ঈদের ছুটি শুরু না হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বাড়ি ছুটছেন মানুষ। আজ শুক্রবার, আগামী কাল শনিবার এবং পরের দিন রোববার শবে কদরের ছুটি। নিয়ম অনুযায়ী আগামী সোম ও মঙ্গলবার অফিস। কেউ কেউ এই দু’দিন ছুটি নিয়ে এখন থেকেই ঈদের বাড়ি ফিরছেন তারা। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতেই তাদের এই ছুটেচলা। এখন থেকেই রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে ঘরমুখী মানুষ। অবশ্য ভোগান্তিহীনভাবে ঈদযাত্রার জন্য একটু আগেভাগেই বাড়ি ফিরছেন তারা। ফলে ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েসহ মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতু টোল প্লাজা এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল থেকেই পদ্মা সেতু টোল প্লাজা এলাকায় ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারির দেখা মিলছে। এর সঙ্গে মোটরসাইকেলের চাপও বেড়েছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ যানবাহনের সারি আরও দীর্ঘ হয়।
যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ও নিরাপদ রাখতে মহাসড়কের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এই বাড়তি চাপকে মাথায় রেখে দ্রুত গতিতে টোল আদায় হচ্ছে বলে জানিয়েছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, এবার ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় ৭টি টোল বুথে প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে একটি করে যানবাহনে টোল আদায় করা হচ্ছে। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভোগান্তিহীনভাবে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। তবে মোটরসাইকেলের উপচেপড়া ভিড় থাকায় আলাদা দুটি লেন তৈরি করে টোল আদায় করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল ম্যানেজার আহমেদ হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ ভোর থেকেই যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত দূরপাল্লার গণপরিবহনের চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাই বেশি দেখলাম। ভোর থেকে মোটরসাইকেলের বাড়তি চাপও দেখছি।’
জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার ভুয়া তথ্যে ফরিদপুরের দুই নামধারী সাংবাদিককে ‘সাহসী সাংবাদিক’ সম্মাননা প্রদানের প্রতিবাদে ও সম্মাননা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা। গতকাল রোববার সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে ফরিদপুর জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকরা অংশ নেন। গত ৩ আগস্ট সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট জুলাই আন্দোলনে সাহসী ও আহত সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান করে। এতে ফরিদপুরে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি শেখ ফয়েজ আহমেদ ‘সাহসী সাংবাদিক’ সম্মাননা বাগিয়ে নেন। অন্যদিকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ইমরান হোসাইন নামের এক ব্যক্তি ভুয়া জিটিভির স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন। তাদের মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য পরিচয় ব্যবহার করে প্রাপ্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাহসী আহত সাংবাদিক সম্মাননা পুরস্কার প্রত্যাহার ও বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, সিনিয়র সদস্য মফিজ ইমাম মিলন, পান্না বালা, হাসানুজ্জামানসহ অন্যান্যরা। এ সময় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সদস্যরা বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, শেখ ফয়েজ আহমেদের মতো একজন ভুয়া সাংবাদিক তাকে এই ধরনের পদক প্রদান করে সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থা একটা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত জন্ম দিয়েছে। এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের অসম্মান করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার যে সমস্ত সাংবাদিকরা সরাসরি ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সমর্থন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকতা করেছিল। তাদের বাদ দিয়ে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে এই ধরনের পুরস্কার দেওয়ার কি যুক্তি থাকতে পারে? তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার একজন আসামি। অবিলম্বে ওই পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে লঞ্চ ঘাট এবং ফেরি ঘাটের একাংশ। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর তীরের বসবাসকারীরা ঘরবাড়ি অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। শিবালয়ের পাটুরিয়া ঘাট এবং আশপাশের পুরো এলাকাজুড়ে এখন নদীভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে। সেই সঙ্গে ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
জানা গেছে, গত শনিবার পাটুরিয়া ৪নং ঘাটসংলগ্ন একটি বাড়ির অর্ধেক অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। ওই বাড়ির লোকজনকে ঘর-দরজাসহ আসবাবপত্র অন্যত্রে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে স্রোতের কল কল শব্দে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে পাটুরিয়া ফেরি ঘাটসহ পার্শ্ববর্তী শত শত পরিবারের বসতবাড়ি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাতের পানি হু হু করে বাড়ছে পদ্মা-যমুনার পানি। এতে পাটুরিয়া ঘাটের বিভিন্ন অংশে আঘাত হানছে তীব্র স্রোতের ধাক্কা। ঘাট এলাকার নিচের মাটি পানির স্রোতে ধুয়ে গিয়ে ধসে পড়ছে পাড়। গত ৫ আগস্ট বিলীন হয়ে গেছে লঞ্চ ঘাট এবং গত ১২ আগস্ট ৪ ও ৫নং ফেরি ঘাটের একাংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ৪নং ফেরি ঘাটসংলগ্ন একটি বাড়িও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পুরো ফেরি ঘাট ভেঙে গিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
পাটুরিয়া ঘাটের বাসিন্দা রানা সিকদার বলেন, পানি বৃদ্ধির শুরু থেকেই ঘাট এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নদীতে পানি আসা মাত্রই ঘাট এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাটুরিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের আশপাশে বিআইডব্লিউটির ফোরসোর জায়গায় অন্তত পাঁচটি স্থানে অবৈধ বালুর চাতাল রয়েছে। নদীর তীরে এসব জায়গা থেকে বালু মাটি কেটে নেওেয়ার ধুম পড়েছে। সরকারি জায়গা অবৈধভবে দখল করে (এক্সক্যাভেটর) ভেকু মেশিনের সাহায্যে সরারাত নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু-মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধভাবে বালু-মাটির ব্যবসা করছে। বেপরোয়াভাবে বালু মাটি কেটে নেওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ব্যাপকভাবে নদীভাঙনের শুরু হয়েছে।
শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, পাটুরিয়ায় অবৈধ বালু কাটা এবং তা বাজারজাত করার জন্য আমার ইউনিয়নের রাস্তাটি ব্যবহার করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এখন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এবং সরকারি সম্পত্তিরও ক্ষতি হচ্ছে। এখনতো লঞ্চে যাত্রী ওঠানামায়ও ভোগান্তি হচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে বারবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো ফল পাচ্ছি না।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, পাটুরিয়া ঘাটটা এবং লঞ্চ ঘাট এগুলো বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক পরিচালনা করে থাকে নদী শাসন থেকে শুরু করে সবগুলোই করে থাকে। আমাদের যদি কোনো ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয় আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব, কারিগরি সহযোগিতা থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি আমরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পাটুরিয়া ঘাট নং৫ এবং ৪ ল্যান্ডিং স্টেশনগুলো গুরুতর হুমকির মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, জেটি ধসের পর তারা তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ভাঙন নিয়ন্ত্রণের জন্য নদীতে ফেলার জন্য বর্তমানে পর্যাপ্ত জিও-ব্যাগের অভাব রয়েছে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রচণ্ড শ্রোতের ফলে পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটের আশেপাশে নদীতে প্রচণ্ড ভাঙন হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানির পরিমাণ করে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ দ্রুতগতিতে জিও-ব্যাগে বালু ভর্তি করে নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা থেকে পাটুরিয়ায় ফেরি ঘাট স্থানান্তর করে। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২১টি জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়।
ফেনীর ফুলগাজীতে বেকার ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষে স্বাবলম্বী প্রজেক্টের উপকরণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব আবু সাঈদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ব্যাটারিচালিত মোটরভ্যান, সেলাই মেশিন, গরু, দোকানের মালপত্র, ৪টি ঘর পুনর্নির্মাণ ও ৪টি ঘর মেরামতের জন্য টিন প্রদান করা হয়েছে। গত শনিবার বিকালে ‘পরিবর্তন সমাজের কল্যাণে’ সংগঠনের আয়োজনে ফুলগাজী উপজেলার উত্তর আনন্দপুরে একটি কনভেনশন হলে এই হস্তান্তর করণ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি ফিরোজ আহাম্মদ সাজিমের পরিচালনায় ও সংগঠনের সদস্য শারমিন আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মো. মোর্শেদ, মো. সাহাব উদ্দিন প্রমুখ। এ সময় আমন্ত্রিত অতিথি, সংগঠনের অন্যান্য সদস্যসহ উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সচিব আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, শাহবাগ মঞ্চ এগুলো সব আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ফর্মুলায় হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন আমাদের দেশটাকে যেন বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করে। আমাদের তরুণ সমাজ আমাদের যেটা দিয়েছে সেটা বলতে হবে আল্লাহরই দান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি কোনো বিভাজনের রাজনীতি করে না। বিএনপি সব ধর্মের মানুষ, বর্ণের মানুষকে নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে কোনো বিভাজন করা যাবে না।
গতকাল শনিবার জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ধর্ম সম্মেলন ও সাধু সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক মুখে নয়, প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক হলে দেশে কোনো হানাহানি থাকবে না। একইভাবে সংখ্যালঘু শব্দও আমি মানি না। সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে সবার অধিকার নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা একটা জাতি, একটা দেশ, একটা সমাজ। যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে, আবার বারবার নতুনভাবে শুরু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। মানুষের মধ্যে অনেক দাবি সৃষ্টি হয়েছে, অনেক প্রত্যাশা জাগ্রত হয়েছে।
“যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তবে কোনো বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে না। জাতি হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাদের সহনশীল হতে হবে। ধর্ম যেমন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয় রাজনৈতিক মতভেদও ভিন্ন ভিন্ন হবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।
শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রুপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরি মহারাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ।
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে। সরবরাহের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়লে দাম আরো কমবে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই আগের তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম পূর্বের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেশি, এছাড়া ক্রেতারা পরিমাণে বেশিও কিনছেন।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দায় আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকা কেজিতে উঠে যায়। পেঁয়াজ খুবই জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কেজির জায়গায় হাফ কেজি কিনছিলাম। তবে দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। এতে মোকামে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর তাই বাজারেও পণ্যটির দাম বাড়ছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার থেকে হিলিসহ দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এমন খবরে মোকামে যারা দেশীয় পেয়াজ মজুদ করছিল তারা সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দু'দিন আগেও যেখানে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হয়েছিল ৩ হাজার ২শ টাকা সেটি এখন কমে ২ হাজার ২শ টাকা হয়েছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ১ হাজার টাকা করে। কমে গেছে। কম দামে কিনতে পারায় আমরাও এখন কম দামে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, কেউ যাতে কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছি। তারা কী দামে পণ্য কিনছেন কী দামে বিক্রি করছেন সে সম্পর্কিত তথ্য যাচাইবাছাই করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে ক্রিকেট ব্যাট থেকে পাঁচ সহস্রাধিক ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করেছে বিমানবন্দরের কর্মিরা; যাদের মধ্যে একজন বিমানবন্দরের চাকুরিচ্যুত কর্মি।
রোববার সকাল সোয়া ১০ টায় বিমানবন্দরে মালামাল তল্লাশীর সময় তাদের আটকের এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।
আটকরা হল, মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন (২৬) এবং বরিশাল জেলার বাসিন্দা তানভীর আহমদ (৩০)। এদের মধ্যে তানভীর বিমানবন্দরেক চাকুরিচ্যুত কর্মি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টদের বরাতে ইলিয়াস খান বলেন, আটকরা বেলা ১১ টা ২৫ মিনিটের কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ইউএস বাংলা নামের বিমান পরিবহন সংস্থার একটি ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। তারা ফ্লাইটে উঠতে সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন। এসময় বিমানবন্দরের কর্মিরা যাত্রীদের মালামাল তল্লাশী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।
এতে ব্যাগ ও মালামাল স্কেনিং করার সময় ক্রিকেট ব্যাটের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৫ হাজার ১০০ টি ইয়াবা পাওয়া বলে জানান ওসি।
ইলিয়াছ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে কক্সবাজার সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাছের ঘেরে আধিপত্য বিস্তার ও ঘের দখল নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শেকাব উদ্দিন(৩৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা রামপুর আবাসন প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শেকাব উদ্দিন উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার মঞ্জুর আলমের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রামপুর আবাসন প্রকল্প এলাকায় একটি মাছের ঘের নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ওই ঘেরের দখল নিয়ে গতকাল রাতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এ সময় শেকাব উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, মাছের ঘেরের বিরোধ নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেছে পুলিশ। রাতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গাজীউর রহমান জানান, এ মামলায় গ্রেপ্তার প্রত্যেকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন প্রস্তুত করছে পুলিশ। রিমান্ড আবেদন প্রস্তুতের পর তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
শনিবার রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ কোচিং সেন্টারের মালিক মুনতাসির আলম অনিন্দ্য, তার দুই সহযোগী মো. রবিন ও মো. ফয়সালকে আটক করে যৌথবাহিনী। বিকেলে তাদের নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
অনিন্দ্য ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন। এ মামলায় ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
রূপগঞ্জে গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবাসন চাহিদা পুরনের জন্য কৃষি জমিতে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর বালি ভরাটের কারনে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছ্। গৃহপালিত পশু পালনে কৃষকদের এখন ভরসা নেপিয়ার জাতের ঘাস। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে গোখাদ্যর সংকটের বিষয়টি কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। গোখাদ্য সংকটে অনেকই কম দামে পশুগুলোকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার কাঞ্চন, ভোলাব,দাউদপুর, মুড়াপাড়া, মাঝিনা নদীর পাড়, দেইলপাড়া, নদ্দাসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামে এখন নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। বেসরকারি দুগ্ধ খামারিরা তাদের বাড়িতে খরচ কমানোর জন্য নেপিয়ার ঘাস চাষের দিকে ঝুকছে। আঁশযুক্ত,পুষ্টিকর, সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে চাহিদা ব্যাপক। একবার কেটে নিলে ঘাস মরে যায়না বরং কাটা অংশ থেকে পুনরায় কুঁড়ি জন্মে আবার তা পূর্নাঙ্গ ঘাসে পরিণত হয়।
সরজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে গোখাদ্য সংকট এবং নেপিয়ার জাতের ঘাসে কৃষকের ভরসার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। বারৈ গ্রামের কদম আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, অন্যের জমি চাষ করি। বাড়তি আয়ের জন্যে গরু-ছাগল পালি। কৃষক টিপু হায়দার বলেন, গরুর খাদ্য সমস্যার জন্যে আমাদের গরু কম দামে বিক্রি করে দিছি। নেপিয়ার জাতীয় ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল, ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কেটে নেয়া ঘাসগুলো বড় হয়ে যায়।
উপজেলা পশু পালন কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস গোখাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পশু খাদ্যের আরেক নাম নেপিয়ার ঘাস। দ্রুত বর্ধনশীল, উৎপাদন খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় এলাকার চাষিরা দিনদিন নেপিয়ার জাতীয় ঘাস চাষে ঝুঁকছেন। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অপরদিকে গোখাদ্য সংকট নিরসনেও ভূমিকা রাখছেন। প্রতি মাসে খামারিদেরকে বিনামূল্যে নেপিয়ার ঘাসের বীজ কাটিং দেয়া হয়। নেপিয়ার ঘাস ১০/১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চাষের পদ্ধতিও সহজ।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হচ্ছে, তা জানার জন্য ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয় বাসিন্দা পাভলো নেব্রোয়েভ।
খারকিভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় বৈঠকে বসেন।
তবে, বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো এই সময়ে ইউক্রেনের খারকিভে শক্তিশালী আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য বৈঠকের আগে থেকেই এই আয়োজনকে পুতিনের জন্য চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে বিবেচনা করছিলেন অনেকে।
৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ম্যানেজার পাভলো বলেন, ‘আমি দেখলাম, প্রত্যাশা অনুযায়ীই (বৈঠকের) ফলাফল এসেছে। আমি মনে করি, এটা পুতিনের জন্য কূটনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিজয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিজের বৈধতা সম্পূর্ণরূপে আদায় করেছেন।’
২০২২ সালে হামলা চালানো শুরুর পর থেকে রুশ নেতাকে পশ্চিমা বিশ্বে এড়িয়ে চলার যে প্রবণতা ছিল, ট্রাম্প এবার পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সেটির অবসান হলো।
শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটাকে পুতিনের একার বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনকে না রাখায় নেব্রোয়েভ শুধু ক্ষুব্ধই হননি, বরং এই বৈঠককে সময়ের অপচয় মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা অর্থহীন একটি বৈঠক ছিল। ইউক্রেন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে, ইউক্রেনীয়দের অংশগ্রহণে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে সমাধান করা উচিত।’
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমীতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেছেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা-অর্চনা, ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেটসংলগ্ন স্থানে পূজা ও প্রার্থনা সম্পন্ন হয়।
আলোচনা সভায় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা’র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রসাশক এ্যাড. সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এবং উপসচিব রথীন্দ্রনাথ রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহা. শাহীনুজ্জামান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে বরাবরই স্পেশাল। পবিত্র কুরআনেই বলা হয়েছে কেউ অন্য ধর্মের অবতারকে গালি দিবে না তাহলে তোমার ধর্মকে গালি দিবে না। মদিনা সনদেও রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য ধর্ম পালনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে আপনাদের মধ্যে যেন কোনো সংকীর্ণতা না আসে। সমান মর্যাদা সহকারে আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি। সকল ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবিকতা। আমি এখানে আসার পর ইসলামিক এন্ড কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন নামে একটি নতুন ফ্যাকাল্টি চালু করেছি। এই ফ্যাকাল্টি চালু হলে হিন্দুধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের গবেষণা চালু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্ম মতে, যখন পৃথিবীতে অধর্মের চর্চা বেড়ে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন যখন দূর্বিষহ হয়ে যায় তখন দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের জন্য শ্রী কৃষ্ণ অবতার হিসেবে আগমন করেন। কুরআন ব্যক্তিমানুষ এবং সমাজকে এড্রেস করেছে। উপমহাদেশের ভক্তিবাদের জন্য বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সাজশ আছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ধর্মীয় পরিচয় ভুলে মানুষ পরিচয় নিয়ে তারা পাশাপাশি থাকবে এই চেতনা লালন করতে হবে। সনাতন ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত করলে মানববন্ধন না করে আমার কাছে আসলে আমি সমাধান করে দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি এথিজম চর্চা করে এবং কোনো ধর্মকে স্ট্রাইক করে তাহলে তাকে যুক্তি দিয়ে দমন করতে হবে কারণ বর্তমান পৃথিবী হলো যুক্তিতর্কের পৃথিবী। আধুনিক পৃথিবী শক্তির পৃথিবী না বরং যুক্তির পৃথিবী।”
উল্লেখ্য, ধর্মালোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের নিকট একটি স্থায়ী মন্দিরের দাবি জানান অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন থামছে না। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন রনি এই ঘোষণা দেন।
রনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ বারবার হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালকসহ প্রশাসন-সমর্থিত একটি চক্র জড়িত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই ন্যাক্কারজনক এই হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, হামলার পর সংশ্লিষ্টরা উল্লাস করে খিচুড়ি পার্টি” এবং ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কাঙালীর ভোজের আয়োজন করেছে যা দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে।
রনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই আন্দোলন থামবে না। যতদিন না দালালচক্র ভেঙে প্রকৃত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ছাত্র আন্দোলন বন্ধ হয়ে গেছে এমন অপপ্রচার চালানো হলেও বাস্তবে আন্দোলন চলছে এবং চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামীকাল (রোববার) সকাল ১১টায় বরিশাল সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল টাউন হল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। এ কর্মসূচিতে বরিশালবাসীসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেট ও দালালচক্র ভেঙে সাধারণ মানুষের জন্য দালালমুক্ত ও মানসম্মত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তবে আন্দোলনকারীরা প্রায়ই হামলা ও বাধার মুখে পড়ছেন।