বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক লুটের পর ব্যাংকটির থানচি উপজেলা ও সেখানকার কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে থানচি বাজার ঘেরাও করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।
থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অং প্রু ম্রো গণমাধ্যমকে বলেন, বেলা একটার দিকে থানচি সদরের শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা যা পেয়েছে তা নিয়ে চলে যায়। এরপর তারা আবার ওই তিন গাড়িতে করে শাহজাহানপুরের দিকে চলে।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, সোনালী ব্যাংকের থানচি শাখায় হামলার খবর পেয়েছি। পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে। তারা কাজ করছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ৭০-৮০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে পাহারারত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করতে থাকে। ব্যাংকে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার ব্যাংকের এ শাখার ভল্টে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ছিল। তবে সেই টাকা লুট হয়েছে কি না, এখনো জানা যায়নি।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, স্থানীয়দের ধারণা এ ঘটনা নব্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ঘটিয়ে থাকতে পারে।
ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে রুমা উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় ৭০/৮০ জনের আধুনিক অস্ত্র সশস্ত্র সজ্জিত সশস্ত্র সদস্যরা রুমা সদরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের গ্রীল ভেঙ্গে প্রবেশ করে। তারপর ব্যাংক ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তবে আনুমানিক দেড় থেকে দুই কোটি টাকা অনুমান করা হলেও কি পরিমাণ টাকা লুট হয়ে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ডাকাতির সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে দশটি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়া হয়। ব্যাংকের অদূরে থাকা আনসার ব্যারেক থেকে চারটি অস্ত্র ও ৩৫টি গুলি ছিনিয়ে নেয়-সশস্ত্র এ সন্ত্রাসীরা। ওই সময় পুলিশ ও আনসারকে মারধর করে। ওই সময় ব্যাংকের লাগুয়া থাকা অফিসার কোয়ার্টারে অবস্থান করা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন কর্মামচারী মারধরের শিকার হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, এসময় উপজেলা মসজিদ ঘেরাও করে মসুল্লিদের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। সশস্ত্র সদস্য একটি অংশ উপজেলা পরিষদ এলাকায় ব্যাংক থেকে প্রায় একশ গজ দুরে আলমগীর চা দোকানের সামনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে প্রহরা দেয় সশস্ত্র সদস্যরা। তখন রুমা বাজার দিক থেকে আসা সাধারণ যাত্রী ও মোটরবাইকসহ যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে লোকজন বেধরক পিটিয়েছে।
একইভাবে উপজেলা পরিষদের পশ্চিম দিকে সেগুন বাগান নিচে ছোট্ট কালভাটের পাশে রাস্তা গতিরোধ করে মোটরবাইক ও যাত্রীদের আটকিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিস যা থাকে সব ছিনিয়ে নিয়ে সবাইকে মারধর করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এঘটনার ভুক্তভোগীরা জানায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে আধুনিক অস্ত্র ও মুখে কাপড় ঢাকা ছিল। তাই তাদের চেনা না গেলেও বাংলা ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি তাদের মধ্যে ফিশফিশে বম ভাষায় কথোপকথনের ভাষার সুর শুনতে পেরেছেন- অনেক ভুক্তভোগী ও মারধরের শিকার হওয়া লোকজন।
আর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠেছে - কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর বিরুদ্ধে । তবে তাৎক্ষণিক কেএনএফ এর দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে এই ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে, এলাকায় আতংক বিরাজ করায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে একটি সূত্র জানায় ব্যাংকে টাকা সংরক্ষণ করা লোহার বাক্সের তালা খুলতে পারেনি। মূলত এ কারণে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোঃ নেজাম উদ্দিনকে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম বিভাগের জিএম ও মুসা খান।
ঘটনার সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের জড়িতের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নানা ইঙ্গিতে নামগুলো উঠে আসছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি জানানো হবে।
ঘটনার পর থেকে ভেঙে পড়েছেন অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের স্ত্রী বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইশফাত। ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের বড় ভাই চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজান উদ্দিন বলেন, আমি এখন রুমায় আছি। ভাইয়ের এখনও কোনো খবর পাইনি। পরিবার থেকে এখন আলাদাভাবে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
প্রায় ১৭ বছরের দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বইছে আবেগের জোয়ার। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে উপজেলা থেকে অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে অর্ধশত বাস, মাইক্রোবাস, হাইস ও প্রাইভেট কারে নেতাকর্মীরা রাজধানীর পথে যাত্রা করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। আজ বুধবার সকালেও একাধিক বহর রওনা হয়েছে, আবার কেউ কেউ সন্ধ্যায় যাত্রা করবেন। অনেকে ট্রেন ও নিজস্ব ব্যবস্থায় ঢাকায় যাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রিয় নেতার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস ও আবেগ স্পষ্ট। অনেকেই একে আন্দোলন-সংগ্রামের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেল বলেন,
“১৭ বছর পর আমাদের নেতা দেশে ফিরছেন—এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দৌলতপুর থেকে পাঁচটি বাস ও অন্তত ৩০টি যানবাহনে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছেন। সবার ভেতরেই এক অন্যরকম আবেগ কাজ করছে।”
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রেজা আহমেদ বাচ্চু বলেন,
“তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য শুধু রাজনৈতিক নয়, আবেগেরও একটি বিষয়। এটি গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য আশার বার্তা।”
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই বাজার এলাকায় শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি)-এর উদ্যোগে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সীমান্ত অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এ মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ৪৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম জাকারিয়া।
মেডিকেল ক্যাম্পে মোট ৫১০ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বিভিন্ন জটিল রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেন।
শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমান্ত এলাকার মানুষের কল্যাণে এ ধরনের মানবিক ও জনসেবামূলক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
ঠাকুরগাঁওয়ে শরীফ ওসমান হাদী হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার এবং সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর ও অগ্নীসংযোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল তিনটার দিকে শহর চৌরাস্তায় ঠাকুরগাঁও নাগরিক বৃন্দের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে, রাজনীতিক ছাত্র-শ্রমিক, জনতা, কৃষক মজুর, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার কর্মী সহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, তেল গ্যাস খণিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঠাকুরগাঁও শাখার সদস্য সচিব মাহাবুব আলম রুবেল, সংবাদকর্মী, মজিবর রহমান খাঁন, শিক্ষক ফজলে ইমাম বুলবুল, সাংস্কৃতিক কর্মী এস এম জসিমউদ্দীন, সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, মানবাধিকার কর্মী নূর আফতাব রুপম, তরুণ সাংবাদিক সোহেল রানা, জয় মোহন্ত অলক, ছাত্র ফারহান সাদাত জাহেদি প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা ওসমান হাদী হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন এবং সারা দেশে যারা নৈরাজ্য ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর চেষ্টা করছে, যারা দিপু দাসদের আগুনে পুড়িয়ে মারছে, পিটিয়ে মারছে তাদের প্রতি নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি করেন। সেই সাথে উগ্রবাদ যেন বাংলাদেশে কায়েম না হয় সে জন্য বাংলাদেশী সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান আসে মানববন্ধন থেকে। বক্তারা আরও বলেন, যারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের টার্গেট করে হত্যা করতে চাইবে এবং বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে মব সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। নকশা জটিলতার কারণে নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে ১৩৬ কোটি টাকায়। দেড় বছরে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। সেই কাজ ৮ বছরেও শেষ হয়নি। এতে জন দুর্ভোগের কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পথচারীসহ নদী পাড়ের মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলা শহরের সঙ্গে কালিয়া উপজেলাসহ পাশের ৩ টি জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে কালিয়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর ওপর বারইপাড়া সেতু নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ্যের সেতু নির্মাণে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৬৫ কোটি টাকা। মেসার্স জামিল ইকবাল অ্যান্ড মঈনুদ্দীনবাসি কনস্ট্রাকশন ফার্ম সেতু নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়।
নির্মাণ কাজ ধীর গতির পাশাপাশি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুর ৯ নাম্বার পিলারটি ২ বার ভেঙে নদীতে বিলীণ হয়। এক পর্যায়ে সেতুর মুল অংশের ৪টি পায়ার ও তিনটি স্প্যান বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজের ব্যয় হিসেবে ৬১ কোটি টাকা প্রদান করে চুক্তি শেষ করে। দফায় দফায় কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি আর সেতুর নকশা জটিলতার কোপানলে পড়ে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাড়ায় ১৩৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৬ হাজার টাকায়।
দ্বিতীয় মেয়াদে কংক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোলজিস্ট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতুর বাকি অংশ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয়।
নদী পাড়ের বাসিন্দা হেনরী বলেন, বছরের পর বছর চলছে সেতুর নির্মাণ কাজ। শেষ কবে হবে জানা নেই। তিনি বলেন, আগে এক ঠিকাদার কাজ করে গেছে। এখন দেখছি আরেক ঠিকাদারকে। কাজের কাজ কিছু না, এখানে চলছে শুধু ঠিকাদার বদলের কাজ। তিনি বলেন, শুনছি এখন এই সেতু নির্মাণ করতে প্রায় ৩ গুন টাকা বেশি লাগছে। মনে হয় অফিসের লোকজন আর ঠিকদারের কারসাজিতে এমনটি হচ্ছে।
কালিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, জেলা শহর থেকে মালামাল এনে ব্যবসা করতাম। এখন সেই কায়দা নেই। দূর পথে এখন যেতে হচ্ছে খুলনা শহরে। এতে টাকা খরচ হচ্ছে বেশি। জানিনা কবে শেষ হবে নির্মাণ কাজ।
বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ খান লিটন বলেন, নদীর দুপাড়ের সংযোগ সড়কসহ ১১টি পায়ার, ১১টি স্প্যান এবং নদীর মধ্যবর্তী অংশে তিনটি পিলার ও ৩টি স্টিল স্প্যান বসানোর কাজ বাকি। তিনি বলেন, চলতি মাসে দুইটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হবে। নির্দ্দিষ্ট মেয়াদের আগেই নদীর মধ্যবর্তী আর্চ্চস্প্যানটি বসাতে পারবো বলে আশা করছি।
জানতে চাইলে নড়াইল সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম বলেন, নকশার ত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তিনি দাবি করেন আগামী বছর জুনের মধ্যেই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করে সেতু ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জ অংশে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি কাভার্ডভ্যানের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হলেও হাইওয়ে পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে কারও আঘাতই গুরুতর নয়। দুর্ঘটনার পরপরই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হয় এবং প্রায় আধঘণ্টা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম মাহমুদুল হক জানান, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ায় বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে এলেও চালকদের বেপরোয়া গতি এবং কাঙ্ক্ষিত সতর্কতার অভাবেই এই চারমুখী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। শীতকালীন এই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল চালককে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন এবং নিরাপদ গতিতে গাড়ি চালানোর বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র্যাবের তাড়া খেয়ে গাড়িভর্তি বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মদ ফেলে পালিয়ে যায় মাদক পাচারকারীর দল ।
এসময় একটি গাড়ি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ হাজার ৬৪৮ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মদের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫৪ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে র্যাব।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকায় এঘটনা ঘটে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় একটি বড় মদের চালান ঢাকার দিকে পাচার করা হবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের নাটাল মোড়ে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু করে। এসময় সন্দেহভাজন একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে চেকপোস্টে আসে। গাড়িটিকে থামার সংকেত দেওয়া হলেও চালক তা অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা গাড়িটিকে ধাওয়া করলে একপর্যায়ে চালকসহ দুজন ব্যক্তি গাড়িটি একটি গ্রামের ভেতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার সিনিয়র সহকারী এএসপি তপন সরকার জানান, অভিযানে পরিত্যক্ত গাড়িটি র্যাব ক্যাম্পে এনে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ হাজার ৬৪৮ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮-১০জন। তাৎক্ষণিক পুলিশ নিহত একজনের নাম ঠিকানা জানাতে পারলেও অপর ৪ জনের নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর গ্রামে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে, আলাউদ্দিন (৪০) উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ।
তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, একটি মরদেহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে এসব অস্ত্র নিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা বিওপির রাঘববাটি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল, অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়। সীমান্ত থেকে প্রায় ৯০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাঘববাটি এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশি অস্ত্র প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে সকালে রাঘববাটি এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবির একটি টহল দল।
অভিযানকালে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধাওয়া করলে তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে দ্রুত সীমান্তের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। ব্যাগের ভেতর কালো পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান, এর আগেও গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে পৃথক একটি বিশেষ অভিযানে ৫৩ বিজিবি ৪টি বিদেশি পিস্তল, ৯টি ম্যাগাজিন এবং ২৪ রাউন্ড গুলি জব্দ করেছিল।
বিজিবি অধিনায়ক আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে অস্ত্র নিয়ে আসছে।
ঈশ্বরদীতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে পুরো শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছিল শহরবাসী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পৌর শহরের আলহাজ মোড়ের প্রধান ফটক ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এতে যানজটে পুরো শহর অচলাবস্থা হলে তাৎক্ষণিক পুলিশ-সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও দাবি পূরনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলে জানালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনীর ধাওয়াতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিতে বললে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। মূহুর্তের মধ্যে পুরো এলাকা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এতে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিতি ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমারকে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে দৌড়ে পালানোর সময় সড়কে পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশবাহিনী লাঠিচার্জ করে প্রায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সেই সঙ্গে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এবং ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করছি।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা শহরের মূল পয়েন্ট অবরোধ করে তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। তাৎক্ষণিক আমরা গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্লোগান দিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে যানজট নিরসন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও শিক্ষার্থীরা নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছে।
দেশনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. বিল্লাল মিয়া তার নিজ এলাকা কুমিল্লা নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটরা এলাকায় এই স্বাগত মিছিলের আয়োজন করেন।
মিছিলটি ফৌজদারি আমগাছের মোড় থেকে শুরু হয়ে ছোটরা পশ্চিম পাড়া, উত্তর পাড়া ও পূর্ব পাড়া প্রদক্ষিণ করে আদালত চত্বর অতিক্রম করে পুনরায় ফৌজদারি মোড়ে এসে শেষ হয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাহিদা আক্তার মুন্নী এবং কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বিল্লাল মিয়া।
এ সময় মিছিলে শতশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে নগরীর পরিবেশ মুখরিত করে তোলেন।
স্বাগত মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) সংসদীয় আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী ও দলটির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় এনসিপি নেতারা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল ইসলামের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের শহিদ সাব্বিরের মা রিনা আক্তার, এলাহাবাদ গ্রামের শহিদ তন্ময়ের বাবা মো. সফিকুল ইসলাম, এনসিপির উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীম কায়সার, সাইফুল ইসলাম শামীম, রায়হান সিদ্দিকসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে নেতারা বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে শহিদ পরিবারের সদস্যদের দ্বারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এটি প্রমাণ করে যে তিনি আজ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও নৈতিক সমর্থনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। শহিদ পরিবারগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তার রাজনীতির প্রতি মানুষের গভীর বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।
তারা আরও বলেন, ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি, ত্যাগের আদর্শ এবং গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মনোনয়ন ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক ও দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখবে। জনগণের পাশে থেকে তিনি দেশ ও সমাজ গঠনে কার্যকর নেতৃত্ব প্রদান করবেন- এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন নেতারা।
বেনাপোলে বাংলাদেশ রেলওয়ে যশোর অঞ্চলের সেবা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশন ভবনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ময়েনউদ্দীন সর্দার বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো), হানিফ হোসেন ডিইএন-১ পাকশী, হাসিনা আক্তার ডিটিও পাকশী, শ্রী গৌতম কুমার কুন্ডু ডিসিও পাকশী, রিফাত শাকিল ডিইই পাকশী, বেনাপোল ইমিগ্রেশনের পরিদর্শক মোর্ত্তজা, বেনাপোল সিএন্ডএফ সভাপতি - শামসুর রহমান, সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সহিদ আলী, প্রেসক্লাব বেনাপোলের সাধারণ সম্পাদক বকুল মাহবুবসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেবাগ্রহীতা ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানিতে সেবাগ্রহীতা ও ভুক্তভোগী নাগরিকেরা রেলওয়ে সেবা সংক্রান্ত নানা সমস্যা, দুর্ভোগ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন। ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখা, স্টেশন এলাকার নিরাপত্তা, প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের সমস্যা ও প্রত্যাশা সরাসরি শোনা যায়, এতে দ্রুত সমাধানের পথ খুলে যায়। তিনি আরও জানান, নিয়মিত এ ধরনের উদ্যোগ চালু থাকলে রেলওয়ে আরও জনবান্ধব, কার্যকর ও সেবামুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
এ সময় অন্যান্য বক্তারা বেনাপোল থেকে চলাচলরত রূপসি বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের আদলে আরও একটি ট্রেন চালুর দাবি করে বলেন, সেবার মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। জনগণের অর্থে পরিচালিত রেলওয়ের প্রতিটি সেবা যেন সরাসরি সেবাগ্রহীতার কাছে পৌঁছে এটা নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
গণশুনানি শেষে সাধারণ মানুষ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আগে অনেক সমস্যার কথা জানানোর সুযোগ ছিল না, এখন সরাসরি কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরতে পারছেন-যা সমস্যা-সমাধানকে দ্রুত ও সহজ করে তুলবে।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ শিকারে গিয়ে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক হওয়া ট্রলার দুটি টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া নৌঘাট এবং পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাটের বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।
তিনি বলেন, গভীর সাগরে মাছ শিকার শেষে জেলেরা টেকনাফের দিকে ফিরছিলেন সকালে। এ সময় বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকা থেকে আরাকান আর্মির একটি দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি খালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আটক জেলেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জেলে পল্লিগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
একটি মাছ ধরার ট্রলারের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে মাছ ধরে ফেরার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে মাঝিসহ ৭জন জেলেসহ তার ট্রলারটি ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এ ঘটনায় জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অনেকেই সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, গত ১০ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদী ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩৫০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। বিজিবির সহায়তায় তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনো প্রায় ১৫০ জন জেলে তাদের হাতে আটক রয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।