মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ মিনারে ফুল দেয়া নিয়ে শিক্ষক নেতাদের ভেতর হট্টগোল হয়েছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার জন্য কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে অনুরোধ জানানো হলে হট্টগোল বাধান শিক্ষক সমিতির নেতারা।
এরইমধ্যে হট্টগোলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মঞ্চের একপাশে উপাচার্য ও প্রক্টর বসে আছেন। তার পাশে বসে আছেন অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান। একপর্যায়ে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতারা চারপাশে ঘিরে ধরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা জানতে চান, হলের ছাত্রদের আগে ফুল দিতে না দিয়ে না কেন পুলিশকে আগে সুযোগ দেওয়া হলো? এ ঘটনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবু তাহের অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ককে ক্ষমা চাইতে বলেন।
এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবু তাহের বলেন, ‘পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বড় বড় কর্মকর্তা রয়েছেন, হলের ছাত্ররা আছেন। আমাদের শিক্ষক-ছাত্ররা বিষয়টি জানালে আমি নিজেও সামান্য উত্তেজিত হই।’
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সবসময় ডিউটিতে থাকেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করেন, তাই তাদেরকে এক ফাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তারা ফুল দিয়ে ডিউটিতে চলে যেতেন। তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি প্রথম আবাসিক হল এবং পুরাতন ভবন গুলোর মধ্যে অন্যতম খালেদা জিয়া হল।
ভবন পুরাতন এবং বৈদ্যুতিক লাইনগুলো পুরোনো হওয়ায় শর্ট সার্কিটের কারণে বারবার অগ্নিকান্ডের মত ঘটনা ঘটেছে এই হলে। প্রতিবার আগুন লাগার পর নামমাত্র সংস্কার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকি এড়াতে দীর্ঘদিন স্থায়ী সমাধানের দাবি করে আসছে এই হলের ছাত্রীরা।
এবার সেই নিরাপত্তা ঝুঁকি ও আশঙ্কা মুক্ত করতে স্থায়ীভাবে বৈদ্যুতিক সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারমূলক কাজ আরম্ভ হয়েছে বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা যায়, বর্তমান হল প্রভোস্ট দায়িত্ব নেয়ার সময় হল ফান্ডে ৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। দায়িত্বের এক বছরের মধ্যে তিনি হল ফান্ড থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার কাজ করেছেন। হলের রিডিংরুম সংস্কারে প্রায় ৬ লক্ষ টাকাসহ ওয়াইফাই, গণরুম, সিসিটিভি ক্যামেরায় ব্যয় করেছেন তিনি।
ঐ হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলের পুরাতন ব্লকে কয়েকবার আগুন লেগেছে। আমরা সবসময় আতংকে এবং অনিরাপদ থাকি। পুরাতন ব্লকের সংস্কার শুরু হয়েছে। বাইরে হট্টগোল হলেই মনে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। মনে হয় এই বুঝি আগুন লেগেছে। এখন থেকে আর আতংকে থাকতে হবে না। আশা করছি পুরাতন ব্লকের মতো নতুন ব্লকও যেন নিরাপদ করে গড়ে তোলা হয়।’
খালেদা জিয়া হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘খালেদা জিয়া হলে পুরাতন এবং নতুন নামে দুইটি ব্লক আছে। পুরাতন ব্লকের পলেস্তারা এবং বৈদ্যুতিক লাইন খুবই খারাপ। আমি এসে শুনেছি এখানে কয়েকবার শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা হলের ৪র্থ ও ৫ম ফ্লোরে রিপেয়ারের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি বাকি ফ্লোরগুলোতে অতিশীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, পুরাতন ব্লকের ওয়াশরুম এবং বাথরুম ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এগুলো সংস্কারের জন্য বড় বাজেটের দরকার। এজন্য আমি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি। যেহেতু এবিষয়ে কোনো প্রকল্প নেই সেহেতু বিভিন্ন উৎস থেকে ফান্ড যোগাড় করে দিবেন বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। ফান্ড পেলে আশাকরি দ্রুতই আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারবো।’
মারামারি বন্ধ ও নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘শান্তিচুক্তি’ হওয়ার ঠিক এক মাসের মাথায় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব ও এর আশপাশের এলাকায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা কলেজের একটি বাসে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বলে অভিযোগ ওঠে। মূলত এই অভিযোগের জের ধরেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করে ক্যাম্পাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, আইডিয়াল কলেজ কলাবাগান থানা এলাকার আওতাধীন হওয়ায় সেখানকার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই সংঘর্ষের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এই সমস্যা সমাধানে গত ৯ নভেম্বর নিউমার্কেট থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মৌখিক ‘শান্তিচুক্তি’ হয়েছিল। তখন শিক্ষার্থীরা আর মারামারি করবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করলেও এক মাসের মাথায় সেই কথা রাখলেন না তারা।
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকায় পিএন কম্পোজিট নামের একটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার প্রধান ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপরই তারা কারখানা খুলে দেওয়াসহ বেশ কিছু দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর)। ওইদিন কারখানার এক শ্রমিক জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে ফিরে আসার পর কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার দিনভর বিক্ষোভ করেন সাধারণ শ্রমিকরা। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও তাতে ব্যর্থ হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার রাতেই কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
কারখানার প্রধান ফটকে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বন্ধের নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা অবিলম্বে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। এছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি বহুতল ভবনের শয়নকক্ষ থেকে আপন (২০) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সোমবার রাতে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাহাবুব মিয়ার ছেলে আপন পরিবারের সঙ্গে ভাটারা থানার ১১৪ নম্বর বিসমিল্লাহ রোডের একটি আটতলা ভবনের ছয়তলায় ভাড়া থাকতেন। সোমবার দুপুরের দিকে তিনি নিজ কক্ষের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যান। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে ভাটারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে আপনকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়।
পুলিশের সহায়তায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আপনের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের ফুফাতো ভাই সাজিদ জানান, দুপুরে ঘুমাতে যাওয়ার পর আর দরজা না খোলায় তাঁরা পুলিশকে জানান। কীভাবে বা কী কারণে হঠাৎ তার মৃত্যু হলো, সে বিষয়ে পরিবারের কারো কোনো ধারণা নেই।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিকিৎসকের ঘোষণার পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ভাটারা থানা–পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ পটুয়াখালী জেলার চান্দুপাড়া সঞ্জীবন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি, উৎপাদনমুখী সামাজিক বিনিয়োগভিত্তিক এই উদ্যোগের মাধ্যমে সদস্যদের আত্মনির্ভরশীলতা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং পেশাগত সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি প্রকল্পভুক্ত দুই প্লাটুনের মোট ৬৪ জন উদ্যোক্তার সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের নির্দেশনা প্রদান করেন।
৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল ৯টায় প্রকল্পস্থলে উপস্থিত হয়ে মহাপরিচালক প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ‘সামাজিক সুরক্ষা দল–১’ (কলাপাড়া, পটুয়াখালী) এবং ‘সামাজিক সুরক্ষা দল–২’ (বেতাগী, বরগুনা)–এর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা, সম্ভাবনা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসময় তিনি বলেন, “সামাজিক বিনিয়োগ মডেলভিত্তিক সঞ্জীবন প্রকল্প সদস্যদের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে মৌলিক চাহিদা পূরণ ও দীর্ঘমেয়াদে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “সঞ্জীবন, আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এবং আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত এই প্রকল্পটি কৃষি ও অকৃষি—উভয় খাতে প্লাটুনভিত্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত সদস্যদের জীবিকা উন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।”
বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন যে আধুনিক প্রশিক্ষণ, দেশপ্রেম, সততা ও নৈতিক আদর্শ সমন্বয়ে প্রতিটি সদস্যকে নিজেকে আরও দক্ষ ও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতীয়মান করতে আনসারের সকল স্তরের সদস্যকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা ও জাতীয়তাবোধ প্রদর্শন করতে হবে।”
পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সঞ্জীবন প্রকল্পের জমির কাগজপত্র ও দলিলাদি পর্যালোচনা করেন এবং সম্ভাব্য জটিলতা দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা দেন। প্রকল্পের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং নির্বাচনের পূর্বে সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় এই সফরকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে এবং উপস্থিত সদস্যদের মাঝে বিশেষ উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর বরিশাল রেঞ্জের রেঞ্জ কমান্ডার মোঃ আব্দুস সামাদসহ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্যবৃন্দ।
সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত ডাকাত দুলাভাই বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের কয়রা নদীর নাগজোড়া খাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, এক গোপন সংবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ ডিসেম্বর (রবিবার) রাত ৮ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন কয়রা কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ১ টি একনলা বন্দুক, ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজসহ ডাকাত দুলাভাই বাহিনীর কাছে জিম্মি থাকা ৪ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধায় কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জেলেদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং জব্দকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অপরদিকে, আরও এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৮ ডিসেম্বর (সোমবার) মধ্যরাত ২টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন কয়রা কর্তৃক কয়রা নদীর ময়দাপেশা খাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
সিয়াম-উল-হক জানান, অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় তল্লাশি করে ৭২ কেজি হরিণের মাংস, ২টি মাথা, ৩০০ মিটার হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ৪ হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়।
জব্দকৃত হরিণের মাংস, মাথা, শিকারের ফাঁদ এবং আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখতে এবং বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
নীলফামারীর জলঢাকায় বুড়ি তিস্তা নদী খনন করে সেচ সুবিধা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জলঢাকা–ডিমলা সড়কের কালিগঞ্জ বাজার এলাকায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে তারা সড়ক অবরোধে অংশ নেন। এতে প্রায় তিন ঘন্টা ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে বক্তব্য দেন কৃষক শফিক হোসেন, জামাল, আরশাদ ইসলাম, দুলাল হোসেন, জয়নাল আলী, ফরিদ খান, সাব্বির হোসেন সহ আরও অনেকে।
কৃষকেরা জানান, প্রায় ২২ বছর ধরে তারা সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বুড়ি তিস্তা নদী খনন না হওয়ায় সেচ ক্যানেলগুলোতে পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কালিগঞ্জ মৌজা, গোলনা, বালাপাড়া, মীরগঞ্জ, খেরকাটি, ডিমলা সদর ইউনিয়ন, নাউতারা ও পচারহাট মৌজাসহ ৭টি ইউনিয়নে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে।
বক্তারা দাবি করেন, নদী খনন না হওয়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার করে সেচ দিতে হচ্ছে, এতে উৎপাদন খরচও বাড়ছে। সেচ ক্যানেলের মাধ্যমে বিঘা প্রতি ২শত টাকায় সেচ দেওয়া যায়। কিন্তু ক্যানেলে পানি না থাকায় তাদের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে সেচের পিছনে। দ্রুত বুড়ি তিস্তা খননের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, বুড়ি তিস্তার জলাধার খনন প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য এই কাজে বাধা প্রদান করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন হবে ২৬ লাখ মেট্রিক টন, সাড়ে ১৫ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে । আর এতে পরিবেশেরও ভারসাম্য রক্ষা হবে। কাজটি কিভাবে শুরু করা যায়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে ‘ভালুকা মুক্ত’ দিবস। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
এদিন সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে ভালুকা-গফরগাঁও সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফিরোজ হোসেন, পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও দলীয় মনোনীত প্রার্থী ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন মাসুদ, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান খান রাসেলসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রাঁতের আধাঁরে এক নিষ্ঠুর পরিবারের ফেলে দেওয়া ছোট শিশুটি এখনও জীবিত। মানবিকতা আজ কোথায়? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। অথচ সেই ছোট শিশুকে কুড়িয়ে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন আরও এক মানবিক পরিবার।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বোর্ডঘর দাড়িয়াপুর এলাকায় এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বোর্ডঘর দাড়িয়াপুর এলাকায় গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাঁতের কোনো এক সময় ছোট ফুটফুটে শিশু বাচ্চাকে ফেলে যান কোনো এক নিষ্ঠুর পরিবার। পরের দিন সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ভোরে ওই এলাকার বোর্ডঘর-উত্তর দাড়িয়াপুর সড়কের একটি ব্রীজের পাশে ফুটফুটে ওই শিশু বাচ্চা পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, রাঁত পেরিয়ে সকাল হলেও কনকনে শীতেও এখনো শিশুটি জীবিত। তার নাক, মুখ, চোখ, মাথাসহ পুরো শরীর বালু মাটিময় ছিল। তার পায়েও কোনো হাসপাতালের নাম্বার ছিল। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কে বা কাহারা রাঁতের আধাঁরে ওই ফুটফুটে শিশুটি সেখানে ফেলে রেখে গেছে।
ওই শিশুটি ছেলে বাচ্চা, তার বয়স আনুমানিক এক থেকে দুদিন হবে। মুহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে উঠে। আর ওই ফুটফুটে শিশুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন সেখানে ভীড় করেন।
এতো মানুষের ভীড়ে ফেলনা ওই ফুটফুটে শিশুকে তুলে নিলেন ওই এলাকার সালাম হোসেন ও তার পরিবার। তাৎক্ষণিক তার প্রাথমিক চিকিৎসা, খাবার-দাবার ও পোষাকের ব্যবস্থা করলেন ওই মানবিক পরিবারটি। পরে তারা বিষয়টি কালিয়াকৈর থানা, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সবাইকে অবগত করেন।
এসময় মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হলে ফুটফুটে শিশুকে ফেলে দেওয়ার মতো এমন জঘন্যতম কাজ করতে পারেন। এ নিয়ে প্রশাসনসহ নানা মহলে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু ওই শিশুকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেন তাকে উদ্ধারকারী স্থানীয় সালাম ও তার পরিবার। তাদের এমন মানবিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন প্রশাসন, ইউপি সদস্যরাসহ বিভিন্ন মহলের মানুষ।
কিন্তু তাদের পরিবারে আগে থেকেই ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া সামিরা সুলতানা ও ১ম শ্রেনীতে পড়ুয়া সাবিলা নুর নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তারপরও নতুন অতিথি ছেলে শিশুকে পেয়ে খুশি ওই পরিবারের সবাই।
এ ঘটনার পর মুহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে প্রসংশায় ভাসছেন ওই মানবিক পরিবার।
ওই শিশুর নতুন পালিত বাবা সালাম হোসেন বলেন, সকালে হাটতে বের হলে ওই ব্রীজের পাশে লোকজন দেখে এগিয়ে যাই। এসময় সেখানে ওই ফুটফুটে শিশুকে দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের জানালে তারা থানাও অবগত করেন। পরে তাকে তুলে নিয়ে তার চিকিৎসাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তার পরিবারের খোঁজ না পেয়ে তাকে আমরাই লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রশাসনসহ সবাই সমর্থন দিয়েছেন। আর ফুটফুটে নতুন অতিথি পেয়ে আমি, আমার দুই মেয়েসহ পরিবারের সবাই খুব খুশি হয়েছেন। আমরা যতœ সহকারে তাকে মানুষের মতো মানুষ তৈরি করবো।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম ফখরুল ইসলাম জানান, ওই শিশুর বিষয়টি এখনো আমার জানা নেই। কিন্তু ওই শিশুকে কুড়িয়ে নিয়ে যে পরিবার তাকে লালন-পালন করছেন, নিশ্চয় এটা একটি প্রশংসনীয় কাজ করছেন। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নওগাঁর পোরশায় গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মজিবর রহমান (৫৬) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মজিবর রহমান উপজেলার মর্শিদপুর ইউনিয়নের গোরখাই গ্রামের মৃত ধলা মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মজিবর রহমান রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি শুরু করে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে আজ সকালে বাড়ির পাশে ঘোলাকুড়ি এলাকার একটি গাছের ডালে তার মরদেহ ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, খবর পেয় ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১,৫৫,০০০/ টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পরিচালিত অভিযানে বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার, সার-কীটনাশকের সাব ডিলার, বীজ, ফার্মেসি ও মুদিদোকানসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।
এসময় মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজ নামক বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কৃষকদের ও সাব ডিলারের অভিযোগ ডিলার প্রতিষ্ঠানটি বেশি দামে সার বিক্রয় করলেও সঠিকভাবে ভাউচার প্রদান করেন না। এছাড়া সকালে কৃষিকাজে তাদের সারের দরকার হলেও তারা দোকান খোলেন প্রতিদিন দুপুর ১২টার পরে যার কারনে অন্য খুচরা দোকান থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে তাদের সার কিনতে হয়। বিক্রয় রেজিস্টার ও ভাউচার পর্যবেক্ষণ করে ধরা পরে নানা অনিয়ম। বেশি দামে সার বিক্রয়, ভাউচার ও রেজিস্টারে গড়মিল, কৃষকদের ভাউচার না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত ভাউচার তৈরি প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া রেজিস্টার দেখে গোপালপুরের কৃষক তবিবারকে ফোন দিলে তিনি জানান গতকাল রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ৪বস্তা ডিএপি নিয়েছেন ১৩৫০ টাকা করে কিন্তু তাকে ভাউচার দেয়া হয়নি। অথচ তার নামে ২ বস্তা ইউরিয়া, ২বস্তা ডিএপি ও ১ বস্তা এমওপি সারের ভাউচার লেখা হয়েছে সরকারি মুল্যে। লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাতুলকে ফোন করে জানা যায় তিনি পটাশ সার নিয়েছেন ১৫ কেজি কিন্তু তার নামে ভাউচার লেখা আছে ৫০কেজির, ইউরিয়া ১বস্তা নিলেও ভাউচারে লেখা আছে ২বস্তা।
এছাড়া ডিএপি সারের দাম নেয়া হয়েছে সরকার নির্ধারিত দামের বেশি অথচ তাকে কোন প্রকার ভাউচার প্রদান করা হয়নি। রেজিস্টার দেখে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলার পরে ডিলার প্রতিষ্ঠানটি তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি র্যাক থেকে প্রচুর মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক পণ্য জব্দ করা হয়।
সারের দাম বেশি নেয়াসহ কৃষকদের সাথে এমন প্রতারণামূলক অপরাধের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জনাব মিলন কুমার ঘোষকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০,৪৫ ও ৫১ ধারায় ১,৫০,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়।
পরবর্তীতে অপর একটি সাব ডিলার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্সকে ক্রয় বিক্রয় ভাউচার না রাখা, সারের মুল্যতালিকা যথাযথভাবে প্রদর্শন না করা ও অতিরিক্ত দামে সার বিক্রয়ের অপরাধে ৫,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয় এবং সবাইকে ভবিষ্যতে এধরণের আইন অমান্যকারী কার্যকলাপ না করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। এসময় সবাইকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মুল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয় বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম ও মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
কক্সবাজারের টেকনাফ বাহার ছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের বিশেষ অভিযানে দেশীয় বন্দুকসহ তিন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাচারের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট সাতজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক।
তিনি জানান, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর)
গভীর রাতে কোস্টগার্ড স্টেশন টেকনাফ ও আউটপোস্ট বাহারছড়ার সদস্যরা মারিশবুনিয়া এলাকার গহীন পাহাড়সংলগ্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে সাতজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং তিনজন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়। পরে পাচারকারীদের দেওয়া তথ্যে তাদের আড়ালস্থল থেকে একটি দেশীয় বন্দুকও উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সংঘবদ্ধ কয়েকটি পাচারকারী চক্র উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় পাচারের পরিকল্পনা করছিল। ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা এবং নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়েরও চেষ্টা করা হচ্ছিল।
টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সালাহউদ্দিন তানভীর জানিয়েছেন, উদ্ধার ব্যক্তিরা, জব্দ আগ্নেয়াস্ত্র এবং আটক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। মানবপাচার রোধে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রতনপুর বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী আশরাফুল হক (১৯) নিহত হয়েছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গারাও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল (নং: মৌলভীবাজার–ল ১১-৫৪৪৩) চালিয়ে নিজ কর্মস্থল স্থানীয় একটি কোম্পানির উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তা পার হওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা একটি দ্রুতগামী গাড়ি তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়েই আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত গাড়িটি শনাক্তে কাজ চলছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”