৃষ্টিতেই বন্যা আসার আগে বাঁধ ধসে পড়েছে। দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ মেরামত না করলে বন্যায় নদী ভাঙন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন লুৎফরসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদী থেকে বালু তোলা বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, তীর থেকে নিয়মানুযায়ী ২০০ মিটার দূর থেকে বালু তুলেছেন তারা। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন তীরের কাছ থেকে বালু তোলায় বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করা হচ্ছে। তবে, কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের মেরামতের দায়িত্ব ওই প্রতিষ্ঠানের। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশের কাজ আবার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সূত্র: ইউএনবি
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক গরু। একের পর এক ভেসে উঠছে মরা গরু। বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় কৃষক। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ।
শুক্রবার(২৩ মে) বিকাল ৪টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ খালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কৃষক এমরানের ২টা, মহাসিনের ৪টা,ইয়ারুরের ৩টা, মাসুমের ১টা,ওয়াহিদুজ্জামানের ১টা, রনির ১টা, নাহিদের ৩টা, হেলানির ১টা, হানিফার ২টা, মনার ২টা, মো. শরীফের ৩টা, তরিকুলের ২টা, কবিরের খান ৩টা, আবুল হোসেনের ৩টা, জামালের ১টা, শাহাজালালের ৩টা, রসুল গাজীর ১টাসহ বহু কৃষকের শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল খান বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে ঘাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করে সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল রয়েছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকালে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকালে খাল পাড় হবার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৩৬টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো প্রায় ৬৫টি গরু নিখোঁজ। লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগল প্রায়'।
ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন,‘এমন ঘটনা জীবনেও ঘটে নাই। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করি নাই। আমার ৪টি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি'।
কৃষক আবু তালেব সুজন খান বলেন, প্রতিদিনের মতো আজকেও সকালে গরু ঘাস খাওয়ার জন্য খাল পার হয়ে যায়। আসার পথে জোয়ারের পানির স্রোতে প্রায় ১০০ গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে ৩৬টি মৃত গরু উদ্ধার হয়েছে। এখনও আনেক কৃষক তাদের গরু খোঁজাখুঁজি করছে।
বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ‘এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করব।’
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৬টি মৃতগরু উদ্ধার করা হয়েছে, আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।’
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চলমান একটি জলকপাট নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার স্বীকার দৈনিক ইত্তেফাকের তজুমদ্দিন উপজেলা প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলার প্রতিনিধি মো: ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ।
শুক্রবার সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইস গেট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে এই মামলার এজাহারভূক্ত আসামি আজগর (৪০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজগর হাজারীগঞ্জ এলাকার মো: মোস্তফার পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলা প্রতিনিধি মো: ফারুক নির্মাণস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কন্সট্রাকশন এর কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করে তাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে হামলার শিকার ওই দুই সাংবাদিকদের মধ্যে মো: ফারুক তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেফতার করে। বাকিরা পলাতক রয়েছে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মোহাব্বত খাঁন জানান, সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ভারত থেকে বাংলাদেশিদের পুশ ইনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলা হলেও লাভ হচ্ছে না কিছুই। বৃহস্পতিবার ভোরেও পঞ্চগড়, কুলাউড়া, ফেনী সীমান্তে মোট ৫২ বাংলাদেশিকে পুশ ইনের ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
বৃহস্পতিবার ভোররাতে জেলার সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধরভাঙ্গা বিওপি এলাকার সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ২১ বাংলাদেশিকে পুশইন করে। জয়ধরভাঙ্গা সীমান্তের পিলার ৭৫৭/১০-এস হতে আনুমানিক ২.৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বড়বাড়ী নামক স্থান থেকে বিওপির বিশেষ টহল দল নারী, পুরুষ, শিশুসহ ২১ বাংলাদেশিকে করে বিজিবি।
পুশইন হওয়া আলেয়া জানান, ‘২০ বছর ধরে আমরা ভারতের গুজরাটে বসবাস করে আসছি। ভারতের পুলিশ আমাদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। বিএসএফ আমাদের বিমানে করে শিলিগুড়ি নিয়ে আসে। আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের কোথায় রেখেছে, এটাও আমরা বলতে পারিনা।’
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান জানান, বিজিবি বৃহস্পতিবার বিকেলে আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করেছে। আটক শিশুদের সমাজসেবার মাধ্যমে সেফ হোমে এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিজিবি কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করবেন।
নীলফামারীর ৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা বলেন, বিএসএফ পুশইন করায় আমরা পতাকা বৈঠকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি।
কুলাউড়া প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে শিশুসহ ৭ বাংলাদেশিকে ফের পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, পুশইনের পর তুতবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিজিবির সদস্যরা ওই সাতজনকে আটক করেন। আটকদের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ২ জন নারী ও ৩ শিশু রয়েছে। তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে ৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমরা তাদের কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করবো।’
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, বিজিবি আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৫ মে একই সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইনের শিকার হয়ে ১৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিলো।
ফেনী জেলা প্রতিনিধি
ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে ২৪ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার ভোরে তাদের পুশইন করা হয়।
বিজিবি জানায়, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার যশপুর ও খেজুরিয়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত দিয়ে ৬টি পরিবারের ২৪ জনকে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় বিএসএফ। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলেই তাদের আটক করে।
আটকরা প্রত্যেকেই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ২৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৬ জন, নারী ৫ জন ও ১৩ জন শিশু রয়েছে। আটককৃতদের ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই ব্যক্তিদের ভারতের গুজরাট ও হরিয়ানা থেকে আগরতলা সীমান্তে আনা হয় বিমানযোগে। এই দলে ছিলো ১৪০ জন। এরমধ্যে ২৪ জনকে ফেনীর দুই সীমান্তে পুশ ইন করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে ১০ জন মুসলমান, বাকিরা হিন্দু। ১৫ বছরের বেশি সময় তারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাস করে আসছিলেন।
ফেনী ৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে বিএসএফ কর্তৃক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তাদের আটক করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আটককৃতরা থানা হেফাজতে রয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে নাটোরের লালপুরে কোরবানির জন্য প্রায় ৭৬ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এসব পশু দেশের বিভিন্ন জেলার হাটে সরবরাহ করা হবে। এতে প্রায় ৩১৫ কোটি টাকার পশু বিক্রির প্রত্যাশা করছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
খামারিরা বলছেন, একদিকে যেমন তারা প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে এনেছেন, অন্যদিকে পশু খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে তাদের খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। পশুর দাম কমে গেলে লোকসানের শঙ্কায় পড়বেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, খামারে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়াকে প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করা হচ্ছে। অনেক খামারে প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে বাঁচাতে ও পরিছন্নতায় খামারিরা মোটরের পানি দিয়ে গোসল পশু গোসল করানো হচ্ছে।
এ সময় কথা হয় উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের খামারী মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার খামারে এবার ৮টি গরু প্রস্তুত করেছি। সবগুলোই প্রাকৃতিক খাদ্য ও পরিচর্যায় বড় করেছি। গরমে অনেক কষ্ট হচ্ছে, তবে পশুগুলোর পরিচর্যায় কোনো ত্রুটি রাখছি না। শুধু চাই, হাটে যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য না থাকে।
কেশবপুর গ্রামের আরেক খামারী হেলাল হোসেন বলেন, ঘাস, খৈল, ভুসি, খড় সবকিছুর দাম বেড়েছে। আগে গরুর পেছনে যা খরচ হতো, এখন দ্বিগুণ লেগে যাচ্ছে। বাজারে দাম না থাকলে লোকসান ছাড়া কিছু থাকবে না। তবুও আশায় আছি সরকার যদি সঠিক নজরদারি রাখে, তাহলে আমাদের মতো খামারিরা লাভবান হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর কোরবানির জন্য ৭৬ হাজার ১৭৬টি পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১১ হাজার ৬৩৭, বলদ ৪ হাজার ৭৫৫, গাভী ১ হাজার ৯২২, মহিষ ৫ হাজার ৫৬০, ছাগল ৪৬ হাজার ও ভেড়া ৬ হাজার ২৬৪টি। এছাড়া স্থানীয় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪১ হাজার। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৩৫ হাজার পশু যা দেশের বিভিন্ন জায়গার চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, এবছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার পশু প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন হাটে প্রায় ২০/২৫ হাজার পশু বিক্রির লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পশুগুলো বিক্রি করে প্রায় ৩১৫ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রাসায়নিক বা ইনজেকশন ব্যবহার প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি চলছে। পশুর হাটগুলোতে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ও মনিটরিং টিম কাজ করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক সংসদ সদস্য ও আলোচিত সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) শুনানি শেষে তাকে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মমতাজের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।
এর আগে, সকালে গাজীপুর জেলার কাশিমপুর কারাগার থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে সিংগাইর থানার হত্যা মামলায় মমতাজ বেগমের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মুহম্মদ আব্দুন নূর।
এ ছাড়া, হরিরামপুর থানার মারামারির মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক আইভি আক্তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, ‘২০১৩ সালে সিঙ্গাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে গত ২৫ অক্টোবর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মজনু মোল্লা বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।’
এ ছাড়া, তার নির্বাচনী এলাকা হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা রয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মামলাটি করেছিলেন বলে জানান আবুল খায়ের।
ওসি আরও বলেন, ‘আদালত থেকে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় মানুষ মমতাজ বেগমকে কিছু ডিম নিক্ষেপ করেছেন। আমি সারাক্ষণ তার পাশেই ছিলাম, আমারও ডিম লেগেছে।’
এর আগে, ঢাকায় বেশ কিছু থানায় হওয়া হত্যা মামলায় মমতাজ চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ড শেষে তাকে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে চুরি-ডাকাতি। প্রতিনিয়ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চুরি -ডাকাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। গরু-চাগল থেকে শুরু করে মানুষের বসত বাড়ি ও দোকানপাটের মালামাল চুরি হচ্ছে। বসতবাড়ির পানির কল, মটর, শাড়ি কাপড় কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না চোরের হাত থেকে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
প্রতিদিন কোথাও না কোথাও চলছে সন্ত্রাসীদের মহড়া। উপজেলার দুর্গম চর এলাকা বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের অলিগলিতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধ চক্র। এরা সংঘবদ্ধ হয়ে গভীর রাতে মানুষের গরু চুরি থেকে শুরু করে বসত বাড়িতে হানা দিচ্ছে। অন্যদিকে এ দুটি ইউনিয়নে নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করা ও ধর্ষণ চেষ্টার সংখ্যাও বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। সব মিলিয়ে রামগতি উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বাসিন্দারা রয়েছে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। এসব চুরি ডাকাতি ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ বা মামলা থানায় নিলেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। তারা অপরাধী চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এতে আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতি হচ্ছে। পুলিশের নীরবতায় মানুষ থানার উপর আস্থা রাখতে পারছেনা। উপজেলার সব চেয়ে বেশী চুরি ডাকাতি হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে দুর্গম চরাঞ্চল হিসেবে পরিচিত চরগাজী ও বড়খেরী ইউনিয়নে।
সূত্রমতে, গত ১০ মাসে চরগাজী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের টুমচর গ্রামের মাইনউদ্দিন মিয়ার বাড়ি থেকে ৬টি গরু চুরি হয়, তিন নম্বর ওয়ার্ডের সামা গ্রামের জসিমের বাড়ি থেকে ৩ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৬০ হাজার টাকা, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের নুর উদ্দিনের বাড়ি থেকে একটি অটোরিকশা ও নগদ ১২ হাজার টাকা,চার নম্বর ওয়ার্ডের হকসাহেব প্রকাশ ডুবাইওয়ালার বাড়ি থেকে নগদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণ ডাকাতি হয়, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের মীর বাড়ির হাসান বেপারীর ঘর থেকে নগদ দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা ও আড়াই ভরি স্বর্ণ ডাকাতি হয়, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের মীর বাড়ির নুর আলমের ঘর থেকে নগদ ৪ লাখ টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণ ডাকাতি হয়, তিন নম্বর ওয়ার্ডের জসিম বেপারীর বাড়ি থেকে নগদ তিন লাখ টাকা চুরি হয়, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের হেলাল মেস্তরীর বাড়ি থেকে নগদ ২৬ হাজার টাকা ও একশেট কানপাশা,চার নম্বর ওয়ার্ডের মাইন উদ্দিনের বাড়ীতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তিন নম্বর ওয়ার্ডের হাসান ড্রাইভারের দোকান থেকে নগদ এক লাখ ৬০ হাজার টাকা, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সাইফুদ্দিনের দোকান থেকে নগদ ২৮ হাজার টাকা ও মালামাল, দুই নম্বর ওয়ার্ডের বেচুর দোকান থেকে নগদ ৬ হাজার টাকা ও মালামাল, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের আহমদিয়া মার্কেটের নুর উদ্দিনের দোকান থেকে নগদ ১৭ হাজার টাকা ও মালামাল ও আট নম্বর ওয়ার্ডের নোমান সিদ্দিকীর বাড়ি থেকে দুইটি গরু চুরি হয়।
এছাড়া বড়খেরী ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের আলিম উদ্দিনের বাড়ী থেকে এক ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩২ হাজার টাকা,বড়খেরী ইউনিয়ন রামগতি বাজারের হাজী জসিম উদ্দিন ট্রেডার্স থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা ডাকাতি হয়, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের রামগতি বাজারের মাইনউদ্দিনের দোকান থেকে নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকা, চার নম্বর ওয়ার্ডের তেলি বাড়ীর এরশাদের ঘর থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণ চুরি। চরগাজী ও বড়খেরী ইউনিয়ন ছাড়াও উপজেলার চররমিজ, চরপোড়াগাছা,চরবাদাম, আলেকজান্ডার, চরআলগী ইউনিয়ন ও রামগতি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নে কয়েকটি ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক হওয়ায় মানুষ থানা পুলিশের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
চরগাজী ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের মাইন উদ্দীন বলেন, ‘যেভাবে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে, তাতে আমরা খুবই আতঙ্কে আছি। আমার ছয়টি গরু চুরি হলেও এখন পর্যন্ত কোন সন্ধান পাইনি।’
বড়খেরী ইউনিয়নের মোঃ এরশাদ বলেন, মানুষের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই, চরগাজী ও বড়খেরী ইউনিয়নে গণহারে চুরি ডাকাতি হচ্ছে। থানা পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছেনা।
ব্যাপকহারে চুরি ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘কি করতাম? কোনভাবেই থামানো যাচ্ছেনা। পুলিশের টহল জোরদার করতে বলে আসছি। এতো বড় ইউনিয়নে একদিকে পাহারা দিলে অন্যদিকে ঢুকে পড়ে চোরের দল।’
বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, আমরা গ্রাম পুলিশ দিয়ে নিয়মিত পাহারা দিচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা সভায় বার বার বলছি। এরপরেও কোনভাবেই চুরি ডাকাতি বন্ধ করা যাচ্ছেনা। মানুষকেও একটু সতর্কভাবে চলা উচিত।
চুরি-ডাকাতির অভিযোগ মানতে নারাজ রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কবির হোসেন। তিনি বলেন, টুকটাক কিছু চুরি-ডাকাতির খবর আমরাও পাচ্ছি। থানায় আসা অভিযোগগুলো গ্রহণ করছি। অপরাধী ধরতে পুলিশ কাজও করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভাল বলে দাবি তার।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একটি শ্মশান থেকে এক নারীর লাশের মাথা খুলি চুরির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের শ্মশান ঘাটে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, মৃত ওই নারীর নাম বাসু সরকার (৭০)। তিনি কামালপুর গ্রামের মৃত অধীর সরকারের স্ত্রী ছিলেন। এলাকাবাসী জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অসুস্থতার কারণে বাসু সরকারের মৃত্যু হলে তাকে কামালপুর শ্মশানে দাহ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকালে স্থানীয়রা শ্মশান ঘাটে গিয়ে বাসু সরকারের সমাধিস্থলে একটি গর্ত দেখতে পান। পরে সুরঙ্গের মতো করে খোঁড়া অংশ দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখেন, লাশের মাথার খুলি ও হাতের কয়েকটি হাড় নেই। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানানো হলে মুহূর্তেই খবরটি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহল্লা থেকে নারী-পুরুষ এসে সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন এবং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে মাথার খুলি চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।’
মঙ্গলবার ভোর থেকেই ভারী বৃষ্টি শুরু হয় সিলেটে। ভারী বৃষ্টিতে নগরের অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সকালের দিকেই তলিয়ে যায় নগরের প্রায় ২০টি এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী। অন্যদিকে সকালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং।
গত কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। ফলে জলাবদ্ধতার আতঙ্ক ছিল নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে। মঙ্গলবার সকালের বৃষ্টিতে এই আতঙ্ক বাস্তবে রূপ নেয়। পানিতে তলিয়ে যায় অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট। ঘরবাড়িতেও ঢুকে পড়ে পানি।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১০১ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এই বৃষ্টিতে নগরের উপশহর, তেররতন, সোবহানীঘাট, তালতলা, মাছুদিঘিরপাড়, ছড়ারপাড়, মণিপুরী রাজবাড়ী, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, বাবনা, স্টেশন রোডসহ অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এসব এলাকার ঘরবাড়ি ও দোকানপাটেও পানি ঢুকে যায়।
জলাবদ্ধতা সিলেট নগরীর একটি পুরোনো সমস্যা। অনেক বছর ধরে এই সমস্যায় জর্জরিত নাগরিক জীবন। সমাধানের চেষ্টা হয়েছে অনেক। খরচ হয়েছে কোটি কোটি টাকা; কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মেলেনি।
নগরের তালতলা এলাকার বাসিন্দা কায়সার আহমদ বলেন, সকালের বৃষ্টিতে আমার ঘরে পানি ঢুকে যায়। অফিস, বাচ্চাদের স্কুল বাদ দিয়ে ঘরের পানি সেচে দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবার এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইবার ঘরে পানি ঢুকল। অথচ এখনো বর্ষাকালই আসেনি।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির পর নগরবাসীর সুরক্ষায় বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে সিসিক। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, দুবছর আগের বন্যার পর সিটি করপোরেশনের নিম্নাঞ্চলগুলোর নাগরিকদের সুরক্ষায় বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ আমাদের ছিল। বিশেষ করে নদীর তীর সংরক্ষণ, সেচ প্রকল্প ইত্যাদি। তবে এগুলো এখনো আলোচনার পর্যায়েই আছে। তাই সেরকম ঢল নামলে বা অতিবৃষ্টি হলে আসলে তেমন কিছু করার নেই।
ঢলে পানির নিচে জাফলং
সিলেটের জাফলংয়ে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নেমেছে। ঢলে পিয়াইন নদীতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢল পিয়াইন নদী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এতে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকা দ্রুত প্লাবিত হয়।
নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে আশপাশের বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
অধিকাংশ পর্যটন এলাকা ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম। নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাফলং ছাড়াও গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতেও ঢল নেমেছে। এসব এলাকায় কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেট ও ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে আকস্মিক বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।