রোববার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
২৫ কার্তিক ১৪৩২

কাউন্টারে নেই বাসের টিকিট, বাইরে মিলছে দ্বিগুণ দামে

ফাইল ছবি
 মীর আনোয়ার আলী, রংপুর
প্রকাশিত
 মীর আনোয়ার আলী, রংপুর
প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:৫১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া ঈদের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফিরবেন। তাই বাসের টিকিটের জন্য সকাল থেকে ঘুরছেন রংপুরে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কোনো টিকিট কাটতে পারেনি। যেখানে গিয়েছেন, সেখানে টিকিটের সংকট দেখানো হয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে কাউন্টারের বাইরে এক হাজার ৫০০ টাকায় একটি টিকিট সংগ্রহ হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন।

কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে কথা হয় সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এমনি সময় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় ঢাকায় যাই। আজ দেড় হাজার টাকায় টিকিট কিনতে হলো। ক্লাস পরীক্ষা আছে তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনলাম। তাও কাউন্টারের বাইরে হাতে হাতে। টিকিট সব সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে। আমার মতো যাত্রীরা নিরুপায়।’

ঢাকার পোশাক কর্মী মেনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘কামারপাড়ার অলিতে-গলিতে দ্বিগুণ দামে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু কাউন্টারে কোনো টিকিট নেই। আপনি এখানে একটু ঘোরাঘুরি করে দেখবেন বাইরে যারা টিকিট বিক্রি করছেন, তারা আপনাকে কোনা গলির চিপায় ডেকে নিয়ে টিকিট দেবেন। এসব দেখার কেউ নেই। ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি আসতে ও ঢাকা যাইতে সব টাকা শ্যাষ। অথচ এসব দেখার কেউ নেই।’

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমন মিয়া ও পোশাককর্মী মেনহাজুল ইসলামেই এমন আক্ষেপ নয়; ঈদ ও বৈশাখী ছুটি শেষে ঢাকার কর্মস্থলে ফের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কাউন্টারে গিয়ে টিকিট না পেয়ে এমন আক্ষেপ করছেন। কাউন্টারগুলোতে টিকিট না পাওয়া গেলেও বাইরে বেশি দামে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় একটি কালোবাজারি চক্রসহ বাস মালিক ও শ্রমিকের অভিযোগ যাত্রীদের।

রংপুরে ঢাকার কোচ স্ট্যান্ড কামারপাড়া, মড়ার্ন মোড়, পাগলাপীর ও রংপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। কাউন্ডারে টিকিট না পেয়ে অনেকে হতাশায় পড়েছেন। অনেকে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

অন্তত ২০ জন ঢাকাগামী যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ট্রেনের টিকিট এখন আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো; কিন্তু বাসের টিকিটও যে এমন হবে তারা বুঝতে পারেননি। অনলাইনে ৭ দিন আগের পর্যন্ত কোনো টিকিট নেই। কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই, টিকিট নেই বলছে কর্তৃপক্ষ; কিন্তু কাউন্টারের বাইরে দ্বিগুণের বেশি টাকা দিলে টিকিট হাজির হচ্ছে। টিকিট কাউন্টারের লোকজন মিলে এসব কালোবাজারী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে।

কামারপাড়ার এনা কাউন্টারের সামনে কথা হয় হারাগাছের একরামুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাউন্টারে টিকিট নেই। টিকিট না পেলে ঢাকায় যাব কি করে। আগামীকাল বুধবার অফিস ধরতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তাই যেকোনো মূল্যেই আজ একটি টিকিট জোগাড় করতে হবে। একটি বাসের টিকিট আমার জীবিকার ওপর প্রভাব ফেলেছে।’

জানতে চাইলে এনা ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম রতন বলেন, ‘ঈদে যাত্রীদের চাপ খুব। আর টিকিট আগেই অনেকে অনলাইনে বুকিং করে রেখেছেন, এই কারণে টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়তি দামে আমরা টিকিট বিক্রি করছি না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনা ও শ্যামলী পরিবহনের কয়েকজন সুপারভাইজার জানান, কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে প্রায় সব কোচের টিকিট সংকট থাকবে ঈদপরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত। এর কারণ স্থানীয় কিছু যুবকদের একটি সিন্ডিকেট আগে থেকেই জনপ্রতি ৬০ থেকে ৭০টি করে টিকিট নামে-বেনামে কিনে রেখেছেন। সেগুলোই এখন চড়া দামে বিক্রি করছেন। এখানে পরিবহন মালিক বা স্টাফদের করার কিছু নেই। বর্তমানে কাউন্টার থেকে যারা টিকিট সংগ্রহ করছেন তারা অধিকাংশ গাড়ির স্টাফ না হলে কাউন্টারের পরিচিত লোক।

মোটরশ্রমিক ফেডারেশন রংপুর মডার্ন শাখার সভাপতি হাবিব বলেন, ‘আগামী শনি-রোববার পর্যন্ত যাত্রীর খুব চাপ থাকবে। আমাদের ভাড়া বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। বহিরাগত কিছু লোক ভাড়া বেশি নিয়েছিল, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’

বিষয়:

নরসিংদীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নরসিংদী প্রতিনিধি

বিগত ১০ বছর যাবত নরসিংদী জেলার উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা জলপাই চাষে ঝুঁকে পড়েছে। জেলার পাহাড়ি এলাকা শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে জলপাই চাষ শুরু করেছে। এ অঞ্চলটি সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত থাকলেও গত কয়েক বছর যাবত পাহাড়ি এলাকার অধিকাংশ চাষি সবজি চাষ বাদ দিয়ে জলপাই চাষের প্রতি আগ্রহ হয়ে পড়ছে বেশি। রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ধুকুন্দী গ্রামের জলপাই চাষি আলিম উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে তিনি তার জমিতে সবজি চাষ করতেন তার বাড়ির আঙিনায় মাত্র চারটি জলপাই গাছ ছিল।

এ চারটি গাছ থেকে তিনি ১ বছরে ১,৫০০ কেজি জলপাই পান এবং প্রতি কেজি জলপাই ৩০ টাকা করে মোট ৪৫ হাজার টাকা বিক্রি করেন। এরপর থেকে তিনি লাভ বেশি হওয়ায় সবজি চাষ বাদ দিয়ে জলপাই চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে তিনি ২ একর জমিতে প্রায় ৪০০ জলপাই গাছের চারা রোপণ করেছেন।

২ একর জমি থেকে এ বছর তিনি আনুমানিক ১২ হাজার কেজি জলপাই পেয়েছেন এবং প্রতি কেজি জলপাই পাইকারি ২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তার সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। জেলার শিবপুর উপজেলার শিবপুর বাজার, যশোর বাজার, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজার, বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার ও রায়পুরা উপজেলার বারৈচা, মরজাল ও জঙ্গী শিবপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে প্রতি কেজি জলপাই ২০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে এসব জলপাই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। শিবপুর উপজেলার কামারটেক গ্রামের জলপাই চাষি আব্দুর বারেক জানায়, তিনিও ইতোমধ্যে সবজির চাষ করতেন।

খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় তিনি জলপাই চাষ শুরু করেছেন। তিনি বর্তমানে একজন সফল জলপাই চাষি হিসেবে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছেন এবং এলাকায় জলপাই চাষি হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। অধিকাংশ পাইকাররা তার বাড়ি গিয়ে জলপাই ক্রয় করে নিয়ে আসে।

নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার স্বাক্ষর চন্দ্র বনিক জানান, বর্তমানে নরসিংদীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষ করা হচ্ছে এবং সেগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে করে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।


তিন হিমাগারের ৫৫ হাজার বস্তা আলু গোপনে বিক্রি

তদন্ত করছেন জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটের তিনটি হিমাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের নির্ধারিত সময়ের আগে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ৫৫ হাজার বস্তা আলু গোপনে বিক্রি করেছে। এর মধ্যে ১০ হাজার বস্তা বীজ আলু ছিল। হিমাগার থেকে সংরক্ষিত আলু বের করতে এসে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা গোপনে আলু বিক্রির ঘটনাটি জানতে পারেন। ইতোমধ্যে হিমাগারে আলু বিক্রি করার ঘটনাটি তদন্ত করছেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা। যে তিনটি হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আলু বিক্রি করা হয়ে সেগুলো হচ্ছে, পাঁচবিবি উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকায় অবস্থিত সাথী হিমাগার লিমিটেড, ক্ষেতলালের ভাসিলা এলাকায় অবস্থিত মোল্লা হিমাগার লিমিটেড ও ক্ষেতলালের আয়মাপুরে অবস্থিত হাফিজার রহমান বীজ হিমাগার। এর মধ্যে সাথী হিমাগার লিমিটেড ২০ হাজার বস্তা, মোল্লা হিমাগার লিমিটেডে ৩০ হাজার বস্তা ও হাফিজার রহমান বীজ হিমাগার ৫ হাজার বস্তা আলু বিক্রি করে দিয়েছে। এই তিনটি হিমাগারে গিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে সংরক্ষণের নির্ধারিত সময়ের আগেই আলু বিক্রির ঘটনার সত্যতা মিলেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হিমাগার শেডে নষ্ট আলু বাছাই করছেন নারী শ্রমিকরা। অন্যদিকে সংরক্ষিত আলু না পেয়ে কৃষকরা হিমাগারের ব্যবস্থাপকের কক্ষে গিয়ে ভিড় করছিলেন। এ সময় কৃষকরা হিমাগারের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। সেখানে ১০-১৫ জন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সাথী হিমাগার লিমিটেডে বিপুল পরিমাণ আলু ও বীজ আলু সংরক্ষণ করেছিলেন। আগামী ১৫ নভেম্বর তাদের আলু ও বীজ আলু সংরক্ষণের মেয়াদ শেষ হবে।

তারা এখন তাদের সংরক্ষিত আলু ও বীজ আলু হিমাগারে নিতে আসেন। হিমাগার কর্তৃপক্ষ তাদের দীর্ঘক্ষণ আলুর জন্য বসিয়ে রাখেন। এরপর তাদের এক মাস আগে হিমাগার থেকে ২০ হাজার বস্তা আলু বিক্রির কথা জানানো হয়। এর মধ্যে তাদের আলু রয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দেওনালা গ্রামের কৃষক ময়নুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘সাথী হিমাগারে ৬০ বস্তা আলু রেখেছিলাম। আলু তুলতে এসে জানতে পারি আমার আলু বিক্রি করা হয়েছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমাকে আলু বিক্রির বিষয়টি আগে জানায়নি। এছাড়া আলু সংরক্ষণের মেয়াদ ছিল। টাকা দিয়ে আলু সংরক্ষণ করে আমার আলু তারা বিক্রি করে দেয়।’

পাঁচবিবি উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকার কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সাথী হিমাগারে ভালো মানের ১০০ বস্তা বীজ আলু সংরক্ষণ করেছিলাম। আলু রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। আজ হিমাগারে এসে দেখি আমার আলু নেই। কাগজপত্র দেখে হিমাগারের ব্যবস্থাপক আমাকে জানালেন একমাস আগে আমার আলু বিক্রি করা হয়েছে। এমনিতেই গত বছর আলুতে অনেক লোকসান হয়েছে। এখন আমি কী করে জমিতে আলু লাগাব।’

পাঁচবিবি উপজেলার কাঁকড়া এলাকার শিশির মণ্ডল বলেন, ‘আমি সাথী হিমাগারে ১২৪৩ বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন এসে দেখছি আমার শুধু ১৪৩ বস্তা আলু আছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমার ১,১০০ বস্তা আলু বিক্রি করে দিয়েছে। আমার আলু তারা তো বিক্রি করার কেউ না। এই ক্ষতির সুষ্ঠু বিচার চাই।’

পাঁচবিবি উপজেলার চাঁনপাড়া এলাকায় অবস্থিত সাথী হিমাগার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. শামসুল হক বলেন, ‘এই বছর আমাদের হিমাগারে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ২৬ হাজার বস্তা আলু কৃষক জোর করে রেখেছিলেন। এ কারণে কিছু আলু নষ্ট হতে শুরু করেছিল। আমরা প্রায় ২০ হাজার বস্তা আলু বিক্রি করেছি। এখন কৃষকদের বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী টাকা দিচ্ছেন। কেউ বীজ আলু দাবি করলে তাদের আমাদের নিজস্ব সংরক্ষিত কিছু বীজ আলু আছে সেখান থেকে বীজ আলু দেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘আমরা হিমাগার মালিকদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছি যে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অর্থাৎ নভেম্বরের ১৫ তারিখের আগে যেন কেউ কৃষকের আলু বিক্রি না করে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত হিমাগারে আলু সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেন মো. বাচ্চু মণ্ডল। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলার সকল হিমাগারে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলু সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে জেলার পাঁচ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জয়পুরহাট কৃষি বিপণন কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শাখার নেজারত ডেপুটি কালেক্টর উজ্জ্বল বাইন।

জয়পুরহাট আদালতের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংরক্ষিত আলু তাদের না জানিয়ে বিক্রি করে হিমাগার কর্তৃপক্ষ ৪০৬ ধারার অপরাধ করেছে। যদি কেউ মামলা করতে চায়। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত তিনটি হিমাগারে কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের আলু বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। কৃষককে না জানিয়ে আলু বিক্রি করা একটা অপরাধ। বিষয়টি আমি নিজে তদন্ত করছি। এর মধ্যে মোল্লা হিমাগার লিমিটেডে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ৩০ হাজার বস্তা আলু বিক্রি করে দিয়েছে। এখন তাদের বর্তমান বাজার অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে হিমাগার কর্তৃপক্ষ।


বিজিবি’র অভিযানে অক্টোবর-২০২৫ মাসে ২০৬ কোটি ৪২ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত অক্টোবর-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ২০৬ কোটি ৪২ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৩ কেজি ২৬২.৭৬ গ্রাম স্বর্ণ, ১১ কেজি ৪১০ গ্রাম রূপা, ৩৩,৯১০টি শাড়ী, ১৯,৫৮০টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ১৬,৯৯১টি তৈরী পোশাক, ৫৬৯ মিটার থান কাপড়, ১,৭১,৯৪৬টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৬,২২৭ পিস ইমিটেশন গহনা, ১৭,৬১,৫২৬টি আতশবাজি, ৬,০৫২ ঘনফুট কাঠ, ৪,৫৮৯ কেজি চা পাতা, ১০,৩৯২ কেজি সুপারি, ৩১,৬৫১ কেজি কয়লা, ৫৩৫ ঘনফুট পাথর, ৩৭,৩৫৫ কেজি সুতা/কারেন্ট/দুয়ারি জাল, ২৫১টি মোবাইল, ৩১,৬৭৮টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৪৮,২৮৬টি চশমা, ৪০,৮২৬ কেজি জিরা, ৯,৯১৪ কেজি চিনি, ২৬,৪৫৮ কেজি পিয়াজ, ৬০১ কেজি রসুন, ৫,৩৭৮ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৭,৬৯০ কেজি সার, ৫,০২৪ প্যাকেট কীটনাশক, ৩,০০২ লিটার ডিজেল, ১,০৯,৭৩২ পিস চকোলেট, ১,৫০০টি গরু/মহিষ, ১০টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ২১টি পিকআপ/মহেন্দ্র, ২টি ট্রাক্টর, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯টি ট্রলি, ১৯৭টি নৌকা, ৩২টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৪৯টি মোটরসাইকেল এবং ৩০টি বাইসাইকেল/ভ্যান।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ৪টি দেশী/দেশীয় পিস্তল, ১টি রিভলবার, ৩টি মর্টার সেল, ৬টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ৩টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গোলাবারুদ, ২৫০ গ্রাম বিস্ফোরক, ২টি ডেটোনেটর, এবং ৭টি অন্যান্য অস্ত্র।

এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১৩,৮২,৪৬২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কেজি ২০৫ গ্রাম হেরোইন, ৫,৪৬৫ বোতল ফেনসিডিল, ১০,৫৮২ বোতল বিদেশী মদ, ২৫১.৫ লিটার বাংলা মদ, ১,২৬৭ ক্যান বিয়ার, ১,৭৮২ কেজি ২৪০ গ্রাম গাঁজা, ১,৩০,৭৫৯ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৫৫,৯১৭টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,০৮২ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৬,৩০৯টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ১৩০ কেজি ইয়াবা পাউডার এবং ৭,২৭,৭৬৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮৪ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ২১০ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ০৩ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৪৯৩ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।


কাপাসিয়ায় কৃষকের ৬ শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি 

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক কৃষকের কলাক্ষেতের ছয় শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে
উপজেলার টোক ইউনিয়নের উলুসারা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় টোকনগর গ্রামের ইউপি মেম্বার শফিকুল ইসলাম কবিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত রুস্তম আলী।

অভিযোগে বলা হয়, ওই কৃষক প্রায় এক যুগ আগে কবির মেম্বারের কাছ থেকে দেড় বিঘা জমি কিনে ভোগদখল করছেন। তিন-চার বছর ধরে জমি অর্ধেক দামে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি রাজি না হওয়ায় বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে জমি দখলের হুমকি দেওয়া হয়।

রুস্তম আলী বলেন, তার ক্ষেতে কলা পাকা শুরু হয়েছিল। দেড় বিঘা জমিতে কলা চাষে তিন লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। গাছগুলো কেটে ফেলায় তিনি এখন বড় বিপদে পড়েছেন।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রব বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


হরিণাকুণ্ডুতে নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার এক নিভৃত পল্লি থেকে নিখোঁজের তিনদিনের মাথায় জরিনা খাতুন (৫০) নামে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার হরিয়ারঘাট গ্রামের মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জরিনা খাতুন হরিয়ারঘাট গ্রামের আশির উদ্দিনের স্ত্রী।

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে জরিনা খাতুন তিন দিন যাবৎ নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার গভীর রাতে পানের বরজ পাহারা দিতে গিয়ে কৃষকরা পচা গন্ধ টের পান। এরপর তারা খোঁজাখুঁজি করে ওই নারীর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

হরিনাকুণ্ডু থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, ওই নারীর ছেলের বউয়ের সঙ্গে বনিবনা ছিল না। নিখোঁজ থাকলেও জরিনার পরিবার পুলিশকে কিছুই জানায়নি। থানায় জিডিও করেনি। জরিনার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


টঙ্গী ‎বিআরটি প্রকল্পের সেতুর নিচ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার ‎

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়াল সেতুর নিচ থেকে অজ্ঞাত (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রবিবার সকাল ৯টার দিকে বাস র্যাপি ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়াল সেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মিলে।

‎থানার উপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

‎স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রবিবার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুর ৬৮ নাম্বার পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

‎টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মেহেরপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নীলকুঠি ভাটপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১টি ওয়ান শুটার (পিস্তল), ৩রাউন্ড গুলি ও ৩টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
শনিবার দিবাগত মধ্যরাত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর গাংনী ক্যাম্পের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করে।
গাংনী সেনাবাহিনী ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অপরাধ চক্রটি পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দূর্বত্তদের ফেলে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


অস্ত্রসহ কাঁকন বাহিনীর ২১ সদস্য আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কাঁকন বাহিনীকে ধরতে কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর ও রাজশাহী চার জেলার দুর্গম বিস্তীর্ণ পদ্মার চরে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় ২১ জনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। পুলিশ এ অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন ফাস্ট লাইট।

শনিবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত ভোররাতে এ অভিযান শুরু হয়ে চলবে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত। এতে পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএনয়ের ১২শ সদস্য এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত সাড়াশি অভিযানে কাঁকন বাহিনীর ২১ জনকে আটক, ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, অভিযানে ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় কাঁকন বাহিনীর ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গেল ২৭ অক্টোবর চরে কাশের খড় দখলকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনীর গুলিতে বাঘায় আমান ও নাজমুল নিহত হয়। নিহত হন কাঁকন বাহিনীর সদস্য লিটন। এই ঘটনাশ মামলার পরে গত কয়েকদিন আগে কাঁকান বাহিনীর এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ।


চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো টিটিপাড়া আন্ডারপাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজধানীর টিটিপাড়া আন্ডারপাস শনিবার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে রাজধানীবাসীর যাতায়াত এখন অনেকটাই সহজ হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. শেখ মঈনুদ্দিন সকালে আন্ডারপাসটি পরিদর্শন করেন এবং তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার নির্দেশ দেন বলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান।

তিনি বলেন, আন্ডারপাসটি এক পাশে আতিশ দীপঙ্কর সড়ক এবং অন্য পাশে কমলাপুর আউটার সার্কুলার রোডকে সংযুক্ত করেছে, যা পূর্বের টিটিপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের পরিবর্তে নির্মিত হয়েছে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘লেভেল ক্রসিংটি আন্ডারপাসে রূপান্তর করা হয়েছে, যেন ট্রেন ও সড়ক যানবাহন উভয়ের চলাচল নির্বিঘ্ন হয়।’

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত এ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হতে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে। নির্মাণকাজ চলাকালীন পথটি বন্ধ থাকায় অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

নতুনভাবে উদ্বোধন করা আন্ডারপাসটি প্রধান সড়কের নিচে প্রায় ১১ মিটার গভীরে অবস্থিত। এটি প্রায় ৩৫০ মিটার দীর্ঘ ও ৩৫ মিটার প্রশস্ত। এতে মোট ছয়টি লেন রয়েছে। এর মধ্যে চারটি মোটরযানের জন্য নির্ধারিত, যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচ মিটার উচ্চতার যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

এতে উভয় পাশে রিকশা ও সাইকেলের জন্য পৃথক লেন এবং পথচারীদের জন্য প্রশস্ত ফুটপাত রাখা হয়েছে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘এই অবকাঠামোর মাধ্যমে এখন ট্রেন ওপরে চলবে আর অন্যান্য যানবাহন নিচ দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।’

তিনি আরও জানান, শুধু কার্যকারিতাই নয়, নান্দনিকতার দিকটি বিবেচনায় রেখেও আন্ডারপাসটি নির্মাণ করা হয়েছে।

আফজাল হোসেন বলেন, ‘সড়কে দাগ চিহ্ন, মাঝখানে ফুলগাছের সারি ও উভয় পাশে ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন এর সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে।’

বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা রোধে, আন্ডারপাসটিতে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আলাদা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন কূপ স্থাপন করা হয়েছে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, আন্ডারপাসের সব বৃষ্টির পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কূপে প্রবাহিত হবে, যেখানে চারটি ৭৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প বসানো হয়েছে যাতে পানি নিষ্কাশন নির্বিঘ্ন থাকে। তিনি আরও বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।


শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

*লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ *শিক্ষক-পুলিশসহ আহত ১১০ *৩ দফা আদায়ে আজ থেকে কর্ম বিরতির ঘোষণা *নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়া হয়: ডিএমপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কলম বিসর্জন কর্মসূচির অংশ নিয়েছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের উদ্দেশে ‘পদযাত্রা’ শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রাথমিক শিক্ষকরা এ পদযাত্রায় যোগ দেন। তবে পুলিশ বাধায় পণ্ড হয়ে যায় তাদের পদযাত্রা।

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রায় লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান দিয়ে পুলিশ বাধা দেয়। তাতে শতাধিক শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা পদক্ষেপ নেন।

এর আগে গত অক্টোবর মাসে এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা দাবি আদায়ে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তখন তাদের পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলনে নেমেছেন তিন দফা দাবিতে। দাবিগুলো হলো—সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

সারাদেশ থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক ঢাকায় এসে আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। বিকেলে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

শিক্ষকেরা জানান, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ চত্বর অভিমুখে পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে কলম সমর্পণের কর্মসূচি ছিল তাদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দিলে তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে কাদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান ব্যবহার করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন। দুজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।’

পুলিশের হামলায় আহত হয়ে শতাধিক শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানান। আহতদের মধ্যে নারী শিক্ষকেরাও রয়েছেন।

শিক্ষকদের বাধা দেওয়ার ব্যাখ্যায় পুলিশ বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সংলগ্ন এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছিল।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোন ডিসি মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষকরা মাইকে শহীদ মিনারে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন, তবে কিছু শিক্ষক ‘ব্যারিকেডের প্রথম লেয়ার ভেঙে ফেলে এবং পরের লেয়ারে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে’ পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কর’।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ওনাদের নেতৃত্বে যারা ছিল তাদের সাথে কথা বলে আমরা বিষয়টা সমাধান করে ফেলেছিলাম। সেটেলড একটা ইস্যু কয়েকজন মিলে কেন এমন করলো সেটা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আবার কথা বলবো।’

এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাসে শিক্ষক, পুলিশ, রিকশাচালকসহ আহত অন্তত ১১০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলের পর থেকে আহতরা একে একে হাসপাতালে আসেন। তাদেরকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক। তিনি জানান, বিকেলের পর থেকে তাদেরকে হাসপাতালে আনা হয়। সবাইকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি আরও জানান, আহতদের অধিকাংশই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। বাকিরা এখনো চিকিৎসাধীন।

এদিকে বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রোববার থেকে তাদের এ কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন তারা। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে এ ঘোষণা দেন তারা।

দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নিত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকরা। পরে শনিবার থেকে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।


সামান্থাকে নিয়ে নতুন গুঞ্জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিনোদন ডেস্ক

পরিচালক রাজ নিদিমরু, অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। এ দিক-সে দিক প্রায়ই তাদের দেখা যায়। কিন্তু কোমর জড়িয়ে চিত্র সাংবাদিকদের সামনে বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়াতেই যে নতুন গুঞ্জন শুরু! খবর, সমান্থা নাকি ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে বার্তাও দিয়েছেন। খবর আনন্দবাজার।

কী সেই বার্তা? অভিনেত্রী নাকি জানিয়েছেন, তিনি কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম তার অভিনয় জীবন। বাকি সাহসী পদক্ষেপ কী? সামান্থা খোলসা করেননি। কিন্তু তার অনুরাগীরা যে দু’য়ে দু’য়ে চার করে ফেলেছেন। তাদের ভাবনায়, ‘ফ্যামিলি ম্যান’ পরিচালকের সঙ্গে তাদের প্রিয় অভিনেত্রী ‘ফ্যামিলি’ গড়ার সিদ্ধান্তও নাকি নিয়ে ফেলেছেন! তারই ইঙ্গিত তার বার্তায় এবং ঘনিষ্ঠ ‘পোজ’-এ।

এ দিকে রাজ-সামান্থার মুখোমুখি হওয়ার কারণও প্রকাশ্যে। খবর, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে, প্রিয়জন, পরিজন, বন্ধু— সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারাও এক হয়েছিলেন। এ রকম ঘরোয়া অনুষ্ঠানে চর্চিত যুগলের উপস্থিতি স্বাভাবিক ভাবেই নতুন গুঞ্জনের কারণ। পারিবারিক অনুষ্ঠানে জোটে যোগদান মানেই যেন পারিবারিক স্বীকৃতি— এমনও মনে করছেন অনেকে!

সমান্থা-রাজকে নিয়ে গুঞ্জন যদিও আজকের নয়। ২০২৩ থেকে তারা চর্চায়। দু’জনে ইতিমধ্যেই ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ এবং ‘সিটাডেল: হানি বানি’-তে একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেটে তাদের ঘন ঘন একসঙ্গে উপস্থিতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভক্তদের।


বর্ণাঢ্য আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ দিনাজপুরে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দিনাজপুর প্রতিনিধি

বর্ণাঢ্য আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সংবর্ধনা হয়েছে।

শনিবার দুপুর দু'টায় দিনাজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, পতাকা উত্তোলন এবং আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দিনাজপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকসেদ আলী মঙ্গলীয়ার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নঈম জাহাঙ্গীর।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহমেদ।

এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুদ আলী সরকার, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির গর্ব। তাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই— যাতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ চিরজীবী থাকে। বিগত সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেই বিভেদ ভুলে গিয়ে, এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

এর আগে, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দদের অংশগ্রহণে এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ করা হয়।


ফাঁদ পেতে সেই কুমিরটি ধরল এলাকাবাসী

অবমুক্ত করা হবে গাজীপুর সাফারি পার্কে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের ইছামতি নদী থেকে একটি কুমির উদ্ধার করেছেন এলাকাবাসী। ওই নদীতে প্রায় এক মাস ধরে আতঙ্কের নাম ছিল কুমিরটি। সেই কুমিরই অবশেষে ধরা পড়েছে স্থানীয়দের তৈরি ফাঁদে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ১০ ফুট লম্বা কুমিরটিকে আটক করতে সক্ষম হন। শনিবার বন বিভাগের পক্ষ থেকে ওই কুমিরটিকে উদ্ধার করে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

হরিরামপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, হরিরামপুর উপজেলার ধুলসুরা ও হারুকান্দি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের ইছামতি নদীতে কুমিরটি কয়েকবার দেখা গিয়েছিল। গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় যুবকরা মানিকগঞ্জ সেটি চৌকিঘাটা এলাকা থেকে আটক করে। শনিবার ঢাকার বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ওই ‍কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় এক মাস ধরে কুমিরটি নদীপাড়ের মানুষের মনে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে হরিরামপুর উপজেলার বোয়ালী, আইলকুন্ডি, খামারহাটি ও হারুকান্দি ইউনিয়নের তন্ত্রখোলা এলাকায় কুমিরটির দেখা মেলে। পরে সেটি পদ্মার স্রোতে ভেসে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চরবংখুড়ি ও চৌকিঘাটা এলাকায় চলে আসে। গত কয়েক সপ্তাহে তারা একাধিকবার কুমিরটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে দেখেছেন। এতে আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ নদীতে গোসল, মাছ ধরা ও নৌকা চালানো বন্ধ করে দেন। মানুষের কোনো ক্ষতি করতে না পারলেও ওই কুমিরটির পেটে গেছে স্থানীয়দের অনেক হাঁস।

সদর উপজেলার চরবংখুড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, ‘আমরা নদীতে নামতে ভয় পেতাম।

সকালে বা বিকেলে কেউ মাছ ধরতে যেত না। শুনেছি, বড় একটা কুমির ঘুরে বেড়ায় তাই সবাই আতঙ্কে ছিলাম। এখন কুমিরটি ধরা পড়েছে তার পরও ভয় লাগছে নদীতে নামতে।

হরিরামপুরে আইলকন্ডি গ্রামের বাসিন্দা রহিমা খাতুন জানান, ওই কুমিরটি তাদের ৬টি হাঁস খেয়ে ফেলেছে। এছাড়া তাদের এলাকায় অনেকের হাঁস খেয়েছে।

কুমিরটি ধরা পড়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তির নিশ্বাস ফেরে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। কেউ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন, কেউ আবার সেলফি তোলার চেষ্টা করেন।

কুমির ধরার কাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় যুবক রাহাত, অন্তর, রাকিব, আল আমিন, সুরুজ ও শাহিন জানান, তারা দীর্ঘদিন কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য রাখছিলেন। কুমিরটা কোথায় থাকে, ‘কখন ভেসে ওঠে এসব পর্যবেক্ষণ করা হয়। গত শুক্রবার সকালে আবার দেখতে পাই। তারপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌকিঘাটা এলাকায় পানির ওপর ভেসে উঠলে আমরা দড়ির ফাঁদ পেতে দুই দফা চেষ্টা করে সেটিকে ধরতে সক্ষম হই।’ এর পর কুমিরটি মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। সারারাত কুমিরটিকে ঘিরে লোকজনের উপস্থিতি ছিল। শনিবার দুপুরে বন বিভাগের লোকজন কুমিরটিকে নিয়ে গেছেন।

ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রানী ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মানিকগঞ্জে মিঠাপানিতে কুমির আটকের খবর পাওয়ার পর বন বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল থেকে শনিবার দুপুরে কুমিরটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কুমিরটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে গাজীপুর সাফারি পার্কে কুমিরকে অমুক্ত করা হবে।


banner close