নেত্রকোনায় হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কারে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সময়মতো কাজ শেষ না হলে আগাম বন্যায় কৃষকের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নেত্রকোনার সাত উপজেলার ১৩৪টি হাওরে এবারও হুমকির মুখে রয়েছে বোরো ফসল। চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কোনো কোনো স্থানে এখনো শুরুই হয়নি কার্যক্রম।
নিয়মানুযায়ী বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) কাজে সরাসরি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে যুক্ত করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নসহ তদারকিতে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলীকে সদস্যসচিব করে জেলা কমিটি করা হয়। এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সভাপতি ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একজন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। মূলত উপজেলা কমিটি প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠন করে জেলা কমিটিতে পাঠায়। পরে জেলা কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রকৃত কৃষক ও স্থানীয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে পাঁচ থেকে সাত সদস্যের একটি পিআইসি থাকে। একটি পিআইসি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার কাজ করতে পারে।
পাউবো সূত্র জানায়, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। এর আগে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন এবং ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রকল্প নির্ধারণের কাজ চূড়ান্ত হওয়ার কথা। কিন্তু পানি ধীরগতিতে নামায় প্রকল্প নির্ধারণের কাজ চূড়ান্ত করতে দেরি হয়। পিআইসি গঠিত হলেও পানির কারণে সব বাঁধের কাজ এখনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।
পাউবো নেত্রকোনা জেলা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় পাউবোর অধীন প্রায় ৩৬৫ কিলোমিটার ডুবন্ত (অস্থায়ী) বাঁধ রয়েছে। এসব বাঁধের ওপর স্থানীয় কৃষকদের প্রায় ৪২ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল নির্ভর করে। এ ফসলের ওপর নির্ভর করে কৃষকদের সারা বছরের সংসার খরচ চলে।
নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, মদন, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, আটপাড়া উপজেলায় রয়েছে ছোট বড় ১৩৪টি হাওর। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকার তুলনায় পূর্বধলা উপজেলায় পরিমাণে কম জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে খালিয়াজুরীতে ৮৯টি হাওর রয়েছে। আর এখানে রয়েছে ১৮০ কিলোমিটার ডুবন্ত অস্থায়ী বাঁধ। এর মধ্যে ১১০টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৯২ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, খালিয়াজুরী উপজেলায় ১০৮টি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, মদনের ২৫টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয় ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, মোহনগঞ্জে ২৬টি পিআইসি প্রকল্পের জন্য ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা, কলমাকান্দায় ৭টি প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, বারহাট্টায় ৯টি প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা, পূর্বধলায় ২টি প্রকল্পের জন্য ৪৫ লাখ টাকা, আটপাড়ায় একটি প্রকল্পের জন্য ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে এ বছরে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার কীর্তনখলা হাওরের একাধিক কৃষক বলেন, তারা ঋণ করে বোরোর আবাদ করছেন। বাঁধের কাজ এ বছর ঠিক সময়ে শুরু হয়নি। এ কারণে সময়মতো কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। আগাম বন্যার পানিতে ফসল নষ্ট হলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
খালিয়াজুরী হাওর রক্ষা পরিষদের সভাপতি স্বাগত সরকার শুভ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবার স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি অনেকটা কম ছিল। ফলে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলে পুরো হাওরের বোরো ফসল হুমকিতে থাকবে।
পাউবো নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘দ্রুতগতিতে কাজ হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও জানান, গত বছর জেলায় ৩৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০৬টি পিআইসি গঠন করা হয়েছিল। এ বছর বাঁধের ক্ষতি কম হওয়ায় ২৮টি পিআইসি কম করা হয়েছে। ১৫৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে গঠিত ১৭৮টি পিআইসির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। জাতীয় নির্বাচন ও তীব্র শীতের কারণে কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।
যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌ-ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটির মসজিদগুলো দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দেবেন।
গতকাল বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া তিন বাহিনী প্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ১০১ জন নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক), প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতিরা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টারা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, বাহিনীগুলোর সাবেক প্রধানরা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা, স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাদের উত্তরাধিকারীরা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহীদ সেনাসদস্যদের পত্নীরা উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস খাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিকে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ২১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটগুলো অবস্থান নোঙর করা অবস্থায় রাখা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বাংলাদেশ বেতার ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতে পরে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় চিরকুট লিখে নিখোঁজ হন জিয়াউর রহমান (৪৫) নামে স্থায়ীয় এক টেইলার্স ব্যবসায়ী। পরে তার লাশ পাওয়া গেছে পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলার মাঝপাড়া রেলওয়ে ট্র্যাকের ৯ নম্বর ব্রীজ এলাকায়।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে নিখোঁজ থাকার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ট্রেনে কাটা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জিয়াউর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া ওয়াবদা এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভাঙ্গুড়া বাজারে সেঞ্চুরি টেইলার্স নামে একটি টেইলারিং ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সকালেই দোকানে যান জিয়াউর রহমান। দুপুরে তার ছোট ছেলে মো. ইজাজ হোসেন খাবার নিয়ে দোকানে গিয়ে বাবাকে সেখানে পাননি। আশেপাশে খোঁজ নিয়েও কোনো তথ্য মেলেনি। পরে দোকানের টেবিলে ভাঁজ করে রাখা একটি কাগজে চোখ যায় তার। কাগজটি ছিল একটি চিরকুট, তাতে লেখা ছিল— ‘দোকান-সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করিলাম। কেউ দায়ী নয়’। নিচে লেখা ছিল তার নাম ও তারিখ ১৯/১১/২০২৫।
এই চিরকুট পাওয়ার পর পরিবার ও স্বজনরা চারদিকে খোঁজ চালিয়েও কোনো তথ্য পায়নি। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও শোকের ছায়া।
মৃত জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। টেইলারিংয়ের কাজ করতে সময় লাগত বেশি। এ কারণে তার ছোট ছেলে তাকে প্রায়ই বকাঝকা ও মারধর করত বলে অভিযোগ করেন তিনি। এতে তিনি আরও ভেঙে পড়েছিলেন বলে ধারণা তার।
নিখোঁজের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিকাল সোয়া ৫টার দিকে মাঝপাড়া রেলওয়ে ব্রীজ এলাকায় ট্রেনে কাটা অবস্থায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে তা দেখে পরিবার ও পুলিশ গিয়ে লাশটি জিয়াউর রহমানের বলে শনাক্ত করে।
ভাঙ্গুড়া থানার (ওসি) বলেন, জিয়াউর রহমান দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও তিনি আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন। নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছিল। তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় আটঘরিয়া থেকে তার লাশ পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি রেলপথ-সংক্রান্ত হওয়ায় লাশের তত্ত্বাবধান সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুন লেগে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরের রাখালিয়াচালা এলাকার মোতালেব ওয়ার্কশপে একটি বড় গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কাজ করার সময় লিকেজ থেকে দ্রুতগতিতে গ্যাস বেরিয়ে পাশের চায়ের দোকানে আগুনে ছড়িয়ে পড়ে। মোতালেব ওয়ার্কশপের মালিক মোতালেব হোসেন, চা দোকানদার আলী হোসেন, চায়ের দোকানে বসা সফিকুল ইসলাম ও শামীম আহমেদ, শাহিন অগ্নিদগ্ধ হয়।
ঘটনার পর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় তানহা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেখানে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানান, গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে এ দুর্ঘটনা হয়েছে দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছীতে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, পাতাখেলা ও হাড়িভাঙার খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বাউল সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার ১৯নভেম্বর বিকেল ৫ টায় উপজেলার ভান্ডারপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে গ্রামীণ এইসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করেন ৫নং কোলা ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
লাঠি খেলার পর অনুষ্ঠিত হয় পাতা খেলা, এরপর হয় হাড়ি ভাঙা। তবে পাতা খেলায় দেখা যায় এক অন্য রকম দৃশ্য। বিভিন্ন বয়সের ছেলেদের পাতা উঠে। তাদেরকে কেউ গামছা দিয়ে পাতা টানায় ব্যস্ত থাকে। এসময় প্রায় ১০ হাজার শিশুসহ নারী পুরুষ খেলাগুলো উপভোগ করেন।
কোলা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল। যিনি সদ্য ঘোষিত নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী।
শ্রমিক নেতা রিপন সরদারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকির হোসেন চৌধুরী, সহ-সভাপতি রেজাউন নবী স্যান্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান ও রবিউল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু রায়হান গিটার, সদস্য নুরুল ইসলাম, মহিলা দলের সদস্য মনিরা সুলতানা, কোলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন।
গ্রামীণ এসব খেলা দেখতে এসেছিলেন ক্ষুদে তিন শিক্ষার্থী মাহি, বৃষ্টি ও ফাতেমা। তারা আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে বলেন, আমরা খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে, ভালোভাবে উপভোগ করলাম। এরকম গ্রামীণ খেলা দেখতে সত্যিই ভালো লাগে।
স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক, সোবহান সহ অনেকে বলেন, আজ থেকে প্রায় ৫-৭ বছর আগে একবার খেলা হয়েছ। ফজলে হুদা বাবুলের উদ্যোগে আজ আবার হলো। গ্রামীণ এই খেলাগুলো দেখতে ভালো লাগে। তাই দেখতে এসেছি।
প্রধান অতিথি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, গ্রামীণ এই আদি খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রতিটি গ্রামীণ খেলার ঐতিহ্য আছে। আমি চাই গ্রামীণ খেলা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম জানুক ও দেখুক। তাই আজকের এই আয়োজন। আশাকরি দর্শকরা খুব সুন্দর ভাবে খেলাগুলো উপভোগ করেছে। আর আমি এলাকায় গ্রামীণ ভেলাগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করবো।
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা এলাকায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় আড়াই শতাব্দী প্রাচীন কাবিলা শাহী জামে মসজিদ। ১৭৮৫ ইং ১২০৬ হিজরী সালে নির্মিত এ মসজিদটি আজও ঐতিহ্য, ইতিহাস ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে এলাকাবাসীর গর্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ২০০৫ সালে পুনঃ নির্মিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাবিলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র দুই শত গজ উত্তরে অবস্থিত এই মসজিদটির কারুকাজ ও নির্মাণশৈলী দেখে যে কেউ একে প্রাচীন মুঘল স্থাপত্যকীর্তি ভেবে ভুল করতে পারে। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির চার কোণে চারটি সুউচ্চ মিনার এর সৌন্দর্যকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, কাবিল মজুমদার ও হাবিল মজুমদার নামে দু’ভাই ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী জমিদার। তারা ছিলেন অত্যন্ত সৎ, ধর্মপরায়ণ ও মানবসেবায় নিবেদিতপ্রাণ। তাঁদের দানকৃত সম্পত্তির ওপরই গড়ে ওঠে মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, বাজার ও কবরস্থানসহ বহু স্থাপনা। তাদের অন্যতম দানই আজকের কাবিলা শাহী জামে মসজিদ। মসজিদের পাশে রয়েছে বিশাল একটি দীঘি এবং ঐতিহাসিক কাবিলা শাহী কবরস্থান, যা স্থানীয় মানুষের কাছে আজও সমানভাবে গুরুত্ব বহন করে।
মসজিদের সাবেক মোয়াজ্জেম ও সাংবাদিক কাজী মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, কাবিল মজুমদারের নাম থেকেই কাবিলা শাহী মসজিদ নামকরণ। তিনি জমিদার হলেও মানুষের কল্যাণে বিপুল সম্পদ দান করেছিলেন।
কাবিল মজুমদারের এক বংশধর বলেন, আমি তাঁর বারোতম বংশধর। শুনেছি তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। মানুষের কল্যাণে এত সম্পদ দান করেছেন যে, তাঁর মৃত্যুর স্থান বা কবরের অবস্থানও নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারে না।
কালের প্রবাহে হারিয়ে গেছে কাবিল মজুমদারের জমিদারি, নেই তাঁর কোনো প্রতিকৃতি বা নির্দিষ্ট জীবনী। তবে রয়ে গেছে জনগণের কল্যাণে নির্মিত তাঁর সৃষ্টিগুলো; কাবিলা শাহী জামে মসজিদ, বাজার, কবরস্থান ও মানবতার স্মারক নানান স্থাপনা।
অন্যদিকে, অনেক চেষ্টা করেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিপুর গ্রামের ভুইয়া বাড়ির কৃতিসন্তান মো. সামছুল হক ভুইয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে দুর্ঘটনা রোধে দুই লেনের এই সড়কটি চার লেনে উন্নতীকরণ সহ ১১ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে “আর নয় সড়কে মৃত্যু, শান্তি ও নিরাপদ হোক পথচলা” স্লোগান নিয়ে নীলফামারী শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করেন টিআইবি পরিচালিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে মানববন্ধন চলাকালিন সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলমের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মেসবাহুল হক, ইয়েস গ্রুপের আহ্বায়ক তাহমিনুল হক ববী, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, জেলা ট্রাক-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আজম, পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস জেলা শাখার সভাপতি সাকিল ইসলাম, নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী প্রিয়তা সাহা, ইয়েস গ্রুপের এসিজি সমন্বয়ক মো. আব্দুল মোমিন, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু ও নাসিমা বেগম। এছাড়া সনাক, ইয়েস, অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি), গণমাধ্যম প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ নাগরিকবৃন্দ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এসময় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন ইয়েস দলনেতা ফারজানা আক্তার আরিফা।
বক্তারা আরও বলেন, সড়কপথে সুশাসনের অভাব, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাব এবং কার্যকর মনিটরিং না থাকায় দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
কুমিল্লায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন নতুন জেলা প্রশাসকস মোহাম্মদ রেজা হাসান। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্র্যাট জাফর সাদিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক রেজা হাসান। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক রেজা হাসান বলেন, আমাদের সামনে একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সেটা হলো নির্বাচন। আমি নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
এ সময় জেলা প্রশাসক রেজা হাসান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য আরো বলেন, যে বিষয়গুলো আপনারা বলেছেন তা শুধু কুমিল্লার নয়, সারাদেশেই এ সমস্যা রয়েছে। আর্থ সামাজিক, স্বাস্থ্য, বর্ডার এলাকা সব জায়গাতে এই সমস্যা রয়েছে। ভূমি, স্বাস্থ্য, যানজট ও শিক্ষা নিয়ে যে সমস্যা তুলে ধরেছেন তা আমরা নোট করেছি। কুমিল্লার সরকারি কর্মকর্তা, প্রবাসী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আমি এগুলাে সমাধান করার চেষ্টা করব।
নির্বাচন নিয়ে পূর্বের বিষয়গুলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করাসহ এবং সবার সহযোগিতা নিয়ে এবারের নির্বাচন হবে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, আপনাদের সংবাদের জন্য আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব এবং আপনারাও আমাকে সহযোগিতা করবেন। অনেক সংবাদপত্রের মধ্যে হয়তো সবার সাথে কথা বলতে পারব না, তবে চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, শহরের দূষন, যানজট, কিশোর গ্যাং, খাদ্যের বিষয়ে যে সমস্যা আছে সেগুলা আমরা সমাধান করার চেষ্টা করব। আপনাদের ও সহযোগিতা লাগবে। শহরের যে জায়গা গুলাতে যানজট হয় সে জায়গায় অটো রিকশাগুলোকে ভাগ করে দেওয়া হবে ড্রেসকোডের ভিত্তিতে।
মহাসড়কের অরাজকতার বিষয়ে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যেন নির্বিঘ্ন থাকে সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব। তবে কোন অসংগতি দেখলে আমাকে জানানোর অনুরোধ করছি। আমি আশা করি আপনাদের সহযোগিতা পাবো।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান, সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত বাবুল, আমার শহর পত্রিকার সম্পাদক গাজিউল হক সোহাগসহ কুমিল্লায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
রাঙামাটির নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাজমা আশরাফী বলেছেন, সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে জেলার উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমি রাঙামাটির মানুষের পাশে থাকতে চাই।
বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী।
এ সময় তিনি বলেন, রাঙামাটির প্রকৃতি, মানুষ ও সম্ভাবনা সবকিছুই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। সাংবাদিকরা যদি পাশে থাকেন, তবে এই জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে। আমি চাই প্রশাসন ও গণমাধ্যম একসঙ্গে কাজ করুক। সমস্যাগুলো দ্রুত জানাবেন, সমাধানে আমি আন্তরিকতার সাথে কাজ করবো। গণমাধ্যম সমাজের আয়না। আপনারা সঠিক তথ্য তুলে ধরলে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ রুহল আমীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জোবাইদা আকতার, সহকারী কমিশনার মৈত্রী রায়, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক, সহ- সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছ, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিনসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
সভায় জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে আরও বলেন, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম, জনসেবা এবং যেকোনো উদ্যোগ সম্পর্কে মানুষের কাছে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে আপনাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই রাঙামাটি উন্নয়ন ও সেবার ক্ষেত্রে একটি মডেল জেলা হিসেবে পরিচিত হোক।
উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাজমা আশরাফীকে রাঙামাটির নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
নবম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে প্রহসনের প্রতিবাদে ও ১৫ ডিসেম্বর-এর মধ্যে বৈষম্য নিরসনপূর্বক নবম গ্রেড পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মচারীরা। বুধবার প্রশাসন ভবনের সামনে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে ১১-২০ (গ্রেড) এর সব কর্মচারী অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। এতে কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেড বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ও ইবি জিয়া পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ২০ লাখ কর্মচারীরা ফ্যাসিস্টের আমলে সঠিক পে-স্কেলে বেতন পায়নি। ফ্যাসিস্ট নির্মূলের পরও একই নিয়ম চলমান রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে নবম গ্রেড পে-স্কেলে বেতন প্রদানের জন্য।’
তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সঠিক সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে আমরা সকল কর্মচারীরা সম্মিলিত হয়ে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিব। দ্রুত দাবি মেনে নেয়ার জন্য আমরা একটি স্মারকলিপি সরকারের কাছে আমাদের উপাচার্য স্যারের মাধ্যমে পৌঁছে দিব।’
চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা দখল করে দীর্ঘদিনের অঘোষিত বা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ৬০ লট পণ্যের অনলাইন নিলাম অনুষ্ঠিত হবে কাল বৃহস্পতিবার। একই দিনে শেষ হবে নিলামের আরেক সেটের ৪৯ লট পণ্যের পরিদর্শন। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রস্তাবিত মূল্য নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ৬০ লট পণ্যের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টের যন্ত্রপাতি, হেভি ডিউটি বুলডোজার, লেডার ও ভারী যন্ত্রপাতির স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন ধরনের ক্যাটারপিলার যন্ত্রাংশ, কলারড কোয়াগুলাম পাউডার, ব্যাটারি কার্বন, ডিটারজেন্ট কাঁচামাল, পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত ফ্লিস কাপড়, পলিয়েস্টার ফেব্রিক, নন–ওভেন ফেব্রিক, ফিনিশিং এজেন্ট ও টেক্সটাইল কেমিক্যাল, নন–ইউনিফর্ম চামড়া ও লেদার স্ক্র্যাপ, বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, স্টিকার, লেবেল, মার্কিং পেপার, এলুমিনাস সিমেন্ট, ডোলোমাইট লাম্পস, কাঠ ও কাঠের বোর্ড, হাইজিন আয়রনিং স্টার্চ ও হাইজিন ফ্রেশনার সলিউশন, রাবার শিট ও ফোম শিট, নেইল পলিশ, প্রসাধনী সামগ্রী, বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিক বোতল, বোতলজাত দ্রব্যের কাঁচামাল পলিপ্রোপিলিন, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত টাইটেনিয়াম ডাই–অঙাইড, জিপসাম সার, মেশিনারি পার্টস, কম্পিউটার কুলিং ইকুইপমেন্ট, এয়ার হ্যান্ডলিং ইউনিট, ওয়েস্ট এন্ড স্ক্র্যাপ মেটাল, যানবাহন সংশ্লিষ্ট মোটরসাইকেল/ কার কভার, স্পিকার, রেডিও যন্ত্রাংশ, শিশুদের খেলনা বেবি টয়স, পোশাক পণ্যে ব্যবহৃত রং, ডাই ও কেমিকেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত আরও বহু ধরনের স্ক্র্যাপ, কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসাইন বলেন, ‘আমদানিকারকরা সময়মতো পণ্য না তুললে তা ইয়ার্ডে পড়ে থাকে। নিলাম ছাড়া এসব পণ্য নিষ্পত্তির আর কার্যকর উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘এ নিলামের পাশাপাশি ৪৯ লট পণ্যের আরেকটি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ২৭ নভেম্বর। এই পণ্যগুলো প্রদর্শনের সময়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এতে কাপড়, মেশিনারির বিভিন্ন গার্মেন্টস খাতের পণ্য রাখা হয়েছে ‘
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেইনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।
আবাসিক এলাকায় রাস্তার পাশে লাইসেন্সবিহীন পুরোনো টায়ার পোড়ানোর ফ্যাক্টরি গড়ে উঠার কারণে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নরসিংদী সদর উপজেলার শালিধা এলাকায় নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের পাশে ডায়নামিক পাইরোল পাইবোলাইসিস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লি. নামে একটি পুরোনো টায়ার ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। এখানে প্রতিদিন শত শত মেট্রিক টন পুরোনো টায়ার পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাব্যাপী উন্মুক্ত স্থানে পুরোনো টায়ার জ্বালিয়ে বিটুমিন এবং পোড়া তেল তৈরি করা হচ্ছে।
ফলে এ টায়ার ফ্যাক্টরি থেকে নির্গত ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থ ও বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে এবং এ ফ্যাক্টরির পাশে প্রতিষ্ঠিত আমানত শাহ উইভিং প্রসেসিং লি. এ কর্মরত শত শত কর্মচারীসহ এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এখানকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আমানত শাহ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো. হেলাল মিয়া জানান, গত ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর পরিবেশ-বন ও জলবায়ু বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করে এবং ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কথায় বলে ‘চোর নাহি শুনে কোনো দিন ধর্মের কাহিনী’। এ ফ্যাক্টরির বেলায়ও ঠিক তেমনটি ঘটেছে। ২ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার পর এ ফ্যাক্টরির মালিক আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েছে এবং আরও বেশি করে পুরোনো টায়ার জ্বালাতে থাকে।
পরবর্তীতে মো. হেলাল মিয়া অতিষ্ঠ হয়ে ফের গত ৩ নভেম্বর নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও নরসিংদী প্রেসক্লাব বরাবর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে এ টায়ার ফ্যাক্টরিতে পুরোনো টায়ার পোড়ানোর ফলে এগুলো থেকে বিষাক্ত কার্বন মিশ্রিত স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয় যা আমানত শাহ উইভিং প্রসেসিং লি. এ কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী ও এলাকার মানুষসহ প্রাণিকুলের স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালের রাত আনুমানিক ৩টার সময় এ টায়ার ফ্যাক্টরিতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এতে করে এলাকার মানুষের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। এ ব্যাপারে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমার পক্ষ থেকে সকল প্রকার চেষ্টা করা হবে। তবে লাইসেন্স ছাড়া এ প্রতিষ্ঠানটি চলতে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ মানুষের ক্ষতি হবে এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে ডায়নামিক পাইরোল পাইবোলাইসিস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লি. এর স্বত্বাধিকারী বাবুল চন্দ্র বর্মন বলেন, আপনারা যা পারেন লেখেন, এতে আমার কিছু আসে যায় না। আমার ফ্যাক্টরি চলবে। একদিনের জন্যও বন্ধ হবে না। লাইসেন্স নবায়নের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে বাবুল চন্দ্র বলেন, আমার ফ্যাক্টরি চালাতে হলে লাইসেন্সের দরকার নেই। যদি কারও ক্ষমতা থাকে তাহলে আমার ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে বলুন।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বজলুল হুদা জানান, এ বিষয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ফ্যাক্টরি থেকে আলামত সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষা শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠানের মালিকের নিকট থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এলাকাবাসীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জরিমানা প্রদান করার পরও ফ্যাক্টরির মালিক নিয়মনীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে তার পেশিশক্তির বলে একটি ভাড়াকৃত জায়গায় পুনরায় পূর্বের ন্যায় পুরোনো টায়ার প্রজ্বলন করে আসছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানের নির্গত গ্যাসের কারণে এলাকার মানুষ শ্বাস-প্রশাসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছে এবং এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক জনস্বার্থে জনসাধারণের সৃষ্ঠ জীবন ও স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ, আবাদ যোগ্য জমি রক্ষা এবং আমানতশাহ গ্রুপের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে রক্ষিত কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও মালামাল ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষার জন্য এবং পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ মানুষের জীবন, প্রাণিকুলের স্বাস্থ্য এবং জীবন রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ অথবা এখান থেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে।
নওগাঁর রাণীনগরে আন্তঃকলেজ ফুটবল খেলা নিয়ে এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষের হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁ জেলা স্টেডিয়াম মাঠে এ কর্মসূচি পালিত হয়। নওগাঁ জেলা দল ও স্থানীয় বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলের খেলোয়াড়রা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, আত্রাই মোল্লা আজাদ কলেজের প্রভাষক শাহাদাত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, নওগাঁ জেলা দলের ফুটবল খেলোয়াড় সাজু, রায়হান, জিহাদ, সাজেদুর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নওগাঁর রাণীনগরে আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় সোমবার বিকেলে রাণীনগর উপজেলার সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ ও আত্রাই উপজেলার মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল সরকারি কলেজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই খেলায় ৩-০ গোলে সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ দলকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়ে মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ দল। খেলা শেষে ফেরার পথে রাণীনগর রেল স্টেশন এলাকায় সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের সমর্থকরা হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার সময় তিনটি ইজিবাইকও ভাঙচুর করা হয় এবং মোল্লা আজাদ কলেজের খেলোয়াড়দের ১০-১২টি মুঠোফোন ছিনতাই করা হয়।
বক্তারা বলেন, পরাজয়ের ক্ষোভ থেকে সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজের খেলোয়াড়দের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এ ধরনের ঘটতেই থাকবে। খেলোয়াড়দের ওপর হামলায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত না করে কোনো খেলার উন্নয়ন চিন্তা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক আসিফ আকবর। গত মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের খেলার মাঠগুলোর মানোন্নয়ন ও ব্যবহারযোগ্যতা বাড়াতে ৩ দিনের পরিদর্শনে নীলফামারী জেলা স্টেডিয়াম ও মিনি স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা অ্যাকাডেমির সুবিধা পাচ্ছে না, তারা স্বেচ্ছাসেবীভাবে খেলায় নিয়োজিত। আমরা চাই কোয়ালিফাইং রাউন্ড চালু হোক, নতুন টিম যুক্ত হোক, নতুন সংগঠক ও বিনিয়োগকারীর জন্ম হোক। বেসরকারি খাতকে উৎসাহ না দিলে ৪৭ সালের পরের ক্লাবগুলোর ওপর নির্ভর করে কোনো খেলার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আসিফ আকবর বলেন, নীলফামারী স্টেডিয়ামকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে খেলাধুলার উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। এখানে কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট, ঢাকার কোনো লীগ বা ন্যাশনাল খেলা না হওয়ায় এত সুন্দর একটি মাঠ ফেলে রাখার মানে নেই। এনএসসি ও ডিএফএর ফুটবল ক্যালেন্ডার মিলিয়ে মাঠ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
ফুটবল ও ক্রিকেট একই স্টেডিয়ামের আয়োজনের বিষয়ে তিনি বলেন, স্থায়ী উইকেটে ফুটবল খেললে উইকেটের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এজন্য সিনথেটিক টার্ফ বসানো হলে ফুটবল ও ক্রিকেট দুই খেলারই অসুবিধা হবে না। নীলফামারী ভেন্যুর ডরমিটরি, প্রেসবক্স, গ্যালারি, প্র্যাকটিস সুবিধাসহ জাতীয় লিগ বা বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সব সুযোগই রয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর কাছে থাকায় প্রয়োজনীয় ফ্যাসিলিটিও সহজ।
এ সময় আসিফ আকবর, উপস্থিত খুদে ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে তুলে ধরা বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত লজিস্টিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানে বিসিবি পরিচালক হাসানুজ্জামান, সদস্য সচিব আরমানুল ইসলাম, আম্পায়ার শাকির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য জহুরুল আলম, অ্যাড. আবু মো. সোয়েমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।