শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
২ কার্তিক ১৪৩২

এমপির ঘোষণায়ও বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি

অবৈধ অটোরিকশা স্ট্যান্ড ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তি
প্রতীকী ছবি
আপডেটেড
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০৩:২২
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০৩:২২

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে অবৈধ অটোরিকশা যততত্র পার্কিং করায় বাড়ছে যানজট। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারী ও সাধারণ মানুষ। এসব অটোরিকশার মাধ্যমে দুর্ঘটনা বা অপরাধ সংঘটিত হলে রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা শনাক্ত করতে পারে না।

পৌরবাসী জানিয়েছেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অবৈধ অটোরিকশা স্ট্যান্ড ইজারা দিতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সোনাইমুড়ী বি এস আর সড়কের কলেজগেট থেকে বাইপাস সড়কের মধ্যে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাখা স্ট্যান্ডগুলো ইজারা দিতে উল্লেখ করা হয়।

সম্প্রতি সোনাইমুড়ীতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে নোয়াখালী-১ (চাটখিল সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ঘোষণা দেন, ‘আগামীকাল থেকে কোনো অটোরিকশা থেকে কেউ চাঁদা নিলে এর দায় দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। নিরীহ মানুষদের অন্যায় অত্যাচার করা হচ্ছে। তা বন্ধ না করলে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হব।’

সাংসদ বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রতিনিধি। এখানে যে দলের লোক সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি করবে আমি আপনাদের কথা দিয়ে গেলাম তাদেরকে আশ্রয়-পশ্রয় দিব না।’

সোনাইমুড়ী আংশিক সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম এমপি তার এলাকায় যানবাহনে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষণা দিলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না।

সূত্রে আরও জানা যায়, সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদের বিগত মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অটোরিকশাসহ বিভিন্ন চাঁদাবাজির বিষয়ে কয়েকবার অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা যায়, স্প্রিংপোল, জেলা সুপার মার্কেটের সামনে, বাইপাস, চৌরাস্তা, ছাতারপাইয়া রোড, ডিগ্রি কলেজ রোড, চাটখিল সড়কসহ প্রতিটি রোডে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা। এসব যানবাহন থেকে প্রকাশ্যে রশিদ দিয়ে চাঁদার টাকা আদায় করা হচ্ছে। ইজিবাইক থেকে ২০ টাকা, অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা ও প্যাডেলচালিত রিকশা থেকে ১০ টাকা করে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। চাঁদার টাকা না দিলে লাইনম্যান এসব বাহন আটক করাসহ চালকদের ওপর নির্যাতন চালায় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয়, যানবাহন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আটক করে রাখে এসব চাঁদাবাজরা। লাখ টাকা চাঁদাবাজি জিইয়ে রাখতেই সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্র নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা সচল রেখেছে।

পৌর এলাকার ব্যস্ততম রাস্তা দখল করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এতে তীব্র যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা।

নিজেদের মতো করে রশিদ ছাপিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। রশিদে লেখা আছে, সোনাইমুড়ী পৌরসভাধীন দৈনিক টোল আদায় রশিদ। মিশুক দৈনিক ১০ টাকা। রশিদে আদায়কারী হিসেবে লাইনম্যান ফয়েজের স্বাক্ষর রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে লাইনম্যান ফয়েজ বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় লোকের নির্দেশে তিনি রশিদ ছাপিয়ে চাঁদা নিচ্ছেন। এ টাকা তারা ভাগ- বাঁটোয়ারা করে নেন।

অটোরিকশাচালক আব্দুর রহিম হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে জানান, প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে বের হলে ১০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। টাকা না দিলে গাড়ি আটক করে সড়কে মারধর করে। তাই তারা নিরুপায় হয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হন।

সোনাইমুড়ী পৌরসভার নামে টোল আদায়ের রশিদ ছাপিয়ে চাঁদাবাজির বিষয়ে মেয়র নুরুল হক চৌধুরী জানান, ‘অটোরিকশা নিষিদ্ধ। পৌরসভা থেকে কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। তবু কারা এ ধরনের কাজ করছে। এম পি এইচ এম ইব্রাহিম একটি অনুষ্ঠানে এ ধরনের চাঁদাবাজির বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। কয়েক দিন আগে পৌর এলাকায় হাটবাজার ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ বিজ্ঞপ্তিতে ভুলবশত রিক্সা স্ট্যান্ড উল্লেখ করা হয়েছে। পুনরায় সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’

সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর বলেন, এমপি এইচ এম ইব্রাহিম এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


পাবনা জেলার জন্মদিনে আধুনিক নগরায়ণ গড়ার অঙ্গীকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা প্রাচীন জেলা পাবনা, এ জেলায় জন্ম নিয়েছেন বহুগণীজন, ব্রিটিশ শাসিত থেকে শুরু করে এ জেলায় রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি নানা জেলার নামকরা সব প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই শতাব্দীর ইতিহাস বয়ে চলা পাবনা জেলা তার ১৯৭তম জন্মদিন উদযাপন করেছে।

১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ১৬ অক্টোবর সরকারের ৩১২৪ স্মারকে জেলা হিসেবে পাবনা গঠিত হয়। কিছু ইতিহাসবিদের মতে, পাবনা নামটি পদুম্বা থেকে এসেছে। কালক্রমে পদুম্বা শব্দটির স্বরসঙ্গতি হয়ে পাবনা হয়েছে। পাবনা নামকরণ নিয়ে কারও মতে, পবন বা পাবনা নামে একজন দস্যুর আড্ডাস্থল থেকেই একসময় পাবনা নামের উদ্ভব হয়।

২৩৭১.৫০ বর্গকিমি আয়তন বিশিষ্ট পাবনা জেলায় ৯টি উপজেলা ও ৭৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। পাবনায় আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ২৯,০৯,৬২৪ জন। ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতিতে পাবনা জেলার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ভাষা সংগ্রাম আর সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এই জেলার মানুষদের বীরত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। বিশ্ব বরেণ্য কবি-সাহিত্যিক, রাজনীতিক সাংবাদিক, শিল্পোদ্যোক্তা, বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, অভিনেতা-অভিনেত্রী পাবনা তথা গোটা দেশকে বিশ্ব দরবারে স্বগৌরবে তুলে ধরেছে। ব্রিটিশ স্থাপত্যের টেকসই নিদর্শন দেশের একমাত্র বৃহত্তর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ রেল সেতু, লালন শাহ সেতু ও দেশের একমাত্র পারমাণবিক প্লান্ট পাবনায় অবস্থিত। পাবনায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব দর্শনীয় স্থান। পাবনার হেমায়েতপুরে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল, সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের জন্মভুমি। গত বৃহস্পতিবার পাবনা প্রেসক্লাব, পাবনার আয়োজনে প্রেসক্লাব মিলনায়তনের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিশিষ্টজন, সাংবাদিক, সুধী সমাজ ও জনপ্রতিনিধিরা। সভাপতিত্ব করেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা অ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এছাড়া অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. গোলাম মর্তুজা, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শিবজিৎ নাগ, এবিএম ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলামসহ প্রেসক্লাবের সকল সদস্য, স্থানীয় রাজনীতিবিদ, স্বেচ্ছাসেবী ও সুধিজনরা যোগ দেন।

বক্তারা তাদের আলোচনায় তুলে ধরেন পাবনা শহরের কাঠামোগত দুর্দশা, অবকাঠামোগত ঘাটতি ও নাগরিক সমস্যার নানা চিত্র। কীভাবে এই ঐতিহ্যবাহী শহরকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গড়ে তোলা যায়- সেই বিষয়ে করণীয় নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। তারা আশা প্রকাশ করেন, জেলার ২০০তম জন্মদিনে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ পাবনা উপহার দিতে পারলে সেটি হবে ইতিহাসের মাইলফলক।

অনুষ্ঠানের শেষে কেক কেটে ও মিষ্টি মুখের মাধ্যমে এক আনন্দঘন পরিবেশে জেলা প্রতিষ্ঠা দিবসের এই বিশেষ আয়োজন সম্পন্ন হয়।


বাগেরহাটে পুলিশের মতবিনিময় সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
‎‎বাগেরহাট প্রতিনিধি

‎আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে বাগেরহাট জেলা পুলিশের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. আলী হোসেন ফকির। বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক পিপিএম।

‎বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. আ,স,ম মাহবুবুল আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। বাগেরহাট প্রেসক্লাব সভাপতি মো. কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক তরফদার রবিউল ইসলাম। বাস মালিক সমিতির নেতারাসহ বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধান ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সুধীজন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

‎সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত আইজিপি মো. আলী হোসেন ফকির আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকসহ সবাইকে একাত্ম হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।


ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে অবিলম্বে ফরিদপুরকে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ফরিদপুরে সর্বস্তরের মানুষ। সমাবেশে অনেককেই দাবি সংবলিত ফেস্টুন হাতে নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়। এ সময় ‘দাবি মোদের একটাই-ফরিদপুর বিভাগ চাইসহ’ বিভিন্ন মুহুর্মুহু শ্লোগানে ঘটনাস্থল প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল। গত বৃহস্পতিবার ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফরিদপুর বিভাগের বাস্তবায়ন চাই’ দাবিতে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়ে মুজিব সড়ক ধরে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়, আলীপুরের মোড় হয়ে হাসিবুল হাসান লাবলু সড়ক, কবি জসীমউদ্দিন সড়ক দিয়ে সুপার মার্কেটের মোড় হয়ে পুনরায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে ফিরে এক সমাবেশে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা ও সুশীল সমাজের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা।

বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ইমতিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া, জেলা খেলাফত মজলিশের সভাপতি আবু নাসের, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর জেলার সাবেক সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোজাম্মল হক, নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে বক্তব্য দেন, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আলতাফ হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ফরিদপুর বিভাগ আমাদের ন্যায্য দাবি। আমাদের দিতেই হবে। তরুণ সমাজ জেগেছে, তারা এ দাবি আদায় করে ছাড়বে।


মৌলভীবাজারে পুলিশি সেবা দিতে অভিনব উদ্যোগ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারে জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। ‘আপনার এসপি’ নামে নতুন এই সেবায় জেলার ৭টি থানায় বসেই নাগরিকরা সরাসরি এসপির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে পারছেন। অভিযোগ জানাতে, পরামর্শ নিতে বা ন্যায়বিচার চাওয়ার জন্য এখন আর জেলা সদরে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হবে না সেবাগ্রহীতাদের।

জানা গেছে, প্রতিটি থানায় ‘আপনার এসপি’ নামে একটি করে ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে এসপির মনোনীত কনস্টেবল পদমর্যাদার একজন অপারেটর দায়িত্ব পালন করছেন। অফিস সময়ের মধ্যে এই ডেস্কে এসে যে কেউ সরাসরি ভিডিও কলে এসপির সঙ্গে কথা বলতে পারেন। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন থানায় গিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ এই সেবা গ্রহণ করেছেন।

রুবিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূ বলেন, আগে মনে হতো এসপির সঙ্গে দেখা করা মানে অনেক ঝামেলা। এখন থানায় গিয়ে সহজে কথা বলা যায়। আমি আমার পারিবারিক সমস্যার কথা জানিয়েছি, স্যার খুব সহানুভূতির সঙ্গে শুনেছেন।

এসপি এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মানুষের দুর্ভোগ লাঘব ও দ্রুত সেবা পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। এখন গ্রামের সাধারণ মানুষও থানায় বসেই এসপির সঙ্গে কথা বলতে পারছেন- এটা পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়াবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সারাদেশের মধ্যে মৌলভীবাজারেই এটি প্রথম ধরনের উদ্যোগ।


ফেনীর ফাজিলপুরে আবুল বাশার চৌধুরী আশ্রয় কেন্দ্রের যাত্রা শুরু

ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বন্যায় মানুষের আশ্রয়ে হবে সুব্যবস্থা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর ফাজিলপুরে উদ্বোধন হয়েছে আবুল বাশার চৌধুরী আশ্রয় কেন্দ্র। এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রটি উদ্বোধনের মাধ্যমে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বন্যায় মানুষের আশ্রয়ের সুব্যবস্থা হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে জানবক্স ভূঁঞা বাড়ির সামনে প্রতিষ্ঠিত নুরুন নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল সংলগ্ন ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট এই আশ্রয় কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আশ্রয় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এ বি এম হারুন ও ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন) রোমেন শর্মা, ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক, শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফেনীর সন্তান ডা. এ বি এম হারুন ২০০৬ সালে নিজ এলাকা ফাজিলপুরে প্রতিষ্ঠা করেন আবুল বাশার চৌধুরী জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে। এই কমপ্লেক্সের আওতায় অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে নুরুন নাহার-মনি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল। এখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে প্রতি মাসে নিয়মিত বিনামূল্যে চোখের অস্ত্রোপচার, ওষুধপত্র ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়।

এ হাসপাতালের পাশে চালু হয়েছে আবুল বাশার চৌধুরী হেফজখানা ও এতিমখানা। এ মাদ্রাসায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সন্তানরা কোরআনে হাফেজসহ দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন। এছাড়া তার পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ ও পাঠাগার।

ডা. এ বি এম হারুন ভবিষ্যতে নিজ গ্রামে বেকারত্ব দূরীকরণে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর কবির জানান, বন্যা জলোচ্ছ্বাস বা বিভিন্ন সমস্যায় এলাকাবাসী এখন আর দূরে কোথাও যেতে হবে না। এখানে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবেন।

ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা এম মহিউদ্দিন বলেন, এলাকায় অনেক বিত্তবান ও ধর্ণাঢ্য মানুষ আছেন।

প্রত্যেকে যদি মানবতার সেবায় এগিয়ে আসেন তাহলে এলাকায় কোনো গরিব দুঃখী মানুষ থাকবে না। ডা. এ বি এম হারুন এর উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই এবং এটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

আবুল বাশার চৌধুরী আশ্রয় কেন্দ্র এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. এ বি এম হারুন বলেন, ২০০০ সাল থেকে আমরা এখানে মানবিক ও দরিদ্র সহায়তা বহু কার্যক্রম চালু করেছি। এর মধ্যে নুরুন্নাহার মনি দাতব্য চিকিৎসালয় ও চক্ষু হাসপাতাল, আবুল বাশার চৌধুরী হাফিজিয়া মাদ্রাসা। আজ আমরা তিনশত শয্যা বিশিষ্ট আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেছি। ভবিষ্যতে আমরা এই আশ্রয় কেন্দ্রকে আরও সম্প্রসারণ করব। আমি এলাকায় আরও নতুন নতুন মানবিক প্রতিষ্ঠান চালু করব।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের বন্যা ফেনীর মানুষকে নতুন বার্তা দিয়েছে । ভয়াবহ এই বন্যা মোকাবিলায় ফেনীর সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছেন এবং দৃঢ়ভাবে বন্যা মোকাবেলা করেছেন। ফেনীর মানুষ সাহসী ও বিত্তবান। সবাই এগিয়ে আসলে ফেনীর মানুষ ভালো থাকবেন । অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং ২০২৪ এর বন্যাকে বিবেচনায় রেখে তা মোকাবিলায় ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তব পাঠিয়েছি। সরকারের পাশাপাশি যদি ফেনীর বিত্তবানগণ এগিয়ে আসেন, তাহলে ফেনীবাসীর অনেক কল্যাণ সাধিত হবে।


কারখানাটির ছিল না অগ্নিনিরাপত্তা সনদ

আগুন নেভাতে যুক্ত হয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ
অগ্নিকাণ্ডে কারখানার ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোর ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ (সিইপিজেড) এলাকায় আগুন লাগা ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের পোশাক কারখানার ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না। ভবনের আশপাশে যে ন্যূনতম খালি জায়গা রাখতে হয় তাও রাখা হয়নি। যে কারণে ভবনটির দুই পাশ দিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ ছিল না। এ কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অগ্নিনিরাপত্তা সনদ পেতে প্রতিষ্ঠানটি আবেদন করেছে কেবল। তবে নিয়ম অনুযায়ী এখনো পরিদর্শন করা হয়নি। তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

এদিকে, ওই কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিকাল ৫টা পর্যন্ত পুরোপুরি আগুন নেভেনি। তখন পর্যন্ত কারখানার ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে ধ্বংসস্তূপের ভেতর আগুন জ্বলছিল। সেখানে বের হতে দেখা গেছে কালো ধোঁয়া। ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন পুরোপুরি নির্বাপণে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান সিইপিজেডে ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. জাকির। আগ্রাবাদ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের চেষ্টায় শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগেরদিন গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে কারখানাটিতে আগুন লাগে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো পুরোপুরি নেভেনি। কয়েকটি ফ্লোরে ধ্বংসস্তূপের ভেতর এখনো আগুন জ্বলছে। বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। আগুন যাতে বাড়তে না পারে এজন্য পানি ছিটানো হচ্ছে। এ রিপোর্ট বিকালে লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নির্বাপনের কাজ করছিল।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জাকির বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে কিছুটা। তবে পুরোপুরি নির্বাপণ করা যায়নি এখনো। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করেছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আগুন লাগা ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখনো ভবনটির ভেতর কিছু ফ্লোরে আগুন জ্বলছে। অথচ আগেরদিনও ওই ভবনে এক হাজারের বেশি লোক একসঙ্গে কাজ করেছে।

সিইপিজেড কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক আশেক মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানায় ১ হাজার ৫০ জন শ্রমিক নিয়োজিত ছিলেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে এবং শ্রমিকরা ভবনটি থেকে নেমে যান। আগুন প্রথমে ওপরের তলায় লাগার কারণে শ্রমিকরা দ্রুত এবং নিরাপদে বের হতে পেরেছে। এতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সিইপিজেডের ওই কারখানাটির সাত তলায় আগুন লাগে। আগুন পর্যায়ক্রমে নয় তলা ভবনের নিচতলা পর্যন্ত পুরোটাই ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করেছে। পাশাপাশি আগুন নেভাতে যুক্ত হয় নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট। কাজ করেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে ওই কারখানায় এই আগুন লাগে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আগুন লাগা প্রতিষ্ঠানটিতে তোয়ালেসহ হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।’

ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানিয়েছে, আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বন্দর, আগ্রাবাদ, ইপিজেড, কালুরঘাট ও চন্দনপুরা স্টেশনের ২৫ ইউনিট।


ইলিশ রক্ষায় গোয়ালন্দের পদ্মায় অভিযান, ১১ জেলে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

মা-ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে ২৫ লাখ বর্গমিটার অবৈধ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও ১১ জেলেকে আটক এবং ৫ কেজি মা-ইলিশ জব্দ করেছে প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মা নদীর কলাবাগান ও অন্তার মোড় এলাকায় নৌপুলিশ ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য বিভাগ, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ডের যৌথ অভিযানে

২৫ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল, ১১ জন জেলে আটক ও ৫ কেজি মা-ইলিশ জব্দ করা হয়। পরে আটককৃত ১১ জন জেলেকে মৎস্য সুরক্ষা আইন ১৯৫০ খ্রি. সালের ৫ (২) (খ) ধারা মতে মিয়মিত মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং কারেন্ট জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস ও মাছগুলো এতিমখানা ও স্থানীয় অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নৌপুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের নির্দেশনা মতে গত ৪ অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু হয়েছে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে, মা-ইলিশ প্রজনন এই মৌসুমে সচেতনামূলক প্রোগ্রাম করা হয়েছে, যেন কোনো জেলেরা নদীতে মা-ইলিশ না ধরে, যেন মা-ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়তে পারে, আমাদের নৌপুলিশের অভিযান নদীতে অব্যাহত রয়েছে। এখানে জেলা মৎস্য অফিসের সাথে আমাদের নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড, ম্যাজিস্ট্রেট যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ি থেকে চারটি মামলা রুজু হয়েছে, মোবাইল কোর্ট করা হয়েছে, ৬০ জনের মতো আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে, ২ কোটি ১০ লাখ বর্গমিটারের উপরে অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে, ২৬০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে গরিব ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। শেষ সময় পর্যন্ত আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অভিযানে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা, এসআই মেহেদী হাসান অপূর্বসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আমতলীতে ইটভাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ফসল রক্ষায় বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের রায়বালা গ্রামের বিবিসি ইটভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে আঁকবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিবিসি (বিসমিল্লাহ ব্রিকস) ইটভাটার কারণে এলাকার অন্তত পাঁচশত একর তিন ফসলি জমি, গাছপালা, জীববৈচিত্র্য, প্রাণিসম্পদ ও গ্রামীণ সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালে আব্দুল হান্নান মৃধা ফসলি জমির ওপর বিবিসি ইটভাটি স্থাপন করেন। কৃষকরা অভিযোগ করেন, ইটভাটা নির্মাণের পর থেকে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে আগের মতো ফসল উৎপাদন হচ্ছে না। ওই ইটভাটার ৩০০ গজের মধ্যে রায়বালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এতিমখানা ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। আইন অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা, কৃষি জমি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সেখানে ইটভাটা চালু রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় জাহাঙ্গির আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাশির উদ্দিন, কবির গাজী, শাহীন প্যাদা ও খোকন হাওলাদার প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইটভাটার কারণে জমিতে আগের মতো ফলন হচ্ছে না, গাছে ফল ধরছে না এবং শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। তারা বরগুনা জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাছে দ্রুত ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তিন দিক ঘেরা ধান খেতের মধ্যে বিবিসি ইটভাটার কার্যক্রম চালু রয়েছে।

রায়বালা গ্রামের কৃষক কবির গাজী বলেন, ‘ইটভাটার কারণে আমাদের ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগের মতো ফসল ফলছে না। পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


ফরিদপুরে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গিকার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যিনি ধানের শীষ প্রতীক পাবেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা তাকেই জিতিয়ে নেওয়ার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করব। এই নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসনে এবার ধানের শীষ প্রতীক হেরে গেলে আমরা শুধু হারবই না, চিরতরে হারিয়ে যাব। তাই আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই ধানের শীষকে সর্বশক্তি দিয়ে বিজয়ী করে আনতে হবে।

গত বুধবার রাতে শহরের হাবেলি গোপালপুরে আফজাল হোসেন খান পলাশের বাসভবন প্রাঙ্গণে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ও সংস্কারের ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় রাজপথের অকুতোভয় দুঃসাহসী নেতা হিসেবে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশকে জেলা বিএনপির পরবর্তী সভাপতি দেখতে চান বলেও নেতা-কর্মীরা জোরালো বক্তব্য দেন। তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচিতে আফজাল হোসেন খান পলাশের দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের করণীয় কী হবে, আমরা কী করব সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই সভার আয়োজন। যারা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছেন, সকলের প্রতিই কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ফরিদপুরের রাজপথে কোনো আন্দোলন হয়েছে আর আমি আফজাল হোসেন খান পলাশ ছিলাম না তা কখনোই হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দিয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় জাতীয় পর্যায়ে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন চলছিল, তেমনি ফরিদপুরেও একটা চক্রান্ত হয়েছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করে বিএনপির ধানের শীষকে বিজয়ী করব।

ফরিদপুর জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি শামীম হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবি সিদ্দিকী মিতুল, যুগ্ম আহ্বায়ক সামসুল আরেফিন সাগর, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ সালাম লাল, ফরিদপুর সুগার মিলের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুদ্দীন বিশ্বাস, জেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জোয়ার্দার, জেলা যুবদলের সহসভাপতি কেএম জাফর, মোহসিনুল কবির রুবেল, টিটু খাঁন, শ্যামসুন্দরপুর নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুতাওয়াল্লী আলহাজ ফরিদ শেখ, বিএনপির প্রবীণ নেতা আলমগীর মাস্টার, মো. রেজাউল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার খান, শাহীন হক, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর কবির, আলতাফ হোসেন, হাফিজুর রহমান রাজা, জিন্না মেম্বার, হায়দার হোসেনসহ অনুষ্ঠানে ৪৫ জন বক্তা বক্তব্য রাখেন।


রংপুরে শতকরা ২৭ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক

থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা ও বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর ব্যুরো

রংপুরে শতকরা ২৭ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। এছাড়া প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫ থেকে ৮ হাজার নতুন থ্যালাসেমিয়া রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষাসহ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করে এমন নারী-পুরুষদের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করা গেলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ যোগ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে ‘থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা ও বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প’ উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের উদ্যোগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. একরামুল হোসেন স্বপন। তথ্য-চিত্র উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি ও বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাফরুহা আক্তার। রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আলম আল আমিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন সরকার।

সেমিনারে চিকিৎসকরা জানান, থ্যালাসেমিয়ার বাহক আর থ্যালাসেমিয়ার রোগী এক নয়। বাহকের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না, তেমন কোনো চিকিৎসাও লাগে না। তবে একজন বাহক পরবর্তী প্রজন্মে রোগ বহন করতে সক্ষম। থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বিষয়ে সবাই সচেতন হলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশির ভাগ পরিবার এর চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।


টিকিট সংকটে ভোগান্তিতে শ্রীমঙ্গলের পর্যটকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় সিট সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় সপ্তাহ ১০ দিন আগেই সব টিকিট বুকিং হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘুরতে আসা পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীরা।

গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে আসেন পর্যটক আরোফিন আহমেদ। বাসে যাতায়াত করা তার জন্য অস্বস্তিকর হওয়ায় তিনি ট্রেনে ফিরতে চাইলেও গত রোববার বা সোমবারের কোনো টিকিট পাননি। শেষমেষ ভোগান্তি নিয়ে তাকে বাসে করেই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক হুমায়রা সুলতানা বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পরেও ট্রেনের কোনো টিকিট পাইনি। ছোট্ট শিশু সন্তান নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে যাত্রা করতে হয়েছে। এটি খুবই কষ্টদায়ক। দীর্ঘদিন ধরে আমরা রেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই।’

১৯১২ সালে চালু হওয়া শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন মৌলভীবাজার জেলার তিনটি উপজেলার যাত্রী ব্যবহার করে থাকেন। পাশাপাশি দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল হওয়ায় এ স্টেশনের গুরুত্ব অনেক। প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন; কিন্তু টিকিট সংকট তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ভোগান্তি।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী শ্রীমঙ্গল থেকে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা কালনী এক্সপ্রেসে ৮১টি, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে ৭০টি, পারাবত এক্সপ্রেসে ১০৫টি, উপবন এক্সপ্রেসে ৬৫টি, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ৪৭টি এবং উদয়ন এক্সপ্রেসে ৩০টি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী লিটন অধিকারী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই ঢাকায় যেতে হয়। শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে টিকিট বরাদ্দ কম থাকায় সিলেট থেকে ঢাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করি।’

রাধানগর পর্যটন কল্যান পরিষদের যুগ্ম সভাপতি তাপস দাশ বলেন, ‘বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১০০টি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসলেও ট্রেনের টিকিটের সংখ্যা এত কম যে সেগুলো ১০ দিন আগেই বুকিং হয়ে যায়। ফলে পর্যটন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প ও স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ সুবিধা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ট্রেন চালু ও সিট সংখ্যা বাড়ানোর দাবি করেন স্থানীয়রা।

পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন ফিরতি টিকিট নিয়ে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো কোটা নেই। রাত ২টার পর ঢাকা যাওয়ার ট্রেন ধরতে স্টেশনে পর্যটকদের অপেক্ষা করতে হয়, অথচ স্টেশনের টয়লেট ব্যবস্থাও নাজুক এবং ভিআইপি রুম তালাবদ্ধ থাকে। তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে নতুন ট্রেন চালুর পাশাপাশি সময়সূচি আপডেটের দাবি জানান।

শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনের মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শুক্র ও শনিবারে হাজারও পর্যটক আসেন। কিন্তু যাত্রী সংখ্যার তুলনায় বরাদ্দ টিকিট অপ্রতুল। আমাদের কিছু করার নেই। অনলাইনে আগেই টিকিট কেটে নেয় যাত্রীরা। কালোবাজারির সুযোগ নেই, কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট কাটা যায় না। তবে আমরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সিট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছি।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এই উপজেলার পর্যটন খাতের উন্নয়নের জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সার্বিক সমস্যা সমাধান, ট্রেন ও টিকিট সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।’


সরিষাবাড়ীর ৭ রেলস্টেশনের ৩টি বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস
অযত্ন-অবহেলায় বন্ধ থাকা সরিষাবাড়ীর বয়ড়া স্টেশনের মালপত্র নষ্ট হচ্ছে। ছবি দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোস্তাক আহমেদ মনির, সরিষাবাড়ী (জামালপুর)

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় নির্মিত ৭টি রেলস্টেশনের মধ্যে ৩টির সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব রেলস্টেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের সাধারণ যাত্রীদের। এছাড়া গরিবের ট্রেন খ্যাত ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস মেইল (৭৫-আপ, ৭৬-ডাউন) ট্রেনটিও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে ময়মনসিংহ-ভূঞাপুর লাইনে চলাচল করা সকল যাত্রীদের প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিক জনশূন্য, ভূতুরে পরিবেশ। স্টেশনের সব কক্ষই তালাবদ্ধ। নেই বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা। প্রতিটি রেলস্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টম্যান থাকার কথা থাকলেও এসব স্টেশনে কেউ নেই। ফলে যাত্রীদের সহায়তা করা ও টিকিট কাটার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সরিষাবাড়ী উপজেলায় আন্তঃনগর যমুনা, অগ্নীবিনা ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস (বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ), চট্টগ্রাম মেইল ৩৭ আপসহ ৩টি লোকাল ট্রেনসহ মোট ৬টি ট্রেন চলাচল করে। বন্ধ এসব রেলস্টেশনগুলোতে ২টি লোকাল ট্রেন সামান্য সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি করলেও অন্য ট্রেনগুলো যাত্রা বিরতি করে না।

এ উপজেলায় রয়েছে ৭টি রেলস্টেশন। তার মধ্যে ১৮৯৯ সালের ব্রিটিশ শাসনামলে চালু হওয়া বাউসী, বয়ড়া ও নবনির্মিত শহীদ নগর বারইপটল স্টেশনে জনবল সংকটের কারণে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে বন্ধ থাকা এসব স্টেশনে চলে ধান মাড়াই, খড় শোকানো ও চুরি, জুয়া, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। স্টেশন বন্ধ থাকায় পড়ে থাকা মূল্যবান সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। এসব রেলস্টেশন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল রেলপথে চলাচলকারী ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২০১২ সালের ৬ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জামালপুর, টাঙ্গাইলে চলাচলকারী ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি ইঞ্জিন সংকটের অজুহাতে ২০২৪ সালের ২৮ মে থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে জামালপুর এবং টাঙ্গাইলের হেমনগর, ভূঞাপুর ও ইব্রাহিমাবাদ (পূর্বের নাম বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব) রেলওয়ে স্টেশনে চলাচল করত। এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের ট্রেনের ভাড়ার থেকে ২-৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়ে অন্য যানবাহনে করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী মঞ্জুরুল ইসলাম, রিপন মণ্ডলসহ একাধিক যাত্রী বলেন, ‘ট্রেন মূলত নিম্ন আয়ের মানুষদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। ট্রেনে অন্য যানবাহনের থেকে কম ভাড়ায় যাতায়াত করা যায়। নিরাপদ ভ্রমণ হিসেবে ট্রেনে আমরা কম টাকায় যাতায়াত করি। আমাদের যাতায়াতের কষ্টের বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এই ট্রেনটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

বন্ধ থাকা নবনির্মিত শহীদ নগর বারইপটল স্টেশন এলাকার সুমন মিয়া, শাওন আহমেদ বলেন, ‘স্টেশনটি নির্মাণের পর স্টেশন মাস্টারসহ রেলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকত। বেশ মুখরিত ছিল এই স্টেশনটি। তবে স্টেশনটি উদ্বোধনের কয়েকদিন পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত রেল ভবন, কোয়ার্টার ও স্টেশনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, সরকারি আসবাবপত্র পরে পরে নষ্ট হচ্ছে।’

বন্ধ থাকা বয়ড়া স্টেশনের ব্যবসায়ী সুলতান মিয়া বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে এই বয়ড়া রেলস্টেশন ছিল। এক সময় জনপ্রিয় ও জনসমাগম ছিল প্রচুর এই বয়ড়া স্টেশনে। তখন সকল ট্রেন যাত্রাবিরতি করত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেশন বন্ধ থাকায় তালাবদ্ধ অবস্থায় পরে আছে। আগের মতো লোকও আসে না ব্যবসাও নেই।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে (ঢাকা) অতি. মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. নাজমুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, জনবল সংকটের কারণেই অনেক স্টেশন বন্ধ আছে। যমুনা সেতুর পূর্ব ইব্রাহীমাবাদ রেলস্টেশনের নির্মাণ কাজের জন্য ময়মনসিংহ থেকে চলাচলকারী ধলেশ্বরী মেইল ট্রেনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে ইব্রাহীমাবাদ রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো বন্ধ থাকা ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হবে।


যশোরের শার্শা ও বেনাপোলে শিক্ষকদের  মানববন্ধন    

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

শার্শা উপজেলার ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৬টি মাদ্রাসায় ক্লাস বর্জন করে গত সোমবার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। তারি ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন। বেনাপোলে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেব আলী বলেন, আমাদের দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবহেলিত। আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় । আমাদের যা বেতন দেওয়া হয় তা আমরা সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছি না। আমাদের সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারী ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে।

তবিবর রহমান সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আয়ুব হোসেন বলেন, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।

বেনাপোল মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক আমিনূল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের মাদ্রাসায় কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। উপজেলার সকল এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ক্লাস বন্ধ রয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) উপজেলার সব এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শাহাজান কবীর জানান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শার্শা উপজেলা ও‌ বেনাপোলের সকল এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীরা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।


banner close