চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) দালাল চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে আছে রোগী ও তাদের স্বজনরা। এখানে দালাল ছাড়া রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে কোনো সেবাই পাওয়া যায় না। দালালদের বিরুদ্ধে কথা বললে বা তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলেই মারধর বা হেনস্তার শিকার হতে হয়।
হাসপাতাল এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, সিএনজি, অটোরিকশা এবং ইজিবাইক চালকদের নিয়ে দালাল চক্র তৈরি করা হয়। দালালরা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সেবার অপ্রতুলতার বর্ণনা দিয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার প্রতি রোগীদের আস্থার সংকট তৈরি করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ছাড়া চিকিৎসকরা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলে সেগুলো দ্রুত করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং কমিশন পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কৌশলে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়।
শয্যা ও ওয়ার্ড সিন্ডিকেট
প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা সাধারণ রোগীরা ভর্তি হওয়ার পর তারা নানা সমস্যায় পড়েন। প্রথমেই জরুরি মুহূর্তে রোগীকে বহনের ট্রলি থেকে শুরু করে শয্যা বা ওয়ার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দালালরা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
দুরারোগ্য রোগের ভীতি সঞ্চার
হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগী আগমন করা মাত্রই দালালরা রোগীর মধ্যে একটা ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে কোনো বড় ধরনের রোগের কথা বলে বেসরকারি কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় এবং সেখানে ভর্তি করায়। ফলে রোগীরা সরকারি হাসপাতালের বিনা মূল্যের চিকিৎসা ও স্বল্পমূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হন। এতে অধিক অর্থ ব্যয় করে রোগী ও তার স্বজনরা সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। দালালদের প্রলোভনে পড়ে মানহীন হাসপাতালে যাওয়ায় অনেক সময় সুচিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট
হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও তার অপ্রতুলতার কথা বাড়িয়ে বর্ণনা করে সিন্ডিকেটকারীরা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেবে মর্মে ব্যক্তিমালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স বেশি টাকায় ভাড়া দেয়। এমনকি চিকিৎসাধীন কোনো রোগী এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করার প্রাক্কালে এবং কোনো রোগী মৃত্যুবরণ করলেও হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ বহনেও সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই দালাল চক্রের বিরুদ্ধে।
কমিশন বাণিজ্য
একজন রোগী হাসপাতালে আগমনের পর ভর্তি থেকে শুরু করে রোগী বহনের জন্য ট্রলি, শয্যা বা ওয়ার্ড পাইয়ে দেওয়া, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরিদর্শন পিছন থেকে সামনে নেওয়া, স্বল্পমূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেওয়া, তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা, স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের ওষুধ কেনাসহ সব ক্ষেত্রে রোগীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কমিশন বাণিজ্য করে আসছে।
এ ছাড়া রোগীদের বিনা মূল্যের ওষুধ থেকে বঞ্চিত করে স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের ওষুধ কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কমিশনপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট ফার্মেসিতে নিয়ে যায়। পরে ফার্মেসি ওষুধের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে ওষুধ বিক্রি করে রোগীর কাছে।
এ অবস্থায় সরকারি হাসপাতালের চরম ইমেজসংকট তৈরি হয়েছে। রোগীর কাছে ভোগান্তির অপর নাম হয়ে দাঁড়ায় সরকারি হাসপাতাল।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার র্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ৩৮ দালালকে গ্রপ্তার করেছে। র্যাব-৭-এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করি। দালালরা রোগী ও তাদের স্বজনদের জিম্মি করে রেখেছে। এখন থেকে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার বালুর মাঠে আনন্দ মেলার আড়ালে চলছে রমরমা জুয়ার আসর ও মাদক ব্যবসা। এ শুরু হওয়া ‘আনন্দ মেলা’ স্থানীয়দের জন্য আনন্দ নয়, বরং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে,১২ দিন যাবত মেলার আড়ালে সেখানে চলছে অবাধে মাদক সেবন ও জুয়ার আসর। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় দেখা যায় অসামাজিক কার্যকলাপ। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তারাবো পৌরসভার তারাব বিশ্বরোড সংলগ্ন বালুর মাঠে অনুমোদনহীন ভাবে চলছে এই আনন্দমেলা। প্রায় শতাধিক দোকানপাট বসেছে মেলায়। মেলার দক্ষিণ কর্নারে চলছে রমরমা জুয়ার আসর, রাত ১০ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলে মাদক বিক্রি ও সেবন । ইয়াবা ফেন্সি গাজা সহ বিভিন্ন রকমের মাদক পাওয়া যাচ্ছে এই মেলাতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান,২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট আন্দোলনের পরে অনেকে নেতা বনে গেছেন,অনেকেই আবার দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে এসে বড় নেতা হয়ে গেছেন। তিন চার মাস পরে পরেই আয়োজন করা হয় এই মেলার, মূলত মেলার আড়ালে রয়েছে তাদের ভিন্ন ব্যবসা,মাদক এবং জুয়া তাদের মূল উদ্দেশ্য,মেলা হচ্ছে লোক দেখানো।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেলার ভেতরে বিভিন্ন স্টলের আড়ালে ছোট ছোট অংশে জুয়ার বোর্ড বসানো হয়েছে। এতে অল্প বয়সী তরুণ থেকে শুরু করে বয়স্করাও অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে, মেলার এক কোণে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদক। এতে উঠতি বয়সের যুবকদের একটি অংশ আসক্ত হয়ে পড়ছে। স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তাদের সন্তানেরা প্রতিদিন মেলায় গিয়ে টাকা নষ্ট করছে এবং মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তারাব পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য- জহিরুল ইসলাম, তারাব পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব- নাবির প্রধান, পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক- আশিক,পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ শরীফ, আল-ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারী- জুয়েল, যুবলীগ কর্মী বর্তমানে ছাত্রদল কর্মী তানভীর প্রধান, বিশ্বরোড বাগান বাড়ী এলাকার জাহাঙ্গীরসহ অনেকেই এই মেলার আয়োজক।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করে মেলাটিকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনা হোক। অন্যথায়, এই মেলা স্থানীয় সমাজে বিশৃঙ্খলা এবং অপরাধের হার আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেনঃ আমরা খুব হতাশ। আমাদের চোখের সামনেই এই ধরনের অসামাজিক কাজ চলছে। মেলা তো আনন্দের জন্য হয়, কিন্তু এটা এখন মাদকের আখড়া আর জুয়ার আড্ডায় পরিণত হয়েছে। আমাদের ছেলে-পেলেরাও এর শিকার হচ্ছে। মেলা বন্ধ করার জন্য আমরা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মনে হচ্ছে, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব চলছে। এই মেলা আমাদের সমাজের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। সন্ধ্যার পর থেকে এখানে যে নোংরামি শুরু হয়, তাতে সুস্থ মানুষ যেতে পারে না। জুয়া আর মাদকের কারণে অনেক পরিবারে অশান্তি শুরু হয়েছে। মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। আগে এই ধরনের মেলায় মানুষজন তাদের পরিবার নিয়ে আসত, এখন ভয়ে কেউ আসে না। প্রশাসন যদি এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিক। মেলার নামে যে অবৈধ কাজ চলছে, তা বন্ধ করা হোক। শুধু মেলার অনুমতি দিলেই হবে না, এর ভেতরের কার্যকলাপও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা দরকার। আমরা চাই আমাদের এলাকার যুবসমাজ এই সর্বনাশা পথ থেকে ফিরে আসুক। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)তরিকুল ইসলাম বলেন,তারাব পৌরসভার আনন্দ বিনোদন মেলার বিষয়ে বেশি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম বিষয়টি অতি শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন,তারাব পৌরসভার আনন্দ বিনোদন মেলার তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাননি। তবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ফকিরগঞ্জ বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪ ব্যবসায়ীর নিকট হতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, পঞ্চগড় জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (অ.দা.) এ.এস.এম মাসুদ উদ দৌলা’র নেতৃত্বে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী ফকিরগঞ্জ বাজারের ‘ফেন্সি ফার্মেসী’র (ভেটেরিনারি ঔষধ ও খাদ্যের দোকান) স্বত্বাধিকারী মোঃ ফজলুল হককে ১০,০০০/- টাকা, ‘ভাই ভাই স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারী মোঃ তৌহিদুল ইসলামকে ৩,০০০/- টাকা, ‘ইব্রাহিম স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারীকে ৩,০০০/- টাকা এবং ‘সোহেল স্টোর’ (মসলার দোকান) এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহেল রানাকে ৪,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়।
এসময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন মোঃ আব্দুল্লাহ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি পরিদর্শক(ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আব্দুল গনি, উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের অন্যান্য কর্মচারী ও আটোয়ারী থানার অফিসার সহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাতি সংরক্ষণে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি বলেন, হাতির উপযোগী গাছ লাগানো, করিডোর চিহ্নিত করে মুক্ত রাখা, জরিপের মাধ্যমে হাতির সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ এবং মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
বুধবার বন ভবনে বিশ্ব হাতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ক্যাপটিভ হাতি নিয়ন্ত্রণ, গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করা এবং হাতির জন্য টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা জরুরি। উপদেষ্টা জানান, হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী গাছের বাগান, ৫০ হেক্টর বাঁশবাগান সৃজন এবং রোপিত উদ্ভিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য ইকোলোজিক্যাল বাউন্ডারী বায়োফেন্সিং নির্মাণ করা হবে, যেখানে বেত, লেবু ও বড়ইসহ কাঁটাজাতীয় জীবন্ত বেড়া দিয়ে ১০ কিলোমিটার সীমানা তৈরি হবে। একইসঙ্গে এলিফ্যান্ট রিজার্ভ-সংলগ্ন এলাকায় “অ্যান্টি ডেপ্রেডেশন স্কোয়াড (এডিএস), এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ও এলিফ্যান্ট রেসকিউ টিম” গঠন করে কার্যক্রম জোরদার করা হবে। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণে ১৬টি ট্রি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে এবং গাজীপুর সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে দুটি হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
তিনি আরও জানান, আহত হাতির চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও শেরপুর অঞ্চলে অস্থায়ী সেড নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে এনথ্রোপোজেনিক প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ এবং নৃ-বৈজ্ঞানিক জরিপ পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রামের চুনতিতে দশ একর জায়গাজুড়ে একটি হাতি অভয়ারণ্য স্থাপন করা হবে, যেখানে পোষা হাতিদের পুনর্বাসন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল হাসান; দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ডলাইফ স্পেশালিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মনিরুল এইচ খান; বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক (কেন্দ্রীয় অঞ্চল) এ. এস. এম. জহির উদ্দিন আকন; আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও হাতি বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব এবং বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল) মো: ছানাউল্যা পাটওয়ারী।
তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটি আগে তিস্তা সেতু নামে পরিচিত ছিল।
সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে দুপুরে সেতুটির উদ্বোধন করবেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সেতুর উভয় পাশে স্থানীয় জনগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বড় মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ঘাটের মধ্যে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানায়, সেতুটি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে ভ্রমণের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি কমিয়ে দেবে।
সেতুটি সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, সংযোগ সড়কে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী ব্যবস্থাপনায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং ভূমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সেতুটিতে মোট ৩০টি পিলার রয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি নদীর ভেতরে এবং ২টি নদীর তীরে। নদী শাসনের আওতায় উভয় তীরে মোট ৩.১৫ কিলোমিটার কাজ করা হয়েছে।
এছাড়াও, মোট ৫৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন-এর মধ্যে চিলমারী মাটিকাটা জংশন থেকে সেতু পর্যন্ত ৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার এবং সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার।
এলজিইডি সূত্র জানায়, এই সেতুটি রংপুর শহর এবং কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা শহরের মধ্যে কৃষিপণ্যের পরিবহন জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে কৃষকেরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারবেন, আয় বাড়বে এবং অঞ্চলের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
কুমিল্লা শহরের আদর্শ সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে এক মানবপাচারকারী ও পাসপোর্ট দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর ক্যাম্পের সেনা টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. সাজেদুল ইসলাম (৩৫) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার হালিমা নগর নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ৫২ টি পাসপোর্ট , অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ৩টি, বাটন মোবাইল ফোন ১টি উদ্ধার করা হয়।
সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবপাচার, পাসপোর্ট জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং অস্ত্র রাখাসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযান শেষে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও জব্দকৃত সামগ্রী কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম জানান, সাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। সেনাবাহিনী বিপুল পরিমান পাসপোর্টসহ তাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। তাকে বিকেলে আদালতে পাঠানো হবে।
জনবল নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন তারা। তবে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।
আত্মসমর্পণ করা ৬ কর্মকর্তা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বিলাল আহমদ চৌধুরী, সেকশন অফিসার বেলাল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ, মো. রেদোয়ান, আব্দুল মজিদ ও তানভীর আহমদ। তারা সবাই দুদকের চার্জশিটভুক্ত আসামি।
দুদকের আইনজীবী লুৎফুল কিবরিয়া শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুদকের চার্জশিটভুক্ত ৬ আসামি মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। পরে ২৪ এপ্রিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউজিসি ২০২৩ সালে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নঈমুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল মামলা করে দুদকের সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়।
মামলায় তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নঈমুল হক চৌধুরী ছাড়া আরও ৫৬ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যাকবলিত দুই ইউনিয়নের ১ হাজার ১০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছে উপজেলা বিএনপি।
বুধবার সকাল থেকে দিনভর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পানিবন্দী অসহায় মানুষের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শের আলী সবুজ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মস্তোফা, বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বোনজির আহমেদ বাচ্চু ও থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী।
চলতি আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলে উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ গ্রামের অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি দুর্গত মানুষের।
এ ছাড়া বন্যায় ফিলিপনগর, মরিচা, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বিপুল আবাদি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন,“বিএনপি সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছে, এখনও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। আমরা উপজেলা বিএনপির পক্ষন থেকে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এসেছি, যা বিতরণ চলছে।”
পাঁচশ’ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী ইদ্রিস মাতুব্বরকে (৫০) আটক করে বেধরক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। গুরুত্বর অবস্থায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ পাহারায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট এলাকার। আটককৃত ইদ্রিস ওই ইউনিয়নের মাগুরা-মাদারীপুর এলাকার কাদের হাওলাদারের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে ইদ্রিস। এতে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ভোরে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের সংবাদে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাট এলাকায় স্থানীয়রা ইদ্রিসকে আটক করে। পরে তার কাছ থেকে পাঁচশ’ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় স্থানীয় জনতা ইদ্রিসকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, আহত অবস্থায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পাঁচশ’ পিচ ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে। আটককৃতের মাথায় জখম থাকায় তাকে পুলিশ পাহারায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে জলাবদ্ধতা ইস্যুতে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে । মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দীর্ঘদিন ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রতিবাদে ভিন্নধর্মী এ কর্মসূচি পালন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত আয়োজিত এ কর্মসূচিতে জলাবদ্ধ পানিতে কই মাছ ছেড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানো হয়। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি আবরার নাদিম ইতু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মানবতার কল্যাণে ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি সাইফুর রহমান সদস্য সৌরভ হোসেন রায়হান, মো. মেহেদী হাসান, আসিফ সাকিব, মো. ওয়ালিদ সহ হাসপাতালের আশপাশের স্থানীয় মানুষ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান প্রবেশপথে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরও বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে রোগী পরিবহনে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যা অবহেলা করার মতো বিষয় নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় ফের নতুন করে বাংলাদেশমুখী হচ্ছে রোহিঙ্গারা। বুথিডংসহ বিভিন্ন এলাকার রোহিঙ্গারা দালালের সহায়তায় নাফ নদী ভেলায় পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সীমান্তে প্রবেশ করছে। পরে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে।
এরই মধ্যে রোহিঙ্গা পারাপারে জড়িত স্থানীয় দুই দালালকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া এলাকার শামসুল আলম (৪৫) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে জাবের (৩১)।
বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “দালালদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করা হচ্ছে।”
সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফের জাদিমুড়া ও নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এক সদস্য বলেন, “কাল বিকেলে জাদিমুড়া পয়েন্ট দিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। এরপর সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। এত বড় সীমান্ত একা পাহারা দেওয়া কঠিন।”
এদিকে, সোমবার বিকেলে নাফ নদী ভেলায় করে টেকনাফের জাদিমুড়া সীমান্তে প্রবেশের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, ভেজা কাপড়ে নারী-শিশু ও যুবকেরা নদী পার হয়ে দ্রুত সড়কে উঠে যাচ্ছে।
টেকনাফ জাদিমুড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন জানান, “নাফ নদীর ওপারে লালদিয়া ও পেরাংপু এলাকায় বহু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে। গতকাল বিকেলেও কয়েকজন প্রবেশ করে গাড়ি যোগে উখিয়া চলে গেছে।”
রোহিঙ্গাদের ভেতরের পরিস্থিতি বর্ণনা করে টেকনাফ ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মো. নুর বলেন, “২০১৭ সালে আমি বাংলাদেশে আশ্রয় নিই। কিন্তু আমার পরিবারের ৯ জন এখনো রাখাইনের মাংগালা এলাকায় আটকা আছে। আরাকান আর্মি নিয়মিত তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারকে জোর করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। এমনকি তেল-মরিচসহ নিত্যপণ্য লুট করছে এবং জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা নতুন করে সীমান্ত পার হচ্ছে।”
টেকনাফ ক্যাম্প ২৬ ও ২৭-এর ইনচার্জ খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, “কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে শুনেছি। তারা উখিয়ার দিকে চলে গেছে। মাঝিদের মাধ্যমে খবর মিলেছে, সীমান্তে আরও অনেক রোহিঙ্গা জড়ো রয়েছে।”
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, “বিজিবি আটক দুই দালালকে থানায় হস্তান্তর করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দিয়ে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হোয়াইক্যং থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার জল-স্থলপথে বিজিবির টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।
তালাত মাহামুদ নামে এক ভুয়া সাংবাদিক আটক, পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে। জানা গেছে বেলাব উপজেলার বাজনাবো গ্রামের মো: জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো: জহিরুল ইসলামকে নরসিংদী শহরের টাউয়াদী মহল্লার মো: হারিছ মিয়ার পুত্র তালাত মাহামুদ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ‘নিউজ ২৪ এর একটি ভুয়া পরিচয়পত্র’ প্রদান করে।
মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট ভোরে জহিরুল ইসলাম নরসিংদী শহরের একটি বেকারীর দোকানে গিয়ে নিজেকে নিউজ ২৪ এর পরিচয় দিয়ে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করে। বিষয়টি বেকারীর মালিক জানতে পেরে ঢাকা নিউজ ২৪ কার্যালয়ে ফোন দিলে তারা জানায় এ নামে তাদের কোন প্রতিনিধি নেই। নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি হচ্ছে মো: হৃদয় খান। পরে হৃদয় খান ঘটনাটি জানতে পেরে জহিরুল ইসলামকে ফোন করে এবং নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে জহিরুল ইসলামের সাথে দেখা করে। এই পরিচয়পত্র কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে সে বলে তালাত মাহামুদ নামে এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে এই পরিচয়পত্র প্রদান করে। জহিরুল ইসলামকে দিয়ে তালাত মাহামুদকে এনে জিজ্ঞাসা করলে সে প্রথমে অস্বীকার করে। পরে গণধোলাই দিলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তালাত মাহামুদের শরীর তল্লাশী করলে তার পকেট থেকে ৮টি গণমাধ্যমের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি এসে তালাত মাহামুদকে প্রেসক্লাবে নিয়ে যায় এবং ৩শত টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে আর কোন দিন এ ধরনের কাজ করবেনা বলে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়।
পরিচয়পত্র গুলো হচ্ছে-দৈনিক বজ্রশক্তি, জাতীয় সাপ্তাহিক স্বকাল চিত্র, দৈনিক মুক্তি সমাচার, বিবিসি নিউজ ২৪, তদন্ত রিপোর্ট, জাতীয় দৈনিক বাংলা প্রতিদিন, দৈনিক চৌকস, জাতীয় সাপ্তাহিক অন্যায়ের প্রতিবাদ।
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার কমেছে। গতকাল এই নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, জেলায় বন্যার আশঙ্কা নেই।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ (হার্ড পয়েন্টে) যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার কমে পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১২.৯০ মিটার)। এ পয়েন্টে গত শুক্রবার ২২ ও বৃহস্পতিবার ২৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়।
অপরদিকে, জেলার কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৯৯ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটপিয়ারী গ্রামের কৃষক শামীম রেজা বলেন, যমুনার পানি কিছুটা কমেছে। তবে, আবারো বাড়তে পাড়ে। পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের আগেই নতুন ও পুরানো তীররক্ষা বাঁধ মেরামত প্রয়োজন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো ভাটপিয়ারী গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। হুমকির মুখে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা বলতে নারাজ। তাদের মতে, এটা কোনো চিন্তার বিষয় না।
উপজেলার কাওয়াকোলা বর্ণী গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, বিগত সরকারের সময় বালুখেকোরা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোল করায় আজ আমরা ভাঙনের কবলে পড়েছি। বর্তমানে বালু খেকোরা পলাতক। নদীতে পানি বাড়লে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া বৃদ্ধি পায়। সারা বছর যদি তারা খোঁজ নিতেন তাহলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পারতেন সময়মতো।
কাজিপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের কৃষক কুদ্দুস আলী বলেন, বর্ষার শুরুতে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের অনেকের বাড়ির আঙ্গিনায় পানি এসেছে। জমিতে পানি ওঠায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এবারের পানিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান বলেন, বর্তমানে যমুনায় পানি কমতে শুরু করছে। এ কারণে ভাঙনের মাত্রা কম। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হতে পারে। এ জন্য আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
তিনি আরো বলেন, ৮২ কিলোমিটার শহররক্ষা বাঁধের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ ও ভাঙনরোধে প্রকল্প পরিকল্পনা পাঠানো আছে। বাঁধের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আশা করি, বড় ধরনের বন্যা না হলে সাধ্যমতো ভাঙন মোকাবিলা করতে পরব।
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১০ দফা প্রস্তাবনা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনসমূহ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তাদের ১০ দফা প্রস্তাবনাগুলো হলো- ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল থেকে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর; ভোটকেন্দ্রকে সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় আনা; কেন্দ্রসমূহে সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; নারী প্রার্থীরা যাতে অনলাইন-অফলাইনে বুলিং ও হয়রানির শিকার বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক মনিটরিং সেল গঠন; সকল প্রার্থী ও সংগঠনের জন্য হল ও ক্যাম্পাসে সহবস্থান নিশ্চিত করা;
সকল প্রার্থী ও প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; প্রার্থীদের পোস্টার, ফেস্টুনের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে সহিংসতা রোধে সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে পরিবেশ পরিষদ গঠন; নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য শিক্ষক, জে্যষ্ঠ নাগরিকদের নিয়ে নির্বাচন পরিদর্শক টিম গঠন; ছাত্রলীগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠি যাতে প্যানেল কিংবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা ভোটার হতে না পারে, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাগ্রহণ; আইবিএর শিক্ষার্থী ও বিদেশী শিক্ষার্থীদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা; নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রার্থীর ব্যাংক একাউন্ট ও আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করা; সেইসাথে নির্বাচনী খরচের জন্য যেকোন উৎস হতে প্রাপ্ত সকল অর্থ প্রাপ্তির প্রমাণসহ ও উক্ত অর্থের প্রত্যেক উৎসের নাম উল্লেখ করে বিবরণী দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সূতিকাগারের কেন্দ্রীয় সদস্য ও আফরিন জাহান। তিনি বলেন, ‘আমরা এই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা নিয়ে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণসহ সঙ্গত কারণেই এই প্রশাসনের অধীনে রাকসু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা, সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আমরা মোটেও শঙ্কামুক্ত নই।’
এসময় তিনি রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সে বিষয়ে সর্বোচ্চ মনযোগ নিবদ্ধ করার দাবি জানান।