বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সামনে বিশেষ ৩ দিবস: জেনে নিন ফুলের রাজ্যের হালচাল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫০
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫০

তিন দিবস ঘিরে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী-পানিসারা ফুলের রাজ্যে এখন চলছে ব্যস্ততা। সামনে বসন্ত, বিশ্ব ভালবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ তিন দিবসই ফুল ছাড়া চলে না।

ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালি-পানিসারা-হাড়িয়া অঞ্চলের ফুলচাষিরা নিজেদের ক্ষেতের ফুলগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের মধ্যে এ সময়েই সবচেয়ে বেশি ফুলের ব্যবসা হয়ে থাকে।

মূলত এ তিন দিবস ঘিরে জমে ওঠে গদখালি ফুলবাজার। অন্য সময় থেকে বেশি দামে ফুল বিক্রি হওয়ায় এ সময়ে ফুল গাছের বাড়তি যত্ন নেন কৃষক। সময় যত ঘনিয়ে আসছে পাইকারি বাজারে ফুলের দামও ততো বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। ফুলচাষের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন সামনের এ তিন দিবসে অন্তত একশ’ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।

কাঁকডাকা ভোরেই চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে তাদের উৎপাদিত ফুল নিয়ে এসেছিলেন ফুলের পাইকারি গদখালি বাজারে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাকডাকে সরব ফুলবাজার। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দু’ধারে বিভিন্ন জাতের ফুলের পসরা সাজিয়েছেন কৃষক। কেউ ভ্যান, কেউ সাইকেল, মোটরসাইকেল বা ঝুড়ির মধ্যে ফুল রেখে ঢাকা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দামাদামিতে ব্যস্ত সবাই।

এদিন বাজারে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ১০ থেকে ১২ টাকায়। প্রতিপিস রজনীগন্ধা বিক্রি হয়েছে ১০-১৪ টাকায়, যা আগে ছিল ৮-১০ টাকা। রঙিন গ্লাডিউলাস প্রতিটি মানভেদে বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ২২ টাকা, যা আগে ছিল ৮-১০ টাকা। জারবেরা বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকা। তবে কৃষক বলছেন এবছর জারবেরার উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম অপরিবর্তিত আছে। ফুল বাঁধাইয়ের জন্য কামিনীর পাতা বিক্রি হয়েছে প্রতি আঁটি ১০০ টাকায়। জিপসির আঁটি বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। যা আগে ছিল ২০-২৫ টাকায়। মালা গাথার জন্য চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয়েছে প্রতি ২০০ ফুল ২৫০ টাকা। গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে প্রতি হাজার ৫০০-৬০০ টাকায়, যা আগে ছিল ১০০-১৫০ টাকা। লিলিয়াম প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। দুইদিন আগেও যেটা ছিল ১০০ টাকা।

হাড়িয়া নিমতলা গ্রামের ফারুক হোসেন ৩০০ গোলাপ বিক্রির জন্য এনেছিলেন। তিনি বলেন, প্রতি ১০০ ফুল তিনি বিক্রি করেছেন ২২শ’ টাকা। তিনি বলেন, ২বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছি, এবছর পঁচন রোগের কারণে উৎপাদন কম। তবে দাম বেশি হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।

টাওরা গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম ৯ কাঠা জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ৮-১০ টাকা গোলাপের দাম ছিল। আজ ২৫ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।

পানিসারা গ্রামের সোহান আড়াই বিঘা জমিতে জারবেরা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এ বছর ফুলের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। জারবেরা ১২-১৫ টাকায় বিক্রি করছি। আগামী দুই তিনদিনে দাম আরও বাড়বে।

ফুল ব্যবসায়ী রনি আহমেদ বলেন, বাজারে গোলাপের খুবই সংকট। ভালবাসা দিবসের আগের বাজারে ২৫ টাকায় ফুল পাওয়াও মুশকিল হয়ে যাবে।

আরেক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, গাঁদা ফুলের দাম একটু কম ছিল তবে আজ থেকে দাম উঠতে শুরু করেছে। প্রতি হাজার গাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা।

টাওরা গ্রামের আক্তারুল ইসলাম বলেন, এ বছর পঁচা রোগের কারণে গোলাপের উৎপাদন কম হয়েছে এজন্য দাম বেশি।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ অঞ্চলে অন্তত ৬ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ হয়। ফুল উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাত করণসহ ফুল সংশ্লিষ্ট কাজে লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।

দেখা গেছে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি, নাভারণ ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে নানা জাতের ফুল। এ অঞ্চলের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিউলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ অন্তত ১১ ধরণের ধরনের ফুল।

১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন বসন্ত উৎসব, ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বাজার সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন ফুল চাষিরা। উৎসব পর্যন্ত গাছে ফুল ধরে রাখতে, পোঁকার আক্রমণ ও পঁচন রোধে তারা বাড়তি পরিচর্যা করছেন।

টাওরা গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, ভালোবাসা দিবসে রজনীগন্ধা ও ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে গাদা ফুল বিক্রি করবো। এজন্য এখন ফুলের পরিচর্যা করছি। বিশেষ করে, ফুল মান ভালো রাখতে এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ভিটামিন ও কীটনাশক ব্যবহার করছি। আশা করছি, ভালো দামে ফুল বিক্রি করতে পারবো।

হাড়িয়া নিমতলা গ্রামের নয়ন হোসেন বলেন, ‘১৮ কাঠা জমিতে গোলাপের চাষ করছি। ১৪ ফেব্রুয়ারিতে বিক্রির জন্য ফুলে ক্যাপ পরিয়ে রাখা হয়েছে। এখন নানা ধরনের ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে, যাতে ফুল নষ্ট না হয়।’

যশোর ফুল উৎপাদক ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘সারা বছর ফুল বিক্রি হলেও মূলত বসন্ত বরণ, ভালবাসা দিবস আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে বেচাকেনা বেশি হয়। এ মৌসুমে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিশেষ করে গোলাপ ফুলের উৎপাদন কম হয়েছে। তবে আসন্ন তিন দিবসকে ঘিরে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা আশা করছি।’


নিজের মন্ত্রণালয় নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নিজের মন্ত্রণালয় নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় ও বাওড় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাওড় বাওড় সমস্যা নিয়ে এ অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, আমি যেটা খুব অবাক হই, আমার নিজের মন্ত্রণালয় হিসেবে আমাদের খুব অসহায় লাগে আপনাদের মতই। আমরা জেলেদের মন্ত্রণালয়। আমাদের জেলেদের জীবন-জীবিকা যেখানে চলে সেই হাওড়-বাওড় ভুমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারা হাওড় বাওড় ইজারা দেয়, আর আমরা তখন কাতর হয়ে বলি—এটা আমাদের দেন।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, জল যার জলা তার, এই নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। এই প্রজন্মই সমাজের সকল বৈষম্য দূর করবে। প্রকৃত মৎসজীবীদের মাঝে বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সকল দপ্তরের কথা বলব। বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সকল পকে এ বিষয়ে সংহত হতে হবে।

এর আগে সকালে উপজেলার বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। সেসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, খেত মজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।


ভাটি এলাকার মানবিক চিকিৎসক অধ্যাপক শাহীন রেজা চৌধুরী

অধ্যাপক ডাক্তার শাহীন রেজা চৌধুরী চক্ষু সেবা দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন অসহায় দৃষ্টিহীনের দৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘চোখ যে মনের কথা বলে, এটা তোমার কাজল রাঙা চোখ না দেখলে কোন দিন বিশ্বাস করতে পারতাম না। অথবা চোখে চোখে আশা, মনে মনে ভাষা, এরই নাম কি ভালোবাসা।’ এমন কব্যিক কথা প্রেমের গল্প উপন্যাসে পাওয়া যায়। কিন্তু কয়জন এমন ভালোবাসা খুঁজে পায়।
অধ্যাপক ডাক্তার শাহীন রেজা চৌধুরী এক অন্যরকম ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়েছেন ভাটি এলাকার মানুষের। সৃষ্টি হয়েছে কিশোরগঞ্জের: ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম; নিখলী, তারাইল, বাজিতপুর, হবিগঞ্জের: আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং; লাখাই, সুনারুঘাট এবং সুনামগঞ্জের: দিরাই, শাল্লাসহ গোটা ভাটি এলাকার অসহায় মানুষের ভালবাসার বন্ধন।
অধ্যাপক ডাক্তার শাহীন রেজা চৌধুরী চক্ষু সেবা দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন অসহায় দৃষ্টিহীনের দৃষ্টি। অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পাচ্ছে প্রান্তিক এলাকার অতি দরিদ্র মানুষজন। বিনামূল্যে ছানি অপারেশনসহ চক্ষু চিকিৎসার নানা রকমের সহযোগিতা দিয়ে মানবিক ডাক্তারে পরিণত হয়েছেন তিনি।
তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থা (ডাস) ঢাকা, কলাবাগান, ভুতের গলি, ৪ সার্কুলার রোড, ঢাকা, ডাস চক্ষু হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর, চাঁদ উদ্যান ঢাকা। এছাড়া ঢাকায় প্রতি শুক্রবার কলাবাগানে আনোয়ার হোসেন ফ্রি ফাইডে চক্ষু সেবায় বিনা মূল্যে সপ্তাহে একদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থা (ডাস) ঢাকা-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মো শাহীন রেজা চৌধুরী এবং চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী।
দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থার সেবা শুধু ভাটি এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। সারাদেশে তিনি এখন প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক লোককে চক্ষু সেবা দিতে পারছেন এবং প্রায় ৩৫ হাজার লোককে ডাসের ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে লেন্সসহ ছানি অপারেশন, ফ্রি ঔধষ, কালো চশমা দিয়েছেন।
যেভাবে অসহায় দৃষ্টিহীনের সেবা দেয়া হয়- তিনি যখন জানতে পারেন কোন একটি উপজেলায় দৃষ্টি সমস্যায় মানুষজন ভোগছে, সেখানে তিনি একটি ক্যাম্পের আয়োজন করেন। এতে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় একটি চক্ষু সেবা ক্যাম্প পরিচালনা করেন। ক্যাম্পে আসা হাজার হাজার চক্ষু রোগীর চোখ পরীক্ষা করেন। সেখানে তিনি বিনামূল্যে চশমা, ওষুধ দেন। এছাড়া, ছানি অপারেশন প্রয়োজন এমন রোগী বাছাই করেন। বাছাইয়ের পর ঐ এলাকা থেকে রোগীকে বিনামূল্যে ঢাকায় এনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান অবস্থিত দৃষ্টি চক্ষু হাসপাতালে, আগারগাঁওয়ের লায়ন চক্ষু হাসপাতালে এবং হবিগঞ্জের ডা. সহিদ চক্ষু হাসপাতালে অপারেশনের ব্যবস্থা করেন। বিনামূল্যে ল্যান্স, ওষুধ এবং চশমা দেন। তাদের দুই দিন দৃষ্টি চক্ষু হাসপাতালে রাখেন। ডাসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় রোগীদের নিজ নিজ বাড়ি পৌঁছে দেন।
চলতি (মে) মাসের ১৭ তারিখ কিশোরগঞ্জে ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ক্যাম্পের আয়োজন করেন হাজী তারা পাশা ফাউন্ডেশন। তিনি ওই চক্ষু সেবা ক্যাম্পে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেন। দিনব্যাপী প্রায় এক হাজার রোগীর চোখের পরীক্ষা, ছানি রোগ নির্ণয় ও প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ৭০০ জনকে ওষুধ ও ৫০০ জনকে চশমা প্রদান করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষার পর ১২০ জন ছানি রোগী বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকা থেকে ২১ মে প্রথম ব্যাচ ঢাকায় আসে এবং অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে ২৩ মে বাড়ি পৌঁছে। দ্বিতীয় ব্যাচ ২৩ মে ঢাকায় আসে এবং অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে ২৫ মে ডা. সহিদ চক্ষু হাসপাতালে আসেন এবং ২৬ মে নিরাপদে বাড়ি ফিরেন ডাসের ব্যবস্থাপনায়।
এর অর্থায়ন করেন আমেরিকার হিউম্যানিটি বিওনড বেরিআরস (HBB, আমেরিকা) প্রতিষ্ঠান। তিনি মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে দৃষ্টি উন্নয়ন সংস্থার হাসপাতলে সারাবছর দৃষ্টি সেবা চালু রেখেছেন।


শেরপুরে পরিবেশ উপদেষ্টার গাড়ি বহরে হামলার খবরটি সঠিক নয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

শেরপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি সঠিক নয়।

সোমবার (২৬ মে) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শেরপুরে পরিবেশ উপদেষ্টার গাড়ি বহরে হামলা বিষয়ে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই খবরটি বিভ্রান্তিকর ও এটি সত্যনির্ভর নয়।’

এতে আরও বলা হয়, ‘উপদেষ্টা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শেরপুরের নালিতাবাড়ীর দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মধুটিলা রেঞ্জে দীর্ঘমেয়াদি বাগান এলাকা পরিদর্শনের উদ্দেশে রওনা হন।

‘পরবর্তীতে তিনি মধুটিলাতে একটি জনসভা করেন। সেখানে তিনি হাতির আক্রমণে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেন এবং হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব ও প্রাকৃতিক বন রক্ষার বিষয়ে মতবিনিময় করেন, যা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল।’

এসব অনুষ্ঠানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে। ‘এরপরে একটি স্থানে কয়েকজন সাংবাদিক ও কতিপয় ব্যক্তির মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে।’

তবে, এটি উপদেষ্টার সফরের সম্পর্কিত নয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।


শিক্ষার্থীদের জমির দলিল চিনতে আগ্রহী করলেন ইউএনও

আপডেটেড ২৬ মে, ২০২৫ ১৮:০৭
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে ভূমি সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে একটি সরকারি বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জমির দলিল চিনতে আগ্রহী করে তুললেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম।

রোববার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমি সেবা ও ভূমি সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সচেতনতা মূলক কথা বলেন তিনি।

একই সাথে অদূর ভবিষ্যতে যেন ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগান্তি না পোহাতে হয় এর জন্য শিক্ষার্থীদের জানার আগ্রহ জন্মানোর চেষ্টা করেন এই কর্মকর্তা।

দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে হাতে দলিল, জমির খতিয়ান ও নকশা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছেন ইউএনও। শিক্ষার্থীরা গভীর মনোযোগ দিয়ে খাতায় লিখে নেন ইউএনওর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ গুলো।

শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা লক্ষ্য করে আমাদের আশপাশে জমি নিয়ে অনেক মারামারি হয়, খুনাখুনি হয়। নানা অজ্ঞতার কারনে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হন। আমরা আজ দলিল চিনলাম, পড়াশোনার মধ্যে বইয়ের বাইরেও আমাদের অনেক কিছু জানার আছে। আজ আবারও সেটা উপলব্ধি করলাম। এখন সমাজে চলমান যেসব ঘটনা ঘটছে জমি সংক্রান্ত কিভাবে সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়া যায় এ পরামর্শ এখন আমরা দিতে পারবো। অন্তত আমাদের আশেপাশের অজ্ঞ মানুষদের কেউ বিপদে ফেলতে পারবেনা। আমরা এই পরামর্শগুলো কাজে লাগাবো।

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহানুর বেগম চৌধুরী বলেন, জমি সংক্রান্ত দুর্ভোগ কমাতে ভবিষ্যতের কথা ভেবে এর আগে এ ধরণের পরামর্শ মূলক কথা নিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে কেউ আসেনি। আমি এটাকে ইতি বাচক দিক দেখছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা হয়তো আজকের পর থেকে এগুলো নিয়ে গবেষণার জন্য এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সমাজে জমি সংক্রান্ত কলোহের কারনে ভাকৃত্ববোধ নষ্ট হয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী আমরা যদি তাদের ভেতরে জানার আগ্রহটা তৈরি করতে পারি তবে সমাজ ও দেশ একদিন উপকৃত হবে। আমি আজ সেই চেষ্টাই করেছি মাত্র। আমি চাই আমাদের সন্তানরা অনেক বেশি জানতে আগ্রহী হয়ে উঠুক। এটা শুধু জমি সংক্রান্ত নয়, সুন্দর সমাজ গঠনে বাঁধা সৃস্টি হয় এমন সব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আমাদের জানার আগ্রহ জন্মাতে হবে। এটা তারই একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।


কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা’র নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আজ রবিবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা’র নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাবেক কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু নব নির্বাচিত সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম আঙ্গুর, সংগঠনের সাবেক সভাপতি এরশাদ উদ্দিন, নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র সভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসাইন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ এনায়েত উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক যোবায়ের আহসান জাবের, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসূল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম শাহীন আরিফিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাছান, মুশতাক আহমেদ লিটন, জহুরুল আলম জাবেদ।

দায়িত্ব হস্তান্তর শেষে নবনির্বাচিত সভাপতির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল হক এরশাদ, সিনিয়র সহসভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসাইন, নির্বাহী সদস্য জহুরুল আলম জাবেদ, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসুল ভূইয়া, মুস্তাক আহমেদ লিটন, আবুল হাছান প্রমুখ।

বক্তারা সংগঠন কে অগ্রসর করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। সংগঠনের প্রয়াত নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করা হয় এবং যারা অসুস্থ আছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। বক্তারা বেকার সদস্যদের চাকুরির ব্যবস্থা করা, সদস্যদের যে কোনো সমস্যায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, জনকল্যাণ ফান্ড কে শক্তিশালী করাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের পরামর্শ দেন।

উল্লেখ্য গত ১৭ মে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এ কমিটি ষোষণা করা হয়।


বোরহানউদ্দিনে ডিবি পুলিশের অভিযানে দুই মাদককারবারী গ্রেপ্তার

ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারকৃত মাদককারবারী জসীম (বাঁমে) ও হান্নান (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৫ ১৭:৩৯
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা

'ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় লাগামহীন মাদকের বিস্তার' এই শিরোনামে জাতীয় দৈনিক বাংলায় সংবাদ প্রকাশের পর ভোলা জেলা ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে বোরহানউদ্দিন পৌর শহরের ওয়াপদা রোড ও বশির মিঞা সড়ক থেকে ৫০ পিছ ইয়াবা সহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো - জসিম (৩০) ও হান্নান (৩২)।

শনিবার (২৪ মে) রাত ৯টার দিকে ওয়াপদা রোডে মাদক বিক্রেতা জসিমের হোটেলে ডিবি পুলিশের এসআই নাজমুলের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এসময় জসিমের কাছ থেকে ২০ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর জসিমের দেয়া তথ্যে ডিবি পুলিশের দলটি পৌর ৬নং ওয়ার্ডের বশির মিঞা সড়ক থেকে আরো ৩০ পিছ ইয়াবা সহ হান্নানকে গ্রেপ্তার করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াপদা রোডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গ্রেপ্তারকৃত জসিম পেশাদার মাদক কারবারি চক্রের সক্রিয় সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার এই হোটেল ব্যাবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা বিক্রি করতো। তিনি দৈনিক বাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের চোখের সামনেই কোমলমতি কিশোর থেকে শুরু করে যুবক ও তরুণরা ইয়াবা ক্রয় করে নিয়ে যেতো উপযুক্ত প্রমানের অভাবে কিছুই বলতে পারতাম না। আজ ডিবি পুলিশ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে এ জন্য ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।

জসিম ওয়াপদা রোডের সিরাজের পুত্র ও হান্নান হাসপাতাল রোডের আ: মান্নান এর পুত্র পুলিশের দাবি, তারা চিহ্নিত মাদক কারবারি।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, জসিম ও হান্নান দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পুলিশ সোর্স লাগিয়ে তাদের ইয়াবা বিক্রি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। শনিবার রাতে ইয়াবা বিক্রির সময়ে পুলিশ তাদেরকে হাতেনাতে আটক করে।

ভোলা জেলা ডিবি পুলিশের ওসি ইকবাল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। তাদেরকে কোর্টে প্রেরন করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জেলা ডিবি পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


সারা দেশে চার দিন বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী চার দিন সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া ২৭ মে পশ্চিম-মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পাবে।

আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

এছাড়াও আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আর আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা (১-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।


ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় লাগামহীন মাদকের বিস্তার

প্রতীকী ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় দিনদিন বেড়েই চলেছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। মাদকের নীল দংশন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের শত চেষ্টা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক বিরোধী র‍্যালী সেমিনার কোনো কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। ৫ই আগষ্টের আগে প্রশাসনের তৎপরতা থাকায় উপজেলায় মাদকের ভয়াবহতা কিছুটা কম থাকলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে মাদকের বিস্তার।

মাদকের এই ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছেন উপজেলার অভিভাবকরা।

কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাদক কারবারীরা মাদকের কেনাবেচা করে থাকে। এর মধ্যে পৌর শহরেই রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদকের স্পট। পৌর ৬নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা রোড, আঃ জঃ কলেজ গেইট ও তৎসংলগ্ন এলাকা, উত্তর বাসষ্টান্ড, দক্ষিণ বাসষ্টান্ড, পঞ্চায়েত বাড়ির চৌরাস্তা, পৌর ৯নং ওয়ার্ডের বিএনপি বাজার, পৌর ১নং ওয়ার্ডের জয়া সড়ক, পৌর ৪নং ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন কমিশনারের বাড়ির পাশে রয়েছে ২টি স্পট। এছাড়া বড়মানিকা ইউনিয়নের মানিকার হাট বাজারের পাশে একটি স্পট, কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা গ্রাম, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজার, টবগী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা, নতুন ও পুরান হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকা, হাসাননগর ইউনিয়নের খাসমহল, কাজীরহাট সহ এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি স্পট রয়েছে।

জানা যায়, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের প্রানকেন্দ্র কুঞ্জেরহাট ও এর পাশে ফুলকাচিয়ায় রয়েছে ইয়াবা ও গাজার সবচেয়ে বড়স্পট আর এসব স্পটের নিয়ন্ত্রক ওই এলাকার প্রভাবশালী জ্বীন প্রতারকরা। এদের রয়েছে বেশ শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাত ধরে মাদকের চালান পৌছে যায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাতে। সুত্রটি জানায় এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে অটোরিকশা ড্রাইভার, মটরসাইকেল ড্রাইভার, এরা এই পেশায় কাজ করলেও এরা মাদক বহন করে নিরাপদে কাষ্টমারের কাছে মাদকের চালান পৌছে দেয়।

আরও জানা যায়, ২০২৪ সালের (২২ডিসেম্বর) টবগী ইউনিয়নের হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকার মাদক বিক্রেতা ইউসুফ কে স্থানীয় জনতা মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে। একইদিনে টবগী ইউনিয়নের বেড়িবাধ সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে ঐ এলাকার এক মাদক বিক্রেতা ইয়াবা ডেলিভারি দিতে আসলে স্থানীয় লোকজন দাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির লোকজনের সহায়তায় পালিয়ে যায়।

এসব জীবন বিধ্বংসী ক্ষতিকারক দ্রব্য সেবনের ফলে যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। এরই পরিণাম স্বরূপ ছেলেমেয়ের হাতে মা-বাবা খুন, মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পেড়ে বাবা- মায়ের কাছে টাকা চেয়ে টাকা না পেয়ে অভিমান করে আত্নহত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি এখনকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা।

পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশের টহল জোরদার করে মাদক বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে যুবসমাজকে মাদক থেকে দুরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার সচেতন মহল।


চুয়াডাঙ্গার জমে উঠেছে পশুরহাট, দেশি মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পবিত্র ঈদুল আজহা সমানে রেখে জমতে শুরু করেছে জেলার ৫টি পশুর হাট।

সপ্তাহে ১দিন করে এ পশুহাটে গুরু-ছাগল কেনাবেচা হয়। পশুহাটগুলো হলো আলমডাঙ্গা পশু হাট, প্রতি সপ্তাহে বুধবার এ হাটটি বসে। ডুগডুগি পশু হাট সোমবার বসে।

শিয়ালমারি পশুহাট বৃহস্পতিবার বসে, গোকুলখালি পশুহাট শুক্রবার ও ৯ মাইল ভূলটিয়া পশু হাট বসে শনিবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও বেশি কেনাবেচা হয় আলমডাঙ্গা পশু হাটে। সাপ্তাহিক এই পশুহাটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

কুরবানির হাট উপলক্ষে খামারি ও কৃষকেরা তাদের গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন হাটে। গরু ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুহাট।

আজ শনিবার সদরের ৯ মাইল ভূলটিয়া পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ও ছাগল পালনকারীরা তাদের পশু নিয়ে হাটে আসছেন। গরু-ছাগলের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আজ হাটে ক্রেতা কম। দূর থেকে ব্যাপারীও কম এসেছে। হাট মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, হাটে বেচাকেনা কিছুটা কম। আগামী হাটে গরু-ছাগল বেশি উঠবে, বেচাকেনা বেশি হবে বলে আশা করছি। বর্তমানে ৩ মন মাংস হবে এমন গরু ৯০/৯৫ হাজার টাকায় বেচা কেনা হচ্ছে। এর থেকে বড় অর্থাৎ ৬/৭ মন ওজনের গরু কিনলে দাম কিছুটা কম হবে। কোরবানির আগে ৯ মাইলে আগামী শনিবার আর মাত্র ১টি হাট বসবে।

গত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক শিয়ালমারি পশুহাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতে বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও গরু কেনাবেচা তেমন বাড়েনি। অনেকেই হাট ঘুরে ঘুরে কুরবানির গরু ও ছাগল পছন্দ করে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার দরকষাকষি করছেন। যেহেতু কোরবানি সময় এখনও ১৫ দিন বাকী রয়েছে। সেই কারণে অনেকেই অপেক্ষা করছেন। আবার কেউ দুই এক দেখে আগামী হাটে কেনার পরিকল্পনা করছেন।

অধিকাংশ ক্রেতারা দেশি জাতের মাঝারি সাইজের গরু পছন্দ করছেন। ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে গরু গুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় বড় গরু নিয়ে খামারিদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে দুই লাখ টাকার বেশি দামের গরু গুলো কম বিক্রি হতে দেখা গেছে।

গরু বিক্রি করতে আসা খামারি সামাদ আলী বলেন, কুরবানির হাটে বিক্রি করবো বলে তিনটি গরু বাড়িতে পুষে আজ বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। গরু নিয়ে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি তেমন কেউ গরুর দামই জিজ্ঞেস করছে না। একজন পার্টি তিনটি গরু সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাম বলেছে। অথচ ২ মাস আগে এই তিনটি গরুর দাম বলেছিলো ৭ লাখ টাকা। বর্তমান বাজারে গরুর খুদ, ভূষি, বিচালির দাম অনেক বেশি। গরু তিনটি লালন পালন করতে যত টাকা ব্যয় হয়েছে তাতে করে এই দামে বিক্রি করলে অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে। আরেক গরু বিক্রেতা শাহজামাল হোসেন বলেন, একটি দেশি জাতের গরু বাড়িতে লালনপালন করে আজ বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। হাটে আসার সাথে সাথে অনেকেই গরুর দাম দর শুরু করে দেয়। আনুমানিক ৪ মনের ওজনের গরুটি ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।

কুরবানির ছাগল কিনতে আসা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে একটা কুরবানির ছাগল কিনতে এসেছি। হাটে অনেক ছাগল এসেছে দেখছি।

দামদরে যদি সস্তা মনে হয় তাহলে কিনবো তা না হলে আগামী সোমবার ডুগডুগি পশুহাট থেকে কিনবো। পশুহাটে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা মূল্যের অনেক বড় গরু আমদানি হয়েছে। কিন্তু বড় গরু বিক্রি অনেক কম হতে দেখা গেছে। তবে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলার ৪ উপজেলায় কোরবানি উপযোগী গরু পালন করা হয়েছে ৫১ হাজার, ছাগল পালন করা হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ও ভেড়া পালন করা হয়েছে ৩ হাজার ৯শ। জেলায় সব মিলিয়ে কোরবানির জন্য গরু, ছাগল ও ভেড়া প্রয়োজন ১ লাখ ২৪ হাজার। অতিরিক্ত পশু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যাবে।


এক কিলোমিটার সড়কের জন্য দুর্ভোগে ১০ হাজার মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ

এক কিলোমিটার কাঁচা সড়কের জন্য যুগের পর যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের চর ইসলামপুর, চর ইছামতি ও গোবিন্দপুর গ্রামের মানুষ। সারা দেশে বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ কাঁচা সড়ক পাকা হলেও বদলায়নি চর ইসলামপুর ও গোবিন্দপুর সড়কের চিত্র। বেহাল এ কাঁচা সড়কটির কারণে বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের ১০ হাজার মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েও মেলেনি উন্নয়নের প্রকল্প।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। এ সড়কের কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েছে এলাকা। সারা দেশে গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া, কাঁচা সড়ক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এ সময় সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের চর ইসলামপুর ও গোবিন্দপুর গ্রামের সড়কটি দেখলে বোঝা যায়, কতটা নাজুক জায়গাটি।

আধুনিক যুগে এসেও এভাবে কাদা মাড়িয়ে চলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, বারবার আশ্বাস দিলেও কথা রাখেননি জনপ্রতিনিধিরা। বহুলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর পশ্চিমপাড়া আবু সিদ্দিকের বাড়ি-সংলগ্ন হেরিংবোন রাস্তার মাথা থেকে চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েও রাস্তাটি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কৃষিপণ্য শহরে নিতে ভোগান্তি পড়ে এ অঞ্চলের মানুষ।

স্থানীয় শিক্ষক মো. আবুল হাসেম, আসাদুজ্জামান মানিক ও সুমাইয়া ইসলামের ভাষ্য, শিশুদের লেখাপড়া, কৃষিকাজ, ফসল আনা-নেওয়া, গ্রাম থেকে শহরে যেতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে কষ্টের সীমা থাকে না। অনেক সময় এলাকাবাসী নিজেরাই ইটের খোয়া ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। এতে বর্ষায় ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। একটু বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ কাদা মাড়িয়ে চলতে হয় মানুষকে। কাঁচা সড়কের বেহালদশার কারণে সন্তানদের বিয়ে দিতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অভিভাবকদের। প্রতিদিন চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কওমি মাদ্রাসা, মসজিদে যেতেও দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। একটি সড়কের কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পিছিয়ে পড়েছে এ তিনটি গ্রামের মানুষ। সড়কটি পাকা করতে বারবার আশ্বাস দিলেও কথা রাখেননি জনপ্রতিনিধিরা। দ্রুত সড়কটি পাকা করে ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, বহুলী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর পশ্চিমপাড়া আবু সিদ্দিকের বাড়ি-সংলগ্ন হেরিংবোনবন্ড রাস্তার মাথা থেকে চর ইসলামপুর ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণের দাবিতে প্রায় ২ বছর আগে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগে আবেদন দিয়েছি। পরবর্তী সময় সরেজমিনে প্রকৌশলীরা এসে সড়কটি পরিদর্শন করে মাপ-জরিপ করে নিয়ে গেলেও এখনো সড়কটির কাজ শুরু হয়নি। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ তিনটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী রোমানা আফরোজ বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। রাস্তাটি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে রাস্তাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


বড় গরুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় মেহেরপুরের খামারিরা 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু কেনাবেচা নিয়ে ব‍্যস্ততা বেড়েছে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পালনকারীদের মধ্যে। ক্রেতারা খুঁজছেন বাজেটের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু। আর মধ‍্যস্বত্বভোগী ব‍্যবসায়ীরা চাইছেন বাড়তি মুনাফা। বিপরীতে গরু পালনকারী প্রান্তিক চাষি ও খামারিরা চাইছেন ন‍্যায‍্য মূল্য, যাতে করে সব খরচ বাদ দিয়ে থাকে বাড়তি মুনাফা।

ত্রিমুখী চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে আকারে বড় গরু পালনকারী প্রান্তিকচাষিরা। কেননা, গোখাদ‍্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আকারে বড় গরু পালন করতে প্রতিদিন একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়তি পরিচর্যার খরচ। কেননা, গরমে বৈদ্যুতিক লোডশেডিং বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকারে বড় পশুগুলোর স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তেমনি একজন বড় গরু পালনকারী চাষি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের হাউশ আলী। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ঈদের সময় বিক্রির জন্য আকারে বড় একটি পশু পালন করে আসছেন, যাকে ঘিরে থাকে পরিবারের অনেক স্বপ্ন। নিজের সন্তানের মতো করে লালন-পালন করা পশুটি কোরবানির ঈদে বিক্রি করে কাঙ্ক্ষিত মূল‍্য পেলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা মেলে।

সেই স্বপ্ন ধারণ করে দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গরু কিনেছিলেন। সেই গরুটির নাম রাখা হয়েছে রাজাবাবু। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা এই পশুটির বতর্মান ওজন ১ হাজার কেজির বেশি হবে। স্থানীয় বাজারে এতবড় পশুর চাহিদা না থাকায় তাকে নেওয়া হবে ঢাকার পশু হাটে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন পালনকারী। ৯ ফুট লম্বা আর ৮ ফুট উচ্চতার রাজাবাবুর দাম তিনি হাঁকিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। বড় আকারের গরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে দেখতে আসেন অনেকেই। সাদা কালো বর্ণের গরুটির খাবারের তালিকায় প্রতিদিন থাকে, কাঁচা ঘাস, গমের ভূষি, ভাত ও শুকনা খড়সহ অন্যান্য সামগ্রী। গড়ে বতর্মানে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাচ্ছে রাজাবাবু।

প্রচণ্ড গরম আর ন‍্যায‍্য দাম পাওয়া নিয়ে হাউশ আলীর মতো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বড় গরু পালনকারী সব চাষি ও খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ‍্যমতে, এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

বড় গরু পালনকারী রিপন হোসেন বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদে আমি একটি গরু লালন-পালন করেছিলাম। যার ওজন হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ কেজি। ভালো দাম পাব বলে আমি ঢাকার হাটে নিয়ে গিয়েছিলাম বেচতে। সেখানে গিয়ে বিপদ। কেউ গরুর ন‍্যায‍্য মূল‍্য দিতে চায় না। সবাই কম দাম বলে। শেষে আমি রাগ করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে গরু ফেরত এনে স্থানীয় হাটে বিক্রি করেছি। আমি ভাবলাম আমার যা লস হইছে হোক। লাভ করলে আমার এলাকার লোক করুক।’

আরেক চাষি ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বড় বড় তিনটি গরু ছিল। বিশ দিন আগে একটা গরু গরমে স্ট্রোক করে মরে গেছে। আরেকটি অসুস্থতাজনিত কারণে জবাই করে মাংস বিক্রি করেছি। মূলত বড় গরু আমরা কষ্ট করে পালন করি ঠিকই। কিন্তু ভালো দাম পাই না। যার কারণে যাদের বাড়ি কিংবা খামারে আকারে বড় গরু আছে, তারাই বতর্মানে চিন্তার মধ‍্যে আছেন।’

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, ভৌগোলিক কারণে এই জেলায় প্রাকৃতিক গোখাদ্যের কমতি নেই। তাই বাজারে গোখাদ্যের দাম বাড়লে এখানকার চাষি ও খামারিদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ার কথা না। তা ছাড়া এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এই জেলার পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। বাকি উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।


ফ্রুট ব্যাগিং: আম চাষে ৪ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা

আপডেটেড ২৪ মে, ২০২৫ ১২:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। এ জেলা ধানের জন্য বিখ্যাত হলেও বর্তমানে এটি আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। জেলায় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করছেন চাষিরা। রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে লাভবান হচ্ছেন জেলার শত শত চাষি।

জানা যায়, সাধারণত গৌরমতি, আমরুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগোতে ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়। এতে কীটনাশক ব্যবহারের দরকার পড়ে না। প্রাকৃতিক উপায়ে রোগমুক্ত এ আমের চাহিদাও তাই বেশি। এ বিশেষত্বের কারণে এখানকার আম বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক আম চাষিরা।

নওগাঁর পোরশা উপজেলার বন্ধুপাড়া এলাকার আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে ব্যাগ। আর তার মধ্যেই সুরক্ষিত পরিপুষ্ট আকর্ষণীয় গৌরমতি, আম রুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো জাতের আম। এই আমের চাহিদা রয়েছে দেশসহ বিদেশে। কীটনাশক না দিয়ে পরিবেশসম্মতভাবে আম চাষ করার এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি।

ফ্রুট ব্যাগিংয়ের পাশাপাশি আমের ব্র্যান্ডিং ও এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করে। এটি হলো কোনো পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়, নাম এবং গুণগত বৈশিষ্ট্যসহ বাজারজাত করার কৌশল। এর মাধ্যমে পণ্যটি ভোক্তাদের কাছে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বা গুণগত মানের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ঠিক তেমনিভাবে নওগাঁর আম ব্র্যান্ড বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরা যেতে পারে।

নওগাঁর আম শুধু দেশে নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ বছর আরও বড় পরিসরে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চীন সরকারিভাবে আম আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর প্যাকেজিং, উৎসভিত্তিক পরিচয় ও সনদিকরণের অভাবে এই আম বিদেশে গিয়ে হয়ে যায় বাংলাদেশি আম। নওগাঁ নামটি আড়ালে থেকে যায়। নওগাঁ নামটি স্বীকৃতি পায় না। ফলে এর স্থানীয় পরিচয় হারিয়ে যায়। এতে করে সঠিক মূল্যায়ন এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে জেলার স্বতন্ত্র ভূমিকা প্রতিফলিত হয় না।

পোরশার সফল আম চাষি রায়হান আলী জানান, চলতি বছর ৬০ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন। এসব আম কীটনাশকমুক্ত। আবার পোকামাকড়ের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা পাবে। ফলন ভালো হবে। বেশিদিন গাছে আম সংরক্ষণ করা যাবে এবং আমের গায়ের রং ভালো ও ঝকঝকে পরিষ্কার থাকবে। এসব আম বিদেশে রপ্তানি করার আশায় তিনি ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ করেছেন। আর এতে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

রায়হান আলী বলেন, পোকামাকড় ও বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আম রক্ষা করতে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এছাড়াও ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি আম সংরক্ষণ করার একটি সহজ ও উপযুক্ত পন্থা। যা আমের গুণগত মান ও রং সতেজ রাখতে খুবই কার্যকর।

তার আমবাগানে কর্মরত শ্রমিক শরিফুল ইসলাম, কাদের ও সোলায়মান আলী জানান, লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে এই বাগানে কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালানো হয়। সারা বছর ১৫-২০জন শ্রমিক এই আম বাগানে কাজ করেন। তারা সবাই এই উপার্জন দিয়েই সংসার চালান।

সাপাহারের আমচাষি সোহেল রানা বলেন, নিরাপদ আমে খরচ কিছুটা বেশি হলেও লাভজনক। ফ্রুট ব্যাগিং করা আম দেরিতে পরিপক্ব হওয়ায় বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। প্রতি বছর সুপার শপে নিরাপদ আমের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এ বছর তিনি ১ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন বলে জানান।

পত্নীতলার আমচাষি মঞ্জুর এলাহী বলেন, আম রফতানির আগে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। আমে যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে না পারে, সেজন্য প্রথমে ফ্রুট ব্যাগিং এর কাগজ দিয়ে প্রতিটি আমের শরীর জড়িয়ে দেয়া হয়। বাগান থেকে আম রফতানির ১৫ দিন আগে থেকে গাছে কীটনাশক স্প্রে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর আম পেড়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মোড়কজাত করা হয়। এতে আম নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি আমের গায়ের রং সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

পোরশা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, আধুনিক ও পরিবেশসম্মত আম চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফ্রুট ব্যাগিং মূলত ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে আমকে রক্ষা করে। তাই এতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। এতে আমের পচন রোধ হয়। ফলে কৃষক কীটনাশক মুক্ত আম বেশি দামে দেশে ও বিদেশে বিক্রি করে বেশি লাভবান হতে পারেন।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাটি ও জলবায়ুর বিশেষত্বের কারণে দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় নওগাঁর আম বেশি সুস্বাদু। যেটাকে নিজেদের ভাগ্য বদলের চাবিকাঠি হিসেবে নিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। অন্য জেলাগুলোয় যখন আমের মৌসুম শেষের পথে তখনও এখানে প্রচুর আম রুপালি আম পাওয়া যায়। এজন্য প্রতি বছর জেলায় আমের বাগান উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

তিনি বলেন, স্বাদে সেরা হওয়ায় দেশীয় সুপার শপে নওগাঁর নিরাপদ আমের কদর বেশি। নিরাপদ আম উৎপাদনে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে রফতনিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে চাষিদের ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ব্যাগসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৫০ লাখ ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫ গুণ বেশি। চলতি বছর জেলায় কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: বাসস


বৃষ্টিতেই দুধকুমার নদীর নির্মাণাধীন বাঁধে ধস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতেই ধসে গেছে দুধকুমার নদীর ডানতীর রক্ষা বাঁধ। বন্যার আগেই বাঁধ ধসে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন শিরোনামে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা বিভিন্ন প্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

সেই প্রকল্পের আওতায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নদীভাঙন রোধে নদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম পাউবো। ৫০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা। ঢাকার মগবাজারের (টি আই পিভিএল জেড) আই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে।

এটি ২০২২ সালের মাঝামাঝি শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও কাজ এখনো চলমান। এর মধ্যেই প্রকল্পটির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই গত কদিনের বৃষ্টিপাতে ইসলামপুর সামাদের ঘাট এলাকায় বাঁধের ১২ মিটার অংশ ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।

বন্যা মৌসুম শুরু না হতেই অল্প বৃষ্টিতে বাঁধ ধসে যাওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নদী থেকে বালু তুলে সেই বালু দিয়েই ব্লক তৈরি করেছেন। এটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় মিশানো হয়নি। বালু তোলার কারণে বাঁধের নিচে মাটি না থাকায় অল্প বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধসে গেছে। এছাড়া দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি তাদের মনমতো কাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম; কিন্তু কাজ শেষ না হতেই অল্প বৃষ্টিতেই বন্যা আসার আগে বাঁধ ধসে পড়েছে। দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ মেরামত না করলে বন্যায় নদী ভাঙন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন লুৎফরসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদী থেকে বালু তোলা বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, তীর থেকে নিয়মানুযায়ী ২০০ মিটার দূর থেকে বালু তুলেছেন তারা। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন তীরের কাছ থেকে বালু তোলায় বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করা হচ্ছে। তবে, কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের মেরামতের দায়িত্ব ওই প্রতিষ্ঠানের। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশের কাজ আবার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সূত্র: ইউএনবি


banner close