শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পঞ্চগড় সীমান্তে এবারও বসছেনা দুই বাংলার মিলনমেলা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:৪৯
গত ৫ বছরের মত এবারও নানা কারণে বসছেনা বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্য সীমান্তের জিরো লাইনে কাটাতার ঘেঁষে দুই বাংলার মিলনমেলা।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি'র সেকেন্ড ইন কমান্ড উপ অধিনায়ক (টুআইসি) মেজর রিয়াজ মুর্শেদ ও নীলফামারী ৫৬ বিজিবির হওয়ায় ৫৬ বিজিবি'র (সিও) অধিনায়ক লে. কর্ণেল আসাদুজ্জামান হাকিম এই মিলনমেলা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি জানায়, গেল বছরের মত এই মিলনমেলা নিয়ে এবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও প্রশাসনের কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তাই এবারও বসছেনা সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা।
এর আগে বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি বৈশ্বিক মহামারির কারণে গত ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বছর পঞ্চগড় সীমান্তে দুই বাংলার কাঁটাতারের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এবার নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মত তা বন্ধ থাকছে।
সাধারণত বৈশাখের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন সীমান্তে এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর বাংলা নববর্ষে পঞ্চগড়ের অমরখানা, শুকানি, মাগুরমারি ও ভূতিপুকুর সীমান্তসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টের কাঁটাতারের পাশে প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দু'দেশের হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা ও ভাব বিনিময় করেন। এই দিনটির দুই সীমান্তের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকলেও এবারও সেই আনন্দ চোখে পড়বে না।


প্রশিক্ষণের সঙ্গে নতুন সেলাইমেশিন পেয়ে বেজায় খুশি নড়াইলের ২৫ নারী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কার্ত্তিক দাস, নড়াইল

২৫ জন দুস্থ অসহায় নারীদের দর্জিবিজ্ঞানের ওপর ১২ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দিয়েছে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সমবায় অফিস। জেলা সমবায় কার্যালয় এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রত্যেককে সনদসহ বিনামূল্যে সেলাইমেশিন প্রদান করা হয়েছে। দর্জিবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে সেলাইমেশিন পেয়ে তারা বেজায় খুশি।

বৃহস্পতিবার লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদসহ সেলাইমেশিন বিতরণ করেন খুলনা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক মো. নূরন্নবী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ। স্বাগত বক্তব্য দেন, লোহাগাড়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, মানবপাচার প্রতিরোধ সংস্থার সভাপতি সৈয়দ খায়রুল আলম, লোহাগাড়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহম্মদ আমানত হোসেন। প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন জেলা সমবায় অফিসের প্রশিক্ষক মো. হারুন আর রশিদ।

এ সময় লোহাগাড়া উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মোসম্মাৎ শিরিনা খাতুন, সাংবাদিক মারুফ সামদানি, সাংবাদিক জহুরুল হক মিলু, মাস্টার ট্রেইনার এস, এম সাইদুর রহমান, সহকারি ট্রেইনার ফাতেমাতুজ জোহরা অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

লোহাগাড়া উপজেলা সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে দুজন করে নারী উদ্যোক্তা বাছাই করে ১২ দিনব্যাপী দর্জিবিজ্ঞানের ওপর সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে সনদসহ বিনামূল্যে সেলাইমেশিন বিতরণ করা হয়।

প্রশিক্ষণসহ বিনামূল্যে একটি সেলাইমেশিন পেয়ে বেজায় খুশি প্রশিক্ষণার্থী তাছলিমা বেগম। তাছলিমার বাড়ি ইতনা ইউনিয়নের ইতনা গ্রামে। তার পরিবারে স্বামীসহ চারজন মানুষ। দুই বছর আগে নারকেল গাছ থেকে পড়ে গিয়ে স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পঙ্গু।

স্নিগ্ধা বিশ্বাসের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের সরশুনা গ্রামে। বাড়ি থেকে লাহুড়িয়া বাজারের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। সে জানায় প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়। পায়ে হেটে বাজারের দোকানে পৌঁছাতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট।


মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে নবযোগদানকৃত জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবিরের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সাংবাদিক বাংলাভিশনের প্রতিনিধি তুহিন আরণ্য, মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তোজাম্মেল আযম, মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন, মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সম্পাদক মাজেদুল হক মানিক, মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক মাহাবুব চান্দু, গাজি টিভির প্রতিনিধি রফিকুল আলম,, নয়াদিগন্ত প্রতিনিধি ওয়াজেদুল হক, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্টাফ রিপোর্টার রাশেদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি আকতারুজ্জামান, বাসসের প্রতিনিধি দিলরুবা ইয়াসমিন, এখন টিভির প্রতিনিধি মুজাহিদ আল মুন্না। মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পার্থ প্রতীম শীল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাজওয়ার ইবনে সাকাপিসহ মেহেরপুর জেলা কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যম কর্মিদের জন্য অবাধ তথ্য প্রবাহ সৃষ্টি, জেলার অনলাইন জুয়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সড়কে বিশৃঙ্খলাসহ নানা সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন। আর সকল সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাইলেন নবযোগদানকৃত জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল করিম।


রংপুরের নতুন জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর প্রতিনিধি

নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ এনামুল আহসান রংপুরে প্রশাসনের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। জেলা প্রশাসক হল রুমে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলার সকল কর্মরত সাংবাদিক। পরিচয় পর্ব শেষে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা, সুশাসন বাস্তবায়ন এবং ফলপ্রসূ প্রশাসনের সমন্বিত দক্ষতার জন্য দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এনামুল আহসান, তার পরিচিতি ও নেতৃত্বের ধরন দিয়ে রংপুরে প্রশাসনকে আরও কার্যকর, স্বচ্ছ এবং আধুনিক করে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘সমস্যার দ্রুত সমাধান, নীতিনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমন্বিত প্রশাসনিক উদ্যোগই রংপুরকে একটি আদর্শ জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।’

সভায় জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘বিগত দিনে যে অবহেলা ও প্রশাসনিক শূন্যতা রংপুরে লক্ষ্য করা গেছে, তা কাটিয়ে উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু করতে আপনাদের সহযোগিতা আমাদের জন্য অপরিহার্য। একত্রে আমরা রংপুরকে একটি উন্নত, স্বচ্ছ ও সমন্বিত প্রশাসনিক মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’

নবাগত জেলা প্রশাসকের এই আহ্বান সাংবাদিকদের মধ্যে নতুন উদ্যম এবং প্রত্যাশার সঞ্চার করেছে। তার স্বচ্ছ নেতৃত্ব, সমন্বয়মুখী প্রশাসনিক ধারণা এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি রংপুরের জন্য উন্নয়ন ও সমন্বিত সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার সূচক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


তারেক রহমানের জন্মদিনে শেরপুরে ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধ দিল বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শেরপুরে দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।

ড্যাবের সহযোগিতায় শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপি এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ। উদ্বোধক ছিলেন শেরপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনীত এমপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা।

সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মো. হযরত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মেডিকেল ক্যাম্পে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব, অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, অধ্যাপক ডা. খালেকুজ্জামান দিপু, কোষাধক্ষ্য ডা. মো. মেহেদী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সায়েম মনোয়ার, শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, দেশে ৩৬টি মেডিকেল কলেজে দলীয় লোক বসানো ও আত্মীকরণের কারণে মানসম্পন্ন শিক্ষা নেই। বিএনপি সরকারে এলে শেরপুরে মানসম্মত মেডিকেল কলেজ করতে অনুরোধ করব।

ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেন, শেরপুরের মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আমরা দরিদ্র অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা প্রদান করার জন্য পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সামনের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমরা শেরপুরে হাসপাতালের যত সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করে দূর করে মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করব। তিনি জানান, আজকের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে পাঁচ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধ রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি বিনা টেহায় চিকিৎসা পাইলাম, ওষুধ পাইলাম, খুব খুশি হইছি। দোয়া করি তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হোক।’ সফুরা বেগম বলেন, ‘এর আগে এত বড় ডাক্তার দেহাবার পাইনেই। আজকে দেহাইলাম, প্রিয়াঙ্কা আমগরে ওষুধ দিল, দোয়া করি মেয়েডা এমপি হোক।’


দুর্নীতিতে ডুবছে শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট, দুদকে চিঠি

কয়েকজন শিক্ষকের অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রায় এক দশক ধরে কয়েকজন শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে। নিয়ম না মেনে বিভিন্ন খাতে বিপুল অর্থ ব্যয়, আয়কর ফাঁকি, প্রশ্নপত্র প্রুফ ও মডারেশন খাতে অস্বচ্ছ ব্যয়সহ একাধিক অভিযোগ ওঠেছে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তাদের এসব অনিয়মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর দুদকে জমা দেওয়া ওই অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আবু সোলেমান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল আল আমিনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের নানা তথ্য তুলে ধরেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দরপত্র ছাড়াই কোটি টাকার কাজ অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছর পর্যন্ত নিয়মনীতি উপেক্ষা করে দরপত্র ছাড়াই বিদ্যালয়ের ভবনের ৪র্থ ও ৫ম তলার নির্মাণ ও সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়। এসব কাজে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা। এসব ব্যয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন বা নিরীক্ষা রেকর্ড নেই।

ট্রাস্ট পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আগে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিনিধিদের নির্বাচন করা হলেও ২০২৪-২৬ মেয়াদে প্রধান শিক্ষক নিজ পছন্দের সদস্যদের তালিকা তৈরি করে সভাপতির অনুমোদন নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ২০২৪ সাল থেকে প্রতিটি পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র প্রুফ ও মডারেশন’ খাতে প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে উত্তোলন করা হচ্ছে। পরীক্ষার খাতায় ‘কোডিং’ নামে ভাউচার তৈরি করে এই অর্থ তোলা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দিয়ে কাজ করিয়ে তাদের নামে বড় অঙ্কের ভাউচার তৈরি করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা, শিক্ষা সফর ও বিদায় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও এসব টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে জমা হয়নি। কিছু শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত উদ্দেশে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) নিতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ২০১৫ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই একাধিক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় এবং ২০২২ সালে তাদের স্থায়ী করা হয়। ওই তালিকায় রয়েছেন রাহিমা খানম (দিবা শাখা), অহিদুল্লাহ (প্রাতঃশাখা), রওশন আক্তার ও আশরাফ আলী। কারও নিয়োগ বা যোগদানপত্র নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক দুই শিফট থেকে বছরে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু তিনি এসব আয়ের কোনো কর পরিশোধ করেননি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঘরভাড়া ৩ হাজার ও নন-এমপিও শিক্ষকদের ৪ হাজার টাকা হলেও প্রধান শিক্ষক উভয় শিফট থেকে ১৬ হাজার টাকা করে ঘরভাড়া নেন। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ‘বিশেষ ভাতা’ হিসেবে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সাল থেকে অনুমোদন ছাড়া প্রতি বছর টিউশন ফি বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি এক হাজার টাকা, যা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদনবিহীন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক আবু সোলেমান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো সরকারি বরাদ্দের আবেদন করেননি; বরং নিজ আস্থাভাজন ব্যক্তিদের নিয়ে উন্নয়ন কমিটি গঠন করে বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান রোডে অবস্থিত শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট ১৯৭৯ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম চিন্তাবিদ শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভীর নামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়। ১৯৯৩ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে দুই শিফটে অন্তত ৫০ জন শিক্ষক পাঠদান করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, বিভিন্ন নির্মাণকাজের ব্যয় সংক্রান্ত ভাউচারে তাদের জোর করে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নাকি তাঁদের বলেছেন, ‘এটা চাকরিরই অংশ; স্বাক্ষর না করলে চাকরি থাকবে না।’

তাদের অভিযোগ, একসময় সুনাম থাকা এ প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মের কারণে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জায়গায় পরিণত করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আবু সোলেমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তী সময়ে পাঠানো ক্ষুদে বার্তারও কোনো জবাব মেলেনি।

অতিরিক্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও শাহ ওয়ালীউল্লাহ ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের সভাপতি মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বলেন, ‘আমি এখন দায়িত্বে নেই। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’ তবে নথিপত্রে দেখা যায়, গত ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের ব্যয়ের হিসাব খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে।


ফটিকছড়িতে আবারও পুড়িয়ে দিল কৃষকের পাকা ধান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে আবারও খেতের ধান পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এবার সেলিম নামের এক বর্গা চাষির দুই শতক জমির পাকা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।

২০ নভেম্বর রাত ৩ টার দিকে ফটিকছড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ রাঙামাটিয়া বাগমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলায় বিগত এক সপ্তাহে তিনটি এলাকায় খেতে ধান পোড়ানোর ঘটনায় স্থানীয় কৃষকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কৃষক সেলিম জানান, দুই শতক জমির পাকা ধান কেটে বৃহস্পতিবার মড়াই করার জন্য স্তূপ করে রেখছিলাম। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কে বা কারা আমার পাকা ধানে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আমি অসহায় মানুষ অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এসব জমি চাষাবাদ করতে বিভিন্ন মানুষ থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এখন আমি কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের মহাজনপাড়ায় ৪ একর ও মঙ্গলবার রাতে নাজিরহাট পৌরসভার দৌলতপুর গ্রামে এনাম নামে এক কৃষকের দুই জমির পাকা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা।


ডিমলায় ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল ভাই-বোনের!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

নীলফামারী ডিমলায় ট্রাক-চার্জার অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আপন ভাই-বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার শেষ বিকেলে উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের জলঢাকা-ডালিয়া সড়কের তালতলা নামক স্থানে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত আশরাফ আলী (৪০) ও রুপিয়া বেগম (৪৩) পার্শ্ববর্তী ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা গ্রামের সোনাউল্লাহর ছেলে-মেয়ে। নিহতরা সম্পর্কে আপন ভাই-বোন।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে অটোচালক ও নিহতদের পরিবারের চারজনসহ আরও পাচঁজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, ঘটনার দিন শেষ বিকেলে আশরাফ আলী, তার স্ত্রী জামফুল বেগম (৩৫), ছেলে লিমন ইসলাম (৫), মেয়ে আঁখি আক্তার (১২), বড় বোন রুপিয়া বেগম ও বড় বোনের ছেলে ভাগনে সুজন আলী (১২) নিয়ে চাপানী বাজার থেকে ওই এলাকার মঈনুল ইসলামের অটোরিকশাতে করে ডালিয়া ভাগনি জামাইয়ের (রুপিয়ার মেয়ে জামাই) বাড়িতে নবজাতক সন্তান দেখতে যাচ্ছিলেন।

পথিমধ্যে তালতলা নামক স্থানে বিপরিত দিক থেকে আসা মেসার্স এস, এম এন্টারপ্রাইজ নামের ঢাকা মেট্রো-ট ২৪-৫৫৮৩ নম্বরের একটি বেপরোয়া গতির ট্রাক অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই আশরাফ আলী মারা যান।

পরে রংপুর নেওয়ার পথিমধ্যে আশরাফের বড় বোন রুপিয়া বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। খবর পেয়ে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা হাইওয়ে পুলিশ, ডিমলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই চালক ট্রাকটি রেখে পালিয়ে যাওয়ায় ঘাতক ট্রাকটি ও ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশাটিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানা পুলিশ। পরে এ ঘটনায় নিহতদের চাচাতো ভাই বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইনে ডিমলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, সুরতহাল শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হাতিবান্ধা হাইওয়ের সিমানায় সড়ক দুর্ঘটনাটি হওয়ায় ঘাতক ট্রাক ও ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশাটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন, এ ঘটনায় নিহতদের চাচাতো ভাই বাদী হয়ে সড়ক আইনে মামলা নম্বর-১১ তারিখ ২০/১১/২০২৫ দায়ের করেছেন। মামলাটি হাতিবান্ধা হাইওয়ে থানা পুলিশ তদন্ত করবেন।


কেশবপুরে প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে সেমিনার অনুষ্ঠিত

অভিভাবক শিক্ষকদের সচেতনতার ওপর জোর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুরে প্রতিবন্ধী শিশুদের মূলস্রোতধারায় অন্তর্ভুক্তি, তাদের শিক্ষা–সুবিধা নিশ্চিত করা ও সমাজে সমান মর্যাদায় বেড়ে উঠতে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে এক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ সেমিনারের আয়োজন করে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক (সমাজসেবা) মো. হুসাইন শওকত। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা সমাজের ওপর বোঝা নয়, তারা দেশের মূল্যবান সম্পদ। সঠিক শিক্ষা, পরিচর্যা ও সুযোগ পেলে তারাও মূলধারার শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের মতো নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে। তিনি আরও জানান, সরকার প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, পুনর্বাসন প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রেকসোনা খাতুন।

তিনি বলেন, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই হলো- সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে বাস্তব সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। আজ যারা হুইল চেয়ার বা সেলাই মেশিন পাচ্ছেন, তাদের জীবনমান উন্নয়নে এই সামগ্রীগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তার বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল উন্নয়নের স্রোতকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে প্রশাসনের অঙ্গীকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ। আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমাজসেবার কর্মকর্তা মো. রোকনউজ্জামান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এস এম মাজেদুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ ফিরোজ আহমেদ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রোকনউজ্জামান জানান, কেশবপুর উপজেলায় বর্তমানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কসহ মোট ৩১ জন প্রতিবন্ধী উপকারভোগী নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে তালিকা আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।


বেগুনগ্রামের চিশতীয়ায় নবান্ন উৎসব

*একসঙ্গে ২৯টি চুলায় রান্না হয় ক্ষীর *৪৯ মণ গুড়, ৭০ মণ চাল, দুধ ও নারিকেলের মিশ্রণে তৈরি হয় ক্ষীর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব নবান্ন অনুষ্ঠান। আর এই নবান্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আয়োজনের দিক থেকে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেগুনগ্রামের আস্তানায়ে চিশতীয়ার নবান্নের আয়োজন। প্রতি বছর বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার এখানে নবান্ন উৎসব উদযাপন করা হয়। একদিন ব্যাপী চলে এই নবান্ন উৎসব। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এই ক্ষীর রান্নার প্রধান উপকরণ চাল, গুড়, দুধ, নারিকেল। আর ক্ষীর রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশাল দুটি বড় হাউস। এই কাজে সহযোগিতার জন্য গুড় ভাঙা ও নারিকেল ভাঙার কাজে রয়েছেন ৩৫ জন, রান্নার কাজে ২৫০ জন, খাবার পরিবেশনের জন্য থাকবেন ১৭০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাশ্রমের কাজে থাকবেন ৩০০ জন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ায় পীর আব্দুল গফুর চিশতী (রা.) তার অনুসারীদের যেন ব্যস্ততার শেষ নেই। সকাল থেকে দূর দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছে তার হাজার হাজার অনুসারী। একসঙ্গে ২৯টি চুলায় রান্না করা হচ্ছে ক্ষীর। সকাল থেকে এই ক্ষীর রান্না শুরু হলেও ক্ষীর রান্না চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এতোক্ষণ শুধু চলবে ক্ষীর রান্না। এসময় যেন স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে নিয়োজিতদের দম ফেলানোর সময় নেই। কেউ গুড় ভাঙছেন, কেউ নারিকেল ভাঙছেন, কেউ রান্না করছেন। ক্ষীর রান্না হয়ে গেলে হাউসে রাখা হচ্ছে সেই ক্ষীর।

আর এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আস্তানায় বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, গ্রাম ও এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছে। আবার নবান্ন উপলক্ষে এই গ্রামের মানুষ তাদের জামাই-মেয়েসহ আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেন। আবার এই উৎসবকে কেন্দ্র করে চলে নবান্ন মেলা। প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে ক্ষীর, পায়েস, মাছ ও মাংস রান্না। এই মেলাকে ঘিরে রাস্তার দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে বসেছে বিভিন্ন খাবার সামগ্রী ও মিষ্টান্নের দোকান। মিষ্টির দোকানে রয়েছে নানা পদের মিষ্টি, জিলাপি, নিমকি, চিনির ছাঁচ, চিনির রস কড়াই, লাড্ডু। এছাড়া বসেছে আচারের দোকান, বাহারি পান-মসলার দোকান। বাঁশিওয়ালা বসেছেন বাঁশি নিয়ে।

সাংসারিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সেখানে রয়েছে থৈ-চালা, চাঙারি, চালুন, কুলা, ঢালা, কাঠের টুল, কাঠের পিড়া, হাতপাখা, কাঠের হাতা, শিশুদের খেলনা, কাঠের ঘোড়া, করপা, ঢালিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। মৃৎশিল্পীরা বসেছেন মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে। তারা সেখানে মাটির তৈরি খেলনা পুতুল, তাল, ফলমূল, হরিণ, বাঘ, হাতি, হাঁড়ি-পাতিল, মাটির ব্যাংকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসে রয়েছেন। বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, চরকিসহ বসেছে প্রসাধনীর বিভিন্ন দোকান।

বেগুনগ্রামে আস্তানায়ে চিশতীয়া গড়ে ওঠার কাহিনীটা অন্যরকম। মুজাহিদ পাথর দিয়ে তৈরি আস্তানা বাংলা ১৩৭২ সালের ৬ কার্তিক উদ্বোধন করা হয়। আস্তানাটি ৩৭ শতক জায়গার ওপরে অবস্থিত।

স্থানীয় বেগুনগ্রামের চৌধুরী পাড়ার তোতা চৌধুরী বলেন, প্রায় শত বছর আগে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে ভারতবর্ষ থাকা অবস্থায় কুমিল্লা জেলা থেকে তৎকালীন বগুড়া জেলার ক্ষেতলাল থানার বেগুনগ্রামে আসেন হযরত খাজা শাহ মাওলানা মো. আব্দুল গফুর চিশতী (রা.)।

সেসময় এই এলাকার মানুষেরা অভাবগ্রস্থ ছিল। বছরে প্রতি বিঘায় আমন ধান হতো ৬-৮ মণ। তিনি এই এলাকার মানুষের রহমত ও বরকতের জন্য অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার হালকায়ে জিকিরের আয়োজন করেন। হালকায়ে জিকির শেষে এলাকার মানুষের মাঝে নতুন চাল ও গুড় দিয়ে তৈরি ক্ষীর সবার মাঝে বিতরণ করেন। সেই থেকে এই নবান্ন উৎসবে ক্ষীর রান্নার আয়োজন চলে আসছে।

বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ার সহসম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসে ঘরে প্রথম ধান তোলার পর সেই ধানের নতুন চাল ৭০ মণ, গুড় ৪৯ মণ, নারিকেল ১ হাজার ৪০০ টি, দুধ ৩৫ মণ দিয়ে আস্তানাতে এই ক্ষীর রান্নার আয়োজন চলছে। এছাড়া দুপুরে খাবারের জন্য ৪০ মণ চালের ভাত, ২৫০ কেজি খাসির মাংস ও ৪৫ মণ আলু দিয়ে রানা করা হচ্ছে আলু ঘাটি। আর এই ক্ষীর পরিবেশন করা হবে রাতে হালকায়ে জিকিরের বিশেষ মোনাজাতের পরে।

বেগুনগ্রাম আস্তানায়ে চিশতীয়ার সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমার পূর্ব পুরুষের কাছে থেকে শুনেছি হযরত খাজা শাহ মাওলানা মো. আব্দুল গফুর চিশতী (রা.) বাংলা ১৩২৮ সালে বেগুনগ্রামে আসেন। তার আগমনের তিন বছর পরে থেকে এখন পর্যন্ত এই নবান্ন উৎসব চলমান রয়েছে। পীর কেবলার সকল মুরিদান, আশেকান ও ভক্তদের অনুদানের অর্থে আস্তানাটি পরিচালিত হয়ে থাকে।

কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, এই নবান্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র আইনশৃংখলা পরিস্থতি ঠিক রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


সরিষাবাড়ীতে টিসিবির ট্রাকে দীর্ঘ লাইন, ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে

প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের স্থলে দিচ্ছে ৩০০ জনকে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষের মাঝে স্বল্প মূল্যের টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ লাইন দেখা গিয়েছে। এ সময় পণ্যের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সারিতে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যেতে হয়েছে অনেককে। প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের জন্য পণ্য ছিল। তবে অধিকাংশ জায়গাতেই ২ গুণ বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, এ উপজেলায় ১২ হাজার ৪০৫ জন টিসিবির কার্ডধারী উপকারভোগী রয়েছে। এছাড়া ১৮টি ডিলারের মাধ্যমে বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০০টি প্যাকেজ বিক্রি করা হয়। সব মিলিয়ে এ উপজেলায় ২১ হাজার ৪০৫ জন মানুষ টিসিবি পণ্য পায়। উপজেলার জগন্নাথগঞ্জ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, টিসিবির ট্রাক দেখেই শত শত মানুষ এসে লাইনে দাঁড়াচ্ছে। ট্রাক এসে দাঁড়ানোর সাথে সাথে মুহূর্তেই শেষ হচ্ছে পণ্য। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অধিকাংশ মানুষকে। চাহিদার তুলনায় পণ্য একে বারেই কম থাকায় অনেকেই পণ্য পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ডিলাররা।

পণ্য না পাওয়া আনোয়ার হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, হোসনেআরা বেওয়াসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাজ বাদ দিয়ে অনেকক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকেও মাল পাইলাম না। ট্রাক আসার পর পণ্য কেনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই অবস্থায় দুর্বল ও বয়স্ক মানুষরা এই পরিস্থিতিতে পণ্য কেনার জন্য ট্রাক পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারে না। যদিও ট্রাকের কাছাকাছি যাওয়া যায় তখন শুনি পণ্য নেই। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।’

একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ বলেন, প্রতিটি ট্রাকে ৫০০ জনের জন্য প্যাকেজ দেওয়ার কথা থাকলেও ট্রাকে ২৫০ থেকে ৩০০ জনের প্যাকেজ নিয়ে আসে। ২০-৩০ মিনিট দেওয়ার পরই বলে যে মাল নাই। এতে করে বাকি মালগুলো তারা বাহিরে বিক্রি করে দেয়। ৩০ মিনিটের মধ্যে কীভাবে ৫০০ মানুষকে পণ্য দেওয়া সম্ভব। তাই অধিকাংশ মানুষই পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি যাচ্ছে।

লাইনে দাড়ানো ৭০ বছরের বৃদ্ধা জমিরন বেওয়া বলেন, ‘অনেক কষ্টে লাইনে দাঁড়ায়ে ট্রাকের সামনে গেলেও মাল দিল না। বলে নাই শেষ। এত করে অনুরোধ করলাম হাত-পা ধরলাম তাও দিল না। মহিলা মানুষ হইয়াও এত ভিড় ঠেইলা ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড়াইয়া থাকলাম। কিন্তু কিছুই পাইলাম না। আমাদের গরিবদের দেখার কেও নেই।’

টিসিবি ডিলার রেদওয়ান আহমেদ সুমন বলেন, ‘অল্প বরাদ্দকৃত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে আমাদের মানুষের জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে, গালাগালও শুনতে হয়। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ার কারণে ট্রাক দাঁড়ানোর পর মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় পণ্য। এ অবস্থায় বরাদ্দ বাড়াতে পারলে আরও বেশি মানুষ পণ্য পাবে। ভোক্তাদের চাহিদার কারণে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোহছেন উদ্দিন জানান, ‘টিসিবির কার্ডধারীদের ছাড়াও যাতে সাধারণ মানুষ টিসিবি পণ্য পায় সে লক্ষ্যে ৫০০টি করে প্যাকেজ ১৮টি ডিলারের মাধ্যমে ট্রাকযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে।’


আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠানকে ৩ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট হস্তান্তর করল ওয়েস্টার্ন মেরিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দেশের রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানি মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ হস্তান্তর করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নবনির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট ‘মায়া’-তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাহাজ তিনটি হস্তান্তর করা হয়।

এদিন ‘মায়া’, ‘এসএমএস এমি’ ও ‘মুনা’ নামের তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট হস্তান্তর করা হয়েছে।

ল্যান্ডিং ক্রাফটগুলো সাগরের জ্বালানি ক্ষেত্রে যন্ত্র পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি বলেন, ‘দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। আশা করি, ভবিষতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আরব আমিরাতে রপ্তানি হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ভূমিকা রাখছে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন,

জাহাজ নির্মাণ একটি শ্রম ঘন ও উচ্চ প্রযুক্তির ভারী শিল্প। জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, ‘আমাদের আছে এই খাতের দক্ষ জনবল। দেশে এই শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বরাদ্দ। এটা পেলেই বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং দেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

২০২৩ সালে আটটি জাহাজ নির্মাণে মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। এর মধ্যে রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুটি ট্যাংকার।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘রায়ান’ নামের একটি ল্যান্ড ক্রাফট এবং জুলাই মাসে ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ নামের দুটি টাগবোট মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রসঙ্গত; ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১১টি দেশে ৩৬টি জাহাজ রপ্তানি করেছে, যেগুলোর বাজার মূল্য ১৩৮ মিলিয়ন ডলার।


বড়াইগ্রামে অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃহস্পতিবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে স্থানীয় খাদ্যগুদামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন খাদ্যগুদামের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধি, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, গুদাম কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ডালিম কাজী বলেন, এ বছরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। বড়াইগ্রামে এ বছরের সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীলভাবে পরিচালিত হবে। সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ধান: ১,৭৯,০০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৩৪ টাকা) চাল: ৪,৯০,৪০০ মেট্রিক টন (মূল্য প্রতি কেজি ৫০ টাকা) এই মৌসুমে ২০ নভেম্বর ২০২৫ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। উপজেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে এবং কোনো প্রকার হয়রানি বা অনিয়ম সহ্য করা হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সরকার প্রতি বছর কৃষকদের সহায়তা এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বড়াইগ্রামের কৃষকরা আমাদের দেশের খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন প্রত্যেক কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পান। এ সময় কোনো ধরনের হয়রানি বা অনিয়ম যেন না হয়, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা আশা করি, কৃষকরা স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবে, যা তাদের আয়ের নিরাপত্তা বাড়াবে এবং দেশের খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। এছাড়া স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন খাদ্যগুদামের এই উদ্যোগ কৃষকদের নির্দিষ্ট মূল্য দেওয়ার পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।


কমলগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্ভোগে মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

সাইনবোর্ড স্থাপন করে লেখা ‘এই জমি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে লেখা আছে ‘সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কর্তৃপক্ষ। তবুও ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। সাইনবোর্ড টানিয়েই যেন দায় শেষ। নেই কোনো তদারকি। এই ময়লার স্তূপ কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়ক ঘেঁষে উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকার বাজারের পাশেই অবস্থিত মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে খালি জায়গা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন স্কুল, কলেজ, পথচারীসহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই স্থানে একটি টিনের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা-আর্বজনা ফেলা নিষেধ’ আদেশ ক্রমে: কতৃপক্ষ। এই জমি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন, সরকারি জায়গা। এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা নিষেধ। আদেশক্রমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নামে সাইন বোর্ড থাকলেও, কাজে উল্টো চিত্র দেখা গেল। যার প্রতিটি স্থানেই রয়েছে বড় বড় সব ময়লার স্তূপ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক। এর গেটে রয়েছে একটি বড় ময়লার স্তূপ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী যানবাহনসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারী আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু মুন্সিবাজার উপস্বাস্থ কমপ্লেক্সের কাছে এলেই দুর্গন্ধের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। কারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন স্থানীয় বাজার পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলেন। এসব পচে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ।

রহিম মিয়া নামে এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করে রাখা হয়েছে। এখানে একটি হাসপাতালও। এটা কোনোভাবেই সহ্য করার মতো নয়।’

এই এলাকার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘অসুস্থ হলেই এলাকার মানুষ আসা-যাওয়া করত এই হাসপাতালে। বর্তমানে হাসপাতালই অসুস্থ। তার কারণ হাসপাতালের সামনে ময়লার ভাগার। ময়লার গন্ধে রোগী আসা তো দূরের কথা সাধারণ মানুষ এদিকে আসে না। আমরা এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার করতে পারিনি।’

এই এলাকার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজীজ আহমদ বলেন, ‘রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে ওই স্থানে থাকা অনেক কষ্টকর। এ বিষয়ে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’

স্থানীয় মুন্সিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হিমেল চৌধুরী জানান, ‘ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় এখানে ফেলা হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই। সরকারি জায়গায় আমরা যেমন দোকানদারী করছি, ঠিক এটাও সরকারি জায়গা তাই এখানে ফেলা হচ্ছে।’

এ বিষয় স্থানীয় মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ তরফদার বলেন, ‘আমি ময়লার বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিষয়টি তুলেছি। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও সাহেব।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন,‘ ময়লা অপসারণের জন্য বাজার কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। কিন্তু ফলাফল পাইনি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘যে স্থানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেই জায়গাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জায়গা। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’


banner close