প্রথম ধাপের ১৫৩টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হতে পারে। গতকাল বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি বলেন, ‘কমিশন সভা রয়েছে। সভাশেষে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।’
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী প্রথম ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট হবে সেগুলো হলো সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা; সিলেটের সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, গোপালগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা; মৌলভীবাজারের জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও সরাইল; কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম; চাঁদপুরের মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর; ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজী; নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া; লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর; চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ; কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, কক্সবাজার সদর ও মহেশখালী; খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মানিকছড়ি লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় ও গুইমারা; খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা; রাঙামাটির রাঙামাটি সদর, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বরকল; বান্দরবান পার্বত্য জেলার বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিধিমালায় কিছু সংশোধন এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এক লাখ টাকা জামানত দিতে হবে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। আগে উভয় পদে জামানত ছিল ১০ হাজার টাকা।
গত মঙ্গলবার ‘উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০২৪’ বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী উপজেলা নির্বাচনে এসব বিধান কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করেছে ইসি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধানও শিথিল করেছে ইসি। এতদিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এটি এখন একেবারেই তুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ভোটারের সমর্থনসূচক সই লাগবে না।
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা সাদাকালোর পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন। এ ছাড়া নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে ইসির ক্ষমতা স্পষ্ট করা হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় ‘নির্বাচনী সময়েরও’ সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত নির্বাচনী সময় বলতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে গেজেট প্রকাশের পর ১৫ দিন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এতে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
নতুন নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণক জমা দিতে হবে, উল্লেখ করতে হবে টিআইএন নম্বর।
আগের বিধিমালায় নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। এ ক্ষেত্রে প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশের কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হতো। সংশোধিত বিধিমালা এটি সংশোধন করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশের কম পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
সংশোধিত বিধিমালায় নির্বাচনী ব্যয়ে পরিবর্তন এসেছে। আগের আইনে ১ লাখ ভোটারের জন্য প্রার্থী ব্যক্তিগত ও নির্বাচনী ব্যয় করতে পারেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা, ১ লাখ এক থেকে ২ লাখ ভোটারের জন্য ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ২ লাখের বেশি ভোটার সংবলিত উপজেলার জন্য ১১ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, আগামী মে মাসে ৪ ধাপে ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে ইসি। প্রথম ধাপে আগামী ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপে ২৫ মে ভোট হবে।
তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটি আগে তিস্তা সেতু নামে পরিচিত ছিল।
সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে দুপুরে সেতুটির উদ্বোধন করবেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সেতুর উভয় পাশে স্থানীয় জনগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বড় মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাটের মধ্যে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে ভ্রমণের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি কমিয়ে দেবে।
সেতুটি সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, সংযোগ সড়কে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী ব্যবস্থাপনায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং ভূমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সেতুটিতে মোট ৩০টি পিলার রয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি নদীর ভেতরে এবং ২টি নদীর তীরে। নদী শাসনের আওতায় উভয় তীরে মোট ৩.১৫ কিলোমিটার কাজ করা হয়েছে।
এছাড়াও, মোট ৫৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন-এর মধ্যে চিলমারী মাটিকাটা জংশন থেকে সেতু পর্যন্ত ৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার এবং সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার।
এলজিইডি সূত্র জানায়, এই সেতুটি রংপুর শহর এবং কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা শহরের মধ্যে কৃষিপণ্যের পরিবহন জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে কৃষকেরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারবেন, আয় বাড়বে এবং অঞ্চলের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
কুমিল্লা শহরের আদর্শ সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে এক মানবপাচারকারী ও পাসপোর্ট দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর ক্যাম্পের সেনা টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. সাজেদুল ইসলাম (৩৫) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার হালিমা নগর নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ৫২ টি পাসপোর্ট , অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ৩টি, বাটন মোবাইল ফোন ১টি উদ্ধার করা হয়।
সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবপাচার, পাসপোর্ট জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং অস্ত্র রাখাসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযান শেষে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও জব্দকৃত সামগ্রী কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম জানান, সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। সেনাবাহিনী বিপুল পরিমান পাসপোর্টসহ তাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। তাকে বিকেলে আদালতে পাঠানো হবে।
জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন তারা। তবে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।
আত্মসমর্পণ করা ৬ কর্মকর্তা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বিলাল আহমদ চৌধুরী, সেকশন অফিসার বেলাল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ, মো. রেদোয়ান, আব্দুল মজিদ ও তানভীর আহমদ। তারা সবাই দুদকের চার্জশিটভুক্ত আসামি।
দুদকের আইনজীবী লুৎফুল কিবরিয়া শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুদকের চার্জশিটভুক্ত ৬ আসামি মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। পরে ২৪ এপ্রিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউজিসি ২০২৩ সালে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নঈমুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল মামলা করে দুদকের সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়।
মামলায় তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নঈমুল হক চৌধুরী ছাড়া আরও ৫৬ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যাকবলিত দুই ইউনিয়নের ১ হাজার ১০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছে উপজেলা বিএনপি।
বুধবার সকাল থেকে দিনভর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পানিবন্দী অসহায় মানুষের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শের আলী সবুজ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মস্তোফা, বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বোনজির আহমেদ বাচ্চু ও থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী।
চলতি আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলে উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ গ্রামের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি দুর্গত মানুষের।
এ ছাড়া বন্যায় ফিলিপনগর, মরিচা, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বিপুল আবাদি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন,“বিএনপি সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছে, এখনও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। আমরা উপজেলা বিএনপির পক্ষন থেকে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এসেছি, যা বিতরণ চলছে।”
পাঁচশ’ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী ইদ্রিস মাতুব্বরকে (৫০) আটক করে বেধরক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। গুরুত্বর অবস্থায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ পাহারায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট এলাকার। আটককৃত ইদ্রিস ওই ইউনিয়নের মাগুরা-মাদারীপুর এলাকার কাদের হাওলাদারের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে ইদ্রিস। এতে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ভোরে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের সংবাদে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট এলাকায় স্থানীয়রা ইদ্রিসকে আটক করে। পরে তার কাছ থেকে পাঁচশ’ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় স্থানীয় জনতা ইদ্রিসকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, আহত অবস্থায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পাঁচশ’ পিচ ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে। আটককৃতের মাথায় জখম থাকায় তাকে পুলিশ পাহারায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে জলাবদ্ধতা ইস্যুতে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে । মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দীর্ঘদিন ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রতিবাদে ভিন্নধর্মী এ কর্মসূচি পালন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত আয়োজিত এ কর্মসূচিতে জলাবদ্ধ পানিতে কই মাছ ছেড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানো হয়। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি আবরার নাদিম ইতু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মানবতার কল্যাণে ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি সাইফুর রহমান সদস্য সৌরভ হোসেন রায়হান, মো. মেহেদী হাসান, আসিফ সাকিব, মো. ওয়ালিদ সহ হাসপাতালের আশপাশের স্থানীয় মানুষ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান প্রবেশপথে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরও বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে রোগী পরিবহনে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যা অবহেলা করার মতো বিষয় নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় ফের নতুন করে বাংলাদেশমুখী হচ্ছে রোহিঙ্গারা। বুথিডংসহ বিভিন্ন এলাকার রোহিঙ্গারা দালালের সহায়তায় নাফ নদী ভেলায় পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সীমান্তে প্রবেশ করছে। পরে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে।
এরই মধ্যে রোহিঙ্গা পারাপারে জড়িত স্থানীয় দুই দালালকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া এলাকার শামসুল আলম (৪৫) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে জাবের (৩১)।
বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “দালালদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করা হচ্ছে।”
সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফের জাদিমুড়া ও নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এক সদস্য বলেন, “কাল বিকেলে জাদিমুড়া পয়েন্ট দিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। এরপর সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। এত বড় সীমান্ত একা পাহারা দেওয়া কঠিন।”
এদিকে, সোমবার বিকেলে নাফ নদী ভেলায় করে টেকনাফের জাদিমুড়া সীমান্তে প্রবেশের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, ভেজা কাপড়ে নারী-শিশু ও যুবকেরা নদী পার হয়ে দ্রুত সড়কে উঠে যাচ্ছে।
টেকনাফ জাদিমুড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন জানান, “নাফ নদীর ওপারে লালদিয়া ও পেরাংপু এলাকায় বহু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে। গতকাল বিকেলেও কয়েকজন প্রবেশ করে গাড়ি যোগে উখিয়া চলে গেছে।”
রোহিঙ্গাদের ভেতরের পরিস্থিতি বর্ণনা করে টেকনাফ ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মো. নুর বলেন, “২০১৭ সালে আমি বাংলাদেশে আশ্রয় নিই। কিন্তু আমার পরিবারের ৯ জন এখনো রাখাইনের মাংগালা এলাকায় আটকা আছে। আরাকান আর্মি নিয়মিত তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারকে জোর করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। এমনকি তেল-মরিচসহ নিত্যপণ্য লুট করছে এবং জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা নতুন করে সীমান্ত পার হচ্ছে।”
টেকনাফ ক্যাম্প ২৬ ও ২৭-এর ইনচার্জ খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, “কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে শুনেছি। তারা উখিয়ার দিকে চলে গেছে। মাঝিদের মাধ্যমে খবর মিলেছে, সীমান্তে আরও অনেক রোহিঙ্গা জড়ো রয়েছে।”
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, “বিজিবি আটক দুই দালালকে থানায় হস্তান্তর করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দিয়ে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হোয়াইক্যং থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার জল-স্থলপথে বিজিবির টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।
তালাত মাহামুদ নামে এক ভুয়া সাংবাদিক আটক, পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে। জানা গেছে বেলাব উপজেলার বাজনাবো গ্রামের মো: জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো: জহিরুল ইসলামকে নরসিংদী শহরের টাউয়াদী মহল্লার মো: হারিছ মিয়ার পুত্র তালাত মাহামুদ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ‘নিউজ ২৪ এর একটি ভুয়া পরিচয়পত্র’ প্রদান করে।
মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট ভোরে জহিরুল ইসলাম নরসিংদী শহরের একটি বেকারীর দোকানে গিয়ে নিজেকে নিউজ ২৪ এর পরিচয় দিয়ে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করে। বিষয়টি বেকারীর মালিক জানতে পেরে ঢাকা নিউজ ২৪ কার্যালয়ে ফোন দিলে তারা জানায় এ নামে তাদের কোন প্রতিনিধি নেই। নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি হচ্ছে মো: হৃদয় খান। পরে হৃদয় খান ঘটনাটি জানতে পেরে জহিরুল ইসলামকে ফোন করে এবং নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে জহিরুল ইসলামের সাথে দেখা করে। এই পরিচয়পত্র কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে সে বলে তালাত মাহামুদ নামে এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে এই পরিচয়পত্র প্রদান করে। জহিরুল ইসলামকে দিয়ে তালাত মাহামুদকে এনে জিজ্ঞাসা করলে সে প্রথমে অস্বীকার করে। পরে গণধোলাই দিলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তালাত মাহামুদের শরীর তল্লাশী করলে তার পকেট থেকে ৮টি গণমাধ্যমের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি এসে তালাত মাহামুদকে প্রেসক্লাবে নিয়ে যায় এবং ৩শত টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে আর কোন দিন এ ধরনের কাজ করবেনা বলে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়।
পরিচয়পত্র গুলো হচ্ছে-দৈনিক বজ্রশক্তি, জাতীয় সাপ্তাহিক স্বকাল চিত্র, দৈনিক মুক্তি সমাচার, বিবিসি নিউজ ২৪, তদন্ত রিপোর্ট, জাতীয় দৈনিক বাংলা প্রতিদিন, দৈনিক চৌকস, জাতীয় সাপ্তাহিক অন্যায়ের প্রতিবাদ।
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার কমেছে। গতকাল এই নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, জেলায় বন্যার আশঙ্কা নেই।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ (হার্ড পয়েন্টে) যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার কমে পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১২.৯০ মিটার)। এ পয়েন্টে গত শুক্রবার ২২ ও বৃহস্পতিবার ২৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়।
অপরদিকে, জেলার কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৯৯ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটপিয়ারী গ্রামের কৃষক শামীম রেজা বলেন, যমুনার পানি কিছুটা কমেছে। তবে, আবারো বাড়তে পাড়ে। পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের আগেই নতুন ও পুরানো তীররক্ষা বাঁধ মেরামত প্রয়োজন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো ভাটপিয়ারী গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। হুমকির মুখে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা বলতে নারাজ। তাদের মতে, এটা কোনো চিন্তার বিষয় না।
উপজেলার কাওয়াকোলা বর্ণী গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, বিগত সরকারের সময় বালুখেকোরা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোল করায় আজ আমরা ভাঙনের কবলে পড়েছি। বর্তমানে বালু খেকোরা পলাতক। নদীতে পানি বাড়লে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া বৃদ্ধি পায়। সারা বছর যদি তারা খোঁজ নিতেন তাহলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পারতেন সময়মতো।
কাজিপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের কৃষক কুদ্দুস আলী বলেন, বর্ষার শুরুতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের অনেকের বাড়ির আঙ্গিনায় পানি এসেছে। জমিতে পানি ওঠায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এবারের পানিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান বলেন, বর্তমানে যমুনায় পানি কমতে শুরু করছে। এ কারণে ভাঙনের মাত্রা কম। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হতে পারে। এ জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
তিনি আরো বলেন, ৮২ কিলোমিটার শহররক্ষা বাঁধের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ ও ভাঙনরোধে প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠানো আছে। বাঁধের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আশা করি, বড় ধরনের বন্যা না হলে সাধ্যমতো ভাঙন মোকাবিলা করতে পরব।
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১০ দফা প্রস্তাবনা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনসমূহ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তাদের ১০ দফা প্রস্তাবনাগুলো হলো- ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল থেকে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর; ভোটকেন্দ্রকে সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় আনা; কেন্দ্রসমূহে সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; নারী প্রার্থীরা যাতে অনলাইন-অফলাইনে বুলিং ও হয়রানির শিকার বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক মনিটরিং সেল গঠন; সকল প্রার্থী ও সংগঠনের জন্য হল ও ক্যাম্পাসে সহবস্থান নিশ্চিত করা;
সকল প্রার্থী ও প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; প্রার্থীদের পোস্টার, ফেস্টুনের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে সহিংসতা রোধে সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে পরিবেশ পরিষদ গঠন; নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য শিক্ষক, জে্যষ্ঠ নাগরিকদের নিয়ে নির্বাচন পরিদর্শক টিম গঠন; ছাত্রলীগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠি যাতে প্যানেল কিংবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা ভোটার হতে না পারে, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাগ্রহণ; আইবিএর শিক্ষার্থী ও বিদেশী শিক্ষার্থীদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা; নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রার্থীর ব্যাংক একাউন্ট ও আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করা; সেইসাথে নির্বাচনী খরচের জন্য যেকোন উৎস হতে প্রাপ্ত সকল অর্থ প্রাপ্তির প্রমাণসহ ও উক্ত অর্থের প্রত্যেক উৎসের নাম উল্লেখ করে বিবরণী দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সূতিকাগারের কেন্দ্রীয় সদস্য ও আফরিন জাহান। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণসহ সঙ্গত কারণেই এই প্রশাসনের অধীনে রাকসু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা, সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আমরা মোটেও শঙ্কামুক্ত নই।’
এসময় তিনি রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সে বিষয়ে সর্বোচ্চ মনযোগ নিবদ্ধ করার দাবি জানান।
বর্ণাঢ্য আযোজনের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ায় উদযাপিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্বর থেকে আনন্দ র্যালী শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একতারা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন দলীয় নেতৃবৃন্দ। র্যালী পুর্ববর্তী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল হাকিম মাসুদ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ জাকারিয়া উৎপল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। এসময় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদসহ জেলার উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোহরাব উদ্দিন বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার থেকে ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্ট জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিরলসভাবে জনগণের পাশে থেকে কাজ করে আসছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়াতাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। পরে বর্ণাঢ্য র্যালী শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে সম্প্রতি মিথ্যা সংবাদ উপস্থাপনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে (১৯ আগস্ট) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক শিক্ষিকা, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাফি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি গোলাম শামীম মোস্তাজির, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়নাল আবেদীন ও অভিভাবক মোশাররফ হোসেন নানা অনিয়ম, হয়নারী ও বিদ্যালয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে বক্তব্য দেন এতে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাফি অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ৬ই অক্টোবর ক্ষমতার অপব্যবহার, হয়রানী, অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের কারণে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বরাখাস্ত হন আব্দুস সাত্তার।
বরখাস্ত হওয়ার পর থেকেই নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন আব্দুস সাত্তার। সম্প্রতি তারই ইন্ধনে সাংবাদিকদের মিথ্যে তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায়। যা পুরোপুরি মিথ্যে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট ছিলো। আমি উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা জানাই। বলেন, তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, আব্দুস সাত্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। শিক্ষকদের অবমুল্যায়ন করতেন। দাম দিতেন না। নানাভাবে হয়রানী করতেন। যার শিকার হই আমি নিজেও।
অভিভাবক মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ে বিদ্যালয়টি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছিলেন। উন্নয়ন তো হয়নি বরং লুটেপুটে খেয়েছেন প্রধান শিক্ষক ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের নেতারা।
বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহার হোসেনকে ও ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি আমিনুর রহমানকে পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বানিয়ে দুর্নীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম শামীম মোস্তাজির বলেন, আমি দায়িত্বে আসার পর বিদ্যালয়টির পরিবেশ উন্নয়নের কাজ শুরু করি। এবারই প্রথম এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধণা প্রদান করি, ইফতার মাহফিলের আয়োজন করি।
টিউশন ফি, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ফরম ফিলাপ সহ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি করেছেন। যার কারণে তিনি বরখাস্ত হয়েছেন।
তিনি ছিলেন আওয়ামী ফ্যাসিস্টের অন্যতম সহযোদ্ধা। এই বিদ্যালয়টি ছিলো আওয়ামীলীগের দখলে। স্থানীয়রা সে সময়ে কিছুই বলতে পারেননি ভয়ে।
বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেন এবং বিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগে পড়েছেন।
সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। পুকুর, কৃষি জমি ও বীজতলা পানিতে ভেসে একাকার। আর ধানের জমিতে জন্ম নেয় বড় বড় কচুরী পানা। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজে আসছে না সরকারি খালগুলো। হচ্ছে না পানি নিস্কাশন, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কৃষি আবাদ। আর এভাবেই অনাবাদে পড়ে থাকছে শতশত বিঘা দুই ফসলি আবাদী জমি। এ যেন কৃষির সর্বনাশ। সেই সাথে বৃষ্টি মৌসুমে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজারো পরিবার। রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা ও মুড়াপাড়া-ভুলতা-গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের বেড়িবাধেঁর অন্তর্ভুক্ত প্রায় ২০ গ্রামে এমন চিত্রের দেখা মিলে।
* সরকারি খালে পাকা স্থাপনা ও বাগান বাড়ি নির্মাণ
* আটকে যাচ্ছে পানির স্বাভাবিক চলাচল, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা
* কৃত্রিম জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম
* মাছ চাষেও নেই সুবিধা, যখন তখন পুকুর ভেসে যায় কৃত্রিম বন্যায়
* ভারী বৃষ্টিতে গ্রামের রাস্তার ৩/৪ ফুট পানি জমে, শিল্পকারখানার দুষিত বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের রাস্তাঘাটে
* ভোগান্তি পোহাচ্ছে পৌরসভা ও তিন ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার
* ইরিগেশন প্রজেক্ট হওয়া স্বত্তেও অনাবাদি পড়ে থাকছে শতশত হেক্টর কৃষি জমি
* পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে নেই নজধারী
* সরকারি অর্থে অধিগ্রহনকৃত খাল উদ্ধারে নেই প্রশাসনিক উদ্যোগ
* নাম সর্বস্ব আবাসনে গিলে খাচ্ছে ইরিগেশন প্রকল্পের শতশত বিঘা জমি
সরেজমিনে ঘুড়ে দেখা যায়, কাঞ্চন পৌরসভা, মুড়াপাড়া, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ২০ গ্রামে প্রায় ২২ হাজার বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। এ সকল এলাকার কোথাও ৬ মাস কোথাও আবার সারাবছরই কৃত্রিম জলাবদ্ধতা থাকে। তাতে শতকরা প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষি জমিই অনাবাদি পড়ে থাকে। হাটাব বারৈপাড় এলাকায় কানি বিলের পিঠাগুড়ি অংশে খালের উপর বাগান বাড়ি নির্মাণ করায় বাধাঁপ্রাপ্ত হচ্ছে পানির স্বাভাবিক চলাচল। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে টাটকির খাল, সুতালরির খাল, দাগিরমার খাল, কালাদী থেকে গোলাকান্দাইল পর্যন্ত ১৮০ ফিট এশিয়ান হাইওয়ে সংলগ্ন সরকারি খাল দখল হয়ে আছে সড়ক নির্মানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের অবহেলায়। এছাড়াও অবৈধভাবে সরকারি খালের উপর কালাদী, নলপাথর, কুশাবো এলাকায় গড়ে ওঠেছে একাধিক বালুর গদি, হান্ডিমার্কেট এলাকায় খালের উপরে গড়ে ওঠেছে সাবানের ফ্যাক্টরি, এনডিই রেডিমিক্স, ম্যাংসাং সার্ভিসিং সেন্টারসহ একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান ও অর্ধশত বসতবাড়ি।
তাতে একদিকে পানি স্বাভাবিক চলাচল বাধাঁগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে বালুর গদির শতশত টন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি। সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাশয় আর ভারী বর্ষণে রূপ নিচ্ছে জলাবদ্ধতা। ওই সমস্ত এলাকায় ইরিগেশন প্রজেক্ট বা বেড়ি বাধেঁর ভেতরে এমন জলাবন্ধতায় শুধু কৃষি আবাদই ব্যহত হচ্ছে না মানুষের জীবন জীবিকাও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এছাড়াও কারখানার দুষিত বর্জ্য খোলা মাঠে ছেড়ে দেয়ায় পানিবাহিত রোগ জীবানু ছড়াচ্ছে এলাকার মানুষের মধ্যে।
টেকপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদ বলেন, এলাকার ৪/৫ টি খাল বেইনিভাবে দখল করে খালের উপরে অর্ধশত পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিপুর্বে গ্রামবাসীর পক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের লিখিত দরখাস্ত দিয়েও কোন সুফল পাইনি। যারা খাল দখল করছে তারাই আবার জলাবদ্ধতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে।
বেলতলা এলাকাল শাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, সরকারি খাল ও সরকারি একোয়ারকৃত জমিতে বালু ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে এনডিই রেডিমিক্স, মেট্রো ওয়ার্কশপ, ইনডেক্স পাওয়ারপ্ল্যান্ট ও এটলাস টয়লেট্রিস নামক প্রতিষ্ঠান। খালের পানি চলাচল বন্ধ করে দেদারচে ব্যবসায় করছে কতিপয় মহল। জলাবদ্ধতায় ভুগছে গ্রামের সাধারণ মানুষ, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস টুকু পাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক ও এলাকাবাসী বলেন, কৃষি প্রধান দেশে এখন চলছে আবাসন ব্যবসা। প্রশাসনের লোকজন কিছুই বলে না, জোড়পুর্বক জমি দখল করে। কিছু বললেই বাড়িঘরে হামলা দেয়। আ.লীগ থাকতেও জমি জবরদখল করতো এখনও করে।
জানা যায়, ১৯৮১ সালে কাঞ্চন পৌরসভা ও মুড়াপাড়া- ভুলতা- গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের ২২ হাজার বিঘা কৃষি জমি চাষাবাদের সুবিধার্থে “নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী ইরিগেশন প্রজেক্ট”র (এনএনডি) আওতায় এনে বেড়িবাধঁ নির্মাণ করে “জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি” (জাইকা) নামক প্রতিষ্ঠান। বেড়িবাধেঁর ভেতরে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে (একোয়ার) সরকারিভাবে খনন করা হয় খাল। খালের পানি নিস্কাশন ও উত্তোলনের কাজে স্থাপন করা হয় বানিয়াদী সেচ প্রকল্প। বসানো হয় ৪ টি সেচ পাম্প। তাতে বর্ষাকালে বা ভারী বর্ষনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি নিস্কাশন ও আবাদ মৌসুমে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পানি উত্তোলন করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো হয়। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরধারী না থাকায় অধিগ্রহনকৃত জমিতে গড়ে ওঠেছে শতশত স্থাপনা। বছরের পর বছর এমন দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বর্তমানে অধিকাংশ খালগুলোই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।
অধিগ্রহণকৃত সরকারি খালের জমি অবৈধভাবে দখল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিভাগীয় উপ-প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, আমি অল্প দিন হয় এখানে যোগদান করেছি। এরই মধ্যে ইরিগেশন প্রকল্পের সকল খাল উদ্ধারে প্রধান উপদেষ্ঠা ও জেলা প্রশাসকের বরাবরে দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই খালগুলো উদ্ধার করা হবে। তিনি বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাজীপুর- মদনপুর বাইপাস সড়ক প্রশস্তকরনে সময় রাস্তার পাশের খালটি ভরাট হয়ে গেছে। তবে তারা খালের বিকল্প খাল খনন করে দেয়া কথা ছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, আমরা সরকারি খাল, রাস্তা ও খাস জমি উদ্ধারে কাজ করছি। ইতিপুর্বে ভ্রাম্যমান অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি খাল ও রাস্তা উদ্ধার করেছি। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে আমার মোবাইল কোর্ট টিম সর্বদা কাজ করছে।