বগুড়া এলাকাটির নাম মুখে এলেই আরেকটি শব্দ চলে আসে, তা হলো দই। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, স্বাদ আর জনপ্রিয়তার কারণে এখন বগুড়ার সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দই। বগুড়াকে দেশের আনাচে-কানাচে পরিচিত করে তুলেছে দই।
জানা গেছে, দেশ বিভাগের সময় ১৯৪৭ সালে গৌর গোপাল ভারত থেকে বগুড়া আসেন পরিবার নিয়ে। বগুড়া থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বর্তমানে শেরপুর উপজেলা সদরে তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে আশ্রয় নেন। দই বানানোর পদ্ধতি তার জানা ছিল। শেরপুর থেকে দই বানিয়ে হেঁটে ভাঁড়ে করে আনতেন বগুড়া শহরের বনানী এলাকায়। মূলত দই তৈরি প্রথমে শুরু হয় শেরপুর থেকেই। এখনও দই তৈরিকে কেন্দ্র করে শেরপুরে একটি মহল্লার নামকরণ হয়েছে ‘ঘোষপাড়া’।
একসময় ঘোষ পরিবারকে বলা হতো দই তৈরির কারিগর। তবে এখন আর ঘোষদের হাতে সেই দইয়ের বাজার নেই। এটি এখন চলে গেছে মুসলিম সম্প্রদায়সহ অন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের হাতে। এদের মধ্যে রফাত দই ঘর, মহররম আলী দই ঘর, বগুড়া দই ঘর, আকবরিয়ার দই, রুচিতা দইসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত দই তৈরি হচ্ছে।
প্রায় আড়াইশ বছরের পুরোনো ইতিহাস হলেও বগুড়ার দইয়ের প্রস্তুত প্রণালী ছিল অতি গোপনীয়। তবে সেটিকে আর তারা ধরে রাখতে পারেনি। এখন শেরপুরেই প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী দই তৈরি করে। এদের মধ্যে মাত্র ৯-১০ জন ঘোষ পরিবারের লোক।
জানা যায়, ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও গিয়েছে বগুড়ার দই। এ দই প্রথমবারের মতো বিদেশে যায় ১৯৩৮ সালে। ওই বছরের গোড়ার দিকে তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর স্যার জন এন্ডারসন বগুড়ায় এলে দইয়ের স্বাদে এতটাই অভিভূত হন যে, তিনি সুদূর ইংল্যান্ডে নিয়ে যান সেই দই।
বগুড়া ও শেরপুরের বেশ কয়েকজন দই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানকার আবহাওয়া, পানি ও মাটি- তা পুরোটাই দই তৈরির উপযোগী। দই তৈরিতে এ জেলায় প্রতিদিন প্রায় ১৫শ মণ দুধের প্রয়োজন হয়। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলা ও উপজেলা থেকে দুধ সংগ্রহ করে এর চাহিদা মেটাতে হয়। প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকার দই বিকিকিনি হয় এ জেলায়। কাপ দই বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা, সরার দই বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, পাতিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ডুঙ্গি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, খাদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, স্পেশাল সরার দই ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
দই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, বিবোফ্লাভিন, ভিটামিন ই ১৬, ভিটামিন ই ১২ সমৃদ্ধ। দই খেলে মানব দেহের পাকস্থলীর উপকারীর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। যার ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। তাই দই শিল্পের সম্ভাবনা খুবই আশাব্যঞ্জক।
তবে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা দইয়ের মান ঠিক রাখছেন না। উপরি টাকার লোভে তারা ভেজাল দিচ্ছেন। ফলে বগুড়ার দইয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তবে দেশীয় বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি করতে পারলে এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দই কারিগর সচীন বলেন, ৪০০ মণ দুধে দই হয় ৩০০ মণ। যা চুলার আগুনে কড়াইয়ের মধ্যে দুধ জাল দিয়ে কমাতে হয়। প্রতি সরায় দুধ লাগে ৭০০ গ্রাম, চিনি ১৮০ গ্রাম। শেরপুর উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই দই তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিষ্ঠানও রয়েছে শতাধিক।
দই কারিগর টিপু বলেন, ‘দই তৈরি করতে আমার ভালো লাগে। কারণ এটি আমাদের শেরপুরের ঐতিহ্য।’
দুধ বিক্রেতা সুকুমার বলেন, ‘শেরপুরের দইয়ের নাম-ডাক সারাদেশে। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে ভালো দুধ নিয়ে এখানে আসি। দইয়ের সুনাম যেন আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে জন্য সবকিছু ভালো দেওয়ার চেষ্টা করি।’
দই শো-রুমের ব্যবসায়ী বাসুদেব সরকার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এ পেশার সঙ্গে যুক্ত আছি। আমাদের পূর্ব পুরুষরাও এটা করেছেন। কিন্তু দই তৈরির পদ্ধতি অন্যদের হাতে চলে যাওয়ায় মান যেমন কমেছে, তেমনি লাভের মুখ দেখাও কমেছে।’
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চুরি করতে গিয়ে র্যাব সদস্যের স্ত্রী লিপি খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মধ্য রাতে উপজেলার শিমলা বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূ লিপি কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর এলাকার মহর উদ্দিনের স্ত্রী। তাঁর স্বামী ঢাকার মোহাম্মদপুর র্যাব-২ এ সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন। গৃহবধূ উপজেলার শিমলা বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে গৃহবধূ লিপি খাতুন তার মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। আজ মধ্য রাতের কোন এক সময় চোর ঘরের গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় চোরকে চিনে ফেলায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। আজ সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: বাচ্ছু মিয়া বলেন, শ্বাসরোধে ওই গৃহবধূকে হত্যা করে, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান চোর। গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সিলেটে মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মানুষের গভীর ঘুমের মধ্যে এই কম্পন অনুভূত হয়। ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি নিশ্চিত করেছে যে, দুটি ভূমিকম্পেরই উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের বিয়ানীবাজার।
সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয় রাত ২টা ২০ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫ এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ২০ কিলোমিটার। এর ঠিক পাঁচ মিনিট পর, অর্থাৎ রাত ২টা ২৫ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বারের মতো কেঁপে ওঠে সিলেট। এবারের কম্পনটির মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩ এবং এর গভীরতা ছিল ৩০ কিলোমিটার। পরপর দুটি কম্পনে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শুধু সিলেটেই নয়, একই রাতে আশপাশের অঞ্চলেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। ভারতের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, রাত ২টা ৫৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডে মিয়ানমারে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল উত্তর মান্দালয় থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া রাত ৩টা ৩৮ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যার গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার।
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে বিরামহীন অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনার প্রায় ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তিনটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে মূল গর্তের পাশে ৪০ ফুট গভীর একটি গর্ত খুঁড়ে সেখান থেকে টানেল তৈরি করে শিশুটির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। তবে গতকাল দুপুরের পর থেকে শিশুটির আর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। শিশু সাজিদ তার মায়ের হাত ধরে ধান কাটা ক্ষেতে হাঁটছিল। হঠাৎ করেই সে অরক্ষিত ওই গর্তের ভেতরে পড়ে যায়। সাজিদ ওই গ্রামের রাকিবের ছেলে। তার বাবা ঢাকায় একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করে, যা উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত এক্সকাভেটর চলাচলে কিছুটা বাধার সৃষ্টি করে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ বসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও তাহের নামের এক ব্যক্তি তার জমিতে পানির স্তর পরীক্ষার জন্য ৩০-৩৫ ফুট গভীর ওই গর্তটি খুঁড়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাটের দাবি করা হলেও বর্ষায় মাটি দেবে গিয়ে সেখানে পুনরায় গর্তের সৃষ্টি হয় এবং মুখটি অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। সেই গর্তেই তলিয়ে যায় শিশু সাজিদ।
উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, ফায়ার ব্রিগেডের টিম অনুসন্ধান করছে এবং ৪০ ফুটের মধ্যে শিশুটি আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, গতকালও শিশুটির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, আজও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের মধ্যে শিশুটিকে পাওয়া না যায় এবং সে আরও গভীরে তলিয়ে গিয়ে থাকে, তবে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বজনদের অনুমতি সাপেক্ষে লোহার যন্ত্র ব্যবহার করে বিকল্প পদ্ধতিতে উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সেই পদ্ধতিতে ভিকটিমকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের পূর্বাংশে ভারতের সীমানা ঘেঁষে পাহাড়ি অঞ্চল আনন্দপুর। প্রকৃতির লীলাভূমি এই টিলা-পাহাড়ি এলাকার গহিন বনে টিলার পাদদেশে ব্ল্যাক কফি ও কাজুবাদামের চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন দুই সহোদর কৃষক বাবুল মিয়া ও হোসেন মিয়া।
দীর্ঘদিন ধরে তারা পাহাড়ি এই অঞ্চলে ব্ল্যাক কফি ও কাজুবাদামসহ বিভিন্ন বিদেশি ফলের চাষ করে আসছেন। এর পাশাপাশি তাদের বাগানে রয়েছে কমলা, সফেদা, মাল্টা, আনারস, কাগজি লেবু, বরিশালের আমড়া, নেপালি সাগরকলাসহ বড়ই, লিচু, পেয়ারা ও নানা জাতের ফলজ গাছ। গত বছর প্রথমবারের মতো তাদের বাগানে কাজুবাদামের ফলন আসে। গ্রামের লোকজন কৌতূহলবশত ফল পেড়ে খেয়ে ফেলায় সংরক্ষণ করা যায়নি। এবার কাজুবাদামের ফলন তেমন নেই, তবে ব্ল্যাক কফির নতুন মৌসুমের ফলন নিয়ে নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা।
কৃষক বাবুল মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘স্বপ্নের ব্ল্যাক কফির নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। উঁচুনিচু টিলা পাহাড় ও সমতল মিলিয়ে প্রায় ২ একর জমিতে কাজুবাদাম ও ব্ল্যাক কফির নতুন ফলন পেয়েছি। আমরা খুবই খুশি। মনে করি, সবাই যদি বাড়ির সাইট বা পতিত জমিতে আমাদের মতো বিদেশি ফলের চাষ করে, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।’
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন আক্তার বলেন, ‘দুই সহোদর কৃষকের উদ্যোগটি খুবই সুন্দর ও ব্যতিক্রমী। সুযোগ এলে আমরা সরকারিভাবে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।’
কৃষিবিদদের মতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে কফি চাষ হচ্ছে এবং চাষির সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ক্লান্তি দূর করে শরীর চাঙা করার জন্য কফি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একটি পানীয়। শহুরে জীবনে পানীয় হিসেবে কফির ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
কফি গাছ ঝোপের মতো, মাঝারি উচ্চতার চিরসবুজ উদ্ভিদ। এটি (Rubiaceae) পরিবারভুক্ত। বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে কফি উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে বান্দরবান, কক্সবাজার, নীলফামারীসহ নানা স্থানে কফি চাষ হচ্ছে, যার মানও প্রশংসনীয়।
কফি উদ্ভিদের জন্য বছরে ১,৫০০-২,২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। এ্যারাবিকা জাতের কফি চাষের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ১৫-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রোবাস্টা জাতের জন্য ২৪-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ্যারাবিকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,০০০-২,২০০ মিটার এবং রোবাস্টা ১০০-৭০০ মিটার উচ্চতায় ভালো জন্মে। উচ্চতা যত বেশি হয়, পাকা কফি বিন তত বেশি সুগন্ধি হয়। মাটি ও পরিবেশের গুণাগুণও কফির স্বাদ ও ঘ্রাণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
কফি গাছ সামান্য ঢালু জমি ও আংশিক ছায়া পছন্দ করে। এ কারণে ছায়াদায়ী গাছের নিচে কফি চাষ করা উত্তম। ভারতে কফি বাগানে নির্দিষ্ট দূরত্বে কলা গাছ রোপণ করা হয়, যাতে সরাসরি সূর্যের তীব্রতা থেকে কফি গাছ কিছুটা সুরক্ষা পায়।
প্রাকৃতিকভাবে কফি গাছ ৪০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, তবে ফল সংগ্রহ সহজ করতে চাষকৃত গাছকে সাধারণত ৬-৯ ফুট উচ্চতায় ছাঁটাই করে রাখা হয়।
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাগুরায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে কালেক্টরেট চত্বর থেকে র্যালি শুরু হয়ে শহরের ভায়না মোড়, চৌরঙ্গী প্রদক্ষিণ শেষে কেশব মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বিশ্ব মানবাধিকার ফাউন্ডেশন মাগুরা শাখার কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সালমা খাতুন। বক্তব্য রাখেন, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্বাস আলী, মোহাম্মদ মিশুক পারভেজ, আসিফ, সাগর ও আখি খাতুন। বক্তারা বিশ্ব মানবাধিকারের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়জ ফাউন্ডেশন (আসফ), মাগুরা জেলা কমিটি ‘হে বিশ্ববাসী, সুন্দর পৃথিবীতে আমরা সকলেই সকলের প্রতি আন্তরিক হই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কর্মসূচি পালন করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনকে সম্মান ও দেশপ্রেমের প্রতি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
অবশেষে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ফরিদপুর শহরের অ্যাডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থেমেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টায় দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল বাইতুল আমান কলেজ গেটে ট্রেন থামলে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে সাধারণ মানুষসহ ওই এলাকায় অধ্যায়নরত ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীরা। এ সময় ট্রেন থামানোর আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আদনান হোসেন অনু, কনজ্যুমার ভয়েস অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক রুমন চৌধুরী, প্রিন্সিপাল লোকমান হোসেন, ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমানসহ এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে শুকরিয়া আদায় করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কমলাপুর রেলস্টেশন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুজিবুর রহমান। ফরিদপুর জেলার মধ্যে অ্যাডুকেশন জোন নামে খ্যাত বাইতুল আমান এলাকাটি। যেখানে রয়েছে ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি, জীবনের ঝুঁকি ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতের জন্য ট্রেন থামানোর এই দাবিতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম এবং মানববন্ধন করেছেন।
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এনটিভি অনলাইন প্রতিনিধি সাংবাদিক মনোয়ার হোসেনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ইউনিয়নের মহিলা সদস্য নুরবানুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার নুরবানু আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য।
এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন সংবাদকর্মীর ওপর প্রকাশ্যে হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত এবং আইনের প্রতি চরম অবজ্ঞা।
জানা যায়, সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত ‘মহিলা মেম্বারের প্রেমে মজেছেন পুরুষ মেম্বার’ শিরোনামের একটি সংবাদকে কেন্দ্র করে। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে ইউনিয়নের ২ জনপ্রতিনিধি ওই সাংবাদিকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আয়মারসুলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস চত্বরে পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন পেশাগত কাজে গেলে তার ওপর হামলা চালান ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য নুরবানু ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন। এ সময় তারা গালিগালাজ করতে করতে তাকে মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলের দিকে ভূমি অফিসে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দুই মেম্বার মনোয়ারকে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তেড়ে আসেন। এরপর গালিগালাজ করতে করতে হামলা চালান সাংবাদিক মনোয়ারের ওপর।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক মোরসালিন বলেন, ভূমি অফিসে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দুই মেম্বার মনোয়ারকে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তেড়ে আসেন। এরপর গালিগালাজ করতে করতে হামলা চালান।
হামলার শিকার সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন বলেন, সংবাদ প্রকাশ করায় আমার ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে, তা গণমাধ্যমের প্রতি সরাসরি হুমকি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি থানার ওসি আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ফরিদপুরের কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম পিপিএম -এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় সাংবাদিকরা ফরিদপুর শহরের যানজট, রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল চালনা, অপসংবাদিকতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অবৈধভাবে ফুটপাত দখল, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি দমনে ফরিদপুরের নবাগত পুলিশ সুপারের নিকট তুলে ধরেন।
এ সময় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সিনিয়র সাংবাদিক পান্না বালা, এস এম তমিজউদ্দিন তাজ, জাহিদ রিপন, শফিকুল ইসলাম মনি, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সহসভাপতি সঞ্জীব দাস, আশরাফুজ্জাম দুলাল, শেখ মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ মফিজুর রহমান শিপন, দপ্তর সম্পাদক মাসুদুর রহমান তরুণ, সিনিয়র সাংবাদিক নাজিম বাকাউল, এস এম মনিরুজ্জামান, আলিমুজ্জামান রনি, বিকে শিকদার সজল, শ্রাবণ হাসান, ইব্রাহিম হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, কিশোর অপরাধ ও সাইবার অপরাধ, যানজট নিরসনে কাজ করা, শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতিকরণ, অটোচালকের শৃঙ্খলার মধ্যে আনা, থানায় ও অনলাইনের মাধ্যমে জিডি গ্রহণ, এবং থানায় যাতে সাধারণ মানুষ কোন হয়রানির শিকার না হন পাশাপাশি অপ সাংবাদিকতার কারণে কোন সাংবাদিক যেন হয়রানীর শিকার না হন সে ব্যাপারে তার করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিনের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় তার নিজ গ্রাম রুহুল আমিন নগরে অবস্থিত জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের সিএ আব্দুল মতিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দেওটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবলু, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভ সূত্রধর, বীরশ্রেষ্ঠের ছেলে শওকত হোসেন, নাতনী বৃষ্টি, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন একাডেমির সহকারী প্রধান শিক্ষক নূর আলম, এস আই নূরনবীসহ শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের এই দিনে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ রুহুল আমিনকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। ১৯৩৪ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন রুহুল আমিন। ১৯৫৩ সালে নৌবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি চলে যান ত্রিপুরা, যোগ দেন ২ নম্বর সেক্টরে। ভারত সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দুটি টাগবোট উপহার দেয়। এগুলোকে গানবোটে রূপান্তর করা হয়।এর নামকরণ করা হয় ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’। রুহুল আমিন নিয়োগ পান পলাশের ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশার হিসেবে। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর মোংলা থেকে পদ্মা ও পলাশ খুলনার দিকে আসছিল। রূপসা নদীতে পদ্মা ও পলাশের ওপর ভুল সিগন্যালের কারণে মিত্র বাহিনীর বিমান থেকে গোলা ছোড়া হয়। এতে পলাশ ধ্বংস হয় এবং রুহুল আমিন আহত হন। আহতাবস্থায় তিনি রাজাকারের হাতে ধরা পড়েন। আহত এ বীর সন্তানকে তারা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও মহান আত্মত্যাগের জন্য তাকে স্বীকৃতি স্বরূপ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, হজ ব্যবস্থাপনা সহজ করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে অতিতের মতো কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে পারবে না ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সকলে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে হাজীদের জিম্মি করার যে প্রবনতা ছিল তা এখন শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তত্ত্বাবধায়নে হাজীদের বাড়ি ভাড়াসহ সকল কাজ সম্পন্ন করায় গত বছর সাড় আট কোটিরও অধিক টাকা হাজীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নাটোর জেলা মডেল মসজিদ উদ্বোধন শেষ উপদেষ্টা এই কথা বলেন তিনি এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, এজমা, হৃদরোগ ও ক্যান্সারেরর রোগীদের হজে যেতে নিষেদ করেছে সৌদি সরকার। তাই ধর্ম মন্ত্রাণালয় এইসব রোগীদের হজে যেতে দেবে না। কোনো চিকিৎসক এইসব রোগীদের সুস্থ বলে সার্টিফিকেট প্রদান করে তাহলে সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বয়স্কদের হজে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে উডদেষ্টা বলেন, হজে অনেক পরিশ্রম হয়। তা বয়স্ক মানুষদের কঠিন হয়। তাই তিনি বয়স্কদের হজে না যেতে আহ্বান করেন।
এছাড়া হজের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে উপদেষ্টা বলেন হজের জন্য সর্বোচ্চ কম খরচ করার চেষ্টা চলছে বলে জানান। পরে তিনি জেলার আরও দুটি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন।
এ সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাবসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুরে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ওই আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, মাদারীপুর জেলা শাখা।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার জেলা শাখার সভাপতি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মাদারীপুর সদর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান।
আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি এনায়েত হোসেন নান্নু, সহসভাপতি প্রফেসর (অব.) মো. মকবুল হোসেন, বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব রেজাউল হক রেজা, আসক ফাউন্ডেশন জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মিজান ফরাজী, কোষাধ্যক্ষ নূরুল হক সরদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাবেক কেন্দ্রীয় নীরিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ এনায়েত হোসেন, অ্যাডভোকেট (এজিপি) মো. সাইফুর রহমান, সংগঠক ও মানবাধিকার প্রতিনিধি এসকান্দার মাতুব্বর, সিনিয়র সাংবাদিক সুবল বিশ্বাস, আসক ফাউন্ডেশন মাদারীপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারহানা ইসলাম কান্তা, সমাজকল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদরুন নাহার কলি, ত্রাণ, কোষাধ্যক্ষ নূরুল হক সরদার, সদর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি জাকির মাতুব্বর অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর সব ক্ষেত্রে মানবাধিকার শতভাগ বাস্তবায়নসহ, দুর্নীতিবন্ধে সামাজিক-সাংগঠনিকভাবে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলেচনা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এরপর একটি র্যালি ডিসি অফিস প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন পেয়েছেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ। প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তালিকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ও নতুন মুখের প্রাধান্য দেখা গেছে। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন পেয়েছেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এনসিপির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য খোকন বর্তমানে মুখের চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় রয়েছেন। সুস্থ হয়ে দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন। ওই দিনের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গুলিতে খোকনের ঠোঁট, মাড়ি, নাক-মুখের অংশের মাংস প্রায় খুলে পড়ছে। তার মুখ ও পুরো শরীর রক্তাক্ত। এই অবস্থায় তিনি একজনের হাত ধরে উঠে দাঁড়ান। খোকন নিজেই আঙুলের ছাপ দিয়ে মোবাইলের লক খোলেন। সেই মোবাইল থেকে একজন খোকনের বড় ভাই খোকা চন্দ্র বর্মণকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর জানান।
আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় পৌর শহরের নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের তার সমর্থক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আমার প্রতি জনপদের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আছে, সে জন্য আমি মানুষের পাশের থাকার প্রতিজ্ঞা নিয়েছি উল্লেখ করে মতবিনিময় সভায় দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন বলেন, আমার জীবনের বাকি দিনগুলো আমি জনগণের সাথে থাকতে চাই, জনগণের জন্য কাজ করতে চাই। সে জন্য আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় (সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর) কাঙ্ক্ষিত যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়য়নের দিক দিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে সুনামগঞ্জ। আমরা এর পরিবর্তন চাই, বৈষম্যের নিরসন চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে আমি সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে চাই। সুনামগঞ্জের মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে সে জন্য সন্ত্রাস- চাঁদাবাজমুক্ত ও সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ চাই, আর এ জন্যই আমি নির্বাচন করতে চাই।
দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চারবারের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে তিনি বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নাম ঘোষণা করেন। ওইদিন রাতেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন।