কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদে মাছ শিকার করে ফেরার পথে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশি দুই জেলে।সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি এলাকায় রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত এক জেলেকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হলেও আরেকজনকে গুরুতর অবস্থায় কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, ‘তাদের একজন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ পাড়ার মোহাম্মদ ছিদ্দিকের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক ও আরেকজন মাঝের ডেইল এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল।’
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক প্রণয় রুদ্র বলেন, ‘আজ (রোববার) ১২টার দিকে দুইজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে আমরা জানতে পারি তারা জেলে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অন্যজন ফারুকের তিনটি গুলি লেগেছে ডান পায়ে ও বাম ঊরু এবং বাম হাতের আঙুলে।’
ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি মাছ ধরা শেষে শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট দিয়ে ফিরছিলাম। এ সময় নাইক্ষ্যংদিয়া সংলগ্ন অংশে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ আমাদের অতিক্রম করছিল। মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হঠাৎ আমাদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এতে আমাদের দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হয়। আমরা নাফ নদের বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলাম এবং হাত উঁচু করে বাংলাদেশি পতাকা দেখিয়ে তাদের গুলি না করতে ইশারা করছিলাম। এরপরও তারা মানেনি; গুলি করতে থাকে।’
আহত জেলে মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘এফবি মায়ের দোয়া ট্রলার নিয়ে গত চার দিন আগে ৯ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাই। আজ (রোববার) ফেরার পথে সাগরে মিয়ানমারের অংশ অবস্থান নেয়া মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ সংকেত দিয়ে তাদের দিকে যেতে বলে। ওটা মিয়ানমারের জলসীমা হওয়ায় তারা শাহপরীর দ্বীপের দিকে চলে আসতে থাকে। এ সময় পরপর গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধ হন। অন্যরা অক্ষত আছে।’
নানা জাতের মাছ ভোগ করতে না পারায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের তৃণমুলের নেতা নড়াইলের পাতারিয়া বিলের উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ প্রয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এতে প্রায় ১০০ মণ মাছ মারা গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুর্গাপুর-চানপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকার মানুষ। এতে এলাকার কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নড়াইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আলী, নয়নপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান, শাহাবাদ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মুকুল বিশ্বাস, নয়নপুর গ্রামের কৃষক লোকনাথ বিশ্বাস, প্রদ্যেুৎ বিশ্বাস, দুর্গাপুর গ্রামের সুবোধ লষ্কর অনেকে।
সরেজমিন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাতারিয়া বিলের চারপাশে নড়াইল সদর উপজেলার ছয়টি গ্রামের কৃষক পরিবার বসবাস করেন। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিপণ্য উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। গ্রামগুলো হচ্ছে নড়াইল পৌরসভার দূর্গাপুর, বাহিরডাঙ্গা, ডুমুরতলা, সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের নয়নপুর, চানপুর, বিঞ্চুপুর। কৃষকরা তাদের জমিতে দুই ফসল উৎপাদন ছাড়াও বিল ও বিল সংযুক্ত খালের জলাশয়কে মাছের অভয়াশ্রম হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। সারা বছরই এই খালে পানি ও মাছ থাকে। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা খালের পানি জমিতে ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করেন। সময় অসময়ে খালের অভয়াশ্রমের প্রাকৃতিক মাছ পারিবারিক কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
নড়াইল পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আলী খান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর গ্রামের আজিজুর রহমান এককভাবে খাল দখল করে ছিলেন। অন্য কাউকে মাছ ধরতে দিতেন না। তিনি নিজে ইচ্ছামত খালের অভয়াশ্রমের মাছ বেচা-বিক্রি করতেন এবং ভোগ করতেন।
আজিজুরকে বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সদর উপজেলার জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, সরকারি আইনে সরকারিখাল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে পাটা দিয়ে মাছ শিকার করা অবৈধ। তাই এগুলো অপসারণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া খালে বিষ প্রয়োগে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রেখে সুস্থ বিনোদনের পথ সুগম করতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১২ দলীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলার শ্রীফলবাড়ী যুব সমাজের উদ্যোগে শ্রীফলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মোল্লা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম মোল্লা, সাবেক মেম্বর যোগেন্দ্রনাথ গাইন, সাবেক মেম্বর সুভাষ গাইন, শ্রীফলবাড়ী জামে মসজিদের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম মোল্লা, সাইদুর রহমান মোল্লা, সাংবাদিক কালাম তালুকদার, সাংবাদিক রাসেল মোল্লা বাঁধনসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
আয়োজকরা জানান, তরুণদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করে মাদক, জুয়া ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখাই এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
উদ্বোধনী খেলায় RO-KO ক্রিকেট একাদশকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়লাভ করে উত্তর হাজরাবাড়ী ক্রিকেট একাদশ। টসে জিতে উত্তর হাজরাবাড়ী দল প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। RO-KO একাদশ ১০ ওভারে ৭ উইকেটে ৯২ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন বিপ্লব। উত্তর হাজরাবাড়ীর মিঠুন ৫টি এবং সুজন ১টি উইকেট নেন।
জবাবে উত্তর হাজরাবাড়ী একাদশ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান করে জয় নিশ্চিত করে। সুজন সর্বোচ্চ ৩৯ রান তুলেন। বিপ্লব ১টি ও অপু ৩টি উইকেট লাভ করেন।
অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য উত্তর হাজরাবাড়ী ক্রিকেট একাদশের মিঠুন ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ নির্বাচিত হন।
টুর্নামেন্ট শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ফ্রিজ এবং রানারআপ দলকে টেলিভিশন পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।
সাতক্ষীরায় ওয়াইফাই লাইনের তার কাটার সময় একজনকে আটকে রাখলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে দুইজন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল ও কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে সাতক্ষীরা সদরের ভোমরার শাকরা গ্রামের সাহেব আলীর বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দাহ গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৩৮) ও দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের এস এম সাইদুর রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান (৩০)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহীনুর রহমান জানান, দুটি মোটরসাইকেলে চারজন লোক ভোররাতে কোমরপুর গ্রামের সাহেব আলির বাড়ির সামনে এসে ওয়াইফাই লাইনের তার কাটার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে ভোর রাত ৪টার দিকে আমরা কয়েকজন মিলে তাদের মধ্যে একজনকে ধরে ফেলি। এসময় বাকিরা আমাদের উপর গুলি চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা একটি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। তার পেটে গুলির ছাররা লেগেছে বলে তিনি জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মু. মাসুদুর রহমান জানান, ওয়াইফাই ব্যবসার দ্বন্দ্বের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। একপক্ষের লোকজন তার কাটতে আসলে অপরপক্ষের লোকজন তাদের একজনকে আটকালে তাকে ছাড়িয়ে নিতে এক ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করাহয়। এ ঘটনায় দুইজন আহত হয়েছে।এটি গুলিবর্ষণের ঘটনা নয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল ও বেশ কিছু বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষি জমি হতে মাটি কেটে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করায় এমএইচই ভাটা থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথ ভাবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে।
জরিমানা আদায় ছাড়াও ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভ্রাম্যমান আদালত।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হান উদ্দিন ও প্রসিকিউটর হিসেবে ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লাইসেন্স ছিলো না ভাটাটির। আইন লংঘণ করে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিলো। কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করার সত্যতা পাওয়া যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে।
বলেন, ইটভাটাগুলোকে আমরা মনিটরিং করছি। আইন লংঘন হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রসঙ্গত সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের চিকলিবাজার আইসঢাল এলাকায় অবস্থিত আব্দুর রাজ্জাক রাজুর মালিকানাধীন এই ভাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় ৯০ জন মানুষ লিখিত অভিযোগ দাখিল করে বিভিন্ন দফতরে।
কৃষি জমি থেকে মাটি কর্তন, ইটভাটার ১শ থেকে ৩শ মিটারের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, বাজার ও সরকারী আবাসন প্রকল্প রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কক্সবাজারের টেকনাফে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ। এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও লাগেজসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে ৮ টার দিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় থানা পুলিশের একটি আভিযানিক দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম শেখ শহীদুল ইসলাম সবুজ (২৭)। তিনি
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বালুখালী এলাকায় মৃত আবুল কাসেমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অভিযানে ৫০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি লাগেজ এবং Yamaha FZ V3 মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস জানান, আটক আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নলচর এলাকায় শুক্রবার ভোরে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
নিহত সেনা সদস্য হলেন ঢাকার ধামরাইয়ের বাসিন্দা মোঃ শাকিল হোসেন। তিনি কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। অপর নিহত যাত্রী মাসিকুল আলম, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মহালক্ষ্মীপাড়া এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে।
আহতরা হলেন সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান, মোঃ সজল মিয়া ও বাসযাত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
ময়নামতির হাইওয়ে ক্রসিং থানার ওসি ইকবাল বাহার জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা রয়েল কোচের একটি বাস ভোরে নলচর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর চালকসহ কয়েকজন যাত্রী বাস থেকে নেমে সড়কের পাশে দাঁড়ান। ঠিক সেই সময় পেছন দিক থেকে আরও একটি কাভার্ডভ্যান এসে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে দুইজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং তিনজন আহত হন।
ঘটনার পর কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হলেও চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামলে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, অনেক গ্রুপ অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না। অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়েও আন্দোলনের চেষ্টা করছে। যারা বেআইনিভাবে আন্দোলন করবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা একটি ভালো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো আছে। আশা করছি, ভালো থাকবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি আছে। ট্রেনিং চলছে, ওসি, এসপি, ডসি পদায়ন হয়ে গেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘জাতিকে একটা ফ্রি ফেয়ার এবং উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। তফসিল ঘোষণার প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনলাইন সাইবার জালিয়াতি রোধে কড়া বার্তা দিয়েছে। এগুলো রোধে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’
এদিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় মেট্রোরেলের ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ পরে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রেস সচিব।
তিনি জানান, যেহেতু মেট্রোরেল ঢাকা শহরের মানুষের যাতায়াতের যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে, সে কারণে এই ভ্যাট বা মূল্যসংযোজন কর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রেস সচিব জানান, ফেব্রুয়ারিতে রোজা সামনে রেখে রোজাদারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে খেজুরের উপর ট্যাক্স ৫২.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০.৭ শতাংশ করা হয়েছে। এখানে মূলত খেজুরের কাস্টমস ডিউটি ১৫ শতাংশ কমানো হয়েছে।
শফিকুল আলম জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনটি নতুন আইন উঠেছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ এবং রেজিস্ট্রেশন অর্ডিন্যান্স, এমেন্ডমেন্ট ২০২৫ নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আর আইনগত সহায়তা প্রদান (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে এখন থেকে ৬০ ঘণ্টার বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতেই হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আইন যতই হালনাগাদ করা হোক, বাস্তবায়ন না হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে না। মালিক–শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাইকে এই পরিবর্তন গ্রহণ করতে হবে। এসময় সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কুইক রেসপন্স সিস্টেম গড়ার ঘোষণাও বিআরটিএ চেয়ারম্যান।
সম্প্রতি রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নে সড়ক নিরাপত্তা আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
এসময় বিআরটিএ চেয়ারম্যান নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর তার নিজের মেয়ের জামাই একটি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। দুই দফা অপারেশন করা হয়েছে, এখনো হাঁটতে পারেন না। চেয়ারম্যানের ভাষ্য, ‘যিনি বেঁচে যান, তার কষ্ট অনেক বেশি। এই জায়গা বোঝার পরই উপলব্ধি করেছি— দুর্ঘটনার পরপর দ্রুত সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকলে ক্ষতির গভীরতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।’
এ কারণেই তিনি অবিলম্বে একটি কুইক রেসপন্স সিস্টেম চালুর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। দুর্ঘটনার পর প্রথম ৩০–৬০ মিনিটকে ‘হিস্টরি-চেঞ্জিং টাইম’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দ্রুত উদ্ধার ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে; নইলে মৃত্যু ও অক্ষমতা দুটোই বেড়ে যায়।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, দেশে মোটর ভেহিকেল অর্ডিন্যান্স থাকলেও ১০০ শতাংশ বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। আইন অনুযায়ী একজন চালক সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারেন, কিন্তু বাস্তবে চালকরা ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত স্টিয়ারিং ধরে থাকেন। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ে।
তিনি স্বীকার করেন, পুলিশের সক্ষমতা সীমিত; তবে শুধু পুলিশ নয়, সমন্বিত ব্যবস্থা ছাড়া কিছুই বদলানো যাবে না। মালিক, শ্রমিক, স্থানীয় প্রশাসন, সড়ক খাতের সব সংস্থা এবং জনগণ— সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
চেয়ারম্যান জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বা গুরুতর আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সরকার ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেয়— মৃত্যু হলে ৫ লাখ টাকা, স্থায়ী পঙ্গুত্ব হলে ৩ লাখ টাকা এবং গুরুতর আহত হলে ১ লাখ টাকা।
তবে এই অর্থ পেতে হলে দুর্ঘটনার পরপরই নিকটস্থ বিআরটিএ অফিসারকে জানাতে হবে অথবা নির্ধারিত ফর্ম জমা দিতে হবে। অনেক সংস্থা ছয় মাস সময় নেয়— এটি অগ্রহণযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিআরটিএ একটি মাস্টার ট্রেইনার পুল তৈরি করছে, যারা সারাদেশের ড্রাইভিং ইনস্টিটিউটে গিয়ে নতুন ৬০ ঘণ্টার কারিকুলাম অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেবেন।
চেয়ারম্যান বলেন, শুধু লাইসেন্স না; সড়কে নামার আগে চালকের ভেতরে ন্যূনতম দক্ষতা এবং আচরণগত পরিবর্তন আনতেই হবে।
তিনি মনে করেন, দেশের ৫–২৯ বছর বয়সী জনসংখ্যা (৩২%) আগামী অর্থনীতির মূল শক্তি। সড়কে প্রতিদিন তাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়লে অর্থনৈতিক টেকঅফ অসম্ভব। তাই সড়ক নিরাপত্তাকে তিনি জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের জায়গায় দেখতে চান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে বিদায়ী দুই উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সম্মানে এক মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা সভা শেষে তাদের সঙ্গে স্মৃতিচারণমূলক একটি ছবিও তোলেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই তাদের পদত্যাগ কার্যকর হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাঠামোয় ব্যাপক পুনর্বিন্যাস কার্যকর করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাস্তবতায় একটি আধুনিক, দক্ষ ও জনমুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৪৭ জেলা কমান্ডেন্ট ও ১৬২ উপজেলা কর্মকর্তাদের বদলি এই উদ্যোগের মূল অংশ।
একইসঙ্গে নির্বাচনী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনে মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের যাচাইকরণ তালিকা হালনাগাদ, এভিএমআইএস সফটওয়্যারে তথ্য সংযোজন, নির্বাচনী মহড়া এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে চলমান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো: আশিকউজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের আচরণগত উন্নয়ন, দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভোটকেন্দ্রসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানে পেশাদারিত্ব বজায় রাখার জন্য নিবিড় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের মূল উদ্দেশ্য—নির্বাচনকালীন দায়িত্বে নিযুক্ত প্রতিটি সদস্য যেন সর্বোচ্চ সততা, শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করেন।
এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস ও সকল মোতায়েন কার্যক্রমে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। আনসার সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বাহিনী প্রধান কর্তৃক ইতিমধ্যে ইস্যুকৃত দিকনির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে।
বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র আরও জানায়, নির্বাচন চলাকালে প্রত্যেক সদস্যকে শতভাগ নিরপেক্ষতা, সততা ও পেশাগত আচরণ বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। মানবসম্পদের নেতৃত্বদানকারীদের এই পুনর্বিন্যাস নির্বাচনী সময়ে বিভিন্ন জেলার নিরাপত্তা চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টনকে আরও কার্যকর করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে আনসার-ভিডিপির এই ব্যাপক প্রশাসনিক সংস্কার নির্বাচন-সংক্রান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে এবং একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের সহায়ক ভূমিকা রাখবে। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ও রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনে এ উদ্যোগকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।
পিরোজপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ই ডিসেম্বর) আছর নামাজ বাদ দি গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব টেনিস গ্রাউন্ডে পৌর বিএনপির আয়োজনে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেন।
দোয়া মাহফিলে পৌর বি এন পির সভাপতি শেখ শহিদুল্লাহ শহিদ এর সভাপতিত্ত্বে ও সাধারন সম্পাদক মোঃ সরোয়ার হোসেন হাওলাদার এর সঞ্চালনায়, বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম কিসমত,জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু,
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক পৌর কাউন্সিলর জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আব্দুস সালাম বাতেন,সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসেন টিপু
জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান শাহিন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক মাসুদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন তালুকদার কুমার, সাধারন সম্পাদক মাহামুদ হাসান শাহীন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ খায়রুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
এসময় ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল,শ্রমিকদল সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে প্রতীক। গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম জিয়া আজও অটল। দেশবাসীর দোয়া ও ভালবাসায় তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আপনারা সবাই দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য আন্তরিকভাবে দোয়া করুন। তাঁকে সুস্থ দেখতে পুরো দেশবাসী অপেক্ষা করছে।
শেষে বেগম জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
রাজশাহীর তানোরে পরিত্যক্ত একটি গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। শিশুটি জীবিত আছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ৫০ মিনিটে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে গভীর নলকূপের ওই পাইপে পড়ে যায় শিশুটি।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কোয়েলহাট গ্রামের মাঠের পাশ দিয়ে মায়ের সঙ্গে হাঁটার সময় অসাবধানবশত পরিত্যক্ত নলকূপের গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। মায়ের আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে প্রথমে উদ্ধার চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তিনটি ইউনিট এসে তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিস প্রথম পর্যায়ে চার্জ ভিশন ক্যামেরা দিয়ে প্রায় ৩৫ ফুট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালায়। তবে শিশুর অবস্থান শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। এরপর পাশেই এস্কেভেটর দিয়ে রাতভর প্রায় ৩৫ ফুট গভীর বড় একটি গর্ত খনন করা হয়। সকালে সেই গর্ত থেকে নলকূপের দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চেষ্টা করা হলেও সেখানেও শিশুর অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। এরপর আবারও পরিত্যক্ত নলকূপে ক্যামেরা নামানো হলে সেটিতে মাটি ছাড়া আর কিছু দেখা যায়নি। এরপর নতুন করে আবারও খননের সিদ্ধান্ত নেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরখানেক আগে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ওই নলকূপ খোঁড়া হয়েছিল। পানি না ওঠায় মালিক সেটি মাটি দিয়ে ঢেকে রাখেন। সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে মাটি ধসে পড়ে নলকূপের মুখ আবারও উন্মুক্ত হয়ে যায়। সেই গর্তেই দুর্ঘটনাবশত পড়ে যায় শিশু সাজিদ।
শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বুধবার দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। এসময় তার ছোট একটি সন্তান কোলে ছিল। হাঁটার সময় হঠাৎ সাজিদ ‘মা’ বলে ডেকে ওঠে। পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে নেই, গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাকছে।
গর্তটির ওপরে খড় বিছানো ছিল। ওখানে যে গর্ত ছিল, সেটা বুঝতে পারেননি তিনি নিজে কিংবা শিশু সাজিদ। ওই জায়গায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি গর্তের ভেতর পড়ে যায়। লোকজন ডাকাডাকি করতে করতেই গর্তের তলায় চলে যায়।
দেশের অন্যান্য উপজেলার মতো দেশের সর্ব দক্ষিণের উপজেলা পাথরঘাটায় ডিসেম্বরের কনকনে শীত। রাত প্রায় ৮টা। হঠাৎ রাস্তার পাশে অজানা এক কান্নার শব্দ থমকে দিল দৈনিক বাংলার পাথরঘাটা প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফ তৌহীদের পথচলা। কাছে গিয়ে দেখা গেল- বস্তুহীন, ক্ষীণদেহ, পরিত্যক্ত এক বৃদ্ধা নারী নিঃশব্দে শুয়ে আছেন রাস্তার ধারে। শরীরজুড়ে হাড়গোড়ের অসহায় চিহ্ন, চোখেমুখে অভিমান আর দীর্ঘদিনের কষ্টের ছাপ। যেন অজানা পথের দিকে তাকিয়ে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশের নিচে জীবন-মরণের স্রষ্টাকে ডাকছেন তিনি।
পরিবারের পরিচয় জানতে চাইলে খুলে বললেন তার গল্প। নাম তহমিনা। বয়স আনুমানিক আশির কোটায়। বাড়ি নলছিটি উপজেলার মালিপুর ইউনিয়নের নাঙ্গলী-বৈচুঙ্গী গ্রামে। স্বামী নূর ইসলাম খাঁ- যিনি প্রথম স্ত্রী থাকার পরও আরও দুটি বিয়ে করেছেন। চার ছেলে ও দুই মেয়ের জননী এই নারী একসময় ছিলেন সংসারের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু সময়ের নিষ্ঠুরতায় আজ তিনি পরিত্যক্ত, অযত্নে ছড়িয়ে পড়েছেন অজানা পথে। অনাহার আর অবহেলায় ক্ষয়ে গেছে দেহ, নষ্ট হয়েছে চলার শক্তি।
সাংবাদিক আরিফ তৌহীদের চোখ এ দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেননি। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও যখন কোনো সহায়তার ব্যবস্থা করা সম্ভব হলো না, তখনই তিনি ফোন দিলেন সদ্য যোগদান করা পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহানের কাছে।
ফোনে বিষয়টি শোনামাত্রই ইউএনও ইশরাত জাহান গুরুত্বের সাথে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই টিএইচও এবং অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান তিনি নিজেই। মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে, স্বশরীরে উপস্থিত থেকে বৃদ্ধা তহমিনাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
সেদিন রাতেই চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। স্থানীয় সমাজকর্মী মেহেদী শিকদার, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকন, শিক্ষক আজমী হাসানসহ আরও অনেকে ছিলেন সেই মানবিক মুহূর্তের সাক্ষী। কিন্তু মানবিক প্রয়াসের মাঝেই ভোরে এলো হৃদয়বিদারক খবর। ১০ ডিসেম্বর সকাল ৬টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তহমিনা।
খবর পেয়ে ইউএনও ইশরাত জাহান আবারও এগিয়ে আসেন। বৃদ্ধার দেওয়া নাম-পরিচয় ধরে খোঁজ নিয়ে তার পরিবারের ঠিকানা শনাক্ত করেন এবং প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মরদেহটি তার স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন। পরিত্যক্ত জীবনের অন্তিম পরিণতিটুকু যেন হয় স্বসম্মানের-এটুকুর নিশ্চয়তা দেন তিনি।
ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। তাকে ওই অবস্থায় দেখে মন মানছিল না। তাই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারলাম না। তবে কমপক্ষে তার মরদেহ পরিবারে পৌঁছে দিতে পেরেছি, এতেই স্বস্তি।’
এমন মানবিকতা, দায়িত্ববোধ আর দ্রুত উদ্যোগে ইতোমধ্যেই সর্বমহলে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। উপজেলার সাধারণ মানুষ তাকে আখ্যায়িত করছেন‘মানবিক ইউএনও ইশরাত জাহান’তাদের ভাষ্য, ‘একজন ইউএনও কেবল প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, তিনি পুরো উপজেলার মানুষের অভিভাবক। মানবিকতার এমন দৃষ্টান্ত সকল কর্মকর্তার জন্য অনুকরণীয়।’
এক অসহায় বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ানো, রাতের অন্ধকারে মানবিকতার আলো জ্বালানো ইশরাত জাহান যেন সেই আলোকবর্তিকা, যিনি দেখিয়ে দিলেন প্রশাসনের আসল শক্তি কাগজ-কলম নয়, মানুষের প্রতি মানবিক দায়িত্ববোধ।