শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

রুমায় সোনালীর পর থানচিতে দুই ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা

রুমার সোনালী ব্যাংক শাখায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কর্তৃক তছনছ করা ব্যাংকের আসবাবপত্র ও ব্যবস্থাপকের চেয়ার-টেবিলের অবস্থা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৩ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:৪০
প্রতিনিধি (রুমা) বান্দরবান
প্রকাশিত
প্রতিনিধি (রুমা) বান্দরবান
প্রকাশিত : ৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:১৭

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক লুটের পর ব্যাংকটির থানচি উপজেলা ও সেখানকার কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে থানচি বাজার ঘেরাও করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।

থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অং প্রু ম্রো গণমাধ্যমকে বলেন, বেলা একটার দিকে থানচি সদরের শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা যা পেয়েছে তা নিয়ে চলে যায়। এরপর তারা আবার ওই তিন গাড়িতে করে শাহজাহানপুরের দিকে চলে।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, সোনালী ব্যাংকের থানচি শাখায় হামলার খবর পেয়েছি। পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে। তারা কাজ করছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ৭০-৮০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে পাহারারত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করতে থাকে। ব্যাংকে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার ব্যাংকের এ শাখার ভল্টে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ছিল। তবে সেই টাকা লুট হয়েছে কি না, এখনো জানা যায়নি।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, স্থানীয়দের ধারণা এ ঘটনা নব্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়ে থাকতে পারে।

ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে রুমা উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় ৭০/৮০ জনের আধুনিক অস্ত্র সশস্ত্র সজ্জিত সশস্ত্র সদস্যরা রুমা সদরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের গ্রীল ভেঙ্গে প্রবেশ করে। তারপর ব্যাংক ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তবে আনুমানিক দেড় থেকে দুই কোটি টাকা অনুমান করা হলেও কি পরিমাণ টাকা লুট হয়ে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ডাকাতির সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে দশটি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়া হয়। ব্যাংকের অদূরে থাকা আনসার ব্যারেক থেকে চারটি অস্ত্র ও ৩৫টি গুলি ছিনিয়ে নেয়-সশস্ত্র এ সন্ত্রাসীরা। ওই সময় পুলিশ ও আনসারকে মারধর করে। ওই সময় ব্যাংকের লাগুয়া থাকা অফিসার কোয়ার্টারে অবস্থান করা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন কর্মামচারী মারধরের শিকার হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, এসময় উপজেলা মসজিদ ঘেরাও করে মসুল্লিদের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। সশস্ত্র সদস্য একটি অংশ উপজেলা পরিষদ এলাকায় ব্যাংক থেকে প্রায় একশ গজ দুরে আলমগীর চা দোকানের সামনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে প্রহরা দেয় সশস্ত্র সদস্যরা। তখন রুমা বাজার দিক থেকে আসা সাধারণ যাত্রী ও মোটরবাইকসহ যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে লোকজন বেধরক পিটিয়েছে।

একইভাবে উপজেলা পরিষদের পশ্চিম দিকে সেগুন বাগান নিচে ছোট্ট কালভাটের পাশে রাস্তা গতিরোধ করে মোটরবাইক ও যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিস যা থাকে সব ছিনিয়ে নিয়ে সবাইকে মারধর করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এঘটনার ভুক্তভোগীরা জানায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে আধুনিক অস্ত্র ও মুখে কাপড় ঢাকা ছিল। তাই তাদের চেনা না গেলেও বাংলা ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি তাদের মধ্যে ফিশফিশে বম ভাষায় কথোপকথনের ভাষার সুর শুনতে পেরেছেন- অনেক ভুক্তভোগী ও মারধরের শিকার হওয়া লোকজন।

আর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠেছে - কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর বিরুদ্ধে । তবে তাৎক্ষণিক কেএনএফ এর দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এই ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে, এলাকায় আতংক বিরাজ করায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

অন্যদিকে একটি সূত্র জানায় ব্যাংকে টাকা সংরক্ষণ করা লোহার বাক্সের তালা খুলতে পারেনি। মূলত এ কারণে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোঃ নেজাম উদ্দিনকে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম বিভাগের জিএম ও মুসা খান।

ঘটনার সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের জড়িতের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নানা ইঙ্গিতে নামগুলো উঠে আসছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি জানানো হবে।

ঘটনার পর থেকে ভেঙে পড়েছেন অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের স্ত্রী বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইশফাত। ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের বড় ভাই চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান উদ্দিন বলেন, আমি এখন রুমায় আছি। ভাইয়ের এখনও কোনো খবর পাইনি। পরিবার থেকে এখন আলাদাভাবে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


পালিয়ে যাওয়া ৪৮১ কয়েদির আত্মসমর্পণ, লুট করা ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে ৮২৬ আসামিসহ ছিনিয়ে নেওয়া ৯ জঙ্গির মধ্যে জুয়েল ভুইয়া (২৬) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুর জেলার কাপাশিয়া উপজেলার বরুয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার সকালে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

এ নিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া ৯ জঙ্গির মধ্যে নারীসহ দুজনকে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, একজনকে নারায়ণঞ্জের সোনারগাঁও থেকে র‌্যাব এবং অপরজনকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি জুয়েল ভুইয়া শিবপুর উপজেলার কাজিরচর গ্রামের মো. আবুল ভুইয়ার ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশে চলমান সহিংসতার মধ্যে দুর্বৃত্তরা ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকেলে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। প্রায় আট থেকে ১০ হাজার নাশকতাকারী ভেলানগর মোড় ও উপজেলা পরিষদের মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়ে দুই দিক থেকে আক্রমণের চেষ্টা চালান। তারা আগ্নেয়াস্ত্র, দা, চাপাতি, ককটেল, ইট নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনার দিকে এগোতে থাকেন। পরে নাশকতাকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়, ছোড়া হয় গুলি। পরে নাশকতাকারীরা বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা কারাগারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ও গুলি লুট করে এবং ৯ জঙ্গিসহ ৮২৬ আসামিকে ছেড়ে দেন। এ সময় তারা লুট করা অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালান। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিনি আরও বলেন, নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও আনুমানিক সাত হাজার গুলি লুট হয়। এর মধ্যে ২০টি চায়না রাইফেল, ১৫টি রাইফেল এবং ১০টি শর্টগানসহ এ পর্যন্ত ৪৫টি অস্ত্র, এক হাজার ৯১টি গুলি, ২২৭টি গুলির খোসা, ২০টি ম্যাগজিন ও ১০টি হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি কারাগারে হামলার ঘটনায় দুটি মামলাসহ পৃথক ১১টি মামলায় ১৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর লুটকৃত অস্ত্রের সন্ধান দিতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত আইনজীবী সমিতি এবং জেলা পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে যাওয়া ৪৮১ জন কয়েদি আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের গাজীপুরের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য গুরুতর আহতসহ ৩৩ জন আহত হয়েছেন।

বিষয়:

ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে বেড়েছে যান চলাচল

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০২
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)

কারফিউ শিথিল হওয়ায় প্রায় এক সপ্তাহ পর ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তবে গত কয়েক দিনে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায়ে ধস নেমেছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে ১৪ হাজার ৭৭৮টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা।

১৯ জুলাই ১৩ হাজার ৯৮৬টি পরিবহনের বিপরীতে টোল আদায় ১ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৫০ টাকা, ২০ জুলাই ৮ হাজার ৮৪৩টি পরিবহনের বিপরীতে ৭১ লাখ ৬ হাজার ৪০০ টাকা, ২১ জুলাইয়ে ৭ হাজার ৩০৬টি পরিবহনের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ৫৯ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ টাকা, ২২ জুলাইয়ে ৯ হাজার ৩১৬টি পরিবহনের বিপরীতে ৭৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৫০ টাকা ও ২৩ জুলাইয়ে ১১ হাজার ৯০৭টি পরিবহনের বিপরীতে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ টাকা।

সবশেষ গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত ১২টা থেকে বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ১২ ঘণ্টায় ৭ হাজার ২৭৭টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৬১ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, ‘কয়েক দিনের তুলনায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু কোটা সংস্কারের আন্দোলন ও কারফিউ জারির কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম যানবাহন পারাপার হয় এবং টোল আদায়ও কম হয়েছে।’


চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের ক্ষতি দেড় হাজার কোটি টাকা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কাস্টমস জটিলতার কারণে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি।

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গড় হিসাবে প্রতি মাসে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। প্রতিদিন গড়ে ২১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। এই হিসাবে গত ৭ দিনে ১ হাজার ৫১৬ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।

ইন্টারনেট না থাকায় কাস্টমসের কম্পিউটারগুলোতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড (পণ্যের আমদানি-রপ্তানির আধুনিক শুল্কায়ন পদ্ধতির আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার) অচল হয়ে পড়েছিল, যার ফলে শুল্ক আদায় বন্ধ হয়ে যায়।

যদিও মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড চালু করা সম্ভব হয়েছে, তবে এটি শুধু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে সীমাবদ্ধ এবং বাইরের কম্পিউটারে এই সফটওয়্যার খোলা যাচ্ছে না। ফলে নতুন কোনো পণ্য অন্তর্ভুক্তি করা যাচ্ছে না এবং পণ্যের জাহাজীকরণ এখনো বন্ধ রয়েছে।

দেশব্যাপী ইন্টারনেট না থাকায় ১৮ জুলাই রাত থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও কিছু আমদানি পণ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং ১৩টি জাহাজকে মাতারবাড়ী ও চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তবুও চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সুলতানুল আরেফিন জানান, বন্দরের নিজস্ব সফটওয়্যার এবং কাস্টমসের সঙ্গে যুক্ত সিটিএমএস পদ্ধতিও অনলাইননির্ভর হওয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বন্দরে কনটেইনার জটের আশঙ্কা থাকলেও ম্যানুয়ালি পদ্ধতিতে কিছু আমদানি পণ্য খালাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বন্দর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয় এবং প্রতি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বন্দরের চার্জ ৪৫ মার্কিন ডলার। রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণ না হওয়ায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, যার ফলে বন্দরের আয় প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কোটি টাকা কমেছে। গত ৭ দিনে এই ক্ষতি প্রায় ৩৫ কোটি টাকা হতে পারে।

সামগ্রিকভাবে, চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের ক্ষতি প্রায় ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।


পিকনিকের ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের ঘিওরের ধলেশ্বরী নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঘিওর উপজেলার কুশুন্ডা এলাকার ধলেশ্বরী নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন, সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের বাহিরকামতা এলাকার দানেজ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও সাটুরিয়া সদর ইউনিয়নের উত্তর কাউন্নরা এলাকার মৃত সেলিমের ছেলে রাসেল মিয়া (১৪)। এর আগে বুধবার ট্রলার ডুবে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কামতা এলাকার সাহেব আলীর ছেলে মিলন হোসেন (১৫) মারা যান। মিলন হোসেন স্থানীয় জান্না আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া কামতা এলাকার ৬০ ব্যক্তি সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতু এলাকায় নৌ-ভ্রমণে যান। নৌ-ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২টার দিকে ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কুসুন্ডা এলাকার ধলেশ্বরী নদীতে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সাথে ধাক্কা লেগে পিকনিকের ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ৫৮ জন সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও দুজন নিখাঁজ হন। এরপর ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে পাড়ে ওঠা মিলন হোসেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ঘিওর থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস জানান, নিখোঁজ হওয়ায় উদ্ধার নিহতের মরদেহ মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ বিষয়ে আরিচা নদী বন্দর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর নাদিম মাহমুদ বলেন, ঘটনাস্থলের আধা কিলোমিটার দূরে বৃহস্পতিবার ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ রফিকুল ইসলাম ও রাসেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

বিষয়:

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফের দুই সদস্য নিহত

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকালে রুমা উপজেলার সৈকত পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, বান্দরবানের রুমা উপজেলার সৈকত পাড়া এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফের দুজন সদস্য নিহত হয়েছে। এ সময় অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্য সরঞ্জমাদি জব্দ করা হয়।

বিষয়:

ঠেকানো যাচ্ছে না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:১৪
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। রাখাইন এলাকা থেকে বিতাড়িত শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার। দালালদের মতে প্রতিদিন এ সংখ্যা হাজারের ওপরে। সে হিসাবে নতুন করে ৫০ হাজার থেকে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে দালালদের সহযোগিতায় গোপনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।

মিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চলমান সংঘাতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা এখনো থামেনি। রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশের দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ২০-৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে গোপনে অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করেই যাচ্ছে এসব দালালচক্র।

এদিকে, অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক করে রোহিঙ্গাদের দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়াও অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের শতাধিক নৌকাকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন কোস্টগার্ড ও বর্ডারগার্ড বিজিবি।

সীমান্তে বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নজরদারি কম এমন পয়েন্ট দিয়েই রাতের আঁধারে দালালরা রোহিঙ্গাদের এ দেশে আনছেন। বিনিময়ে নিচ্ছেন জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তাই সীমান্তে বিজিবির কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও ঠেকানো যাচ্ছে না নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, প্রাণের ভয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ওপারে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় তাদের মতো আরও অনেকে এপারে চলে আসার পথ খুঁজছে। মংডুর নলবাইন্যা ও মেরোংলা এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে আরাকান আর্মি ২০০টি ঘরে আগুন দিয়েছে। এ সময় তাদের গুলিতে ২০ জন রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছে। অনেকে মারাও গেছে। প্রাণে বাঁচতে তারা নাফ নদ পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জান্তা বাহিনী আগে এসব এলাকায় তাণ্ডব করেনি। এখন মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি বেশি নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি। তাদের দলে যোগ না দিলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের। নইলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের সুযোগকে ব্যবহার করে সীমান্তের দালালরা অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। আমরা সেসব দালালদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে যাতে নতুন করে রোহিঙ্গা দেশে অনুপ্রবেশ না করে।

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আটকের পর মিয়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড; কিন্তু ফেরত পাঠানো রোহিঙ্গারা কৌশলে আবারও টেকনাফ সীমান্তে ভিড় করছে নানান কৌশলে। ফের ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশে। তারা কিছুতেই ফিরে যেতে চাইছে না মিয়ানমারে। রাতের আঁধারে কারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে তাও বোঝা যাচ্ছে না বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর পক্ষ থেকে। তারপরও তারা রোহিঙ্গা প্রবেশ রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি কত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে সে-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য কোনো কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তের বিশাল একটি অংশজুড়ে রয়েছে জলপথ। এ জলপথই মূলত অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের মূল জায়গা। রোহিঙ্গারা এ ক্ষেত্রে নাফ নদী ব্যবহার করছে। তারা দুই পারের দালালদের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে খুব সহজেই এ দেশে ঢুকে পড়ছে।

শাহপরী দ্বীপের স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কিছু দালাল প্রতিদিন তাদের নিজস্ব ট্রলারে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যাদের ট্রলার নেই তারা ওপার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দায়িত্বে টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করাচ্ছেন।

রোববার রাতে গোপনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন মনির হোসেন ও হোসনে আরা নামের দুই রোহিঙ্গা। তারা জানান, রাখাইন রাজ্যে সুএজাতে তাদের গ্রাম। আরাকান আর্মি ও সরকার বাহিনী বিমান হামলা করে তাদের গ্রাম ধ্বংস করে ফেলছে। তাদের গ্রামের অনেক মানুষ মর্টার শেলের আঘাতে মারা গেছেন। রোহিঙ্গাদের সব গ্রামে আরাকান আর্মি ঢুকেছে। তারা এক মাস আগে গ্রাম খালি করে দিয়েছে। তাদের অনেকেই বাড়ি-ঘর ছেড়ে দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের ওপর অনেক নির্যাতন করছে আরকান আর্মি।

অনুপ্রবেশকারী মনির হোসেন জানান, ‘আরকান আর্মি রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করছে বলে ফেসবুকে প্রচার করে যাচ্ছে; কিন্তু তারাই চায় আমরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাই। তাই তারা বেশি নির্যাতন করছে আমাদের ওপর। তাই প্রাণে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে চলে যাই অন্য জায়গায়। সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে চলে আসি। তারপর জোবাইর নামক এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৫ লাখ মিয়ানমারের টাকা দিয়ে কথাবার্তা ক্লিয়ার করি। আসার জন্য এক দিন অপেক্ষা করি চরে। পরদিন নৌকা করে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে চুরি করে শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার পাড়ায় উঠি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দালালরা ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময় টেকনাফের অরক্ষিত জায়গা দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭ জন দালালের নাম পাওয়া গেছে যারা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছে সাবরাংয়ের মুন্ডার ডেইলের দানু মেম্বার, আব্দুল আমিন, শহিদুল ইসলাম, নবী হোসেন, মনজুর, মৌলভী রফিক, শামসু তেলের দোকানদার, বড়ইতলীর রোবেল, শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার শামসুল আলম প্রকাশ শামিম হাসু, শাহপরীর দ্বীপ উত্তরপাড়া মামুন, নাইথ্যংপাড়ার শামসুল আলম, মো. জাকের, কবির আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, মো. ইউনুছ ওরফে আঙ্গুলী, মো. ইউনুছ ওরফে ইনাইয়া, বড়ইতলী গ্রামের আমীর হোসেন, ফরিদ উল্লাহ, সাবরাং মগপাড়ার আবদুল্লাহ, মো. ইসমাইল ওরফে লেজা, রাসেল, মো. ইব্রাহীম, জিনাপাড়ার আরাফাত, শাহপরীর দ্বীপের করিম উল্লাহ, সানা উল্লাহ, শামশুল আলম, নুর মোহাম্মদ, জোবাইর সাইফুল ইসলাম, মো. শফিক, মুহাম্মদ মান্নান, করিম উল্লাহ, নজির আহমেদ, মো. শফিক, মো. ফারুক, মো. জয়নাল, নুর হোসেন ও মো. সাদ্দাম প্রমুখ। পুলিশের মানব পাচার তালিকায়ও এদের নাম রয়েছে। আছে অনেকের নামে মানব পাচার আইনে মামলাও।

এসব দালাল ২১টি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে। পয়েন্টগুলো হলো- টেকনাফ নাইট্যংপাড়া, জাদিমুড়া, কেরুনতরী, বরইতলী, চৌধুরীপাড়া, তুলাতলী ঘাট, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং মগপাড়া, লেজিরপাড়া, আচার বনিয়া, জিনাপাড়া, মুন্ডার ডেইল, কচুবনিয়া, খুরের মুখ, মহেষখালীয়াপাড়া, বাহারছড়া ঘাট ও শাহপরীর জালিয়াপাড়া, দক্ষিণপাড়া, জালিয়াপাড়া ও গোলারচর। এসব পয়েন্ট একাধিক মানব পাচার মামলার দালালরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

তবে দালালদের বিষয়ে বিজিবি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয়। অবশ্য সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা। তিনি জানান, ‘সীমান্তে কড়া পাহারা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ রোধ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দালালদের বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখব।

দালালের বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি তদন্ত আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা শুনেছি তবে আমাদের নজরে আজও আসে নাই। এর আগেও দালালদের আটক করে মামলা রুজু করে আদালতে পাঠিয়েছি। যদি কোনো দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

বিষয়:

সিলেট সীমান্তে গুলিতে নিহত ২ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর হয়নি

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে ভারতের খাসিয়া সম্প্রদায়ের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ ২৪ ঘণ্টায়ও হস্তান্তর হয়নি। তাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে বিজিবি ও বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে পতাকা বৈঠক চলছে বলে আজ সোমবার বিকালে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ। নিহত দুই যুবক হলেন একই উপজেলার কালীবাড়ি গ্রামের আলী হোসেন (৩০) ও কাওসার আহমদ (৩২)।

আজ সোমবার বিকালে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, দুই যুবকের লাশ এখনো ভারতে আছে। তাদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা আলোচনা করছেন। দেশে আনার পর পুলিশ পরবর্তী আইনি কার্যক্রমে অংশ নেবে। গত রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের ভারত সীমান্ত পিলার নম্বর-১২৫৩-এর কাছে ‘ভারতীয় খাসিয়াদের’ গুলিতে আলী ও কাওসার নিহত হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আলী হোসেন, কাওসার আহমদ ও নবী হোসেন সীমান্তের ওপার থেকে পণ্য নিয়ে আসার জন্য রোববার কোনো একসময় অবৈধভাবে ভারতের ভেতর প্রবেশ করেন। বিকাল ৩টায় খবর পাওয়া যায় ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে আলী ও কাওসার নিহত হয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর গুরুতর আহত হয়ে ফিরে আসেন নবী হেসেন।

উত্তর রনিখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফয়জুর রহমান বলেন, ভারত সীমান্ত এলাকায় গুলিতে নিহত দুই যুবকের লাশ আজ বিকাল পর্যন্ত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়নি। সকাল থেকে বিজিবি ও বিএসএফ কর্মকর্তাদের বৈঠক চলছে। অন্যদিকে গুলিতে আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।

ইউপির চেয়ারম্যান আরও বলেন, স্থানীয় লোকজনের বাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় কাঠ সংগ্রহ করতে প্রায়ই ভারতের ভেতরে যাওয়া-আসা করেন। আলী হোসেন ও কাওসারও সেভাবেই সেখানে গিয়ে থাকতে পারেন।


কুমিল্লায় জোড়া খুনের ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গিয়াস উদ্দিন ও জামাল হোসেনের খুনের ঘটনায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করেও জরিমানা করেছেন আদালত।

আজ সোমবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- তোফায়েল আহমেদ তোতা, কামাল হোসেন, মো. মামুন, আলমগীর হোসেন, বাবুল ও হারুনুর রশিদ। যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিরা হলেন- হায়দার আলী, আবদুল মান্নান, জামাল হোসেন, আবুল বাশার, জাকির হোসেন, আবদুল কাদের, আবদুল কুদ্দুস।

কুমিল্লা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘২০১৬ সালে ১২ আগস্ট রাতে আসামিরা গিয়াসউদ্দিন ও জামালকে হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহত গিয়াসের ছেলে মেহেদী হাসান ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারকার্যে আসামিদের জবানবন্দি ও ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।


প্রধানমন্ত্রী যাদের কাছে নিয়েছেন, বেশির ভাগই বেঈমানি করেছে: সুমন

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যাদেরকে কাছে নিয়েছেন, মায়া করেছেন; বেশির ভাগই প্রতারণা ও বেঈমানি করেছে। আজ সোমবার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী থেকে শুরু করে কোন পদে নাই, এরা কিছুদিন ক্ষমতা পেলেই গণভবনে ঢুকে। শেখ হাসিনা একটু আদর করলেই মনে করে তারা ব্ল্যাঙ্ক চেক পেয়ে গেছে। এখন কিছু টাকা কামানো যায় কিনা, সবাই কিন্তু না। এটা কিন্তু নেত্রীকে বেশিদূর আগাতে দেওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। তবে কালকে যেভাবে শক্ত করে বলেছেন এটা আমার কাছে বড় পাওয়া। এই যুদ্ধটাই করতে করতে আমি সংসদ সদস্য হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পাওয়ার আশা করে এমপি সুমন বলেন, নেত্রী পাশে থাকলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স না, টলারেন্স কমালেই হবে। উনি শক্ত হলেই দুর্নীতিবিরোধী পর্যায়ে যেতে বেশিদিন লাগবে না। আমরা যদি ভালো করে কিছু লোককে ধরতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার অনেক কাছে চলে যেতাম।


সমুদ্রে গোসলে নেমে পর্যটক নিখোঁজ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারে সাগরে গোসল করতে নেমে মো. রাহাদ (১৮) নামে এক পর্যটক নিখোঁজ হয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের মাঝামাঝি ডিভাইন রিসোর্ট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ রাহাদ ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার আলহেরা কমিউনিটি সেন্টার এলাকার আলী আকবরের ছেলে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সোমবার সকালে খালা-খালুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাহাদও কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। তারা হোটেলে ওঠার পর সৈকতে ঘুরতে বের হন। সৈকতে ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে খালাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্টের মাঝামাঝি ডিভাইন রিসোর্ট সংলগ্ন এলাকায় সাগরে গোসলে নামে। এতে স্রোতের টানে তারা ভেসে যেতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, এসময় সেখানে উপস্থিত লোকজন ৩ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও রাহাদ তালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জেটস্কি নিয়ে উদ্ধারে নামলেও রাহাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপরও সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে তার সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়।

ট্যুরিস্ট পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, নিখোঁজের সন্ধানে বিচকর্মী ও লাইফ গার্ড কর্মীদের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।

বিষয়:

সিরাজগঞ্জে ১১ দিন ধরে পানি বিপৎসীমার ওপরে

৩০ হাজার গবাদিপশু পানিবন্দি
ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০৪
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি ১১ দিন ধরে বিপৎসীমার ওপরেই রয়েছে। গত তিন দিন ধরে পানি ধীরগতিতে কমলেও এখনো বইছে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। অনেক স্থানে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, মাঠ ও নিচু এলাকাসহ ফসলি জমি থেকে পানি নামেনি। ফলে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে।

চলতি বন্যায় মানুষের মতো গবাদিপশুও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার গবাদিপশু এখন পানিবন্দি। এদের পলিথিন কিংবা কাপড়ের তৈরি ছাউনি তৈরি করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে রাখা হয়েছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় খাবারের সংকটসহ নানা দুর্ভোগে রয়েছে বানভাসি মানুষ।

গতকাল রোববার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ৬ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

রঞ্জিত কুমার সরকার আরও বলেন, উজানের ঢলে যমুনায় যেভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে সেভাবে কমছে না। শুক্রবার থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি কমায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এ মুহূর্তে পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই।

বন্যাকবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরাঞ্চলের সব জায়গা এখনো পানির নিচে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বন্যার কারণে তারা ১১ দিন ধরে কর্মহীন। ফলে তিন বেলা ঠিকমতো খাওয়ার উপায় বেশির ভাগ মানুষের নেই। অনেকেই গবাদিপশুর সঙ্গে ছাপড়া তুলে থাকছেন। ফলে ওই সব স্থান নোংরা হয়ে পড়েছে। অনেকের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকের হাত-পায়ে পানিবাহিত চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। এসব বানভাসির মধ্যে বিশুদ্ধ পানিসহ তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক হাকিম শেখ বলেন, ‘ঘর-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাট পানিতে তলাইয়া গেছে। গরু-বাছুর নিয়া বিপদে পড়েছি। বাড়িতে রান্না করতে পারি না। সব জাগাত পানি। আমাদের থাকার জাগা নাই, গরু-ছাগল রাখব কোনে। ঠিকমতো গরু-ছাগলের খাবারও খাওয়াতে পারছি না। সব মিলে বিপদে রয়েছি।’

একই উপজেলার হাটপাচিল গ্রামের করিমন বেগম বলেন, ‘বন্যার পানিতে বাড়ি ভেঙে গেছে, সন্তানরাও দূরের গ্রামে চলে গেছে। আমরা দুই বুড়ো-বুড়ি যাওয়ার কোনো জায়গা না পেয়ে নদীর পাড়েই ছাউনি বানিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি। বৃষ্টিতে খুব কষ্ট হয়েছে। তার ওপর ঘরে কোনো খাবার নেই।’

গত তিন দিন ধরে পানি কমতে শুরু করলেও এখনো পানিবন্দি অবস্থায় দিন পার করছে জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ১ লাখ মানুষ। সড়কে পানি থাকায় ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও শতাধিক তাঁত কারখানা। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার কৃষক ও শ্রমজীবীরা।

সিরাজগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার গবাদিপশু পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কাজিপুর, সদর ও চৌহালী উপজেলায় বেশি। চরাঞ্চলে নিচু এলাকার ঘাস পানিতে তলিয়ে গেছে। এ জন্য সমস্যা হচ্ছে। তবে যমুনার পানি কমতে থাকায় কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। আমরা তালিকা করছি, যাতে প্রান্তিক ও দরিদ্র খামারিরা গবাদিপশুর খাদ্য পায়। গবাদিপশু যেন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত না হয়, এ জন্য আমরা পাঁচটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা নিয়মিত বানভাসি কৃষক ও খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৩০৬টি পরিবারের ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৪ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এখনো ১ হাজার ১৬৭ টন চাল, ২০ লাখ টাকা ও ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুত আছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বন্যায় জেলার সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নৌকা ডুবে চারজন ও পানিতে ডুবে চারজন মারা গেছেন।


পেট্রাপোলে সন্ধ্যার পর বাণিজ্য বন্ধ করল ভারত, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০৪
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে দুই দেশের সিদ্ধান্ত ছাড়াই সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ করল ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ১০ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। এতে পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যজটের কবলে পড়তে যাচ্ছেন আমদানিকারকরা।

গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে এই নিয়ম শুরু করেছে ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ এর আগের দিন ও রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলেছে দুই দেশের বন্দরের মধ্যে।

এ সিদ্ধান্তের কারণ পেট্রাপোল পোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছে বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার পর্যন্ত পর্যন্ত কোনো খবর জানায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বন্দর সূত্র জানায়, বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট দুই দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বেনাপোল ও পেট্রাপোলের মধ্যে শুরু হয় ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য পরিষেবা। এর আগে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ২৪ ঘণ্টা পণ্য পরিবহনের সুযোগে রাত-দিন, এমনকি জরুরি মুহূর্তে শুক্রবারও আমদানি- রপ্তানি ও পণ্য খালাস কার্যক্রম চলত। এতে দৈনিক আমদানির পরিমাণ ৩০০ ট্রাক থেকে বেড়ে ৫০০ ট্রাক পর্যন্ত হয়। বছরে রাজস্ব আয় ৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য, শিল্পকলকারখানার কাঁচামালসহ বিভিন্ন জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ছে দুই পারের বন্দরে।

পণ্যবাহী ট্রাকচালক মিঠু জানান, তিনি রপ্তানি পণ্য নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বেনাপোল বন্দরে আসেন। সন্ধ্যার পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পণ্যবাহী ট্রাকের গেটপাস না দেওয়ায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ঢুকতে পারেননি।

কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, এ নিয়ম চলতে থাকলে পচনশীল খাদ্যদ্রব্য নিয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। হয়তো এ জাতীয় পণ্য আমদানি অনেকাংশে কমে যাবে। সরকার হারাবে রাজস্ব। বাড়বে বাণিজ্য ঘাটতি।

বেনাপোল বন্দরের আমদানিকারক ইদ্রিস আলী বলেন, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্য থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুবিধা উঠে গেলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তারা স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি। বর্তমানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে। আমরা পুনরায় ২৪ ঘণ্টার বাণিজ্য সেবা বন্ধের কারণ জানতে চেয়ে পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসার চেষ্টা করছি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত জানানো হবে।’


জামালপুরে বন্যার পানিতে গোসলে নেমে চারজনের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালুচর এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার বিকেল ৫টায় এ ঘটনা ঘটে। মেলান্দহ থানার ওসি রাজু আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন দক্ষিণ বালুচর এলাকার দিশা আক্তার (১৭), সাদিয়া (১০), খাদিজা (১০) ও রোকশানা (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বিকেলে দক্ষিণ বালুচর এলাকার পাশাপাশি বাড়ির তিন শিশু, এক কিশোরী ও এক গৃহবধূ ফসলি জমিতে বন্যার পানিতে গোসল করতে যান। গোসল করার একপর্যায়ে হঠাৎ করেই চারজন পানিতে তলিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় দূরে থাকা এক কিশোরী তাদের তলিয়ে যাওয়া দেখে দৌড়ে বাড়িতে এসে ডাক-চিৎকার করে খবর দেন। খবর পেয়ে লোকজন গিয়ে দেখেন মরদেহ পানিতে ভেসে উঠেছে। এ সময় বেঁচে ফেরেন মারিয়া (১২) নামের এক শিশু।

স্থানীয়রা জানান, অল্প পানিতেই সবাই গোসল করতে গিয়েছিল। এই পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা একেবারে আশ্চর্যজনক। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার দিশার বিয়ে হওয়ার কথা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ আলী বলেন, ‘দুপুরে এমন খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’


banner close