সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

আশ্রয় নিল আরও ১৩ জন

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের হেফাজতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপির সদস্যরা। ফাইল ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১৩:৫০

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা সংঘাতের জেরে প্রতিবেশী দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) আরও ১৩ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বৃহস্পতিবার টেকনাফের নাফ নদীতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে জানান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

তিনি জানান, পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উক্ত বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে বিজিপির মোট ২৭৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে বুধবার একজন ও আগের দিন আসা ৪৬ জন রয়েছে।

অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে বিজিপির এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসেন আরও ৪৬ জন বিজিপি সদস্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি তাদের সবাইকে হেফাজতে নিয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাযোগ চলছে৷ মঙ্গলবার রাতেও সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘাতে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।

বিষয়:

পঞ্চগড় সড়ক জনপথ বিভাগের উদ্যোগে চলছে রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পঞ্চগড় পৌরসভার ট্রাক টার্মিনালের দুই পাশে জমে থাকা বালি ও ধুলা সরাতে অভিযান চালিয়েছে সড়ক জনপথ (RHD) বিভাগ। রোববার সকাল থেকে সড়ক জনপথের পরিছন্নতাকর্মীরা ট্রাক টার্মিনালের সামনের রাস্তার দুই পাশের বালু অপসারণে কাজ করেন।

সড়কে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাক–ট্রাক্টর পার্কিং, পাথর-বালুবাহী গাড়ির চলাচল এবং ভারী মাল পরিবহনের কারণে রাস্তায় বালির স্তর পড়ে থাকে।

এতে মোটরসাইকেলসহ দুই চাকার যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এছাড়া ধুলো-বালির কারণে পথচারী ও যাত্রীদের অসুবিধার পাশাপাশি দৃষ্টিসীমা কমে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া কর্মীরা জানান, নিয়মিতই এখানে বালি জমে থাকে। টার্মিনালের সামনে দিনরাত মালবাহী ট্রাকের ভিড় থাকায় সড়কের ওপর প্রচুর ধুলো ও পাথরের গুড়া ছড়িয়ে পড়ে। এসব অপসারণে সড়ক জনপথ বিভাগ সময়েমতো উদ্যোগ না নিলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়বে।

স্থানীয়রা বলেন, ট্রাক টার্মিনালে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সড়কের ওপরই ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। এতে জ্যাম–দুর্ঘটনার পাশাপাশি রাস্তায় বালির স্তর দ্রুত জমে যায়। পরিষ্কার না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। সড়ক জনপথ বিভাগের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।

সড়ক জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা তন্ময় চক্রবর্তী উপসহকারী প্রকৌশলী সওজ সড়ক উপবিভাগ পঞ্চগড় তিনি জানান, রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত বালি ও ধুলাবালি জমে থাকা একটি বড় সমস্যা- এটি সমাধানে তারা আরও নিয়মিত নজরদারি বাড়াবেন। মো. মোতাহার আলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জানান, গত শুক্রবার হতে রাস্তার পাশে জমে থাকা বালি অপসারণ কার্যক্রম চলমান আছে


কুমিল্লায় মাহাসড়কের অর্ধশত গাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে লাগানো অর্ধশত বকুলগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় আজমির হোসেন (৩৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ থানায় মামলা করেছে।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, গত শনিবার রাতে বেলতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর রোববার কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আজমিরের বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলী গ্রামে। তবে তিনি বেলতলী এলাকায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের ফটকের পাশে থাকেন। সেখানে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন।

গাছকাটার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত শনিবার রাতেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ এ ঘটনায় মামলা নিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

কেটে ফেলা বকুলগাছগুলো মহাসড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছিল সওজের উদ্যোগে। প্রতিটি গাছের বয়স ছিল ৯ বছরের বেশি।

কুমিল্লা সওজের সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যসহকারী রুহুল আমিন বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলাটি করেন। তিনি বলেন, বেলতলীতে হাসপাতালের সামনেই একসঙ্গে ১৭টি বকুলগাছ কাটা হয়েছে। অন্য গাছগুলোও আশপাশে কাটা হয়েছে।

মহাসড়কটি ২০১৬ সালে চার লেনে রূপান্তর করার পর সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি এক লেনের গাড়ির হেডলাইটের আলো যাতে অন্য লেনের গাড়ির ওপর না পড়ে, সে জন্য বিভাজকের ওপর রোপণ করা হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত প্রায় ১৯২ কিলোমিটার এলাকায় মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। কুমিল্লার বেলতলী এলাকাটি বকুলগাছে সাজানো ছিল।


ভৈরবে অগ্নিকাণ্ডে ৬ জুতার কারখানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ১ ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ডে ৬ পাদুকা কারখানার ২০ লাখ টাকার পাদুকা ও সরঞ্জাম পুড়ে ছাঁই হয়েছে। রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ভৈরব শহরের কমলপুর মধ্যপাড়া এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ভৈরব শহরের কমলপুর মধ্যপাড়ার শেরআলীর বাড়ি এলাকায় একটি টিনসেট হাফ বিল্ডিংয়ে পাদুকা তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় সিরাজুল ইসলামের মালিকানাধীন হাতে তৈরি ৪টি পাদুকা কারখানা, বিপ্লব মিয়ার পাদুকা কারখানা, মমুনুজ মিয়ার পাদুকা কারখানায় তৈরিকৃত জুতাসহ, সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ৬টি কারখানায় আনুমানিক প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান, পাদুকা কারখানার মালিকরা।

ভুক্তভোগী পাদুকা কারখানা মালিক শরীফ মিয়া বলেন, দুপুরের দিকে কারখানায় ভেতরে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ একটা শব্দ হয়ে কারখানায় মুহূর্তের মধ্য আগুন পুগো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আমরা দ্রুত কারখানা থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে বের হয়ে আসি। বাড়িটির ভেতরে আমাদের ৪টি কারখানাসহ অন্য ২টি মিলে মোট ৬টি পাদুকা ছিল। অগ্নিকাণ্ডে ৬টি কারখানায় তৈরি করা পাদুকা, সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতিসহ প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার ৪টি কারখানার সব মালামাল পুড়ে ছাই। আগুন আমার সব শেষ করে দিয়েছে।

এ বিষয়ে ভৈরব বাজার নদী ফায়ার স্টেশনের ফায়ার অফিসার মো.আল আমিন জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার স্টেশনের ৩টি ইউনিট ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর পাদুকা কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ৬টি কারখানায় কী পরিমাণ মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্তসাপেক্ষে জানাযাবে বলে তিনি জানান।


ধানি জমিতে শিম চাষে কৃষকের নতুন স্বপ্ন

কুমিল্লায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লা সদরের কালিরবাজার ইউনিয়নের রায়চোসহ আশপাশের এলাকায় ধানি জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে এবার শিম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদদের পরামর্শে স্বল্প খরচে ধানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি লাভ পাওয়া যাচ্ছে বলে কৃষকের মধ্যে নতুন আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

রোববার দিগলগাঁও, হাতিগড়া, রায়চো ও কালিরবাজার কলেজ রোড এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- ধানি জমিতে কাঠি–কেওড়া পদ্ধতিতে রূপবাণ জাতের শিম চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফলন আসতে শুরু করেছে।

স্থানীয় কৃষক মাসুম বিল্লাহ ও কামাল হোসেন জানান, ধান চাষে ব্যয় বেশি হলেও লাভ কম। ৩০ শতকের জমিতে ধান চাষে খরচ হয় ২৭–২৮ হাজার টাকা, উৎপাদনের মূল্য দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৩০–৩৩ হাজার টাকা। এ কারণে তারা এবার ধানের বদলে শিম চাষে ঝুঁকেছেন।

তাদের দাবি, পরিবেশ অনুকূল থাকলে খরচ বাদে তিনগুণ লাভ সম্ভব। ইতোমধ্যে আগাম শিম তোলা শুরু হয়েছে। জমিতেই প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, আর শহরে বিক্রি হচ্ছে ১৫০–২০০ টাকা কেজি দরে।

মহানগরীর কোটবাড়ি পাহাড়ি এলাকায় চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে থোকা থোকা রূপবান শিমের ফুল। কোথাও ঝুলছে বেগুনি রঙের শিম, কোথাও আবার বাজারজাতের প্রস্তুতি চলছে। পাইকারি বাজারে কেজি ১২০–১৮০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১৫০–২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকের কেউ কেউ জানান, টানা বৃষ্টিতে কিছু ফুল ঝরে না গেলে, লাভ আরও বেশি হতো।

জেলায় বাড়ছে শীতকালীন সবজি রুপবান শিমের চাষ কুমিল্লার সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়ন, বুড়িচংয়ের মোকাম, ময়নামতি, ভারেল্লা দক্ষিণ; বরুড়ার আগানগর; চান্দিনার বরকইট এবং দেবিদ্বারের কয়েকটি চর ও অনাবাদি জমিতে এবার রূপবান শিমের চাষ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র অনুযায়ী জেলায় দুই বছর আগে মাত্র ৬ হেক্টর জমিতে রূপবান শিম চাষ হতো। ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে গত বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯ হেক্টরে এ বছরও একই পরিমাণ জমিতে চাষ করে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, কোটবাড়ি পাহাড়ি এলাকায় শিম চাষে অনেক কৃষকই সফলতা পেয়েছেন। ভবিষ্যতে এর চাষ আরও বাড়বে।

কৃষিবিদ হোসেন বলেন, ধান চাষের তুলনায় সবজি উৎপাদনে সরকারের মনোযোগ বেশি এবং সুবিধাও বেশি। রূপবান জাতের শিম শীতকালীন অন্যান্য জাতের চেয়ে তিনগুণ বেশি লাভজনক। কৃষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ৭০–৮০ হাজার টাকা খরচ করলে অনুকূল পরিবেশে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় সম্ভব।


পাবনার উৎপাদিত শুঁটকি রপ্তানি  হচ্ছে বিশ্বের ২৫টি দেশে

*উৎপাদন মৌসুম শুরু, লক্ষমাত্রা দেড়শ মেট্রিক টন *সরকারের প্রণোদনা না পাওয়ায় হতাশায় উদ্যোক্তারা
পাবনার চলনবিল ও গাজনার বিলে শুঁটকির উৎপাদন শুরু করেছে খামারিরা। ছবি সংহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে চলনবিল ও গাজনার বিলের পানি শোকানোর পূর্বেই শুঁটকির উৎপাদন শুরু করেছে সুজানগরের মসজিদপাড়া বালুর চর শুঁটকি পল্লীর খামারিরা।

প্রতিদিন এখানে কয়েক টন মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় শুঁটকি। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেড়া-সাঁথিয়া-সুজানগর ও চাটমোহর উপজেলার চলনবিল এলাকার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। কেউ মাছ পরিষ্কার করেন, কেউ শুকানোর জায়গা সাজান, আবার কেউ প্যাকেট জাত করেন। এই শুঁটকি শুধু স্থানীয়দের জীবিকার ভরসা নয়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সম্ভাবনাময় খাত। সুস্বাদু হওয়ায় পাবনার শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, বাহরাইন, কুয়েত, ভারত, কাতার, মালয়েশিয়া, ওমান, দুবাই, ইরাক, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্তত ২০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে এখানকার শুঁটকি। বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল থেকে খলশে, পুঁটি, টেংরা, কই, মাগুর, শিং, নলা, টাঁকি, শোল , চাঁন্দা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ কিনে এনে ওই সকল চাতালে শুকানো হয়। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, শুঁটকি খামারিদের প্রণোদনার মাধ্যমে রপ্তানিমুখী এই শিল্প খাতকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অনেকেই। অন্যদিকে জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী এ বছর জেলায় শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ১৫০ টন। তবে চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জালের মাধ্যমে খাল-বিল থেকে দেশীয় মাছ শিকারের কারণে মাছের অভাবে শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

চাটমোহর উপজেলার চলনবিল এলাকার বোয়াইলমারী ব্রিজ-সংলগ্ন চাতাল, সুজানগরের মসজিদপাড়া বালুরচর শুঁটকি খামার, গাজনাবিল পাড়ে চরদুলাই, সাঁথিয়ার সাতানীর চর, আরাজী গোপিনাথপুর, হুইখালী, কলাগাছী ও রঘুনাথপুর, বেড়া উপজেলার কৈটলার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী চাতাল নির্মাণ করে শুঁটকি উৎপাদন করে থাকে। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, চলনবিল ও গাজনাবিল পাড়ে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক অস্থায়ী শুঁটকির চাতাল।

জানা যায়, সুস্বাদু হওয়ায় পাবনার শুঁটকির বেশ চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাবনার শুঁটকি দেশের সবচেয়ে বড় শুঁটকি বাজার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ও ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, দেশের বৃহত্তম দুটি বিল এই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এখানে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়। তারা সারা বছর এলাকার খাল-বিল ও পুকুর থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। যে কারণে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে শুঁটকি তৈরির চাতাল।

জানা যায়, বিলের পানি কমতে থাকলে চলনবিল ও গাজনাবিলের বিভিন্ন স্থানে জেলেদের জালে ধরা পড়ে পুঁটি, খলসে, চেলা, ট্যাংরা, কৈ, মাগুর, শিং, বাতাসি, চিংড়ি, নলা, টাঁকি, গুচিবাইম, বোয়াল, ফলি, কাতলা, নওলা, শোল, গজারসহ নানা জাতের মাছ। এসব মাছ কিনে চাতালে শুকিয়ে উৎপাদন করা হয় শুঁটকি। পরে এ শুঁটকি পাঠানো হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ও দেশের অভ্যান্তরে বিভিন্ন স্থানে। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা সরাসরি চাতাল থেকে পছন্দের শুঁটকি কিনে নেন। এসব শুঁটকি মানভেদে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেডে বাছাই করা হয়। ‘এ’ গ্রেডের (ভালোমানের) শুঁটকি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহরাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হয়।

এসব দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের কাছে চলনবিল ও গাজনার বিলের শুঁটকির কদর রয়েছে। এছাড়া ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেডের শুঁটকি দেশের ভেতরে দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এসব শুঁটকির চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে জেলার প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক। একেকটি চাতালে গড়ে ১০ জন নারী-পুরুষ কাজ করেন। পুরুষ শ্রমিকরা শুঁটকির চাতালে ও নারী শ্রমিকরা মাছ বাছাইয়ের করেন দিন হাজিরায়।

সুজানগর মসজিদপাড়ার শুঁটকি ব্যবসায়ী আজাদ কমিশনার বলেন, গাজনার বিলের প্রচুর প্রকৃতিক মাছ পাওয়া যায়, স্বল্প মুল্যে সেই মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শুঁটকি তৈরি করে সৈয়দপুর, ভাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন এ শুঁটকি উদ্যোক্তারা।

সুজানগর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো সাইফুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্ব), জানান সুজানগরের পাশ দিয়েই বৃহত্তর পদ্মা নদী বয়ে চলছে, সুজানগরেই গাজনার বিল নামক একটি অনেক বড় বিল রয়েছে, ছোট-বড় ১৬টি বিলের সমন্বয়ে এই গাজনার বিলে প্রচুর প্রকৃতিক মাছ পাওয়া যায়, এখন থেকে উৎপাদিত মাছ পাবনার চাহিদা মিটিয়েও দেশের বাইরে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল বলেন, ইতোমধ্যেই ৩০ জন শুঁটকি ব্যবসায়ীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, এ বছর জেলায় শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৫০ টন।


সার কালোবাজারে বিক্রি ও পাচারের প্রতিবাদে কৃষকদের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দিনাজপুর প্রতিনিধি

কৃষকের সার কালোবাজারে বিক্রি ও পাচারের প্রতিবাদে এবং জড়িত ডিলারের বিএডিসি লাইসেন্স বাতিল ও বিচারের দাবিতে হাতে কোদাল ও বাউকা হাতে নিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কৃষকরা। রোববার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের কৃষকরা এই কর্মসূচী পালন করেন। পরে তারা দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি উপদেষ্টার নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের অর্ন্তগত মাস্তান বাজার এলাকার বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই কৃষকদের সার না দিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে আসছেন। তিনি এই এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত সার বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন এবং বিক্রি করেন। তার কাছে যাওয়া হলে সার দিতে গরিমসি করেন এবং সার নাই বলে জানিয়ে দেন। ডিলারের এমন কার্যকলাপের কারণে প্রকৃত কৃষকরা সার পাচ্ছেন না এবং তাদের সমস্যা হচ্ছে ও উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

গত ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে আবেদুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের জন্য বরাদ্দকৃত সার ট্রাক্টরযোগে বীরগঞ্জে পাঠানো হচ্ছিল। এ সময় মহারাজা মোড়ে সারভর্তি ট্রাক্টর আটক করে। পরে পুলিশ সার, ট্রাক্টর ও চালকসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে চালক সারগুলো আবেদুল ইসলামের বলে স্বীকার করে। ওই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জড়িত বিএডিসি সার ডিলার কিংবা তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

কৃষকদের সাথে প্রতারণা, বরাদ্দকৃত সার কালোবাজারী ও পাচার করার জন্য বিএডিসির সার ডিলার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের নামে লাইসেন্স বাতিল এবং জড়িত সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে বিচার করার দাবি জানান তারা।

কর্মসূচীতে কৃষক সামিদুল ইসলাম, হুসেন আলী, ফজলু রহমান, আবুল হামিদ, শহিদুল ইসলাম, সাঈদ ইসলাম, ওমর ফারুক তালুকদার, আজগার আলী, গোলাব রব্বানীসহ শতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে বারবার মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী আবেদুল ইসলামকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।


ফরিদপুরে পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষকদের কর্মবিরতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের যোগ্য সব প্রভাষকের সহকারী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবিতে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ চত্বরে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কলেজ শিক্ষকরা। রোববার সকাল থেকে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ চত্বরে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিট, ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ, ফরিদপুর সরকারি ইয়াসিন কলেজ ইউনিটের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ ফরিদপুর জেলা ইউনিটের আহ্বায়ক হাসিব মৃধার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. ওসমান মোল্লার সঞ্চালনায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের সদস্য সচিব মো. এরশাদ শেখ, ফরিদপুর জেলা ইউনিটের প্রচার সম্পাদক বাবুল তালুকদার, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ইউনিটের সদস্য শফিকুল ইসলাম সহ ফরিদপুর জেলার সকল সরকারি কলেজের প্রভাষকরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় শিক্ষকরা বলেন, সারাদেশে ৩২ থেকে ৩৭তম ব্যাচের প্রায় আড়াই হাজার প্রভাষক দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রাপ্য পদোন্নতি না পাওয়ায় তাদের মধ্যে গভীর হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও ফাইলে বিলম্বের কারণে তাদের পদোন্নতির গেজেট ঝুলে আছে। ন্যায্য পদোন্নতির আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান তারা।

তারা বলেন, আমরা দেখে আসছি বিভিন্ন ক্যাডারে পদোন্নতির যোগ্য না হলেও তাদের যোগ্য বানিয়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অনেক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ডেকে এনে তাদের পদোন্নতি করানো হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ক্যাডারের আমাদের যৌক্তিক পদোন্নতি সেটা আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা শ্রেণি শিক্ষক, আমরা পাঠদানে ফিরে দিতে চাই। আমরা কর্ম বিরতিতে থাকতে চাই না। তাই আমাদের দাবি একটাই আমরা যেদিন থেকে পদোন্নতি যোগ্য হয়েছি আমাদের ভূতাপেক্ষী পদোন্নতি দিতে হবে।


রোহিঙ্গাদের টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাশনের বিকল্প নেই

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কনফারেন্সে বক্তারা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস এম জাফর, কক্সবাজার

কক্সবাজারে অবস্থান করছে ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরনার্থী। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভারে ভারাক্রান্ত বাংলাদেশে। রোহিঙ্গাদের টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাশনের বিকল্প নেই। রোহিঙ্গা সংকট এখন বৈশ্বিক সমস্যা।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে শরনার্থী কমিশন ও ব্র্যাকের সহায়তায় রোববার কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিজিএ) আয়োজিত কনফারেন্সে এসব অভিমত প্রকাশ করেন বক্তারা।

কনফারেন্সে বক্তারা বলেন রোহিঙ্গা সংকট কেবল মানবিক নয়- এটি ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক জবাবদিহিতার প্রশ্ন। মিয়ানমারের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত ও রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোর আহ্বান জানানো হয় এতে।

সিজিএ বাংলাদেশ চাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ফরিদা পারভীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রোহিঙ্গা সেলের প্রধান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

তিন পর্বে আয়োজিত দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের প্রতিনিধি জুলহাস আলম, প্রফেসর ড. রহমান নাসির উদ্দীন, ড. জাকিয়া সুলতানা, ড. আমেনা মহসিন, আসিফ মুনির সিজিএ বাংলাদেশ চাপ্টারের সেক্রেটারি ওসমান গনি মনসুর, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা জামায়াত ইসলামের আমীর নুর আহমেদ আনোয়ারী, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সুজা উদ্দীন সুজা প্রমুখ।

রোহিঙ্গা সংকটে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ও সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তোলাসহ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন, সংকট মোকাবেলার বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং টেকসই ভবিষ্যতের কৌশল প্রনয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এই সম্মেলনে।

সম্মেলনে অংশনেন সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক নেতারা, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, রোহিঙ্গা কমিউনিটি লিডার, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুর সাথে জড়িত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা।


লোহাগাড়ায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে সাকিবুল হাসান (২৪) নামক এক বাইকারের মৃত্য হয়েছে। এ ঘটনায় বাইকে থাকা সোহাগ নামে আরও এক আরোহী গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার দুপুরের দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের জাঙ্গালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত বাইকার সাকিবুল হাসান নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার পারসাথলী শেখপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমানের পুত্র।

সফরসঙ্গী মেঘলা জানান, তারা জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফারজানা বিথীসহ ১৫ জন নারী-পুরুষ মিলে ৩ দিন আগে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার গিয়েছিলেন, আজ (রোববার) সকালে কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া নামক স্থানে মহাসড়কের উপর বসানো গতিরোধকে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাইকে থাকা দুজন সড়কের পাশে থাকে সেতুর নিচে পড়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা তাদের উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারের জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক ডা. ইজাজ আহমেদ শামীম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন বাইকারকে এখানে আনা হয়েছে তাদের মধ্যে সাকিবুল হাসান নামে একজনকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত সোহাগ নামের একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার এস আই আব্দুস সাত্তার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাইকারের লাশ লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারে রাখা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।


শীতের আগমনে শ্যামনগরে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

শীতের আগমন শুরু হলেই শ্যামনগর শুরু হয় খেজুর গাছ পরিচর্যা। শীত মৌসুমে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে তা থেকে তৈরি হয় গুড়। ইতোমধ্যেই রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ কাটায় (পরিচর্যা) ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্যামনগরের গাছিরা। গাছ কাটার ১০-১২ দিন পর থেকেই শুরু হবে রস সংগ্রহ।

শ্যামনগর বেশির ভাগ গ্রামের পথ দিয়ে হেঁটে গেলে চোখে পড়ে খেজুর গাছ। জমির প্রতিটি আইলে খেজুর গাছ লাগিয়েছেন গ্রামের কৃষকরা। বিশেষ করে উপজেলা সদরের নকিপুর, ভুরুলিয়া, কাশিমাড়ী, আটুলিয়া, নুরনগর, বংশিপুর গ্রামে খেজুরের গাছ বেশি চোখে পড়ে। শীত মৌসুমে এসব গ্রামে খেজুরের রস বিক্রি ও গুড় তৈরির কাজ চলে পুরো দমে।

এখন চলছে তারই প্রস্তুতি। নওয়াবেকী গ্রামের শাহিন আলমের খেজুর গাছ আছে ১২০টি। একই গ্রামের রমজান আলীর রয়েছে ৮০টি। রস সংগ্রহের জন্য তারা এখন খেজুর গাছের আগা ঝোড়া, চাঁচ দেওয়া ও নলি মারায় ব্যস্ত।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীত মৌসুমের পুরো চার মাস তারা বাড়িতে খেজুরের গুড় ও পাটালি তৈরি করে। ওই সময় তাদের প্রতিদিন আয় হয় ১ থেকে ২ হাজার টাকা। তাদের মতে, কোন কৃষকের যদি ২০০ খেজুর গাছ থাকে তাহলে পুরো বছরের সংসার ভালোভাবে চলে যাবে। শ্যামনগর সদরের নকিপুর ও নওয়াবেকী গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের প্রায় সব জমিতেই আছে একটি-দুটি এমনকি ১০-১২টি পর্যন্ত খেজুর গাছ। কোন কোন জমির চারপাশ খেজুর গাছ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।

জমিতে চাষাবাদ আর খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ- এভাবেই চলছে অনেক কৃষকের সংসার। খেজুর গাছ অনেকের সচ্ছলতাও এনে দিয়েছে। কৃষকরা জানান, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগা কাটা হয়। আগা কাটা শ্রমিকও পাওয়া যায় গ্রামে। নির্ধারিত মজুরি নিয়ে তারা গাছ কাটেন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। শীত মৌসুমে গ্রামের কৃষকদের খেজুর গাছ কেটে সচ্ছলভাবে তাদের সংসার চলে।

আটুলিয়া গ্রামের রমজান আলী জানান, ‘শীত মৌসুমে ঢাকাসহ সারাদেশের ব্যাপারীরা শ্যামনগর কালিগঞ্জ বালিয়াডাঙ্গা গুড়ের হাটে আসেন। তারা এসব হাট থেকে খেজুরের গুড় ও পাটালি কিনে সারাদেশে সরবরাহ করেন। অনেকেই বালিয়াডাঙ্গা বাজারের খেজুরের গুড় ও পাটালি দেশের বাইরেও পাঠান।’

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এস এম এনামুল হক জানান, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ২ লাখ খেজুর গাছ আছে। এ জেলার খেজুরের গুড়ের সুনাম দেশজোড়া। শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় ও পাটালি বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন জেলার চাষিরা।


খোলা ম্যানহোলে পড়া নারীকে ৩ দিন পর জীবিত উদ্ধার

*ময়মনসিংহ নগরীতে ম্যানহোলে পরে যাওয়ার শঙ্কায় মানুষ *ঢাকনা চুরি হলে সহসাই স্থাপন করে না সিটি করপোরেশন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কামরান পারভেজ, ময়মনসিংহ ব্যুরো

রাত তখন পৌনে বারোটা। ময়মনসিংহ নগরীর কাশর এলাকায় রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক চালক। চারপাশে তখন নীরবতা। ওই সময় শুনতে পান অস্ফুষ্ট স্বরে আর্তনাদ। প্রথমে কিছুটা ভয় পান। ঠিক তখনি আরও একজন চালক খালি রিকশা নিয়ে এ পথ দিয়ে যেতে থাকেন। আর্তনাদ শুনে তিনিও থামেন। পরে দুইজন আর্তনাদের উৎস খুঁজে বের করেন। দেখা যায় একটি ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের ভেরত থেকে আসছে এ আওয়াজ। দুইজন মিলে একটি শক্ত বাঁশ সংগ্রহ করে ম্যানহোলের ঢাকা খুলে বুঝতে পারেন এটা একটা নারীর আর্তনাদ। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও লোক চলে আসে। পরে ঢাকনা সরিয়ে ওই নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

গত শনিবার রাত পৌনে বারোটায় ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় নগরীর কাশর, গলগণ্ডা ও জেলাখানা রোড এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধার হওয়া নারী (৩৮) মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি ময়মনসিংহ নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। গত বুধবার সকাল তিনি বাড়ি থেকে বের হন। পরে রাতে আর ফিরেননি। ফলে নারীর বাবা বিভিন্ন এলাকায় ও আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নেন। কোথায় খোঁজ না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ কতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

রোববার সকালে কাশর এলাকায় গিয়ে কথা হয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও উদ্ধারকারী দুইজন রিকশা চালকের একজন মো. রোমান মিয়ার সঙ্গে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঢাকনা দেওয়া যে ম্যানহোলের নিচ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে তা থেকে আনুমাকি ৫০ ফুট দূরের অপর একটি ম্যানহোলের ঢাকা ছিল না অনেক দিন ধরেই। ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী ঢাকনা না থাকা ম্যানহোনে পরে যান দুই দিন কি তিন আগে। পরে ড্রেনের নিচ দিয়ে কোন ভাবে ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের নিচে চলে যান।

উদ্ধার হওয়া নারী হয়তো পড়ে যাওয়ার পর থেকেই বাঁচার জন্য আকুতি জানাতে থাকেন। কিন্তু এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের খুব কাছে হওয়ায় সারাক্ষণই গাড়ির শব্দ থাকে।

এছাড়া ম্যানহোলের কাছে দোকান-পাট ও একটি ওয়ার্কশপ থাকায় শব্দের কারণে নারীর বাঁচার আকুতি শোনা যায়নি। রাত পৌনে বারোটার সময় এলাকা নীবর হওয়ায় তখন তার বাঁচার জন্য আকুতি কানে আসে।

কাশর এলাকাটি ময়মনসিংহ নগরের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন সময়ই ম্যানহোলের ঢাকা চুরি হয়ে যায়। মাদকাসক্তরা এ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকে। একবার ঢাকনা চুরি হলে সিটি করপোরেশন কতৃপক্ষ দীর্ঘ দিন আর নতুন ঢাকনা স্থাপন করে না। যে কারনে প্রায় সময়ই এলাকার বাসিন্দারা ম্যানহোলে পরে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, রাতে ওই নারীকে উদ্ধারের পর প্রথমে পরিচয় জানা যায়নি। নারী কোন কথা বলতে পারেননি। তার সারা শরীর ফ্যাকাশে ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ ও তার স্ত্রী নারীকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। মোহাম্মদ মাসুদ পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি দৈনিক বাংলাকে জানান, বাসায় নেওয়ার পর আমার স্ত্রী তাকে প্রথমে গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে গরম পোশাক পরান। তারপর তাকে কিছু খেতে বলা হলেও তিনি খাননি। তিনি মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন হওয়ায় নিজের পরিচয়ও বলতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর অপর একজন তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই নারীকে ময়মনসিংহ নগরীর জেলখানা রোডে তার বাবার কাছে নিয়ে যাওয়ায় হয়।

দুপুরে জেলাখানা রোডে ওই বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া নারী লেপ গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। নারীর বাবা জানান, তার মেয়ে উচ্চশিক্ষিত। তবে ২০১৩ সালে একটা দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এরপর থেকে প্রায় সারা দিনের জন্য বাইরে চলে যান। তবে রাতে ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসেন। গত বুধবার রাতে না ফেরায় বৃহস্পতিবার থানায় জিডি করেন। তিনি অসুস্থ থাকায় কবে কিভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে এখনো কিছু জানা যায়নি।

এ নিয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর পরিবেশ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক নাজিয়া উদ্দিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ওই এলাকার ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকার বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। এ দুর্ঘটনার খবরটি কেউ জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে জানব।


বেনাপোলে পতাকা বৈঠকের পর ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে আটক ১৫ বাংলাদেশি নাগরিককে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে।

গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল এবং বেনাপোল চেকপোস্ট আইসিপি ক্যাম্পের মধ্যে এ পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মিজানুর রহমান এবং বিএসএফর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এসি প্রবীণচান্দ।

হস্তান্তরকৃতরা হলো- আব্দুল হান্নান (৬০), হোসেন আলী (২৫), আকলিমা খাতুন (৫২), শাহানারা খাতুন (১৫), হাফিজুর রহমান (৩১), রেশমা খাতুন (২৮), আজমিরা (৫),বাবলুর রহমান (৪২), তাহামিনা বেগম (৩৭), জান্নাতুল বুশরা (৪),তাইজুল ইসলাম (৪৩), মোসা. নাসিমা খাতুন (৪১), শেফালী খাতুন (৩৬), মো. আমিনুর রহমান (৫৬) এবং মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৯)। এরা খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা গত তিন থেকে চার বছর ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। বিভিন্ন সময়ে সাতক্ষীরা ও সুন্দরবন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে তারা সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি আব্দুল আল মামুন জানান, বিএসএফ কর্তৃক হস্তান্তরকৃত ১৫ বাংলাদেশি নারী-পুরুষকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। এদের সমস্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


দাউদকান্দির বলদাখাল দখল-দূষণে মৃতপ্রায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বলদাখাল এখন দখল ও দূষণের চরম সংকটে। একসময় স্বচ্ছ পানির স্রোতে ভরা এ খালটি আজ মৃতপ্রায়। নাব্যতা হারিয়ে দুর্গন্ধ, মশা, আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সরকারি খাল ও খাসজমি দখল করে বছরের পর বছর প্রভাবশালী দখলদাররা নির্মাণ করেছে দোকানপাট ও স্থায়ী অবকাঠামো। অভিযোগ রয়েছে যারা দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন, তারা স্থানীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী।

প্রায় দুই বছর আগে দাউদকান্দির সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ উদ্যোগে সাহাপাড়া এলাকা থেকে বলদাখালের প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ দখলমুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। কিন্তু তার বদলির পর অভিযান থেমে যায়। আবারও শুরু হয় আগের মতো দখল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে খালের অধিকাংশ অংশই অবৈধ দখলে। ফলে জনজীবন কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে। দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসন কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে খালটি উদ্ধার হবে কি না এ নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হয়েছে গভীর সংশয়।

অবৈধ দখল ও বর্জ্য ফেলার কারণে খালটির স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। শুষ্ক ও শীত মৌসুমে খাল প্রায় পানি শূন্য থাকে। জমে থাকা কচুরিপানা, আবর্জনা ও পলিথিনে হাটু সমান দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।

স্থানীয় প্রবীণ নাজমুল হোসেন বলেন, একসময় এই খালে ছোট-বড় নৌকা চলাচল করত। ট্রলার মালবাহী নৌযান চলাচল করত। জেলেরা এই পথ দিয়ে বিভিন্ন নদীতে যেতেন। খালটি ছিল দাউদকান্দির অর্থনীতির অন্যতম প্রাণ ছিল।

গোমতী নদীর শাখা এ খালটি অতীতে এক নদী থেকে আরেক নদীতে যাতায়াতের সহজ পথ হিসেবে পরিচিত ছিল।

দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক রেদওয়া ইসলাম বলেন, বলদাখালকে দূষণমুক্ত রাখতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হচ্ছে। কেউ খালের জায়গা অবৈধভাবে দখল করলে উচ্ছেদসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দাউদকান্দির মানুষের দাবি শুধু সাময়িক অভিযান নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী বলদাখালকে দখলমুক্ত ও পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। নয়তো দখল দূষণের চাপে খালটি পুরোপুরি হারিয়ে যাবে- এমন আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।


banner close