ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া ঈদের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফিরবেন। তাই বাসের টিকিটের জন্য সকাল থেকে ঘুরছেন রংপুরে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কোনো টিকিট কাটতে পারেনি। যেখানে গিয়েছেন, সেখানে টিকিটের সংকট দেখানো হয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে কাউন্টারের বাইরে এক হাজার ৫০০ টাকায় একটি টিকিট সংগ্রহ হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন।
কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে কথা হয় সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এমনি সময় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় ঢাকায় যাই। আজ দেড় হাজার টাকায় টিকিট কিনতে হলো। ক্লাস পরীক্ষা আছে তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনলাম। তাও কাউন্টারের বাইরে হাতে হাতে। টিকিট সব সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে। আমার মতো যাত্রীরা নিরুপায়।’
ঢাকার পোশাক কর্মী মেনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘কামারপাড়ার অলিতে-গলিতে দ্বিগুণ দামে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু কাউন্টারে কোনো টিকিট নেই। আপনি এখানে একটু ঘোরাঘুরি করে দেখবেন বাইরে যারা টিকিট বিক্রি করছেন, তারা আপনাকে কোনা গলির চিপায় ডেকে নিয়ে টিকিট দেবেন। এসব দেখার কেউ নেই। ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি আসতে ও ঢাকা যাইতে সব টাকা শ্যাষ। অথচ এসব দেখার কেউ নেই।’
শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমন মিয়া ও পোশাককর্মী মেনহাজুল ইসলামেই এমন আক্ষেপ নয়; ঈদ ও বৈশাখী ছুটি শেষে ঢাকার কর্মস্থলে ফের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কাউন্টারে গিয়ে টিকিট না পেয়ে এমন আক্ষেপ করছেন। কাউন্টারগুলোতে টিকিট না পাওয়া গেলেও বাইরে বেশি দামে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় একটি কালোবাজারি চক্রসহ বাস মালিক ও শ্রমিকের অভিযোগ যাত্রীদের।
রংপুরে ঢাকার কোচ স্ট্যান্ড কামারপাড়া, মড়ার্ন মোড়, পাগলাপীর ও রংপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। কাউন্ডারে টিকিট না পেয়ে অনেকে হতাশায় পড়েছেন। অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
অন্তত ২০ জন ঢাকাগামী যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ট্রেনের টিকিট এখন আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো; কিন্তু বাসের টিকিটও যে এমন হবে তারা বুঝতে পারেননি। অনলাইনে ৭ দিন আগের পর্যন্ত কোনো টিকিট নেই। কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই, টিকিট নেই বলছে কর্তৃপক্ষ; কিন্তু কাউন্টারের বাইরে দ্বিগুণের বেশি টাকা দিলে টিকিট হাজির হচ্ছে। টিকিট কাউন্টারের লোকজন মিলে এসব কালোবাজারী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে।
কামারপাড়ার এনা কাউন্টারের সামনে কথা হয় হারাগাছের একরামুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাউন্টারে টিকিট নেই। টিকিট না পেলে ঢাকায় যাব কি করে। আগামীকাল বুধবার অফিস ধরতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তাই যেকোনো মূল্যেই আজ একটি টিকিট জোগাড় করতে হবে। একটি বাসের টিকিট আমার জীবিকার ওপর প্রভাব ফেলেছে।’
জানতে চাইলে এনা ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম রতন বলেন, ‘ঈদে যাত্রীদের চাপ খুব। আর টিকিট আগেই অনেকে অনলাইনে বুকিং করে রেখেছেন, এই কারণে টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়তি দামে আমরা টিকিট বিক্রি করছি না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনা ও শ্যামলী পরিবহনের কয়েকজন সুপারভাইজার জানান, কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে প্রায় সব কোচের টিকিট সংকট থাকবে ঈদপরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত। এর কারণ স্থানীয় কিছু যুবকদের একটি সিন্ডিকেট আগে থেকেই জনপ্রতি ৬০ থেকে ৭০টি করে টিকিট নামে-বেনামে কিনে রেখেছেন। সেগুলোই এখন চড়া দামে বিক্রি করছেন। এখানে পরিবহন মালিক বা স্টাফদের করার কিছু নেই। বর্তমানে কাউন্টার থেকে যারা টিকিট সংগ্রহ করছেন তারা অধিকাংশ গাড়ির স্টাফ না হলে কাউন্টারের পরিচিত লোক।
মোটরশ্রমিক ফেডারেশন রংপুর মডার্ন শাখার সভাপতি হাবিব বলেন, ‘আগামী শনি-রোববার পর্যন্ত যাত্রীর খুব চাপ থাকবে। আমাদের ভাড়া বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। বহিরাগত কিছু লোক ভাড়া বেশি নিয়েছিল, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর লেদা সীমান্তে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ বুধবার ইয়াবার বড় এ চালান জব্দ করা হয়।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদে জানতে পারি মায়ানমার হতে একদল মাদক পাচারকারী লেদা বিওপির আওতাভূক্ত বিআরএম-১১ হতে প্রায় ১ কিমি দক্ষিণ দিকে মেম্বার পোস্ট নামক এলাকা দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে। পরে ব্যাটালিয়ন সদর এবং লেদা বিওপি পৃথক দুটি দল মেম্বার পোস্ট এলাকায় অভিযানের সময় নাফ নদীর পাড়ে অবস্থানরত মাদক পাচারকারী দলের কয়েকজন সদস্য দুটি বস্তা ফেলে নদী সাঁতরে সীমান্তের অপর পার্শ্বে পালিয়ে যায়।
এ সময় টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অভিযানরত দলগুলো ঐ এলাকায় তল্লাশি করে বিভিন্ন বস্তা হতে ৪ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে অনুসন্ধান চলছে।
মামা বাড়ি বেড়াতে এসে নাটোরের লালপুরে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কের শেখচিলান এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শেকচিলান গ্রামের শ্রাবন ও স্বপ্ন এবং সিংড়া উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিপ্লব।
স্থানীয়রা জানায়, শ্রাবন, স্বপ্ন ও বিপ্লব মোটরসাইকেলে করে কদিমচিলান ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কের শেখচিলান এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’ এছাড়া এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের একটি রিসোর্টে বেড়াতে যাওয়া ৮ তরুণ-তরুণীকে আটকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। স্থানীয় এলাকাবাসী রিসোর্টে হামলা চালিয়ে এই তরুণ-তরুণীদের আটক করে বিয়ে দেন। এ সময় পুলিশও উপস্থিত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার দুপুরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকার রিজেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে হামলা চালায় স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত। এ সময় তারা রিসোর্টে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান করা ১২ তরুণ-তরুণীকে আটক করে তারা। পরে কাজী ডেকে এনে তাদের মধ্যে ৮ জনকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
এভাবে আটকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে সিলেট মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শিরিন আক্তার আজ সোমবার বলেন, ‘এটা খুবই বাজে কাজ হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ-তরুণীরা নিজেদের ইচ্ছায় ঘুরতে যেতেই পারেন। ঘুরতে গিয়ে তারা যদি কোনো খারাপ কাজ বা অসামাজিক কাজ করে থাকে তবে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে আদালতে প্রেরণ করবে। কিন্তু তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া খুবই খারাপ কাজ হয়েছে। এলাকাবাসীকে এই অধিকার কে দিয়েছে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এই রিসোর্ট থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। এ ছাড়া পুলিশকেও চাঁদা দিতে হতো। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর বিএনপির একাধিক গ্রুপ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে তাদেরই একটি গ্রুপ স্থানীয় জনতাকে উসকে দেওয়ায় রোববারের হামলা চালায় বলে জানা যায়।
আট তরুণ-তরুণীর বিয়ে পড়ান সিলাম ইউনিয়নের কাজী আব্দুল বারী। তিনি বলেন, এলাকাবাসী ছেলেমেয়েদের আটক করে আমাকে খবর দেন। আমি এসে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে চার ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে পড়াই। এ সময় তাদের অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন। তিনটি বিয়ের দেনমোহর ১০ লাখ, আরেকটির দেনমোহর ১২ লাখ টাকা।
কাজী বলেন, বিয়ের সময় স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতাও উপস্থিত ছিলেন।
রিসোর্টে হামলা ও তরুণ-তরুণীদের বিয়ে পড়ানোর সময় উপস্থিত ছিলেন ঘটনাস্থলে থাকা জাতীয়তাবাদী কৃষক দল সিলেট জেলার সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল। তিনি সিলাম এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনা সম্পর্কে তাজুল বলেন, অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ছেলেমেয়েদের আটকের পর তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়। পরে অভিভাবক ও ছেলেমেয়েদের সম্মতিতেই ৮ জনের বিয়ে পড়ানো হয়। বাকি ৮ জনের অভিভাবক পরে সামাজিকভাবে বিয়ের আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দিলে পুলিশ মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। বিয়ের ব্যাপারে কাউকে জোর করা হয়নি।
চাঁদা দাবির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরকম কিছু আমি শুনিনি। তবে এই রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে এলাকাবাসী অনেক দিন থেকেই বিরক্ত।
তাজুল বলেন, অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ শুনে রোববার রিসোর্টে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছি, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এ জন্য রিসোর্টের গেট বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু অনেকে দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় রিসোর্টে হালকা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ মুচলেকা নিয়ে ৮ তরুণ-তরুণীকে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে- বিএনপি নেতা এমনটি দাবি করলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম বলেন, বিয়ে দেওয়া বা মুচলেকা দিয়ে ছাড়ার বিষয়ে পুলিশ কিছু জানে না। রিসোর্টে হামলার খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ সময় এলাকার মুরব্বিরা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে পুলিশ সেখান থেকে চলে আসে।
তবে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জনতা কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে আটক করেছে এমন খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু স্থানীয়রা পরিবারের কাছে তাদের হস্তান্তর করেছেন বলে শুনেছি। তবে আমি বার বার তাদেরকে বলেছি আটককৃতদের আমাদের জিম্মায় দিয়ে দেন। আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক তাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করব। কিন্তু স্থানীয়রা তা শুনেননি।
এ ব্যাপারে রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হেলাল আহমদ বলেন, আমাদের রিসোর্টে পুলিশের নির্দেশনা মোতাবেক ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়। রোববারও ছেলে এবং মেয়েরা আলাদাভাবে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ভোটার আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। হঠাৎ করে একদল যুবক রিসোর্টে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। তারা আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগও করে। ম্যানেজারের রুম থেকে ছেলেমেয়েদের ভোটার আইডি কার্ডের কপি ছিঁড়ে ফেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তারা ছেলেমেয়েদের আটক করে রিসোর্টের চাবি নিয়ে নেয়। এরপর আটককৃতদের তারা বিয়ে দিয়েছেন বলে শুনেছি।
তিনি বলেন, হামলায় রিসোর্টের ৩০-৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনার পর রিসোর্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
ভোলায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে ২ টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ১০ রাউন্ড তাজা গোলা, বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র এবং বিভিন্ন ধরনের মাদকসহ ৬ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।
সম্প্রতি কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোঃ সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড প্রতিনিয়ত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ জানুয়ারি মধ্যরাত ১ টা হতে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোন অধীনস্থ বিসিজি বেইস ভোলা কর্তৃক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশের এর সমন্বয়ে ভোলার সদর থানাধীন মুন্সিরচর, উকিলপাড়া, মুসলিমপাড়া এবং গুইঙ্গারহাট এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উক্ত অভিযান পরিচালনাকালে ২ টি বিদেশী পিস্তল, ১০ রাউন্ড তাজা গোলা, ১ টি চায়নিজ কুড়াল, ১ টি চাপাতি, ১ টি ডেগার, ১ টি হকস্ট্রিক, ১ টি খুর, ২ টি দেশীয় অস্ত্র, ১৬৬ বোতল ফেনসিডিল, ৫ টি গ্রিফ ওয়াটার, ১২০ পিস ইয়াবা, ১ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ২ টি ল্যাপটপ, ১ টি পাসপোর্ট, ২ টি পেনড্রাইভ, ২ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং নগদ টাকা ৪,৬২,০৬০ (টাকা চার লক্ষ বাষট্টি হাজার ষাট মাত্র) সহ ৬ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ী মো. রাসেল (৪৪), পাভেল বিশ্বান (৪৮), গৌতম বনিক (৪৫), মো. লিটন (৫২), মো. মাহবুব (৩০) এবং পারুল বেগম (৪০) সকলেই ভোলা জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে জব্দকৃত সকল আলমতসহ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভোলা সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে উত্তেজনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ওই এলাকায় ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বাংলাদেশিরা সীমান্তের শূন্যরেখায় জমিতে শনিবার দুপুরে লাগানো গম কাটতে গেলে ভারতীয়রা বাধা দিয়ে বচসা শুরু করে পরে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে বেশ কিছু আম ও বরইগাছ কেটে ফেলে।
মূলত এই ঘটনায় দুপক্ষের সংঘর্ষের সময় ভারতীয়দের হাঁসুয়ার আঘাতে দুজন ও ঢিল লেগে আরেক বাংলাদেশি আহত হন। তাদের দুজনের আহত হওয়ার খবরে ওই সীমান্তের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উভয় দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি অবগত হয়ে বিজিবি সীমান্তে অবস্থান ও পতাকা বৈঠক করে উত্তেজিত বাংলাদেশিদের ঘরে ফেরায়।
জানা গেছে, ভারতীয়দের হাঁসুয়ার আঘাতে আহত হয়েছেন বিনোদপুর ইউনিয়নের কালীগঞ্জ নামোটোলা এলাকার যুবক মেসবাহুল হক ও মো. ফারুক । আহত অপরজন হচ্ছেন বিশ্বনাথপুর গ্রামের মো. রনি, তিনি ভারতীয়দের ছোড়া পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন। কালিগঞ্জ ঘুমটোলা গ্রামের রবু জানান, ফারুক মোটরসাইকেলে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য অবস্থান করার সময় ভারতীয়দের ছোড়া পাথর মাথায় লেগে গুরুতর আহত হন।
মিঠুন জানান, রনি সীমান্তে বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ভারতীয় ১০ জন বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করে রনির ওপর আক্রমণ করে, এতে রনি আহত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌকা সীমান্ত এলাকায় অন্তত ৩০টি আমগাছ এবং শতাধিক বরই গাছ ভারতীয় জনগণ বাংলাদেশি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কেটে ফেলেছে।
সংঘর্ষ চলাকালে ভারতীয় উত্তেজিত জনগণ বাংলাদেশের জনগণকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হাতবোমা নিক্ষেপ করে। এমনকি বিএসএফ প্রায় ১৫টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা লাঠিসোটা, ইটপাটকেল এবং হাসুয়া নিয়ে সীমান্তে অবস্থান নিয়ে ভারতীয়দের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের উপঅধিনায়ক ইমরুল কায়েস ঘটনাস্থলে অবস্থান করে অতিরিক্ত ফোর্সের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। বিএসএফও চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পরে বিকেল ৪টার দিকে চৌকা সীমান্তের শূন্যরেখা বরাবর বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তবে সীমান্তের উভয়দিকেই সীমান্তবাসীর জটলা রয়েছে এবং পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে চৌকা সীমান্তের ওপারে ভারতের সুখদেবপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে গত সপ্তাহেই কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। তখন চৌকা সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছিল।
বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় বালুবাহি ডাম্পার গাড়ির ধাক্কায় ৩ মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুরে লামা-আলীকদম সড়কের তারাবুনিয়া নামকস্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলা সদর ইউনিয়নের নাছির চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দা মাশুক আহমদের ছেলে মো. বেলাল (৩০), বাজার পাড়ার বাসিন্দা মিন্টু মিয়ার ছেলে মিনহাজ (১৮) ও মনু মেস্ত্রীর কলোনীর বাসিন্দা সৈয়দ আমিন (৪৫)। ঘটনার পর চালক পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিনহাজ, বেলাল ও সৈয়দ আমিন এক মোটরসাইকেল চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের রেপারপাড়া বাজার থেকে উপজেলা সদরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় সড়কের তারাবুনিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির বালুবাহি ডাম্পার গাড়িটি মোটর সাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা ৩ জন ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলীকদম থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নিহতদের প্রাথমিক সূরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক ডাম্পার গাড়িটি আটক করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।’ দুর্ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি মীর্জা জহির উদ্দিন।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন স্ত্রী উম্মে হাফছা (১৮)। একঘন্টার ব্যবধানে উপজেলার সাহারবিলের কোরালখালী এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে মারামারিতে নিহত হন আলি হোসেন (৪২)। একইদিনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডুলহাজারা ডুমখালী রাস্তার মাথায় যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন হুমায়ুন কবির নোমান (২৫)।
স্বামীর ছুরিকাঘাতে নিহত স্ত্রী উম্মে হাফসার সঙ্গে স্বামী শওকত হাসান মেহেদীর বিয়ের বয়স ৮ মাস। গত মাস দুয়েক ধরে যৌতুককে কেন্দ্র করে নানাভাবে পারিবারিক কলহ লেগে আছে। আজ শুক্রবার এই কলহের জেরে স্বামী মেহেদী ক্ষিপ্ত হয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে শাশুড়ী পারভীন আক্তার (৩৮) এগিয়ে আসে। এতে শাশুড়ীকেও ছুরিকাঘাত করে সে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা দু'জনকে চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক স্ত্রী হাফসাকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত শাশুড়ী পারভীনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।
নিহত স্ত্রী উম্মে হাফসা চকরিয়া পৌর এলাকার ভাঙ্গারমুখ ৯ নং ওয়ার্ড ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের কন্যা এবং আঘাতপ্রাপ্ত মহিলা ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের স্ত্রী।
নিহতের পিতা আব্দুল হামিদ জানান, আট মাস পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল। অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে মেয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। আজ বাড়ির সব পুরুষ জুমার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায়। এই সুযোগে ফাঁকা বাড়িতে এসে ঘাতক শওকত হাসান মেহেদী অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে উপর্যুপরি ছরিকাঘাতে মেয়েকে হত্যা করা হয় এবং তার স্ত্রী পারভীন আক্তার (৩৮) গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হোন। পরবর্তীতে মেহেদী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চান তিনি।
এদিকে, উপজেলার সাহারবিলে পূর্ব শত্রুতার জেরে মারামারিতে নিহত আলি হোসেন সোনা মিয়া (৪২) উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড কোরালখালী এলাকার গোলাম কাদেরের ছেলে।
তার পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় কলিম উল্লাহ ও তার ভাই বাবুর সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। তারই জের ধরে আজ কোরালখালী বাজারে মারামারির এক পর্যায়ে আলি হোসেন সোনা মিয়ার তলপেটে উপর্যুপরি লাথিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায় সে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় চকরিয়া ইউনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আলি হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মন্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, একই দিনে এক ঘন্টার ব্যবধানে এই ঘটনাগুলো খুবই জঘন্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব অপরাধীদের ধরতে খুবই তৎপর রয়েছে। সকলের সহযোগিতায় দ্রুত সময়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ডুলহাজারা ডুমখালী রাস্তার মাথা এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে হুমায়ুন কবির নোমান (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত হুমায়ুন কবির নোমান উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বালুচর এলাকার বশির আহমদের ছেলে। সে চকরিয়া খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হসপিটালের নাইট গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, নিহত নোমানের আগামী ২০ জানুয়ারি বিয়ের দিন ঠিক করা ছিল। বিয়ের তিনদিন আগেই তিনি দুর্ঘটনায় এভাবে প্রাণ হারানোটা তাঁর পরিবার ও স্বজনরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. মেহেদি হাসান বলেন, সকালে কক্সবাজারগামী বাসের ধাক্কায় নোমান নিহত হন। নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘাতক বাস শনাক্ত করে জব্দের চেষ্টা চলমান রয়েছে।
চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রকিবুর রেজা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘একই দিনে তিনটা নিহতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তন্মধ্যে দুইজন খুন ও একজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা রয়েছে। অপরাধ ও অপরাধী দমনে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।
আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা কবিরুল ইসলাম শিকদারকে থানায় হস্তান্তর করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোগলটুলী এলাকায় কবির শিকদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যৌথবাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কবিরের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তিনি আওয়ামী লীগ অনুসারীদের পুনরায় সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এছাড়া আসন্ন ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ঘোষিত হরতাল সফল করতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছিলেন। এছাড়া কবিরের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার কবিরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশ্যে আসা চারটি কার্গো জাহাজ নাফ নদীতে তল্লাশির নামে জিন্মি করেছিল মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। একটি জাহাজ আগেই ছেড়ে দিয়েছিল। এরপর তিন দিনের মাথায় সোমবার মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি দুই পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দেওয়ায় সেগুলো টেকনাফ স্থল বন্দরে পৌঁছেছে। আর একটি জাহাজ আরাকার আর্মিদের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা যায়।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এহতেশামুল হক বলেন, ‘গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে নাফ নদীর মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় ইয়াঙ্গুন থেকে আসা পণ্যবাহী দুটি কার্গো জাহাজ বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা তল্লাশির নামে জিন্মি করে। পরদিন একই এলাকায় আরও দুটি জাহাজ জিন্মি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সদস্যরা। শনিবার জিন্মি থাকা জাহাজগুলোর মধ্যে প্রথম দফায় ছেড়ে দেয়া একটি টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছালেও অপর তিনটি তাদের হেফাজতে ছিল।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থল বন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠি।এরমধ্যে আরাকান আর্মির সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, মিয়ানমারে যুদ্ধ সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের কারণে প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থল বন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয় তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।
সম্প্রতি যেসব বোট বা কার্গো বন্দরে আসলেই তাদের ছাড়পত্র নিয়ে আসতে হয়। এর পরিপ্রেক্ষিত গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার চারটি পণ্যবাহী কার্গো আটক করে আরাকান আর্মি। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।
নাস্তা করে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী বাসচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুফিয়া রোড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মিরসরাইয়ের ১৩ নম্বর মায়ানী ইউনিয়নের মায়ানী বড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা সভ্যরঞ্জন বড়ুয়ার ছেলে ও মায়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য রুবেল বড়ুয়া (৪০), একই গ্রামের বাসিন্দা মেঘল বড়ুয়ার ছেলে নিপ্পু বড়ুয়া (৪৩) ও সুরেশ বড়ুয়ার ছেলে সনি বড়ুয়া (৩৭)।
মায়ানী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘মায়ানী ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়ার ৩ জন মোটরসাইকেলযোগে সুফিয়া রোড় একটি হোটেলে নাস্তা করতে যায়।
নাস্তা করে বাড়ি ফেরার পথে দ্রতগামী বাসচাপায় ঘটনাস্থলে ৩ জন মারা যান। তাদের মধ্যে রুবেল বড়ুয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যের দায়িত্বে রয়েছেন। একসঙ্গে তিনজন এভাবে মারা যাওয়ায় খুব খারাপ লাগছে।’
মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘আজ শুক্রবার ভোর রাতে সুফিয়া রোড় এলাকায় দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।’
কিশোরগঞ্জে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুজন রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নাসর্কে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভুল চিকিৎসার বিষয়টি স্বীকার করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, পেটে ব্যথাজনিত কারণে গত ১২ জানুয়ারি ভর্তি হয়েছিলেন নিকলী উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে জহিরুল (২২)।
আজ বুধবার সকালে দুজনেরই অপারেশন হওয়ার কথা ছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী রাব্বি আলম (৩০) জানান, সকালে নার্স এসে রোগী জহিরুল ইসলামকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। তখন কোন শব্দ না করে সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জহিরুল। এ সময় একই ইনজেকশন আরও দুই রোগীকে দেওয়া হয়েছে, তাদের অবস্থাও আশংকাজনক হওয়ায় অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। রাব্বি আরও বলেন, কিছুক্ষণ পরে আরেকজন নার্স এসে পরীক্ষা করে জানান জহিরুল মারা গেছেন।
জহিরুল ইসলামের বড় ভাই মাসুক মিয়া বলেন, জহিরুল ইসলাম অত্যন্ত গরীর মানুষ, তার ঘরবাড়ি বলতে কিছুই নেই। দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রী আবারও অন্তঃসত্ত্বা। এমন অবস্থায় ভুল চিকিৎসায় তার ভাইয়ের মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি৷ মাসুক বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে হার্নিয়ার চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া এলাকার ফালু মিয়ার ছেলে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২)।
মনিরুজ্জামান মল্লিকের চাচাতো ভাই মো. মোজাফফর জানান, মল্লিকের এপেন্ডিসাইটিসের ব্যাথা ছিল। অতীতে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা করিয়েছে। তখন চিকিৎসক জানিয়েছেন অপারেশনর করতে হবে। তাই ভালো চিকিৎসা এবং খরচের চিন্তা করে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, যে ইনজেকশন দেওয়ার কথা অপারেশন থিয়েটারে, সেখানে না দিয়ে দেওয়া হয়েছে রোগীর বেডে। ইনজেকশন দেওয়ার কয়েক মিনিট পরেও মল্লিক চিৎকার করে বলছিল সিস্টার আমাকে কী ইনজেকশন দিলেন, আমি তো শেষ! একথা বলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মল্লিক। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অপারেশনের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে সিনিয়র স্টাফ নার্স নাদিরা বেগম ওয়ার্ডের সীটেই দুজনকে ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশ করার ৫ থেকে ১০মিনিটের মধ্যেই দুজন কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
অভিযোগ রয়েছে, ‘নর কিউ’ নামক অ্যানেসথেশিয়ার ইনজেকশনটি অপারেশন থিয়েটারে পুশ করার কথা ছিল, সেটি আগেই ভুল করে ওয়ার্ডের সীটেই পুশ করেন নার্স। এতেই ঘটে বিপত্তি। মৃত্যু হয় দুজন তরতাজা যুবকের।
তাদের মৃত্যুর খবরে আত্মীয় স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে বিক্ষোভও করেন। তারা সংশ্লিষ্ট নার্সের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার ভুল চিকিৎসায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট নার্সকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অজয় সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নার্সের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে তিনি নিজেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবেন বলে আশ্বস্থ করেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে অগ্নিকাণ্ডে তিনটি ইকো রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনটি রিসোর্ট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
ইকো রিসোর্টে মালিকদের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে সেন্টমার্টিনে পশ্চিম সৈকতের গলাচিপায় অবস্থিত সাইরী ইকো রিসোর্টের (রিসিপশন) অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে মাল্টিপ্লাগে শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে করে পাশে থাকা বীচ ভ্যালীর ১৮টি কক্ষ, কিংশুক ইকো রিসোর্টে ৭টি ও সাইরী ইকো রিসোর্টের (রিসিপশন) অভ্যর্থনা কক্ষ ১টিসহ সর্বমোট ২৬টি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, রিসোর্ট মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি- প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়িরর ইনচার্জ এসআই অজিত কুমার দাস বলেন, সেন্টমার্টিনে সাইরী রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে পাশের আরও দুটি রিসোর্ট আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে গলাচিপার বিচ ভ্যালি এবং কিংশুক রিসোর্টের অধিকাংশ পুড়ে গেছে। আমরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছি। এসব রিসোর্টগুলো খুব সুন্দর এবং উন্নতমানের ছিল। সাইরী রিসোর্ট থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। তবুও আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি। এছাড়া পুড়ে যাওয়া রিসোর্টে থাকা পর্যটকদের অন্য হোটেলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পুড়ে যাওয়া কিংশুক রিসোর্টের সহকারী পরিচালক সাইফুদ্দিন বাবর বলেন, হঠাৎ করে রাতে আগুন দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে আমরা হোটেলে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে নেই। ততক্ষণে আমাদের রিসোর্টের ১৫টি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কাঠ-বাঁশ এবং ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল আমাদের রিসোর্টটি। তাই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেড় কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের ব্যবসা লোকসানে পড়েছে।
রিসোর্ট বিচ ভ্যালির মালিক মো. সরোয়ার কামাল বলেন, আগুন আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। পুরো রিসোর্টটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোনও মালামাল রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আমরা নিঃস্ব।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আমাদের একটা টিম সেখানে পৌঁছেছে। আগুনের ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। আর ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সহায়তায় করা যায়, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ডানা ঝাপটিয়ে জলে এসে পড়ছে, জলকেলিতে আনন্দ উপভোগ করছে ঝাঁকে ঝাঁকে আসা অতিথি পাখি। শীত শুরু হলেই দলবেঁধে চলে আসে তারা। পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। যা দেখতে ভিড় করেন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা পাখিপ্রেমীরা।
বলছি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার রামরাই দীঘির কথা। যেখানে প্রতিবছর শীতে আসে একঝাঁক অতিথি পাখি। পুরো দীঘির জলাশয় সেজেছে এক নতুন সাজে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়ে লক্ষ্য রাখছেন তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাণীশংকৈল উপজেলা। এই উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীন রামরাই দীঘি। প্রতি বছরের মতো এবার শীতেও দীঘিটিতে ভিড় জমিয়েছে শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে আসা বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি।
তাই তো শীতের মৌসুম আসতেই প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রামরাই দীঘিটি যেন অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে সেখানে। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমীকরা।
পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর ওড়াউড়ির দৃশ্যধারণের চেষ্টায় মেতেছেন দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ আবার নৌকায় চড়ে পাখিদের দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তুলছেন সেলফি। করছেন ভিডিও। রামরাই দীঘিতে অতিথি পাখির অবাদ বিচরণ এখন নজর কেড়েছে সবার।
অতিথি পাখি দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। তবে পাখিগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে পাখি দেখতে এসেছেন আব্দুল্লাহ আল সুমন। তিনি বলেন, ‘এবারে প্রথম আসলাম পাখি দেখতে। এসে দেখি অনেক পাখি এসেছে। পাখিগুলো সুন্দর করে একসঙ্গে উড়ে যাচ্ছে আবার এসে পানিতে বসছে। এ এক মনোরম দৃশ্য। খুবই সুন্দর লাগছে।’
হরিপুর থেকে পাখি দেখতে এসেছেন ওমর ফারুকসহ তার বন্ধুরা। তারা বলেন, ‘পাখিগুলো প্রতিবারে শীতের সময় আসে। তবে অনেকে এগুলো শিকার করতে চায়। পাখিগুলো যাতে এখানে নিরাপদে থাকতে পারে সে জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, ‘অতিথি পাখি কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে, তাই নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রামরাই দীঘি এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী দীঘি। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় নজরে রাখছি।’
উল্লেখ্য, প্রায় ৪২ একর জমিজুড়ে রামরাই দীঘিটি অবস্থিত। আর এখানে প্রতিদিন দর্শনার্থী আসেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।