বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

সেনাপ্রধানের সঙ্গে মিয়ানমার সেনা প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ

সেনাপ্রধানের সঙ্গে মিয়ানমার সেনা প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ।
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ২৩:২৬

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফোঁ মিয়াত, কমান্ডার ব্যুরো অব স্পেশাল অপারেশনের নেতৃত্বে গতকাল বুধবার সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সাক্ষাৎকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল নিজ দেশের পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রেখে নিজ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে বলে জানান তারা।

এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান দুই দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়ন, উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বিষয় সংক্রান্ত যৌথ আলোচনা, প্রশিক্ষণ বিনিময়, সম্মিলিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাসঙ্গিক তথ্য বিনিময় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদে বলেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিষয়টি আঞ্চলিক সমস্যা। দীর্ঘদিন এই জনগোষ্ঠীকে স্থান দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে সৃষ্ট নিরাপত্তাঝুঁকিগুলো দূর করার লক্ষ্যে তিনি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধি নিজ দেশের প্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশের সঙ্গে মিত্রতা ও অধিকতর যোগাযোগের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদির সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এরপর প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। এ সময় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিনিময় ও মানোন্নয়নে সহযোগিতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। সন্ত্রাসীরা কোনও দেশের পক্ষেই কাজ করে না বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি দুই দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ বিনিময়ের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। সীমান্ত এলাকায় শান্তিরক্ষার জন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করবেন বলে আশা করেন তিনি।

মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে উভয় সেনাবাহিনীর সম্পর্ক আরও সূদৃঢ় হবে এবং সামরিক বিষয়াদি আরো সহজতর হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।


সিরাজগঞ্জে মোবাইল কিনে না দেওয়ায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে সিরাজগঞ্জে হালিমা খাতুন (১৬) নামের এক স্কুল ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে সদর উপজেলায় সায়দাবাদ ইউনিয়নের সারটিয়া কলেজ পাড়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহত হালিমা খাতুন সারটিয়া কলেজ পাড়া গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে ও সায়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বুধবার দুপুরে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিবারের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
পরিবারের বরাদ দিয়ে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কয়েকদিন ধরে হালিমা মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য মা-বাবাকে বার বার তাগিদ দিয়েছিলেন। মোবাইল না কিনে দেওয়ায় দুইদিন ধরে খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়েছেন হালিমা। পরে গত রাতে হালিমা খাতুন তার নিজ ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।


চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন আলোচিত সেলিম প্রধান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন বলে দাবি করেন জাপান-বংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধান। উচ্চ আদালতের রায়ে মনোনয়নপত্র ফিরে পেয়েছেন বলে তিনি সবাইকে মিষ্টিমুখ করান। বুধবার (১ মে) বিকেলে রূপগঞ্জের ভুলতা সাওঘাট এলাকায় দোয়া মাহফিল শেষে এলাকাবাসীকে মিষ্টিমুখ করিয়ে তিনি এ বক্তব্য দেন। প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, `নিম্ন আদালতে আমার মনোনয়ন পত্র আটকে দেওয়া হয়। পরে উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হতে হয়েছে। হাইকোর্টে (উচ্চ আদালতে) গেলে আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। এ কারণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে ও মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, রূপগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থী পাশ করেছে। এভাবে ভাইস চেয়ারম্যান পদ ইলেকশন থেকে সিলেকশন হয়ে গেছে। এটা জাতির সাথে ক্রিমিনালী ও ক্রাইম। এমনকি চেয়ারম্যান পদটাও তাদের সেট করা। এটা গাজী পরিবারের কাজ। গাজী পরিবার কোন কিছু ভালোভাবে চিন্তা করতে পারেনা। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন গ্রহযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার।
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নানান ধরনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। এই যে বালু হাবিব (হাবিবুর রহমান হাবিব), গাজী ও তার পরিবার এতো সাহস পায় কোথা থেকে? রূপগঞ্জবাসী আমার পরিবার। রূপগঞ্জ ওয়ান ফ্যামিলি।এই পরিবারকে মুক্ত করার জন্য আমি যুদ্ধ করতেছি। সুতরাং আমার পক্ষে রূপগঞ্জবাসীর থাকাটা তাদের ঈমানী দায়িত্ব।
পাতানো নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি যদি ইলেকশনে না আসতে পারতাম, তাহলে সবকিছু সেট করা ছিল। ভাইস চেয়ারম্যান পদ যেমন সিলেকশন হয়ে গেছে, ঠিক সেভাবে সবক্ষেত্রে তারা দুর্নীতি করে আওয়ামী লীগের বদনাম করে প্রধানমন্ত্রীর বদনাম করে।
রূপগঞ্জ থানার ওসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলে, ওসি মহোদয়কে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনি নিরপেক্ষ কাজ করবেন। আপনার অনেক কিছু আমি জানি। যদি কোন রকমের কোন কিছু আমি দেখি..।আমার কিছু বলার সুযোগ যেন না হয়। আপনি জনগণের সেবক সেটা ভুলে যাবেন না। আপনি কারও দালাল না। আপনি কারও পক্ষ নিয়ে কিছু করবেন না। আপনি জনগণের হয়ে কাজ করবেন।
মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কুশল বিনিময় করেন ও মিষ্টিমুখ করান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী সহ আরও অনেকে। এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে যাছাই বাছাই শেষে সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা এক মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাভোগের অভিযোগে তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এ ধাপে ১৬১ উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ করা হবে।


আবহাওয়ায় সুখবর, আজ রাতে বৃষ্টি হতে পারে যেসব জেলায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রায় এক মাস ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে চলেছে দেশবাসী। আজ রাত থেকেই সিলেট ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য জেলাগুলোয়ও বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার আবহাওয়া অফিস জানায়, চট্টগ্রামে বুধবার দিনগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টির ফলে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কমবে। এছাড়া একই সময়ে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায়ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি আগামী দিনগুলোতে এই বৃষ্টি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। একইসঙ্গে ধীরে ধীরে তাপপ্রবাহের তীব্রতা ও আওতা কমবে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর এবং খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে আজ চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৮ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে।


পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে মরে যাচ্ছে চা বাগান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

বৈশ্বিক তাপ প্রবাহের প্রভাব উত্তরের শীত প্রবন জেলা পঞ্চগড়েও এসে পড়েছে। বিরাজ করছে অব্যহত তাপদাহ। জেলায় প্রায় ৮ মাস ধরে কোন বৃষ্টি পাত না হওয়ায় কৃষিতে মারাত্নক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চলমান তাপদাহে মাটি শুকিয়ে মরে যাচ্ছে সমতলের চা বাগানসহ টমেটো বাদাম এবং কাঁচা মরিচের ক্ষেত।

এদিকে চা এর কাঁচা চা পাতার মূল্য কমে যাওয়ায় লোকশানের আশংকায় চা বাগানে সেচ দেয়া বন্ধ রেখেছে চাষিরা। চাষিরা বলছেন, প্রাকৃতিক এই দুর্যাগে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
শুধু পঞ্চগড় নয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদন এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তীব্র তাপদাহ আর কাঁচা চা পাতার মূল্য নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উত্তরের পাঁচ জেলার ক্ষুদ্র চা চাষিরা। তারা বলছেন, অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে হচ্ছে বেশি। অনাবৃষ্টি আর তীব্র খরতাপে মাটি শুকিয়ে লাল হয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৭ মাস ধরে এই জেলায় ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। চাষিরা বলছেন, গত বছরের ভাদ্র মাসে শেষ বৃষ্টি হয়েছিল। তারপর আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ফলে পানির স্তর অনেক নেমে গেছে। সেচের পানি জমিগুলো ধরে রাখতে পারছেনা। এ জন্য সেচ বেশি দিতে হচ্ছে। এতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। অনেক ক্ষুদ্র চাষি টাকার অভাবে বাগানে সেচ দিয়ে পানি দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় এবারে চা উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্খা করছেন চাষীরা।

তেঁতুলিয়া উপজেলার সর্দার পাড়া এলাকার চা চাষি শরিফুল ইসলাম জানান, ৪৫ দিন পর পর কাঁচা চা পাতা তুলি। এই ৪৫ দিনে আগে দু থেকে তিনবার সেচ দিয়ে পানি দিতে হতো। খরার কারণে এ বছর ৪৫ দিনেও পানি দিতে হচ্ছে অন্তত: ১০ থেকে ১২ বার। প্রতি একর চা বাগানে পানি দিতে খরচ হয় ২ হাজার টাকা। আজিজনগর এলাকার চা চাষি দেলোয়ার হোসেন জানান, অনাবৃষ্টির জন্য এক একর জমি থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার কেজি কাঁচা চা পাতা পাওয়া যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা কেনে মাত্র দশ টাকা দরে। এক একর জমি থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা পাই। সেচ খরচ, সার কিটনাশক, মুজুরীসহ এক একর জমিতে খরচ পড়ে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে চাবাগানের যত্ন নিতে পারছি না। চা বাগান মরে যাচ্ছে। সরকার আমাদের দিকে না তাকালে মাঠে মারা যাবো আমরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দীর্ঘ ৮ মাস ধরে পঞ্চগড়ে ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। তবে এই জেলায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমির হোসেন জানান, কাঁচা চা পাতার দাম কমে যাবার কারণে অনেক চাষি চা বাগানে সেচ দিচ্ছে না। তারা লোকশানের আশংকা করছেন।
পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লামনিরহাট ও দিনাজপুর) বর্তমানে নিবন্ধিত ৯টি ও অনিবন্ধিত ২১টি বড় চা-বাগান (২৫ একরের ওপরে) রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৫৩টি নিবন্ধিত ও ৬ হাজার ৩০২টি অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রায়তনের চা-বাগান আছে। বাড়ির আনাচে কানাচে ক্ষুদ্র চাষিরা চা বাগান গড়ে তুলেছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চা হচ্ছে। গত মৌসুমে পাঁচ জেলার সমতল ভূমিতে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২২৬ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। চা চাষের জন্য ২৮ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবচেয়ে সহনীয়। বর্তমানে এই এলাকায় এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে।


ঘাটাইলে দুর্বৃত্তের আগুনে জ্বলছে শাল-গজারি বন

চলছে বন দখল, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ মে, ২০২৪ ০৫:১৫
শফিকুল ইসলাম জয়, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল)

শাল-গজারির বনে ঘেরা পাহাড়ি অঞ্চলটি। এ অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা নিয়ে রয়েছে বিশাল শাল-গজারি বন। বছরের পর বছর সবুজে ঘেরা এ বনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে একটি চক্র। বন বিভাগের আওতাভুক্ত সরকারি এ বনের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলছে আগুন। বসন্তকালে শুকনো পাতা ঝরায় বনে বেশি আগুন দেখা যায়। বন বিভাগের অসাধু কর্মচারী ও মাদকসেবীরা এ আগুন লাগিয়ে দেন বলে জানা গেছে। এতে বন দখলের পাশাপাশি হুমকিতে জীববৈচিত্র্য।

সরেজমিন দেখা যায়, ধলাপাড়া রেঞ্জের সাগরদীঘি বিটের আওতাধীন কামালপুর গ্রামের ফকির মার্কেট এলাকায় দিনদুপুরে জ্বলছে বন। অন্যদিকে একই এলাকার ভূঁইয়া বাড়ি মোড়, কয়েদিসহ আশপাশে থাকা বন জ্বলছে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে। পুড়ছে বনের ছোট-বড় গাছপালা। বাতাসের কারণে মুহূর্তেই আগুন বনের গভীর থেকে গভীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বনের ভেতরে থাকা পশুপাখি বন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর এই মৌসুমে বন পোড়ে আগুনে। রাতে ও দিনে সুযোগ বুঝে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। জুয়াড়ি ও মাদকসেবীরা রাতে বন পুড়িয়ে দেয়। তবে কে বা কারা আগুন দিচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগান বন বিভাগের অসাধু কর্মচারীরা। আগুন দেওয়ার ফলে বনের ছোটগাছ পুড়ে যায়। প্রতি বছর সেখানে আগুন দিলে নতুন করে কোনো গাছ বেড়ে উঠতে পারে না। পরে বয়স্ক গাছগুলো সরকারি বিধি মেনে কাটা হয়। এরপর সেখানে টাকার বিনিময়ে ঘরবাড়ি-দোকানপাট তুলে দেন বন বিভাগের কর্মচারীরা। তবে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তাদের।

কামালপুর এলাকার বাসিন্দা মো. লাল মিয়া বলেন, ‘এই সময় এলে প্রতি বছর বনে আগুন জ্বলে। প্রভাবশালীদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে অসাধু বন কর্মকর্তারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। রাত-দিনে সুযোগ বুঝে তারা আগুন দিয়ে চলে যান। এতে বন ধ্বংস করে এখানে বাড়িঘর তুলে দিতে পারলে তাদের লাভ।’

ফকির মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মো. নায়েব আলী বলেন, বনের ভেতর গরু-ছাগল পালন করতে হয়। আগুনে ঘাস, লতা-পাতা ও কীটপতঙ্গ ধ্বংস হয়। মধ্য রাতে বেশি আগুন দেওয়া হয়। মাদকসেবী অথবা বন বিভাগের লোকজন আগুন ধরিয়ে দেন।

সাগরদীঘি বিটের দায়িত্বে থাকা বন মালী শামছুল হকের ভাষ্য, ‘খবর পেয়ে কয়েক জায়গায় আগুন নিভিয়েছি। কে কখন বনে আগুন ধরিয়ে চলে যায়, এটা ধরা খুবই কঠিন। মনে হয় নেশাগ্রস্তরা এ আগুন দিতে পারে। আগুন ধরিয়ে বন পোড়ানোর ঘটনায় বন বিভাগের কেউ জড়িত থাকার কথা না।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামন বলেন, ‘কারা বনে আগুন দিচ্ছে- তা বের করা কঠিন। খোঁজ নিয়ে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বন বিভাগের কোনো কর্মচারী বনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকলে তাদের খুঁজে বের করা হবে।’


তীব্র গরমে শিবপুরে পথচারিদের মাঝে শরবত-পানি বিতরণ

আপডেটেড ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৩৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রচন্ড গরমে মানুষ ওষ্ঠাগত। কাজের জন্য যারা বাইরে বের হতে হচ্ছে তাদের অবস্থা বেশ হাঁসফাঁস। এই যখন অবস্থা কর্মজীবী মানুষের বাইরে বের হতেই হচ্ছে। যাদের ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে তাদের প্রচুর বিশুদ্ধ পানি ও শরব খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই তো সারা দেশেই অনেকেই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের সময় সাধারণ মানুষের সেবায় জনহিতকর কাজ করছেন। নিজেদের দাঁড় করাচ্ছেন তাদের পাশে।

তেমনিভাবে নরসিংদীর শিবপুরে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে তৃষ্ণার্ত শ্রমিক, পথচারী ও সাধারণ মানুষদের মাঝে প্রশান্তি এনে দিতে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মো: মোশারফ হোসেন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে একটি মহতী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিবপুর উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: মোশারফ হোসেনের সুযোগ্য কন্যা মেট্রো ওয়াশিংটন মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহসিনা জান্নাত রিমির উদ্যোগে বিশুদ্ধ সুপেয় শরবত ও পানি বিতরণ করা হচ্ছে। তীব্র এই গরমে রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ পানির তৃষ্ণা মেটাতে আগ্রহ নিয়ে বিশুদ্ধ পানি ও শরবত পান করছেন এবং এমন সমাজ সেবামূলক উদ্যোগকে এলাকার সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানায়।


যশোরে রেকর্ড তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮

আপডেটেড ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:৪৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যশোরে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন রোববার যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ মঙ্গলবার ৪৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার পারদ উঠে। ফলে তীব্র দাবদাহে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে যশোরের সাধারণ মানুষের জীবন। বেশি বিপাকে পড়েছেন সেখানকার নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষ। ঘরের বাইরে তীব্র দাবদাহের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

শাহাজাহান আলী নামে এক ভ্যানচালক বলেন, কয়েক দিনের গরমে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। আজ আগুন ঝরছে। সড়কে লোকজন কম। আয় ইনকাম নেই। তাই গাছতলায় বসে আছি।

জালাল উদ্দিন নামে এক শরবত বিক্রেতা বলেন, গরমের কারণে বিক্রি বেড়েছে। এত গরম আগে অনুভত হয়নি। আমার বিক্রি ভালো হচ্ছে, তারপরও কবে বৃষ্টি হবে; স্বস্তি ফিরবে সেই আশায় আছি।

এদিকে আজ বিকেল ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় ২২ বছরের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে জেলার মানুষের অবস্থা হাঁসফাঁস। ঘর থেকে বের হওয়ার উপক্রম নেই বললেই চলে। তবুও একান্ত প্রয়োজনে যাদের ঘরের বাইরে যেতেই হচ্ছে তারা গরমে অস্থির হয়ে ওঠছে। অসুস্থ হচ্ছে মানুষ।


সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪৩.৭ ডিগ্রি

চুয়াডাঙ্গার শহীদ হাসান চত্ত্বর। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:৩৫
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

আগের সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে আজ। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে এই জেলার তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চু্য়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আজ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দুই দিন এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে।

বৈশাখের টানা খরতাপে জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টানা দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত এ জেলার মানুষের। দিন রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য থাকছে কম। দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরম নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে এখানকার জনজীবনে। সকাল থেকে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ।

জীবননগর বাসস্ট্যান্ডের ভ্যান চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। গরমে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। ঘন ঘন পানি পান করতে হচ্ছে। বোতলে করে পানি সাথে রাখতে হচ্ছে। গরমে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে না। তাই ভাড়াও কমে গেছে।’

জেলায় বেলা ১২ থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। দুপুরে মরুভূমির মতো তাপ অনুভূত হচ্ছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। চলমান দাবদাহে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষরা।


অবশেষে দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ

জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

২৩ জন নাবিকসহ দেশের পথে রওনা হয়েছে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দরে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর লোড করে আজ মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম বন্দরের পথে রওয়ানা দেয় জাহাজটি।

জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১২ বা ১৩ মে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজটি পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে কয়লা খালাস করে গত শনিবার সকালে মিনা সাকার বন্দরে যায় এমভি আবদুল্লাহ। সেখান থেকেই চুনাপাথর লোড করা হয়। চুনাপাথরের এ চালানটি চট্টগ্রামের কুতুবদিয়ায় খালাস করা হবে বলে জানা গেছে।

কেএসআরএম সূত্রে আরও জানা গেছে, আমদানির জন্য চুনাপাথর বোঝাই শেষ হওয়ার পর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সময় দিবাগত রাত ২টার দিকে মিনা সাকার বন্দর থেকে রওনা দেয়।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

৩২ দিন জিম্মি থাকার পর ১৩ এপ্রিল জলদস্যুদের থেকে মুক্ত হয়ে দুবাই যায় জাহাজটি। এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুইটি যুদ্ধ জাহাজের পাহারায় এমভি আবদুল্লাহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পার হয়।

বাড়তি সতর্কতা হিসেবে তখন জাহাজের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া, ডেকে হাই প্রেসার ফায়ার হোস বসানো হয়। যাতে জলদস্যুরা ফের হামলা করলে উচ্চচাপে পানি ছিটানো যায়।


ভাই এক গ্লাস পানি খেয়ে যান!

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এম এস রানা, ঠাকুরগাঁও

রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও পথচারীসহ সব তৃষ্ণার্ত মানুষকে ডেকে ডেকে পানি পান করানো হচ্ছে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে একটি মিনি বিস্কুটের প্যাকেট। প্রচণ্ড দাবদাহে খেটে খাওয়া মানুষগুলোও এক গ্লাস পানি পান করার জন্য হাসিমুখে থামছেন এবং পানি পান করে স্বস্তির দম নিচ্ছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে আব্দুল গফুর ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে ঠাকুরগাঁও রোড-পীরগঞ্জ মহাসড়কের দীঘিডাঙ্গী ভাউলারহাট মোড় এলাকায় সড়কের পাশে এভাবেই বিনা মূল্যে এমন সেবা দিচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। দাবদাহের পুরো সময়জুড়ে এভাবেই তারা সেবা দিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায় একটি টেবিলে স্বচ্ছ ঠাণ্ডা কিছু পানির বোতল, বিস্কুট, লেবু ও শরবত বানানোর যাবতীয় উপকরণ এবং কিছু স্বচ্ছ কাচের গ্লাস। শরবত ও পানি পান করাতে ব্যস্ত মাসুদ, রবিউলসহ আরও বেশ কয়েকজন যুবক। এদের মধ্যে কয়েজন তৃষ্ণার্ত মানুষকে ডাকছেন ‘ভাই আসেন এক গ্লাস পানি পান করে যান।’ মানুষগুলো আসছেন এবং তাদের বানানো শরবত পান করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।

কাঠফাটা রোদে দীর্ঘক্ষণ ধরে হাঁটছিলেন পথচারী লিয়াকত আলী। তৃষ্ণায় দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। হঠাৎ দেখলেন সড়কের পাশে পানি নিয়ে ডাকা হচ্ছে। প্রথমে তিনি পানি বিক্রির দোকান ভাবলেও পরে বুঝলেন জনকল্যাণের স্বার্থে এই দোকান। লিয়াকত আলী বলেন, ‘অর্থসংকটের কারণে কোনো বাহনে উঠিনি। রোদে একটু হেঁটেই শ্রান্ত, তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছিলাম। এখানে এসে শরবত ও পানি পান করে সত্যি খুব আরাম পেলাম।’

ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্যাডেলচালিত ভ্যানগাড়ি চালাই। গরমে খুব কষ্ট হয়। অনেক হোটেলে পানি পান করি। কিন্তু এই সড়কের পাশে তেমন কোনো হোটেল নেই। এসব স্থানে যারা পানি সরবরাহ করছেন, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

পানি সরবরাহকারী মাসুদ রহমান বলেন, ‘সারাদিন যতক্ষণ রোদের তীব্রতা থাকে ততক্ষণ আমরা পানি সরবরাহ করে থাকি। যতদিন এই গরম থাকবে আমাদের সেবা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা আছে। আমরাও কাজটি করতে পেরে তৃপ্তি পাচ্ছি।’

আব্দুল গফুর ফাউন্ডেশনের স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, এই ফাউন্ডেশন আমেরিকাপ্রবাসী তার এক পরিচিত ব্যক্তির। তাদের ইচ্ছা ও আগ্রহে এখানে এমন বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এটা মূলত সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে। মানুষজন তৃপ্তি পাচ্ছে, একটু স্বস্তি পাচ্ছে এটাই কাজের সার্থকতা। এমন উদ্যোগ এই দাবদাহে অনেকের অনেক উপকারে আসতে পারে।


৭০ ইটভাটা গিলছে পরিবেশ ও অর্থনীতি

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের রাজরামপুর গ্রামে অনুমোদন ছাড়াই চলছে ইটভাটা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মীর আনোয়ার আলী, রংপুর

কৃষিপ্রধান অঞ্চল রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা। অথচ সেই কৃষি জমিতেই কি না একের পর এক গড়ে উঠছে ইটভাটা। ফলে এসব জমি তো বটেই, এর আশপাশের জমিগুলোতেও কোনো ফসল ফলানো যাচ্ছে না বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে।

স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে একের পর এক কৃষি জমিতে গড়ে তুলেছেন ৭০টি ইটভাটা। এসব ইটভাটার অধিকাংশের নেই কোনো লাইসেন্স, নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। তবুও ভাটাগুলোতে ইট পুড়িয়ে আসছেন ওই প্রভাবশালীরা। প্রতি বছর এ ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় ঝলসে যায় কৃষকের সোনালি ফসল। তারা প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করলেও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থা। এ নিয়ে কৃষকরা এখন আর ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চান না। উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৭০ ইটভাটার মধ্যে শুধু মধুপুর ইউনিয়নের রাজরামপুর মৌজাতেই রয়েছে ২৫টি ইটভাটা।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুযায়ী, কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। ওই আইনে বলা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বনভূমি, অভয়ারণ্য, জনবসতিপূর্ণ ও আবাসিক এলাকা এবং এলজিইডি সড়ক থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে; কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে এ আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়েছেন ওই ৭০ ইটভাটার মালিক। কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ২৬০ একর কৃষি জমির ওপর ওই ৭০ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগের হাট এলাকার এসএনবি ব্রিকস নামে একটি ইটভাটায় কাঁচা ইট পোড়ানো হচ্ছে। এই ইটভাটার নেই লাইসেন্স, নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। সেখানে কাঁচা ইট পোড়াতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। জানতে চাইলে ভাটার মালিক শামসুল হক বলেন, ‘ভাই, পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছি।’

সরেজিমনে আরও ঘুরে দেখা গেছে, ওই ইটভাটা ছাড়াও নাগেরহাট এলাকায় এএসবিএল, বাংলারহাট এলাকায় এমআরএস, পাঠানের হাট এলাকায় একতা, খামারপাড়া এলাকায় সততা ব্রিকস্সহ উপজেলার অর্ধশতাধিক ইটভাটায় কাঁচা ইট পোড়ানো হচ্ছে। এসব ইটভাটায় মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে কৃষি জমি থেকে। কাঁচা টাকার প্রলোভনে পড়ে কৃষকরা কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে অনাবাদি হয়ে পড়ছে ফসলি জমি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ছোট একটি উপজেলায় ৭০টি ইটভাটা। দেশের আর কোনো উপজেলায় এত ইটভাটা আছে বলে মনে হয় না।’ তিনি বলেন, কৃষকেরা কাঁচা টাকার লোভে পড়ে ভাটা মালিকদের কাছে কৃষি জমির টপসয়েল বিক্রি করছেন। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ উপজেলার কৃষি জমি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে এবং ভবিষ্যতে এ উপজেলায় খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।

বদরগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহেববুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা প্রলোভনে পড়ে আবাদি জমির টপসয়েল (উপরিভাগ মাটি) বিক্রি করছেন; কিন্তু তারা জানেন না যে ওই মাটি কেটে নেওয়ার পর অন্তত ১০ বছর সেখানে আর স্বাভাবিক ফসল হয় না।’ দামোদরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আবু বক্কর সিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ৭টি ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকদের প্রায় জমির ক্ষেত ঝলসে যায়। ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পান না।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজির হোসেন বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। এখানকার ইটভাটাগুলোর কী অবস্থা তা এখনো জানি না। তবে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কেউ ইটভাটা চালালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


নরসিংদীতে ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালমা সুলতানা, নরসিংদী

বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে বাংলাদেশ। এ বিশাল উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে সরকারের (কর্মযজ্ঞ) বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরগুলো। এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগ।

নরসিংদী সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সজল কুমার সরকার জানান, গত সাত বছরে মোট ৯টি প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়। তার মধ্যে ২ হাজার ৯৬২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং দুটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চলতি সালের জুনের মধ্যে এ দুটি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। চলমান প্রকল্পগুলো হলো, পাঁচদোনা-ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল জেলা মহাসড়ককে একস্তর নিচু দিয়ে উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণ। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৮৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী সড়ক ও নয়াপাড়া-আড়াইহাজার-নরসিংদী-রায়পুরা দুটি আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নীতকরণ। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

শতভাগ বাস্তবায়ন হওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ঘোড়াশাল টানস্টেশন-ধলাদিয়া-পলাশ (গাবতলী)-ফুলবাড়িয়া-চরসিন্দুর মহাসড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। নব-নির্মিত জিহাসতলা-শেখেরচর মহাসড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। টঙ্গী-কালিগঞ্জ-ঘোড়াশাল-পাঁচদোনা আঞ্চলিক মহাসড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ৭২ কোটি ১০ লাখ টাকা। নয়াপাড়া-আড়াইহাজার-নরসিংদী-রায়পুরা আঞ্চলিক মহাসড়ক এতে ব্যয় হয়েছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা সড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ১২৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। মরজাল-বেলাব ও পোড়াদিয়া-বেলাব মহাসড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদি আঞ্চলিক মহাসড়ক, এতে ব্যয় হয়েছে ৫৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

বর্তমানে নরসিংদী জেলার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন পেশাগত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চৌকস প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম। তিনি ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগে যোগদান করেন। তিনি দক্ষতার সঙ্গে নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উন্নতসমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের ঘোষিত সব কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগ।

নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রত্যেকটি উন্নয়ন কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা হচ্ছে। দরপত্র গ্রহণ এবং ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে এ বিভাগের কোনো দীর্ঘসূত্রিতা নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উন্নয়ন কাজ রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এত বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল রয়েছে। যাদের মধ্যে আছেন সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা। তাই যেকোনো রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ সবার প্রথম পছন্দ।


নোয়াখালীতে নতুন আরেকটি গ্যাসকূপের খনন উদ্বোধন

প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের আশা
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ওয়াছেকপুর গ্রামে নতুন গ্যাসকূপের (বেগমগঞ্জ-৪) আনুষ্ঠানিক খনন কাজের উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কূপটির খনন কাজ শুরু করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত মার্চ মাসে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহাজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের আওতাধীন ৩ নম্বর কূপের (চর কাঁকড়া) খনন শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই কূপটি থেকে গ্যাস উত্তোলনের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা কার্যক্রম এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। শিগগিরই ওই কূপটি থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হবে। কর্মকর্তারা আশা করছেন ওই কূপ থেকেও প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্পের আওতায় এই কূপটি খনন করা হচ্ছে। বাপেক্সের প্রকৌশলী ও শ্রমিকসহ দুই শতাধিক ব্যক্তি এই খনন কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এর আগে ২২ এপ্রিল কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়েছে। ১২০ দিন চলবে এই খনন কাজ।

নতুন কূপের খনন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (খনন) প্রকৌশলী গাজী মোহাম্মদ মাহবুবুল হক, মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান ও মহাব্যবস্থাপক (ভূতাত্ত্বিক বিভাগ) শামসিয়া মুকতাদিরসহ বাপেক্সের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কূপটির ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কূপ খননের জন্য আগেই ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কূপটির চারটি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের আশা করা হচ্ছে। উত্তোলন করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
বা
পেক্স কর্মকর্তারা জানান, দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। যার অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাসের সন্ধানে প্রথম কূপ খনন করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় আরেকটি কূপ খনন করা হয়। দুটি কূপের কোনোটিতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যায়নি। পরে ২০১৩ সালে তৃতীয় আরেকটি কূপের খনন শেষে সেখানে কাঙ্ক্ষিত গ্যাস পাওয়া যায়। পরে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। ওই কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।


banner close