জীবিকা চালাতে দুলাল হোসেন ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। মনের টানে দেখভাল করেন মুক্ত পাখিদের। প্রতিদিন সকাল-বিকেল নিয়ম করে পাখিদের খাবার দেন। তাই তার ডাকে ছুটে আসে গাছ-গাছালিতে থাকা পাখিরা।
দুলালের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার জোড়মল্লিকা গ্রামে। প্রায় ৫ বছর ধরে পাখিদের খাবার দিয়ে চলেছেন তিনি। জোড়মল্লিকা সেতুর পাশের একটি ঝুপড়ি ঘরে ঝালমুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেন দুলাল। বিকেল ৪টা নাগাদ বিদ্যুতের তারে এক এক করে এসে বসতে থাকে শালিক, বুলবুলি, চড়ুই, বাবুইসহ নানা পাখি। দুলাল তখন চানাচুর নিয়ে মাটিতে ছিটাতে ছিটাতে সজোরে ডাকতে থাকেন, ‘আয়রে আমার তোতা, আয়রে আমার ময়না। ভয় নাই, আমি আছি, আয়।’
তোতা-ময়নারা ডাক শুনে আর দেরি করে না। নিচে নামতে থাকে ঝাঁকে ঝাঁকে। এ যেন পোষ মানানো পাখি। তারা পরম মমতায়, আতিথেয়তায় আপনজন করে নিয়েছে ঝালমুড়ি বিক্রেতা দুলালকে।
পাখিপ্রেমী দুলাল হোসেন জানান, পাঁচ বছর ধরে তিনি এভাবেই পাখিদের খাবার দেন। প্রথমে একটা দুইটা করে পাখি আসত। এখন শত শত পাখি আসে। চানাচুর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও প্রতিদিন খাবার কিনে ছিটিয়ে দেন। ভিটা-মাটি কিছুই নেই তার। পাখিরা তার কাছে সন্তানের মতো।
দুলাল হোসেন বলেন, ‘পাখিগুলো না খেলে আমার বুকের ভেতর কেমন যেন করে এবং অস্থির লাগে। আমি দূরে কোথাও গেলে টাকা দিয়ে লোকজন রেখে যাই। যেন কেউ পাখিদের ক্ষতি করতে না পারে। প্রতিদিনি সকাল ৬টা আর বিকেল ৪টার দিকে পাখিরা দল বেঁধে খেতে আসে। এখানকার পাখিরা চানাচুর ছাড়া কিছুই খায় না। পাখিদের দিকে কেউ ঢিল ছুড়ে মারলে মনে হয়, আমার শরীরে ঢিল মেরেছে। এই এলাকায় আমি পাখিদের দেখে রাখি। তাদের অনিষ্ট যাতে কেউ করতে না পারে, সেদিকে সব সময় নজর রাখি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, পাখির সঙ্গে দুলাল হোসেনের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। পাখিরা তাকে অনুসরণ করে। তিনি পাখিদের খাবার দেন এবং যত্ন নেন। ঝড়ে বাসা ভেঙে গেলে পাখির বাচ্চা নিয়ে বাড়িতে রেখে তিনি সেবাযত্ন করে সুস্থ করে আকাশে উড়িয়ে দেন। তিনি ডাক দিলেই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা চলে আসে।
স্কুলছাত্রী সুমাইয়া খাতুন জানায়, একজন মানুষ ডাকলেই পাখিরা চলে আসে, এই দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগে। তার স্কুল থেকে বন্ধু-বান্ধবরা মিলে পাখিগুলো দেখতে আসে।
রবিন খান নামে একজন জানান, জোড়মল্লিকা গ্রামটাই দুলাল হোসেনের জন্য পরিচিত হয়ে উঠছে। তার এই কাজে উৎসাহ দেয়া উচিত।
চলনবিল পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, পাখিদের খাওয়ানোর মাঝে আনন্দ পান ঝালমুড়ি বিক্রেতা দুলাল। জীবনের নানা পথ-ঘাট পেরিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রেতা তার আনন্দ-উচ্ছ্বাস এই পাখিদের ঘিরে। দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত থাকলেও তার পাখিপ্রেম বেশ ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। পাখির সঙ্গে অভিনব এমন ভালোবাসার খবর এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে।
নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হয়েও দুলাল হোসেন পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের খাবার দিচ্ছেন। তার এই পাখিপ্রেম জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সমাজের বিত্তশালীরা পাখির খাবার সংস্থানে দুলাল হোসেনকে সহযোগিতা করতে পারেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাখিদের খাবারের জন্য অর্থ দেয়া হবে।
রাজশাহীর কৃষকদের মুখে এখন হাসি। শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। মাঠে মিলছে ভালো ফলন, আর বাজারেও মিলছে ভালো দাম। বরেন্দ্র অঞ্চলসহ জেলার সর্বত্রই চাষিরা ধান বিক্রি করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে মাঠে ফলন হচ্ছে আশানুরূপ। কৃষকরা গড়ে প্রতি বিঘায় পাচ্ছেন ২৪ থেকে ২৫ মণ ধান। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় বেশ লাভজনক।
কৃষকরা এখন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাত ‘বিআর-২৮’ ও স্থানীয় ‘জিরা’ কাটছে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য জাতের ধানও কাটতে শুরু করবে।
তানোর উপজেলার ধানতৈড় গ্রামের কৃষক আফসা আলী (৪৮) জানান, ‘আমি দুই বিঘা জমি থেকে ৪০ মণ ধান পেয়েছি। নিজের জমিতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা, আর বর্গা জমিতে ২৫ হাজার।’ তিনি আরও জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকলে খরচ বেড়ে যায়।
আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘এক বিঘা থেকে ২৫ মণ ধান পেয়েছি। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি ফলন। আগামী তিন দিনের মধ্যে আরও সাত বিঘার ধান কাটব।’ তিনি আরও জানান, পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজা ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
গোদাগাড়ী, পবা ও বাঘা উপজেলার চরের জমিতেও এবার বোরো চাষ হয়েছে। মোট ১ হাজার ৭৬২ হেক্টর চরের জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে আশানুরূপ।
পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামের মিরশাদ আলী বলেন, ‘চরের মাটিতে আলাদাভাবে সার দিতে হয়নি। তাই খরচও কমেছে।’
চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের ইসমান গণি বলেন, ‘চরের জমিতে এবার বোরোর ফলন বেশি হয়েছে। অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার বলেন, ‘আবহাওয়া ও সরকারি সহায়তার কারণে এবার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা সন্তুষ্ট।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা শুক্রবার বাসসকে জানান, ৮ মে পর্যন্ত জেলার ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের কৃষক সামাদুল ইসলাম ব্রি-৯২ জাতের ধান চাষ করে প্রতি হেক্টরে ৮.৮ টন ধান পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেক ভালো ফলন।’
একই উপজেলার হাতিবান্ধা গ্রামের জাকির হোসেন জানান, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের কারণে আগের মৌসুমগুলোতে দাম ভালো পেয়েছেন। এ জন্য এবার অনেকে বেশি জমিতে বোরো চাষ করেছেন।
তানোর উপজেলার গুবিরপাড়া গ্রামের আবু রহমান বলেন, ‘গতবার আমন-এ ভালো দাম পেয়েছিলাম। এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো করেছি। ফলন ও দাম দুটোই ভালো।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন-অর-রশিদ জানান, রাজশাহীর জন্য উপযোগী ১৪টি বোরো জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৫০ রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাত, ব্রি-৫৮ উচ্চ ফলনশীল এবং ব্রি-৮৪ আয়রন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আধুনিক জাতের ধানের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এটি ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
সূত্র: বাসস
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে ফসলি জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করেছে প্রভাবশালী চক্র। এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেলে ইটভাটার মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজ ছাত্র। এ ঘটনায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে জামালপুর-কোলারহাট সড়কের বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া বৃমাগুরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশেই ইটভাটার অফিস ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কয়েকজন মিস্ত্রি ঘর নির্মাণ কাজে ব্যস্ত। বিভিন্ন ফসলের মধ্যে ইট ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি সংগ্রহ করে ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন দেশি তৈরি যানবাহনে করে এনে স্তূপ তৈরি করা হচ্ছে। ওই এলাকার সড়কে এখন ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ফসলি জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রভাবশালীদের চাপাচাপির কারণে অনেক জমির মালিক লিজ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ওই এলাকার সব ফসলের মাঠের ক্ষতি হবে। এরই মধ্যে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার সময় উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামের পরিতোষ সরকরের ছেলে কলেজ ছাত্র সজীব সরকার প্রণয় তার কাকা রমা প্রসাদ সরকারের বৌভাত অনুষ্ঠানের প্লাস্টিকের গ্লাস আনার জন্য বাড়ি থেকে জামালপুর বাজারে যাচ্ছিলেন। নলিয়া মেলার সামনে পৌঁছালে নির্মাণাধীন ওই ইট ভাটার মাটি বোঝাই ট্রাক্টর বৃমাগুরা নতুন ভাটায় মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী সজীব সরকার প্রণয় ঘটনাস্থলেই মারা যান। এতে লাশ ফেলেই যেন ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হলো। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ইটভাটার কাজে থাকা মিস্ত্রিরা বলেন, এই ইটভাটাটি করছেন বালিয়াকান্দির আব্দুল জলিল।
জলিলের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখনো ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করি নাই। অফিস ঘর নির্মাণ ও মাটি আনা হচ্ছে।’ ফসলি জমিতে ইটভাটা করার কোনো অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি অফিসে খোঁজ নিতে বলে ফোন কেটে দেন।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের তদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে কেউ কোনো আবেদন করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজবাড়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হারুন-অর রশীদ বলেন, ইটভাটা নির্মাণকারী কেউ আমাদের কাছে আবেদন করেনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে জমি দখল, লুটপাট ও চাঁদাবাজিতে অন্যতম অবস্থানে রুহুল কুদ্দুস ও মিনু বাহিনী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তেলবাজি, দালালি করত বিএনপি নেতা বনে যাওয়া রুহুল কুদ্দুস। চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার আপন সহোদর আমিনুর রহমান মিনুর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। অভিযোগ আছে, ওই চক্রটির বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই বেধড়ক মারপিট, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এমনকি তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে থাকে। রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর রয়েছে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সক্রিয় সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা দুইজন, এদের মধ্যে একজন আশাশুনি আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস এবং অপর ব্যক্তি রুহুল কুদ্দুসের আপন ভাই কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-যোগাযোগ সম্পাদক আমিনুর রহমান মিনু।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে রুহুল কুদ্দুস আমিনুর রহমান মিনু, মমিনুর রহমান মন্টু, খোরশেদ আলম, মফিজুল ইসলাম, শামীম মোস্তফা শুভসহ তাদের সঙ্গপাঙ্গদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব। আশাশুনি উপজেলার ৯ নং আনুলিয়া ইউনিয়নের মাধ্যম একসরা গ্রামের প্রয়াত আবু দাউদ সানার ছেলে সাদ্দাম সানা বলেন, ‘৫ আগস্টের পরের দিন ৬ আগস্ট রাতে আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার বাহিনী আমার মৎস্য ঘেরে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালায়।’ ভুক্তভোগী সাদ্দাম সানা বলেন, ‘রুহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যানের ঘেরের পাশে আমার মৎস্য ঘের। রুহুল কুদ্দুস দাঁড়িয়ে থেকে তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে আমার ঘেরের ভেড়ি কেটে দিয়ে দখলে নেয়।’
সাদ্দাম সানা বলেন, রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই আমিনুর রহমান মিনুকে অনেক অনুনয়-বিনয় করেও আমার মৎস্য ঘের ফেরত পাইনি। আমার রেকর্ডীয় ৫ বিঘা ১০ কাঠা জমি অবৈধভাবে ভোগ দখল করছে রহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় প্রশাসনের সহযোগিতাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নাংলা গ্রামের মো. আব্দুল সানার ছেলে আকবর সানা মাঝি বলেন, ৫ আগস্টের পর রুহুল কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর ইন্ধনে তাদের সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালায়। এ সময় দোকানের তালা ভেঙে আনুমানিক ৩ লাখ টাকার শ্যালো মেশিনসহ মেশিনের পার্টসের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। একই সময় আমার ভাই আক্তার সানার দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে আড়াই লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
আশাশুনি, আনুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ একসরা গ্রামের রোকনুজ্জামান মোল্যা বলেন, ‘আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে মান্নান মোল্যা, সুমন মোল্যা, খোরশেদ শিকারীসহ সন্ত্রাসী বাহিনী জোর করে মৎস্য ঘেরে লুটপাট চালিয়ে ৩ লাখ টাকার মাছ ধরে নেয়। ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মোল্যা জানান, আশাশুনি থানাধীন একসরা মৌজায় জেএল নং-১৪১, সাবেক ৫১ নং, হাল ৬৩, এসএ দাগ ১৫৫৩/১৫৯৫ নং ও আমার ডিসিআর ২২/৮৫, আরএস ২৮৪১, ২৮৪২, ২৮৪৩, ২৮৪৪ ও ২৮৪৫ দাগে আমার ডিসিআরকৃত ০.৮৮ একর এবং রেকর্ডীয় ১.৪২ একর সর্বমোট ২.৩০ একর জমির একটি মৎস্য ঘের ছিল। যা আমি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করার একপর্যায়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২৫ তারিখ সকাল ৯টায় রুহুল কুদ্দুস ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার মৎস্য ঘেরে প্রবেশ করে জোর করে মাছ লুটপাট করে এবং আমার জমি দখলে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মোল্যা গত ২০ এপ্রিল ২৫ তারিখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার, খুলনা বিভাগের ডিআইজি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সাতক্ষীরা সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পসহ সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এদিকে ৫ জানুয়ারি ২০২২ সালে আশাশুনি ৯ নং আনুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন রুহুল কুদ্দুস। তৎকালীন সময় রুহুল কুদ্দুস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে জনসম্মুখে একটি ভাষণ দেন। সেই ভাষণের একটি ভিডিওতে রুহুল কুদ্দুসকে বলতে শোনা যায়, এই নৌকা বঙ্গবন্ধুর নৌকা, এই নৌকা শেখ হাসিনার নৌকা, স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতীক নৌকা। এর আগে রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর ভয়াবহ সন্ত্রাসী তাণ্ডবের শিকার হন ভুক্তভোগী আনুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রফি মেম্বারসহ একাধিক ব্যক্তি। ৫ আগস্টের পর রফি মেম্বারের দুটি মৎস্য ঘের লুটপাট ও দখল করার ঘটনায় বিভিন্ন মিডিয়ায় কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উন্মোচন করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা রফি মেম্বারকে বেধড়ক মারপিট করে। আশাশুনি উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, রহুল কুদ্দুস একজন সুবিধাবাদী ব্যক্তি। নিজ স্বার্থ ও চরিতার্থ হাসিলের জন্য সে যা খুশি তাই করে থাকে।
ফোনে আলাপকালে রুহুল কুদ্দুস তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-যোগাযোগ সম্পাদক আমিনুর রহমান মিনু বলেন, এসব ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বিএনপি সরকারের সময় কিছু এনজিও গণগ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বিএনপির দাবি অনুসারে বিগত সরকারের আমলে ৬০ লাখ গায়েবি মামলা হয়েছে। এর ৯৯ শতাংশই বাদী পুলিশ। এখনো গায়েবি মামলা হচ্ছে, মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে অবস্থানরতদেরও আসামি করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত পিআইএল পর্যালোচনা কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কিছু কিছু বিএনপির নাম দিয়ে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে এ মামলাগুলো হচ্ছে। এখন এনজিওগুলো কথা বলছে না কেন।
তিনি বলেন, গত ৯ মাসে পুলিশ একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেনি। কয়েক বছর ধরে যে গুমের সংস্কৃতি ছিল, বর্তমান সরকার আসার পর একটিও গুমের ঘটনা ঘটেনি।
দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক বছরে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেক এনজিও এবং এনজিও ব্যক্তিত্ব আছেন, তারা কথা বলেন; কিন্তু সোচ্চার হন না। সুতরাং এ সমাজ পরিবর্তনের জন্য যে দায়বদ্ধতা প্রয়োজন, তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
শুক্রবার শুরু হওয়া এ কর্মশালায় আজ সমাপনী দিনে সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিচারপতি আয়নুন নাহার সিদ্দিকা, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও বেলার প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) তাসলিমা ইসলাম। এ কর্মশালার আয়োজন করে বেলা ও এএলআরডি।
১০৬৮টি সংখ্যালঘুর ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
গত ৫ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত হামলার শিকার হয়েছে এক হাজার ৬৮টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে ৫০৬টি স্থাপনার মালিক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৯টি জেলায় আক্রমণ হয়েছে এবং ৩ জেলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে। নিহত হয়েছেন দু’জন সংখ্যালঘু।
কর্মশালায় এএলআরডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ সিরাজীর উপস্থাপন করা প্রবন্ধে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কর্মশালায় সরকারি আইন কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নারীকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার খবরটি ভুয়া বলে সনাক্ত করেছে প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানে সনাক্ত হয়, ‘মনিষা রাণী পাল নামের হিন্দু তরুণীর ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে ২০২২ সালে প্রেমের টানে হিন্দু থেকে স্বেচ্ছায় মুসলমান হন এই নারী। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তাঁর নাম হয় রোদেলা জান্নাত। সে সময় ধর্মান্তরিত হওয়ার এফিডেভিটে উল্লেখিত তথ্যানুযায়ী এই তরুণীর বয়স ছিল আনুমানিক ২০ বছর। ‘বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানে সনাক্ত হয় যে জোরপূর্বক নারীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার খবরটি ভুয়া।
বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।
সম্প্রতি ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেরও গুজব এবং ভুয়া খবর প্রচার সনাক্ত করা হচ্ছে।
সাভারে গবাদিপশুর পুষ্টিকর খাদ্য তৈরির কারখানা টোটাল মিক্সড রেশন (টিএমআর) এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
এসময় ডাকাতদের বাধা দিতে গেলে দুই আনসার সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ডাকাত দল। লুটে নেয় ৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল।
রবিবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলমা এলাকায় গবাদিপশুর পুষ্টিকর খাদ্য তৈরির টিএমআর কারখানায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টিএমআর কারখানাটির প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, এদিন ভোররাতে কারখানাটিতে বিশ থেকে বাইশ সদস্যের একদল মুখোশধারী ডাকাত অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কারখানার দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে সিসিটিভি ক্যামেরা, ক্যাবল, জেনারেটরের ব্যাটারি ও অন্যান্য তারসহ প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তাদেরকে বাধা দেওয়ায় ডাকাতরা দুই আনসার সদস্যকে পিটিয়ে আহত করে।
এব্যপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুয়েল মিঞা বলেন, ডাকাতির কোনো খবর এখনও পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে স্থানীয় এক কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিন জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (১১ মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন—ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের প্রয়াত আফসার উদ্দিনের ছেলে ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগর ইউনিয়নের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের হাজারীনগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সফু মিয়ার ছেলে কবির হোসেন (১৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়া বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাওরে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে, ফয়সাল বাড়ির পাশের জমিতে খড় আনতে গিয়ে ও কবির হোসেন জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
নিহত কবির ভৈরবের হাজী আসমত কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা জুঁই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বজ্রপাতে ৩ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার জেলায় পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় তিন ছাত্রীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জেলার পাকুন্দিয়ায় তিন স্কুলছাত্রী এবং মিঠামইনে এক কৃষক রয়েছেন।
পাকুন্দিয়ায় বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরটেকী গ্রামে বজ্রপাতে তিন ছাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতরা হলেন- ফারিয়া জান্নাত ইরিনা (১৫), আদ্রিতা ইসলাম প্রিয়া (১৫) ও বর্ষা (১৫)।
তিনজনই চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুর ১টার থেকে বিদ্যালয়ে তাদের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ভৈরবে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সিএনজি চালকদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এসময় ভৈরব -কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের ঘণ্টাব্যাপী অবরোধের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সহ তীব্র যানজটে সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা ।
রোববার বেলা ১ টার দিকে ভৈরব হাইওয়ে থানার সামনে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে রাখেন সিএনজি চালকরা।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ভৈরব - কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন প্রতিবাদ করেন কয়েকশত সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। এসময় চালকরা এক ঘণ্টা যাবত সড়ক বন্ধ করে রাখে। এসময় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানবাহনে সারি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী। পরবর্তীতে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও ভৈরব সার্কেল অফিসে এএসপি নাজমুস সাকিবের নেতৃত্বে একটি পুলিশের দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। চালকদের হয়রানি ও সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
এসময় সিএনজি চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সড়কে সিএনজি গাড়ি চালিয়ে যা ইনকাম করি তা দিয়েই আমাদের কোন রকম সংসার চালাই। ইদানীং সড়কে পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকিয়ে বড় অঙ্কের জরিমানা করেন। যদি তাদেরকে ১ হাজার টাকা দেয়া হয় তাহলে তারা গাড়ি ছেড়ে দেয়। এইভাবে প্রতিদিনই সড়কে আমাদের হয়রানি করছে হাইওয়ে পুলিশ। আমাদের অনেকের গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই সেইগুলি ঠিক করতে অনেক দিন সময় লাগবে। সেই সময়টায় পুলিশ আমাদের দেয় না। সারাদিন যা ইনকাম করি তা সব টাকাই পুলিশকেই দিয়ে দিতে হয়। এখন এসব হয়রানি ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে আমরা সড়কে নেমেছি।
আরেক সিএনজি চালক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, হাইওয়ে থানার পুলিশ ফ্যাসিস্ট সরকারের কতিপয় দালাল লোকের মাধ্যমে সিন্ডিকেট তৈরি করে সড়কে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও হয়রানি করছে। তারা সড়কে গাড়ি পেলেই কোন কারণ ছাড়াই মামলা দিয়ে দেয়। আমরা চাই যেসকল গাড়ির সঠিক কাগজপত্র নেই সেসকল গাড়ির কাগজপত্র ঠিক করার জন্য পুলিশ চালকদের সময় দেয়। ধরেই যেন মামলা দিয়ে হয়রানি না করে।
ভৈরব হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.সাহাবুর রহমান বলেন, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। তবুও বর্তমান পরিস্থিতিতে সড়কে কিছু সিএনজি চলাচল করছে। এসব বিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে সড়কে কোন সিএনজি চালকদের কোন ধরনের চাঁদাবাজি ও হয়রানি করা হয় না। আইন অনুযায়ী পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব সার্কেল অফিসের এএসপি নাজমুস সাকিব জানান, ভৈরব -কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকসার চালকরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে আমরা সড়কের অবরোধ তুলে নিতে চালকদের সাথে আলোচনা করে যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়। পরবর্তীতে চালকরা সড়কে চাঁদাবাজি ও পুলিশের হয়রানি বন্ধের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
চাকরিবিধি না মানায় জেলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একইসাথে নিরাপত্তার স্বার্থে চাকরিচ্যুতদের রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিনসিটি বহুতল আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে রুপপুর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রূপপুর প্রকল্প পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে এ অব্যাহতি প্রদানের কথা জানানো হয়। পরে কোম্পানির প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারীকে বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে শনিবার (১০ মে) পর্যন্ত ই-মেইল বার্তাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলেও এ অব্যাহতির বিষয়ে অবহিত করা হয়।
অব্যাহতি পত্রে বলা হয়, ‘এনপিসিবিএল কোম্পানিতে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এনপিসিবিএল এর চাকুরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আপনারা নোটিশ পেমেন্ট বাবদ তিন মাসের বেতন-ভাতা পাবেন।’
নিরাপত্তার স্বার্থে চাকরিচ্যুত ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রুপপুর প্রকল্প এলাকায় ও গ্রিনসিটিতে প্রবেশ বন্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে ।
ড. মো. জাহেদুল হাছান বলেন, চাকরিবিধি না মানায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কোম্পানির ১৮জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাইড ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত অথরিটির প্রধানকে অবহিত করা হয়েছে। তিনিও বিষয়টি জেনেছেন।
এর আগে এই কর্মকর্তা কর্মচারীরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২৮ এপ্রিল থেকে পাবনার ঈশ্বরদীতে আন্দোলন শুরু করে। মঙ্গলবার ঈশ্বরদী শহরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে। পরদিন বুধবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ভেতরে কোম্পানির অফিসে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে। তারপরেই কর্তৃপক্ষ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহিতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর-কাঠালিয়া সড়কের বাজে সিন্ধুক খালের নড়বড়ে আয়রণ সেতুটি কোনো কারন ছাড়াই ভেঙ্গে পড়েছে। গতকাল ১০ মে শনিবার সন্ধ্যায় সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয়রা এর আগেই সেতুর নড়বড়ে অবস্থা দেখে গত ২৫ এপ্রিল স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুর পাশে বাঁধ নির্মাণ শুরু করছেন। বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ না হতেই শনিবার সন্ধ্যায় সেতু ভেঙ্গে পরেছে। এতে ছয়টি ইউনিয়নসহ আমতলী, কলাপাড়া ও গলাচিপা উপজেলার অন্তত এক লাখ মানুষের চলাচলে কষ্ট হবে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর- কাঠালিয়া সড়কের বাজে সিন্ধুক খালে ২০১০ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ কোটি টাকা ব্যয়ে আয়রণ সেতু নির্মাণ করে। তৎকালীন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম মৃধা ওই সেতু নির্মাণ করেন। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদার সেতু নির্মাণ করায় পাঁচ বছরের মাথায় বীম ভেঙ্গে সেতু নডবড়ে হয়ে যায়। গত ১০ বছর ওই নড়বড়ে সেতু দিয়ে আমতলী, কলাপাড়া ও গলাচিপা উপজেলাসহ ছয় ইউনিয়নের অন্তত এক লাখ মানুষ ও যানবাহন চলাচল করেছে। বর্তমানে ওই সেতুটি চলাচলের সম্পুর্ন অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সেতু নির্মাণে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে মানুষ ও যানবাহনের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে স্থানীয়রা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে গত ২৫ এপ্রিল স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুর পাশের খালে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গত ১৫ দিন ধরে ওই সেতুর পাশে বাঁধ নির্মাণ কাজ করে স্থানীয়রা। কাজ শেষ না হতেই শনিবার সন্ধ্যায় সেতু ভেঙ্গে পরেছে।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু সালেহ বলেন, স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে বাজে সিন্ধুক খালে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। গত ১৫ দিন ধরে কাজ চলছে। কাজ শেষ হতে না হতেই সেতু ভেঙ্গে পরেছে। এতে লাখো মানুষ ও যানবহানের চলাচলে কষ্ট হবে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাহবুবুল আলম মৃধা বলেন, ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা ২০১০ সালে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বাজে সিন্ধুক খালে আয়রণ সেতু নির্মাণ করেছেন। গত পাঁচ বছর আগে ওই সেতু অত্যন্ত ঝুকিপুর্ণ হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ চিহিৃত করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতো। ওই সেতু চলাচলের একেবারেই অনুপোযোগী হয়ে যায় , যার ফলে গত ১৫ দিন ধরে এলাকাবাসী সেতুর পাশে বাঁধ নির্মাণ করছিল। কাজ শেষ না হতেই সেতু ভেঙ্গে পরেছে। ওই খালে সরকারীভাবে গার্ডার সেতু নির্মাণের দাবী জানান তিনি।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মোঃ ইদ্রিস আলী বলেন, সেতু ভেঙ্গে পরার খবর পেয়েছি। আগেই ওই সেতু ঝুকিপুর্ণ ছিল। ওই খালে গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প পাশ হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে ।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
রবিবার (১১ মে) সারা দেশের সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ চমকানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া, রাজধানী ঢাকাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরের ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ (রবিবার) দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। ঢাকার আকাশ এ সময় পরিষ্কার থাকবে। পাশাপাশি পশ্চিম অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। তবে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে গতকাল (শনিবার) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন চাঁদপুরে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) বেলা ১১টার পর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া পয়েন্টম্যান নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তা।
এর আগে, গতকাল (শুক্রবার) দিবাগত রাত ৯টার পরপর পয়েন্টম্যানের ভুল সিগন্যাল দেওয়ার কারণে ঢাকা থেকে খুলনা গামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি ভাঙ্গার বামনকান্দা জংশন এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বেনাপোল ও ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়লেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
লাইনচ্যুত ট্রেনটিকে উদ্ধারে ঈশ্বরদী ও খুলনা থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন নিয়ে এসে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন।
ভাঙ্গা জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সুমন বাড়ৈ জানান, ঢাকা থেকে খুলনাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেসটি ভাঙ্গা রেল জংশন থেকে বের হওয়ার কিছুদূর পরে গিয়ে ইঞ্জিন সহ একটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ট্রেনের সামনের ইঞ্জিন ও লাগেজ ভ্যান এক লাইন থেকে অন্য লাইনের ওপর চলে যায়।
তিনি আরও জানান, গতকাল রাত ৯টা ৫ মিনিট থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের তিনটি রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। রাজবাড়ী ও খুলনা থেকে উদ্ধারকারী ক্রেনসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজ করার পর আজ (শনিবার) বেলা ১১টার দিকে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাচিনা খাতুন বলেন, পয়েন্টম্যানের ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। পয়েন্টম্যান নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই সিগনাল বা পয়েন্ট পরিবর্তন করেছেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় একট আবাসিক ভবনের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে দুই বোনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই দুইজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ মে) রাতে মেট্রো স্টেশন-সংলগ্ন পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ৬৪৯ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলার বি-১ ফ্ল্যাট থেকে লাশদুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন— মরিয়ম (৬০) ও তার বোন সুফিয়া (৫০)।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদুর রহমান ইউএনবিকে জানান, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে আমরা ঘটনার খবর পাই। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি দল গিয়ে ছয় তলা বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে লাশদুটি উদ্ধার করে।
লাশদুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, নিহত দুইজনকে শীল-পাটা ও ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত মরিয়মের সন্তান মিষ্টি (২৬) ওই ফ্লাটে থাকেন এবং তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরি করেন। কিন্তু ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।
পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির দারোয়ানকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।