সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫
২ ভাদ্র ১৪৩২

পাহাড়ে সন্ত্রাস দমনে হার্ডলাইনে সরকার

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০৪
চট্টগ্রাম, বান্দরবান থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
চট্টগ্রাম, বান্দরবান থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০৪

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে গত মঙ্গল ও বুধবার পরপর দুদিনের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী কেএনএফ নিয়ে দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংক ডাকাতির পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে অস্ত্র লুট, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে মারার ঘটনায় এলাকায় বেশ আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে র‌্যাবের মধ্যস্থতায় সন্ত্রাসী বাহিনী থেকে উদ্ধার এবং গতকাল শুক্রবার ম্যানেজারকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বৃহস্পতিবার থানচি থানায় পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে সেখানে বেশ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে এলাকার মানুষ আতংকিত হয়ে যান। বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। এই ঘটনা গতকালও থানচিতে দেখা গেছে বলে দৈনিক বাংলার স্থানীয় প্রতিনিধি নিশ্চিত করেছে। এদিকে এই ঘটনার মাধ্যমে পাহাড়ে আবারও সন্ত্রাসীদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান। র‌্যাব বলছে, সন্ত্রাস দমনে পাহাড়ে সাঁড়াশি অভিযান চালাবে। অন্যদিকে আজ শনিবার বান্দরবানের পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র তৎপরতা নিয়ে সরকার অত্যন্ত কঠোর বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রুমা ও থানচিতে ৬ মামলা

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে পৃথক তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র লুট, থানায় হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় ছয়টি মামলা করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) সঞ্জয় সরকার। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমা সোনালী ব্যাংকে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র লুটপাট করে। ভল্টের টাকা নিতে না পেরে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। পরদিন থানচি বাজারের সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ সময় কৃষি ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৪২ হাজার টাকা এবং সোনালী ব্যাংক থেকে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যায় ডাকাতরা।

কারা এই কেএনএফ

আবার আলোচনায় সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনায় ব্যাপক আলোচনায় আসে এ সংগঠনটি। সূত্র জানায়, প্রায় দু’বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পার্বত্য এলাকার দুটি জেলার ৯ উপজেলা নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসনের ঘোষণা দিয়েছিল তারা। ব্যাংক ডাকাতির পূর্বেও কয়েকটি সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা। তাদের বিরুদ্ধে খুন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছুদিন নীরব থাকার পর হঠাৎ সরব হয়ে উঠেছে কেএমএফ।

এ গোষ্ঠীর সামর্থ্য, বিস্তৃতি ও সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির একটা ইঙ্গিত এসব হামলার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে অনেকে মনে করছেন। জানা গেছে, সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনাও হয়েছিল এ সংগঠনের। ২২ এপ্রিল শান্তি আলোচনা হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তার আগেই ব্যাংক ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর শান্তি আলোচনার উদ্যোক্তারা পিছু হটেছে।

দু’বছর আগে ২০২২ সালে তারা সক্রিয় হয়। ফেসবুকে তাদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার পাশাপাশি সশস্ত্র ঘটনাও ঘটায়। বান্দরবানের বম জাতিগোষ্ঠীর কিছু ব্যক্তি এটি গড়ে তুলেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।

কেএমএফ ৯ উপজেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। এগুলো হল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম।

তাদের মূল সংগঠনের সভাপতি নাথান বম। তিনি রুমা উপজেলার এডেন পাড়ার অধিবাসী। নাথান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের স্নাতক। রুমার এডেন পাড়ায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএনডিও) নামের একটি বেসরকারি সংগঠনেরও প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার অবস্থান কোথায় তা কেউ জানে না।

গত বছর কেএনএফের চার হামলার ঘটনায় পাঁচ সেনাসদস্য নিহত হন। আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) সঙ্গে সংঘর্ষে গত বছর রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাংপাড়া এলাকায় আটজন এবং রুমা উপজেলার মুয়ালপিপাড়া একজন নিহত হন। ২০২২ সালের ২১ জুন রাঙামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নের সাইজাম পাড়ায় তিন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

সূত্র জানায়, কেএনএফ এর সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। কেএনএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করে তাদের কঠোর হস্তে দমন ঘোষণা দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, কুকি চিনের জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও আস্তানা আমরা গুড়িয়ে দিয়েছিলাম। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলে আজ তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারত না। তাদের সঙ্গে আলোচনা ছিল সুদূরপ্রসারী একটি গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা ঘোষণা করেন, সন্ত্রাসী ঘটনায় কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে সংলাপ করার সব ধরনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে তাদের সঙ্গে আর সংলাপ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আলোচনা স্থগিত করা হলো।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে-আলম মিনা বলেন, কেএনএফ ব্যাংক ডাকাতি করেছে। তারা অস্ত্র লুট করেছে। সে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র তৎপরতা নিয়ে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র তৎপরতা সম্পর্কে সরকার জানে। সেখানে যৌথ অভিযান চলছে। অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে একটা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কিছু সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করেছে। এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীটি রাঙামাটি, খাগড়াছড়িতে নেই। শুধু আছে বান্দরবানে। এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কিছু তরুণ অস্ত্রশস্ত্রসহ মহড়া দিচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথ অভিযান চালাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আশা করি, অচিরেই পরিস্থিতি শান্ত হবে এবং এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই সশস্ত্র তৎপরতার ঘটনায় গোটা পার্বত্য অশান্ত হবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’

আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিদর্শনে যাবেন

বান্দরবানে সশস্ত্র হামলা ও ব্যাংকে লুটপাটের পর বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শনে আজ শনিবার যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে যাবেন তিনি। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরীফ মাহমুদ অপু গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বান্দরবানের রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন। এলাকা পরিদর্শনের সময় তিনি বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে মতবিনিময় শেষে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন তিনি। ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

পাহাড়ে সাঁড়াশি অভিযান চলবে: র‌্যাব

টাকা লুট ও শক্তির জানান দিতেই কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও হামলা করেছে। তাই পাহাড়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

শুক্রবার বেলা ১১টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

খন্দকার মঈন বলেন, বান্দরবান জেলায় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতা, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বিশ্বে তাদের সহযোগীদের সক্ষমতা জানান দিতেই এ ঘটনাটি কেএনএফ সশস্ত্র সদস্যরা ঘটিয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগেও কুকি-চিন সদস্যরা টাকার বিনিময়ে জঙ্গিদের অস্ত্র পরিচালনা প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের নির্মূলের পাশাপাশি রুমা সোনালী ব্যাংক থেকে লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র উদ্ধারে আজ থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে।

এদিকে ব্যাংকে হামলা, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও গোলাগুলির ঘটনার পর বান্দরবানের থানচি উপজেলা সদরে গতকালও পরিস্থিতি ছিলো থমথমে। বন্ধ রয়েছে থানচি বাজারের বেশির ভাগ দোকানপাট। আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেক নারী ও শিশু।

থানচি এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও পুলিশের সতর্ক পাহারা দেখা গেছে। পুলিশ বলছে, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। গতকাল থানচি উপজেলা সদরের ব্রিজের মাথায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চাঁদের গাড়ি করে এলাকা ছাড়ছেন।

এলাকার বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। বাজারের ব্যবসায়ীদের কেনাবেচা কমে গেছে বলে জানায় স্থানীয় ব্যবসায়িরা।

গতকাল থানচি থানার চারপাশে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ সদস্যদের থাকতে দেখা গেছে। থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি থানায় একজন করে সহকারী পুলিশ সুপারকে (এসপি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, গোলাগুলির পর থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লোকজনের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান তিনি।

অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

অপহরণের দুই দিনের মাথায় বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) তাকে হস্তান্তর করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, র‌্যাব খবর পাওয়ায় পরপরই সোনালী ব্যাংক বান্দরবানের রুমা শাখার অপহৃত ম্যানেজারকে নিরাপদে উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং অক্ষত অবস্থায় ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়। অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে রুমা থেকে উদ্ধারের পর তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাব কমান্ডার আরও বলেন, পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, আর সন্ত্রাসীদের নির্মূলের পাশাপাশি রুমা সোনালী ব্যাংক থেকে লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র উদ্ধারে আজ থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। বৃহস্পতিবার র‍্যাবের মধ্যস্থতায় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় রুমা উপজেলার বেথেল পাড়া দিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। গতকাল তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল র‌্যাব।


স্বতন্ত্র কোডে শিক্ষা ক্যাডারসহ ২ দফা দাবি ইবি'র লোক প্রশাসন শিক্ষার্থীদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাকিব আসলাম, ইবি (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগকে স্বতন্ত্র কোডে শিক্ষা ক্যাডার এবং এনটিআরসিএ-এর অধীনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৭আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। পরবর্তীতে মিছিল নিয়ে প্রদান ফটক গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয় তারা।

মানববন্ধনে তারা দু’দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো— লোক প্রশাসন বিভাগকে স্বতন্ত্র কোড প্রদান করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর মাধ্যমে কলেজ পর্যায়ে ‘পৌরনীতি ও সুশাসন’ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্গত বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণ করা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর প্রায় দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করছে। কিন্তু তারা তাদের এই শিক্ষা প্রয়োগ করার মতো যোগ্য স্থান খুঁজে পায় না। যদি কর্মক্ষেত্রে সুযোগ দেয়া না হয় তাহলে এ বিভাগকে রেখে কী লাভ? আপনারা এ বিভাগ বাদ দিয়ে দেন।নাহলে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ দিন। লোক প্রশাসন বিভাগে আমরা ৬-৭ বছর পড়াশোনা করে থাকি। আর আপনারা অন্য বিভাগ থেকে নিয়োগ দিয়ে ৬-৭ মাসের ট্রেনিং এর মাধ্যমে কাজ চালান। যদি সেটা হয়ই তাহলে তো আমাদের এখানে ৬-৭ বছর সময় নষ্ট করার কোনো মানে নাই।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সবথেকে অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত বিভাগ হিসেবে অবস্থান করছে লোক প্রশাসন বিভাগ। দেশের সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে তাদের শিক্ষা প্রয়োগ করার মতো উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র শিক্ষার্থীরা খুঁজে পায় না।

তারা আরও জানান, দেশে যদি আমাদের নির্দিষ্ট কর্মসংস্থান না থাকে তাহলে এই বিভাগ রাখার তো প্রয়োজন নেই। যদি বিভাগ থাকে তাহলে বিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে আমাদের প্রবেশের সুযোগ করে দিতে হবে। লোক প্রশাসন নিয়ে পড়াশোনা করে আমাদের প্রশাসনে যাওয়ার সুযোগ করে না দিলে কর্মক্ষেত্রের সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।


রাজবাড়ীতে অচল খাল সচল ও জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবীতে বিক্ষোভ ও স্বারকলিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জহুরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি

কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে অচল খাল সচল এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্বারকলিপিও প্রদান করা হয়।

এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন কৃষক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদার। বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মানিক মজুমদার, আব্দুস সামাদ মিঞা, নূর আব্দুল্লাহ সাইদ, জাহানারা বেগম ও মঞ্জুয়ারা বেগম।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সুলতানপুর ইউনিয়নের খলিশা রামকান্তপুর এলাকায় প্রভাবশালীরা খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ১০০ একর জমি জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত রয়েছে। এতে ধান রোপণ ও ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত খাল সচল করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তারা।


ফরিদপুরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের মমিন খারঁ হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ-সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা জাতীয়তাবাদী প্রবাসী দলের সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলির আয়োজনে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বিকাল ৪টায় মমিন খারঁ হাট মাধবদিয়া ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উদ্বোধনী খেলায় সাবেক ইউপি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মির্জা সাইফুল ইসলাম আজমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলাদলের আহবায়ক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।

এ সময় ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপির সেক্রেটারি চৌধুরী নাজমুল হাসান রঞ্জন, ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা বেনজির আহমেদ তাবরিজ, ফরিদপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, ডিগ্রীরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ মজিবর রহমান মাতুব্বর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আব্দুর রাজ্জাক শেখ, আমেরিকা প্রবাসী ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ আক্তারুজ্জামান খান, মমিন খাঁর হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম বেপারী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রেজাউল করিম মোল্লা, মোহন মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সায়েম মোল্লা, ঢাকা জর্জ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোঃ বশির আহমেদ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে খেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণ করে আশিক স্মৃতি স্পোর্টিং ক্লাব- অম্বিকাপুর বনাম লালখান বাজার ফুটবল একাদশ। টুর্নামেন্টের আয়োজক মমিন খারঁ হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ-সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা জাতীয়তাবাদী প্রবাসী দলের সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলির আমন্ত্রণে মাঠে হাজার হাজার ফুটবল প্রিয় দর্শকের আগমন ঘটে, যা ছিল চোখে পড়ার মতো। খেলা পরিচালনার অন্যতম দায়িত্ব পালন করেন ক্রীড়া অনুরাগী জনি মির্জা ও অন্যান্যরা। খেলায় ২-১ গোলের ব্যবধানে আশিক স্মৃতি স্পোটিং ক্লাব অম্বিকাপুর, লালখান বাজার ফুটবল একাদশকে পরাজিত করে।


কুমিল্লায় এশিয়া বাসচাপায় তিশা ট্রান্সপোর্টের সুপারভাইজার নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড চৌরাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিশা ট্রান্সপোর্টের এক সুপারভাইজার গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৬টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ইকবাল বাহার।

নিহত সোহেল রানা (৪৫) কুমিল্লা বাঙ্গরাবাজার খামারগ্রামের মৃত কবির আহম্মেদের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ডান পাশে তিশা প্লাস পরিবহন দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় বাম দিক থেকে এশিয়া ট্রান্সপোর্ট বেপরোয়া গতিতে কাউন্টার ত্যাগ করার সময় তিশা ট্রান্সপোর্টের সুপারভাইজার অসাবধানতাবশত চাকার নিচে পড়ে যান। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ইকবাল বাহার বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

স্থানীয়রা জানান, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড চৌরাস্তায় প্রতিদিনই বাস ও ট্রান্সপোর্ট কাউন্টারের বেপরোয়া গাড়ি চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।


পানির দাবীতে রাস্তায় নেমেছে পৌরবাসী, শিঘ্রই সমাধানের আশ্বাস পৌর প্রশাসকের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসনাইন তালুকদার দিবস, ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকায় পৌর পানি সরবরাহের সমস্যা গত দু'বছর ধরে। সাবেক মেয়র, বর্তমান প্রশাসক সবার কাছে বহুবার ধন্না ধরেও কোনো লাভ হয়নি। ঐ এলাকার বিকল পাম্প গুলো মেরামতের নেই কোনো উদ্দোগ। এসব কথা জানিয়েছেন সেখানকান (কলাবাগান) বাসিন্দারা।

রোববার ১৭ আগষ্ট সকালে পানির দাবীতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে ৯নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষ। মিছিল ও মানববন্ধন করেছে তারা। বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে। স্মারক লিপিও দিয়েছে জেলা প্রশাসক বরাবরে।

আন্দোলনরতো ঝালকাঠি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কলাবাগানবাসী ডিসি বরাবর লিখিত পত্রে উল্লেখ করেছেন, "দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ কলাবাগান এলাকায় পানি সরবরাহের তীব্র সমস্যা থাকায় উক্ত এলাকার

জনগন সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার অবহিত করলেও ইহাতে তারা কোন কর্নপাত করেনাই। বর্তমানে পানির সমস্যার কারনে এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে নদীর পানি ব্যবহার করার কারনে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহীত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।"

এলাকাসীর এই আন্দোলনের মুখপাত্র ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুরাদ হোসেন বলেন, 'নিয়মিত পৌর পানির বিল পরিশোধ করলেও কি কারনে বছরের পর বছর পানির পাম্প অকার্যকর থাকে সে বিষয়ে আমরা বোধগম্য নই। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানির সমস্যা সামাধান করা এখন বাসিন্দাদের দাবী।'

এ সমস্যা কেনো এবং সমাধান কি? এ প্রশ্নের জবাবে পৌর প্রশাসক কাওছার হোসেন মুঠো ফোনে দৈনিক বাংলাকে জানান, 'পৌসভার ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৪টি পাম্প থেকে পানি সরবরাহ করা হতো। কিন্তু পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় ২টি পাম্পে পানি উঠছেনা এবং ১ টি পাম্প থেকে লবনাক্ত পানি ওঠে তাই এই তিনটি পাম্প বন্ধ রয়েছে। ফলে ৯ নং ওয়ার্ডে পানির সংকট বিরাজ করছে। ঝালকাঠি পৌরসভা ৭ জেলা পানি সরবরাহ প্রকল্প ও ২৫ জেলা পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে ঐ বিষয়ে প্রকল্প প্রেরণ করা হ‌য়ে‌ছে। শীঘ্রই এ প্রকল্প শুরু হলে ঝালকাঠি বাসী এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে ব‌লে আশা কর‌ছি।'


চারঘাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি, রাজশাহী ব্যুরো

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী এলাকার জোতকার্তিক বি এন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে নিয়োগ বোর্ড না করেই টাকার বিনিময়ে চারটি পদে নিয়োগ দিয়ে এমপিও’র আবেদন করেছে ঐ শিক্ষক। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন’র সীমাহীন দুর্নীতির বিচার এবং এমপিও আবেদন বাতিলের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেছে সাবেক ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন। তিনি নন্দনগাছীর কালাবীপাড়া এলাকার মৃত ছবির উদ্দিনের ছেলে।

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রধান শিক্ষক মারফত জানতে পারেন যে, আইসিটি ল্যাব সহকারী পদে একজন লোক নিয়োগ করা হবে। তার কথা শুনে আমার ছেলের বৌকে নিয়োগ দেয়ার কথা বললে প্রধান শিক্ষক ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। তিনি তার কথায় রাজি হয়ে ২০১৯ সাল থেকে ২০ সালের বিভিন্ন সময় মোট ৯ লক্ষ টাকা তার নিজ বাসায় নিজ হাতে গ্রহণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার ছেলের বৌকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না দিয়ে নানা রকম তালবাহানা করছে। মকবুল হোসেন আবেদনে আরো উল্লেখ করেন, বর্তমানে একান্ত সূত্রে জানতে পারেন, আইসিটি পদসহ মোট ৪টি পদে প্রায় অর্ধ কোটি নিয়োগ বাণিজ্য করে ব্যাক ডেটে বাস্তবে নিয়োগ বোর্ড না করেই অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এই আবেদন বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে অভিযোগকারী সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন আমার ছেলের বৌকে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৯ লক্ষ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তাকে চাকরি না দিয়ে বেশী টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে এবং স্কুলটি এমপিও’র জন্য আবেদন করেছে। আমি এই এমপিও আবেদন বাতিলের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেছি।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন। মন্ত্রীর পরিচয়ে নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন এই শিক্ষক। অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহা. আবদুর রশিদ জানান, এ ধরনের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। একজন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করানো হবে। টাকা লেনদেনের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে ক্ষতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন তিনি।


ফরিদপুরে এবার ভুয়া তথ্যে সাহসী সাংবাদিক সম্মাননা, প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর প্রতিনিধি

জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার ভুয়া তথ্যে ফরিদপুরের দুই নামধারী সাংবাদিককে ‘সাহসী সাংবাদিক’ সম্মাননা প্রদানের প্রতিবাদে ও সম্মাননা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা। গতকাল রোববার সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে ফরিদপুর জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকরা অংশ নেন। গত ৩ আগস্ট সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট জুলাই আন্দোলনে সাহসী ও আহত সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান করে। এতে ফরিদপুরে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি শেখ ফয়েজ আহমেদ ‘সাহসী সাংবাদিক’ সম্মাননা বাগিয়ে নেন। অন্যদিকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ইমরান হোসাইন নামের এক ব্যক্তি ভুয়া জিটিভির স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন। তাদের মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য পরিচয় ব্যবহার করে প্রাপ্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাহসী আহত সাংবাদিক সম্মাননা পুরস্কার প্রত্যাহার ও বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, সিনিয়র সদস্য মফিজ ইমাম মিলন, পান্না বালা, হাসানুজ্জামানসহ অন্যান্যরা। এ সময় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সদস্যরা বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, শেখ ফয়েজ আহমেদের মতো একজন ভুয়া সাংবাদিক তাকে এই ধরনের পদক প্রদান করে সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থা একটা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত জন্ম দিয়েছে। এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের অসম্মান করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার যে সমস্ত সাংবাদিকরা সরাসরি ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সমর্থন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকতা করেছিল। তাদের বাদ দিয়ে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে এই ধরনের পুরস্কার দেওয়ার কি যুক্তি থাকতে পারে? তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার একজন আসামি। অবিলম্বে ওই পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।


মানিকগঞ্জের পদ্মা নদীর ভাঙনে ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে লঞ্চ ঘাট এবং ফেরি ঘাটের একাংশ। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর তীরের বসবাসকারীরা ঘরবাড়ি অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। শিবালয়ের পাটুরিয়া ঘাট এবং আশপাশের পুরো এলাকাজুড়ে এখন নদীভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে। সেই সঙ্গে ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।

জানা গেছে, গত শনিবার পাটুরিয়া ৪নং ঘাটসংলগ্ন একটি বাড়ির অর্ধেক অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। ওই বাড়ির লোকজনকে ঘর-দরজাসহ আসবাবপত্র অন্যত্রে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে স্রোতের কল কল শব্দে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে পাটুরিয়া ফেরি ঘাটসহ পার্শ্ববর্তী শত শত পরিবারের বসতবাড়ি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাতের পানি হু হু করে বাড়ছে পদ্মা-যমুনার পানি। এতে পাটুরিয়া ঘাটের বিভিন্ন অংশে আঘাত হানছে তীব্র স্রোতের ধাক্কা। ঘাট এলাকার নিচের মাটি পানির স্রোতে ধুয়ে গিয়ে ধসে পড়ছে পাড়। গত ৫ আগস্ট বিলীন হয়ে গেছে লঞ্চ ঘাট এবং গত ১২ আগস্ট ৪ ও ৫নং ফেরি ঘাটের একাংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ৪নং ফেরি ঘাটসংলগ্ন একটি বাড়িও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পুরো ফেরি ঘাট ভেঙে গিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

পাটুরিয়া ঘাটের বাসিন্দা রানা সিকদার বলেন, পানি বৃদ্ধির শুরু থেকেই ঘাট এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নদীতে পানি আসা মাত্রই ঘাট এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

পাটুরিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের আশপাশে বিআইডব্লিউটির ফোরসোর জায়গায় অন্তত পাঁচটি স্থানে অবৈধ বালুর চাতাল রয়েছে। নদীর তীরে এসব জায়গা থেকে বালু মাটি কেটে নেওেয়ার ধুম পড়েছে। সরকারি জায়গা অবৈধভবে দখল করে (এক্সক্যাভেটর) ভেকু মেশিনের সাহায্যে সরারাত নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু-মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধভাবে বালু-মাটির ব্যবসা করছে। বেপরোয়াভাবে বালু মাটি কেটে নেওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ব্যাপকভাবে নদীভাঙনের শুরু হয়েছে।

শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, পাটুরিয়ায় অবৈধ বালু কাটা এবং তা বাজারজাত করার জন্য আমার ইউনিয়নের রাস্তাটি ব্যবহার করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এখন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এবং সরকারি সম্পত্তিরও ক্ষতি হচ্ছে। এখনতো লঞ্চে যাত্রী ওঠানামায়ও ভোগান্তি হচ্ছে। আমি এসব বিষয়ে বারবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো ফল পাচ্ছি না।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, পাটুরিয়া ঘাটটা এবং লঞ্চ ঘাট এগুলো বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক পরিচালনা করে থাকে নদী শাসন থেকে শুরু করে সবগুলোই করে থাকে। আমাদের যদি কোনো ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয় আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব, কারিগরি সহযোগিতা থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি আমরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পাটুরিয়া ঘাট নং৫ এবং ৪ ল্যান্ডিং স্টেশনগুলো গুরুতর হুমকির মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, জেটি ধসের পর তারা তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ভাঙন নিয়ন্ত্রণের জন্য নদীতে ফেলার জন্য বর্তমানে পর্যাপ্ত জিও-ব্যাগের অভাব রয়েছে।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রচণ্ড শ্রোতের ফলে পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটের আশেপাশে নদীতে প্রচণ্ড ভাঙন হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানির পরিমাণ করে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ দ্রুতগতিতে জিও-ব্যাগে বালু ভর্তি করে নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা থেকে পাটুরিয়ায় ফেরি ঘাট স্থানান্তর করে। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২১টি জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়।


ফুলগাজীতে স্বাবলম্বী প্রজেক্টের উপকরণ হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর ফুলগাজীতে বেকার ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষে স্বাবলম্বী প্রজেক্টের উপকরণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব আবু সাঈদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ব্যাটারিচালিত মোটরভ্যান, সেলাই মেশিন, গরু, দোকানের মালপত্র, ৪টি ঘর পুনর্নির্মাণ ও ৪টি ঘর মেরামতের জন্য টিন প্রদান করা হয়েছে। গত শনিবার বিকালে ‘পরিবর্তন সমাজের কল্যাণে’ সংগঠনের আয়োজনে ফুলগাজী উপজেলার উত্তর আনন্দপুরে একটি কনভেনশন হলে এই হস্তান্তর করণ অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সভাপতি ফিরোজ আহাম্মদ সাজিমের পরিচালনায় ও সংগঠনের সদস্য শারমিন আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মো. মোর্শেদ, মো. সাহাব উদ্দিন প্রমুখ। এ সময় আমন্ত্রিত অতিথি, সংগঠনের অন্যান্য সদস্যসহ উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সচিব আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, শাহবাগ মঞ্চ এগুলো সব আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ফর্মুলায় হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন আমাদের দেশটাকে যেন বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করে। আমাদের তরুণ সমাজ আমাদের যেটা দিয়েছে সেটা বলতে হবে আল্লাহরই দান।


বিভাজন নয়, সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে: আমীর খসরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি কোনো বিভাজনের রাজনীতি করে না। বিএনপি সব ধর্মের মানুষ, বর্ণের মানুষকে নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে কোনো বিভাজন করা যাবে না।

গতকাল শনিবার জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ধর্ম সম্মেলন ও সাধু সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক মুখে নয়, প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক হলে দেশে কোনো হানাহানি থাকবে না। একইভাবে সংখ্যালঘু শব্দও আমি মানি না। সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে সবার অধিকার নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা একটা জাতি, একটা দেশ, একটা সমাজ। যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে, আবার বারবার নতুনভাবে শুরু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। মানুষের মধ্যে অনেক দাবি সৃষ্টি হয়েছে, অনেক প্রত্যাশা জাগ্রত হয়েছে।

“যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তবে কোনো বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে না। জাতি হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাদের সহনশীল হতে হবে। ধর্ম যেমন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয় রাজনৈতিক মতভেদও ভিন্ন ভিন্ন হবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।

শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রুপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরি মহারাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ।


হিলিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে। সরবরাহের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়লে দাম আরো কমবে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।

সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই আগের তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম পূর্বের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেশি, এছাড়া ক্রেতারা পরিমাণে বেশিও কিনছেন।

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দায় আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকা কেজিতে উঠে যায়। পেঁয়াজ খুবই জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কেজির জায়গায় হাফ কেজি কিনছিলাম। তবে দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। এতে মোকামে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর তাই বাজারেও পণ্যটির দাম বাড়ছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার থেকে হিলিসহ দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এমন খবরে মোকামে যারা দেশীয় পেয়াজ মজুদ করছিল তারা সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দু'দিন আগেও যেখানে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হয়েছিল ৩ হাজার ২শ টাকা সেটি এখন কমে ২ হাজার ২শ টাকা হয়েছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ১ হাজার টাকা করে। কমে গেছে। কম দামে কিনতে পারায় আমরাও এখন কম দামে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, কেউ যাতে কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছি। তারা কী দামে পণ্য কিনছেন কী দামে বিক্রি করছেন সে সম্পর্কিত তথ্য যাচাইবাছাই করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।


কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।

রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।

চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।

পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


কক্সবাজার বিমানবন্দরে ক্রিকেট ব্যাট থেকে পাঁচ সহস্রাধিক ইয়াবাসহ দুইজন আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার বিমানবন্দরে ক্রিকেট ব্যাট থেকে পাঁচ সহস্রাধিক ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করেছে বিমানবন্দরের কর্মিরা; যাদের মধ্যে একজন বিমানবন্দরের চাকুরিচ্যুত কর্মি।

রোববার সকাল সোয়া ১০ টায় বিমানবন্দরে মালামাল তল্লাশীর সময় তাদের আটকের এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।

আটকরা হল, মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন (২৬) এবং বরিশাল জেলার বাসিন্দা তানভীর আহমদ (৩০)। এদের মধ্যে তানভীর বিমানবন্দরেক চাকুরিচ্যুত কর্মি।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টদের বরাতে ইলিয়াস খান বলেন, আটকরা বেলা ১১ টা ২৫ মিনিটের কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ইউএস বাংলা নামের বিমান পরিবহন সংস্থার একটি ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। তারা ফ্লাইটে উঠতে সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন। এসময় বিমানবন্দরের কর্মিরা যাত্রীদের মালামাল তল্লাশী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

এতে ব্যাগ ও মালামাল স্কেনিং করার সময় ক্রিকেট ব্যাটের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৫ হাজার ১০০ টি ইয়াবা পাওয়া বলে জানান ওসি।

ইলিয়াছ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে কক্সবাজার সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।


banner close