কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা বিচকে ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ ও কলাতলী ও সুগন্ধা বিচের মাঝখানের এলাকাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা বিচ’ নামকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণনালয়। সুগন্ধা বিচকে ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধা বিচ’ নামের আরেকটি নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত দিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
গতকাল রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব মোঃ সাহেব উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পূর্বে পাঠানো নির্দেশনার উপর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য নির্দেশনাক্রমে অনুরোধ করা হলো। একই সাথে পূর্বে পাঠানো পত্রটি বাতিল বলে গণ্য করা হলো।
উল্লেখ্য, সুগন্ধা বিচকে ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ নামকরণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সোলায়মান মিয়া এ বিষয়ে আবেদন করেছিলো। পরে তা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ১৩ তম সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হলে মন্ত্রণালয় সেটি বাস্তবায়নের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিলো।
শীতের শুরুতে কুমিল্লার বাজারে নানা শীতকালীন সবজির আমদানি বেড়েছে। ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। তবে আশানুরূপ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও সবজির দাম কমছে না; বরং এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তারা।
সাধারণত শীতের মৌসুমে সবজির দাম কমে আসে। কিন্তু এবার তার উল্টো চিত্র। কুমিল্লার নিউমার্কেট, রাজাগঞ্জ, রানীরবাজার, চকবাজার, মগবাড়ী চৌমুহনী, বাদশামিয়া বাজার, টমছমব্রিজ, ইয়াছিন মার্কেট, ক্যান্টনমেন্ট, কংসনগর, দেবিদ্বার ও কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়- সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাজারে যেসব সবজির দাম বেড়েছে : ঢেঁড়স ও পটোল: ১০০ টাকা কেজি (গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা), শিম: ১১০–১৪০ টাকা কেজি, বেগুন: ৮০–১২০ টাকা কেজি, করলা: ১২০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা: ৮০–১০০ টাকা কেজি, লাউ (লম্বা): ৮০–৯০ টাকা পিস, ফুলকপি: ৫০–১০০ টাকা পিস, বাঁধাকপি: ৫০–৬০ টাকা পিস, মিষ্টিকুমড়া: ৫০–৬০ টাকা, কাঁচামরিচ: ১৬০–২০০ টাকা, বরবটি: ১০০ টাকা,মুলা: ৭০–৮০ টাকা, পেঁপে: ৫০ টাকা, কচুর লতি: ৮০ টাকা, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনো চড়া, পেঁয়াজের কেজি ১০৫–১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজকলির দাম ৭০–৯০ টাকা কেজি।
আলুর বাজারেও অস্বাভাবিক চিত্র: সাধারণত এই সময়ে আলুর দাম ৫০–৬০ টাকা কেজি থাকে। কিন্তু এখন ৫ কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ টাকায়, যা উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এনাম, রিহাদসহ একাধিক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারগুলোতে সবজির ঢল থাকলেও এ বছর সরবরাহ কমেছে। উৎপাদন এলাকায় বৃষ্টির কারণে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আড়তে দাম বাড়ছে, আমরাও বেশি দামে কিনে আনতে বাধ্য হচ্ছি।
দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা: স্কুলশিক্ষক হাসিনা, মুন্নী, সাংবাদিক আবদুর রহমান, এম হাসানসহ কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর শীত এলেই সবজির দাম কমে যায়। কিন্তু এবার উল্টো- সব কিছুর দামই দ্বিগুণ। সাধারণ মানুষের অবস্থার কথা কেউ ভাবছে না।
ক্রেতারা বলছেন, সরকার দ্রুত পাইকারি ও খুচরা বাজারে তদারকি বাড়ালে দাম স্বাভাবিক হবে। তা না হলে শীতের মৌসুমেও সবজি কিনতে স্বস্তি পাওয়া যাবে না।
তিতাস গ্যাস প্রধান কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে "তিতাস গ্যাস" জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান, ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি -এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, প্রধান বক্তা হিসেবে জনাব এ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল -এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিশেষ অতিথি হিসেবে জনাব সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা -১২ -এর বিএনপি কর্তৃক মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ, মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর এবং খন্দকার জুলফিকার মতিন, সভাপতি, তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সহ শ্রমিক দলের জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ, রেজিঃ নং বি-১৯৪০)-এর সভাপতি, জনাব খন্দকার জুলফিকার মতিন উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু করেন। তিনি তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস হ্রাসে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেন। এছাড়া, তিতাস গ্যাসের কর্মপরিবেশ ঠিক রাখতে সকলে মিলিমিশে কাজ করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ নবনির্বাচিত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)-এর কমিটিকে অভিনন্দন জানান। তিনি জ্বালানী সেক্টরের সর্ববৃহৎ গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিতাস গ্যাসের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া, তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস হ্রাসকল্পে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ ও এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন। তিনি তিতাসের শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ সম্পর্ক আরো উন্নতিকল্পে তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা ব্যক্ত করেন।
উক্ত অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) -এর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, জনাব নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান ও তিতাস গ্যাসের অতীত উজ্জল ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করেন। জ্বালানী সেক্টরের অন্যতম প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের ভাবমূর্তি উজ্জল করার বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন।
পরিশেষে তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ, রেজিঃ নং বি-১৯৪০)-এর সভাপতি, জনাব খন্দকার জুলফিকার মতিন সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
সোমবার ২৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ রবিবার বিকাল ৪ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন পাগলা কর্তৃক মুন্সিগঞ্জ পঞ্চসারের বিনোদপুর ডিংগাভাঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় ৬ টি জাল তৈরির কারখানা ও ২ টি গোডাউনে তল্লাশি করে প্রায় ৩৯ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ১ কোটি ১১ লক্ষ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল এবং জাল তৈরির কাজে ব্যবহৃত ৬০ হাজার পিস সুতার রিল জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে, জব্দকৃত অবৈধ জাল এবং সুতার রিলসমূহ সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিনষ্ট করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মৎস্যসম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
চলছে অগ্রহায়ণ মাস, আমন ধান ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ কৃষাণীরা। প্রতি বছর যখন এই মাসটি আসে তখন সারাদেশের ন্যায় জয়পুরহাটে রোপা-আমন ধান কাটার ধুম পড়ে যায়। এবার তার ব্যতিক্রম হয়নি। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন মাঠ এখন সোনালী রঙ ধারণ করেছে। তাইতো কৃষকেরা ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব করছেন। কৃষিতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে কৃষকেরা মাঠেই ধান মাড়াইয়ের কাজ সারছেন। আবার অনেকে বাড়ির উঠানে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন।
তবে, এবছর অসময়ের বৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এবার আমন ধানের ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কিছু এলাকায় বিশেষ করে কালাই উপজেলায় আগাম আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা খুশি। গেল বছরের তুলনায় ফলন কম হয়েছে, প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১৬ থেকে ১৮ মন। এতে আবাদি জমিতে ফলন কম হওয়া এবং বাজারে ধানের দাম কম থাকায় অনেক কৃষক লোকসান গুনছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ৭০ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ও অসময়ের বৃষ্টিতে ১১৩ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ায় চাষ হয়েছে ৬৯ হাজার ৯৮২ হেক্টর জমিতে। বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যাচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ মণ, যা গতবছরের থেকে ৪ থেকে ৬ মণ কম।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে সোনালী ধানের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। চারিদিকে সোনালী রঙের নতুন আমন ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম। নবান্নের আনন্দে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম চলছে জেলা জুড়ে। এখন মাঠের সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। নানা ব্যস্ততায় বাড়ির উঠান ও কৃষি জমিতে ধান রেখে চলছে ধান মাড়াইয়ের মহোৎসব। বর্তমানে পুরো কাটা-মাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে এবং কৃষকরা ফসল ঘরে তোলার আনন্দ উপভোগ করছেন।
সদর উপজেলার সোটাহার ধারকী গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, এবছর ৮ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম। কিন্তু গতবছরের চেয়ে প্রতি বিঘায় ধান কম হয়েছে ৪-৬ মণ। আবার বাজারে ধানের দাম কম। প্রতি বিঘায় ধান বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার টাকা।
কালাই উপজেলার পাঁচগ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতি বিঘায় ধান বিক্রি করে পাচ্ছি সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা। ফলে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না।
বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমান বাজারে মোটা আমন ধান বিক্রি প্রতি মণ ১২০০ টাকা ও সর্বোচ্চ চিকন ধান ১৩০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এবার জেলায় ৩ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এখন ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের মৌসুমের শেষে ধান বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৩ নারী যৌনকর্মীসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকার 'ফ্রেশ ভাটেরচর গেস্ট হাউস এন্ড রেস্টুরেন্টে' অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার তমা আক্তার (২৮), জামালপুরের সাথী আক্তার (২০), পটুয়াখালীর শামীমা আক্তার (২২), গজারিয়ার বর্ষা (১৮) ও সুমন মিয়া (২৫)।
স্থানীয়রা জানায়, এই বাড়িটির মালিক স্থানীয় রাসেল মিয়া। তবে বেশ কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বাড়িটি ভাড়া নিয়ে আবাসিক হোটেলের ব্যবসা শুরু করেন। হোটেলটিতে নিয়মিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের যাতায়াত করতে দেখা যেত। বিশেষ করে রাতের বেলায় ছেলে-মেয়েদের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা যেত এই হোটেলে। আবাসিক হোটেলের আড়ালে এখানে দেহ ব্যবসা হয় এটা নিশ্চিত হয়ে স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে রোববার দুপুরে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী সেখানে প্রবেশ করলে হাতেনাতে ৩ নারী যৌনকর্মী ও এক প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলকে ধরে ফেলেন। এদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে হোটেল পরিচালনাকারীরা ভবনটির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে। পরে ৩ নারী যৌনকর্মীসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘দিনের বেলা এই হোটেলটিতে তেমন কারো আনাগোনা আমরা দেখতাম না। আমরা ভাবতাম লোকজন না আসলে হোটেল কিভাবে চলে? কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম এখানে যৌনকর্মী এনে দেহ ব্যবসা করা হয়। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত আমরা তাদের বিচার চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আল আমিন বলেন, ‘গজারিয়ার মাটিতে এই অপকর্মের বীজ যারা রোপন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আলেম-ওলামা একজোট হয়ে ব্যবস্থা নিবে। এই ধরনের অপকর্ম গজারিয়ার মাটিতে আমরা মেনে নিব না।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাড়ি মালিক রাসেল মিয়ার বক্তব্য জানতে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ওই হোটেলটিতে অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে পাঁচজনকে আটক করা করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন পেশাদার যৌনকর্মী আর বাকি দুজন প্রেমিক-প্রেমিকা। দণ্ডবিধির ২৯০ ধারায় আটক দেখিয়ে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে’।
মানিকগঞ্জে ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির মামলায় গ্রেপ্তারকৃত- বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মুক্তি ও ফাঁসির দাবিকে কেন্দ্র করে তৌহিদী জনতা ও বাউল ভক্তদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। রোববার বেলা মানিকগঞ্জ শহরের মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর মানিকগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় থমথমে ও জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানান, রোববার সকাল ৯টার দিকে পালাগানে ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ও বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ডাকেন। অপর দিকে বেলা ১১টার দিকে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দেন বাউল শিল্পী ও ভক্তরা। এরপর সকাল ৯টার দিকে ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ও বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধন নিয়ে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আসলে, পাশের দক্ষিণ পাশে মানববন্ধন ও সমাবেশের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বাউল শিল্পী ও ভক্তরা। এ সময় বাউল শিল্পী ও ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে তৌহিদী জনতার উপরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং একপর্যায়ে মাঠের পাশে পড়ে থাকা বাঁশ-লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকজন তৌহিদী জনতাকে আঘাত করে। এরপর তৌহিদী জনতা ও বাউল শিল্পীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা হয় এবং তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফিরোজ বলেন, বাউল শিল্পী ও ভক্তরা ইচ্ছা করে তৌহিদী জনতার উপর আক্রমণ করে। তাদের হামলায় আমাদের ৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা সনিক বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানা দ্রুত চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকরা। রোববার বেলা ১১টার দিকে ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালকের বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শ্রমিক নাজমুল হোসেন, শরিফুল মণ্ডল, রাবেয়া বেগম, আসমা বেগম, ইয়াসমিন, রুবেল রানা, আব্দুর রহমান ও সুজন ইসলামসহ অনেকে। ‘আন্দোলন হটাও, ইপিজেড বাঁচা’- এ স্লোগানে কর্মসূচিতে অংশ নেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানায়, ‘কারখানাটি শুধু কর্মস্থল নয়- এটি আমাদের জীবিকা, আমাদের পরিবারের ভবিষ্যতের ভরসা। শান্ত ও স্থিতিশীল কর্মপরিবেশ বজায় রাখা সবার দায়িত্ব। কিন্তু কিছু ব্যক্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। নিজেদের ও পরিবারের স্বার্থে উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা আর কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না, কোনো আন্দোলন চাই না। আমরা শুধু আমাদের কর্মস্থল ফেরত চাই। ইপিজেড চললে শ্রমিক বাঁচবে, শ্রমিক বাঁচলে পরিবার বাঁচবে।’
প্রসঙ্গত, ২৬ দফা দাবি নিয়ে গত ১৬ নভেম্বর সনিক ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। ১৭ নভেম্বর মালিকপক্ষ দাবি মেনে নিলেও কিছু শ্রমিক এতে অসন্তুষ্ট হন। এরপর ১৮ নভেম্বর শতাধিক শ্রমিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কর্মবিরতি পালন করেন। কাজে ফিরতে অস্বীকৃতি ও উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় একই দিন কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।
গণতান্ত্রিক ধারায়, উন্নয়নের অগ্রযাত্রার স্লোগানে মাগুরা প্রেসক্লাবের ত্রি-বার্ষিক কার্যনির্বাহী পরিষদের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা, কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় মাগুরা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন অত্র ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ড. মুসাফির নজরুল, শালিখা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আব্দুর রব, মহম্মদপুর প্রেক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান টুটুল, মাগুরা প্রেসক্লাবের শরিফ তেহরান আলম টুটুল, শাহিন আলম তুহিন, শরিফ স্বাধীন, শরিফ আনোয়ারুল হাসান রবিন, খায়রুজ্জামান সবুজ, নাঈমুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী মাগুরা প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি এক বছরে ক্লাবের সার্বিক উন্নয়ন এবং সাংবাদিকতার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন যা প্রশংসার দাবি রাখে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মাগুরা প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুম বিল্লাহ কলিন্স।
আলোচনা শেষে বর্ষপূর্তির কেক কেটে সকলে মিষ্টি মুখ করেন। পরে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সময় পেছানোর দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো রেলপথ অবরোধ করেছেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাকৃবির জব্বার মোড়ে অবস্থিত রেলপথ অবরোধ করলে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জব্বারের মোড় এলাকায় দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দিয়ে রেলপথ অবরোধ করে, পাশপাশি মহুয়া কমিউটার ও বলাকা কমিউটার ট্রেনও আটকে পড়ে।
এ সময় ৪৭ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচিকে ‘অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সম্মতি জানিয়ে এই রেল অবরোধ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পিএসসি যদি দাবি না মানে, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে অগ্রসর হবো।’
এর আগে গত শনিবার রাত আটটার দিকে রেল অবরোধ করে ৪৭ তম বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান অবরোধে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীরা। তার আগে বিকেল ৫টায় একই দাবিতে একই এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ৮টার দিকে বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র পুড়িয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়ে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর রাত ১১টার দিকে আবারও জব্বারের মোড়ে রেললাইনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের তারাকান্দিগামী যাত্রীবাহী যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেওয়া হয়। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বোঝানোর একপর্যায়ে এক ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে বাকৃবির জব্বার মোড়ে অবস্থিত রেললাইন থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরে যায়। পরে ওই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেছেন, ৩ দিন পরও ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। আনুমানিক শতাধিক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি, ৫ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আগামী বুধবার ঢাকা থেকে বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল নরসিংদীতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো পরিদর্শন করার পর ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে বলে জানান তিনি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল দপ্তর প্রধানকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
ভূমিকম্প ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর বিষয়ে নরসিংদী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভা শেষে রোববার দুপুরে এসব তথ্য জানান- জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন।
জেলা প্রশাসক বলেন, নরসিংদীতে ক্ষতিগ্রস্ত বহুতল ভবনগুলো বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ হয়েছে কি না- সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে সবাই যেন বিল্ডিং নিয়ম কানুন মেনে ভবন তৈরি করেন সে বিষয়ে সবাই সচেতন থাকার অনুরোধ করেন। ভূমিকম্পের যেহেতু কোন পূর্বাভাস হয় না, সেহেতু কাউকে আতংঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা সিভিল সার্জন, জেলার ৬ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসকরাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
গত শুক্রবার সকালে প্রথম দফার পর শনিবার সকাল ও সন্ধ্যায় আরও দুদফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এসব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী।
প্রথম দফার ভূ-কম্পনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় (পুরাতন), পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪টি আবাসিক ভবন, সার্কিট হাউজ, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় শতাধিক মানুষ আহত ও ৫ জন নিহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বসুন্ধরা সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ভর্তি করা হয়েছে। গত শনিবার রাতের দিকে বন্দর থানা এলাকার মদনগঞ্জে ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ফেনীর নাহিদ হাসান (২২), পাবনার কামাল হোসেন (৪৫), নোয়াখালীর তাইজুল ইসলাম (৩৫), জামালপুরের ফেরদৌস (৩৫), কুষ্টিয়ার তোরাব আলী (৫৫) ও নারায়ণগঞ্জের আতিকুর রহমান (৪২)।
দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মো. রহিম জানান, রাত ৭ টার দিকে কারখানায় বয়লার থেকে বিস্ফোরণ হলে তারা ৬ জন দগ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে নেওয়া ৬ জনের শরীররই মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। তাদের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে নাহিদ হাসান ৪০ শতাংশ, কামাল হোসেন ২৬ শতাংশ, তাইজুল ১২ শতাংশ, ফেরদৌস ১০ শতাংশ, তোরাব ১৬ শতাংশ এবং আতিকুর ২৭ শতাংশ শরীর দগ্ধ হয়েছেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, সিমেন্ট কারখানার বয়লার রুমে চুল্লিতে কয়লা দেওয়ার সময় উত্তপ্ত কয়লা ছিটকে কয়েকজন শ্রমিকের গায়ে পড়ে। এতে ছয়জন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, কয়লার আগুনে ছয় জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিতর্কিত বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা চত্বরের সামনে তাওহিদী জনতার আয়োজনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলার দরিকান্দি সারওয়ার হোসেন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মুফতি রমজান আলী রাফিকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, লেছড়াগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের পেশ ইমাম মসজ আলহাজ হাফেজ মাওলানা আলী আজম, উপজেলা তাবলিগ জামায়াতের আমীর মাওলানা নিজাম উদ্দিন, সাটি নওদা তালিমূল কোরআন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মুফতি নাসির উদ্দীন, পাটগ্রাম মসজিদের ইমাম হাফেজ আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।
তাওহিদী জনতার সমন্বয়ক শামীম হোসেন টিটু সঞ্চালনায় বক্তৃতারা বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাক রব্বুল আলামীনের নামে অশিক্ষিত গানের বয়াতি যে কটূক্তি করে কথা বলেছে এ জন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা এই আবুল সরকসরের ফাঁসির দাবি করছি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বরাবরই গানের মঞ্চে হাদিস কোরআনের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে আসছে এবং ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। দেশের তাওহিদী জনগণ আর এসবকে প্রশ্রয় দেবে না। ইসলামকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
বক্তরা আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি করছি, এই ভণ্ড আবুল সরকার যেন আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হতে না পরে। আমরা তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা চত্বরে একটি মিছিল বের করা হয়। তাওহিদী জনতাসহ অন্যান্য শ্রেণি-পেশার জনগণও উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে মাদক, মানব পাচার ও বিভিন্ন ধরণের চোরাচালান প্রতিরোধে নতুন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নাফ ট্যুরিজম পার্কে একটি ‘অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ পোস্ট’ স্থাপন করেছে। স্থাপিত (Temporary Observation Post) এই নতুন পোস্ট সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর অংশ হিসেবে গত শনিবার ভোরে টেকনাফের কেরুনতরী সংলগ্ন নাফ নদীর মাঝসীমা ও জালিয়ারদ্বীপ ঘিরে টানা ১৬ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস বিশেষ অভিযানে ৯৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৩ জন মাদক পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। পরে বিকেলে টেকনাফ ব্যাটালিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিজিবি-২ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান। এ সময় মেজর মো. শাহাদাত হোসেন শুভ, অপারেশন লে. কমান্ডার মো. সাদিক রাফি উপস্থিত ছিলেন।
অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘গত ২১ নভেম্বর ভোরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারিতে মিয়ানমার দিক থেকে নদী পেরিয়ে আসা দুই পাচারকারীকে শনাক্ত করা হয়। নৌপেট্রোল টিম দ্রুত অভিযানে গিয়ে জালিয়ারদ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদী থেকে ৪৪ হাজার ইয়াবাসহ মিয়ানমারের নাগরিক মো. ইব্রাহিমকে আটক করে। তবে আরেকজন কেওড়া জঙ্গলে পালিয়ে গেলে দ্বীপজুড়ে ফের চিরুনি অভিযান শুরু হয়। দীর্ঘ তল্লাশির পর একই দিন বেলা ও সন্ধ্যায় আরও দুই পাচারকারী (মিয়ানমারের নাগরিক) মো. জুনায়েদ এবং টেকনাফের আব্দুর রাজ্জাককে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেওড়া বাগানের গর্ত থেকে লুকিয়ে রাখা আরও ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি। এছাড়া মেরিন ড্রাইভের হাবিরছড়ায় মোটরসাইকেলে লুকানো ১২০ পিস ইয়াবাসহ মো. আরিফ নামে আরও একজনকে আটক করে বিজিবি।
বিজিবির এক কর্মকর্তা জানান, ‘টেকনাফের নাফ নদীসংলগ্ন এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচার, মানব পাচার, স্বর্ণ চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে পরিচিত। ফলে আপততে বিজিবি নাফে বুকে ‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’ নামে এলাকায় একটি অহস্থায়ী পর্যবেক্ষণ স্থপনা করেছে। এর মাধ্যমে সীমান্তজুড়ে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি, নিয়মিত টহল, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং অনুপ্রবেশ রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্য আমরা সফলতাও পেয়েছি। নতুন পোস্ট স্থাপনের ফলে সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়বে, টহল কার্যক্রম জোরদার হবে এবং অপরাধী চক্রের গতিবিধি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এই স্থাপনের ফলে এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।
বিজিবি জানিয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১২৩ জন আসামি। এছাড়া রোহিঙ্গাসহ ২৮৫ জন মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীকে উদ্ধার, ১৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৯টি হাক বোমা, ২.৯৪৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৭৪ কোটি টাকার মাদক ও মালামাল জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্য সাড়ে ৫১ লাখ পিস ইয়াবা ছিল।
এদিকে ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ‘নাফ ট্যুরিজম পার্কের’ মহাপরিকল্পনা অনুমোদন দেয় সরকার। সেখানে পর্যটকদের থাকার জন্য হোটেল ও ইকো কটেজ, যাওয়ার জন্য কেব্ল কার, ঝুলন্ত সেতু ও ভাসমান জেটি নির্মাণের কথা। দ্বীপটিতে শিশুপার্ক, পানির নিচের রেস্তোরাঁ, ভাসমান রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন পর্যটন স্থাপনা করার পরিকল্পনাও ছিল বেজার। কিন্তু ২০২৩ সালে জুনের দিকে এসে এটি নিয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানোয় ভাটি ভরাট কাজ বন্ধ হয়। তখন সেটি পরিত্যক্ত ছিল। এ সুযোগে অস্ত্রধারীদের সেখানে আনাগোনা শুরু করে। এরপর বিজিবি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে বর্তমানে একটি ‘অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ পোস্ট’ নির্মাণ করে।