ময়মনসিংহের তারাকান্দায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শেরপুর-ময়মনসিংহ সড়কে উপজেলার কোদলধর এলাকার হিমালয় পেট্রোল পাম্পের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াজেদ আলী।
ওসি বলেন, ‘যাত্রীবাহী শেরপুরগামী বাসটি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কোদলধর এলাকার হিমালয় পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাস দুইটি খাদে পড়ে ঘটনাস্থলেই নারীসহ দুই যাত্রী নিহত হন। এতে আহত হন অন্তত ২৫ জন। তাদের মধ্যে স্থানীয়রা ১০ থেকে ১২ জনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘বাসের নিচে আরও মরদেহ চাপা পড়ে থাকতে পারে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রেকার দিয়ে খাদে পড়া বাস দুটি উদ্ধারের কাজ করছে। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
ময়মনসিংহের নান্দাইলের মানুষের জন্য ১১ ডিসেম্বর এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় পাকবাহিনীর দখলমুক্ত হয় নান্দাইল। রাত দুইটার দিকে বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা প্রথমবারের মতো উত্তোলন করেন স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। এরপর থেকেই দিনটি নান্দাইলবাসীর কাছে “নান্দাইল মুক্ত দিবস” হিসেবে বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে নান্দাইলের মুশুল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে গোপন বৈঠকে বসেন মেজর খালেদ মোশাররফ ও এটিএম হায়দার। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েক দিনের মধ্যেই ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করা হয় শুভখিলা রেলব্রিজ। এতে কিশোরগঞ্জ দিক থেকে ভারী অস্ত্রসহ পাকবাহিনীর অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে পরে পাকিস্তানি সেনারা নদীপথে হালকা অস্ত্রসহ নান্দাইলে প্রবেশ করে।
১৮ এপ্রিল নান্দাইল শহরের প্রবেশমুখে কিশোরগঞ্জ সড়কে ট্রেঞ্চ কেটে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা হলেও স্থানীয় দালালদের সহায়তায় খবর পেয়ে পাকবাহিনী এ উদ্যোগ ব্যর্থ করে দেয় এবং এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহনেওয়াজ ভূঁইয়াসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।
২১ এপ্রিল মেজর আশফাকের নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনী নান্দাইলে ঘাঁটি স্থাপন করে এবং ওই দিনই রাজগাঁতী, শুভখিলা ও কালীগঞ্জ এলাকায় নির্বিচারে ১৮ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা ও কয়েকশ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
বারুইগ্রাম মাদ্রাসায় পাকবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনের পর এলাকাজুড়ে শুরু হয় ত্রাসের রাজত্ব। সংখ্যালঘু পরিবারগুলো আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় আমুদাবাদে এবং দালালদের সাথে সমঝোতায় সীমাবদ্ধ জীবনে কাটাতে হয় যুদ্ধকালীন সময়।
পাকিস্তানি বাহিনী ও স্থানীয় রাজাকার–আলবদর সদস্যরা শুভখিলা রেলব্রিজের দুই পাশে পাহারা বসায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সন্ধ্যার পর রিজার্ভ ট্রেনে করে গৌরীপুর ও ভৈরব থেকে ধরে আনা হত শত শত মুক্তিযোদ্ধা-সমর্থক ও নিরীহ গ্রামবাসী। পরে তাদের রেলব্রিজের নিচে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো।
এ ছাড়া বারুইগ্রাম ক্যাম্পের পাশে ডাংরীবন্দ গ্রাম ও একটি পরিত্যক্ত ইটাখোলায় কমপক্ষে ২৫–৩০ জনকে হত্যা করে দখলদার বাহিনী।
তারপর মুক্তিযোদ্ধারা কৌশলগত আক্রমণের পরিকল্পনা করেন ১০ নভেম্বর, যার বাস্তবায়ন নির্ধারিত হয় ১৭ নভেম্বর। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে নান্দাইল থানা ঘিরে ফেললেও পাকিস্তানি বাহিনী আগেই পরিকল্পনার খবর পেয়ে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করে নেয়। সাড়ে চার ঘণ্টার সম্মুখ যুদ্ধে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া, ইলিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, শামসুল হক, জিল্লুল বাকি সহ ২৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা এলাকায় ব্যাপক লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং গ্রামবাসীদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়।
ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়তে শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা নতুন কৌশলে আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। ১০ ডিসেম্বর রাতে নান্দাইল শহরকে ঘিরে থাকা নরসুন্দা নদীকে কাজে লাগিয়ে কমান্ডার ফারুকের নেতৃত্বে মুজিব বাহিনী তিনদিক থেকে থানা ঘেরাও করে পাকবাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। ১১ ডিসেম্বর রাত দুইটার দিকে উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা—ঘোষণা পাওয়া যায় নান্দাইল মুক্ত হওয়ার।`
আজকের ১১ ডিসেম্বর শুধু একটি তারিখ নয়—এটি নান্দাইলবাসীর আত্মমর্যাদা, ত্যাগ ও বীরত্বের প্রতীক। প্রতি বছরই দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি, আলোচনাসভা, শহীদ স্মরণ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
মীরসরাই উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এক বছর ধরে শূন্য রয়েছে খতিবের পদ। খতিব না থাকার ফলে প্রত্যেক জুমায় বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক কিংবা ধর্মীয় আলোচক এনে নামাজ পড়ানো হচ্ছে। ইমাম ও খতিব নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এছাড়া মসজিদের ১৪ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা।
জানা গেছে, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত ইসলাম ধর্মীয় ইবাদত ও শিক্ষার অনুশীলনের আধুনিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ প্রকল্প থেকে সারাদেশের ন্যায় মীরসরাই উপজেলাতেও মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নির্মিত হয়। মসজিদে নামাজ পড়ানোর জন্য ইমাম ও খতিব পদে ১ জন, মোয়াজ্জিন পদে ১ জন ও দুই জন খাদেম নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন খতিব মাওলানা আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে মুসল্লিরা মানববন্ধন এবং ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২৩ সেপ্টেম্বর মুসল্লিদের আন্দোলনের মুখে খতিব মাওলানা আরিফুল ইসলাম ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে পদটিতে স্থায়ীভাবে কাউকে আর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। খতিব না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ধর্মীয় আলোচক দিয়ে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ানো হয়ে আসছে। ইমামের অনুপস্থিতিতে বর্তমান মোয়াজ্জিন মাওলানা তছলিম উদ্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ইমামতির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শুরুতে অতিথি খতিবদের ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করে সম্মানি দিয়ে আসলেও গত কয়েক মাস যাবত প্রতি জুমায় নামাজ পড়ানোর জন্য ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ইমাম ও খতিব নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মডেল মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি গত বছরের ১০ ডিসেম্বর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। এতে জমা হওয়া আবেদনপত্র যাচাই বাছাই করে ৭ জনকে ইন্টারভিউর জন্য চিঠি দেওয়া হয়। গত ৩১ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা ও স্বাক্ষাতকার গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরবর্তীতে তা আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে মডেল মসজিদে ২০২৪ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩৮ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বিল পরিশোধের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ থেকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মীরসরাই উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার সাবের আলম বলেন, ইমাম ও খতিব নিয়োগের জন্য গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। এতে বেশকিছু আবেদন আসলে যাচাই-বাছাই করে ৭জনকে ইন্টারভিউর জন্য চিঠি দেওয়া হয়। গত ৩১ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা ও স্বাক্ষাতকার গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। ইউএনও ম্যাডামের নির্দেশনায় সেটি পেছানো হয়েছে। শীঘ্রই নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, মসজিদের নীচতলা ও তৃতীয় তলায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প করায় বিদ্যুৎ বিল বেশি আসতেছে। আগে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল ২০-২৫ হাজার টাকা আসলেও বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা আসছে। সেনাবাহিনী থেকে আমাদের বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয় না। বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ থেকে দেওয়া চিঠি আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশাকরি এ বিষয়ে নির্দেশনা আসবে।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ মীরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহমদ চৌধুরী বলেন, মীরসরাই মডেল মসজিদের ২০২৪ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩৮ টাকা বকেয়া বিল জমা হয়েছে। বিল পরিশোধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য ইউএনও শীঘ্রই উদ্যোগ নিবেন বলে জানিয়েছেন।
মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিচালনা কমিটির সভাপতি সোমাইয়া আক্তার জানান, ইমাম ও খতিব নিয়োগের জন্য গত ৩১ অক্টোবর পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় তা স্থগিত করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, মসজিদের বিদ্যুৎ বিলের সাড়ে ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করার মতো ফান্ড নেই। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের কারণে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসতেছে। বিল পরিশোধের বিষয়ে সেনা ক্যাম্পে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও ইসলামীক ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবিদ্বার অংশের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে ২৫২ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
৪ কোটি ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৩৩ টাকা ব্যয় নির্ধারিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে অপ্সরা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল। অবশেষে সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। দ্রুত কাজ শেষ করে জনদুর্ভোগ দূর করাই এখন আমাদের লক্ষ্য। কাজ শেষ হলে কুমিল্লা–সিলেট মহাসড়ক ও দেবিদ্বার নিউমার্কেট এলাকার ভোগান্তি দূর হবে এবং স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে। এর পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
টাঙ্গাইলের বাসাইলে সরকারি জোবেদা রুবেয়া মহিলা কলেজের (২০২৫-২০২৬) শিক্ষাবর্ষের নবাগত একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীদের নবীন বরণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে সরকারি জোবেদা রুবেয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মশিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। উদ্ভোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিন শরীফ সুপন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মতিউর রহমান খান, বাসাইল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আবুল কাশেম মিয়া, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক নূরনবী আবু হায়াত খান নবু, পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান তুহিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ পিন্টু, বিআরডিবির চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী খান, বাসাইল ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে বলেন, তোমরা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে এসেছ। এই সময়টা তোমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ভালো ফলাফল করাই নয়, বরং জ্ঞান অর্জন, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা এবং মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলাই হোক তোমাদের মূল লক্ষ্য। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং সামাজিক কাজে অংশ নিয়ে নিজেদেরকে বিকশিত করো।
দিনব্যাপী নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ১ম পর্বের অনুষ্ঠানসূচীর অংশ হিসেবে ছিলো প্রধান অতিথি সহ আগত অতিথিবৃন্দের আসন গ্রহন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ, অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান, নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ, নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অতিথিবৃন্দের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান।
অনুষ্ঠানে ২য় পর্বে শিক্ষার্থী ও শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেষনায় ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পুরো অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে নিরলসভাবে কাজ করেছে সরকারি জোবেদা রুবেয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ, রোভার স্কাউট।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় লিপি আক্তার (৩৩) নামে এক র্যাব সদস্যের স্ত্রীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। একদল দুর্বৃত্ত চুরি করতে গিয়ে তাদের চিনে ফেলায় ওই নারীকে হত্যা করেছে। বৃহষ্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সরিষাবাড়ী পৌর শহরের শিমলা বাজার গণময়দান সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ লিপি আক্তার উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী মহর উদ্দিন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক। বর্তমানে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন র্যাটালিয়ান (র্যাব)-২ এ কর্মরত আছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মা লিপি আক্তার গণময়দান (শ্রম কল্যান কেন্দ্র) এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাসাটি নিরিবিলি হওয়ায় আগে আরও দুইবার চুরি হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে তিন চোর জানালার গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে।
লিপির মেয়ে মিথি (৮) জানায়, তার দুই ভাই মামার বাড়িতে ছিল। তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল এ সময় বাসায় চোর ঢুকে। মা’র ঘুম ভাঙলে চোরদের চিনে ফেলে। তখন তারা মায়ের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে পালিয়ে যায়। পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরিষাবাড়ী থানার ওসি বাচ্চু নিয়া জানান, চোরদের চিনে ফেলায় অবস্থা বেগতিক দেখে তারা ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সাবেক পিপিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিলাস মন্ডলের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো: আল ফেরদাউস আলফা। পরে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন, সদর থানার সাবেক ওসি মোস্তাফিজুর রহমান,গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ওসি মহিদুল ইসলাম,সাবেক পিপি আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে মো: রাসেল।
মামলায় বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল চেকপোস্টে বাদীর দেড় কোটি টাকার ভারতীয় সামদ্রিক মাছ জব্দ করে বিজিবি। পরে বাদীর বৈধ কাগজপত্র বিজিবি’র কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু বিজিবি কাগজপত্র যথাযথ বুঝতে না পেরে সেই মাছ সাতক্ষীরা সদর থানায় প্রেরণ করে। বৈধ কাগজ পাঠালেও মাছ ছাড়া হবেনা, এমন হুমকি দিয়ে সদর থানার তৎকালীন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ফোনে বাদীর কাছে দেড় কোটি টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে বাদী ফোনের সুইস অফ করতে বাধ্য হন। সেদিন মধ্যরাতে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন ও ডিবির ওসি মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০/১২ জন সাদা পোশাকধারী পুলিশ বাদীর পলাশপোলস্থ বাড়িতে যেয়ে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেসময় বাড়িতে থাকা ১৫ লাখ টাকা দিয়েও রক্ষা পাননি তিনি। বাদীর ভাই আব্দুল আলিম ও বাদীকে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে তুলে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালায় বলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। চাঁদা না দেওয়ায় সাতক্ষীরা সদর থানায় মাছ আটকের ঘটনায় করা মামলায় তাদেরকে অজ্ঞাতনামা আসামী হিসেবে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এদিকে পরস্পর যোগসাজসে জব্দকৃত দেড় কোটি টাকার মাছ মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বিক্রি দেখিয়ে বাকী টাকা আত্মসাৎ করে এ মামলায় অভিযুক্তরা।
এবিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. খায়রুল বদিউজ্জামান বলেন, এ মামলার পরবর্তী ধার্য দিন নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ২০ এপ্রিল তারিখে। এছাড়া বিচারিক হাকিম মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি পুটিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন যাত্রী আহত হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দূর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে উদ্ধার করে।
আহতদের মধ্যে অন্তত ৮ জনকে গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন।
পুলিশ জানায়, নোয়াখালীমূখী লাল সবুজ নামের একটি যাত্রীবাহী পরিবহন ঢাকা থেকে ছেড়ে দাউদকান্দির পুটিয়া এলাকায় পৌঁছালে সকাল ১১ টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় বাসের ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে কেউ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে দাউদকান্দিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পুটিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোঃ রুহুল আমিন জানান,নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পরিচয় নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চুরি করতে গিয়ে র্যাব সদস্যের স্ত্রী লিপি খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মধ্য রাতে উপজেলার শিমলা বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূ লিপি কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর এলাকার মহর উদ্দিনের স্ত্রী। তাঁর স্বামী ঢাকার মোহাম্মদপুর র্যাব-২ এ সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন। গৃহবধূ উপজেলার শিমলা বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে গৃহবধূ লিপি খাতুন তার মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। আজ মধ্য রাতের কোন এক সময় চোর ঘরের গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় চোরকে চিনে ফেলায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। আজ সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: বাচ্ছু মিয়া বলেন, শ্বাসরোধে ওই গৃহবধূকে হত্যা করে, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান চোর। গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সিলেটে মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মানুষের গভীর ঘুমের মধ্যে এই কম্পন অনুভূত হয়। ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি নিশ্চিত করেছে যে, দুটি ভূমিকম্পেরই উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের বিয়ানীবাজার।
সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয় রাত ২টা ২০ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫ এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ২০ কিলোমিটার। এর ঠিক পাঁচ মিনিট পর, অর্থাৎ রাত ২টা ২৫ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বারের মতো কেঁপে ওঠে সিলেট। এবারের কম্পনটির মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩ এবং এর গভীরতা ছিল ৩০ কিলোমিটার। পরপর দুটি কম্পনে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শুধু সিলেটেই নয়, একই রাতে আশপাশের অঞ্চলেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, রাত ২টা ৫৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডে মিয়ানমারে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল উত্তর মান্দালয় থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া রাত ৩টা ৩৮ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যার গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার।
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে বিরামহীন অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনার প্রায় ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তিনটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে মূল গর্তের পাশে ৪০ ফুট গভীর একটি গর্ত খুঁড়ে সেখান থেকে টানেল তৈরি করে শিশুটির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। তবে গতকাল দুপুরের পর থেকে শিশুটির আর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। শিশু সাজিদ তার মায়ের হাত ধরে ধান কাটা ক্ষেতে হাঁটছিল। হঠাৎ করেই সে অরক্ষিত ওই গর্তের ভেতরে পড়ে যায়। সাজিদ ওই গ্রামের রাকিবের ছেলে। তার বাবা ঢাকায় একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করে, যা উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত এক্সকাভেটর চলাচলে কিছুটা বাধার সৃষ্টি করে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ বসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও তাহের নামের এক ব্যক্তি তার জমিতে পানির স্তর পরীক্ষার জন্য ৩০-৩৫ ফুট গভীর ওই গর্তটি খুঁড়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাটের দাবি করা হলেও বর্ষায় মাটি দেবে গিয়ে সেখানে পুনরায় গর্তের সৃষ্টি হয় এবং মুখটি অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। সেই গর্তেই তলিয়ে যায় শিশু সাজিদ।
উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, ফায়ার ব্রিগেডের টিম অনুসন্ধান করছে এবং ৪০ ফুটের মধ্যে শিশুটি আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, গতকালও শিশুটির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, আজও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের মধ্যে শিশুটিকে পাওয়া না যায় এবং সে আরও গভীরে তলিয়ে গিয়ে থাকে, তবে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বজনদের অনুমতি সাপেক্ষে লোহার যন্ত্র ব্যবহার করে বিকল্প পদ্ধতিতে উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সেই পদ্ধতিতে ভিকটিমকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের পূর্বাংশে ভারতের সীমানা ঘেঁষে পাহাড়ি অঞ্চল আনন্দপুর। প্রকৃতির লীলাভূমি এই টিলা-পাহাড়ি এলাকার গহিন বনে টিলার পাদদেশে ব্ল্যাক কফি ও কাজুবাদামের চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন দুই সহোদর কৃষক বাবুল মিয়া ও হোসেন মিয়া।
দীর্ঘদিন ধরে তারা পাহাড়ি এই অঞ্চলে ব্ল্যাক কফি ও কাজুবাদামসহ বিভিন্ন বিদেশি ফলের চাষ করে আসছেন। এর পাশাপাশি তাদের বাগানে রয়েছে কমলা, সফেদা, মাল্টা, আনারস, কাগজি লেবু, বরিশালের আমড়া, নেপালি সাগরকলাসহ বড়ই, লিচু, পেয়ারা ও নানা জাতের ফলজ গাছ। গত বছর প্রথমবারের মতো তাদের বাগানে কাজুবাদামের ফলন আসে। গ্রামের লোকজন কৌতূহলবশত ফল পেড়ে খেয়ে ফেলায় সংরক্ষণ করা যায়নি। এবার কাজুবাদামের ফলন তেমন নেই, তবে ব্ল্যাক কফির নতুন মৌসুমের ফলন নিয়ে নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা।
কৃষক বাবুল মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘স্বপ্নের ব্ল্যাক কফির নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। উঁচুনিচু টিলা পাহাড় ও সমতল মিলিয়ে প্রায় ২ একর জমিতে কাজুবাদাম ও ব্ল্যাক কফির নতুন ফলন পেয়েছি। আমরা খুবই খুশি। মনে করি, সবাই যদি বাড়ির সাইট বা পতিত জমিতে আমাদের মতো বিদেশি ফলের চাষ করে, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।’
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন আক্তার বলেন, ‘দুই সহোদর কৃষকের উদ্যোগটি খুবই সুন্দর ও ব্যতিক্রমী। সুযোগ এলে আমরা সরকারিভাবে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।’
কৃষিবিদদের মতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে কফি চাষ হচ্ছে এবং চাষির সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ক্লান্তি দূর করে শরীর চাঙা করার জন্য কফি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একটি পানীয়। শহুরে জীবনে পানীয় হিসেবে কফির ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
কফি গাছ ঝোপের মতো, মাঝারি উচ্চতার চিরসবুজ উদ্ভিদ। এটি (Rubiaceae) পরিবারভুক্ত। বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে কফি উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে বান্দরবান, কক্সবাজার, নীলফামারীসহ নানা স্থানে কফি চাষ হচ্ছে, যার মানও প্রশংসনীয়।
কফি উদ্ভিদের জন্য বছরে ১,৫০০-২,২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। এ্যারাবিকা জাতের কফি চাষের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ১৫-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রোবাস্টা জাতের জন্য ২৪-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ্যারাবিকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,০০০-২,২০০ মিটার এবং রোবাস্টা ১০০-৭০০ মিটার উচ্চতায় ভালো জন্মে। উচ্চতা যত বেশি হয়, পাকা কফি বিন তত বেশি সুগন্ধি হয়। মাটি ও পরিবেশের গুণাগুণও কফির স্বাদ ও ঘ্রাণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
কফি গাছ সামান্য ঢালু জমি ও আংশিক ছায়া পছন্দ করে। এ কারণে ছায়াদায়ী গাছের নিচে কফি চাষ করা উত্তম। ভারতে কফি বাগানে নির্দিষ্ট দূরত্বে কলা গাছ রোপণ করা হয়, যাতে সরাসরি সূর্যের তীব্রতা থেকে কফি গাছ কিছুটা সুরক্ষা পায়।
প্রাকৃতিকভাবে কফি গাছ ৪০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, তবে ফল সংগ্রহ সহজ করতে চাষকৃত গাছকে সাধারণত ৬-৯ ফুট উচ্চতায় ছাঁটাই করে রাখা হয়।
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাগুরায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে কালেক্টরেট চত্বর থেকে র্যালি শুরু হয়ে শহরের ভায়না মোড়, চৌরঙ্গী প্রদক্ষিণ শেষে কেশব মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বিশ্ব মানবাধিকার ফাউন্ডেশন মাগুরা শাখার কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সালমা খাতুন। বক্তব্য রাখেন, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্বাস আলী, মোহাম্মদ মিশুক পারভেজ, আসিফ, সাগর ও আখি খাতুন। বক্তারা বিশ্ব মানবাধিকারের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়জ ফাউন্ডেশন (আসফ), মাগুরা জেলা কমিটি ‘হে বিশ্ববাসী, সুন্দর পৃথিবীতে আমরা সকলেই সকলের প্রতি আন্তরিক হই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কর্মসূচি পালন করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনকে সম্মান ও দেশপ্রেমের প্রতি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
অবশেষে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ফরিদপুর শহরের অ্যাডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থেমেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টায় দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল বাইতুল আমান কলেজ গেটে ট্রেন থামলে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে সাধারণ মানুষসহ ওই এলাকায় অধ্যায়নরত ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীরা। এ সময় ট্রেন থামানোর আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আদনান হোসেন অনু, কনজ্যুমার ভয়েস অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক রুমন চৌধুরী, প্রিন্সিপাল লোকমান হোসেন, ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমানসহ এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে শুকরিয়া আদায় করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কমলাপুর রেলস্টেশন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুজিবুর রহমান। ফরিদপুর জেলার মধ্যে অ্যাডুকেশন জোন নামে খ্যাত বাইতুল আমান এলাকাটি। যেখানে রয়েছে ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি, জীবনের ঝুঁকি ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতের জন্য ট্রেন থামানোর এই দাবিতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম এবং মানববন্ধন করেছেন।