৫ বছরেও চালু করা যায়নি সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল্স। ফলে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া হতাশায় ভুগছেন চাকরি হারানো বিপুলসংখ্যক শ্রমিক। সব ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে মিলটি আবারও চালুর দাবি বাস্তবায়ন কমিটিসহ শ্রমিকদের। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, পিপিটির মাধ্যমে চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে মিলটি।
সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল্স সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই মিলটি। ১৯৮৩ সালে সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের মাগুরা এলাকায় ৩০ একর জায়গায় স্থাপন করা হয় সুন্দরবন কেক্সটাইল মিলস। মিলটিতে একসময় দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। মূল ইউনিট ও নীলকমল ইউনিটের আওতায় ৩৯ হাজারেরও বেশি টাকু ঘুরতো প্রতিনিয়ত। মিলের দুটি ইউনিটের সুতা উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ১০ হাজার কেজি। তবে এর জৌলুস বেশি দিন থাকেনি। ক্রমাগত লোকসানের ফলে ২০০৭ সালে শ্রমিক-কর্মচারীদের বিদায় জানানো হয় গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে। পরে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে মিলটি চালু হয়। তাও টেকেনি বেশি দিন।
২০১৭ সালের শেষের দিকে মিলটি ভাড়ায় নেয় নারায়ণগঞ্জের ট্রেড লিংক লি.। লোকসান হতে থাকায় একবছর কয়েক মাস চালানোর পর ২০১৯ সালে আবারও বন্ধ ঘোষণা করা হয় মিলটি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। প্রতিষ্ঠানটি দেখভালের জন্য বর্তমানে আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। ৫ বছর মিলটি বন্ধ থাকায় বেকার জীবনযাপন করছেন এলাকার ৪০০ শ্রমিক। জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি অবিলম্বে চালু করতে সরকারি পৃষ্টপোষকতার দাবি শ্রমিকদের। এ বিষয়ে শ্রমিক রেজাউল হক রেজা বলেন, ‘আমি এখানে চাকরি করতাম। এখন সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। মিলটা চালু হলে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’
মিলটি চালুর দাবিতে কমিটি গঠন হয়েছে সম্প্রতি। পরিকল্পিতভাবে চালু করতে পারলে লাভবান হতে পারবেন কর্তৃপক্ষ- অভিমত শ্রমিক নেতাদের। এ বিষয়ে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস চালু বাস্তবায়ন কমিটির দপ্তর সমন্বয়কারী শেখ শওকত আলী বলেন, ‘এই মিলের লাভ দিয়ে আমিন টেক্সটাইল মিল ও মাগুরা টেক্সটাইল মিল গঠিত হয়েছে। কিন্তু বিএনপি সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে আজ মিলটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। সেসময় পাকিস্তানি তুলা আমদানি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিলটি। আমাদের দাবি, সরকার যেকোনোভাবে মিলটি চালু করুক।’
সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস চালু বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাগফুর রহমান বলেন, ‘সরকার লস দিয়ে মিল চালাবে না। পিপিপির মাধ্যমে বিটিএমসি ইতোমধ্যে তিনটি মিল চালু করেছে। ৩০ বছরের লিজে সেগুলো তারা চালাচ্ছে। তারা লাভবান হতে পারলে এই মিল চালু হতে পারবে না কেন।’ কমিটির আহ্বায়ক শেখ হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘সম্প্রতি মিলটি চালুর বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু সংসদে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। মিলটি চালু না হলে একদিকে যেমন কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হবে, তেমনি আগে কর্মরত শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।
চালুর বিষয়ে মিলটির বর্তমান ইনচার্জ শফিউল বাশার বলেন, ‘১৯৮০ সালে ২৯.৪৭ একর জায়গার ওপর এটি গড়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালে এটি চালু হয়। দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিক একসময় কর্মরত ছিল। ১৯৯২ সালে মূল ইউনিটের বাইরে ‘নীলকমল’ নামে আরও একটি ইউনিট প্রস্তুত হয়। সুতা উৎপাদন থেকে থানকাপড় পর্যন্ত তৈরি হতো। তবে ক্রমাগত লোকসানের কারণে ২০০৭ সালে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের কারণে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিদায় করা হয়। কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়ে যায় মিলটি দেখাশুনার জন্য। পরে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে মিলটি পরিচালিত হতো। তবে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। পরে ভাড়া পদ্ধতিতে চালানোর চেষ্টা চলে; কিন্তু বিদ্যুৎ সংকট ও মেশিনারিজ পুরোনো হওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে আবারও বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। আর চালানো সম্ভব হয়নি। আমি যতটুকু জানি, দূর অথবা অদূর ভবিষ্যতে পিপিপির (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব) মাধ্যমে মিলটি চালানোর চিন্তা বিটিএমসির আছে।
তবে বাস্তবতার নিরিখে মিলটিকে চালানো সম্ভব নয় বিধায় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট তৈরি করার চিন্তাও সরকারের মাথায় রয়েছে বলে জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন করিব।
তিনি বলেন, ‘মিলটি বেশ আগে থেকে বন্ধ রয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে ক্রমাগত লোকসান দিয়ে টেক্সটাইল মিলকে হয়তো আর চালু করা সম্ভব হবে না। আমরা চিন্তা করছি একটা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট করা যায় কি না, যাতে শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে পড়ালেখা করতে পারে। আমি ডিসি সম্মেলনে এই প্রস্তাব দিয়েছি। বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে এই প্রস্তাব দেওয়ার পরে তা তারা গ্রহণ করেছেন। তিন একর জায়গা লাগবে ইনস্টিটিউট করতে। বাকি জায়গা অন্যভাবে ব্যবহারের কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়, যাতে ভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের পচাভিটা এলাকার একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় রফিককে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন অস্ত্রধারী রফিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি করার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় চায়ের দোকানে থাকা লোকজন তাদের ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই রফিক ইসলামের মৃত্যু হয়।
নিহত রফিক ইসলাম ওই গ্রামের মতআলী মন্ডলের ছেলে। আহতরা হলেন—একই গ্রামের রবজেল ফরাজি (৫২) ও ইউসুফ হোসেন (৫৫)।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, “দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে রফিক নামের একজন নিহত হয়েছেন এবং দুইজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত শেষে জানানো হবে।”
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় বাইশ, কুডি চিকুন, চৌত্রিশ, পাইজম ও আমন জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে এসব জাতের ধানের বাম্পার ফলনে মুখরিত হয়েছে গ্রামের মাঠ-ঘাট। সোনালি ধানে ভরে উঠেছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধান কাটার পর একই জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদেও নেমে পড়েছেন তারা। কৃষিবিভাগ স্বল্পমেয়াদি ফসল চাষে কৃষকদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি অফিসারদের মাধ্যমে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার পাচথুবী, আমড়াতলী, দুর্গাপুর উত্তর-দক্ষিণ, কালিরবাজার, জগন্নাতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমন ধানের শোভায় রঙিন হয়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ খেত। জেলার মাটি নানা ধরনের ফসল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষ করে স্বল্পমেয়াদি ফসল চাষ করে অতিরিক্ত লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দেবিদ্বার, চান্দিনা, দাউদকান্দি, বরুড়া, মুরাদনগর, বুড়িচং, মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, মেঘনা, হোমনা, তিতাস, লাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর জমিতে এবার চোখে পড়ার মতো সোনালি ধান পাকার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
তবে কোথাও কোথাও কৃষকের মুখে উদ্বেগও রয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশিদলের কৃষক তাজু মেম্বার ও তার ছেলে মাসুদ রানা অপু জানান, ইঁদুরের আক্রমণে তাদের সোনার ফসলের প্রায় অর্ধেক নষ্ট হয়েছে।
স্থানীয় তাজু মেম্বারের জমিতে কাজ করা নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের শ্রমিক সম্রাট, হৃদয়, রাছেল ও তাজুল জানায়, ৩০০ শতকের মধ্যে ২৫০ শতকে বাম্পার ফলন হলেও ৫০ শতক জমির ধান ইঁদুর নষ্ট করে দিয়েছে। তবুও গড়ে লাভ থাকবে বলে তারা আশা করছেন।
প্রতি একরে ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও বাম্পার ফলন ও ভালো বিক্রয়মূল্য কৃষকদের মুখে হাসি এনেছে।
এই অঞ্চলে এবার রোপা আমন, বাইশ, চৌত্রিশ, কুডি চিকুন ও পাইজম জাতের ধানের চাষ খুব ভালো হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে বন্যা বা বড় কোনো দুর্যোগ না থাকায় কৃষকরা আমনসহ অন্যান্য জাতের ধানে বাম্পার ফলনের আশায় উজ্জীবিত। ইতোমধ্যে ধানিগোল্ড, সেন্টু পাজাম, ব্রিধান-১০৩, রঞ্জিত, কুডি চিকুন, পাইজম, চৌত্রিশসহ আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে ৩ মণের বেশি ধান মিলছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশিদল ইউনিয়নের কৃষক তাজু মেম্বার, তার ছেলে অপু, আশরাফ মিয়া, ঈসমাইল, আবুল কাশেম, খালেক ও মানরার রেজাউল জানায়, তারা এ বছর রোপা আমন, পাইজম, কুডি চিকুন ও চৌত্রিশ জাতের ধান চাষ করেছেন। এ জাতের ধান অন্যান্য জাতের তুলনায় ১৫-২০ দিন আগে কাটা যায় এবং ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যাচ্ছে- প্রতি ৫ শতাংশে প্রায় ৩ মণ।
হরিমঙ্গল এলাকার কৃষকরাও জানান, আগাম ধান কাটার পরই তারা খেতে সরিষার বীজ বপন করেছেন।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত জেলাগুলোর মধ্যে কুমিল্লা অন্যতম। চলতি মৌসুমে জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,১৪,৮৩০ হেক্টর; আবাদ হয়েছে ১,১৪,৯৭৫ হেক্টরে।’
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ বছর উপজেলায় ৭ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। রোগ-পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ফলন অত্যন্ত ভালো।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পমেয়াদি ধানের আবাদ বেশি হওয়ায় ধান কাটার পর একই জমিতে সরিষা, আলু ও শাকসবজি চাষের সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে কৃষকের বাড়তি লাভ যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি কৃষিতে আসছে বৈচিত্র্য।
বাম্পার ফলনে উচ্ছ্বসিত ব্রাহ্মণপাড়ার কৃষকরা নতুন ফসলের আশায় আবারও মাঠমুখী হয়ে উঠেছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানায়, এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকা, সময়মতো বৃষ্টি এবং আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে ফলন বাড়িয়েছে। অনেক কৃষক জানিয়েছেন, গত বছরের বর্ষার প্লাবনে জমিতে কোনো ধান ছিল না তাই এবার তাদের উৎপাদন তুলনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ। এতে তাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
আরেক কৃষক বলেন, এইবার আল্লাহর রহমতে ধানের ফলন বাম্পার হয়েছে। যদি সরকার সহযোগিতা করে আর আমরা ধানের প্রকৃত দাম পাই, তাহলে এই অঞ্চলে কৃষিতে এক নতুন বিপ্লব ঘটবে।
কৃষি বিভাগও মাঠ পর্যায়ে সুখবর নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে, সার, বীজ ও পরামর্শ সরবরাহের ফলে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে এবং ফলনও তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে কৃষকদের প্রধান দাবি উৎপাদনের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। বাজারে সঠিক দাম না পেলে চাষাবাদের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং ঋণের বোঝা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, স্থানীয় বিজয়পুর বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় আমন মৌসুম ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ধান ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা। ক্রয়-বিক্রয়ের জমজমাট পরিবেশ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক দুপুরে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ বাজার এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ অভিযানে তেল, চাউল, বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য, সার-কীটনাশক এবং মুদি দোকানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।
অভিযানকালে মেসার্স মা কালী স্টোর–এ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয়, সঠিকভাবে মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য রাখা, এবং মেয়াদ ও মূল্যবিহীন পণ্য বিক্রয়সহ বিভিন্ন অপরাধ প্রমাণিত হয়। এ কারণে দোকানটির মালিক অমল কুন্ডুকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৩৭ ও ৪৩ ধারায় ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
একই ধরনের অপরাধে মেসার্স অনন্ত কুন্ডু অ্যান্ড সন্স–এর মালিক অসীম কুমার কুন্ডুকে আইনটির ৪৩ ও ৫১ ধারায় ৫,০০০ টাকা এবং মেসার্স অমিত স্টোর–এর মালিক অমিত কুন্ডুকে ৩৮ ও ৪৩ ধারায় ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এতে মোট ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম না করার জন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য দোকান ও প্রতিষ্ঠানের তদারকি করা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মূল্যতালিকা প্রদর্শন, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ এবং ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
সার্বিক সহযোগিতা করেন মো. রবিউল ইসলাম, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা, মাগুরা, এবং মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
শেরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দাবি আদায়ে শ্রেণিকক্ষের দরজায় তালা ঝুলিয়ে পরীক্ষাবর্জন করেন শিক্ষকরা। বাইরে তখন পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীবরদী উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষার কার্যক্রম চালু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনীষা আহমেদ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষা শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূরন নবী অনেকেই।
জানা গেছে, শেরপুর জেলার ৭৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গত বুধবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন এবং বৃহস্পতিবারও তা অব্যাহত রেখেছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা, শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন কার্যকর করা, টাইম স্কেল–সিলেকশন গ্রেড বকেয়া পরিশোধ এবং আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের অগ্রিম বেতন সুবিধা পুনর্বহাল। শিক্ষকদের এমন হঠাৎ কর্মবিরতি ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবক হালিম মিয়া বলেন, হুট-হাট করে শিক্ষকরা পরীক্ষা বন্ধ করবে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনে শিশুরা মানসিক চাপে পড়ে। শিক্ষকরা মানুষ তৈরির কারিগর বলা হলেও পরীক্ষাবর্জন করে আন্দোলন চলতেই পারে এবং এটা উচিতও না।
আরেক অভিভাবক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি বলবো এটা আন্দোলন না, এটা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা। সরকারকে কঠোর হতে হবে। কিছু হলেই আন্দোলন তা ঠিক না। এমন অবস্থা চলেতে থাকলে প্রয়োজন নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করা এটা কেমন আন্দোলন আপনারাই বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনীষা আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরি নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফিরতে বলেছে। একইসাথে শাটডাউন বা কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁয় বাড়ছে শীতের প্রকোপ আর তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মেহেরপুরে জেঁকে বসেছে শীত। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে শীতের প্রকোপ। শীতের প্রকোপ নিয়ে মেহেরপুর প্রতিনিধি জুলফিকার আলী কানন ও নওগাঁ প্রতিনিধি সবুজ হোসেনের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো;
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান: মেহেরপুরে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে, সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, সকাল ৯টায় মেহেরপুর অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। আগামী কয়েকদিন রাত ও ভোরের তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। এই শীত মৌসুমে এটাই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। যদিও এটা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা না।
এদিকে, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। সকাল ৯টার পর ঝলমলে রোদের দেখা মিললেও শীতের প্রভাব কাটছে না। হিমেল বাতাস বইতে থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। শীত বৃদ্ধির কারণে মেহেরপুর, গাংনী উপজেলা শহরে সকাল থেকে মানুষের চলাফেরা ছিল কম। সকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হয়নি। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী লোকজনের। সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে শ্রমিক, ভ্যানচালক ও রিকশাচালকরা।
এদিকে শীত পড়ার সাথে সাথে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে হাঁপানি, টাইফয়েড, সর্দি, জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন রোগ বালাই বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভীড়ে গাদাগাদি ঠাঁসা ঠাঁসি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবীর জানান, চলতি শীত মৌসুমে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। এসব কম্বলের মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৩৮ শত, গাংনী উপজেলায় ১৮ শত ও মুজিবনগর উপজেলায় ৮৭৫ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর এসব কম্বলের মধ্যে কিছু কম্বল ছিন্নমূল, হতদরিদ্র্য শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
নওগাঁয় বাড়ছে শীতের প্রকোপ:
নওগাঁ প্রতিনিধি: দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় দিন দিন শীতের দাপট স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে। কমছে তাপমাত্রাও। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
সকাল ৯টায় জেলায় র্সনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র; যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। এর আগে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়রা বলেছেন, সন্ধ্যার পর থেকে হালকা কুয়াশার সঙ্গে বেশ শীত অনুভূত হয়। রাতভর হালকা কুয়াশার ঢেকে থাকে এলাকা। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ঠান্ডার অনুভূতি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের কারণে গরম অনুভূত হয়। প্রতিদিনের মতো গত রোববার তাপমাত্রা কম থাকলেও সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলেছে। ঝলমলে রোদ ছিল। সদর উপজেলার বর্ষাইল এলাকার খোরশেদ আলম রাজু বলেন, দিনের বেলা রোদ ঝলমলে ও গরম আবহাওয়া থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই গায়ে পড়তে হয় শীতের কাপড়। ঘুমোতে গেলে কম্বল ছাড়া উপায় থাকে না। সদর উপজেলার কাঁদোয়া গ্রামের ভ্যানচালক মুন্টু মিয়া বলেন, ‘সন্ধ্যা পর হালকা বাতাস ও শীতের কারণে রিকশা চালানো কষ্ট হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত কুয়াশা ছিল। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ভ্যান চালানোই কষ্ট। সকালে যাত্রীও পাওয়া যায় না।’ বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকালের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা কমতে পারে।’
এদিকে, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে বাড়তে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জ জেলা জুড়ে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। গত কয়েকদিন ধরে হিমেল হাওয়ার দাপটে এখানকার নদী চরাঞ্চলের মানুষের জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বাতাসের তীব্রতা অনেকটাই বেশি থাকছে। তীব্র শীতে শিশু ও বয়স্করা মারাত্মকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জের গ্রামীণ জনপদগুলোতে শীতের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। এখানকার খেটে খাওয়া মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়- তাদের রোজগারে নেমেছে চরম দুর্ভোগ। বিশেষকরে পদ্মা ও যমুনা চরের মানুষের জীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তীব্র শীতের কারণে ভোরে কাজে বের হতে পারছেন না। ফলে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় তাদের দৈনিক আয় মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে তাদের কাজে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে সামান্য উষ্ণতা খোঁজার চেষ্টা করছেন। তীব্র শীতের কারণে ভোরবেলার গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।
বিশেষ করে সবজির পাইকারি বাজারগুলোতে লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কমেছে।
আবুল সরকারের মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান গেয়ে মানববন্ধন করলেন মেহেরপুরের বাউল সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় তাদের হাতে একতারা, দোতারা, হারমোনিয়াম, ঢোল আর নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র ছিল।
বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার সময় গাংনী উপজেলা শহরের কাঁচাবাজার এলাকায় এই মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে গান পরিবেশন করেন, আব্দুস সামাদ বাউল, ছন্নত বাউল, ভিকু বাউল ও মহিবুল বাউল।
মানববন্ধনে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি ও বাউলদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন।
আবুল সরকারের নিশর্ত মুক্তি দাবি করে বাউল সম্প্রদায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মজনুল হক বলেন, বাউল সম্প্রদায় শুরের মানুষ। আমরা কোন ফ্যাসাদ বুঝিনা, ভালবাসার মানবিক সমাজ বুঝি। আমরা মনের মানুষের সাথে মনের মিলন ঘটনাতে চাই। আমরা ভাই ভাই, জাতিগোত্র সম্প্রদায় মিলে আমরা সম্প্রীতির রাস্ট্র চাই। সমাজে কোন ধরণের অমানবিক কর্মকাণ্ড হোক আমরা চাইনা। আমাদের এই দেশ বহুজাতী, বহু মতের দেশ, বহু চেতনার দেশ। আমরা লালন করি বাউল দর্শন। আবুল সরকার তার গানের মধ্য দিয়ে অভিনয় করছিলেন, সেই গানের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যদি ভাষার ভুলত্রুটি হয়, তাহলে তাকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরেও বাউল আবুল সরকারের ক্ষমা হয়নি। তারপরেও তাকে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এগুলো একটি ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড আমরা এই ষঢ়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি চাই। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার ৩৫ জন বাউল অংশ নেন।
আওয়ামী লীগ ২০০৬ সালে কিলিং মিশনের মাধ্যমে মানুষ হত্যা শুরু করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভপতি জাহিদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধা স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে ছাত্র–যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতীতে রাজনৈতিক ইতিহাসে যে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তা বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ‘লগি-বৈঠা’ ঘটনা, পিলখানা হত্যা এবং শাপলা চত্বরের রাতের অভিযানসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন-এগুলো ছিল রাজনৈতিক নিপীড়নের ধারাবাহিকতা।
তার দাবি, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ‘জুডিশিয়াল কিলিং’–এর মাধ্যমে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনের সময়ও ছাত্র–জনতা, কৃষক–শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-এর জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা প্রমাণ করেছে- আমরা কোন কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্টের কাছে মাথা নত করব না। এই জাতি আবারো জানিয়ে দিয়েছে, জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যই সবচেয়ে শক্তিশালী।’
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে; কিন্তু দুঃখজনকহলেও সত্য অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট ছিল তাদের কাজগুলো বাংলাদেশের একটি দল সমাপ্ত করতে নিজের কাধে তুলে নিয়েছে।
আমরা চাই নীতি ও মূল্যবোধের রাজনীতি। চাই সম্মান ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে নতুন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। হত্যা–দখলদারিত্বের, চাঁদাবাজির রাজনীতি আমরা চাই না।
সমাবেশে জেলা ও উপজেলার জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগ ও ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন কেন্দ্রীয় এই শিবির নেতা। অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রোগ্রামে অংশ নেন প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। দীর্ঘ ২০ বছর পর কলেজ মাঠে উন্মুক্তভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সেমিনার ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করলেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। সরকারি সমন্বিত ভবনের মাল্টিপারপাস হলরুমে বৃহস্পতিবার ওই সেমিনারে প্রধান অতিথি ও সভাপতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ওয়াদিয়া শাবাব, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শামিম আহম্মেদ, জেলা মৈত্রী মিডিয়ার সেন্টারের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বাদল, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুবল বিশ্বাস, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা সেন্ট্রাল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর, সেক্রেটারি ইমদাদুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সবুজ মিয়া, জেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি এস আর শফিক স্বপন, সেক্রেটারি ও বাসস প্রতিনিধি বেলাল রিজভী, মেত্রী মিডিয়ার সেন্টারের সেক্রেটারি এস এম আরাফাত হাসান, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাব্বির হোসেন আজিজ, মাদারীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সেক্রেটারি মেহেদী হাসানসহ শতাধিক গণমাধ্যম কর্মী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার বেনজীর আহমেদ। নির্বাচন সংক্রান্ত পোস্টাল ভোট, পিআর, কেন্দ্র ও বুথের সংখ্যা, প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসার, এজেন্ট অন্যান্য বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা শামিম আজম্মেদ।
অনুষ্ঠানে নবাগত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম মাদারীপুরের সর্বস্তরের সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূর্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এজন্য সাংবাদিকদের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা, কেননা সাংবাদিকরা হচ্ছে দেশের আয়না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব আনসারসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করছি।
মেঘনার অথৈয় জলরাশির বয়ে চলার শব্দ আর জেলেদের কোলাহল। কাকডাকা ভোরে ঘুম ভাঙে মেঘনার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। এমন চিত্র দেখা মেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার এলাকায়। এখানে গড়ে উঠেছে মিঠাপানির ছোট মাছের বাজার। বৈদ্যেরবাজার ফিশারি ঘাট হিসেবে পরিচিত মেঘনা নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে এ বাজার। যা ছোট ও বড় মাছের বাজার হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন ভোররাত থেকে শুরু হয়, যা শেষ হয় সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে। এ মাছের বাজারে সারা বছরই থাকে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষা এ বাজারে ভোররাতেই আনাগোনা শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে পাইকার মহাজনরাসহ খুচরা ক্রেতারা এখানে আসে তাদের পছন্দের মাছ কিনতে। নৌকা ও ছোট-বড় ট্রলারে করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে আসছেন জেলেরা। এসব মাছের ডাকে (নিলাম) ওঠাচ্ছেন পাইকাররা। মাছ কিনে পাইকাররা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে পাওয়া যায় মেঘনা নদীর সুস্বাদু সব মাছ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টেংরা, পাবদা, মেনি, বাইলা, চিংড়ি, বাইম, পোয়া, কাজলি, কাচকি, মলা, বজরি, বইছা, পুঁটি, কই, শিং, টেকচাঁদা। এসব ছোট মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, আইড়, বাঘা আইড়, ইলিশ, বোয়াল, চিতলসহ বড় মাছও বিক্রি হয়।
ঢাকার রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে আসা মাহবুবুল আলম ও সাজ্জাদ মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসে এ ঘাটে মাছ কিনতে আসি। এখানকার মাছ তরতাজা ও সুস্বাদু হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের পছন্দের তালিকায় সব সময় শীর্ষে থাকে এ এলাকার ছোট মাছ।’
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মারুফ হাসান ও তার বন্ধু আকবর আলী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে তারা এ বৈদ্যেরবাজার থেকে মাছ কিনেন। এসব মাছ তারা তাদের স্বজনদের বাসায় পাঠান ও নিজেরাও খান। তারা আরও বলেন, এ এলাকার মাছ বেশ স্বাদ। তাই মাছ কিনতে লোকজন এ বাজারে ভিড় করেন। আগে মাছের দাম কম ছিল, এখন মাছের দামও একটু চড়া। দালালও ভড়ে গেছেন। মাছ কিনতে দালালদের মাধ্যমে কিনতে হয়।’
ঢাকার ডেমরা থেকে আসার মাছের আড়তের পাইকারি মাছ বিক্রেতা জসিমউদ্দিন বলেন, ‘মেঘনার তরতাজা ছোট মাছের কদর অনেক বেশি। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ভোজনরসিক মানুষ আগে থেকেই এসব মাছের অর্ডার দেন। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতাদের চাহিদা মতো বাসায় বাসায় আমরা এসব মাছ পৌঁছে দেই। এই মাছের স্বাদ যারা একবার নিয়েছেন, তারা ভুলতে পারেন না। এ জন্য অনেকে অগ্রিম অর্ডার করেন।’
বৈদ্যেরবাজার ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উজ্জল বলেন, ‘এই ঘাটে কুমিল্লার মেঘনা থানার বিভিন্ন এলাকা ও আড়াইহাজার ও সোনারগাঁয়ের নুনেরটেক এলাকার জেলেরা মাছ বিক্রি করতে আসেন। প্রতিদিন এখানে গড়ে ১৫-২০ লাখ টাকার শুধু ছোট মাছ বিক্রি হয়।’
সোনারগাঁ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আকতার বলেন, ‘এ ঘাটের মাছের খ্যাতি এখন ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে তাজা মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে এখানকার ছোট মাছ নিয়ে আমরা এখন গর্ব করতে পারি। এ মেঘনা নদীর ছোট মাছগুলো সুস্বাদু। এখানকার জেলেদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।’
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মাদকাসক্ত ভাতিজা ও চাচাতো ভাইয়ের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতি প্রায় ১৫ দিন নিজ বাড়িতেই গৃহবন্দী অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১ নম্বর জোয়ারী ইউনিয়নের কুমরুল গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ মোসলেম উদ্দিন ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগম এই নির্যাতনের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের ভয় ও আতঙ্কে তারা ঘরের ভেতরেই অস্থির অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ২২ নভেম্বর সকালে বাড়িতে একা পেয়ে মাদকাসক্ত দুই ভাতিজা তৌকির ও তারেক এবং চাচাতো ভাই ফিরোজ পরিকল্পিতভাবে মোসলেম উদ্দিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তার চিৎকারে মা খাদিজা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তারা প্রাণে রক্ষা পান। এরপর থেকেই অভিযুক্তরা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ দম্পতি। এতে ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। গুরুতর অসুস্থ হয়েও চিকিৎসা নিতে পারেননি তারা। ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর বৃদ্ধ দম্পতির জামাতা, অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা, বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে তাদের একমাত্র ছেলে মাসুম আহমেদও একই থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
এ নিয়ে থানার ওসি জানান, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সিনিয়র সিটিজেন হওয়ায় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্প্রতি নিবারক কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআর-এর ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
অভিযানকালে ৬,৩৪,৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লক্ষ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া ১০,২৯,০০০ পিস অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল/স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮.৫ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩,২২,৫০০ পিস বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রয় করছিল।
জব্দকৃত সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধারকৃত দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রয় কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
জাতীয় রাজস্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধে এনবিআর ভবিষ্যতেও আরও কঠোর ও ধারাবাহিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পদে রদবদল করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ রদবদল করা হয়।
বদলি বা পদায়নকৃত উল্লেখযোগ্য কর্মকর্তারা হচ্ছেন- মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জা অফিসার ইনচার্জ ডেমরা থানা, মো. জিয়াউর রহমান অফিসার ইনচার্জ আদাবর থানা, মো. মনিরুল ইসলাম অফিসার ইনচার্জ শেরেবাংলা নগর থানা, মো. ফজলে আশিক অফিসার ইনচার্জ কলাবাগান থানা, মো. রাজু অফিসার ইনচার্জ যাত্রাবাড়ি থানা, মো. রাকিবুল হাসান অফিসার ইনচার্জ গুলশান থানা, মো. সাজ্জাদ হোসেন অফিসার ইনচার্জ কাফরুল থানা, মো. হাফিজুর রহমান অফিসার ইনচার্জ হাজারীবাগ থানা, এ কে এম আলমগীর জাহান অফিসার ইনচার্জ পল্লবী থানা, মো. হাবিবুর রহমান অফিসার ইনচার্জ উত্তরখান থানা, গোলাম ফারুক অফিসার ইনচার্জ কামরাঙ্গীরচর থানা, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অফিসার ইনচার্জ ধানমন্ডি থানা, মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর অফিসার ইনচার্জ বনানী থানা।
এতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকায় কর্মরত নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক-গণকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জনস্বার্থে তাদের নামের পার্শ্বে বর্ণিত স্থানে বদলি/পদায়ন করা হলো।
এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে অফিস আদেশে জানানো হয়।
একইদিন ডিএমপি কমিশনারের আরও দুটি পৃথক আদেশে ১৪ জন উপ-পুলিশ কমিশনারের রদবদল করা হয়েছে। সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ বেবিচক এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি এর নির্দেশনায় “Airport Mini Fire Exercise 2025” সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (ICAO) নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমানবন্দরে দূর্ঘটনাপ্রবণ পরিস্থিতিতে সার্বিক অগ্নি নিরাপত্তা, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সমন্বয় এবং প্রতিক্রিয়া সময় মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
এই মহড়াটি বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। মহড়ায় বিমানবন্দর এর বিভিন্ন সংস্থা: এয়ার পোর্ট ফায়ার সার্ভিস (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), এভসেক, বেবিচক ফ্লাইট সেফটি (এজিএ ডিপার্টমেন্ট), এপিবিএন, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, এয়ারপোর্ট থানা, ডিরেক্টর ফায়ার, এয়ারপোর্ট স্বাস্থ্য বিভাগ এর সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স সহ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ফায়ার ইউনিট (ফায়ার ভেহিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ০২ ইউনিট (দিয়াবাড়ি ও উত্তরা), অ্যাম্বুলেন্স (জাহানারা ক্লিনিক, উত্তরা, ওমেনস মেডিকেল কলেজ, উত্তরা, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) এজেন্সিগুলো অংশগ্রহণ করে।
মহড়াটি ছিল ড্রাই এক্সারসাইজ, যেখানে আগুন প্রজ্বলন না করে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপণ প্রতিক্রিয়া, সমন্বয়, যোগাযোগ এবং অপারেশনের গতিশীলতা যাচাই করা হয়। বিশেষভাবে বিমানবন্দরের General Aviation এলাকাকে মহড়ার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং নিয়মিত ফ্লাইট অপারেশন স্বাভাবিকভাবেই রেখেই মহড়াটি সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) টাওয়ারে আগুন সংক্রান্ত কল জানার পরে তাৎক্ষণিকভাবে Emergency Operation Center (EOC) সক্রিয় করা হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জানানোর পর ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে অগ্নিনির্বাপক গাড়িগুলোর সর্বপ্রকার কার্যকারিতা নিরীক্ষা করা হয়।
মহড়াটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সকল অংশগ্রহণকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নিরাপদ, কার্যকর এবং সমন্বিতভাবে বিমানবন্দর পরিচালনা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের মহড়া অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।