বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইউএনওর স্বামীকে ‘মারধর’ করলেন আ.লীগ নেতার ছেলে

সোনাতলা থানায় আটক শামীম হোসেন ও তার ছেলে আলিফ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২৯ অক্টোবর, ২০২২ ২২:০৩
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ২১:৫১

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বামীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সোনাতলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের ছেলে শামীম হোসেন ও তার ছেলে আলিফকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সোনাতলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পেশায় ব্যবসায়ী শামীম সোনাতলা পৌর এলাকার বাসিন্দা।

মারধরের শিকার ব্যক্তির নাম আল আমিন শিকদার। তিনি পেশায় সফটওয়্যার ডেভেলপার এবং সোনাতলার ইউএনও সাইদা পারভীনের স্বামী।

সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান জানান, উপজেলা পরিষদের কোয়ার্টার এলাকায় ব্যাডমিন্টন খেলার কোর্ট আছে। সেখানে অনেকেই ব্যাডমিন্টন খেলেন। সন্ধ্যার দিকে ইউএনও সাইদা পারভীনের স্বামী আল আমিন খেলার জন্য সেখানে যান। এ সময় আগে থেকেই শামীম ও তার ছেলে আলিফ ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। ইউএনওর গাড়িচালক খেলার কোর্টে গিয়ে তাদের চলে যেতে বলেন। এতে শামীম ক্ষিপ্ত হয়ে কটূ কথা বলেন ওই চালককে। পরে শামীমের সঙ্গে তর্কে জড়ান গাড়ি চালক।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি আরও বলেন, এ সময় ইউএনওর স্বামী তাদের ঝগড়া করতে নিষেধ করলে তার বুকে লাথি মারেন শামীম। পরে তার ছেলে আলিফও হামলা চালান আল আমিনের ওপর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ শামীম ও তার ছেলে আলিফকে আটক করে। তারা থানা হাজতে আছেন।

এদিকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন শামীমের বাবা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহবুব আলম। তার দাবি, ইউএনওর স্বামীকে তার ছেলে মারধর করেননি। একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।

মাহবুব আলম বলেন, ইউএনওর স্বামী তো অপরিচিত মানুষ। কিন্তু আমার ছেলে-নাতিকে সবাই চেনেন। সন্ধ্যার আগে ইউএনওর বাসভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শামীমের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ইউএনওর স্বামী উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এর জেরে আমার ছেলে-নাতিকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

তবে ইউএনও সাইদা পারভীন বলেন, সন্ধ্যার দিকে খেলার মাঠে কোনো কারণ ছাড়াই শামীম ও তার ছেলে আলিফ হামলা করেন আল আমিনের ওপর। সম্প্রতি ভারত থেকে তার আল আমিনের হার্টে অপারেশন করা হয়েছে। বুকের হাড়ে স্ক্রু বসানো আছে। আঘাতের কারণে ওই স্ক্রু ‘ডিস প্লেসড’ হয়ে গেছে। তবে তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন।


বড়াইগ্রামে অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃহস্পতিবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে স্থানীয় খাদ্যগুদামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন খাদ্যগুদামের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধি, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, গুদাম কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী বলেন, এ বছরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। বড়াইগ্রামে এ বছরের সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীলভাবে পরিচালিত হবে। সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ধান: ১,৭৯,০০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৩৪ টাকা) চাল: ৪,৯০,৪০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৫০ টাকা) এই মৌসুমে ২০ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। উপজেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে এবং কোনো প্রকার হয়রানি বা অনিয়ম সহ্য করা হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সরকার প্রতি বছর কৃষকদের সহায়তা এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বড়াইগ্রামের কৃষকরা আমাদের দেশের খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন প্রত্যেক কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পান। এ সময় কোনো ধরনের হয়রানি বা অনিয়ম যেন না হয়, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা আশা করি, কৃষকরা স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবে, যা তাদের আয়ের নিরাপত্তা বাড়াবে এবং দেশের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। এছাড়া স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন খাদ্যগুদামের এই উদ্যোগ কৃষকদের নির্দিষ্ট মূল্য দেওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।


কমলগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্ভোগে মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

সাইনবোর্ড স্থাপন করে লেখা ‘এই জমি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে লেখা আছে ‘সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কর্তৃপক্ষ। তবুও ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। সাইনবোর্ড টানিয়েই যেন দায় শেষ। নেই কোনো তদারকি। এই ময়লার স্তূপ কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়ক ঘেঁষে উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকার বাজারের পাশেই অবস্থিত মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে খালি জায়গা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন স্কুল, কলেজ, পথচারীসহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্থানে একটি টিনের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আর্বজনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কতৃপক্ষ। এই জমি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ। আদেশক্রমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নামে সাইন বোর্ড থাকলেও, কাজে উল্টো চিত্র দেখা গেল। যার প্রতিটি স্থানেই রয়েছে বড় বড় সব ময়লার স্তূপ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক। এর গেটে রয়েছে একটি বড় ময়লার স্তূপ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী যানবাহনসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারী আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ কমপ্লেক্সের কাছে এলেই দুর্গন্ধের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। কারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন স্থানীয় বাজার পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলেন। এসব পচে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ।

রহিম মিয়া নামে এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করে রাখা হয়েছে। এখানে একটি হাসপাতালও। এটা কোনোভাবেই সহ্য করার মতো নয়।’

এই এলাকার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘অসুস্থ হলেই এলাকার মানুষ আসা-যাওয়া করত এই হাসপাতালে। বর্তমানে হাসপাতালই অসুস্থ। তার কারণ হাসপাতালের সামনে ময়লার ভাগার। ময়লার গন্ধে রোগী আসা তো দূরের কথা সাধারণ মানুষ এদিকে আসে না। আমরা এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার করতে পারিনি।’

এই এলাকার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজীজ আহমদ বলেন, ‘রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে ওই স্থানে থাকা অনেক কষ্টকর। এ বিষয়ে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’

স্থানীয় মুন্সিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হিমেল চৌধুরী জানান, ‘ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় এখানে ফেলা হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই। সরকারি জায়গায় আমরা যেমন দোকানদারী করছি, ঠিক এটাও সরকারি জায়গা তাই এখানে ফেলা হচ্ছে।’

এ বিষয় স্থানীয় মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ তরফদার বলেন, ‘আমি ময়লার বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিষয়টি তুলেছি। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও সাহেব।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন,‘ ময়লা অপসারণের জন্য বাজার কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। কিন্তু ফলাফল পাইনি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘যে স্থানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেই জায়গাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জায়গা। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’


ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে ভ্রমণ পিপাসুদের

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাকে ঘিরেই গড়েছে এ উদ্যান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কামরান পারভেজ, ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের ব্র্যান্ডিং হচ্ছে সিটি অব আর্ট অ্যান্ড কালচার বা শিল্প-সাহিত্যের নগরী। শিল্প-সাহিত্য চর্চার ধারাবাহিক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কারণে এমন ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এ জনপদের শিল্প চর্চার প্রাচীনকাল থেকেই প্রভাব রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন যেমন ব্রহ্মপুত্র পাড়ে বসে ছবি এঁকে বিখ্যাত হয়েছেন, তেমনি বিখ্যাত হওয়ার স্বপ্নে বিভোর তরুণেরাও শিল্প-সাহিত্য চর্চার জন্য রোজ জড়ো হয় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।

প্রাচীন আমলে ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে একটি কথা সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেটি হচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র যেন ময়মনসিংহ নগরের ‘ফুসফুস’। হাজারও কাজে ব্যস্ত মানুষ সমান্য সময় পেলেই স্বস্তির নিশ্বাস নিতে ছুটে যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে। ময়মনসিংহ নগরের পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র এখন আর বর্ষায় উপচায় না। তবে শরতে কাশফুল ঠিকই ফুটে। শরৎ শেষে এখন চলছে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই মৃদু আর কোমল। কাজেই যেন নতুন রূপে সেজেছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়। সকালে হালকা কুয়াশার আস্তরণ ছড়িয়ে থাকে ব্রহ্মপুত্রের বুকে। দুপুরেও রোদ থাকে নরম। নরম রোদে চকচক করছে নদের পাড়ের বালু আর এক চিলতে পানির প্রবাহ।

নদের পাড়েই রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা।

সংগ্রহশালাকে ঘিরে নদের পাড়ে দীর্ঘ উদ্যান। উদ্যানের নামও শিল্পির নামেই। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যান। প্রতিদিন হাজারও মানুষ বেড়াতে যায় সংগ্রহশালর পাশের উদ্যানে। যার এক পাশে বয়ে চলছে ব্রহ্মপুত্র।

ময়মনসিংহ শহর থেকে তিনটি পথে যাওয়া যায় এ সংগ্রহশালা ও উদ্যানে। একটি পথ হচ্ছে কাচিঝুঁলি মোড় থেকে মেহগনি রোড দিয়ে। এ পথে যেতে যেতে চোখে পড়বে শতবর্ষী অসংখ্য গাছ। গাছগুলো দারুণ শীতল ছায়া ছড়িয়ে রেখেছে। এ ছায়ার নিচ ধরেই চলে যাওয়া যায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালার সামনে। সেখানে দাঁড়াতেই হঠাৎ চোখে পরে ব্রহ্মপুত্র। যেন বালুচরের মধ্যে এক চিলতে স্রোতধারা। দুই পাশে বালুর স্তর জমে ব্রহ্মপুত্র ক্ষীণকায় হয়ে পড়েছে। তবে এ হেমন্তে ব্রহ্মপুত্রের ক্ষীণ ধারাও পর্যটককে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। শান্ত নদের বুকে প্রচণ্ড শব্দে মাঝে মাঝেই চলছে ইঞ্জিনচালিত নৌযান। এছাড়া নদের কূলে উদ্যানের দিকে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করে রঙিন কাপড়ের পাল তোলা ছোট ছোট নৌকা। পর্যটকরা নৌকা ভাড়া নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ঘুরে আসতে পারেন। অথবা ব্রহ্মপুত্র নদের চরে বসে সময় কাটাতে পারে।

শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ বা হেমন্ত, সব ঋতুতেই ময়মনসিংহের মানুষ ছুটে যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। একেক ঋতুতে ব্রহ্মপুত্রের যেন একেক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। শীতে জবুথবু হয়ে চায়ের দোকানে বসে গল্প করা যেমন আনন্দের তেমনি বসন্তে অসংখ্য গাছের পাতাঝরা দেখতে যেন আরও ভালো লাগে। বর্ষার সময় গাছের তলে বসে বৃষ্টি দেখার সময়টাও হয় আনন্দের। আর হেমন্তে প্রকৃতি হঠাৎ বদলে যাওয়া রূপ যেন আগন্তৃককে করে তুলে ভাবুক। প্রতিদিন নানা বয়সি অসংখ্য মানুষ যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে।

প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগে থেকেই ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের এ উদ্যানে মানুষ যেতে থাকে। এ উদ্যানের ঘুম ভাঙে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের আনাগোনায়। এরপর ভর দুপুরের নীরবতা ভাঙতে আসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিকালে ও সন্ধ্যায় এখানে নানা বয়সি ও শ্রেণির মানুষে প্রচণ্ড ভিড় করে। সপ্তাহের ছুটি দিনে যেন হাটবারের ভিড়।

মূলত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাকে ঘিরেই গড়ে ওঠেছে এ উদ্যান। জয়নুল ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে যে জায়গায় বসে ছবি আঁকতেন সেখানে রয়েছে তার একটি প্রতিকৃতি ও সংগ্রহশালা। সংগ্রহশালায় রয়েছে জয়নুলের আঁকা অসংখ্য ছবি, ছবি আঁকার উপকরণ ও তাঁর ব্যবহার্য হরেক জিনিস। সংগ্রাহশালাটি সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই খোলা থাকে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি শুক্রবারও বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষই এখানে সময় পেলেই ছুটে যায় ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রে পাড়ে। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় খুব সহজেই যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের এ উদ্যানে।


কাল সশস্ত্রবাহিনী দিবস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌ-ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটির মসজিদগুলো দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দেবেন।

গতকাল বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া তিন বাহিনী প্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ১০১ জন নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক), প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতিরা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টারা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, বাহিনীগুলোর সাবেক প্রধানরা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা, স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাদের উত্তরাধিকারীরা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহীদ সেনাসদস্যদের পত্নীরা উত্তরাধিকারীরা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস খাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

এদিকে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ-জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী খাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ২১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটগুলো অবস্থান নোঙর করা অবস্থায় রাখা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বাংলাদেশ বেতার ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতে পরে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।


চিরকুট লিখে ব্যবসায়ী নিখোঁজ, রেললাইনে মিলল লাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা জেলা প্রতিনিধি

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় চিরকুট লিখে নিখোঁজ হন জিয়াউর রহমান (৪৫) নামে স্থায়ীয় এক টেইলার্স ব্যবসায়ী। পরে তার লাশ পাওয়া গেছে পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলার মাঝপাড়া রেলওয়ে ট্র্যাকের ৯ নম্বর ব্রীজ এলাকায়।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে নিখোঁজ থাকার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ট্রেনে কাটা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জিয়াউর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া ওয়াবদা এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভাঙ্গুড়া বাজারে সেঞ্চুরি টেইলার্স নামে একটি টেইলারিং ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সকালেই দোকানে যান জিয়াউর রহমান। দুপুরে তার ছোট ছেলে মো. ইজাজ হোসেন খাবার নিয়ে দোকানে গিয়ে বাবাকে সেখানে পাননি। আশেপাশে খোঁজ নিয়েও কোনো তথ্য মেলেনি। পরে দোকানের টেবিলে ভাঁজ করে রাখা একটি কাগজে চোখ যায় তার। কাগজটি ছিল একটি চিরকুট, তাতে লেখা ছিল— ‘দোকান-সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করিলাম। কেউ দায়ী নয়’। নিচে লেখা ছিল তার নাম ও তারিখ ১৯/১১/২০২৫।

এই চিরকুট পাওয়ার পর পরিবার ও স্বজনরা চারদিকে খোঁজ চালিয়েও কোনো তথ্য পায়নি। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও শোকের ছায়া।

মৃত জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। টেইলারিংয়ের কাজ করতে সময় লাগত বেশি। এ কারণে তার ছোট ছেলে তাকে প্রায়ই বকাঝকা ও মারধর করত বলে অভিযোগ করেন তিনি। এতে তিনি আরও ভেঙে পড়েছিলেন বলে ধারণা তার।

নিখোঁজের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিকাল সোয়া ৫টার দিকে মাঝপাড়া রেলওয়ে ব্রীজ এলাকায় ট্রেনে কাটা অবস্থায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে তা দেখে পরিবার ও পুলিশ গিয়ে লাশটি জিয়াউর রহমানের বলে শনাক্ত করে।

ভাঙ্গুড়া থানার (ওসি) বলেন, জিয়াউর রহমান দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও তিনি আত্মহননের চেষ্টা করেছিলেন। নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছিল। তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় আটঘরিয়া থেকে তার লাশ পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি রেলপথ-সংক্রান্ত হওয়ায় লাশের তত্ত্বাবধান সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে আগুন, দগ্ধ ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুন লেগে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরের রাখালিয়াচালা এলাকার মোতালেব ওয়ার্কশপে একটি বড় গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কাজ করার সময় লিকেজ থেকে দ্রুতগতিতে গ্যাস বেরিয়ে পাশের চায়ের দোকানে আগুনে ছড়িয়ে পড়ে। মোতালেব ওয়ার্কশপের মালিক মোতালেব হোসেন, চা দোকানদার আলী হোসেন, চায়ের দোকানে বসা সফিকুল ইসলাম ও শামীম আহমেদ, শাহিন অগ্নিদগ্ধ হয়।

ঘটনার পর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় তানহা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেখানে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানান, গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে এ দুর্ঘটনা হয়েছে দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামীণ খেলা, উৎসুক জনতার ভীড়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর বদলগাছীতে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, পাতাখেলা ও হাড়িভাঙার খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বাউল সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার ১৯নভেম্বর বিকেল ৫ টায় উপজেলার ভান্ডারপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে গ্রামীণ এইসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করেন ৫নং কোলা ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

লাঠি খেলার পর অনুষ্ঠিত হয় পাতা খেলা, এরপর হয় হাড়ি ভাঙা। তবে পাতা খেলায় দেখা যায় এক অন্য রকম দৃশ্য। বিভিন্ন বয়সের ছেলেদের পাতা উঠে। তাদেরকে কেউ গামছা দিয়ে পাতা টানায় ব্যস্ত থাকে। এসময় প্রায় ১০ হাজার শিশুসহ নারী পুরুষ খেলাগুলো উপভোগ করেন।

কোলা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল। যিনি সদ্য ঘোষিত নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী।

শ্রমিক নেতা রিপন সরদারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকির হোসেন চৌধুরী, সহ-সভাপতি রেজাউন নবী স্যান্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান ও রবিউল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু রায়হান গিটার, সদস্য নুরুল ইসলাম, মহিলা দলের সদস্য মনিরা সুলতানা, কোলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন।

গ্রামীণ এসব খেলা দেখতে এসেছিলেন ক্ষুদে তিন শিক্ষার্থী মাহি, বৃষ্টি ও ফাতেমা। তারা আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে বলেন, আমরা খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে, ভালোভাবে উপভোগ করলাম। এরকম গ্রামীণ খেলা দেখতে সত্যিই ভালো লাগে।

স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক, সোবহান সহ অনেকে বলেন, আজ থেকে প্রায় ৫-৭ বছর আগে একবার খেলা হয়েছ। ফজলে হুদা বাবুলের উদ্যোগে আজ আবার হলো। গ্রামীণ এই খেলাগুলো দেখতে ভালো লাগে। তাই দেখতে এসেছি।

প্রধান অতিথি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, গ্রামীণ এই আদি খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রতিটি গ্রামীণ খেলার ঐতিহ্য আছে। আমি চাই গ্রামীণ খেলা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম জানুক ও দেখুক। তাই আজকের এই আয়োজন। আশাকরি দর্শকরা খুব সুন্দর ভাবে খেলাগুলো উপভোগ করেছে। আর আমি এলাকায় গ্রামীণ ভেলাগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করবো।


কুমিল্লার আরেক কালের সাক্ষী কাবিলা শাহী জামে মসজিদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কাবিলা এলাকায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় আড়াই শতাব্দী প্রাচীন কাবিলা শাহী জামে মসজিদ। ১৭৮৫ ইং ১২০৬ হিজরী সালে নির্মিত এ মসজিদটি আজও ঐতিহ্য, ইতিহাস ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে এলাকাবাসীর গর্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ২০০৫ সালে পুনঃ নির্মিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাবিলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র দুই শত গজ উত্তরে অবস্থিত এই মসজিদটির কারুকাজ ও নির্মাণশৈলী দেখে যে কেউ একে প্রাচীন মুঘল স্থাপত্যকীর্তি ভেবে ভুল করতে পারে। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির চার কোণে চারটি সুউচ্চ মিনার এর সৌন্দর্যকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে।

স্থানীয়রা জানায়, কাবিল মজুমদার ও হাবিল মজুমদার নামে দু’ভাই ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী জমিদার। তারা ছিলেন অত্যন্ত সৎ, ধর্মপরায়ণ ও মানবসেবায় নিবেদিতপ্রাণ। তাঁদের দানকৃত সম্পত্তির ওপরই গড়ে ওঠে মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, বাজার ও কবরস্থানসহ বহু স্থাপনা। তাদের অন্যতম দানই আজকের কাবিলা শাহী জামে মসজিদ। মসজিদের পাশে রয়েছে বিশাল একটি দীঘি এবং ঐতিহাসিক কাবিলা শাহী কবরস্থান, যা স্থানীয় মানুষের কাছে আজও সমানভাবে গুরুত্ব বহন করে।

মসজিদের সাবেক মোয়াজ্জেম ও সাংবাদিক কাজী মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, কাবিল মজুমদারের নাম থেকেই কাবিলা শাহী মসজিদ নামকরণ। তিনি জমিদার হলেও মানুষের কল্যাণে বিপুল সম্পদ দান করেছিলেন।

কাবিল মজুমদারের এক বংশধর বলেন, আমি তাঁর বারোতম বংশধর। শুনেছি তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। মানুষের কল্যাণে এত সম্পদ দান করেছেন যে, তাঁর মৃত্যুর স্থান বা কবরের অবস্থানও নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারে না।

কালের প্রবাহে হারিয়ে গেছে কাবিল মজুমদারের জমিদারি, নেই তাঁর কোনো প্রতিকৃতি বা নির্দিষ্ট জীবনী। তবে রয়ে গেছে জনগণের কল্যাণে নির্মিত তাঁর সৃষ্টিগুলো; কাবিলা শাহী জামে মসজিদ, বাজার, কবরস্থান ও মানবতার স্মারক নানান স্থাপনা।

অন্যদিকে, অনেক চেষ্টা করেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিপুর গ্রামের ভুইয়া বাড়ির কৃতিসন্তান মো. সামছুল হক ভুইয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কটি ৪ লেনের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে দুর্ঘটনা রোধে দুই লেনের এই সড়কটি চার লেনে উন্নতীকরণ সহ ১১ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে “আর নয় সড়কে মৃত্যু, শান্তি ও নিরাপদ হোক পথচলা” স্লোগান নিয়ে নীলফামারী শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করেন টিআইবি পরিচালিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে মানববন্ধন চলাকালিন সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলমের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মেসবাহুল হক, ইয়েস গ্রুপের আহ্বায়ক তাহমিনুল হক ববী, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, জেলা ট্রাক-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আজম, পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস জেলা শাখার সভাপতি সাকিল ইসলাম, নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী প্রিয়তা সাহা, ইয়েস গ্রুপের এসিজি সমন্বয়ক মো. আব্দুল মোমিন, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু ও নাসিমা বেগম। এছাড়া সনাক, ইয়েস, অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি), গণমাধ্যম প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ নাগরিকবৃন্দ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এসময় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন ইয়েস দলনেতা ফারজানা আক্তার আরিফা।

বক্তারা আরও বলেন, সড়কপথে সুশাসনের অভাব, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাব এবং কার্যকর মনিটরিং না থাকায় দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।


কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

কুমিল্লায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন নতুন জেলা প্রশাসকস মোহাম্মদ রেজা হাসান। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্র্যাট জাফর সাদিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক রেজা হাসান। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসক রেজা হাসান বলেন, আমাদের সামনে একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সেটা হলো নির্বাচন। আমি নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

এ সময় জেলা প্রশাসক রেজা হাসান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য আরো বলেন, যে বিষয়গুলো আপনারা বলেছেন তা শুধু কুমিল্লার নয়, সারাদেশেই এ সমস্যা রয়েছে। আর্থ সামাজিক, স্বাস্থ্য, বর্ডার এলাকা সব জায়গাতে এই সমস্যা রয়েছে। ভূমি, স্বাস্থ্য, যানজট ও শিক্ষা নিয়ে যে সমস্যা তুলে ধরেছেন তা আমরা নোট করেছি। কুমিল্লার সরকারি কর্মকর্তা, প্রবাসী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আমি এগুলাে সমাধান করার চেষ্টা করব।

নির্বাচন নিয়ে পূর্বের বিষয়গুলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করাসহ এবং সবার সহযোগিতা নিয়ে এবারের নির্বাচন হবে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, আপনাদের সংবাদের জন্য আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব এবং আপনারাও আমাকে সহযোগিতা করবেন। অনেক সংবাদপত্রের মধ্যে হয়তো সবার সাথে কথা বলতে পারব না, তবে চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, শহরের দূষন, যানজট, কিশোর গ্যাং, খাদ্যের বিষয়ে যে সমস্যা আছে সেগুলা আমরা সমাধান করার চেষ্টা করব। আপনাদের ও সহযোগিতা লাগবে। শহরের যে জায়গা গুলাতে যানজট হয় সে জায়গায় অটো রিকশাগুলোকে ভাগ করে দেওয়া হবে ড্রেসকোডের ভিত্তিতে।

মহাসড়কের অরাজকতার বিষয়ে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যেন নির্বিঘ্ন থাকে সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব। তবে কোন অসংগতি দেখলে আমাকে জানানোর অনুরোধ করছি। আমি আশা করি আপনাদের সহযোগিতা পাবো।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান, সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত বাবুল, আমার শহর পত্রিকার সম্পাদক গাজিউল হক সোহাগসহ কুমিল্লায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।


এলাকার উন্নয়ন ও জন‌সেবায় রাঙামা‌টির পা‌শে থাক‌তে চাই: জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

রাঙামাটির নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাজমা আশরাফী বলেছেন, সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে জেলার উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমি রাঙামাটির মানুষের পাশে থাকতে চাই।

বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী।

এ সময় তিনি বলেন, রাঙামাটির প্রকৃতি, মানুষ ও সম্ভাবনা সবকিছুই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। সাংবাদিকরা যদি পাশে থাকেন, তবে এই জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে। আমি চাই প্রশাসন ও গণমাধ্যম একসঙ্গে কাজ করুক। সমস্যাগুলো দ্রুত জানাবেন, সমাধানে আমি আন্তরিকতার সাথে কাজ করবো। গণমাধ্যম সমাজের আয়না। আপনারা সঠিক তথ্য তুলে ধরলে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ রুহল আমীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জোবাইদা আকতার, সহকারী কমিশনার মৈত্রী রায়, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপ‌তি আ‌নোয়ার আল হক, সহ- সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছ, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিনসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।

সভায় জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে আরও বলেন, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম, জনসেবা এবং যেকোনো উদ্যোগ সম্পর্কে মানুষের কাছে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে আপনাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই রাঙামাটি উন্নয়ন ও সেবার ক্ষেত্রে একটি মডেল জেলা হিসেবে পরিচিত হোক।

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাজমা আশরাফীকে রাঙামাটির নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।


ইবিতে নবম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মচারীদের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইবি প্রতিনিধি

নবম গ্রেড বাস্তবায়ন নিয়ে প্রহসনের প্রতিবাদে ও ১৫ ডিসেম্বর-এর মধ্যে বৈষম্য নিরসনপূর্বক নবম গ্রেড পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মচারীরা। বুধবার প্রশাসন ভবনের সামনে বাংলাদেশ আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে ১১-২০ (গ্রেড) এর সব কর্মচারী অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি। এতে কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেড বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ও ইবি জিয়া পরিষদের সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ২০ লাখ কর্মচারীরা ফ্যাসিস্টের আমলে সঠিক পে-স্কেলে বেতন পায়নি। ফ্যাসিস্ট নির্মূলের পরও একই নিয়ম চলমান রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে নবম গ্রেড পে-স্কেলে বেতন প্রদানের জন্য।’

তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সঠিক সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে আমরা সকল কর্মচারীরা সম্মিলিত হয়ে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিব। দ্রুত দাবি মেনে নেয়ার জন্য আমরা একটি স্মারকলিপি সরকারের কাছে আমাদের উপাচার্য স্যারের মাধ্যমে পৌঁছে দিব।’


চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৬০ লট পণ্যের নিলাম কাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গা দখল করে দীর্ঘদিনের অঘোষিত বা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ৬০ লট পণ্যের অনলাইন নিলাম অনুষ্ঠিত হবে কাল বৃহস্পতিবার। একই দিনে শেষ হবে নিলামের আরেক সেটের ৪৯ লট পণ্যের পরিদর্শন। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে নিলামের প্রস্তাবিত মূল্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রস্তাবিত মূল্য নেওয়া হবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ৬০ লট পণ্যের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্লান্টের যন্ত্রপাতি, হেভি ডিউটি বুলডোজার, লেডার ও ভারী যন্ত্রপাতির স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন ধরনের ক্যাটারপিলার যন্ত্রাংশ, কলারড কোয়াগুলাম পাউডার, ব্যাটারি কার্বন, ডিটারজেন্ট কাঁচামাল, পোশাকশিল্পে ব্যবহৃত ফ্লিস কাপড়, পলিয়েস্টার ফেব্রিক, নন–ওভেন ফেব্রিক, ফিনিশিং এজেন্ট ও টেক্সটাইল কেমিক্যাল, নন–ইউনিফর্ম চামড়া ও লেদার স্ক্র্যাপ, বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, স্টিকার, লেবেল, মার্কিং পেপার, এলুমিনাস সিমেন্ট, ডোলোমাইট লাম্পস, কাঠ ও কাঠের বোর্ড, হাইজিন আয়রনিং স্টার্চ ও হাইজিন ফ্রেশনার সলিউশন, রাবার শিট ও ফোম শিট, নেইল পলিশ, প্রসাধনী সামগ্রী, বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিক বোতল, বোতলজাত দ্রব্যের কাঁচামাল পলিপ্রোপিলিন, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত টাইটেনিয়াম ডাই–অঙাইড, জিপসাম সার, মেশিনারি পার্টস, কম্পিউটার কুলিং ইকুইপমেন্ট, এয়ার হ্যান্ডলিং ইউনিট, ওয়েস্ট এন্ড স্ক্র্যাপ মেটাল, যানবাহন সংশ্লিষ্ট মোটরসাইকেল/ কার কভার, স্পিকার, রেডিও যন্ত্রাংশ, শিশুদের খেলনা বেবি টয়স, পোশাক পণ্যে ব্যবহৃত রং, ডাই ও কেমিকেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত আরও বহু ধরনের স্ক্র্যাপ, কাঁচামাল ও প্রস্তুত পণ্য রয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসাইন বলেন, ‘আমদানিকারকরা সময়মতো পণ্য না তুললে তা ইয়ার্ডে পড়ে থাকে। নিলাম ছাড়া এসব পণ্য নিষ্পত্তির আর কার্যকর উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘এ নিলামের পাশাপাশি ৪৯ লট পণ্যের আরেকটি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ২৭ নভেম্বর। এই পণ্যগুলো প্রদর্শনের সময়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এতে কাপড়, মেশিনারির বিভিন্ন গার্মেন্টস খাতের পণ্য রাখা হয়েছে ‘

উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেইনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।


banner close