সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করেছে র্যাব। দুই দিনের অভিযানের পর রুমা বাজারের পাশের একটি এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসে বাজারের মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে সবাইকে জিম্মি করে রাখে। এ সময় তারা সোনালী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকাসহ ডিউটি পুলিশের ১০টি অস্ত্র ও আনসার বাহিনীর ৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
নেজাম উদ্দিনের পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নেজাম উদ্দিনের সঙ্গে তার স্ত্রী মাইছূরা ইসফাতের ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। পরে পরিবার বিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে নেজামকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
রুমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীদের হামলা, অস্ত্র লুট, ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙে টাকা লুটে করে। এ সময় তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রও লুট করে। একইসঙ্গে মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরদিন বুধবার দুপুরে থানচিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
স্ত্রীর সঙ্গে সাংসারিক কিছু তুচ্ছ ঘটনায় মনোমালিন্য ঘটে আলমগীর নামে এক যুবকের। এরপর তাকে ‘শাসন’ করার পরিকল্পনা করে ঘুমন্ত অবস্থায় তার দুই পায়ের রগ কেটে দিয়ে পাথরের আঘাতে তার হাত-পা থেঁতলে দিয়েছে ওই ‘বীর স্বামী’। পেশায় পোশাক শ্রমিক আলমগীর এ ঘটনার পর স্ত্রী-সন্তান ফেলে গা-ঢাকা দিয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর জেলার পৌর এলাকার কালু হাজী সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটায় অভিযুক্ত আলমগীর। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ।
ঘটনার শিকার রিনা আক্তার নামের ওই ভুক্তভোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকায় এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল তার অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে এখনো তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর বাঞ্ছানগর এলাকায়।
রিনা আক্তারের ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালক হোসেন আহমেদ গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বোনের অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আমি ঢাকা থেকে এসে থানায় মামলা করব।’
হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন জানান, বাড়িতে ঘর না থাকায় রিনা ও তার স্বামী আলমগীর কালু হাজী সড়ক এলাকায় সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকত। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কারণে সম্ভবত মতের অমিল হয়েছিল। সংসারে এমন ঘটনা তো ঘটেই; কিন্তু আলমগীর নেশাসক্ত হওয়ায় তার স্ত্রীকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে।
তারা বলেন, গত শনিবার রাতে রিনা সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। আলমগীর অনেক রাতে বাসায় ফেরে। সে এসে ঘুমন্ত রিনার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। এছাড়া পাথর দিয়ে রিনার দুই হাত ও দুই পা থেঁতলে দেয়। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হোসেন আহমেদের অভিযোগ, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আলমগীর আমার বোনকে কুপিয়েছে। হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। সে মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনও জানিয়েছে।’ এদিকে ঘটনার পর থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে আলমগীর হোসেন। ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘সকালে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাগুরা সেনা ক্যাম্পের গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সেনাবাহিনীর একটি গোয়েন্দা সূত্র জানতে পারে যে, মাগুরা জেলার সদর থানার ৬ নং ওয়ার্ডের পারনান্দুয়ালী গ্রামের মো. মারুফ, লিখন এবং আশিকুর রহমানদের বাড়িতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এরই সূত্র ধরে শনিবার দিবাগত রাত ৩ টায় মেজর সাফিনের নেতৃত্বে মাগুরা আর্মি ক্যাম্পে ১৪ সেনা সদস্য এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে ২ টি ওয়ান শ্যুটার গান, ১০ রাউন্ড তাজা বুলেট, ১ টি এয়ার গান, ৬০ রাউন্ড এয়ার গান বুলেট, ১ টি পুলিশের লুটকৃত টিয়ার শেল, ৮ টি হাত বোমা, ২ টি চাইনিজ চাপাতি, ৫ টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৫ টি মোবাইল, ১ টি ল্যাপটপসহ মো. মারুফ (৩৫), মো. লিখন (২৮), এবং মো. আশিকুর রহমান (৩০) নামের তিনজনকে আটক করা হয়।
দুষ্কৃতিকারীদেরকে মাগুরা সদর থানার পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছ বলে জানা গেছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে নাফ নদের মোহনায় মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যাওয়া ২৬ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মি।
আজ শনিবার বিকেলে টেকনাফ জেটি ঘাটে জেলেরা ফেরত আসেন। পরে ফেরত আসা জেলেদের যাচাই-বাছাই শেষ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন সময়ে নাফ নদী ও সাগর মাছ শিকারের সময় আরকান আর্মি ধরে নিয়ে যায়।
জেলেদের ফেরত আনা বিষয়টি স্বীকার করে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, 'বঙ্গোপসাগরে নাফ নদে মাছ শিকারে সময় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শুন্য লাইন অতিক্রম করে মিয়ানমারের জলসীমার ঢুকে পড়ে। এসময় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন সময় নৌকাসহ ২৬ জেলেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে আমরা তাদের (আরকান আর্মি) সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে জেলেদের ফেরত আনা হয়েছে। তবে জাল ও নৌকা ফেরতের বিষয়ে কথা হচ্ছে তাদের সঙ্গে।
ফেরত আসা জেলে ওমর ফারুক জানান, মিয়ানমার আরকান আর্মি আমাদের সীমান্তকে তাদের সীমান্ত বলে আমাদের ধরে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সব ধরণের ব্যবসা বাণিজ্য করতে চায়। আমাদের জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে এ মেসেজ টা যেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে পৌছে দিতে পারে সেটা বুঝাতে চাচ্ছে আরকান আর্মি। জেলেদের ফেরত দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ভালো সম্পর্ক গড়তে চায় মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মি।
ফেরত আসা আজিজুর রহমান বলেন, আমাদের বাপ দাদারা আজীবন নাইক্ষ্যংদিয়াই সীমান্তে মাছ শিকার করে আসতেছে। সেই জায়গায় আর্মি চাপ সৃষ্টি করতেছে। যুগ যুগ ধরে জেলেরা সে স্থানে মাছ শিকার করে আসছিল। সে সুত্র ধরেই আমরা সেখানে মাছ শিকারে যায়। ' যদি মাছ শিকার পরবর্তী কঠোর শাস্তি দিবে বলছে জেলেদের।'
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে চকোলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে ইব্রাহিম (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার তারাব পৌরসভার রূপসী বাঘবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে ধর্ষিত শিশুর বাবা-মাকে হুমকি দিয়ে ৫ হাজার টাকায় রফাদফা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
এদিকে রাত ১১টার দিকে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত ইব্রাহিমের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। ইব্রাহিম সুনামগঞ্জ জেলার বিঞ্চামপুর এলাকার আব্দুল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সে তারাবতে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছে।
স্থানীয়রা জানান, শিশুটির পরিবার রূপসী বাঘবাড়ি এলাকায় তানসেন নামে একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকে। ইব্রাহিম রূপসী বাঘবাড়ি ব্রিজ এলাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করে। ইব্রাহিম শিশুটিকে চকোলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে তার দোকানের ভেতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় জনৈক জালালের স্ত্রী ইব্রাহিমের দোকানে শুঁটকি কিনতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি দেখে স্থানীয়দের খবর দেন এবং বিকেলে শিশুটি তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়।
শিশুটির পরিবার যে বাসায় ভাড়া থাকে সেই বাড়িওয়ালা তানসেন ও তারাব পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বাবেলের বড় ভাই রুবেল ও স্থানীয় প্রভাবশালী পলিনসহ কয়েকজন মিলে ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ হাজার টাকা শিশুর পরিবারকে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। রাত ৯টার দিকে এলাকাবাসী ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেরে রুবেলের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। এ সময় উত্তেজনা বাড়তে দেখে রুবেল ও তানসেন মিলে ইব্রাহিমকে বাড়ি থেকে বের হয়ে পালাতে সহযোগিতা করেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। রাত ১১টার দিকে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলীসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। অভিযুক্ত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশ জানায়।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স ৭ বছর। আমি দিনমজুরের কাজ করি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে কাজ থেকে ফিরে এসে শুনতে পাই আমার মেয়েকে ইব্রাহিম ধর্ষণ করেছে। আমি এখানে ভাড়া থাকি। বাড়িওয়ালা তানসেন ও রুবেলসহ কয়েকজন মিলে আমাকে চাপ দিয়ে ৫ হাজার টাকা দেবে বলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলেন। আমি মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চাই। ইব্রাহিম আমার মেয়েকে এর আগেও বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে। বলেছে যদি কাউকে একথা বলি তাহলে তাকে হত্যা করবে।’ এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, ভিকটিমের পরিবারের সাথে কথা বলা হচ্ছে। বাকি ঘটনা পরে বলা যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণ, ৩ আসামি কারাগারে
ইউএনবি জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ৮ বছরের বাক প্রতিবন্ধী এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই কিশোরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলা হলে শুক্রবার সকালে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের কাগমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তাররা হলেন— কাগমারী গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন (১৯) এবং একই গ্রামের ১৩ ও ১৪ বছর বয়সী দুই কিশোর।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাগমারী জামে মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে যায় বাকপ্রতিবন্ধী ওই শিশুটি। নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কৌশলে তাকে পাশের আমবাগানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসামিরা। পরে বাড়িতে এসে শিশুটি বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। সকালে এলাকাবাসী তাদের আটক করে থানায় সোর্পদ করে।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর বাবা মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। দুপুরে তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
ঈদ বোনাস, ২৫ ভাগ উৎপাদন বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় ইসমক্স সোয়েটার নামে একটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এ সময় শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে কাজ করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তেলিপাড়া এলাকায় ইসমক্স সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৮ টায় কাজে যোগ না দিয়ে ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এক পর্যায়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন।
সকাল ১০টা থেকে শ্রমিকদের অবরোধের কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত যাত্রী। অনেকেই পায়ে হেঁটে বা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ, মহাসড়ক অবরোধ
আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, তেলিপাড়া এলাকায় ইসমক্স সোয়েটার কারখানায় প্রায় এক হাজার ২০০ শ্রমিক কাজ করছেন। দীর্ঘ দিন কাজ করলেও তাদের ওভার টাইম বিল, নাইট বিল, মাতৃকালীন ছুটি, বাৎসরিক টাকা দেওয়া হয় না। এছাড়া তাদের প্রোডাকশন রেট সঠিকভাবে দেওয়া হয় না। এ অবস্থায় ঈদ বোনাস, ওভারটাইম বিল, জিএমের পদত্যাগসহ ১৪ দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছেন তারা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। গাজীপুর মহানগর পুলিশ ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছেন।
কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের এক নারীকে অতর্কিত আক্রমণ করে শ্লীলতাহানির দায়ে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীন।
তিনি জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার শহরের শহীদ সরণীস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় ওই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার তথ্য জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত যুবকের নাম তারেকুর রহমান ওরফে সোইল্যা তারেক (৩০)। তিনি কক্সবাজার শহরের মোহাজের পাড়া মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে।
তিনি জানান, ভুক্তভোগী নারী মার্কিন নাগরিক। তিনি স্বামীর সঙ্গে কক্সবাজার থাকেন। তার স্বামী আন্তর্জাতিক সংস্থা- ইউএন উইমেন এর কর্মকর্তা হিসেবে কক্সবাজারে কর্মরত। পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, মার্কিন ওই নারী তার এক সহকর্মীসহ গতকাল সোমবার সকাল দশটার দিকে কক্সবাজার শহরের ফুটপাত দিয়ে হাঁছিলেন। এ সময় অতর্কিতে ওই যুবক তাদের পথ আটকে নারীকে জাপটে ধরেন ও তার শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী ওই নারী বিষয়টি জানিয়ে কক্সবাজার থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। পরে বিকেল চারটার দিকে শহরের ঝাউতলা এলাকা থেকে অভিযুক্ত তারেককে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা জানতে পুলিশ গ্রেপ্তার যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে বলে জানান, জেলা পুলিশ সুপার।
সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাকে মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। স্থানীয়রা জানান, গ্রেপ্তার তারেক একজন বিকৃত মস্তিষ্কের ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর কক্সবাজার শহরের মোহাজের পাড়ায় পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। সে সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও পরে ওই মামলায় জামিনে বের হয় তারেক।
চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলায় চুলার গ্যাস লিকেজে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে চারজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে সেহেরির খাবার গরম করার সময় গ্যাসের চুলা লিকেজ হয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হন পরিবারটি।
দগ্ধরা হচ্ছেন—বড় স্টেশন মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী আবদুর রহমান (৫০), তার মা খাদিজা (৬০), স্ত্রী শানু (৪০), ছোট ছেলে মাহিন (১৬), ইমাম হোসেন (৩০) এবং ছেলের বউ নুসরাত নিবা (১৬) ।
পাশের ফ্ল্যাটের কলেজ শিক্ষার্থী জিহান ও তার মা কুলসুমা বেগম জানান, ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে সেহরির জন্য খাবার গরম করার জন্য চুলা জ্বালানোর সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের ফ্ল্যাটের লোকজন দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। বাড়ির মালিক জাকির হোসেন জানান, ‘বিস্ফোরণে শোয়ার দুটি খাট পুড়ে যায়, রুমগুলো অন্ধকার হয়ে যায়। দ্রুত ঘরের ভিতরের সবাই দরজা ভেঙে বের হয়ে আসেন। আশপাশের লোকজন দ্রুত গ্যাস লাইন বন্ধ করে দেন ও দগ্ধদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
গুরুতর দগ্ধ চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসান ফয়সল হোসেন ও হাসপাতালের সুপার ডা. মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় পাঠানো চারজনের শরীর প্রায় ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে। তবে এরা শঙ্কামুক্ত নন।’
মাদারীপুরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাইফুল সরদার (৪০) ও আতাউর সরদার (৩৫) নামে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ওই ঘটনায় আহত তিন জনের মধ্যে পলাশ সরদার নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে। নিহত আতাউর ও তার স্বজনদের বেশ কয়েকটি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষ।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে এসব ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আজিবর সরদারের ছেলে সাইফুল সরদার। বিগত সরকারের সময় এলাকায় সাইফুলের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। সেই প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন তিনি। এমনকি স্থানীয় চেয়ারম্যানকেও পাত্তা দিতেন না। বৈধ-অবৈধ সব ধরনের ব্যবসা ও কারবার ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। এতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন সাইফুলের ওপর।
সরকার পতনের পরও সব কারবার নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন সাইফুল। এতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ান একই এলাকার শাজাহান ও ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল মোল্লা। সাইফুলের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ শাজাহান এবং চেয়ারম্যান জয়নাল মোল্লা গ্রুপের মধ্যে গত ৬ মাস ধরে রেষারেষি ও সংঘর্ষ চলেই আসছিল। এতে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।
এছাড়া কিছুদিন আগে ড্রেজারের পাইপ বসানো ও এর চাঁদা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খোয়াজপুর সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সামনে একা পেয়ে সাইফুলের ওপর হামলা চালায় শাজাহানের লোকজন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাইফুলের বড় ভাই আতাউর ও চাচাতো ভাই অলিল এবং প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে হঠাৎ প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পিছিয়ে যায় সাইফুলের লোকেরা। এ সময় হামলা থেকে বাঁচতে সাইফুল ও আতাউর পাশের মসজিদে ঢুকে পড়ে। তবে সেখানেও শেষরক্ষা হয়নি। প্রতিপক্ষের লোকজন মসজিদে ঢুকে সাইফুল ও আতাউরকে আটকে ফেলে। তারা আল্লাহর ঘরের উছিলায় প্রাণভিক্ষা চাইলেও প্রতিপক্ষ তাদের দয়া দেখায়নি। সেখানেই দুভাইকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে প্রতিপক্ষ। এ সময় ওই দুজনকে বাঁচাতে গিয়ে চাচাতো ভাই অলিল সরদার, প্রতিবেশী মুজাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার, আজিজুল হকের ছেলে তাজেল সরদারও প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে গুরুতর আহত হয়।
এরপর হামলাকারীরা আতাউর ও সাইফুলের বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠান। পরে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। ঢাকা যাওয়ার পথে পলাশের মৃত্যু হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আতাউল ও সাইফুলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠিয়েছে। সদর মডেল থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাহিদা আক্তার বলেন, হাসপাতালে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এ ঘটনায় আহত আরও তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা (সদর সার্কেল) বলেন, এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে টিসিবির কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রফিকুল ইসলাম রফিক (৫০) নামের সাবেক এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদে সামনের বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।
নিহত রফিক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করে জানান, পূর্ব বিরোধ ও আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারিভাবে ১০ কেজি পরিমাণ ভিজিএফের চাল বিতরণ করাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়েছে। তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটনের লোকজনের সাথে নিহত রফিকের বাকবিতণ্ডা বাধে। একপর্যায়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তাদের লোকজন রফিককে মারধর করতে থাকে।
‘দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরমধ্যেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের লোকজন রফিকের মুখ ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়,’ বলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার গোলাম মওলা (বিপিএম-সেবা) এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। বিস্তারিত জানতে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু জানান, আওয়ামী লীগের লোকজন দলে অনুপ্রবেশ করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আমরা প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
কক্সবাজারের টেকনাফে নৌ-বাহিনীর যৌথ অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এসময় অপহরণের শিকার এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে নৌ-বাহিনীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাতে টেকনাফ উপজেলাস্থ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বালুখালী নামক স্থানে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ও পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন,আলতাস ও মুজিব।তারা তিনজন একই ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
অভিযানকালে অপহরণ চক্রের মূল হোতা এবং কুখ্যাত মাদক ও অস্ত্র কারবারী হেলাল উদ্দিনকে তার ২ সহযোগীসহ আটক করা হয়। এসময় তার বাসা হতে অপহরণের শিকার নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার বাসিন্দা আরেফুল ইসলাম শুভ নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়।
অপহরণের শিকার ব্যক্তি গত ৩ মার্চ নরসিংদী হতে কাজের সন্ধানে টেকনাফ বাসিন্দা মজিবের নিকট আসলে মজিব তাকে কাজ না দিয়ে হেলাল উদ্দিনের আস্তানায় একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। চক্রটি অপহৃত ব্যক্তির পরিবারের নিকট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
আটককৃত হেলাল উদ্দিনের বাড়ি ও তৎসংলগ্ন এলাকা তল্লাশি করে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ৭ রাউন্ড তাজা গোলা উদ্ধার করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে হত্যা, অপহরণ, মাদক, চোরাচালানসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়। তাদেরকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জামালপুরে দুটি ট্রাক ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শনিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জামালপুর পৌর এলাকার ছনকান্দা গোরস্থানের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর সোয়া ৫টার দিকে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জামালপুর পৌর এলাকার ছনকান্দা গোরস্থানের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তারা জানায়, দুর্ঘটনার সময় জামালপুর থেকে আসা একটি ট্রাক ময়মনসিংহের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তা পাশে দাঁড় করানো একটি ট্রাককে ধাক্কায় দেয়।
এ সময় ট্রাকটি পরিষ্কার করতে থাকা ট্রাকশ্রমিক জুয়েল আকন্দ (৪৫) ট্রাকের ধাক্কায় দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত এবং ২ জন আহত হন।
একই সময় জামালপুর থেকে নান্দিনাগামী একটি মোটরসাইকেল একজন আরোহী নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়ানো অপর একটি পাথরবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলচালক শাওন (৩০) নিহত হন। আর মোটরসাইকেলের অপর আরোহী আহত হয়।
খবর পেয়ে জামালপুর ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাটোরে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যানার। পুলিশের দাবি, উত্তেজিত জনতা তথা মবের ভাঙচুর থেকে ভবনটি বাঁচাতে এ কৌশল নেওয়া হয়।
ব্যানার টাঙানোর একটি ছবি বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, অন্ধকারে দুই যুবক সিংড়া পৌরসভার গোড়াউনপাড়ায় পলকের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে একটি ব্যানারের দড়ি বাঁধছেন। ওই ব্যানারে লেখা ‘অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, সিংড়া থানা, নাটোর’।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পলকের এই বাড়ি থেকে হেঁটে সিংড়া থানা ৫ মিনিটের ও সহকারী পুলিশ সুপারের (সিংড়া সার্কেল) কার্যালয় ১০ মিনিটের পথ। গত বুধবার সন্ধ্যা ৭টার পর সিংড়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে দুই যুবক বাড়িটিতে ব্যানার লাগিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ঘটনাটি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন জড়ো হন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে ব্যানারটি দেখা যায়নি।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই দিনই পলকের এই বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। পলক প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষ তার প্রটোকলে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই কক্ষকে অনেকেই পুলিশ ক্যাম্প হিসেবে জানতেন তখন থেকে। কক্ষের বারান্দায় পতাকা স্ট্যান্ডও ছিল।
এখন পলকের বাড়িতে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের ব্যানার লাগানো ও খুলে ফেলার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল মবের মাধ্যমে একদল জনতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বাড়িটি ভাঙচুর করবে। যেহেতু ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে, তা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিংড়ার এই বাড়ি ভাঙচুর করা হতে পারে। তবে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প লেখার কারণে কেউ বাড়িটি ভাঙচুর করতে আসেনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়েছে। এখন এসে দেখতে পারেন, ব্যানারটি আর নেই।’
কক্সবাজার টেকনাফ বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরার সময় ছয়টি ট্রলারসহ ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ৫৬ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ছেড়ে দেন। এসময় জেলেদের কাছে থাকা মাছ ও জাল রেখে দেন মিয়ানমার নৌ বাহিনী।
ধরে নিয়ে নিয়ে যাওয়া ছয়টি ট্রলারের মালিকরা হলো- টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মো. বশির আহমদ, মো. আমিন, নুরুল আমিন, আব্দুর রহিম, মো. শফিক। এদের মধ্যে মো. শফিকের মালিকাধীন দুটি ট্রলার রয়েছে।
এর আগে বুধবার (৫মার্চ) দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে ধরে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।
তিনি জানান, মাছ শিকারে গিয়ে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক হাওয়া জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। তারা ইতোমধ্যে টেকনাফের উদ্দেশ্য রওনা করেছে।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। তবে তাদের কাছে থাকা মাছ ও জাল রেখে দিয়েছে।