ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দামে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষকই লোকসানের ভয়ে খেতের শসা খেতেই রেখে দিচ্ছেন।
শনিবার দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, খেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকরা। কেউ পাইকারি দামে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে খেতেই ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা খেত থেকে শসা তুলছেনই না।
উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, ‘এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে ৮০-৯০ টাকা মণ বিক্রি করলেও এখন খেতেই যাই না। বর্তমানে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। খেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে, পচতেছে।’
মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ‘৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। পরে ২ টাকা দরে এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ বিক্রি করেছি। বাজারদরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা খরচ তোলাই দায় হয়ে পড়েছে।’
ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে শসা ১০০ টাকা মণ কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২০০ টাকা মণ। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়তদারকে দিতে হয় ২০ টাকা, লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা, বস্তা ক্রয় করতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না, লোকসান গুণতে হচ্ছে।’
ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, ‘এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২-৩ লাখ করে লস হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরে কৃষকরা অধিক পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছে এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।
গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি পোষাক কারখানার অর্ধশতাধিক নারী শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় অসুস্থ শ্রমিকদের পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে কারখানা কতৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা এগারোটার দিকে তিলারগাতি এলাকার মাসকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কনসেপ্ট নিটিং লিমিটেড নামক কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানায়, প্রতিদিনের মত সকালে কর্মস্থলে যোগ দিয়ে কাজ করছিলেন তারা। বেলা এগারোটার দিকে টিফিন খাওয়ার পর হঠাৎ করে কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কারখানার বিভিন্ন ফ্লোরে শ্রমিকদের ভিতরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। এতে আতঙ্কিত হয়ে অর্ধ শতাধিক নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরেন। পরে তাদের উদ্ধার করে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারখানা কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পরপরই অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত আতঙ্কিত হয়ে বেশিরভাগ নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী, হাসপাতালে আসা বেশীর ভাগ শ্রমিক প্যানিক এ্যাটাক জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পরেছেন। তাদের মধ্যে কিছু শ্রমিক শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক দুর্বলতা ভুগছেন। অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পরিদর্শক আজাদ রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির টপ সয়েল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। পাশ্ববর্তী জমির কৃষক বাঁধা দিলেও জোরপূর্বকভাবে কাটা হচ্ছে মাটি। উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামে ৩ ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। যা ট্রাকের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। গত কয়েকদিন ধরেই এ কর্মযজ্ঞ বিরাজমান রয়েছে। মাঝবাড়ী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান পিন্টু, জিয়াউর রহমান মোল্লা এবং আবু বক্কর সিদ্দিক মাটিগুলো বিক্রি করেছেন। একই গ্রামের আব্দুল মোল্লা এবং আবু বক্কর সিদ্দিক বক্কা মাটিগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী কৃষি জমির টপ সয়েল কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে ২ বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও তা মানছেন না ধৃত ভূমি দশ্যুরা।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির টপ সয়েল কাটা হয়েছে। এতে জমিগুলো ৩ থেকে ৪ ফিট করে নিচু হয়েছে। ট্রাক পরিবহনের ফলে বেশকিছু কৃষিজমির উপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষকের জমি। এছাড়া মাটি পরিবহনের ফলে উপজেলার ফুলবাড়ি গোহাটি থেকে রামচন্দ্রপুর গামী গ্রামীণ সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কটির বিভিন্ন এলাকায় ছোটবড় বিশালাকার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যা খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই সংস্কার করা হয়েছিল।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা কৃষিজমির মাটি কাটাতে বাধা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু ইটভাটার লোকজন জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বর্ষাকালে তাদের জমি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাছাড়া কৃষিজমির উপরের টপ সয়েল বিক্রির ফলে জমির উর্বরতা শক্তিও কমে যাচ্ছে। তাছাড়া এতে একদিকে যেমন কৃষিজমি কমছে এবং অপরদিকে মাটির উর্বরতা শক্তিও কমে যাচ্ছে এবং খাদ্য ঘাটতি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষক শহিদুল ইসলাম মজনু বলেন, তার জমির চারপাশে গত কয়েকদিন ধরেই মাটি বিক্রির হিড়িক উঠেছে। মাটিগুলো কেটে ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে তার জমির পাশের জমি ৪ ফুট নিচু হয়েছে। মনে হচ্ছে বর্ষাকালে তার জমি ভেঙে যাবে। কৃষকরা দলবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু তারা জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে তাদের গ্রামের পাকা রাস্তাও একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। প্রশাসনের কাছে তারা এর প্রতিকার চাই।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমাইয়া ফেরদৌস বলেন, এটি আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষিজমির টপ সয়েল কাটার কোনও সুযোগ নেই। খুব শীঘ্র সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কৃষিজমির টপ সয়েল কাটা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফরিদপুর জেলাজুড়ে পরিচালিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ চিরুনি অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’-এ গত ৪৮ ঘণ্টায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫৮ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শামছুল আজম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়মিত মামলা, ওয়ারেন্ট ও মাদকসহ বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই অভিযানের অংশ হিসেবে গত রোববার দিবাগত রাতে বোয়ালমারী উপজেলার চতুল গ্রাম থেকে জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মৃধা ওরফে লিটন মৃধাকে তাঁর নিজ বাসভবন থেকে আটক করা হয়। মনিরুজ্জামান মৃধা ২০১৯ ও ২০২৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে এবং ২০২১ সালের পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বোয়ালমারী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
তবে লিটন মৃধার স্ত্রী নাসরিন নবী গিনি এই গ্রেফতারের বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর নামে যে আগে কোনো মামলা ছিল, তা তিনি জানতেন না। রোববার রাতে হঠাৎ পুলিশ এসে তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামছুল আজম জানিয়েছেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুরো জেলায় এই বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মূলত সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা দমনে সরকার ঘোষিত দেশব্যাপী অভিযানের অংশ হিসেবেই ফরিদপুরে এই ধরপাকড় চালানো হচ্ছে।
গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় একটি তুলা ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আমবাগ পূর্বপাড়া নাদের আলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন শরীফ উদ্দিনের মালিকানাধীন ফ্যাক্টরিটিতে এই আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয়দের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সৃষ্টি হয়ে তা মুহূর্তের মধ্যে পুরো ফ্যাক্টরিতে ছড়িয়ে পড়ে। ফ্যাক্টরির ভেতরে দাহ্য পদার্থ হিসেবে তুলা থাকায় আগুন দ্রুত ভয়াবহ রূপ নেয় এবং কোনো মালামাল বের করা সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুটি এবং কাশিমপুর সারাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের নিরলস চেষ্টায় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে ততক্ষণে ফ্যাক্টরির ভেতরে থাকা বিপুল পরিমাণ তুলা ও অন্যান্য সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ মামুন জানান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। অগ্নিকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, আমবাগ পূর্বপাড়া এলাকায় এর আগেও কয়েকবার বড় ধরনের আগুনের ঘটনা ঘটায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বারবার অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকাবাসী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক নেতা মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় এক চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে। প্রথমে তিনি ঢাকার ওসমান হাদির মতো রাস্তায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করলেও পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন চিত্র। প্রকৃতপক্ষে রাস্তায় নয়, বরং সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং মাদক সেবনের সময় নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তনিমা ওরফে তন্বী নামে এনসিপির সহযোগী সংগঠন যুবশক্তির এক নেত্রীকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোতালেব ও তন্বী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আল আকসা মসজিদ সরণির ‘মুক্তা হাউস’ নামের একটি ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। সোমবার সকালে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর মোতালেব দাবি করেছিলেন, তাঁকে রাস্তায় সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। কিন্তু পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখতে পায়, মোতালেব রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ফ্ল্যাট থেকেই বের হয়ে আসছেন। পরবর্তীতে পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বিদেশি মদ, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম এবং একটি গুলির খোসা উদ্ধার করে। বাড়ির মালিকের ভাষ্য অনুযায়ী, তন্বী নিজেকে এনজিওকর্মী পরিচয় দিয়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিলেও সেখানে নিয়মিত অপরিচিত পুরুষদের যাতায়াত ও অসামাজিক কার্যকলাপ চলত, যার জন্য তাঁকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল।
মোতালেব শিকদারের অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পেশায় ট্রাকচালক মোতালেব আগে যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি খুলনার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর জাকির হোসেন বিপ্লব এবং শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেলের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তিনি ভোল পাল্টে এনসিপিতে যোগ দেন এবং জাতীয় শ্রমিক শক্তির খুলনা বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব বাগিয়ে নেন। তবে এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে শীতবস্ত্র বিতরণের নামে কার্ড ছাপিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এটি মূলত তাঁদের নিজেদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং মাদক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফল। গুলিটি মোতালেবের কানের চামড়া ভেদ করে বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে এনসিপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি মোতালেবের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় এবং এর সঙ্গে দলের কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই। পুলিশ বর্তমানে পলাতক তন্বীকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় একটি বহুতল ভবনে ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোরে আরমানিটোলার হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ছয়তলায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন দমকলকর্মীরা।
ভবনটি অত্যন্ত উঁচু এবং ঘিঞ্জি এলাকায় হওয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের ২টি, সিদ্দিকবাজারের ৫টি এবং সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশনের ২টিসহ মোট ৯টি ইউনিট একযোগে কাজ শুরু করে। দমকলকর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের ধোঁয়ায় ভবনের ওপরের তলাগুলোতে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকেই দ্রুত নিচে নেমে আসেন।
তাৎক্ষণিকভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ কিংবা ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবরও নিশ্চিত করেনি ফায়ার সার্ভিস। পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আগুনের উৎস ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ করছে। ভবনটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হতো কি না এবং সেখানে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন কর্মকর্তারা।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রতিহত করার ব্যর্থতার পুরো দায়দায়িত্ব সরকারের বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘যা ঘটে গেল, এটার অনেক অজুহাত হয়তো দেওয়া যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এর পুরো দায়দায়িত্ব সরকারেরই।’
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে পুড়ে যাওয়া প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘যা হয়ে গেছে, তা তো আর শোধরানো যাবে না। কিন্তু আমরা চাচ্ছি যে যারা এগুলো ঘটিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিচারের অধীনে আনা, এই চেষ্টা চলছে। এবং এর ফলাফলটা আপনারা দেখবেন।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন কালো রাত সংবাদপত্রে আসেনি উল্লেখ করে এই উপদেষ্টা বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়েছে এবং এতে কিছু সংবাদকর্মীর মৃত্যুর আশঙ্কাও ছিল। এটা দেশের সংবাদপত্র মাধ্যমের জন্য একটা কালো রাত ছিল।’
উচ্ছৃঙ্খলতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি করা গণতন্ত্রের ভাষা নয়, উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দেশ একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যেতে চায়। সেখানে সবাইকে শৃঙ্খলায় ফিরে আসতে হবে। যার যে মতবাদই থাকুক না কেন, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য চর্চা এবং সংবাদপত্রের মুক্ত বাকস্বাধীনতা রক্ষা করাই গণতন্ত্রের আদর্শ। এই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে যেই গণতন্ত্রের উত্তরণ চাচ্ছে দেশের মানুষ, সেটি সম্ভব হবে না।’
দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা এবং ছায়ানটে ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশি ও আন্তর্জাতিক ছয়টি মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা সংগঠন। সংগঠনগুলো বলেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর এসব হামলা আইনের শাসন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য অশনিসংকেত।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো এসব কথা বলে। তারা গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এসব হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সংগঠনগুলো হলো—হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), এক্সেস নাও, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (আইটিজেপি), জার্নালিস্ট ফর ডেমোক্রেসি ইন শ্রীলঙ্কা (জেডিএস) ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৮ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পুরোনো ও স্বনামধন্য দুটি গণমাধ্যম—প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা এবং ছায়ানটে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং স্বাধীন গণমাধ্যম, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ওপর পরিকল্পিত আঘাত। একই রাতে ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনগুলো।
বিবৃতিতে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সংগঠনগুলো বলছে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংবেদনশীল সময়ে এমন আক্রমণ গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের পথ সংকুচিত করবে।
হামলার সময় প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সাংবাদিক ও কর্মীদের প্রাণ সংকটে থাকার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আগুনের মধ্যে সংবাদকর্মীরা আটকা পড়েছিলেন। তাদের জীবন চরম ঝুঁকিতে ছিল। রাষ্ট্রনাগরিকদের জীবন রক্ষার মৌলিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।
সাময়িকভাবে পত্রিকা দুটির প্রকাশনা বন্ধ থাকাকে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তৎকালীন সরকার যেমন জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়ন চালিয়েছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক বিপরীতভাবে সহিংসতা ও হুমকি মোকাবিলায় সিদ্ধান্তহীন বা অক্ষম বলে মনে হচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সরকারের এই নিষ্ক্রিয়তা দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে উসকে দিচ্ছে। রাষ্ট্র বা কোনো গোষ্ঠী—কারও মাধ্যমেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে রাষ্ট্রকে তা প্রতিকার করতে হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
হামলাগুলোর পেছনে অনলাইনভিত্তিক অপপ্রচার ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের (হেট স্পিচ) ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বড় সংখ্যক অনুসারী (ফলোয়ার) থাকা কিছু ব্যক্তি সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছেন। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মানবাধিকার নীতিমালা অনুযায়ী এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার সাইবার আইন সংস্কারের কথা বললেও অনলাইনে সহিংসতা রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
৬ দফা দাবি: বিবৃতিতে সংগঠনগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ছয়টি সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো: সারাদেশে সাংবাদিক, সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর হুমকি থাকলে অবিলম্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার, ছায়ানট এবং অন্যান্য সাংবাদিক ও শিল্পীদের ওপর হামলার দ্রুত, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত করে দোষী ও পরিকল্পনাকারীদের বিচারের আওতায় আনা। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অনলাইনে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও উসকানি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং নির্বাচনের সময় ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে সরকারকে প্রকাশ্যে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানানো। ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে সাংবাদিকতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য অনলাইন ও অফলাইনে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের সুরক্ষা নিশ্চিতে জাতীয় আইন ও নীতিমালার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সামঞ্জস্য বিধান করা।
সংগঠনগুলো বিবৃতিতে বলেছে, তারা বাংলাদেশের সাংবাদিক, শিল্পী ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পাশে আছে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তার বৈধতা অনেক ক্ষেত্রেই হ্রাস করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়া এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানাতে এসে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রথম আলোর কার্যালয় ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়েও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করা হয়। ওই রাতে সংহতি জানাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে গেলে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছেন অনেকেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই হামলার ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল।
তারই ধারাবাহিকতায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)। এই প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, আইনজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি জানাতে আসেন। প্রতিবাদ সভা শেষে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তারা।
সভায় বক্তব্যে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই সরকারের মনে রাখা উচিত তারা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়, বৈধ সরকার হয়তো। একটি অনির্বাচিত সরকারের শাসন করার যোগ্যতা-ক্ষমতা থাকে ততক্ষণ, যতক্ষণ তার নৈতিক বৈধতা থাকে। এই ঘটনার ভেতর দিয়ে বর্তমান সরকারের বৈধতা অনেক ক্ষেত্রেই হ্রাস করে ফেলেছে। এটা যদি তারা পুনঃস্থাপন করতে না পারে তাহলে আগামী দিনে এই যে উত্তরণের প্রক্রিয়া, অভ্যুত্থানের আদর্শ তারা রক্ষা করতে পারবে কি না, সে ক্ষেত্রে সন্দেহ আছে।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ রকম একটি সভার প্রয়োজন পড়বে, এটা আমরা কেউ কল্পনাও করিনি। আমি গত দেড় মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে গিয়েছি। সেখানে তারা (জনগণ) একটি কথাই বড়ভাবে বলেছে, নিরাপত্তার অভাব, এই নিরাপত্তার অভাবকেও তারা বহুভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এটি নারীদের ক্ষেত্রে সত্য, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, দলিত, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ক্ষেত্রে সত্য। একই রকমভাবে রাজনীতিবিদদের জন্যও সত্য, যারা নির্বাচন করতে চান। এটি শরিফ ওসমান হাদি শহীদ (ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র) হওয়ার আগের ঘটনা।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সেখানে দ্বিতীয় কথায় যেটা এসেছে, সেটা হলো তারা (জনগণ) পরিষ্কারভাবে বর্তমান সরকারের ওপর আস্থার অভাবের কথা বলেছেন। বর্তমান সরকার, তার প্রশাসন, তার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা দিতে পারবে, এটাতে তাদের আস্থার অভাব। এগুলো যখন বলেছেন, তখনো কিন্তু এই ঘটনাগুলো ঘটেনি। সুতরাং এই ধরনের ঘটনা যে ঘটতে পারে, তার জন্য গণমানুষের পক্ষ থেকে কিন্তু ইঙ্গিত, সংকেত বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে।’
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, কর সমন্বয়ের পর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নিট মুনাফা হয়েছে ৩০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যা সংস্থাটির ৫৪ বছরের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিএসসির মোট আয় ছিল ৫৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং ব্যয় ছিল ৩১১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ২৪৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বিএসসির নিট আয় বেড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে আয়োজিত বিএসসি-এর ৪৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ তথ্য প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক। বিএসসি সচিব আবু সাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী। এছাড়াও বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও শেয়ারহোল্ডাররা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিএসসির পরিচালন আয় ছিল ৫৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় হয়েছে ২০৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে, পরিচালন ব্যয় ছিল ২৮৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় হয়েছে ১২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়ায় ৪১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আশেপাশে মাফিয়াচক্র আছে। ৪০ বছর বন্দর একই প্রতিষ্ঠানের হাতে ছিল। নতুন কাউকে আসতে দেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে একটি গোষ্ঠী বন্দরকেন্দ্রিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছিল, যার ফলে সংশ্লিষ্টখাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ও লাভ সম্ভব হয়নি।
এই মাফিয়াচক্রের কারণেই বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন অতীতে লাভবান হতে পারেনি বলে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, এবার ৫৪ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয় করেছে শিপিং করপোরেশন। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে সরকার প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামসহ পুরো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের ৬ মাসের মাথায় ধসে পড়েছে দুপাশের সংযোগ সড়ক। এতে করে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এমন চিত্র দেখা যায় উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী ঘোড়ামারা বাজার-সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত ব্রিজটিতে।
এলাকাবাসীর দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজের দুপাশের সংযোগ সড়কটি সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করা হোক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের ঘোড়ামারা বাজার-সংলগ্ন ঝিনাই শাখা নদীর ওপর ৬ মাস আগে নির্মাণ করা হয় ১৪০ মিটার গার্ডার ব্রিজ ও দুপাশে ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক।
যার কাজ পান জামালপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। ব্রিজটি নির্মাণ করতে খরচ হয় ১১ কোটি ৩৫ লাখ ২২ হাজার ১৩৬ টাকা। এই ব্রিজ দিয়ে উপজেলার আদ্রা, চর রৌহা ও পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু নির্মাণের ৬ মাসের মাথায় ব্রিজটির দুপাশের সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে। এতে করে ব্রিজের দুপাশে তৈরি হয় বিশাল গর্ত। সংযোগ সড়কের এ অবস্থার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় যানবাহন ও স্থানীয়দের। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে নানা যানবাহনের দুর্ঘটনা। তবে ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটি হয়েছে বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় আলতাফ হোসেন, নাসিম আহাম্মেদ, বৃদ্ধা সমিরন বেওয়া ও শিক্ষার্থী সাকিবসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, নিম্নমানের কাজ করার কারণে যখন ব্রিজটি কাজ করা হয় তখনই এলাকাবাসী বাধা দিয়ে ছিল। তবুও আ. লীগের ঠিকাদার ফারুক চৌধুরীর লোক ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে কাজটি করে যায়। এখন আমরা কাজের বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। ৬ মাস পার না হতেই এখনই সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। ঠিকদার খুবই নিম্নমানের কাজ করছেন। এলাকাবাসী খুব ভয়ের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে। গর্তের ভেতরে অনেক মানুষ পড়ে গিয়ে আহতও হয়েছে। শুকনো মৌসুমে এমন অবস্থা হলে বন্যার সময় আসলে এই ব্রিজের অবস্থা খুব ভয়াবহ হবে। দ্রুত ব্রিজের সংযোগ সড়ক মেরামত করে মানুষের চলাচলের সু-ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
সরিষাবাড়ী উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া তমাল বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। আমি এসে ব্রিজটির কাজ সম্পূর্ণ পেয়েছি। ব্রিজটি ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত কাজ করে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। সংযোগ সড়কের ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদেরকে একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা পলাতক থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। আশা করি অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সমাজের নানা অনিয়ম বন্ধের অঙ্গীকার নিয়ে সুনামগঞ্জে দিনব্যাপী হাইকিং ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা স্কাউটস। সচেতন নাগরিকদের প্ল্যাটফর্ম সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগ ও জেলা স্কাউটসের যৌথ আয়োজনে শহরজুড়ে এই ব্যতিক্রমী প্রচারণা চালানো হয়। এতে জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
সকাল থেকেই স্কাউট সদস্যরা নির্দিষ্ট পোশাকে সুশৃঙ্খলভাবে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করেন। কর্মসূচিকে কার্যকর করতে অংশগ্রহণকারীদের পাঁচটি পৃথক দলে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি দল শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এবং জনবহুল এলাকাগুলোতে প্রচার অভিযান চালায়। নারী নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন ও ইভ টিজিং প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ বন্ধ এবং শিশুশ্রম নিরসনে জনমত গঠন, শিশু অধিকার সুরক্ষা ও
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং খাদ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয় শহরের বিভিন্ন মোড়ে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্কাউট সদস্যদের এই প্রচারণা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক কৌতূহল ও প্রশংসার সৃষ্টি করে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা স্কাউটসের
নেতারা ও জনউদ্যোগের সদস্যরা। বক্তারা বলেন, স্কাউটিং শুধু শখের বিষয় নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের একটি হাতিয়ার। তরুণেরা যদি সচেতন হয়, তবে সমাজ থেকে নারী নির্যাতন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত, ইভ টিজিং প্রতিরোধ ও যৌন নিপীড়নের মতো ব্যাধি দূর করা সম্ভব।
সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন ও নিরাপদ সুনামগঞ্জ। স্কাউট সদস্যরা তাদের হাইকিংয়ের মাধ্যমে আজ যে বার্তা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন, তা ভবিষ্যতে সুন্দর সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।’
জেলা স্কাউটসের কমিশনার কানন বন্ধু রায় বলেন, ‘জনউদ্যোগ ও জেলা স্কাউটসের যৌথ আয়োজনে হাইকিং কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কম্পাস ধরে স্কাউটস সদস্যরা শহরে সচেতনতামূলক প্রচারণা করেছেন। ভবিষ্যতে এ রকম কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কর্মসূচিকে প্রাণবন্ত করে তোলেন সুনামগঞ্জ
জনউদ্যোগের সদস্য বুরহান উদ্দিন, জেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুস সাত্তার আজাদ, কোর্স লিডার মৃদুল চন্দ্র তালুকদার, প্রশিক্ষক বিপ্লব কেতন চ্যাটার্জি, মো. এমরান আলী, দীলিপ চন্দ্র মজুমদার ও আবুল কাসেম আজাদ, জামালগঞ্জ উপজেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তার হোসেন এবং সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের ইউনিট লিডার লিটন রঞ্জন তালুকদার প্রমুখ।
ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি কল্পে নেত্রকোনায় ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষি মেলার শুভ উদ্বোধন করেন নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিরুল ইসলাম।
নেত্রকোনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিকের সভাপতিত্বে সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা রাখী পোদ্দারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেহনুমা নওরীন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মো. মোকসেদুল হক, সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুল্লাহ, জেলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক মাহবুবুল কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম প্রমুখ।
৩ দিনব্যাপী এই কৃষি মেলায় ১০টি প্রদর্শনী স্টলে বিভিন্ন প্রজাতির ফল, গাছের চারা ও কৃষি উপকরণ প্রদর্শন করা হয়েছে।