‘রাজাকার-আলবদর থাকে আজ রাজপ্রাসাদে, আমি শহীদুল ইসলাম বীরপ্রতীক থাকি একটা কুইড়াঘরে (কুঁড়েঘরে) তার কারণ কী?’ ক্ষোভে ২০০৩ সালে ধারণ করা এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছিলেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সূতী গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে শহীদুল ইসলাম। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও অনেক সাহসী ও বুদ্ধিমান ছিলেন। তাই তো দেশকে হানাদার মুক্ত করতে ১২ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডার আনোয়ার হোসেন পাহাড়ির অধীনে।
কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, দেশের সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীক শহীদুল ইসলাম লালুর পরিবারের নেই স্থায়ী নিবাস, সন্তানদের জন্য নেই চাকরির ব্যবস্থা। তিনি কুলির কাজ ও খাবার হোটেলের কাজ করে অনেক কষ্টে কাটিয়েছেন জীবনের অধিকাংশ সময়।
দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীকের পরিবার বসবাস করছেন ঢাকার মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পের সরকারি জমিতে। প্রথম সন্তান মুক্তা বেগম (৩৫) পেশায় গৃহিণী, স্বামীর বাড়ি রাজশাহীর নাটোরে। দ্বিতীয় সন্তান আক্তার হোসেন (৩২) পেশায় গাড়িচালক, তৃতীয় সন্তান সোহাগ হোসেন (২৭) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সদ্য গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। চতুর্থ সন্তান শিখা আক্তার (২০) ঢাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভারতে ট্রেনিং চলাকালে সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় সহযোদ্ধারা তাকে লালু তার চেয়ে বয়সে বড় শ্যামলকে ভুলু নামে ডাকতে শুরু করেন। দেশে ফিরলে তার বুদ্ধিমত্তায় একাধিকবার মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণে বাঁচেন। কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডারের নির্দেশে, চতুর শহীদুল ইসলাম ছদ্মবেশ ধারণ করেন। কৌশলে এক রাজাকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে গোপালপুর থানা কম্পাউন্ডের, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বাংকারে ঢুকে পড়েন। তার কৌশল ও দুঃসাহসিক গ্রেনেড হামলায় একাধিক বাংকার ধ্বংস করলে গোপালপুর থানা হানাদার মুক্ত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক উপাধি দেয়। রাইফেলের সমান উচ্চতা হওয়ায় ভারতে প্রশিক্ষণ চলাকালে তাকে স্টেনগান চালনা ও গ্রেনেড ছোড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কাদেরিয়া বাহিনী ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্ত্র সমর্পণ করা হয়। স্টেনগান জমা দানকালে অত্যন্ত সাহসী ১২ বছরের কিশোর শহীদুলের বীরত্বের কথা শুনে, মুগ্ধ হয়ে তাকে কোলে তুলে নেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছবিটি সামরিক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যখন সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে লালুর বাংকার ধ্বংসের কথা শুনলেন তখন বঙ্গবন্ধু তাকে আদর করে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলেন, ‘বীর বিচ্ছু’।
শৈশবে শহীদুল ইসলামের বাবা-মা, মুক্তিযুদ্ধের সময় এক ভাই-এক বোনের মৃত্যু হয়। দরিদ্রতায় উপায়ান্তর না দেখে মুক্তিযুদ্ধের পর ২ ভাইকে রেখে জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছাড়া হন তিনি। ঢাকার সোয়ারিঘাটে বালু টানা, ঠেলা গাড়ি চালানো, রাজমিস্ত্রীর হেলপারের কাজ, শেষে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কুলির কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে কুলির কাজ শেষে হোটেলে কাজ শুরু করেন। যাযাবর অবস্থায় বিয়েও করেন, এক কন্যা ও এক পুত্র জন্ম নেওয়া সেই সংসার স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে কুমিল্লায় হোটেলে কাজ করা অবস্থায় সহকর্মীকে জীবনের সব ঘটনা খুলে বলেন। ২ সন্তানকে নিয়ে ওই সহকর্মীর সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর চলে যান। ১৯৯৬ সালে সেই সহকর্মীর নিকটাত্মীয় মালা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির পুত্রসন্তান সোহাগ হোসেনের জন্মের পর সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। ঢাকার পোস্তগোলায় এসে নিজের খাবার হোটেল চালু করার কিছুদিনের মধ্যেই, ১৯৯৮ সালে জটিল কিডনি রোগে আক্রান্তের কথা জানতে পারেন। কোনো উপায় না পেয়ে, কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ঢাকার বাসার ঠিকানা জোগাড় করে দেখা করেন। পরিচয় পাওয়ার পর আবেগাপ্লুত বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বুকে জড়িয়ে নেন। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করান, উপস্থিত সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দেন তার কাগজপত্র সংগ্রহ করতে। কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধা বীরপ্রতীক আবদুল্লাহকে নির্দেশ দেন, ঢাকার মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পে শহীদুলের পরিবারের জন্য জায়গা দিতে। সে অনুযায়ী তার পরিবারের ঠাঁই হয় সেখানে। চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হন শহীদুল ইসলাম। কাগজপত্র সংগ্রহের পর জানতে পারেন তিনি বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, তিনিই সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীক। ডাক পড়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ৩০ হাজার টাকা অনুদান প্রদানের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অন্য দুই ভাই তাকে খুঁজে পায়। কিছুদিন পর জন্ম হয় আরেক কন্যা শিখার।
অসুস্থতার কারণে শেষ সময়ে কোনো কাজকর্ম করতে পারেননি, শুভাকাঙ্ক্ষীদের অর্থে চলেছে চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ। ২০০৯ সালে ২৫ মে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বীরপ্রতীক শহীদুল ইসলামের স্ত্রী মালা বেগম দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমার স্বামীর জীবদ্দশায় ভাতাপ্রাপ্ত ছিলেন না, তাই শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তায় চিকিৎসা করাতে হয়েছে। তার মৃত্যুর পর ৪ সন্তানকে অনেক কষ্টে লালন-পালন করি, এরপর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে গেলে ২০১৪ সালে ২ হাজার টাকা ভাতা চালু হয়। মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পের সরকারি জমিতে একাধিক রুম বানিয়ে ভাড়ার টাকায় সন্তানদের বড় করি। সন্তানদের শিক্ষিত করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার দাবি তিনি যেন সন্তানদের জন্য উপযুক্ত চাকরি ও আমাদের স্থায়ী নিবাসের ব্যবস্থা করে দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নিজ এলাকার মানুষের থেকে তার তেমন মূল্যায়ন পায়নি, এই ক্ষোভে তিনি মৃত্যুর আগে কখনো গোপালপুর যাননি। তবে সন্তানদের নিয়ে আমি একাধিকবার গোপালপুর গিয়েছিলাম।’
সর্বকনিষ্ঠ বীরপ্রতীকের সন্তান সোহাগ হোসেন বলেন, ‘মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। আমরা বিশেষ পরিবারের সন্তান হলেও ঢাকার মিরপুরে সরকারি জমিতে বসবাস করছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি স্থায়ী বাসস্থান ও আমাদের জন্য উপযুক্ত চাকরির ব্যবস্থা যেন উনি করেন।’ তবে নিয়মিত সরকারি রেশন ও ভাতা পাচ্ছেন বলেও জানান তারা।
গোপালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সমরেন্দ্রনাথ সরকার বিমল বলেন, সূতী মীরপাড়ায় গোপালপুরের একমাত্র বীরপ্রতীক শহীদুল ইসলামের জন্ম হলেও, এখানে তার বাড়িঘর নেই। তার পরিবার এখানে এসে কিছু চাননি, তাই বীর নিবাসসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাননি। তার পরিবার বীরপ্রতীক ভাতা পাচ্ছেন।
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীরনিবাস তৈরি করে দেওয়ার একটি প্রকল্প চলমান আছে। গোপালপুরে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৬২টি বীরনিবাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৬টি নির্মাণাধীন রয়েছে। তাকে আবেদন করে রাখতে বলেন। পরের অর্থবছরে আবার যদি বরাদ্দ আসে তবে হয়তো এগুলো পাঠাতে পারব। আমার যতদূর জানা আছে বর্তমান যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবিত অবস্থায় আছেন প্রাথমিকভাবে তাদের এটা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত ওয়ারিশ হিসাবে যারা আছেন, তারা পেয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তারপরও পর্যাপ্ত তথ্য পেলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি লিখতে পারব।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, শুরুতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ বাহিনীও নিজেদের গুছিয়ে নিতে পেরেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি বড় পরীক্ষা।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচন হবে ‘আদর্শ নির্বাচন’। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-এই দুই খাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ডাক্তার-নার্স সংকট নিরসনে স্বল্প সময়ে সাড়ে তিন হাজার নার্স ও তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আলু রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বে নিয়মিত আলু আমদানি করে এমন দেশ খুবই কম। বিশেষ পরিস্থিতি না হলে রপ্তানির সুযোগও সীমিত।
বিদেশে মানবসম্পদ রপ্তানি বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, দক্ষতা না থাকায় দেশের কর্মীরা বিদেশে কম বেতন পান। নার্সিং পেশায় বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে।
এছাড়া রংপুরে পালন করা ছোট জাতের দেশি গরুর মাংসের প্রশংসা করে এর বাণিজ্যিক উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মারুফাত হুসাইনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
চার দিনের সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রংপুরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করবেন এবং আগামীকাল রোববার কিশোরগঞ্জের মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি সৈয়দপুর হয়ে ঢাকায় ফিরবেন।
ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ছনুয়া-ফাজিলপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এই প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘ ৫২ বছর পর বিদ্যালয় মাঠে ঢাকার শমরিতা হাসপাতাল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সমাজসেবক ডা. এ বি এম হারুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। গত শুক্রবার বিকেলে বিদ্যালয় সভাপতি এবিএম ইমরানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার খানম, সাবেক ব্যাংকার এম এম আলমগীর, বায়ো ডট বাংলাদেশের সিইও আব্দুল লতিফ মীর ও সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির আছমিনা ইয়াসমিন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান তাসফিয়া ও তৃতীয় স্থান নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসান উদ্দিন আবির। পরে ভাষা আন্দোলনবিষয়ক সংগীতের আয়োজন করা হয়। সংগীতশিল্পী ডা. আরিফ আহমেদ ভাষা আন্দোলন নিয়ে মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন।
প্রধান অতিথি ডা. এবিএম হারুন বলেন, ‘দীর্ঘ ৫২ বছর পর ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছে, এতে আমি খুশি। শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে পারবে এবং শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। আমি এ এলাকারে সন্তান। আমি চাই এ বিদ্যালায়ের শিক্ষার্থীরা ভালো পড়ালেখা করুক, ভালো ফলাফল করুক। স্বপ্ন দেখুক ভালো কিছু করার। আমি আশা করি, শিক্ষার্থীরা দেশকে ভালোবাসবে, দেশের জন্য কাজ করবে।’
অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে অবশেষে তার দেশেই ফিরিয়ে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিএসএফের অমানবিক ‘পুশইন’-এর শিকার হয়ে আলোচনায় আসা সোনালী খাতুন ও তার আট বছর বয়সি ছেলে মো. সাব্বির শেখকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ আইসিপিতে অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
হস্তান্তর শেষে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএসএফের এই অমানবিক ‘পুশইন’ কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুশইনের এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বিএসএফের অমানবিক আচরণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে।’
বিজিবি আশা প্রকাশ করেছে, পুশইনসহ এ ধরনের অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কার্যক্রম বিএসএফ বন্ধ করবে এবং ভবিষ্যতে সীমান্তে সৌহার্দ্যপূর্ণ, মানবিক ও আইনসম্মত প্রক্রিয়া বজায় রাখবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে মোট ৬ ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। এদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তার নাবালক শিশুও ছিলেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে এবং গত ২২ আগস্ট আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠায়।
পরে মানবিক বিবেচনায় আদালত ২ ডিসেম্বর তাদের স্থানীয় জিম্মায় দিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে আল আমিন (২৫) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাকে আটক দেখানো হয়।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর-বদলগাছী সড়কে আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটে। গ্রেপ্তারকৃত মাদ্রাসা শিক্ষক আল আমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বারইছা গ্রামের জাফর হোসেনের ছেলে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সাথে বলাৎকারের কথা অভিযুক্ত শিক্ষক স্বীকার করেছেন, তিনি ওই মাদ্রাসার হেফজখানার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন, এবং তিনি কোরআনের হাফেজ বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে আমার সন্তানকে কোরআনের হাফেজ তৈরি করার জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। রাতে আমার ছেলে ওই মাদ্রাসাতেই থাকত। গত ১ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে আল আমিন (শিক্ষক) আমার ছেলেকে ওই কাজ করেছে। এরপর থেকে ছেলের চলাফেরায় সন্দেহ হলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলে ছেলে আমার কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষককে ধরি, তখন উপস্থিত লোকজনের সামনে ছেলের সাথে ওই কাজ করার কথা স্বীকার করে। আমার ছেলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চেয়ে থানার আশ্রয় নিয়েছি।’
জানতে চাইলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি কোরআনের হাফেজ, ওই দিন শয়তানের পাল্লায় পড়ে আমি অ্যাকাম করেছিলাম। আমি দোষ স্বীকার করেছি, আল্লাহর কাছে তওবা করেছি আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। মানুষ মাত্রয় ভুল হয়। পরিবারকে বলেছিলাম ঘটনাটি কাউকে না জানাতে, আমার মানসম্মান সব শেষ।’
আক্কেলপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রউফ মাজেদ বলেন, ‘ছেলেটিকে কোরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসার আবাসিকে রেখেছিল আসহায় গরিব পরিবারটি। সেখানেও নিরাপদ নেই শিশুরা। আক্কেলপুরে অসংখ্য মাদ্রাসা তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে। এখনি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না বাড়ানো গেলে এই রকম ন্যক্কারজনক ঘটনা আগামী দিনগুলোতেও ঘটতে থাকবে বলে আমি মনে করি।’
আক্কেলপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু রয়েছে। তাকে শনিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে কর্মরত টেলিভিশন চিত্রসাংবাদিকদের সংগঠন টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিজেএ), চট্টগ্রাম আয়োজিত নিয়মিত দ্বিবার্ষিক উদ্যোগ ‘লেন্সের ভেতর সত্য, প্রতিবেদনে দায়িত্ব’ শীর্ষক টিসিজেএ ইস্পাহানি বেস্ট রিপোর্টিং ও ডকুমেন্টারি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এর বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর জামাল খান এলাকার মোমিন রোডের একটি হলরুমে বিচারকার্যের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রওশন সোমা, নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবীর মহাজন, এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্যামেরা অপারেটর ও ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি সৌমেন গুহ। তাদের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা প্রতিবেদন ও সেরা ডকুমেন্টারি নির্বাচন করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, টিসিজেএ সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীব, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম চৌধুরী মামুন, অ্যাওয়ার্ড পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী আকবর, এবং সদস্য দীপংকর দাশ, সুমন গোস্বামী ও রবিউল হোসেন টিপু। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক জানান, এবারের প্রতিযোগিতায় ১৫ জন রিপোর্টারের ১৫টি প্রতিবেদন এবং ১৪ জন ক্যামেরা পার্সনের ১৪টি ডকুমেন্টারি জমা পড়ে, যা মানসম্মত সাংবাদিকতার ইতিবাচক প্রতিফলন।
পুরো আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ইস্পাহানি মির্জাপুর চা। আগামী ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার প্রদান করা হবে।
কুড়িগ্রামে এক সপ্তাহ ধরে পড়ছে ঘন কুয়াশা। বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে বেড়েছে শীতের তিব্রতা। শনিবার তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক।
ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কুয়াশার সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ১০/১১টা পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনে শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নারী, শিশু-বৃদ্ধরা।
শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডার বাড়ায় জেলার বিভিন্ন শপিংমল ও ছোট বড় দোকানগুলোতে দিন-রাত গরম কাপড় কেনার ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের।
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের সুপার মার্কেট, নছর উদ্দিন মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। গত ৬ দিন ধরে হিমাঙ্কের কাটা নিম্নমুখী হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। শীত নিবারণের জন্য মানুষ ছুটছেন বিপণী বিতানগুলোতে।
সল্প আয়ের মানুষের ভরসা পুরোনো কাপড় বিক্রির দোকানগুলো। সাধ্যমত তারা কিনছেন গরম কাপড়। প্রকারভেদে সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৩০০- ৫০০ টাকা, জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১২০০ টাকা।
গরম কাপড় কিনতে আসা যাত্রপুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় কাজ কাম করতে পারি নাই। হাতে টাকা নাই তাই ধার দেনা করে বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বেশি। ছোট বাচ্চার একটা সোয়েটার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনলাম অথচ আগে এই সোয়েটার ছিল ২০০-৩০০ টাকা।
তেতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০.৫ ডিগ্রি: সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে তিন দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। সেখানে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। রাতভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারদিক।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল চারদিক। সকাল সাড়ে আটটার পর কুয়াশা ভেদ করে হালকা রোদ উঠলেও তেমন বাড়েনি রোদের তীব্রতা। এতে দিনের বেলায়ও শীত অনুভূত হচ্ছে।
এর আগে গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও শ্রীমঙ্গলে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়া ও নওগাঁর বদলগাছীতে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, আজ তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস। উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবেশ করায় এই জনপদে দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে।
হেমন্তের শুরু থেকেই উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সন্ধ্যার পর থেকেই হালকা শীত অনুভূত হচ্ছিল। এর মাঝে কুয়াশার পরিমাণ কম থাকায় দিনের বেলায় ঝলমলে রোদের দেখা মিলত। তবে কয়েক দিন ধরেই জনপদে সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে কুয়াশার দাপট। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় রাতভর অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তবে দিনের বেলায় ঝলমলে রোদ থাকায় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ছে। শুক্রবার বিকেলে তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় ছেয়ে আছে চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন অনেকে। শীতের শাকসবজি নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্বাকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই রোদের তীব্রতা।
সকাল পৌনে আটটার দিকে জেলা শহরে কথা হয় ইজিবাইক চালক এনামুল হকের (৪০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আইজকা সারা রাতি খুপে ঠান্ডা (শীত) নাগিছে। সকালে বাইর হওয়ার সময় খুপে কুয়াশা ছিল, এ্যালা কনেক (একটু) কমিছে। আইজকার ঠান্ডাখানোত হাত-পাও পটপটাছে।’
এ ব্যাপারে শনিবার সকালে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সকাল ৬টায় তেতুলিয়া তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা ও কাজলী নদী থেকে এক নারী ও এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে মেঘনা নদীর ডুবারচর ও কাজলী নদীর মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবারচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ৪-৫ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। শারীরিক অবয়ব দেখে তার বয়স ৩২ এর কাছাকাছি হতে পারে অনুমান করা যাচ্ছে। এদিকে একই দিনে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া (দাস পাড়া) এলাকা থেকে এক পুরুষের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তার দুই পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল। শারীরিক গঠন থেকে ধারণা করা হচ্ছে তার বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি হতে পারে।
মধ্য বাউশিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাউসার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন শিশু প্রথমে লাশটি দেখতে পায়। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা লাশটি দেখতে ভিড় করে। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে রাত বা একদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে আছে তবে পায়ে রশি বাঁধা বলে জানতে পেরেছি।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বির হোসেন বলেন, ‘দুই ক্ষেত্রেই নদীতে লাশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নৌপুলিশ দেখছে।’
গজারিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, ‘দুপুরে হোসেন্দী ইউনিয়নের ডুবার চর থেকে আমরা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছি। বাউশিয়া ইউনিয়নের কাজলী নদীতে এক পুরুষের লাশ দেখতে পেয়েছে স্থানীয়রা। আমরা সেখানে যাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত লাশ দুটির পরিচয় পাওয়া যায়নি।’
নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্কটি প্রায় দুই বছর ধরে অযত্ন-অবহেলায় বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। শিশুদের বিনোদনের রাইডগুলো ভাঙাচোরা, নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে সাপ-পোকামাকড়ের আতঙ্কে থাকেন দর্শনার্থীরা। দ্রুত সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে পার্কটি আবারও বিনোদনের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তির মোড়ে শতবর্ষ আগে ২ দশমিক ৪৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে জেলার একমাত্র জনবিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় প্রবীণ ও মধ্যবয়সিরা হাঁটাহাঁটি করতে আসেন এখানে। বিকেলে উন্মুক্ত থাকে সবার জন্য। ছুটির দিনে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে পার্কটি।
বর্তমানে পার্কের শিশুদের রাইডগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তিনটি ঢেঁকির সবগুলোই ভাঙা, অধিকাংশ দোলনা অচল, দুটি স্লিপার থাকলেও তাতে মরিচা ধরেছে এবং যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দোলনার নিচে গর্ত হয়ে বৃষ্টির পানি জমে থাকে, ফলে শিশুরা পড়ে কাদা-ময়লায় নোংরা হয়ে যায়। এসব কারণে শিশুদের বিনোদন ব্যাহত হচ্ছে। তা ছাড়া মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের।
গত দুই বছর ধরে পার্কের বাতিগুলো নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর পুরো এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। এতে হাঁটতে গিয়ে প্রবীণদের প্রায়ই বিপদে পড়তে হয়। অনেকেই সাপ-পোকামাকড়ের ভয়ে সন্ধ্যার পর পার্কে প্রবেশ করেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ পার্কটি যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া পার্কের প্রধান ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রাখা এবং ফুটপাতে ফাস্টফুডের দোকান বসানোর কারণে পথচারীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। দর্শনার্থীরা এসব দোকান নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উকিলপাড়ার গৃহবধূ মরিয়ম বেগম বলেন, ‘ছুটির দিনে বাচ্চারা পার্কে আসার জন্য জেদ করে। কিন্তু দোলনায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে, মইগুলো ভাঙা, স্লিপারেও জং। বছরের পর বছর এমন অবস্থায় রয়েছে। কেউ যেন দেখার নেই।
সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব খাদেমুল ইসলাম ক্যাপ্টেন বলেন, ‘পার্কটি জেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হলেও কোনো উন্নয়ন নেই। রাইডগুলো নষ্ট, পুকুরের পাড় ভাঙছে, পানি অপরিষ্কার, ফুলের গাছ নেই। যে পরিবেশে মানুষ বিনোদন পাবে তার কিছুই নেই।’
নিয়মিত ব্যায়াম করতে আসা সুমন চৌধুরী জানান, বছরের পর বছর পার্কে কোনো আলো নেই। অন্ধকারে কয়েকবার সাপের মুখোমুখি পড়েছি। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম জাকির হোসেন বলেন, ‘গত তিন বছরে ওয়ার্কওয়ে ও কিছু রাইডের কাজ করা হয়েছে। তবে শিশুদের রাইডগুলো বেশি ব্যবহারের কারণে দ্রুত নষ্ট হয়েছে। দোলনার নিচে ফুট টাইলস বসানোসহ আরও কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনায় রয়েছে। পার্কটি দ্রুত সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান গেটের সামনে দোকান ও মোটরসাইকেল রাখার বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হবে, যাতে দর্শনার্থীদের স্বাভাবিক চলাচলে আর সমস্যা না হয়।’
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের বিশেষ সাধারণ সভা গতকার শনিবার দুপুরে ইউনিট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভা শেষে ২০২৫-২৭ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
এর আগে ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র।
বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা হক প্রধান বাচ্চু, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসলি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সোয়েম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে নীলফামারী ইউনিটের আজীবন সদস্য মারুফ খান।
সভা শেষে সাত সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন ২০২৫-২৭ মেয়াদে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম।
নির্বাচিতরা হলেন, বজলুল করিম চৌধুরী (সহসভাপতি), মীর সেলিম ফারুক (সাধারণ সম্পাদক), সৈয়দ মেহেদী হাসান আশিক, আলিফ সিদ্দিকী প্রান্তর, অধ্যাপক সেতারা সুলতানা চৌধুরী, মোস্তফা হক প্রধান বাচ্চু ও অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান রিনো (কার্যনির্বাহী সদস্য)।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় বিশেষ সাধারণ সভার কার্যক্রম। পরে মৃত্যুবরণকারী আজীবন সদস্যের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, নীলফামারী রেড ক্রিসেন্ট ভবনের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব জমি এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনা হবে।
প্রশাসক বলেন, নতুন নির্বাচিত কমিটি এখন থেকে নিবেদিত হয়ে কাজ করবে। কাজে প্রশাসন ও জেলা পরিষদ সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নীলফামারী ইউনিটের আজীবন সদস্য আতাউর রহমান মুকুল বক্তব্য দেন।
নওগাঁর বদলগাছীতে শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার লাবণ্য প্রভা পাইলট ও কমিউনিটি গার্লস হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এই শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বদলগাছী উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষকদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং বিএনপির মনোনীত নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে এমপি পদপ্রার্থী ফজলে হুদা বাবুল। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশীদ।
বদলগাছী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আবুল হাসনাত চৌধুরী, বদলগাছী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদ রানা, সহসভাপতি শাম্মী আকতার, মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, উপদেষ্টা ও ফতেজঙ্গেপুর দাখিল মাদ্রাসা সুপার আবুল গাফফার, বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রায় দুই হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, বরাবরই আমরা শিক্ষকরা অবহেলিত। আমরা শিক্ষক সমাজে আর অবহেলিত থাকতে চাই না। আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষিত ও সুযোগ্য ব্যক্তি এবং টকশো লিডার। আপনি চান না আমাদের শিক্ষক সমাবেশ অবহেলায় থাকুক। আপনি সর্বদা চান শিক্ষক সমাবেশ যথাযথ মর্যাদা পেয়ে থাকুক। তাই আপনি যেহেতু শিক্ষকদের নিয়ে ভাবেন, তাহলে আমাদেরও আপনাকে নিয়ে ভাবতে সমস্যা নেই। এই জন্য শিক্ষক সমাজের অধিকার ফিরিয়ে নিতে ভেদাভেদ ভুলে ফজলে হুদা বাবুলকে আমরা নির্বাচিত করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। পরিশেষে প্রধান অতিথির কাছে মাদকমুক্ত ও মডেল উপজেলা হিসেবে এই বদলগাছী যেন গড়ে উঠে সেই দাবি জানান উপস্থিত সকল শিক্ষকরা।
এছাড়া উপস্থিত শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন প্রধান অতিথির কাছে।
এর আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এবং অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়। পাশাপাশি তারেক রহমানের জন্যও চাওয়া হয় দোয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ওস্তাদ হাসান আলী খানের স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান হয়।
ওস্তাদের ছেলে খুরশিদ হাসান খানের সভাপতিত্বে এবং আব্বাস উদ্দিন হেলাল ও রিপা আক্তারের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নজরুল সংগীতশিল্পী খাইরুল আলম শাকিল। মুখ্য আলোচক ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সুরকার ও সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নজরুল সংগীতশিল্পী মাসুদা আনাম কল্পনা, লোকসংগীতশিল্পী আব্দুল আলীমের সন্তান আজগর আলীম, চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা ইকবাল আহমেদ, নবীনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অঞ্জন কুমার নাগ, উপাধ্যক্ষ গোলাম মাওলা খান দিপু ও করিম হাসান খান।
আলোচনায় শেখ সাদী খান বলেন, ‘সঙ্গীত হলো এক ধরনের জাদু। ভালোবেসে করলে সংগীত মানুষকে মোহিত করতে পারে।’
খাইরুল আলম শাকিল বলেন, ‘যে জাতি সংস্কৃতিতে অগ্রসর হয় না, সে জাতি মানবিকতাও হারায়।’
অনুষ্ঠানে দুজন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য শিল্পীর উপস্থিতি এবং আব্দুল আলীমের সন্তান আজগর আলীমের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিশেষ মাত্রা যোগ করে।
বুলবুল ললিতকলা একাডেমির লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এই সংগীতজ্ঞ ১৯৪৪ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নিজের সংগীতজীবন শুরু করেন।
সমসাময়িক শিল্পীদের মধ্যে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম- একাধারে লোকসংগীত, উচ্চাঙ্গসংগীত, আধুনিক গান ও নজরুলসংগীত পরিবেশন করতেন সমান দক্ষতায়।
তিনি তালিম নিয়েছিলেন পণ্ডিত মনোরঞ্জন চক্রবর্তী, মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ওস্তাদ ছোটে খাঁ এবং ওস্তাদ আয়েত আলী খানের কাছে। তার গুণী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আছেন- ড. সনজিদা খাতুন, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, নীনা হামিদ, মুজিব পরদেশি প্রমুখ। ১৯৯৩ সালের ১২ জানুয়ারি এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মৃত্যুবরণ করেন।
বৃহত্তর কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তরপাড়ার রমজান আলীর ছেলে মো. কামাল অভাব-অনটনের কারণে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি। তবে ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম ও সাহসকে পুঁজি করে তিনি আজ বৃহত্তর কুমিল্লার সবচেয়ে বড় সবজির চারা উৎপাদনকারী হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করে তিনি গ্রামবাসীকে চমকে দিয়েছেন।
ভারেল্লা গ্রামের এই কামাল প্রথমে মাত্র ৩০ শতক জমিতে চারা উৎপাদন শুরু করেন। প্রথম বছরেই খরচের দ্বিগুণ লাভ পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে ৬০ শতক করেন। জমিটি নিজের না হলেও বংশের তাজু মিয়ার কাছ থেকে বছরে ১ লাখ টাকা ভাড়ায় নিয়ে তিনি ২০২০ সালে বড় আকারে চারা উৎপাদন শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুশৃঙ্খল সারিতে সাজানো বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা, পরিচর্যার আধুনিক ব্যবস্থা এবং শ্রমঘন সমন্বিত কাজের এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
কামাল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত হতে হলে মেধা, শ্রম আর অর্থ- এই তিনটাই দরকার। করোনাকালে ৬০ শতক জমি ভাড়া নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মূলধনে চারা উৎপাদন শুরু করি। চার ধাপে চারা উৎপাদন করে বছরে দ্বিগুণ লাভ করেছি। বৃহত্তর কুমিল্লায় এত বড় চারা উৎপাদন কেন্দ্র আর নেই।’
তার উৎপাদিত চারার মধ্যে রয়েছে; লম্বা বেগুন, তাল বেগুন, টমেটো, বাহুবলী টমোটো, ফুলকপি, ফেস কপি, সাতাত্তর কপি, চুন হোয়াইট কপি, হোয়াইট এক্সেল কপি, ১,৭০১ মরিচ, জুমকা মরিচ, কালো মরিচসহ আরও বহু প্রজাতির সবজির চারা। শ্রাবণ মাসে বীজ রোপণ করে বছরজুড়ে চার ধাপে চারা উৎপাদন ও সরবরাহ করেন তিনি। কামালের উৎপাদিত চারা শুধু কুমিল্লা জেলাতেই নয়, বরং চট্টগ্রাম, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কুমিল্লা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিপুল চাহিদা পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন আক্তার বলেন, ‘চারা উৎপাদন কৃষি খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সরকারি বরাদ্দ পেলে আমরা অবশ্যই কামালের চারা উৎপাদন কেন্দ্রসহ সমেশপুরের অন্যান্য কেন্দ্রগুলোকে সহায়তা করব। জেলা পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’
গাজীপুরের টঙ্গীতে মানুষের খন্ডিত পা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টঙ্গী রেলওয়ে ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে পরিত্যক্ত কার্টুনে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় খন্ডিত পা টি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তুরাগ নদের পাড়ে রেলওয়ে ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় পরিত্যক্ত একটি কার্টুনের ভিতর পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি মানব দেহের খন্ডিত অংশ (পা) দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খন্ডিত পা টি উদ্ধার করে টঙ্গী রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়।
টঙ্গী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, খন্ডিত পা টি কিভাবে এই এলাকায় আসলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে খন্ডিত পা টি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হবে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।