পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে ৪ টন সরকারি পাঠ্যবইসহ একটি ট্রাক জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোয়াজ্জেমপুর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা-সংলগ্ন সড়ক থেকে এসব বই জব্দ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ। জব্দকৃত বইয়ের বাজারমূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতের আঁধারে এসব পাঠ্যবই ঝিনাইদহ এলাকায় নিয়ে বিক্রি করতে চেয়েছিল। পরে ট্রাকে করে বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বইগুলো জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ট্রাকসহ বইগুলো জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর অকুতোভয় বীর সৈনিক নায়েক আকতার হোসেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের সময় মায়ানমার সীমান্তে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে শাহাদতবরণ করেছেন।
আজ সকালে ঢাকার সিএমএইচ থেকে বিজিবির হেলিকপ্টারযোগে নির্ভীক সৈনিক নায়েক আকতার হোসেনের মরদেহ ভোলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে নামাজে জানাজা শেষে যথাযোগ্য ও সামরিক মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হয়।
বিজিবির এই অকুতোভয় বীর নম্বর-৬২১১৬ নায়েক আক্তার হোসেন গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ সকালে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের রেজুআমতলী এলাকার পেয়ারাবুনিয়া অঞ্চলে দায়িত্ব পালনকালে মায়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি (AA) কর্তৃক সীমান্তে পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে মারাত্মকভাবে আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে রামু সেনানিবাসের সিএমএইচে এনে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিজিবির এই নির্ভীক বীর গতকাল (৩১ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে শাহাদতবরণ করেন।

বাংলাদেশের সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীদের অমর গৌরবগাঁথা-অকুতোভয় বীর নায়েক আকতার হোসেনের আত্মত্যাগ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
গাংনীতে সদ্য জন্ম নেওয়া একটি শিশু জন্মের পরপরই পেলো তার পরিচয়ের প্রথম কাগজ, জন্ম সনদ।
জেলা প্রশাসকের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে আনন্দে ভাসছে নবজাতকের পরিবার, প্রশংসায় মুখর স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত শুক্রবার রাতে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেয় নবজাতক শামীম আহমেদ। জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শিশুটির হাতে তুলে দেওয়া হয় জন্ম সনদ ও নানা উপহার সামগ্রী।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম নিজেই উপস্থিত হয়ে নবজাতকের পিতা-মাতার হাতে তুলে দেন জন্মসনদ। এ সময় শিশুর পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। জেলা প্রশাসকের এমন মানবিক ও অনন্য উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার কাছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আজিজ এবং কর্তব্যরত নার্সরা এই অনন্য মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন।
এমন উদ্যোগ প্রশাসনের মানবিক সেবাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিলো বলে মত এলাকাবাসীর।
নবজাতকের পিতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বাজেট রেখেছিলাম। কিন্তু নরমাল বাচ্চা প্রশাব করাই আমরা খুশি। ভাবতেই পারিনি এত দ্রুত ছেলে জন্মের পরই জন্মসনদ পাব। জেলা প্রশাসক নিজে এসে হাতে তুলে দেবেন, এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত।’
মা শারমীন আক্তার বলেন, ‘নরমাল ডেলিভারি করলে মা সুস্থ থাকেন। কিন্তু সিজার করলে একজন মা সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। জেলা প্রশাসকের হাত থেকে ছেলের জন্ম সনদ ও উপহার সামগ্রী পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।’
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র সেবিকা আমেনা খাতুন বলেন, ‘মায়েদের সচেতন হতে হবে এবং নরমাল ডেলিভারিতে চেষ্টা করা উচিত। হাসপাতালে অভিজ্ঞ নার্স ও চিকিৎসক রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নরমাল ডেলিভারিতে একজন মা সারাজীবন সুস্থ থাকতে পারেন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আগে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি করা হতনা। এখন সেটা চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও এক শ্রেণির দালালরা বিভিন্ন ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য নারীদের উদ্বুদ্ধ করত।
মেহেরপুর ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যেন তার রাষ্ট্রীয় পরিচয় নিশ্চিত হয়- এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। জন্মের মুহূর্ত থেকেই নাগরিক সুবিধার অংশ হিসেবে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।
জামালপুরের মাদারগঞ্জে ঝিনাই নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজের পরদিন কুলসুম (১১) নামে আরও এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের চর ভাটিয়ানী এলাকার ঝিনাই নদী থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরা। এ নিয়ে নদীতে ডুবে নিহত ৪ জন শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে বৈশাখী নামে আরও এক শিশু।
নিহতরা হলো- মাদারগঞ্জ উপজেলার চর ভাটিয়ানী এলাকার দুদু মিয়ার সন্তান সহোদর ভাই-বোন আবু হাসান (৮) ও মরিয়ম (১২), কাজিয়াবাড়ী এলাকার আজাদের মেয়ে কুলসুম এবং সরিষাবাড়ি উপজেলার বাউশী এলাকার নুর ইসলামের মেয়ে সাইরা আক্তার (৮)।
জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রফিকুল ইসলাম জানান, মাদারগঞ্জ উপজেলার চর ভাটিয়ানী এলাকায় ঝিনাই নদী থেকে কুলসুম নামে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল। নিহত কুলসুম একই উপজেলার কাজিয়াবাড়ী গ্রামের আজাদের মেয়ে। এ পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় ৪ জন শিশু নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে ঝিনাই নদীতে গোসল করার সময় পানিতে ডুবে যায় ৫ জন শিশু। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরা সন্ধ্যায় সহোদর ভাই-বোনসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করলেও নিখোঁজ থাকে কুলসুম ও বেশাখী নামে দুই শিশু। রাতে উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণার পর শনিবার সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। কুলসুমের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো নিখোঁজ আরেক শিশু বৈশাখীকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে ঝিনাই নদীতে গোসল করতে যায় ৬ জন শিশু। এ সময় ইয়াসীন নামে এক শিশু সাঁতরে তীরে উঠে এলেও বাকী ৫ জন পানিতে ডুবে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
স্বপদে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন চট্টগ্রামের সাবেক জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। যিনি বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, জাল-জালিয়াতিতে পৃথক জেলায় সরকারি দুই চাকরি নেওয়া সুজন বড়ুয়ার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ২০২৪ এর ৫ আগস্টের পর থেকে আন্দোলন শুরু করেন চট্টগ্রামের জেলা-উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা। তাদের এই আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ৭ মে সুজন বড়ুয়াকে লালমনিরহাট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বদলি করে। তবে সেখানে যোগদান না করে উচ্চ আদালতের এক রিটের অনুকুলে বদলি আদেশটি থামিয়ে দেন তিনি। পরে স্বপদে বহলার করার জন্য আবেদন করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের দপ্তরে।
এদিকে সুজন বড়ুয়ার (১০ গ্রেডে) জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে নেওয়া পদোন্নতি অবৈধ ও ফৌরজাদরী অপরাধ বলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে পত্র দিয়ে দিয়েছেন বান্দরবান জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোহাম্মদ এমরান বাহাদুর। ওই পত্রে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদ তথা ১০ গ্রেডের পদোন্নতি বাতিল এবং ২০১৫ সাল হতে অদ্যবদি অবৈধভাবে উচ্চতর পদে ভোগকৃত অতিরিক্ত সকল বেতন-ভাতার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে গত ৩১ আগস্ট এই পত্র পাঠান বান্দরবান জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার। একইভাবে বিষয়টি অবহিত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক ও বান্দরবান জেলার সিভিল সার্জনকে পত্র দিয়েছেন বলে বান্দরবান জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোহাম্মদ এমরান বাহাদুর দৈনিক বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে কথিত ৩২ তদন্তে নিষ্পাপ সুজন বড়ুয়ার এক সঙ্গে সরকারি দুই চাকরির তথ্য বেড়িয়ে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর তদন্তে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালতে সুজন বড়ুয়ারই দায়েরকৃত এক মামলার তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দায়ের করেছে সরকারের এই সংস্থাটি। আর এতে উঠে এসেছে পৃথক জেলায় দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র, দুইটি জন্মনিবন্ধন ও দুইটি জাতীয় সনদ, পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় নাগরিকত্ব হিসেবে বান্দরবান বোমাং চীফ সার্কেলের জাল সনদ বানিয়ে ভিন্ন দুইটি জেলায় তথ্যগোপন করে সুজন বড়ুয়া সরকারি দুই চাকরি নেওয়ার চিত্র। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের এসআই শরীফ উদ্দিন মামলার তদন্ত শেষে গত ১৩ অক্টোবর এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। আর এতে সুজন বড়ুয়া নিজে বাদি হয়ে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ফেঁসে গেলেন নিজেই।
পিবিআই সূত্র জানায়, সুজন বড়ুয়া মানহানির অভিযোগ এনে গত বছরের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) শরীফ উদ্দিন কক্সাবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সুজন বড়ুয়া স্বাস্থ্য সহকারি পদে যোগদানকালিন সময়ে জমা দেওয়া কাগজপত্র সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন সুজন বড়ুয়া। এই পদে তিনি আট বছর চাকরি করেন।
আদালতের প্রতিবেদনে বলা হয়, সুজন বড়ুয়ার জন্মনিবন্ধন নম্বর-১৯৮৩২২১৯৪১৫৫০৪৬৬৬ অনুযায়ী তার জন্মস্থান মরিচ্যা পালং, পিতা- বিমল চন্দ্র বড়ুয়া, মাতা- প্রীতি রানী বড়ুয়া, স্থায়ী ঠিকানা-মরিচ্যা পালং, হলদিয়া পালং ইউনিয়ন, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার। তবে জন্মনিবন্ধন অনলাইনে যাচাইকালে সঠিক পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। একইভাবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সুজন বড়ুয়া স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে যোগদানকালিন সময়ের কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন মামলার এই তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে জমাকৃত জন্মনিবন্ধন নং-১৯৮৩০৩১৭৩৫৭১০০৯৯৪ অনুযায়ী তার জন্মস্থান উত্তর ঘুমধুম, বড়ুয়া পাড়া, ঘুমধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান। পিতা-বিমল চন্দ্র বড়ুয়া, মাতা-প্রিতি রাণী বড়ুয়া, স্থায়ী ঠিকানা- উত্তর ঘুমধুম, বড়ুয়া পাড়া, ঘুমধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান। এই জন্মনিবন্ধন অনলাইনে যাচাইকালে সঠিক পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তাছাড়া সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী সমতলের কাউকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে পদায়ন বা পদোন্নতি দেয়ার কোনো বিধান নেই বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি ফজলুল হক চৌধুরী জানান, সুজন বড়ুয়া জালজালিয়াতি ও তথ্যগোপন করে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে দুই চাকরি নিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করছেন। শুধুতাই নয়, নারী কেলেংকারিতে বরখাস্ত থাকাবস্থায় নিয়েছেন দুইটি বিভাগীয় পদোন্নতি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যেহেতু সুজন বড়ুয়া এখন এখানে (চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে) নেই, তার বিষয়ে এখানে কিছু করার সুযোগ নেই। আশা করছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শফিক রেহমান সম্পাদিত দৈনিক যায়াযায়দিনে যোগ দিলেন উমর ফারুক। ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ হিসেবে রাজনৈতিক বিট (বিএনপি) কাজ করবেন তিনি। এর আগে দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি ছিলেন।
উমর ফারুক ২০০৩ সালে ঢাকায় এসে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরে লেখালেখি শুরু করেন। এরপর দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক মানবকণ্ঠ, দৈনিক আজকের পত্রিকা, দৈনিক জনতা, দৈনিক আজকালের খবর, দৈনিক বর্তমান, দৈনিক নতুন সংবাদ, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক আমাদের নতুন সময় ও সংবাদ সারাবেলায় কাজ করেছেন। সবগুলো দৈনিকে তিনি রাজনৈতিক বিট (বিএনপি) দায়িত্ব পালন করেছেন ।
মফস্বল সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি। লেখালেখির নেশা থেকে ১৯৯৮ সালে সাংবাদিকতা করেন কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে। রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক বিজলী, স্থানীয় সাপ্তাহিক দুধকুমর ও পাক্ষিক দ্বীপদেশ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। এরই ধারাবাহিকতায় চিলমারী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনপ্রাণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বার্তা সম্পাদক পদে, পরে পদোন্নতি পেয়ে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন( বিএফইউজে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)র স্থায়ী সদস্য। রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি ঢাকা (আরডিজেএ)র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ঢাকাস্থ কুড়িগ্রাম সমিতির আজীবন সদস্য। চিলমারী সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা।
উমর ফারুক একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক,কলামিষ্ট ও গীতিকার। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ১৬টি। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদুল্যা তেলীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি চিলমারী উপজেলার নাগরিক। তিনি মো. গোলাম হোসেন সরকার ও আনোয়ারা বেগমের ৪ সন্তানের মধ্যে সবার বড়।
এক দশক আগেও দেশে বধিরতায় ভোগা মানুষের জন্য ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ চিকিৎসা প্রচলিত ছিল না। অনেকে তখন বিদেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকায় এ চিকিৎসা করাতেন। এখন অবশ্য দেশেই ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় তা সম্ভব। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নামমাত্র টাকায় এ চিকিৎসা করা যাচ্ছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট চিকিৎসা করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর ফলে সম্পূর্ণ শ্রবণপ্রতিবন্ধী বা জন্মগত মূক ও বধির শিশুরা এখন কানেও শুনবে, কথাও বলতে পারবে। গত অক্টোবরের ২৬ ,২৭ ও ২৯ তারিখে ভোলা জেলার ৩ বছর ১০ মাসের ছোট শিশু ওমর ফারুক, বরিশাল জেলার ৩ বছর ৮ মাস বয়সের শিশু হাফিজা, কুষ্টিয়া জেলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সের আদিবা, বরিশাল জেলার ৪ বছর ৮ মাস বয়সের শিশু আলিফ খান, নওগাঁ জেলার ৪ বছর ৭ মাস বয়সী শিশু রিয়াজ হাসান ও মুন্সিগঞ্জ জেলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সের শাহেল ইসলাম এই ৬ জন জন্মগতভাবে বধির শিশুদের কানে ইমপ্ল্যান্ট অস্ত্রোপচার করা হয়।
হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (কক্লিয়ার ইমপ্ল্যাট) অধ্যাপক ডা. নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হচ্ছে একটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন চিকিৎসাপদ্ধতি। দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর কানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগিয়ে এ চিকিৎসা করে থাকেন।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার ৬০০ শিশু বধির হয়ে জন্ম নেয় উল্লেখ করে চিকিৎসক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ফরিদপুরে এই চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হওয়ায় জন্ম থেকে কানে না শোনা এবং কথা বলতে না পারা শিশুদের চিকিৎসায় একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা মারাত্মক বা সম্পূর্ণ শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে শব্দ শুনতে সহায়তা করে। এটা বায়োনিক কান নামেও পরিচিত। এটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অন্তঃকর্ণের কক্লিয়ায় স্থাপন করা হয়। এর দুটি অংশ। বাইরের অংশে মাইক্রোফোন, স্পিস প্রসেসর ও ট্রান্সমিটার কয়েল থা। ভেতরের অংশে রিসিভার স্টিমুলেটর ও ইলেকট্রেড থাকে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট) বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. ইফতেখারুল আলম, নাক-কান-গলার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ফয়সাল সিজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এটিএম সুমাইয়েফ-উর রহমান (সৈকত) সহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চিকিৎসকরা উপস্থিত থেকে এই চিকিৎসা সম্পন্ন করেন।
চলতি বর্ষা মৌসুমের বর্ষার পানি চলে যেত না যেতেই মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মানদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে গত আট দিন ধরে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড় আসা সার বোঝাই এমভি আম্বু হালিমা-৪ নামের একটি জাহাজ আটকে আছে। এছাড়াও প্রতিদিন পদ্মায় চলাচলকৃত জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেডসহ ছোট বড় নৌকা চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত।
স্থানীয়দের সাথে কথা জানা যায়, বর্ষার পানি কমতেই উপজেলার ধুলশুরা, হারুকান্দি থেকে গোপীনাথপুর, কাঞ্চনপুরের আংশিক পর্যন্ত নদীর এ পার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে নদীর মাঝ দিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ডুবোচর জেগে উঠে। প্রায় তিন বছর আগে প্রথম এ চরটি দেখা গেলেও ভরা বর্ষা মৌসুমে তা ডুবে যায়। বর্ষার পানি কমা শুরু হতেই আবার জেগে উঠে। এতে করে উপজেলা সদরের সাথে দুর্গম চরাঞ্চলের জনগণের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চলাচলেও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ট্রলার মাঝিরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, উপজেলার আন্ধারমানিক ও বাহাদুরপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন ১০টি ট্রলার যাতায়াত করে দুর্গম চরাঞ্চল হরিণাঘাট ও সেলিমপুর। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ। এছাড়াও ট্রলারে চরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্যসহ সার ও অন্যান্য মালামাল আনা নেয়া করে থাকে। নদীর নাব্য সংকটে এসব মালামাল আনা নেয়া দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি করেন চরাঞ্চলের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
গত কয়েক দিন ধরে সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর এ পাড় থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে লম্বা ধূ-ধূ বালুচর। বালুচরের পাশেই দেখা যায় আটকে আছে একটি জাহাজ। নদীর পাড়ে চায়ের দোকান থেকে এগিয়ে আসে জাহাজের মাস্টার মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার সময় ডুবোচরে আমাদের জাহাজটি আটকে যায়। গত আট দিন ধরে আমরা বসে আছি। আমরা চট্টগ্রাম থেকে টিএসপি সার নিয়ে নগরবাড়ি যাব। সময় মতো সার পৌছে দিতে না পারলে তো কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেক চেষ্টা করেও এখনো আমরা জাহাজ নামাতে পারছি না। প্রতি বছর এই অঞ্চলে আমাদের সমস্যায় পরতে হয়। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমাদের অনুরোধ নৌরুট সচল রাখতে এসব ডবোচর ড্রেজিং করে নদীর গতিপথ প্রসারিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
আন্ধারমানিক ঘাটের ট্রলারের মাঝি ফরহাদ জানান, আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন ৬টি ট্রলারে চরাঞ্চলের মানুষজন যাতায়াত করে। এখান থেকে নদীর ওপরের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। কিন্তু নদীর মাঝ দিয়ে লম্বা ডুবোচর জেগে উঠায় প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে আমাগো যাইতে হচ্ছে। এতে যেমন সময়ও বেশি লাগে। তেমনি আমাগো তেলের খরচও বেশি হয়। কিন্তু যাত্রীরা তো আর আমাগো ভাড়া বাড়াই দেয় না। এই ডুবোচরে আমাগো ট্রলারসহ মালবাহী জাহাজ চলাচলেও সমস্যা হয়। তাই ড্রেজিং এর মাধ্যমে ডুবোচর কেটে না ফেললে নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
অন্য আরেকটি ট্রলারের মাঝি শাহীন জানান, আমাগো এই জায়গা ২/৩ বছর যাবত নদীর মাঝ দিয়ে লম্বা ডুবোচর পরা শুরু হয়েছে। বর্ষার পানি টান দিলেই এই ডুবোচর দেখা যায়। এতে করে এখানে প্রতি বছর অসংখ্য মালবাহী বড় বড় জাহাজ দিনের পর দিন আটকে থাকে। এবার আটদিন ধরে সার বোঝাই একটা আটকা পরে আছে। আমরা ট্রলার চালাই। এখান থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ এই ট্রলারে যাতায়াত করে। এই পয়েন্টে ডুবোচরের কারণে আমরাও ট্রলার চালাইতে পারি না। প্রায় ৪কিলোমিটার ঘুরে আমাগো চরে যাইতে হয়।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ জানান, ডুবোচর ড্রেজিং আমাদের অধীনে না। আমরা সাধারণ নৌরুটে ক্লিয়ার রাখতে নৌযান চলাচল এলাকা মার্কিং থাকে। এই সব এলাকায় যদি নাব্য সংকট দেখা দেয় তাহলেই আমরা ড্রেজিং করে থাকি। এছাড়াও প্রতিটি জাহাজে নৌরুট শনাক্তের জন্য পাইলট থাকে। তারা যদি কোনো এলাকা ড্রেজিং প্রয়োজন মনে করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রিকোয়ারমেন্ট দেয় যে, এই এলাকা ড্রেজিং প্রয়োজন তবেই ড্রেজিং করা হয়। প্রতিটি পাইলটই রুট শনাক্ত করে জাহাজ পরিচালনা করেন।
যে জাহাজটি আটকে আছে ওই জাহাজে সম্ভবত পাইলট ছিলেন না। পাইলট থাকলে হয়তো এমনটি হতো না। কারণ পাইলটেরা পানির রঙ দেখলেই বুঝতে পারেন কোথায় পানি কম বেশি আছে। কোন জায়গা দিয়ে জাহাজটি সচরাচর যেতে পারবে।
অক্টোবর মাস বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ হিসেবে। নারীদের প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাসটি গুরুত্ব পায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো সচেতনতামূলক মিনি ম্যারাথন ‘পিংক রান ২০২৫’।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় ক্যান্সার কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ট্রাস্ট বাংলাদেশ (সিসিআরটিবি)-এর আয়োজনে এই মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।
ম্যারাথন শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে টিএসসি, শিববাড়ি মোড় হয়ে কার্জন হল ঘুরে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এতে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার এবং বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ম্যারাথন উদ্বোধনকালে সিসিআরটিবির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব বলেন, ক্যান্সার নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে নারীদের স্তন ক্যান্সার নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরা শুরু থেকেই সচেতন থাকলে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। তা ছাড়া, যেকোনো ক্যান্সারের জন্য ডায়েট (খাবারে সচেতন হওয়া) পর্যাপ্ত ঘুম ও শারীরিক পরিশ্রম এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের ট্রাস্টি মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ট্রেজারার কামরুল ইসলাম রিপন ক্যান্সার সচেতনতায় দিকনির্দেশনামূলক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। ম্যারাথনে কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্র সংসদের এজিএস শিমু আক্তার ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দেব অন্যান্যরা।
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এহসানউল্লাহ। গত বুধবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী জেলা পুলিশের সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকালে সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ডিআইজি এহসানউল্লাহকে আটক করতে যায়। পুলিশ কর্মকর্তা এহসানউল্লাহ বিষয়টি জানতে পেরে আগেই সেখান থেকে ‘আত্মগোপনে’ চলে যান। বরিশালের সাবেক এই পুলিশ সুপার বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ডিআইজি হিসাবে সাপ্লাই বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডিআইজি এহসানুল্লাহ বুধবার থেকে একাডেমিতে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি ছুটির আবেদন বৃহস্পতিবার ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। কিন্তু সে আবেদন গৃহীত হয়নি। উনার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি এহসানুল্লাহকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একটি টিম একাডেমিতে আসছেন এ খবর তিনি আগেই জেনে ফেলেন। তিনি মোটরসাইকেলে একাডেমি ত্যাগ করেন বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই উৎসব, আড্ডা, চায়ের দোকান আর গৃহস্থের বাড়িতে পান খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এই পান চাষেই কুমিল্লার চারটি গ্রামে এসেছে রঙিন সমৃদ্ধি।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরুড়া সীমান্তবর্তী কাদুটি, পাইকের করতলা, চাঁদসার ও লনাই গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে পানের চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয় কাদুটি গ্রামে। এই গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ পান চাষি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। এখানে মহালনী, চালতাগোটা ও সাচি জাতের পানের চাষ হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের টুকরোতে খুব যত্নে বেড়ে উঠেছে পানের চারা। সবুজ পান চারায় যেন হাসছে পুরো জমি। ওপরে দেওয়া হয়েছে খড়ের হালকা ছাউনি, যার ফাঁক দিয়ে হালকা সোনালি আলো পানের পাতায় পড়ে লুকোচুরি খেলছে।
কাদুটি গ্রামের পানচাষি ইউনুছ মিয়া বলেন, এক একরের বেশি জমিতে পান চাষ করেছেন তিনি। খরচ হয়েছে সাড়ে আট লাখ টাকা, বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। একটি জমিতে একবার পান চাষ করলে তা ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ফলন দেয় বলেও জানান তিনি।
আরেক কৃষক আবুল বাশার বলেন, ‘আমাদের কাদুটি গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষ পান চাষে জড়িত। এই পান ১৫ দিন পর পর উঠানো হয়। পান চাষের কারণে এলাকায় মানুষ সচ্ছল হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এই গ্রামের পান কাদুটি, নবাবপুর, গৌরীপুর, সাচার, বদরপুরসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। আগে পানের ভিড়া ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক কামাল হোসেন বলেন, ৩০ শতক জমিতে পান চাষ করতে তার চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভালো লাভ পেয়েছেন। তবে বর্তমানে পানের দাম কমায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন।
ব্যবসায়ী রমিজ মিয়া বলেন, যে পান ৩০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবার ও অন্যান্য খরচ বাড়ায় কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ী মিন্টু চন্দ্র দত্ত বলেন, কাদুটি, ঝলম, মাধাইয়া ও বদরপুরসহ বিভিন্ন হাট থেকে তিনি পান কেনেন। এখানের পান বিভিন্ন উপজেলায় যায়। এই পানের স্বাদ চমৎকার।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, এই পানের রোগ কম, ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষক দাম কম পাচ্ছেন। কিছুদিন পর সে সমস্যা কেটে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, চান্দিনা উপজেলায় ৪২ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। কাদুটিতে হয় ১২ হেক্টর জমিতে। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৩ লাখ টাকা আর বিক্রি হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, এটি ছায়া জাতীয় ফসল। সরাসরি আলো পড়লে ফলন ভালো হয় না। বৃষ্টি বেশি হওয়ায় এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে। এজন্য এখন একটু দাম কম। তবে সামনের শীতে দাম আরও বাড়বে। চান্দিনায় পান চাষের আরও সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সূত্র: ইউএনবি
নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকার ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন— ফাহিম আহম্মেদ (২৩), মো. নিরব হোসেন (১৮), মো. ফয়সাল (২০), মো. অনিক আহমেদ অনিন (২১), মো. আবির (১৫)। তবে তাদের পদবী জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গভীর রাত আনুমানিক দুইটার দিকে ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে ছাত্রলীগের ৬০- ৭০ জন নেতাকর্মী মশাল হাতে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল বের করে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে ও পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে ছাত্রলীগের ৫ জনকে আটক করে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যানার, কয়েকটি মশাল, লাঠি ও একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করে।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, রাতে একটি কাজে যুবদলের নেতা কর্মীদের নিয়ে সাইনবোর্ড এলাকায় যাই। ওই সময় সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। এ ঘটনা দেখে পুলিশকে অবহিত করলে, পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ব্যানার, লাঠিসহ বিভিন্ন জিনিস জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা হবে।
দিনাজপুরে সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন এবং চাকরিচ্যুত
সাংবাদিকদের পূণর্বহালের দাবিতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ঘোষিত কর্মসুচির অংশ হিসেবে সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
শনিবার শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সভাপতি অধ্যাপক সাদাকাত আলী খান।
সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সহসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র পরিচালক জেলা বিএনপি'র তথ্য ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মঞ্জুর মুর্শেদ সুমন, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহফিজুল ইসলাম রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মােঃ ফারুক হোসেন, অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান প্রমূখ।
সমাবেশ থেকে সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন এবং চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পূণর্বহালসহ সাংবাদিকদের ২১ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান বক্তারা। শুধু কথায় নয়, কথার সাথে কাজের মিল রেখে তা বাস্তবায়ন করার আহবান জানান বক্তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন আহেমদ, স্বপ্ন মৃধা.আবুল ওহাব, লুৎফর রহমান, সাজেদুর রহমান নওশাদ মামুনুর রশিদ বিপ্লব, মেনহাজুল ইসলাম, মোঃ ইসমাইল হোসেন প্রমূখ।
রাতভর বৃষ্টির কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাসহ রেললাইনে পানি জমে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আন্তঃনগর বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে গেছে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
শনিবার (১ নভেম্বর) সিডিউল অনুযায়ী ট্রেনটি সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, রেললাইনে পানি জমে থাকার কারণে এটি সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন ছেড়ে যায়।
আব্দুল হামিদ নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় বিকেল ৩টার দিকে একটি ব্যাংকের চাকরি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি। কিন্ত আজকে প্রায় ২ ঘণ্টা মতো ট্রেন লেট হয়েছে। এর ফলে আমরা সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যেন দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক করেন।
আবু সাঈদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমার মায়ের অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা করাতে ঢাকায় যাচ্ছি। কিন্ত রেললাইনে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ট্রেন লেট হয়েছে। একদিকে রাতভর বৃষ্টি, অপরদিকে ট্রেন লেটের ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশনমাস্টার শহিদুল আলম বলেন, শনিবার সারারাত ধরে বৃষ্টি হয়েছে, এতে স্টেশনের রেললাইনে হাঁটু পানি জমে যায়। এমনকি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের বিভিন্নস্থানে পানি জমে ছিল। তাই বনলতা এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর ছেড়ে যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তোফিকুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় কয়েকটি স্থানে ড্রেনের কাজ চলমান আছে। এজন্য হঠাৎ বৃষ্টিতে কিছুটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শহরে জমে থাকা পানি মেশিনের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এছাড়া আশা করি ড্রেনের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।