নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট)উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের একটি দল তদন্ত সাপেক্ষে ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারসহ ক্লিনিক সিলগালা করেছেন ।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে,বুধবার (১৩ আগষ্ট)সকালে উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কামাল শেখের প্রসূতি স্ত্রী লাবনী আক্তারকে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় । ওইদিন বিকেলে রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে জমজ সন্তানের জন্ম দেন ।
অপারেশনের পর লাবনী আক্তার গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে রোগীকে খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করেন ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন । হাসপাতালে নেওয়ার পথে লাবনী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ।
লাবনী আক্তারের দেবর মো.আসলাম হোসেনের অভিযোগ ক্লিনিকে কোন অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসক ছিল না । কোন রকমে অজ্ঞান করেই রোগীকে অপারেশন করা হয় । যে কারণে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে আমার ভাবীর মৃত্যু হয়েছে । তিনি বলেন,জমজ সন্তান দুইটি বর্তমানে খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার ভাই মা বাবা সকলেই নবজাতকের চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছে । তারা বাড়ীতে আসলে পরে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.শোয়াইব হোসেন বলেন,ওই ক্লিনিকে সেবিকা ও ডিউটি চিকিৎসক নেই । এছাড়া মানসম্মত অপারেশন থিয়েটারও নেই । তিনি বলেন,সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আমিসহ কালিয়া উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস,মেডিকেল কর্মকর্তা মো.হাসিবুর রহমান,ডেন্টাল সার্জন মো.সরোয়ার হোসেন,উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মো.মঈনুদ্দীন ওই ক্লিনিক তদন্তে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই ।
উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস বলেন,এর আগেও খাদিজা সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ পাওয়া গেছে । ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ অসুধ ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েকবার জেল জরিমানা করেছে । কিন্তু তারপরও ওই ক্লিনিক চালু রয়েছে ।
জানতে চাইলে ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন । তিনি মামলা করারও হুমকী দেন ।
সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশীদ বলেন,ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাবার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছিল । তিনি বলেন,প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে । আগামি তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত টিম গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার বহুতল মার্কেট নির্মাণে ড্রইং,ডিজাইন ও পাইলিং থেকে শুরু করে পুরো নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর প্রায় ১০ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে কাগজে কলমে কথিত মাটি পরীক্ষার কাজ হয়েছে। পাইলিং এর কাজ শবেমাত্র শুরু হয়েছে। কার্য সমাপ্তির মাত্র ২ মাস সময় বাকী আছে। এখনও মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। অথচ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এরই মধ্যে প্রায় এক কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন আই.ইউ.জি.আই.পি (ইমপ্রুভিং আরবান গভর্নেন্স এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট) প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গোয়ালন্দ পৌরসভায় ৭ তলা ভীত বিশিষ্ট ৩ তলা মার্কেট নির্মাণের জন্য এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে ৯ কোটি ২৭ হাজার ৪০৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এজন্য প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই কল্পে স্থান নির্বাচন (সাইড সিলেকশন), মাটি পরীক্ষা (সয়েল টেস্ট), ড্রইং ও ডিজাইন সম্পন্ন করা হয়। গত বছর ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ফরিদপুরের তাশা কনস্ট্রাকশন লিঃ ও জান্নাত কনস্ট্রাকশন (জয়েন্ট ভেঞ্চার) নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর হতে এক বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের একগুচ্ছ সংবাদ কর্মী সরেজমিন নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে মার্কেটের নির্ধারিত স্থানটি চারপাশ টিনের বেড়ায় আবৃত করে সেখানে পিকাস্ট পাইলিংয়ের কাজ চলছে। এই কাজে ঠিকাদারের পক্ষে উপ ঠিকাদার হিসেবে নিয়োজিত “বিলটেক্স টেকনোলজি” এর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, এপর্যন্ত তারা ২৫ ফুট দীর্ঘ মোট ২১ টি পাইলিং স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। নির্মাণ কাজের টেন্ডার সিডিউলে ৫০ ফুট দীর্ঘ পাইল স্থাপনের উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অর্ধেক আকারের পাইলিং করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের বিষয়ে ওই প্রকৌশলী বলেন, এখানকার মাটি খুবই শক্ত। যে কারণে ২৫ ফুটই যথেষ্ট।
প্রত্যক্ষদর্শী বাজারের উৎসুক একাধিক ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের তথ্য ও ভিডিও সংগ্রহের সময় এগিয়ে এসে এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে ৫০ ফুটের স্থলে ২৫ ফুটের পাইলিং করা হচ্ছে। তাও আবার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কোন কোন পাইল মাঝ পথে ভেঙ্গে যাচ্ছে।
তিনি জানান, বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ পাইলিংয়ের জন্য ৫০ ফুটের পূর্ব নির্ধারিত ১৪০ টির স্থলে ২৫ ফুটের ২৮০ টি পাইল স্থাপনের কথা বলেছেন। তবে এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দপ্তরের কোন লিখিত আদেশ কিংবা সিডিউল সংশোধনীর কোন তথ্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিংবা গোয়ালন্দ পৌর কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি।
এদিকে কারিগরি ত্রুটি সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য গত ১২ আগস্ট গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলী ফেরদৌস খান জানান, সয়েল টেস্ট এর সাথে ডিজাইনের কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পাইল এর সংখ্যা বৃদ্ধি ও দৈর্ঘ্য কমিয়ে পাইলিং এর কাজ বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, মাটির বেয়ারিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য পাইলিং একভাবে করলেই চলে।
কাজের বাস্তবায়নের ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পূর্বে এই বাজারের পুরাতন দোকানগুলো নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও অপসারণ হতে বাড়তি সময় ব্যায় হওয়ায় নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়ে যায়। কাজটি নির্ধারিত সময়ে শেষ হবেনা, এরজন্য পিডি অফিস থেকে সময় বাড়িয়ে নেওয়া যাবে।
তিনি জানান, ৭০ শতাংশ পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় এক কোটি টাকার একটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে বিল প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে নির্মাণ কাজের পুরো বিষয়টি কারিগরি ও প্রকৌশলগত বিষয় উল্লেখ করে তা এড়িয়ে যান।
এদিকে পুরো কাজের ধীর গতি, সিডিউলে বর্ণিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে পাইলিং স্থাপন সহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাশা কনস্ট্রাকশন লিঃ ও জান্নাত কনস্ট্রাকশন এর স্বত্ত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম বলেন, কাজটি স্থানীয় ঠিকাদার সালাউদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেন সহ বেশ কয়েকজন বাস্তবায়ন করছে। এতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারপরও তিনি বিষয়টি দেখে পরে জানাবেন বলে মোবাইল ফোনে উল্লেখ করেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান ভূঁইয়া ওরফে লায়ন বাবুলকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বুধবার রাতে রাজধানীর বনশ্রীর নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত লায়ন বাবুল বারদী ইউনিয়নের গোয়ালাপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ তাকে সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ইব্রাহিম হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বারদী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী হন। ওই ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী না থাকায় সে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সে বিভিন্ন রাজনৈতিক বক্তব্য ও কর্মকান্ডে আলোচিত ও সমালোচিত হয়ে উঠেন। ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী বারদি ইউনিয়নের পাইকপাড়া একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সমালোচিত হন ‘আমি বারদী ইউনিয়নের ম্যাজিস্ট্রেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার অনুমতি নিয়ে বারদীতে আসতে হবে, এখন থেকে প্রশাসনকে অবশ্যই আমার পক্ষে কাজ করতে হবে কারো ফোনে প্রশাসন আসবে না, আমি যদি বলি সুইচ অফ দিজ ইজ অফ।’ লায়ন বাবুলের এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। এ ঘটনায় ফারুক নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা লায়ন বাবুলের এ বক্তব্যের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি পুলিশকে। দীর্ঘদিন মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের এসআই সৈয়দ রুহুল আমিন লায়ন বাবুলের বক্তব্যের বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ৫০০ ধারার অপরাধে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়ে তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ জন্য তাকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য পদও হারাতে হয়েছিল।
এছাড়াও লায়ন বাহবুবুর রহমান বাবুল ভূঁইয়া ফাউন্ডেশননের উদ্যোগে প্রতি বছর বিনামূল্য চক্ষু সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সেবায় ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ চক্ষু চিকিৎসা পেয়েছেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দেড় হাজার ভ্যান চালকের মাঝে বিনামূল্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টার সময যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই লাইসেন্স প্রদান করা হয়। যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে (ভর্তুকি মূল্যে) চালকদের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রেজাউল করিম, ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবু সাঈদ, ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য মোছা. মরিয়ম খাতুন ও ৭,৮, ও নম্বর ওয়ার্ডের মোছা. হাসি খাতুনসহ প্রমূখ। এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার জন সম্মানিত ভ্যানচালক আছেন। ভ্যান চালিয়ে সন্তানদের পড়াশোনা, ওষুধ কেনা, সংসার চালাতে তাঁদের খুব কষ্ট হয়। তাই সেজন্য গত বছরের ন্যায় এবারো পরিষদের ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে এক হাজার ৫০০ জনকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। পরিষদের সাধ্যমত ভবিষ্যতেও এধরনের কার্যক্রম চলামান থাকবে। এ দিকে বিনামূল্যে লাইসেন্স পেয়ে খুশি চালকরা। তারা বলেন, গরিব মানুষ। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালাতে হয়। ফ্রি যা পাবো তাই লাভ। ভ্যানচালক মনছের আলী বলেন, সারাদিন খাটেখুটে যা পাই, তা দিয়ে চলতে বেশখানি কষ্টই হয়। ফ্রি ফ্রি যা পাবো, তাই লাভ। তিনি ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের বাসিন্দা। রসুলপুর গ্রামের এরশাদ শেখ বলেন, পৌর এলাকায় গেলেই ভ্যান ধরে ৩০০ টাকার লাইসেন্স করায়। কিন্তু চেয়ারম্যান ফ্রি ফ্রি দিচ্ছে। দাম ১০০ টাকা হলেও আমাদের লাভই হচ্ছে। প্রতিটি লাইসেন্সের মূল্য ১০০ টাকা করে জানালেন পরিষদের সচিব রেজাউল করিম। তিনি বলেন, গতবছর প্রায় এক হাজার ৬০০জনকে বিনামূল্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছিল।
গণঅভ্যূত্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার দুই মামলায় রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আতাউর জামান বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার এক আত্মীয়র বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আতাউর জামান বাবু জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। গণ অভ্যূত্থানের পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান।
তিনি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আতাউর জামান বাবু গুলিতে আহত জয়নাল আবেদীন ও শহিদুল ইসলাম সাগর হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে। তিনি আত্মগোপনে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানীমূলক পোস্ট করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে রংপুর নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে।
নেত্রকোনায় সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বারটান আঞ্চলিক কার্যালয় নেত্রকোনার সম্মেলন কক্ষ সমূহে ১২-১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে তিনদিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়। এ প্রশিক্ষণে দুই ব্যাচে মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন । উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক- শিক্ষিকা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক,ইমাম, এনজি কর্মী এবং কৃষক কৃষাণীসহ মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীর অংশগ্রহণে তিনদিন ব্যাপী এ
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) আঞ্চলিক কার্যালয় নেত্রকোনার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অঞ্চল প্রধান ড. মোসা: আলতাফ উন- নাহারের তত্ত্বাবধানে এ প্রশিক্ষণ বাস্তবায়িত হয়েছে॥ এ ছাড়াও প্রশিক্ষণ প্রদান করেন করেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা, পোল্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অফিসার, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার, মেডিকেল অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বারটান সহ জেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগন। প্রশিক্ষণে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, সুষম খাবার, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রস্তুত করন , শর্করা জাতীয় খাদ্য, আমিষ, ভিটামিন, আঁশ জাতীয় খাদ্য, রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য সহ সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বরগুনার আমতলীতে ৫৫ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় অভিমানে দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্লা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসকদের দ্রুত সেবায় প্রাণে বেঁচে যায় সে। এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে আমতলী উপজেলার দক্ষিণ ঘটখালী গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ঘটখালী গ্রামের অটোরিকশাচালক ওমর ফারুক মোল্লার একমাত্র ছেলে সাব্বির মোল্লা আমতলী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন ধরে সে বাবার কাছে ৫৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না করছিল। কিন্তু অটোরিকশা চালক বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি তাই ফোন ও কেনা হয়নি ।
বৃহস্পতিবার সকালে বাবার প্রতি অভিমানে সাব্বির ১০টি ঘুমের ওষুধ ও কিছু কীটনাশক পান করে। পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লুনা বিনতে হকের চিকিৎসায় সে সুস্থ হয় ।
সাব্বির মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, “বাবা মোবাইল কিনে না দেওয়ায় রাগ করে ভুল করেছি। এখন বুঝতে পারছি বাবার পক্ষে এত দামি মোবাইল কেনা সম্ভব ছিল না।”
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. লুনা বিনতে হক বলেন, “কীটনাশক পান করা এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত।”
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিশোরগঞ্জের ইটনায় মিনি স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনের সামনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদের ভিতরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই ইটনা থানায় এক আনসার সদস্য বাদী হয়ে ৪২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত তিনশো জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর ইকবাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরেই আব্দুন নূর নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সদর ইউনিয়নের কয়েকজন যুবক মিলে একটি অস্থায়ী শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করে ইটনা মিনি স্টেডিয়ামে ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ আসে যে সেখানে খেলার পাশাপাশি জুয়া চলছে। বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে ইউএনও টুর্নামেন্ট বন্ধের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে তারা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু করে। খেলা চলাকালে তিনি সেখানে গিয়ে ইউএনও’র নির্দেশের বিষয়টি জানান এবং খেলা বন্ধ করতে বলেন। এক পর্যায়ে মাঠ থেকে খেলায় অংশগ্রহণকারী এবং দুই থেকে তিন শতাধিক জনতা মিছিল নিয়ে ইউএনও অফিসে যায়। ইউএনও সাহেবকে না পেয়ে তারা বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে হামলা করে। এ সময় বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বাধা তাদের উপরও হামলা করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে চাইলে তাদের উপরও হামলা করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের অনুরোধ ছিল মাঠে যেন জুয়া বা বড় টুর্নামেন্ট না হয়, কারণ বড় টুর্নামেন্ট হলে এলাকার ছেলেরা খেলার সুযোগ পায় না এবং মাঠও নষ্ট হয়। আমি বলেছিলাম বড় খেলার আগে আমাকে জানাতে। কিন্তু তারা আমার নির্দেশ অমান্য করে খেলা চালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বাধা দিলে তারা আমার বাসভবনের সামনে এসে হট্টগোল ও হামলা চালায়, এমনকি দায়িত্বরতদের গায়ে হাত তোলে। তখন আমি বাসায় ছিলাম না, এই ঘটনায় পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ভালাগঞ্জের সাদা পাথর লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং টাংঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রীক অপরিকল্পিত পর্যটন ব্যবস্থার প্রতিবাদে গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন এর আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারোটায় শহরের আলফাত স্কয়ারে এই গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন এর যুগ্ম আহবায়ক ওবায়দুল হক মিলন'র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক রাজু আহমেদ'র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক রামেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, সিপিবির সাবেক সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সভাপতি একেএম আবু নাছার, প্রেসক্লাব সভাপতি পংকজ কান্তি দে, জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক এড. খলিল রহমান, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক নুরুল হক, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম মজনু, এড দীপঙ্কর বনিক, জামালগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব তোফায়েল আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার আহমদ উসমান, ছাতক উপজেলার উজ্জীবক সুজন তালুকদার, রকিব রুবাইয়্যাত, বাংলাদেশ শ্রমীক কল্যাণ ফেডারেশন শফিউল আলম প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাদা পাথর হচ্ছে একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। সারা দেশে এবং বিদেশে এর পরিচিতি রয়েছে। সাদা পাথর যে লুটপাট হয়েছে, এটি নতুন কিছু নয়, আমরা বলবো সারা দেশেই এই লুট চলছে। সাদা পাথরের লুটপাট হচ্ছে এর একটি উদাহরণ। আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের যে আকাঙ্খা ছিল, সেই আকাঙ্খাক্ষার দায়ে আমরা হতাশ হয়েছি। কেন, আমরা হতাশ হলাম, এই লুটের সঙ্গে রাজনৈতিক যে ঐক্য সেটার জন্য আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমরা লক্ষ্য করছি, প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা এই লুটের একটি ঐক্য গড়ে তুলেছেন। তাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে লুট হয়েছে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। আমরা লক্ষ্য করছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনী এই লুটের একটি অংশ। বিভাগীয় কমিশনার এই লুটপাট নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি। এই বক্তব্যে আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা মনে করি, যারা এই লুটের মদদদাতা, যারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের লোকজন যারা যুক্ত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে রাস্ট্র মামলা দায়ের করুক। তাহলেই বলব যে আপনারা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের শ্রমিকদের নৌকা ভেঙে নাটক মঞ্চস্থ বন্ধ করতে হবে। আমাদের সুনামগঞ্জের পাথর-বালু লুট হয়েছে। এখানেও একটা রাজনৈতিক ঐক্য রয়েছে। মাঝপথে গণপিটুনিতে গালি দেয়, কিন্তু তারা চুরি যখন করে, এই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে যে ঐক্য রয়েছে, সেটা প্রকাশ হয়। তাদের নেতৃত্বে আমাদের যাদু কাটা নদী লুট হয়েছে, ধোপাজান নদী, টাংঙ্গুয়ার হাওর লুট হয়েছে। এর সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ, প্রশাসনের লোকজন যুক্ত, এটা প্রমাণিত হয়েছে। বক্তারা বলেন, নানাভাবে গণমাধ্যম কর্মীরা, হামলা-মামলা, নির্যাতন এবং হত্যার শিকার হচ্ছে। আমরা গণমাধ্যম কর্মীরা মাথা উঁচু করে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনা গণমাধ্যম কর্মীরা তুলে ধরেছেন।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ত্রিশাল থানা ও এলাকাবাসি সূত্রে জানাযায়,আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের কালীর বাজারের কাছে ধলাইমান গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা চানতারার বাড়ির পাশে রেললাইন সংলগ্ন সদ্য লাগানো ধানখেতে একটি অজ্ঞাত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ত্রিশাল থানা পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসি। পরে ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপুড় হওয়া মরদেহটি উল্টালে এলাকাবাসি মরদেহটি শনাক্ত করে। তার নাম রতন চন্দ্র সাহা। তবে এলাকাসি জানায়, বেশ কিছু দিন আগে জামালপুর জেলায় এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে মুসলমান হয় রতন। তার বাড়ি অন্যত্র হলেও সে ছোট থেকে তার মামার বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের নলছিড়া গ্রামে বড় হয়ে উঠে।
ত্রিশাল থানার ওসি মনসুর আহাম্মদ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং গোপন অঙ্গে সুন্নতে খাৎনা করানো আছে। ধারণা করে হচ্ছে সে হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছে। তিনি আরো জানান, তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানানো হবে।
বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির সিকদার। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শেবাচিমের মেডিসিন বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাকে ২ ঘন্টা পর উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে সাব্বির ও তার মা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের ঘটনার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী সাব্বির শিকদার জানান, তার বড় বোন শেবাচিমে সিজারের পর ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে আসেন। একইসঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত মাকেও হাসপাতালে নিয়ে আসেন তিনি।সকাল ৮টার দিকে তিনি মেডিসিন বিভাগের ১১০ নম্বর রুমে যান এবং প্রায় ১১২ জনের পিছনে দাঁড়ান। সকাল ১১টার দিকে সিরিয়ালে মাত্র ৫ জন বাকি থাকতে স্টাফরা জানান, মানববন্ধনের কারণে রোগী দেখা হবে না।
এ বিষয়ে আগেই জানানো হয়নি বলে আপত্তি তুললে এক পর্যায়ে তার সঙ্গে স্টাফদের তর্ক হয়। পরে তিনি ফেসবুকে লাইভে গেলে তার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। মা ছাড়াতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে মা-ছেলে মিলে এক ডাক্তারের রুমে আশ্রয় নিলেও সেখানেও মারধর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ডা. তানজিম বলেন, আমাদের এখানে এখন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছে তাকে চিকিৎস্যা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন অংশ ঘাড়ে, মাথায় ও মুখে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। মাথার একটা সিটি স্ক্যান ও নাকের এক্স-রে করতে দেয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ডাক্তাররা কেউ তাদের রক্ষা করেননি। বরং হাসপাতাল প্রশাসন এসে উল্টো তাকে ডাক্তারকে মারধরের অভিযোগে শাসানো হয়। পরে পুলিশ এসে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা আমেনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “ওরা সবাই মিলে আমার ছেলেকে মারছিল। আমি বলছিলাম, আমার ছেলেকে মেরো না - এমনকি তাদের পা জড়িয়ে ধরেছি। তারপরও ওরা আমার ছেলেকে এমনভাবে মেরেছে যে রক্ত বের হয়ে যায়। আমি পা জড়িয়ে না ধরলে হয়তো আমার ছেলেকে মেরে ফেলতো।”
প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে শেবাচিম হাসপাতালের এক সেবাগ্রহীতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "আমি দোতলায় ভর্তি আছি। একজন ডাক্তার সব রোগীকে বের করে দিয়ে প্রতিটি রুমে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। বলছেন, কোনো রোগী দেখা হবে না । আমরা সাড়ে তিন হাজার স্টাফ, আজকে ওদের সঙ্গে বুঝে নেব। একজন মহিলা ডাক্তার এসব বলেছেন। স্টাফরা ডাক্তারদের নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আমরা প্রক্টরিয়াল টিম পাঠাই। আমাদের শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদেরও ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে শেরে বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, আমি শুনেছি আমাদের মেডিসিন ওয়ার্ডে মেডিকেলের স্টাফ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ও কিছু রোগীর মধ্য একটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা নিজেরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিচ্ছি তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তদন্তের পরে দোষিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর এবিষয়ে পুলিশি তদন্তও চলবে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই হাসপাতালের সেবাটা যেন সুন্দরভাবে চালু থাকে এজন্য সকলকে শান্ত থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য জানানা।
মৌলভীবাজার মাতারকাপন এলাকায় অবস্থিত বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে ব্যাহত হচ্ছে সেবার মান। অনুসন্ধানে জানা যায়,প্রতিষ্ঠানঠি ১৯৮৬ সালে বিদেশী দাতা সংস্থা ও আজীবন সদস্যদের অনুদানে গড়ে ওঠে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনার দায়িত্ব পান আজীবন সদস্যরাই।
প্রতি তিন বছর পর পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখানে রয়েছে এক শুভংকরের ফাঁকি। আজীবন সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থেকে আবার অনেকেই এখানে চাকুরীতে নিয়োজিত রয়েছেন। এভাবে চাকুরীতে থাকা দক্ষ ও অদক্ষ অনেকেরই রয়েছেন পরিচালনা কমিটিতে বাবা,চাচা,ভাই,খালা ও খালু।
এতে কর্মরতদের পেশাদারী কাজে কোন অনিয়ম হলে পরিচালনা কমিটির স্বজনপ্রীতির দুর্নীতির কারণে নেয়া যায় না সঠিক সিদ্ধান্ত।
ভুক্তভোগী অনেকেই বলেছেন,পরিচালনা কমিটির স্বজনপ্রীতির কারণে হাসপাতালে কর্তব্যরত অনেকেরই জবাবদিহিতা নেই। অনেকে স্বেচ্ছাচারি মনোভাব নিয়ে চলেন,রোগীদের সাথে করেন খারাপ আচরণ,সঠিক সময়ে অনেকেই অফিসে আসেন না এমন অভিযোগ রয়েছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সঠিকমানের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গত এক দশক থেকে এই হাসপাতালে আজীবন সদস্য পদের জন্য জেলার অনেকেই আবেদন করেছেন। কিন্ত বর্তমান পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নিজেদের স্বার্থ ও নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে বিষয়টি ঝুঁলিয়ে রেখেছেন। পরিচালনা কমিটির এমন স্বেচ্ছাচারি সিদ্বান্তের কারণে অনেকের মনে রয়েছে চরম ক্ষোভ। অনেক আজীবন সদস্য মৃত্যবরণ করেছেন কিন্তু তাদের ছেলে,মেয়ে ও নাতিরা সংযুক্ত রয়েছেন হাসপাতালের সাথে। যেন এটি একটি পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আগামী ১৬ আগষ্ট মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন উপলক্ষে ইতিমধ্যে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের সেবার মান উন্নতি করতে,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পরিচালনা কমিটিতে যাদের রাখা হবে তারা তাদের কোন সন্তান ও আত্মীয় স্বজন যেন এই হাসপাতালে চাকুরির সুযোগ না পান।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো.ইসরায়েল হোসেন বলেন,বিষয়টির ব্যাপারে আমি এখন গভীরভাবে অবগত হয়েছি। আগামী মিটিং-এ এসব বিষয়ে সবার সাথে কথা বলে ও আরও খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে শহরের লিটন ব্রিজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নওগাঁ শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানিপ্রবাহে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আগামী ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পাউবো নওগাঁর উপসহকারী প্রকৌশলী বিপুল চন্দ্র শিকদার বলেন, ‘দিনাজপুর ও বালুঘাটে বৃষ্টি বেশি হলে দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। তবে আজ বৃষ্টি না হওয়ায় পানির প্রবাহ এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। আমরা সতর্ক দৃষ্টিতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
এদিকে, হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকে এরই মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং জরুরি সহায়তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি আরোও বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং নদীর পাশ ঘেঁষে চলাচল না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’