বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
১৭ বৈশাখ ১৪৩২

অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় চলছে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)
প্রকাশিত
মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)
প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:১৭

১০০ শয্যাবিশিষ্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবকাঠামোর উন্নয়ন দেখলে মনে হবে ভেতরে বেশ ভালোই চলছে এর চিকিৎসাসেবা। তবে সেখানে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন, তাদের বেশিরভাগ বাড়ি ফিরছেন মুখ ভার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার এসব রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য সরকার চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সবকিছুর জোগান দিলেও দায়িত্বরত চিকিৎসকদের উদাসীনতা, সময়মতো না আসা, অনিয়মিতভাবে ডিউটি করার কারণে রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। এ ছাড়াও রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। যন্ত্রপাতি থাকলেও এখানে হয় না প্যাথলজির পরীক্ষা। কোটি টাকা দিয়ে সরকারের কিনে দেওয়া ডিজিটাল এক্সরে মেশিন আছে বাক্সবন্দি, একই অবস্থা কোটি টাকার অত্যাধুনিক জেনারেটর মেশিনটিরও- সেটিও রয়েছে বাক্সবন্দি অবস্থায়। হাসপাতালে রোগীদের টয়লেটের অবস্থা নাজুক। দুটি টয়লেট তালাবদ্ধ রাখায় একটিতেই যেতে হচ্ছে নারী-পুরুষ রোগীদের। রোগীদের দুর্দশা ও ভোগান্তির যেন শেষ নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যার হাসপাতাল চালু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার হওয়ায় হাসপাতালটিতে বরাদ্দ দেওয়া হয় চিকিৎসার সব আধুনিক সরঞ্জামাদি। অন্যান্য ১০০ শয্যা হাসপাতাল থেকে জনবলও এখানে অনেক বেশি। ধাপে ধাপে চিকিৎসক বাড়িয়ে এখন কর্মরত রয়েছেন ২৪ জন চিকিৎসক। উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলেও আছেন কার্ডিওলজি, চর্ম ও যৌন, মেডিসিন, গাইনি, শিশু বিভাগের চিকিৎসকসহ অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ। আছেন দাঁতের চিকিৎসক। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে সরেজমিন কোটালীপাড়া হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ২৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৮ থেকে ১০ জন দায়িত্ব পালন করছেন। বাকি চিকিৎসকদের এক সপ্তাহেও দেখা পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দুই-তৃতীয়াংশ চিকিৎসক একসঙ্গে কী করে অনুপস্থিত থাকেন, মেলেনি তার কোনো সদুত্তর।

চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীরা অসহায় : গত রোববার সকালে সরেজমিনে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লেবার ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় আঁখি ঢালী নামে এক সন্তানসম্ভবা রোগীর সঙ্গে। তার বাড়ি উত্তর কোটালীপাড়ার জহরেরকান্দি গ্রামে। এর দুদিন আগে শুক্রবার সকালে গর্ভকালীন জটিলতা ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা নিয়ে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন তিনি। দুদিন ধরে চিকিৎসকের সাক্ষাৎ না পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় কাতরাচ্ছিলেন। আঁখির স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির তিন দিন অতিবাহিত হলেও কোনো ডাক্তারের সাক্ষাৎ পাননি। তারা বলেন, শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে হাসপাতালের বাইরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ঝুমা পালের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা।

একই অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি কোটালীপাড়ার শুয়াগ্রামের চম্পা মজুমদারের স্বামী বিভূতি বল্লভ। তিনি বলেন, ডাক্তাররা ওয়ার্ডে আসেন না। কোনো সমস্যা দেখা দিলে রোগীদের নিচতলায় জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করে গত শনিবার ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি চলে যান উপজেলার বান্ধাবাড়ী গ্রামের খাদিজা বেগম। খাদিজা বেগমের স্বামী গাউস গোলদার জানান, দুদিন হলো ভর্তি হয়েছি। তেমন কোনো সেবা পাচ্ছি না। ওষুধ ও টেস্ট সব বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। তেমন কোনো উন্নতিও হচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তি থেকে কী লাভ? তাই নিজেরাই নাম কেটে চলে যাচ্ছি।

গত রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে গাইনি ওয়ার্ডে ছুটে আসেন দায়িত্বপ্রাপ্ত গাইনি বিশেষজ্ঞ জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. রাজিব রায়। তবে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।

হাসপাতালটিতে কর্মরত ৩২ জন নার্স। বেশিরভাগ নার্সই ঠিকমতো ডিউটি করেন না বলে অভিযোগ রোগীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা বলেন, নার্সদের ডাকলেও সময়মতো পাওয়া যায় না। একাধিকবার ডাকলে তারা বিরক্তি প্রকাশ করেন।

চিকিৎসাসেবায় মানা হচ্ছে না সময়সূচি

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আউটডোরে রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও সাড়ে নয়টার আগে খোলা হয় না টিকিট কাউন্টার। ডাক্তাররাও আসেন আরও পরে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ২৪ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসককে (জুনিয়ার কনসালট্যান্ট মেডিসিন) ডেঙ্গুকালীন সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন হাসপাতালে প্রেষণে পাঠানো হয়। রোববার সরেজমিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায় মাত্র ৫-৬ জন চিকিৎসককে রোগী দেখার কাজে নিয়োজিত। রোগীর চাপ থাকায় এসব চিকিৎসককে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে চিকিৎসা দিতে বেগ পেতে হচ্ছিল। কোটালীপাড়ায় ১১টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে দূরবর্তী ৮টি কেন্দ্রে চিকিৎসক পদায়ন আছে। কিন্তু ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পদায়নকৃত চিকিৎসকরা কখনও যান না। ইউনিয়নের কেউ কখনও ওইসব উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্যসেবা পান না বলে ইউনিয়নবাসী অনেকের অভিযোগ।

একটি সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চিকিৎসকরা কেবল কাগজে-কলমে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্য পালন করছেন বলে দেখাচ্ছেন। বাস্তবে তারা এসব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বরাবরই অনুপস্থিত থাকেন।

শুয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যজ্ঞেশ্বর বৈদ্য অনুপ অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা সেখানে আসেন না। পদায়নকৃত চিকিৎসকরা স্ব স্ব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে চিকিৎসা দিলে দরিদ্র অসহায় মানুষদের দূর-দূরান্ত থেকে অর্থ ব্যয় ও কষ্ট করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসার নামে হয়রানির শিকার হতে হতো না।

এসব বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নন্দা সেন গুপ্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে বাক্সবন্দি

সরেজমিনে দেখা গেছে, এক যুগ আগের এনালগ এক্সরে মেশিনে সনাতনি পদ্ধতিতে নামমাত্র চলছে এক্সরের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে রোগীদের অভিযোগ, প্রায় সময় নষ্ট থাকে মেশিনটি। কোনো রিপোর্ট দেওয়া হয় না। রোগীদের ধরিয়ে দেওয়া হয় শুধু এক্সরে ফিল্ম। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে কোটি টাকা মূল্যের পোর্টেবল ডিজিট্যাল এক্সরে মেশিন। সেই অত্যাধুনিক মেশিনটি ৬-৭ বছর ধরে বাক্সবন্দি অবস্থায় রয়েছে, যা কোনো কাজে লাগছে না। এক্সরে করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে ২ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিও অ্যান্ড ইমেজিং)। একই অবস্থা ডিজিটাল জেনারেটর মেশিনেরও। কোটি টাকা মূল্যের জেনারেটর মেশিনটি ব্যবহার না করে বাক্সবন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। এ কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হাসপাতালে ভুতুড়ে অবস্থার সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী কর্মচারীর অভিযোগ, তার ধারণা- জেনারেটর ব্যবহার না করলেও ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে তেলের বিল তোলা হচ্ছে। তবে এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ডেন্টাল ইউনিটটি তেমনভাবে কার্যকর নয়। ডেন্টাল সার্জন ডা. নাজিয়া ইয়াসমিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনে যন্ত্রপাতিহীন একটি ফাঁকা কক্ষে বসে চিকিৎসা দেন। অথচ পুরাতন ভবনে দাঁতের চিকিৎসার জন্য যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি ডেন্টাল ইউনিট রয়েছে। তবে সেটি বর্তমানে স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বন্ধ রয়েছে প্যাথলজি পরীক্ষা

১০০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে প্যাথলজি পরীক্ষার যন্ত্রপাতিসহ সব উপকরণ থাকলেও বন্ধ রয়েছে এই সেবা। শুধু থেরোলজি কিছু পরীক্ষা হচ্ছে নামমাত্র। যেকোনো রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য প্যাথলজির সিবিসি, আরবিএস, এইচবিএস এজি, ইউরিন আরই, ভিডিআরএল, ক্রস ম্যাচিংয়ের মতো নরমাল রোগ নির্ণয় পরীক্ষাও এখানে না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রোগীরা। এখানে সব সুবিধা থাকার পরও তা কার্যকর না থাকায় প্যাথলজির সব টেস্ট হাসপাতালের সামনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে হচ্ছে। অথচ এখানে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) হিসেবেও ৩ জন টেকনিশিয়ান কর্মরত রয়েছেন।

এ ব্যাপারে এখানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) কনিকা রায় বলেন, আসবাবপত্রের অভাবে রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য প্যাথলজির সরঞ্জামাদি স্থাপন করতে না পারায় বন্ধ রয়েছে এই সেবা। তবে রোগীদের অভিযোগ, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

নামমাত্র চলে অপারেশন থিয়েটার

গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া কনসালট্যান্ট থাকলেও তারা নিয়মিত অফিস করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তথ্যানুযায়ী জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সপ্তাহে দুই দিন ওটি করা হয়। জানুয়ারি মাসে ৯টি সিজারিয়ান অপরেশন ও ২৭টি নরমাল ডেলিভারি করা হয়। সাধারণ দরিদ্র রোগীরা হাসপাতালে ওটির সুযোগ পান না। সাধারণত বিশেষ শ্রেণির মানুষ ও হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিদের পরিচিতজনরা এ সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বামী জানান, অনেক চেষ্টা করেও এখানে সিজার করাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে তার স্ত্রীকে সিজার করাতে হয়েছে।

এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালের এক কিলোমিটারের মধ্যে ১৪টি প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে গড়ে প্রতিমাসে প্রায় ২০০-এর অধিক সিজার অপারেশন হয়। হাসপাতালের কর্মকর্তার যোগসাজশ ও দালালদের দৌরাত্ম্যের ফলে রোগীরা হাসপাতালে সিজার অপারেশনের সুযোগ পায় না বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।

রোগীদের টয়লেটের বেহাল দশা

হাসপাতালের নতুন ভবনের ৪ তলায় রয়েছে পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। এই ৩ ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য রয়েছে ৪টি টয়লেট। তবে ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় দুটি টয়লেট রয়েছে স্থায়ী তালাবদ্ধ। একটি টয়লেট হাসপাতালের স্টাফরা ব্যবহার করেন। এটিও তালাবদ্ধ থাকে। অপর ১টি মাত্র টয়লেট পুরুষ-মহিলা সব রোগীকে একসঙ্গে ব্যবহার করতে দেখা যায়। রোগীদের ব্যবহারের টয়লেটটি ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর দেখা যায়। মনে হবে একটি ডাস্টবিনের ভাগাড়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা রোগী আক্ষেপ করে বলেন, অনেক মহিলা পর্দা করেন। তারা পুরুষদের সঙ্গে একই টয়লেটে কীভাবে যাবে? তাছাড়া টয়লেটটি ঠিকমতো পরিষ্কার না থাকায় দুর্গন্ধে যাওয়া যায় না। তাই অনেক মহিলা রোগী বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন বাড়িতে যায়।

এ ব্যপারে ডিউটিরত একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, দুই মাস ধরে টয়লেট দুটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি ইউএইচএফপিও ম্যাডাম বলতে পারবেন।

রোগীদের টয়লেট তালাবদ্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালপ্রধান (ইউএইচএফপিও) ডা. নন্দা সেন গুপ্তা বলেন, রোগীরা ঠিকমতো টয়লেট ব্যবহার করতে জানে না। টয়লেট দুটি তাই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এখনো এগুলো পরিষ্কার করতে না পারার কারণে ২ মাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে।

ডিজিটাল মাধ্যমে রয়েছে অনিয়ম

সরকারি নিয়ম অনুসারে হাসপাতালের সব বিল অটোমেশন পদ্ধতিতে হওয়ার কথা। তবে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানা হচ্ছে না সে নিয়ম। শুধু রোগীদের টিকিট অটোমেশন পদ্ধতিতে হলেও রোগীদের কেবিন ভাড়া, এক্সরে, আলটাসনোগ্রাফি, ইসিজি ইত্যাদি পরীক্ষার বিল নেওয়া হয় হাতে লেখা রশিদের মাধ্যমে। এ ছাড়া হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুবিধার জন্য ডিজিটাল হাজিরা মেশিনে ১৫ মিনিট সময় কমিয়ে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।

কোটালীপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ দাড়িয়া অভিযোগ করে বলেন, ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করেন। এরপর ধাপে ধাপে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ ও আধুনিক ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করা হয়। ১০০ শয্যায় উন্নীত হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগের থেকে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সবকিছু থাকার পরও চিকিৎসকদের উদাসীনতার কারণে রোগীরা সেবা না পেয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে ও জেলা শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যারা আছেন তারা বাসা ও প্রাইভেট ক্লিনিকে প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অনেক রোগী জানেন না, কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন। হৃদরোগের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন- আমি নিজেও জানি না। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সব ব্যবস্থা করলেও এ যেন কাজির গরু কিতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে নেই এমন অবস্থা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তার অদক্ষতাকে এ জন্য দায়ী করেন তিনি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকায় ২টি ১০০ শয্যার হাসপাতাল। একটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় অন্যটি কোটালীপাড়া উপজেলায়। টুঙ্গিপাড়া ১০০ শয্যা হাসপাতালে ওখানকার রোগীরা যে সেবা পাচ্ছে, আমরা তার ছিটেফোঁটাও পাই না। অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার ভোটারদের চিকিৎসাসেবার জন্য কোটালীপাড়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ দিয়েছেন। শুধু একজন স্বেচ্ছাচারী ও অদক্ষ কর্মকর্তার কারণে সাধারণ রোগীরা বঞ্চিত রয়েছেন সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে।

এসব অভিযোগের বাইরে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নন্দা সেন গুপ্তা বলেন, জনবল সংকটের কারণে কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার বিষয়ে ইতোমধ্যে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি বাক্সবন্দি থাকার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলমান থাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। রোগীদের অভিযোগ ও গণমাধ্যমের পর্যবেক্ষণ পাত্তা দিতে নারাজ তিনি।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয় অবগত রয়েছেন কি না জানতে চাইলে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. জিল্লুর রহমান জানান, কোটালীপাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম ও হাসপাতালপ্রধানের দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।

বিষয়:

সড়ক সুরক্ষায় কাজে আসছে না এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি পরিচালনায় বছরে সরকারের ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচ হলেও কোনো সুফল নেই। সড়কে পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় সেবা দিতে পারছে না। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোল সড়কে স্কেল চালু করলে এ রুটে বাণিজ্য কমার আশঙ্কায় স্কেল ব্যবহারে তাদের আপত্তি রয়েছে।

প্রতিবছর সড়ক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। তবে পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকচালকরা সড়ক আইন না মানায় অল্প দিনেই সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। এতে সড়ক ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে দুর্ঘটনা। সড়ক পথে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাড়াতে জাপানি এনজিও সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল পৌর গেট এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ওয়িং স্কেল স্থাপন করে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট ওয়িংস্কেল পরিচালনায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা চুক্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইউডিসিকে টেন্ডার দেয় সরকার। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মকর্তা প্রকৌশলী ও কর্মচারীসহ স্কেল পরিচালনায় ৪২ জন কাজ করছেন। নিরাপত্তায় রয়েছে ৭ জন আনসার সদস্য। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনে প্রথম টনে ৫ হাজার ও দ্বিতীয় টনপ্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে স্কেলে অতিরিক্ত পণ্য শনাক্ত হলেও জরিমানা আদায় বা ওভার লোড বন্ধে কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণে অর্থ বিফলে যাচ্ছে এবং অতিরিক্ত পণ্য বহনে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলেন, নওয়াপাড়া ও ভোমরা বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোলে স্কেল চালু করলে এ রুটে ব্যবসা কমে আসবে। পার্শ্ববর্তী বন্দরগুলোতে স্কেল চালু হলে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি ব্যবহার করবেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জমান সনি বলেন, পদ্মা নদীর এপারে বেনাপোলসহ আরও চারটি বন্দর রয়েছে। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দর। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দরে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন না করে বেনাপোল বন্দরসংলগ্ন সড়কে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করে আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল যশোর সড়কে ওজন স্কেল স্থাপনকে সাধুবাদ জানায়। তবে অন্য তিনটি বন্দরে ওজন স্কেল স্থাপন করে একত্রে চারটি বন্দর সংলগ্ন সড়কে ওজন স্কেল চালু করার দাবি জানায়। শুধু বেনাপোলে সড়কে ওজন স্কেল চালু করা করা হলে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেনাপোল বন্দর। এ জন্য এ স্কেল ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।

বেনাপোলের ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোল-যশোর সড়কের পৌর গেট এলাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করার ফলে ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী মোংলা, ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দরে কোনো ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়নি। বেনাপোল সড়কের ওজন স্কেল চালু করা হলে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। অন্য বন্দর দিয়ে ট্রাকে মাল একটু কম বা বেশি হলেও কোনো সমস্যা হবে না। তাহলে কেন আমি এ বন্দর দিয়ে মাল এনে জরিমানা দিব? পার্শ্ববর্তী অন্য বন্দরগুলোয় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল চালু করা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি রোকনুজ্জামান জানান, বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে থাকে। এ বন্দরে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বেনাপোল-যশোর সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। ট্রাকগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য বহন করলেও কোনো ওজন স্লিপ না থাকার কারণে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বেনাপোল পৌর গেটে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ স্কেলটি চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।


কাজের জন্য কক্সবাজার গিয়ে নিখোঁজ ৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার গিয়ে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের পাঁচ তরুণসহ ছয়জন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজরা হলেন— জকিগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।

তারা সবাই উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহার মহল গ্রামের বাসিন্দা।

নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে সিলেট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা। পরদিন ১৬ এপ্রিল (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এরপর থেকে তাদের সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ছয়জনের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে কাজ করছে।

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সফর উদ্দিন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, ‘কক্সবাজার পৌঁছার পর জানিয়েছিল পৌঁছেছে। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন কক্সবাজারে যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে থানায় জিডি করবেন। জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ নিচ্ছে না।’

নিখোঁজ রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, ‘৪ থেকে ৫ বছর ধরে রশিদ চট্টগ্রামে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। কক্সবাজার এই প্রথম গিয়েছে। ওইখানে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। ওইদিনও ওই ঠিকাদারের কাছে তারা যায়। এরপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকতো বা কেউ জিম্মি করত, তাহলে তো টাকা পয়সা চাইতো, এরকম কিছুই না। আমাদের ধারণা তাদের ওইখানে যে লোক নিয়েছে, ওই লোকই কিছু করেছে।’

তবে ঠিকাদারের নাম ঠিকানা কোনো কিছু জানাতে পারেননি নিখোঁজ রশিদের ভাই বাছিত।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, ‘তারা প্রায় সময়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম ৫ থেকে ৬ মাস থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। আবার সেখানে গিয়ে কাজ করত। মঙ্গলবারের পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। গতকাল সারারাত থানায় ছিলাম।

তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারের মোবাইল বন্ধ। তবে ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সঙ্গে একজনের নাম বাবুল বলে জানিয়েছেন থানার ওসি। যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পুলিশ জানিয়েছে। আমাদের এলাকার আরও লোকজন সেখানে রয়েছেন তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুঁজি করছেন।’

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘নিখোঁজ ছয়জনই দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কাজ করেন। এখন হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমরা গত ১৮ এপ্রিল বিষয়টি অবগত হয়েছি। এরপর থেকে কাজ করছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’


উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়েছেন পিয়ন

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিওন সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:৩০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাহবুব আলম সুমন নামে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক পিয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সরকারি অনুদানের কথা বলে ও প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সনমান্দি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নুরউদ্দিনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার, একই ইউনিয়নের গিরদান গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তাসলিমা বেগম ও নাজিরপুর গ্রামের মুকবিল হোসেনের ছেলে জনি মিয়া।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ করে টাকা অর্থ সহায়তা দেবেন বলে প্রচার করেন। সেই অর্থ পেতে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে ৬ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে বলে জানান। পিওনের কথা বিশ্বাস করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ তাকে ৬ হাজার টাকা করে ব্যাংকে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নাম করে তিনি আবেদনকারীদের মোবাইল ফোনে সান্ত্বনা এসএমএস দিয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে বিষয়টি আবেদনকারীদের সন্দেহ হলে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে তাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা জমা হয়নি।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা বলে নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩২ জনের কাছ থেকে তিনি এক থেকে দেড় লাখ, গাভী দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২৬ জনের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতা পাইয়ে দেওয়ার জন্যও টাকা নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী স্বর্ণা আক্তার জানান, তারা গরিব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, তাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা টাকা নিয়েছেন। অফিসে এসে জানতে পেরেছি তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন।

অভিযুক্ত পিওন মাহবুব আলম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি।

সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


অনিয়ম-দুর্নীতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে কৃষি অফিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রতিটি খাতেই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে কৃষি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছে কর্মকর্তা শাহিন রানা। কৃষকদের জন্য ধান, সয়াবিন, বাদাম ও ভুট্টা কাটার যন্ত্রপাতি বরাদ্দ এনে তা প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ট্রেনিং, প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর নামে কৃষকদের এনে নামমাত্র নাস্তা ও সামান্য নগদ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সাদা কাগজ স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে বিদায় করা হয়। কৃষি অফিসটি এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করছেন এই কর্মকর্তা।

অভিযোগ উঠেছে, কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের সিংহভাগ লুটপাট হচ্ছে। তারা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হয় কৃষকদের স্বাক্ষর ও টিপসই।

এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানার পকেটে। সরকারি বরাদ্দের এক-চতুর্থাংশও কৃষকরা পাচ্ছেন না। অফিসের যন্ত্রপাতি (মেশিন) থেকে শুরু করে প্রতিটি খাত থেকে কৃষি কর্মকর্তার বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাস্তা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান অন্তত ১৫ জন কৃষক।

বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাদের জন্য সরকার কি পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকরা পাচ্ছেন কতটুকু। তারা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে কিছুই জানায় না। উল্টো তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি ধমকিও দেন এ কর্মকর্তা। এতে কৃষকরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

কৃষি অফিস বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, খেসারি, মসুর, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন কৃষককে ৫ একরের একটি করে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা। কোন গ্রুপে ১৫ হাজার আবার কোন গ্রুপে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। হেক্টর-প্রতি কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক,নগদ টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা তাও দেওয়া হয়েছে নামমাত্র।

এএসসিপি প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে কৃষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন কৃষক। ওই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষকের জন্য খাবার বাবদ বরাদ্দ ৪০০ টাকা এবং ব্যাগ বাবদ ৬৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০০ টাকা দামের ১ প্যাকেট বিরিয়ানি আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকার একটি ব্যাগ। তাদের অভিযোগ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাশতা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে কৃষক ও যন্ত্রপাতি বরাদ্দের তালিকা চাইলে তিনি আজ নয় কাল বলে তালবাহানা করে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদক কাগজপত্রের জন্য কৃষি অফিস অন্তত তিনবার গিয়ে তার কাছ থেকে এসব তথ্য নিতে পারেননি।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, গত বছর কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা কাটার মেশিন ৮ টি,কম্বাইন হারভেস্টার ২ টি,রিপার ৪ টি,রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ওয়াকিং টাইপ ২ টি ও পাওয়ার স্প্রয়ার ১ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা চাষ না হলেও এ কর্মকর্তা লুটপাটের উদ্দেশ্যে ধান কাটার মেশিন বাদ দিয়ে ভুট্টা কাটার মেশিনের চাহিদা পাঠান। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ৮ টি মেইজ শেলার (ভুট্টা মাড়ার মেশিন) বরাদ্দ দেন। মেশিনগুলো প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার অনুগত লোকজনের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে ফটোসেশান করে ওই মেশিন অন্যদের নিকট নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেন। ৪ টি রিপার পেলেও ওইগুলো তার পছন্দের এক দালালের মাধ্যমে ভৈরব নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে।

উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট এলাকার মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন একটি মেইজ শেলার মেশিন। ১৫ দিনের মাথায় তিনি ওই মেশিনটি অন্য এক কৃষকের নিকট বিক্রি করে দেন।

চরলরেন্স এলাকার হাছন আলীর নামে একটি মেইজ শেলার মেশিন বরাদ্দ দেখানো হয়। তার ফোন নম্বরে কল করা হলে নাম্বারটি ঢাকার এক বাসিন্দা দাবী করে বলেন, তার বাড়ী ঢাকায়, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেননা। তার ফোন নাম্বার কৃষি অফিসের তালিকায় কেন থাকবে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পুষ্টি বাগানের জন্য বিভিন্ন গ্রুপে ১৪৫ জন কৃষককে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি কৃষককে ৫টি গাছের চারা,২৫০ টাকার বীজ, ও ৪৫০ টাকার সার দিয়ে বাকি টাকা সম্পূর্ণ তার পকেটে ঠুকান বলে অভিযোগ করেন ৫ জন কৃষক।

এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় বাগান পরিচর্যার জন্য শতাধিক কৃষককে ট্রেনিং দেওয়া হয়। এতে প্রত্যেক কৃষকের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষি কর্মকর্তা সাদা-কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দুইভাগ ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ নিয়ে কৃষকদের সাথে কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডাও হয়েছে বলে তিনজন কৃষক এ প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেন।

এছাড়া এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষক ট্রেনিংয়ের নামে ২০ টাকার নাস্তা,১২০ টাকার দুপুরের খাওয়া ও নগদে ২৫০ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ভাবেই চলছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি।

এসএসিপি প্রকল্পে ট্রেনিং নেওয়া সাহেবের-হাট এলাকার কৃষক খুরশিদ আলম বলেন, একবার একটা ট্রেনিং করে তিনি ৮০০ টাকার ভাতা পেয়েছেন।

চরফলকন এলাকার কৃষক মো. ইউসুফ জানান, তার একটি পুষ্টি বাগান রয়েছে। কখনো ট্রেনিং করেননি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে একটা আমের চারা, লেবুর চারা ও একটি সাইনবোর্ড ছাড়া তিনি কিছুই পাননি।

চরলরেন্স এলাকার কৃষক মোঃ ইউসুফ জানান, তার একটি টমেটো বাগান রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে একবার ২ হাজার ৫০০, আবার ৩ হাজার টাকা ও কিছু বীজ পেয়েছেন তিনি।

বরাদ্দের বিষয়ে অফিসের এক সহকারী বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দের কোনো কপি আমাদের দেওয়া হয় না। অফিস থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, আমরা ডায়েরিতে নোট করে নিই।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানা বলেন, ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তবে তার আমলে কৃষকদের বরাদ্দ সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের পছন্দের কেউ থাকলে নাম দিতে পারেন। আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনাদের দেওয়া নামগুলোকে বরাদ্দের আওতায় নিয়ে আসব।’


৪০০ কিলোমিটার সাঁতরে চাঁদপুরে রফিকুল, গন্তব্য বঙ্গোপসাগর

আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ১৩:০৯
ইউএনবি

দীর্ঘ ৪০০ কিলোমিটার নৌপথ সাঁতরে চাঁদপুরে পৌঁছেছেন সাহসী সাঁতারু রফিকুল ইসলাম। তার লক্ষ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত যাওয়া। কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকা ঝুনকারচর থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছেন। এই যাত্রায় চাঁদপুরে পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে ১৯ দিন।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম একজন সাহসী উদ্যমী সাঁতারু। তার আরেকটি বিশেষ পরিচয় হলো তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদারের স্বামী। তিনিও তার সঙ্গে রয়েছেন।

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেডে শনিবার (২২ মার্চ ) বিকালে সাঁতারু রফিকুল ইসলাম সাঁতার কেটে মেঘনা পাড়ে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান চাঁদপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাসির আহমেদ, বিশ্ব ভ্রমণকারী তানভীর অপুসহ চাঁদপুরবাসী।

সাঁতারু রফিকুল ইউএনবিকে জানান, অভিযাত্রী সংগঠনের পক্ষ থেকে কাজ করা হয় অ্যাডভেঞ্চার রোমাঞ্চকর বিষয়ে। এরই ধারাবাহিকতায়শোক থেকে শক্তিস্বাধীনতা দিবসের অর্জনের শক্তি হিসেবে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার নৌপথ সাঁতরিয়ে অতিক্রম করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি নদীতে ঝাপ দেন, শুরু করেন সাঁতার।

তিনি আরও বলেন, শনিবার শরীয়তপুরের সুরেশ্বর চরআত্রা এলাকা থেকে সকাল ৭টায় রওনা করে বিকাল সাড়ে ৪টায় চাঁদপুর মোলহেডে এসে পৌঁছেন তিনি।

সময় তিনি ২২ কিলোমিটার নদী পথ সাঁতরে আসেন। দেখা গেলো তিনি বেশ চাঙা উদ্যমী। (মরালী বুস্ট আপ)

তিনি আরও বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ২২ মার্চ শনিবার দিন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪০০ কিলোমিটার নদী পথ সাঁতার কেটেছেন।

এর মধ্যেকুড়িগ্রামের চিলমারী, যমুনা সেতু , পদ্মা-মেঘনাসহ অনেক নদী পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

রফিকুল ইসলাম রবিবার ভোরে চাঁদপুর থেকে রওনা করবেন ১৫০ কিলোমিটার নৌ পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে। তার সঙ্গে রয়েছেন সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণাদানকারী এভারেষ্ট বিজয়ী সহধর্মীনি নিশাত মজুমদার, সহযাত্রী ফারুকসহ গ্রেট ডেলটা (কুড়িগ্রাম থেকে শুরু হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগর ) অভিযাত্রী সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।

সাহসী এই সাঁতারু আরও বলেন, নদীমাতৃক আমাদের এই দেশ। এদেশে অনেক ছোট, বড় নদী রয়েছে। সাঁতার কাটতে কাটতে চেনা যায় নদীর পারের সহজ সরল মানুষদের। নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সকলের দোয়াও কামনা করেন তিনি।


নাফ নদীতে ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নিখোঁজের খবরটি গুজবনির্ভর অপপ্রচার: বিজিবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে অভিযানে গিয়ে বিজিবির ৩৩ জন সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বিজিবি

শনিবার রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে কথা জানানো হয়।

বিজিবি জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, গত দুই দিন ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজবনির্ভর এই অপপ্রচারে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এই তথ্যটি ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ২২ মার্চ ভোররাতে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শবর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভাব্য পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।

পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদেরকে উদ্ধার সার্চ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।


গাজীপুরে একই পরিবারের ৩ জনের লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ১১:৪৯
ইউএনবি

গাজীপুরের কাশিমপুরে নিজ বসত ঘর থেকে স্বামী- স্ত্রী ও এক সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, রবিবার সকালে কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে নাজমুলের লাশ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী খাদিজা ও শিশু কন্যা নাদিয়ার লাশ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, নাজমুল নিজে ফাঁসিতে ঝুলার আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের জেড়ে এর আগে নাজমুল ব্লেড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত করে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


গাইবান্ধায় অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আইয়ুব আলী দুলা (৫২) নামে এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের।

রোববার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টার টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকা হতে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা।

তিনি বলেন, ‘সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকায় এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ ওই রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি রাত পৌনে ১২টা থেকে সোয়া ১২টার মধ্যে ঘটানো হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে অটোটিসহ চালকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং চালকের পরিহিত পোশাকের ভেতরে থাকা কিছু নগদ টাকাও পাওয়া গেছে। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং প্রাথমিক পুলিশি তদন্তে মনে হচ্ছে ঘটনাটি পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটানো হতে পারে, ছিনতাই নয়।’

এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ জড়িতদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

বিষয়:

বঙ্গবন্ধু সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা টোল আদায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ঈদের আর মাত্র বাকি দুইদিন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এর ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। মহাসড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায় স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ৪২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং যার মোট টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৮৫০ টাকা।

এরমধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশে ২৭ হাজার ২৩২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৯৫০ টাকা এবং সিরাজগঞ্জের সেতু পশ্চিম অংশে ১৬ হাজার ১৯৫ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, যানজট নিরসনে সেতুর উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। যানবাহনের চাপ বেড়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মীর সাজেদুর রহমান জানান, মহাসড়কে প‌রিবহনের খুব চাপ রয়েছে। এতে পরিবহনগুলো খুবই ধীরগ‌তিতে চলাচল করছে। এ ছাড়া সেতুর উপর এক‌টি বাস নষ্ট হওয়ায় পাঁচ মি‌নিট বন্ধ ছিল প‌রিবহন চলাচল। পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণেও অন‌্য প‌রিবহনগুলোতে ধীরগ‌তির সৃ‌ষ্টি হয়েছে। প‌রিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখ‌তে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দা‌য়িত্ব পালন কর‌ছেন।

বিষয়:

বাগেরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ১, আহত ৩

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:৪৮
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে জেলার কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট শহরের বাসস্টান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভেঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের উপর পড়ে বাসের চালকসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার এ ঘূর্ণিঝড়ে জেলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। সেই সাথে বিধ্বস্ত কয়েক শত কাঁচা ও আধা কাঁচা বাড়িঘর। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ।’

তিনি বলেন, ‘জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা ও ৬শ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে।’

বিষয়:

ঘরের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দুই শতাধিক গৃহহীন পরিবারের

গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে দুই শতাধিক বাড়ি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মীর আনোয়ার আলী, রংপুর

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মুজিববর্ষের ৪র্থ ধাপে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না- প্রধানমন্ত্রীর এমন অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে। সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও নাহিদ তামান্না মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় ২১০ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য মুজিব শতবর্ষের ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য ২ শতাংশ জমির ওপর ২টি সেমি পাকা ঘর, ১টি রান্না ঘর ও ১টি টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এতে করে ২১০টি পরিবারের ঘর নির্মাণ করতে মোট ব্যয় হবে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউএনও।

সরেজমিনে উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশদ্বারে লাগানো রয়েছে প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড। উঁচু জমিতে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে বাড়িগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রশংসা করে জানান, প্রকল্পের ঘরগুলো এখন মানসম্মতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘর তৈরিতে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সব সময় তদারকি করছেন, কাজের নির্মাণ সামগ্রী এবং নির্মাণ কাজ মানসম্মত। এক সাথে অনেকগুলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করায় প্রকল্পটির সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে, যা দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। ছোট ছোট ঘর নির্মাণে উন্নত সামগ্রী ব্যবহার করায় দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অসহায় মানুষগুলো তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়ে রঙিন এ ঘরে বসবাস করার যে স্বপ্ন দেখছিলেন তা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দেশের কোন মানুষ গৃহহীন বা না খেয়ে থাকবে না, তাই তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলায় ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, ‘ঘর নির্মাণ কমিটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে নিয়জিত আছেন। আমি কাজগুলো সব সময় তদারকি করছি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মনিটরিং অফিসার এসে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরগুলো খুবই কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয় এবং সচিত্র প্রতিবেদন রাখা হয়। প্রকল্পের কাজ নিয়মানুযায়ী সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।’

বিষয়:

নানার বাড়ির পাশে মিলল শিশুর লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিখোঁজের এক দিন পর সাকিব সিকদার (১০) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাচঁরুখী গ্রামে নানা বাড়ির পাশ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সাকিব রুপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকার জিকু সিকদারের ছেলে।

আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, ১৭-১৮ দিন আগে শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার পাঁচরুখী গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তার মা তাকে ব্লেড আনতে বাজারে পাঠান। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফিরেনি। এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তার নানাদের নতুন বাড়ির পাশে শিশুটির লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। সে সামান্য বাকপ্রতিবন্ধী ছিল।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।


ফেনীতে ট্রাক-ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মুহুরীগঞ্জে আজ সকালে রেলপথ পারাপারের সময় বালুবোঝাই ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের একজন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারাকা গ্রামের আবুল হাওলাদারের ছেলে ট্রাকচালক মো. মিজান (৩২)। অপর নিহত ট্রেনযাত্রীর নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার জাকির হাসান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকটি অন্তত ১০০ মিটার সামনে গিয়ে পড়ে। গেইটম্যান মো. সাইফুল ট্রেন অতিক্রম করার সময় সেখানে ছিলেন না।

ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক শাহ আলম জানান, রেললাইনের উপর পড়ে থাকা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক সরিয়ে নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম ট্রেন দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়:

banner close