রাজধানীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা কেরানীগঞ্জে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। সারা দেশের মতো বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীবেষ্টিত এই জনপদটিতেও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। একসময়কার শাক-সবজির রাজধানীখ্যাত কেরানীগঞ্জ এখন দেশের সবচেয়ে বড় পোশাকপল্লির পাশাপাশি জাহাজশিল্প, মেডইন জিনজিরাসহ হাজার হাজার কলকারখানার এক ব্যস্ত এলাকা।
এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় নেওয়া হয়েছে নানা প্রকল্প। তবে এসব প্রকল্পের সবটাই কাজে আসেনি সাধারণ মানুষের। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় অর্ধশত সেতু রয়েছে, যা জনসাধারণের কোনো উপকারেই আসছে না। কারণ, এর অধিকাংশ সেতুর সঙ্গে তৈরি হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক। এর মধ্যে অনেকগুলো প্রকল্প দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক সেতু নির্মাণের এক যুগ পার হলেও অ্যাপ্রোচ সড়ক হয়নি। আবার কিছু সেতু নির্মিত হয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। কোনো একটি পারিবারকে সুবিধা দিতেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত আঁটিবাজার সেতু, খাড়াকান্দি ও মোল্লাবাজার-সাপেরচর সেতু এবং সড়ক ও জনপদের জগন্নাথপুর-হযরতপুর সেতু এখন কেরানীগঞ্জবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আকসাইল-নীলকেট গ্রামের মধ্যবর্তী সিংহ নদীর ওপর পুরোনো কাঠের ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসীর দীর্ঘ ভোগান্তির পর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হলেও এক বছরেও মাটি পড়েনি এর গোড়ায়! ব্রিজের এক পাশে সামান্য মাটি দিলেও অন্য প্রান্তে বিশাল গর্ত। তাই বাধ্য হয়ে জরুরি যাতায়াতের জন্য স্থানীয়ভাবে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে বানানো মই বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করছে হাজারো মানুষ।
সামান্য মাটির কারণে সেতুন সুফল না পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, সেতুর নকশায় অ্যাপ্রোচ সড়ক তিন ফুট, কিন্তু বাস্তবে প্রায় পঞ্চাশ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫-৭ ফুট গভীর। তবে জনস্বার্থে কাজটি এক সপ্তাহের মধ্যেই করে দেবে বলেও জানায় তারা।
একই এলাকার চর আকসাইলে ২০১৫-১৬ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট সিংহ নদীতে ৪০ ফুট সেতু নির্মাণ করা হলেও ব্রিজের গোড়ায় মাটি না থাকায় কোনোমতে মানুষ চলাচল করলেও যানবাহন চলাচল করতে পারে না।
একই অধিদপ্তরের অধীনে ২০১৬-১৭ সালে ছাতিরচর-তালেপুর শাখা রাস্তায় প্রায় বিশ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হলেও ভাঙা রাস্তা ও সেতুর গোড়ায় মাটি না থাকায় সেতুটি এখন আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে।
রুহিতপুর কলাতিয়া রোডের সিঙাশুর চৌরাস্তায় সিংহ নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি যেন একটি পরিবারকে সুবিধা দিতেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৬-১৭ সালে ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মেসার্স উৎস এন্টারপ্রাইজ সেতুটি নির্মাণ করে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বোরহান মেম্বর ও উকিল উদ্দীনদের বাড়িতে এসে সেতু থেমে গেছে। আর সেতুর প্রবেশমুখেই শাকসবজির বাগান করেছেন জায়গার মালিক। স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন,সাধারণ মানুষ জায়গা না ছাড়ায় রাস্তা হচ্ছে না।
কলাতিয়া ইউনিয়নের বেলনা বাবরকান্দি গ্রামে সিংহ নদীর খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ব্যবহার হচ্ছে স্থানীয়দের জামা-কাপড়সহ জ্বালানি শুকানোর জন্য।
শাক্তা ইউনিয়নের বলসুতা খালের ওপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ব্যয়ে ৬০ ফুট একটি সেতু নির্মাণ হয়। তবে সেতু তৈরির সাত বছর অতিবাহিত হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। সেতুটি নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় লেখালিখি হলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। সরকারি শাক্তা উচ্চবিদ্যালয়ের উত্তর-পূর্ব দিকের বলসুতা রাস্তায় ঢুকলেই চোখে পড়বে রাস্তাহীন আরও একটি সেতু। পাঁকা রাস্তার পশ্চিম দিকে সেতুর অন্যপ্রান্তে একটি বিল্ডিং ছাড়া নেই কোনো জনবসতি। সেতুটি এখানে কেন নির্মাণ করা হয়েছে বলতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
রোহিতপুর ইউনিয়নের ধর্মশুর-কামার্তা সড়কের ৩৩ ফুট সেতুটি ২০১২-১৩ সালে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হলেও সামান্য মাটি ভরাটের কারণে কাজে আসছে না এটি। মূল সড়ক হতে ঢাল বেয়ে নেমে সেতুতে উঠতে হয় বাঁশ দিয়ে বানানো বিশেষ রেলিং ধরে।
নতুন সোনাকান্দায় ২৫ ফুট খালের মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে ৮ ফুট সেতু। ফলে বর্ষাকালে কোনো যান চলাচল করতে পারে না খাল দিয়ে। আর এমন অদ্ভুত সেতু আলোচনার খোরাক দিচ্ছে সর্বমহলে। একই খালের ওপর নির্মিত আরও একটি সেতু কাজে আসছে না এলাকাবাসীর। কেরানীগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের চৌরাস্তায় নির্মিত সেতুর এক পাশে নেই কোনো রাস্তা। আর এটির একটি রেলিং ভেঙে গেলেও সেখানে দেখা মিলেনি রডের। ধারণা করা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় উপাদান পায়নি সেতুটি।
এভাবে কেরানীগঞ্জের আনাচে-কানাচে অসংখ্য সেতু পড়ে আছে, যা কোনো কাজে আসে না কেরানীগঞ্জবাসীর। তা ছাড়া কালিন্দী, বাস্তা, তারানগর ও কোন্ডা ইউনিয়নে অনেক সেতু বন্ধ হয়ে গেছে অপরিকল্পিত ভরাটের কারণে।
স্থানীয় লোকজন বলছে, নিজেদের পকেট ভারী করতেই অপ্রয়োজনীয় জায়গায় সেতু নির্মাণ করে সরকারি অর্থ নিজেরা ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছে অসাধু প্রকল্প কর্মকর্তা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
কলাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহের আলী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে যেসব সেতুতে সমস্যা আছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমাধান করে দিব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি প্রকৌশলী জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে কোনো ইঞ্জিনিয়ার নেই, তারা অফিসে বসেই একটি নির্দিষ্ট মাপে একটি ছক করে সেতু নির্মাণ করে দেয়। এতে করে অনেক জায়গায় প্রয়োজনের তুলনায় ছোট আবার কোথাও বড় হয়ে যায় সেতু।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দুই মাস হলো অফিসে জয়েন করেছি। এসব প্রকল্প সব আগের কর্মকর্তা (শহিদুল ইসলাম)-এর সময়কার। আমি চেষ্টা করছি নতুন প্রকল্প দিয়ে কাজগুলো করে দিতে।’
তবে অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুগুলো জনসাধারণের কল্যাণেই নির্মাণ করা হয়েছে। আর সেতুর গোড়ায় মাটি অনেক জায়গায় বসে গেছে, কোথাও ভেঙে গেছে এটা প্রাকৃতিক কারণে। আর নির্দিষ্ট বা বিশেষ কোনো ব্যক্তি নয় বরং ভবিষ্যৎ চিন্তা করে কিছু সেতু নির্মাণ করা হয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে।
নেত্রকোনা জেলা সদরের মোক্তারপাড়া মাঠে আয়োজিত এক বিশাল গনসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর (শায়েখে চরমোনাই) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম প্রধান অতিথির হিসাবে উপস্থিত ছিলেন । প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশব্যাপী চাাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজি, জুলুম, অত্যাচার-নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই বাংলাদেশ দেখার জন্য আমরা রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়িনাই। এমন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নাই, যা দখল করা হয়নি। বিচারালয়গুলোকেও দখল করা হয়েছে। এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুগ্ধ জীবন দেয় নাই, আবু সাঈদ তার বুক পেতে দেয় নাই। বাংলাদেশে আমরা আর চাাঁদাবাজ, জুলমবাজ ও দখলবাজ দেখতে চাই না। যদি শেখ হাসিনার বুলেটের সামনে, ট্যাঙ্কের সামনে বুক পেতে দিতে পারি, তাহলে আজকেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেনো বুক পেতে দিতে পারবো না? যদি শেখ হাসিনার জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি, তাহলে আজকেও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কেনো কথা বলবো না? তিনি আরও বলেন, মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছেন। তাদের শাসনে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর মূল কারণ খুঁজতে হবে। দেশ, দল ও নেতা পরিবর্তন করে শান্তি আসবে না, শান্তি তখনই আসবে, যখন আমরা নীতি আদর্শের পরিবর্তন আনতে পারবো। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সারা দেশে খুন, লুণ্ঠন ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর জেলা কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে। মুফতি নুরুল ইসলাম হাকিমীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা ওয়ালীউল্লাহ্ এবং মুফতি ওমর ফারুক ওফার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন: জতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন পাঠান, ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট এনামূল হক মুর্শেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সায়েম, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাসুম মোস্তফা,জামায়েতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, মুফতি তাজুল ইসলাম কাশেমী, মুফতি ওয়ালী উল্লাহ প্রমুখ। সমাবেশে শায়েখে চরমনোই সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম নেত্রকোনার পাঁচটি আসনের জন্য দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন: নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনে হযরত মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে জাকির হোসেন সুলতান, নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে হাফেজ মাওলানা মুখলেছুর রহমান ও নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে মুফতি নূরুল ইসলাম হাকিমী।
পটুয়াখালীর বাউফল থানা হাজতে কম্বল ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রাকিব সিকদার (২০) নামে এক আসামী। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লে পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে।
বাউফল পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন সিকদারের ছেলে রাকিব সিকদার ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই দিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে পৌর শহরের চন্দ্রপাড়া সড়কের পাশে জেলা বারের সদস্য অ্যাডভোকেট এনামুল হকের বাড়িতে চুরির অভিযোগে স্থানীয়দের সহায়তায় রাকিবকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে এসআই মাসুদ খলিফা তাকে হাজতে রাখেন।
ডিউটিরত এএসআই মো. শাহীন হাওলাদার জানান, রাত ৯টার দিকে সিসি ক্যামেরায় নজর দিতে গিয়ে তিনি দেখতে পান রাকিব কম্বল ছিঁড়ে হাজতের গ্রিলে গলায় ফাঁস দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে রাকিব বলেন, আমাকে যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই অপরাধ আমি করিনি। আমাকে ডেকে নিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। আমি এই মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন , চুরির অভিযোগে আটক রাকিবকে শুক্রবার আদালতে পাঠানোর কথা ছিল। আত্মহত্যার চেষ্টার পর তাকে ডিউটি অফিসারের কক্ষে রাখা হয়েছে।
সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুটকৃত ৪০ হাজার ঘনফুট সাদা খনিজ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব-১১।বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে কাঁচপুর ব্রীজ সংলগ্ন ডেমরার সারুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই পাথর উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অবৈধভাবে উত্তোলিত এসব বিপুল পরিমাণ পাথরের অনেকাংশ মেশিনে ক্রাশ করা হয়েছে। ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব পাথর জব্দ করা হয়েছে। তাদের মালিকপক্ষের তালিকা করা হয়েছে। অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ২ লক্ষ ঘনফুট পাথর লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়াও সাদা পাথর এলাকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ ঘনফুট বালু লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ২৪০ কোটি টাকার মত। অবৈধভাবে উত্তলন করে সাদা পাথর স্থানীয় দয়ার বাজার, কলাবাড়ি ও ভোলাগঞ্জ ১০নং ঘাটে কালেকশন করে বিভিন্ন ক্রাশার মেশিনে প্রেরণ করা হয়৷ এদিকে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ সাদা খনিজ পাথর উদ্ধারে ঢাকা জেলার ডেমরার সারুলিয়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। এতে আনুমানিক ৪০ হাজার ঘনফুট আস্ত ও ক্রাশড পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে পনের জন গাড়ী চালকের নামে বিধিমালার ব্যত্যয় করে নিয়ম বর্হিভুতভাবে সাময়িক বরাদ্দকৃত প্লটসমূহের বরাদ্দ বাতিল করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণলয়।
যাদের প্লট বাতিল করা হয়েছে:- গাড়ী চালক মোঃ বোরহান উদ্দিন এবং মোঃ বেলাল হোসেনের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মোঃ সফিকুল ইসলামের বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মতিউর রহমান ও মোঃ নুর হোসেন ব্যাপারীর নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মাহবুব হোসেন ও মোঃ শাহীনের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ মিজানুর রহমান ও মোঃ বাচ্চু হাওলাদারের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট; গাড়ী চালক মোঃ নুরুল ইসলাম ও মোঃ রাজন মাদবরের নামে বরাদ্দকৃত ৩ কাঠার প্লট এবং গাড়ী চালক মোঃ নুরুল আলম, মোঃ নুর নবী ও মোঃ শাহীনের নামে বরাদ্দকৃত ৫ কাঠার প্লট।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ১৫ গাড়িচালকের নামে নিয়মবর্হিভুতভাবে প্লট বরাদ্দ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে গঠিত দু’টি তদন্ত কমিটি তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তাঁদের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, আলোচ্য আবেদনকারীগণ ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের আবেদন না করেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে নির্ধারিত কোটার সীমা অতিক্রম করে এবং বিধিমালার ব্যত্যয় করে নিয়ম বর্হিভুতভাবে তাদের নামে প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। দু’টি তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে আলোচ্য ১৫ (পনের) জন গাড়ী চালকের নামে প্রদত্ত সাময়িক বরাদ্দের আদেশ বাতিলের সুপারিশ করেছে।
আজ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণলয়ের উপসচিব ড. মোঃ নুরুল আমিনের স্বাক্ষরিত পত্রে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে জরুরীভিত্তিতে এসকল প্লট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট)উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের একটি দল তদন্ত সাপেক্ষে ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারসহ ক্লিনিক সিলগালা করেছেন ।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে,বুধবার (১৩ আগষ্ট)সকালে উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কামাল শেখের প্রসূতি স্ত্রী লাবনী আক্তারকে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় । ওইদিন বিকেলে রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে জমজ সন্তানের জন্ম দেন ।
অপারেশনের পর লাবনী আক্তার গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে রোগীকে খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করেন ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন । হাসপাতালে নেওয়ার পথে লাবনী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ।
লাবনী আক্তারের দেবর মো.আসলাম হোসেনের অভিযোগ ক্লিনিকে কোন অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসক ছিল না । কোন রকমে অজ্ঞান করেই রোগীকে অপারেশন করা হয় । যে কারণে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে আমার ভাবীর মৃত্যু হয়েছে । তিনি বলেন,জমজ সন্তান দুইটি বর্তমানে খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার ভাই মা বাবা সকলেই নবজাতকের চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছে । তারা বাড়ীতে আসলে পরে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.শোয়াইব হোসেন বলেন,ওই ক্লিনিকে সেবিকা ও ডিউটি চিকিৎসক নেই । এছাড়া মানসম্মত অপারেশন থিয়েটারও নেই । তিনি বলেন,সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আমিসহ কালিয়া উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস,মেডিকেল কর্মকর্তা মো.হাসিবুর রহমান,ডেন্টাল সার্জন মো.সরোয়ার হোসেন,উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মো.মঈনুদ্দীন ওই ক্লিনিক তদন্তে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই ।
উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস বলেন,এর আগেও খাদিজা সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ পাওয়া গেছে । ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ অসুধ ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েকবার জেল জরিমানা করেছে । কিন্তু তারপরও ওই ক্লিনিক চালু রয়েছে ।
জানতে চাইলে ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন । তিনি মামলা করারও হুমকী দেন ।
সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশীদ বলেন,ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাবার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছিল । তিনি বলেন,প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে । আগামি তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত টিম গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার বহুতল মার্কেট নির্মাণে ড্রইং,ডিজাইন ও পাইলিং থেকে শুরু করে পুরো নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর প্রায় ১০ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সময়ে কাগজে কলমে কথিত মাটি পরীক্ষার কাজ হয়েছে। পাইলিং এর কাজ শবেমাত্র শুরু হয়েছে। কার্য সমাপ্তির মাত্র ২ মাস সময় বাকী আছে। এখনও মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। অথচ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এরই মধ্যে প্রায় এক কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন আই.ইউ.জি.আই.পি (ইমপ্রুভিং আরবান গভর্নেন্স এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্ট) প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গোয়ালন্দ পৌরসভায় ৭ তলা ভীত বিশিষ্ট ৩ তলা মার্কেট নির্মাণের জন্য এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে ৯ কোটি ২৭ হাজার ৪০৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এজন্য প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই কল্পে স্থান নির্বাচন (সাইড সিলেকশন), মাটি পরীক্ষা (সয়েল টেস্ট), ড্রইং ও ডিজাইন সম্পন্ন করা হয়। গত বছর ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ফরিদপুরের তাশা কনস্ট্রাকশন লিঃ ও জান্নাত কনস্ট্রাকশন (জয়েন্ট ভেঞ্চার) নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর হতে এক বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের একগুচ্ছ সংবাদ কর্মী সরেজমিন নির্মাণ কাজ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে মার্কেটের নির্ধারিত স্থানটি চারপাশ টিনের বেড়ায় আবৃত করে সেখানে পিকাস্ট পাইলিংয়ের কাজ চলছে। এই কাজে ঠিকাদারের পক্ষে উপ ঠিকাদার হিসেবে নিয়োজিত “বিলটেক্স টেকনোলজি” এর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, এপর্যন্ত তারা ২৫ ফুট দীর্ঘ মোট ২১ টি পাইলিং স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। নির্মাণ কাজের টেন্ডার সিডিউলে ৫০ ফুট দীর্ঘ পাইল স্থাপনের উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অর্ধেক আকারের পাইলিং করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের বিষয়ে ওই প্রকৌশলী বলেন, এখানকার মাটি খুবই শক্ত। যে কারণে ২৫ ফুটই যথেষ্ট।
প্রত্যক্ষদর্শী বাজারের উৎসুক একাধিক ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের তথ্য ও ভিডিও সংগ্রহের সময় এগিয়ে এসে এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে ৫০ ফুটের স্থলে ২৫ ফুটের পাইলিং করা হচ্ছে। তাও আবার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কোন কোন পাইল মাঝ পথে ভেঙ্গে যাচ্ছে।
তিনি জানান, বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ পাইলিংয়ের জন্য ৫০ ফুটের পূর্ব নির্ধারিত ১৪০ টির স্থলে ২৫ ফুটের ২৮০ টি পাইল স্থাপনের কথা বলেছেন। তবে এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) দপ্তরের কোন লিখিত আদেশ কিংবা সিডিউল সংশোধনীর কোন তথ্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিংবা গোয়ালন্দ পৌর কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি।
এদিকে কারিগরি ত্রুটি সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য গত ১২ আগস্ট গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলী ফেরদৌস খান জানান, সয়েল টেস্ট এর সাথে ডিজাইনের কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পাইল এর সংখ্যা বৃদ্ধি ও দৈর্ঘ্য কমিয়ে পাইলিং এর কাজ বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, মাটির বেয়ারিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য পাইলিং একভাবে করলেই চলে।
কাজের বাস্তবায়নের ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পূর্বে এই বাজারের পুরাতন দোকানগুলো নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও অপসারণ হতে বাড়তি সময় ব্যায় হওয়ায় নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়ে যায়। কাজটি নির্ধারিত সময়ে শেষ হবেনা, এরজন্য পিডি অফিস থেকে সময় বাড়িয়ে নেওয়া যাবে।
তিনি জানান, ৭০ শতাংশ পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় এক কোটি টাকার একটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে বিল প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে নির্মাণ কাজের পুরো বিষয়টি কারিগরি ও প্রকৌশলগত বিষয় উল্লেখ করে তা এড়িয়ে যান।
এদিকে পুরো কাজের ধীর গতি, সিডিউলে বর্ণিত নির্দেশনা উপেক্ষা করে পাইলিং স্থাপন সহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাশা কনস্ট্রাকশন লিঃ ও জান্নাত কনস্ট্রাকশন এর স্বত্ত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম বলেন, কাজটি স্থানীয় ঠিকাদার সালাউদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেন সহ বেশ কয়েকজন বাস্তবায়ন করছে। এতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারপরও তিনি বিষয়টি দেখে পরে জানাবেন বলে মোবাইল ফোনে উল্লেখ করেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান ভূঁইয়া ওরফে লায়ন বাবুলকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বুধবার রাতে রাজধানীর বনশ্রীর নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত লায়ন বাবুল বারদী ইউনিয়নের গোয়ালাপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ তাকে সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ইব্রাহিম হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইয়ুম খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বারদী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী হন। ওই ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী না থাকায় সে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সে বিভিন্ন রাজনৈতিক বক্তব্য ও কর্মকান্ডে আলোচিত ও সমালোচিত হয়ে উঠেন। ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী বারদি ইউনিয়নের পাইকপাড়া একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সমালোচিত হন ‘আমি বারদী ইউনিয়নের ম্যাজিস্ট্রেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার অনুমতি নিয়ে বারদীতে আসতে হবে, এখন থেকে প্রশাসনকে অবশ্যই আমার পক্ষে কাজ করতে হবে কারো ফোনে প্রশাসন আসবে না, আমি যদি বলি সুইচ অফ দিজ ইজ অফ।’ লায়ন বাবুলের এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। এ ঘটনায় ফারুক নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা লায়ন বাবুলের এ বক্তব্যের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি পুলিশকে। দীর্ঘদিন মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের এসআই সৈয়দ রুহুল আমিন লায়ন বাবুলের বক্তব্যের বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ৫০০ ধারার অপরাধে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়ে তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ জন্য তাকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য পদও হারাতে হয়েছিল।
এছাড়াও লায়ন বাহবুবুর রহমান বাবুল ভূঁইয়া ফাউন্ডেশননের উদ্যোগে প্রতি বছর বিনামূল্য চক্ষু সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সেবায় ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ চক্ষু চিকিৎসা পেয়েছেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দেড় হাজার ভ্যান চালকের মাঝে বিনামূল্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টার সময যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই লাইসেন্স প্রদান করা হয়। যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে (ভর্তুকি মূল্যে) চালকদের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রেজাউল করিম, ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবু সাঈদ, ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য মোছা. মরিয়ম খাতুন ও ৭,৮, ও নম্বর ওয়ার্ডের মোছা. হাসি খাতুনসহ প্রমূখ। এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার জন সম্মানিত ভ্যানচালক আছেন। ভ্যান চালিয়ে সন্তানদের পড়াশোনা, ওষুধ কেনা, সংসার চালাতে তাঁদের খুব কষ্ট হয়। তাই সেজন্য গত বছরের ন্যায় এবারো পরিষদের ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে এক হাজার ৫০০ জনকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। পরিষদের সাধ্যমত ভবিষ্যতেও এধরনের কার্যক্রম চলামান থাকবে। এ দিকে বিনামূল্যে লাইসেন্স পেয়ে খুশি চালকরা। তারা বলেন, গরিব মানুষ। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালাতে হয়। ফ্রি যা পাবো তাই লাভ। ভ্যানচালক মনছের আলী বলেন, সারাদিন খাটেখুটে যা পাই, তা দিয়ে চলতে বেশখানি কষ্টই হয়। ফ্রি ফ্রি যা পাবো, তাই লাভ। তিনি ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের বাসিন্দা। রসুলপুর গ্রামের এরশাদ শেখ বলেন, পৌর এলাকায় গেলেই ভ্যান ধরে ৩০০ টাকার লাইসেন্স করায়। কিন্তু চেয়ারম্যান ফ্রি ফ্রি দিচ্ছে। দাম ১০০ টাকা হলেও আমাদের লাভই হচ্ছে। প্রতিটি লাইসেন্সের মূল্য ১০০ টাকা করে জানালেন পরিষদের সচিব রেজাউল করিম। তিনি বলেন, গতবছর প্রায় এক হাজার ৬০০জনকে বিনামূল্যে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছিল।
গণঅভ্যূত্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার দুই মামলায় রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আতাউর জামান বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার এক আত্মীয়র বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আতাউর জামান বাবু জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। গণ অভ্যূত্থানের পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান।
তিনি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আতাউর জামান বাবু গুলিতে আহত জয়নাল আবেদীন ও শহিদুল ইসলাম সাগর হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে। তিনি আত্মগোপনে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানীমূলক পোস্ট করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে রংপুর নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে।
নেত্রকোনায় সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বারটান আঞ্চলিক কার্যালয় নেত্রকোনার সম্মেলন কক্ষ সমূহে ১২-১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে তিনদিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়। এ প্রশিক্ষণে দুই ব্যাচে মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন । উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক- শিক্ষিকা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক,ইমাম, এনজি কর্মী এবং কৃষক কৃষাণীসহ মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীর অংশগ্রহণে তিনদিন ব্যাপী এ
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) আঞ্চলিক কার্যালয় নেত্রকোনার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অঞ্চল প্রধান ড. মোসা: আলতাফ উন- নাহারের তত্ত্বাবধানে এ প্রশিক্ষণ বাস্তবায়িত হয়েছে॥ এ ছাড়াও প্রশিক্ষণ প্রদান করেন করেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা, পোল্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অফিসার, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার, মেডিকেল অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বারটান সহ জেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগন। প্রশিক্ষণে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, সুষম খাবার, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রস্তুত করন , শর্করা জাতীয় খাদ্য, আমিষ, ভিটামিন, আঁশ জাতীয় খাদ্য, রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য সহ সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বরগুনার আমতলীতে ৫৫ হাজার টাকার মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় অভিমানে দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্লা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসকদের দ্রুত সেবায় প্রাণে বেঁচে যায় সে। এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে আমতলী উপজেলার দক্ষিণ ঘটখালী গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ঘটখালী গ্রামের অটোরিকশাচালক ওমর ফারুক মোল্লার একমাত্র ছেলে সাব্বির মোল্লা আমতলী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন ধরে সে বাবার কাছে ৫৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না করছিল। কিন্তু অটোরিকশা চালক বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি তাই ফোন ও কেনা হয়নি ।
বৃহস্পতিবার সকালে বাবার প্রতি অভিমানে সাব্বির ১০টি ঘুমের ওষুধ ও কিছু কীটনাশক পান করে। পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লুনা বিনতে হকের চিকিৎসায় সে সুস্থ হয় ।
সাব্বির মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, “বাবা মোবাইল কিনে না দেওয়ায় রাগ করে ভুল করেছি। এখন বুঝতে পারছি বাবার পক্ষে এত দামি মোবাইল কেনা সম্ভব ছিল না।”
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. লুনা বিনতে হক বলেন, “কীটনাশক পান করা এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত।”
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিশোরগঞ্জের ইটনায় মিনি স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনের সামনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদের ভিতরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই ইটনা থানায় এক আনসার সদস্য বাদী হয়ে ৪২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত তিনশো জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর ইকবাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরেই আব্দুন নূর নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সদর ইউনিয়নের কয়েকজন যুবক মিলে একটি অস্থায়ী শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করে ইটনা মিনি স্টেডিয়ামে ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ আসে যে সেখানে খেলার পাশাপাশি জুয়া চলছে। বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে ইউএনও টুর্নামেন্ট বন্ধের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে তারা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু করে। খেলা চলাকালে তিনি সেখানে গিয়ে ইউএনও’র নির্দেশের বিষয়টি জানান এবং খেলা বন্ধ করতে বলেন। এক পর্যায়ে মাঠ থেকে খেলায় অংশগ্রহণকারী এবং দুই থেকে তিন শতাধিক জনতা মিছিল নিয়ে ইউএনও অফিসে যায়। ইউএনও সাহেবকে না পেয়ে তারা বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে হামলা করে। এ সময় বাসভবনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বাধা তাদের উপরও হামলা করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে চাইলে তাদের উপরও হামলা করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের অনুরোধ ছিল মাঠে যেন জুয়া বা বড় টুর্নামেন্ট না হয়, কারণ বড় টুর্নামেন্ট হলে এলাকার ছেলেরা খেলার সুযোগ পায় না এবং মাঠও নষ্ট হয়। আমি বলেছিলাম বড় খেলার আগে আমাকে জানাতে। কিন্তু তারা আমার নির্দেশ অমান্য করে খেলা চালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বাধা দিলে তারা আমার বাসভবনের সামনে এসে হট্টগোল ও হামলা চালায়, এমনকি দায়িত্বরতদের গায়ে হাত তোলে। তখন আমি বাসায় ছিলাম না, এই ঘটনায় পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ভালাগঞ্জের সাদা পাথর লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং টাংঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রীক অপরিকল্পিত পর্যটন ব্যবস্থার প্রতিবাদে গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন এর আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারোটায় শহরের আলফাত স্কয়ারে এই গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন এর যুগ্ম আহবায়ক ওবায়দুল হক মিলন'র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক রাজু আহমেদ'র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক রামেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, সিপিবির সাবেক সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সভাপতি একেএম আবু নাছার, প্রেসক্লাব সভাপতি পংকজ কান্তি দে, জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক এড. খলিল রহমান, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক নুরুল হক, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম মজনু, এড দীপঙ্কর বনিক, জামালগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব তোফায়েল আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার আহমদ উসমান, ছাতক উপজেলার উজ্জীবক সুজন তালুকদার, রকিব রুবাইয়্যাত, বাংলাদেশ শ্রমীক কল্যাণ ফেডারেশন শফিউল আলম প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাদা পাথর হচ্ছে একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। সারা দেশে এবং বিদেশে এর পরিচিতি রয়েছে। সাদা পাথর যে লুটপাট হয়েছে, এটি নতুন কিছু নয়, আমরা বলবো সারা দেশেই এই লুট চলছে। সাদা পাথরের লুটপাট হচ্ছে এর একটি উদাহরণ। আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের যে আকাঙ্খা ছিল, সেই আকাঙ্খাক্ষার দায়ে আমরা হতাশ হয়েছি। কেন, আমরা হতাশ হলাম, এই লুটের সঙ্গে রাজনৈতিক যে ঐক্য সেটার জন্য আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমরা লক্ষ্য করছি, প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা এই লুটের একটি ঐক্য গড়ে তুলেছেন। তাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে লুট হয়েছে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। আমরা লক্ষ্য করছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনী এই লুটের একটি অংশ। বিভাগীয় কমিশনার এই লুটপাট নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি। এই বক্তব্যে আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা মনে করি, যারা এই লুটের মদদদাতা, যারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের লোকজন যারা যুক্ত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে রাস্ট্র মামলা দায়ের করুক। তাহলেই বলব যে আপনারা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের শ্রমিকদের নৌকা ভেঙে নাটক মঞ্চস্থ বন্ধ করতে হবে। আমাদের সুনামগঞ্জের পাথর-বালু লুট হয়েছে। এখানেও একটা রাজনৈতিক ঐক্য রয়েছে। মাঝপথে গণপিটুনিতে গালি দেয়, কিন্তু তারা চুরি যখন করে, এই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে যে ঐক্য রয়েছে, সেটা প্রকাশ হয়। তাদের নেতৃত্বে আমাদের যাদু কাটা নদী লুট হয়েছে, ধোপাজান নদী, টাংঙ্গুয়ার হাওর লুট হয়েছে। এর সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ, প্রশাসনের লোকজন যুক্ত, এটা প্রমাণিত হয়েছে। বক্তারা বলেন, নানাভাবে গণমাধ্যম কর্মীরা, হামলা-মামলা, নির্যাতন এবং হত্যার শিকার হচ্ছে। আমরা গণমাধ্যম কর্মীরা মাথা উঁচু করে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনা গণমাধ্যম কর্মীরা তুলে ধরেছেন।