চট্টগ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর নালা থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার হওয়া সাত বছর বয়সী মারজানা হক বর্ষাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত লক্ষণ দাশ (৩০) নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লক্ষণ দাশ লোহাগাড়ার উত্তর পদুয়া এলাকার ফেলোরাম দাশের ছেলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে নগরীর কদম মোবারক এলাকায় উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানানো হয়।
মারজানা হক বর্ষা নগরের জামালখান লিচু বাগানের সিকদার হোটেলের পাশের গলির একটি বাসার বাসিন্দা আব্দুল হক ও ঝর্ণা বেগম দম্পতির ছয় মেয়ের মধ্যে সবার ছোট। সে স্থানীয় কুসুমকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ২৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জামালখান লিচু বাগানের সিকদার হোটেলের পাশের গলির বাসা থেকে চিপস কিনতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় মারজানা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পেয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়।
পরে পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজে তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন পেয়ে সিকদার হোটেলের পেছনে ড্রেন থেকে মারজানার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মারজানার মা ঝর্ণা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনা তদন্তে ও অপরাধী গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম গঠন করা হয়।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ড্রেনে পাওয়া বস্তাবন্দি মরদেহের বস্তা কাটার সময় নজরে আসে ওই বস্তায় টিসিবির সিল আছে। সেই সিলকে ঘিরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আশপাশের বিভিন্ন দোকান, রেস্তোরাঁ ও গোডাউনে টিসিবির সিলযুক্ত বস্তা খোঁজা হয়। একপর্যায়ে গলিতে ‘শ্যামল স্টোর’ নামের দোকানের গোডাউনে টিসিবির সিলযুক্ত একটি খালি বস্তা পাওয়া যায়। এতে ওই দোকানের মালিক ও সব কর্মচারীর বিষয়ে তথ্য ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। প্রাসঙ্গিক সব বিষয় পর্যালোচনা করে ওই দোকানের কর্মচারী খুনি লক্ষণ দাশকে শনাক্ত করা হয়। রাত দেড়টার দিকে ওই গোডাউন থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মারজানাকে খুনের কথা স্বীকার করে। জানায়, মারজানাকে বিভিন্ন সময়ে দোকান থেকে চিপস ও চকলেট কিনে দিত সে। ঘটনার দিন বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটে ১০০ টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে ডেকে গোডাউনে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা চৌকিতে বসিয়ে বিবস্ত্র করে নাক-মুখ চেপে ধরে মারজানাকে ধর্ষণ করে।
পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহটি গোডাউনে রাখা টিসিবির সিলযুক্ত বস্তায় ঢুকিয়ে রাখে। এরপর সুযোগ বুঝে গোডাউনের ডান পাশের দেয়ালের ওপর দিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একটি শ্মশান থেকে এক নারীর লাশের মাথা খুলি চুরির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি গতকাল মঙ্গলবার (২০ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের শ্মশান ঘাটে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, মৃত ওই নারীর নাম বাসু সরকার (৭০)। তিনি কামালপুর গ্রামের মৃত অধীর সরকারের স্ত্রী ছিলেন। এলাকাবাসী জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অসুস্থতার কারণে বাসু সরকারের মৃত্যু হলে তাকে কামালপুর শ্মশানে দাহ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকালে স্থানীয়রা শ্মশান ঘাটে গিয়ে বাসু সরকারের সমাধিস্থলে একটি গর্ত দেখতে পান। পরে সুরঙ্গের মতো করে খোঁড়া অংশ দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখেন, লাশের মাথার খুলি ও হাতের কয়েকটি হাড় নেই। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানানো হলে মুহূর্তেই খবরটি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহল্লা থেকে নারী-পুরুষ এসে সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন এবং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে মাথার খুলি চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।’
মঙ্গলবার ভোর থেকেই ভারী বৃষ্টি শুরু হয় সিলেটে। ভারী বৃষ্টিতে নগরের অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সকালের দিকেই তলিয়ে যায় নগরের প্রায় ২০টি এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী। অন্যদিকে সকালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং।
গত কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। ফলে জলাবদ্ধতার আতঙ্ক ছিল নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে। মঙ্গলবার সকালের বৃষ্টিতে এই আতঙ্ক বাস্তবে রূপ নেয়। পানিতে তলিয়ে যায় অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট। ঘরবাড়িতেও ঢুকে পড়ে পানি।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১০১ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এই বৃষ্টিতে নগরের উপশহর, তেররতন, সোবহানীঘাট, তালতলা, মাছুদিঘিরপাড়, ছড়ারপাড়, মণিপুরী রাজবাড়ী, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, বাবনা, স্টেশন রোডসহ অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এসব এলাকার ঘরবাড়ি ও দোকানপাটেও পানি ঢুকে যায়।
জলাবদ্ধতা সিলেট নগরীর একটি পুরোনো সমস্যা। অনেক বছর ধরে এই সমস্যায় জর্জরিত নাগরিক জীবন। সমাধানের চেষ্টা হয়েছে অনেক। খরচ হয়েছে কোটি কোটি টাকা; কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মেলেনি।
নগরের তালতলা এলাকার বাসিন্দা কায়সার আহমদ বলেন, সকালের বৃষ্টিতে আমার ঘরে পানি ঢুকে যায়। অফিস, বাচ্চাদের স্কুল বাদ দিয়ে ঘরের পানি সেচে দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবার এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইবার ঘরে পানি ঢুকল। অথচ এখনো বর্ষাকালই আসেনি।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির পর নগরবাসীর সুরক্ষায় বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে সিসিক। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, দুবছর আগের বন্যার পর সিটি করপোরেশনের নিম্নাঞ্চলগুলোর নাগরিকদের সুরক্ষায় বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ আমাদের ছিল। বিশেষ করে নদীর তীর সংরক্ষণ, সেচ প্রকল্প ইত্যাদি। তবে এগুলো এখনো আলোচনার পর্যায়েই আছে। তাই সেরকম ঢল নামলে বা অতিবৃষ্টি হলে আসলে তেমন কিছু করার নেই।
ঢলে পানির নিচে জাফলং
সিলেটের জাফলংয়ে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নেমেছে। ঢলে পিয়াইন নদীতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢল পিয়াইন নদী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এতে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকা দ্রুত প্লাবিত হয়।
নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে আশপাশের বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
অধিকাংশ পর্যটন এলাকা ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম। নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাফলং ছাড়াও গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতেও ঢল নেমেছে। এসব এলাকায় কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেট ও ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে আকস্মিক বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) গবেষণায় রাসায়নিক ও কীটনাশকমুক্ত ধান উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া গেছে।
বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল হকের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল এই সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. খাদেমুল ইসলাম।
অধ্যাপক ড. আজিজুল হক জানান, ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি-৯২, ব্রি-৩৪ ও জিরাশাইলসহ মোট ৬টি জাতের ধানের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই সফলতা পেয়েছেন। প্লান্ট অ্যান্ডোফাইটিক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারে রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে এনে দ্বিগুণ ফলনের লক্ষ্যে কাজ করছে তারা। ইতোমধ্যে কৃষিকাজে এই পদ্ধতির মাধ্যমে বেগুন ও টমেটো চাষেও সাফল্য পেয়েছে গবেষক দলটি।
কৃষক ও গবেষক সূত্র জানায়, প্রচলিত ব্রি-২৮ (বোরো) এবং ব্রি-৩৪ (আমন) জাতের ধান ব্লাস্টসহ অন্য রোগের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হওয়ায় এসব ধানে প্রায় চার থেকে ছয়বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। এমনকি ধান ঘরে তোলার ১৫ দিন আগেও ব্লাস্ট প্রতিরোধে উচ্চমাত্রায় বিষ প্রয়োগ করতে হয়। এতে ধান উৎপাদন প্রায় ২০ থেকে ৩০ ভাগ কমে যায় এবং চালের নিউট্রিয়েন্ট ফোর্টিফিকেশন ব্যাহত হয়।
এছাড়া প্রতি বছরই ইউরিয়া সার ব্যবহারে কৃষকের উৎপাদন খরচও কয়েকগুণ বাড়ছে। যা এই সার উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের ভর্তুকি ও গ্যাসের ব্যবহার বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যার সমাধানে গবেষকরা ইউরিয়া ও রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে বায়োফার্টিলাইজার ব্যবহার করে ধান চাষ শুরু করেন। গবেষকরা জানান, ধান গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিতকারী অ্যান্ডোফাইটিক ব্যাকটেরিয়া গাছের শিকড়, কাণ্ড, শাখা ও প্রশাখা বৃদ্ধির মাধ্যমে নাইট্রোজেনের বাড়তি জোগান বায়ুমণ্ডল থেকে সংগ্রহ করে। ফলে ইউরিয়া সারের প্রয়োগ ৫০ থেকে ৭০ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
গবেষকরা বলেন, এই গবেষণায় কিছু অ্যান্ডোফাইটিক ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণ তৈরি করা হয়েছে, যা অক্সিন হরমোন, এসিসি ডি-অ্যামিনেজ এনজাইম তৈরি করে। এছাড়া তারা বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন স্থিতিশীল করতে (ফিক্সেশন) সক্ষম। ওই ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগে ব্রি-২৮ ধানের উৎপাদন গড়ে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে সঙ্গে ধানের খড়ে সেলুলোজ বৃদ্ধির ফলে খড়ের শক্তি দ্বিগুণ বেড়েছে এবং আরও সবল ও সুস্থ থাকছে।
গবেষক দল কৃষকের সঙ্গে ফিল্ড ট্রায়ালের মাধ্যমে ৫০ ভাগ ইউরিয়া সার কমিয়ে, ধান রোপণের প্রথম মাসে মাত্র একবার বিষ প্রয়োগ করে ধানের উৎপাদন ৫০ থেকে ৫৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান।
প্রধান গবেষক ড. আজিজুল হক আরও জানান, ‘আমরা মূলত তিনটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছি। এগুলো হলো, রাসায়নিক ও কীটনাশকের ওপর নির্ভরতা কমানো, অধিক ফলন এবং ধানের গুণগত মান বাড়ানো। ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার কমানো হয়েছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।
এছাড়া আমরা ব্রি-৩৪ জাতের ধানের ফলন ২৫ থেকে ৩০ ভাগ পর্যন্ত বাড়াতে পেরেছি। গবেষণালব্ধ ধানের গুণগত মান অনেক ভালো হয়েছে। এতে ধানে চিটার পরিমাণ অনেক কমে আসে এবং ধানের শীষে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান পাওয়া যায়। ধান নির্ধারিত সময়ের আগেই কাটার উপযোগী হয়ে ওঠে, যা হাওড় অঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।’
শুধু যে ব্যাকটেরিয়া দিয়ে বায়োফার্টিলাইজার তৈরি হয়েছে তা নয়, গবেষক দলটি ওই ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনের নতুন কৌশল ও প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছে। ফলে এখন কৃষিজমিতে বৃহৎ পরিসরে ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগের জটিলতা অনেকটাই কমে গেছে।
ড. আজিজুলের নেতৃত্বে এ গবেষণায় সম্পৃক্ত ছিলেন যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর, শাহরিয়ার, মেহেদী ও রোকন। এতে খুব কম খরচে কৃষক নিজের বাড়িতে সহজভাবে ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে নিজের জমিতে প্রয়োগ করতে পারবেন। ড. আজিজুল হকের এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি)।
সম্প্রতি গবেষক দলের সঙ্গে সরাসরি কৃষক পর্যায়ে গবেষণা মাঠ পরিদর্শন করেছেন আইআরটি পরিচালক প্রফেসর ড. এস. এম. হারুন উর-রশিদ, কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, সহযোগী গবেষক ড. ইয়াসিন প্রধান এবং অধ্যাপক ড. শাহ মইনুর রহমান।
এ সময় আইআরটি পরিচালক প্রফেসর ড. এস. এম. হারুন উর-রশিদ বলেন, ‘আমরা সরাসরি মাঠ পরিদর্শন করে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছি। আশেপাশের জমির সঙ্গে তুলনা করে দেখেছি, যেসব জমিতে কৃষক ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করেছেন, সেগুলোর ফলন অন্য সাধারণ সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত জমির তুলনায় অনেক বেশি। আমরা কৃষকদের কাছ থেকেও খুবই সন্তোষজনক সাড়া পেয়েছি। আগামী বছর আরও কৃষক এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধান চাষে আগ্রহী হবেন।’
সূত্র: বাসস
দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ফেনীর কয়েকটি উপজেলায়। এসব এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ নলকূপে পানি নেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির নলকূপে মিলছে না সুপেয় পানি। বেশিরভাগ গভীর নলকূপে পানি উঠছে না। একই চিত্র দেখা দিয়েছে পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঁঞা ও সদর উপজেলায়। ফলে পানি সংগ্রহে বেশ দূরে ছুটছেন ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে পুকুর বা ডোবার জীবাণুযুক্ত পানি ফুটিয়ে পান করতে হচ্ছে অনেককে।
প্রায় এলাকায় পুকুর, খাল ও জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। অনাবৃষ্টির পাশাপাশি গরমের তীব্রতা বাড়ায় ভূগর্ভের পানির স্তর নেমে গভীর নলকূপেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। জেলার লক্ষাধিক নলকূপে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
‘গত দুই-তিন মাস ধরে গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছি না। পানির জন্য এলাকার লোকজন হাহাকার করছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে নলকূপ দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি করছি,’ এসব কথা বলেন ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ উদ দৌলা।
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আছমত আরা শিরি বলেন, ‘নলকূপে পানি না উঠায় আমরা পানির জন্য কষ্ট করছি। অপরদিকে নলকূপের সঙ্গে থাকা মোটরেও পানি উঠছে না। অনেক দূর থেকে পানি এনে পান করছি। ওখানেও পানি উঠছে না, দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে এক কলস পানি ভর্তি করতে হয়। নলকূপের পানির জন্য সরকার যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।’
এলাকাবাসী জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গত ৪-৫ মাস ধরে তারা কোনো গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছেন না। পুকুরের পানি ফুটিয়ে পান করা হচ্ছে।
ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল হক বলেন, ‘গত ছয় মাস বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির লেয়ার নিচে নেমে গিয়ে ফেনীর অনেক এলাকায় গভীর নলকূপে প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পৃথিবীতে কোথাও এভাবে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে না। সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার নষ্ট করে ফেলছি। অপ্রয়োজনীয় পানি তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। নলকূপের নির্ভরশীলতা থেকে ফিরে আসতে হবে। ফেনীতে দেড় লাখ নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নলকূপে পানি উঠছে না। বর্তমানে প্রতি ইউনিয়নে ৮টি করে নলকূপ বরাদ্দ রয়েছে। সামনে অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করছি।’
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। সেইসঙ্গে অসময়ে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। গত বছর নদীভাঙনের পর যেটুক ভূমি ছিল, সেটুকুও এবার ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশার দিন পার করছেন নদীপাড়ের শত শত ভাঙন-কবলিত মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলার জিগাতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জিগাতলা গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সেখানে এবার স্থানীয়রা ভুট্টা, তিল, বাদাম, বোরো ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করেছিল। এ ছাড়া রামপুর, গোপিনাথপুর, বাসুদেবকোল এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়।
গত বছরের মতো এবারও উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ীসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বারবার আশ্বাস দিলেও বাঁধের কাজ শুরু হচ্ছে না।
এদিকে প্রতিবছর বন্যায় ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা বাঁধের জিওব্যাগ আনলোড ড্রেজারগুলোর কারণে মাটি ধসে যাচ্ছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধ পাকা সড়ক, গাইড বাঁধ, বসতবাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
জিগাতলা গ্রামের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, এখান থেকে প্রতিবছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হতো। সেসময় কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে পারত না, প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দিত। সাবেক এমপি ছোট মনির খোকার মাধ্যমে ঘাটটি পরিচালনা করতেন। এখন তার খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। তা না হলে ফসলিজমির সঙ্গে তাদের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খানকে একাধিবার মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম মিয়া জানান, ভূঞাপুরের ইউএনও এসিল্যান্ডের সঙ্গে তিনি ভাঙন-কবলিত জিগাতলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদীভাঙনের স্থান থেকে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার নিকটে ঘরবাড়ি রয়েছে। সুতরাং এলাকাটি মনিটরিং করে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোরে একটি তক্ষকসহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ মে) ভোরে উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের মাটিপুকুর গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন— মাটিপুকুর গ্রামের মৃত হাসেম আলী ব্যাপারীর ছেলে করিম হোসেন (৪৮) ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মামুনুর রশিদ (৪২)।
পুলিশ জানায়, গোপন খবরে মাটিপুকুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে করিমের বাসা থেকে একটি তক্ষক উদ্ধার করা হয়।
এর আগেও করিমের বিরুদ্ধে শার্শা থানায় একই অপরাধের দায়ে একটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে থানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। আটকদের আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ওভারটেক করতে গিয়ে যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে খাদে পড়ে অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। এ সময় বাসের মধ্যে ৪০-৫০ জন যাত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের উপজেলার পূর্ব সদরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের উদ্ধার করে।
আহতরা হলেন—পটুয়াখালীর আব্দুর রশিদের ছেলে মো. সজিব (২৫), আমতলী বরগুনার পূর্বটিলা গ্রামের মো. রনির স্ত্রী সুইটি বেগম (২১), ভোলার কালপুরা থানার আটুয়া গ্রামের আলকাজ কাজীর ছেলে মিরাজ কাজী (৩২), গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী চরঘাট গ্রামের মোশাররফ।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘ইকরা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসে থাকা প্রায় ৪০-৪৫ জন যাত্রীর মধ্যে ২০-২২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।’
আহতরা ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান ওসি।
এ বিষয় ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ শেষ করেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নকশা জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে চার বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ। ভোগান্তিতে পড়েছে সোনাকাটা ইকোপার্কের পর্যটক, জেলে, বন বিভাগের লোকজন ও স্থানীয়রা। সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় খেয়ায় নদী পার হতে হয়। এতে পর্যটক সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় ট্যাংরাগিরি ইকোপার্কের কথা বলছিলাম। এটি বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার ফকির হাটে অবস্থিত। ইকো পার্কে যেতে সোনাকাটা খাল পার হতে হয়। গত ২০ বছর ধরে ওই খালে স্থানীয়রা সাঁকো নির্মাণ করে আসছেন। ওই সাঁকো দিয়ে পর্যটকরা ইকো পার্কে প্রবেশ করতেন।
২০২০-২১ অর্থ বছরে আরবিআরপি প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সোনাকাটা খালে ৭২ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দরপত্র আহবান করে। ৬ কোটি ৯৭ লাখ ৬৪ হাজার ৭১৫ টাকা ব্যয়ে কাজ পায় বরিশালের এমএস বিল্ডার্স এন্ড মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড। ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করার কথা থাকলেও তারা যথাসময়ে কাজ শুরু করেননি। ওই বছরের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন। আর ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর দুই পাড়ের গার্ডার নির্মাণ করেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, নকশা জটিলতার কারণে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রকৌশলী অফিস নকশা জটিলতার একটা ঠুনকো অজুহাত তুলে কাজ বন্ধ রাখে। বার বার উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও ঠিকাদারকে সেতুর কাজ সমাপ্তের কথা বললেও তারা করছেন না। গত চার বছর ধরে সেতু নির্মাণ না করায় ভোগান্তিতে পড়েছে পর্যটক, বন বিভাগের লোকজন ও স্থানীয়রা।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুকনো মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচ শতাধিক পর্যটক ইকো পার্কে আসত। কিন্তু সেতুর এ অবস্থার কারণে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সরকার গত চার বছর অন্তত কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। এ ছাড়া সেতুর এমন অবস্থার কারণে ইকো পার্কের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।
সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাড়ে ৪৮ মিটার গার্ডার নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝ খানের ২৪ মিটার কাজ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সড়কের নির্মাণ কাজ হয়নি।
পর্যটক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সোনাকাটা ইকো পার্কে গিয়েছিলাম। কিন্তু ভোগান্তির শেষ নেই। সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় খেয়ায় খাল পার হতে হয়েছে। তাতে তো আরো ভোগান্তি। খেয়া থাকলে মাঝি থাকে না। মাঝি থাকলে খেয়া থাকেনা।’
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মো. মহসিন বলেন, সোনাকাটা খালটি ভাড়ানি খাল না। এটা দিয়ে বড় কোনো নৌযান চলাচল করে না, করে ছোট নৌযান। এতে সেতুর মধ্যখানে উচ্চতায় কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। কিন্তু ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর নকশা জটিলতার অজুহাত তুলে চার বছর ধরে কাজ বন্ধ রেখেছেন। এতে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. টুকু সিকদার বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ মিলে গত চার বছর ধরে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছেন। কেন বন্ধ করে রেখেছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় এলাকার পর্যটক, জেলে ও বন বিভাগের লোকজনের বেশ সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত এ সেতুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তের দাবী জানান তিনি।
ফরেস্টার জাকির হোসেন বলেন, সেতুর কারণে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটকরা আসলেই সেতুর এমন অবস্থা দেখেই ইকো পার্কে প্রবেশ না করে ফিরে যাচ্ছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুচ বলেন, ওই খালে বড় কোন নৌযান চলাচল করে না। যে কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে তা কোন কারণই না। তিনি আরও বলেন, সেতু নির্মাণের নকশা অনুসারে কাজ করতে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে লিখিত দিয়েছি কিন্তু ঠিকাদার ও প্রকৌশলী অফিস কাজ শুরু করছেন না। দ্রুত সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তালতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, স্থানীয়দের বাধার কারণে নকশা জটিলতায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি আরোও বলেন, ঠিকাদার যে পরিমাণ কাজ করেছে তাকে সেই পরিমাণ বিল ছাড় দেওয়া হয়নি। তাকে অল্প বিল ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বরগুনা জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান সেতুর কাজ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি সেতু নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেছি। ওই স্থানের জন্য সেতুর বর্তমান নকশাই যথেষ্ট। আমি সেতুর বর্তমান অবস্থা জানিয়ে প্রধান প্রকৌশল অফিসকে অবহিত করেছি। সেতুটির কাজ শুরু করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। অধিদপ্তরের অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করা হবে।’
সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন ইকরামুল হাসান শাকিল। হেঁটে ৮৪ দিনে কক্সবাজার থেকে এভারেস্টের শিখরে পৌঁছান তিনি। গতকাল সোমবার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটির চূড়ায় পৌঁছে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান এ স্বপ্নবাজ তরুণ।
গতকাল দুপুরে ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে ইকরামুল হাসান শাকিলের অভিযান সমন্বয়কেরা জানান, ‘এই মাত্র খবর পেলাম শাকিল সামিট করেছে এবং সুস্থ আছে। ক্যাম্প ৪-এ নেমে এসেছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত তথ্য এখন দেয়া যাচ্ছে না।’
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ার উদ্দেশ্যে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছিলেন ইকরামুল হাসান শাকিল। তিনি এই অভিযানের নাম দিয়েছেন ‘সি টু সামিট’।
‘সি টু সামিট’ অভিযানে তিনি চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও মুন্সিগঞ্জ হয়ে ১২ দিন পর ঢাকায় পৌঁছান। রাজধানীতে কয়েক দিনের বিরতি দিয়ে তিনি আবারও হাঁটা শুরু করেন এবং গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান পঞ্চগড়ে। ২৯ মার্চ ইকরামুল হাসান বাংলাদেশ থেকে প্রবেশ করেন ভারতে। এরপর ভারতের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং হয়ে ৩১ মার্চ পৌঁছান নেপালে। প্রায় এক হাজার ৪০০ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটে গত ২৯ এপ্রিল এভারেস্ট বেজক্যাম্পে পৌঁছান ইকরামুল হাসান। এরপর কয়েক ধাপে নানা বাধা পেরিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গটির চূড়া জয় করেন এ বাংলাদেশি। এর আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পদচিহ্ন রাখেন।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পর্যটনে সমৃদ্ধ হলেও শিক্ষার আলো এখনো পুরোপুরি পৌঁছায়নি দ্বীপটিতে। এই দ্বীপেরই বাসিন্দা সালমা আক্তার। ছোট থেকেই বেশ মেধাবী এই তরুণী। তবে হঠাৎ কালো ছায়া নেমে এসেছে তার জীবনে। বন্ধ হতে বসেছে তার পড়াশোনা।
সালমা বর্তমানে কক্সবাজার সরকারি কলেজে স্নাতকে (অনার্স) অধ্যয়নরত। জেএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া এই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও থেমে যাননি। কক্সবাজার শহরে থেকে হোস্টেলে থাকতেন, চালিয়ে যাচ্ছিলেন লেখাপড়া। তবে হোস্টেলের তিন মাসের বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে বাধ্য হন সেখান থেকে সরে আসতে। ফিরে যান সেন্টমার্টিনে। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে তার পড়াশোনা।
সালমা বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম পড়ালেখা করে কিছু একটা করব, পরিবারকে তুলে ধরব। কিন্তু এখন সব অনিশ্চিত হয়ে গেছে।’ সালমার স্বপ্ন পড়াশোনা শিখে বড় হয়ে সুদিন ফেরাবেন পরিবারে। দুঃখ ঘুছাবেন বাবা-মা’র। আর কাজ করবেন সমুদ্রের লোনা জলে পোড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়নে।
দ্বীপের অধিকাংশ বাসিন্দার জীবিকা পর্যটন ও মৎস্য আহরণ কেন্দ্রিক। বর্তমানে সরকারি নির্দেশনার কারণে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন মৌসুমে (১৫ এপ্রিল থেকে) মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় আয়-রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের।
সালমার বাবা জামিল হোসেন বলেন, ‘মাছ ধরা বন্ধ, পর্যটকের কাজও নেই। আগে যা-ও কিছু করতাম, এখন তাও বন্ধ। মেয়ের পড়াশোনা আর চালাতে পারছি না।’
টানা আয় বন্ধ থাকায় চরম সংকটে পড়েছেন দ্বীপবাসীরা। এর প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর। অনেকেই পড়াশোনা বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সালমার বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা তাকে সহায়তা করার বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি।’
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সুলেমান বলেন, ‘সালমার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে আমরা চেষ্টা করছি। তার পড়াশোনা যেন বন্ধ না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেন্টমার্টিনের শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্লাসে ফিরতে চান সালমাসহ পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা। কার্যকর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দ্বীপের বাসিন্দাদের রক্ষা ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির দাবি সংশ্লিষ্টদের। যেন আর্থিক কারণে কেউ শিক্ষার আলো থেকে ছিটকে না পড়ে।
সিলেটে পরিবারের লোকজন শাসন করায় অভিমান করে ইতি দাশ (১৬) নামের এক কিশোরীর আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় মোগলাবাজার থানাধীন শিববাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ইতি সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার পলক গ্রামের হিরন দাশের মেয়ে। পরিবারের সঙ্গে শিববাড়িসংলগ্ন কিষানপুরের (সিসিকের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড) বাবুল মিয়ার কলোনিতে ভাড়া থাকত ইতির পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওড়নার দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ইতি। সোমবার সন্ধ্যায় তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পরিবারের লোকজন শাসন করার কারণে অভিমানে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
কক্সবাজারের টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধসহ তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৩০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
আটকরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইলিয়াস (৩০), নুর মোহাম্মদ (৬১) ও গুলিবিদ্ধ আব্দুল শক্কুর (৪০)। গুলিবিদ্ধ শক্কুরকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাত আড়াইটায় টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের তুলাতলী ঘাটসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে একটি সন্দেহভাজন ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকাকে থামার সংকেত দিলে পাচারকারীরা গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে কোস্ট গার্ড সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এতে এক পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় এক ঘণ্টার ধাওয়া শেষে নৌকাটি জব্দ করা হয়।
পরে নৌকায় তল্লাশি চালিয়ে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ৯ মি.মি. বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় পাচারচক্রের আরও চার সদস্য সাগরে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়।
কোস্ট গার্ড জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে স্থানীয় জেলেদের দাবি, সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আট জেলে সাগরে মাছ ধরতে যান। পরে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের একজনের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কায় স্বজনরা তুলাতলী ঘাটে ছুটে আসেন।
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, “উপকূলীয় এলাকায় মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনা করছে কোস্ট গার্ড। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। সোমবার (১৯ মে) ভোরে জেলার রাজাপাড়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ সামছু মিয়া (২৫) বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাজাপাড়া গ্রামের আব্দুল সাত্তারের ছেলে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুরের রাজাপাড়া সীমান্ত পিলার ১২১১ নম্বর দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে চোরাইপণ্য আনতে যান ৪-৫ জন চোরাকারবারী। এ সময় চিনাকান্দি বিজিবি ক্যাম্পের বিপরীতে ১৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রাজাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে শামসুল গুলিবিদ্ধ হন।
পরে সহকর্মীরা উদ্ধার তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবির অধিনায়ক একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত যুবক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পণ্য আনতে গিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’