কক্সবাজারের রামু উপজেলায় দুইজনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত দুজন সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। রোববার রাত ১টার দিকে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীরঘোনা এলাকার নজরুল ইসলামের চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুইজন হলেন-একই এলাকার জাফর আলম (৫৫) এবং তার ছেলে মো. সেলিম (৩৫)।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি কারা, কী কারণে ঘটিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জের ধরে জোড়া খুনের এ ঘটনা ঘটেছে।
ওসি আবু তাহের বলেন, ‘রোববার মধ্যরাতে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীঘোনা এলাকায় স্থানীয় স্টেশনের একটি দোকানে সেলিমসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় মুখোশ পরিহিত ১৫ থেকে ২০ জনের একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত অতর্কিত তার ওপর হামলা করে। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি কোপ দিলে তিনি চিৎকার করে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ছেলের চিৎকার শুনে তাকে লক্ষ্য করে বাবা জাফর আলম টর্চের আলো ফেলেন। পরে দুর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়।’
ওসি আরেও বলেন, দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা-ছেলেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতদের স্বজন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাতে স্থানীয় একটি দোকানে আড্ডা দেয়ার সময় মুখোশ পরিহিত একদল লোক ধারালো অস্ত্র ও গুলি করে বাবা-ছেলেকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে কোনো লোকজনের পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা জানি না।’
স্থানীয়রা জানায়, একই এলাকার ‘আবছার ডাকাত’ এবং ‘শাহীন ডাকাত’ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তার এবং বার্মিজ গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতে শাহীন ডাকাত গ্রুপের ১৪ থেকে ১৫ জন লোক চোরাচালানের গরু পার করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে আবছার ডাকাত গ্রুপের ২০ থেকে ২২ জন দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
ওসি আবু তাহের জানান, ঘটনার কারণ জানার পাশাপাশি জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (BG-148) দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা ফ্লাইটে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় অবতরণ করলে বিমানবন্দর গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর কাস্টমস এবং এ্যাভসেক এর বিমান বাহিনীর সদস্যগণ যৌথভাবে উক্ত ফ্লাইটের অভ্যন্তরের সকল যাত্রীদের বিশেষ নজরদারিতে রাখেন। গ্রীন চ্যানেল অতিক্রম করার সময় তল্লাশী করে ০৪ জন মহিলা যাত্রী, সামিয়া সুলতানা, শামিমা আক্তার, জয়নব বেগম এবং নুসরাত তাদের শরীরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত ভাবে রাখা ৩৫ টি আইফোন ১৭ প্র ম্যাক্স, ৫৫ টি আইফোন ফিফটিন এবং ১২ টি গুগল পিক্সেল ফোন সর্বমোট ১০২ টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে উক্ত যাত্রীগণ ফোন সম্পর্কে কোন তথ্য না দিতে পারায় বিমানবন্দর কাস্টমস ৯৮ টি মোবাইল ফোন ডিএম করেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সর্বমোট =১,৭৬,৪০,০০০/= (এক কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা)।
উল্লেখ্য যে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিনিয়ত চোরাকারবারিরা বিভিন্ন সময় স্বর্ণ, মোবাইল, সিগারেট পাচার করে থাকেন। যেসব বিমান দুবাই শারজাহ থেকে ঢাকায় আগমন করেন সেসব বিমানেই বেশী হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় বিমানবন্দরের কাষ্টমস ও অন্য সংস্থা কর্তৃক এদেরকে চেক দেওয়া হলে চোরাকারবারি তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। দুবাই, শারজাহর যে সব বিমান চট্রগাম হয়ে আসে সেসব বিমানে চোরাকারবারিরা চট্রগাম থেকে তাদের নিজস্ব কিছু লোক ঢাকা আসার জন্য ওঠে এবং বিমানের মধ্যেই কৌশলে স্বর্ণ, মোবইল হস্তান্তর করেন।
শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীতে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ ২০২৫ শীর্ষক একটি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
ICAO Standards and Recommended Practices (SARPs) এবং National Civil Aviation Security Programme (NCASP) এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি বিমানবন্দরে প্রতি দুই (০২) বছরের মধ্যে একবার Airport Security Exercise আয়োজন করা আবশ্যক। তারই ধারাবাহিকতায় হাইজ্যাক, বোমা হামলাসহ নানাবিধ ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতা যাচাই এবং অংশীজনদের প্রস্তুতি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়।
মহড়ার দৃশ্যপটে দেখা যায়, যশোর বিমানবন্দর থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইট গলফ ফক্সট্রট আলফা ওয়ান টু থ্রি দুই জন যাত্রী নিয়ে শাহ মখদুম বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। শাহ মখদুম বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে এবং জানায় যে যশোর বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা চার্টার্ড ফ্লাইটটিতে একটি বোমা রাখা আছে এবং যেকোনো সময়ে এটি বিস্ফোরিত হতে পারে। কন্ট্রোল টাওয়ার তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক ও সিকিউরিটি অফিসারকে জানালে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক রিস্ক এডভাইজরি গ্রুপ (RAG) কমিটির সাথে আলোচনা করে ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার Emergency Operations Center অ্যাক্টিভ করার নির্দেশ দেন। পরে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে Emergency Responding Activities পরিচালনা করেন।
এ মহড়ায় অংশগ্রহণ করেন বেবিচক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, ইসলামী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানের চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মোঃ আসিফ ইকবাল, বিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি) (Air Commodore Md Asif Iqbal, BUP, ndc, afwc, psc, GD(P))। উক্ত অনুষ্ঠানের অনসীন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শাহ মখদুম বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মোসাঃ দিলারা পারভীন (Mst. Dilara Pervin)।
শাহ মখদুম বিমানবন্দরে আয়োজিত “এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ–২০২৫”-এ প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সকল অংশীজনকে মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের মহড়া শুধু দুর্বলতা শনাক্তের সুযোগই সৃষ্টি করে না, বরং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় বৃদ্ধি করে যাত্রীসেবায় আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মহড়ার সফলতা সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দায়িত্বশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন এর মাধ্যমে যেকোনো অনভিপ্রেত পরিস্থিতি দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মহড়ায় অংশগ্রহণকারী সকল সংস্থার প্রস্তুতি ও দক্ষতা প্রত্যক্ষ করে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, প্রতিটি সংস্থা প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। সমাপনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি জাতীয় স্বার্থে আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।
মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (প্রশাসন) এস এম লাবলুর রহমান (S M Lablur Rahman) ও সদস্য (অর্থ) মোহাম্মাদ নাজমুল হক (Mohammad Nazmul Haque)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের কর্মকর্তাবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গ।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় রবি মৌসুমকে সামনে রেখে ২৫০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ধানের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় বোরো উফশী ও বোরো হাইব্রিড ধান এর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসব সার বীজ বিতরণ করা হয়। সোমবার সকাল ১০টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে এসব সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। সার ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনেআরা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নূর এ নবী, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা (সদর) জুনায়েদ হাবীব, সদর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মীর রাকিবুল ইসলাম।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, আসন্ন রবি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও হাইব্রিড ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সদর উপজেলার মোট ২৫০০ কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দুই হাজার কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ৫ কেজি বোরো (উফশী) ধানের বীজ ও ৫০০ কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ২ কেজি হাইব্রিড ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া উপকারভোগী প্রত্যেক কৃষককে ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে মোট ১১ মেট্রিক টন ধানের বীজ ও ৪০ মেট্রিক টন সার বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
পাবনার সাঁথিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুটি বসতঘর পুড়ে গেছে। গত রোববার রাত ৩টার দিকে সাঁথিয়া পৌরসভাধীন কালাইচাড়া গ্রামের আবু ইউসুফ মোল্লার ছেলে সমির উদ্দিন মোল্লার বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। এতে তার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাড়ির মালিক কৃষক সমির উদ্দিন মোল্লা দাবি করেন। বাড়ির মালিক সমির উদ্দিন মোল্লা জানান, রাতে খাওয়া শেষে ঘুমানোর পর রাত ৩টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরে আগুন ধরে গেছে। সাঁথিয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর প্রাণপণ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখায় বসতঘরসহ দুটি ঘর এবং ঘরে রক্ষিত ধান, পাট, চাল, পেঁয়াজ, গম, হাঁস মুরগি, ছাগল, নগদ টাকা ও আসবাবপত্র পুরে সব ভস্মিভূত হয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বাড়ির মালিক সমির উদ্দিন মোল্লা বলেন, আগুনে আমার দুটি টিনের ঘর ও মালামালসহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সব হারিয়ে আমি নিঃশ্ব হয়ে গেলাম। বিত্তবান ও সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে পরিবার নিয়ে বাঁচতাম ও মাথা গোজার ঠাঁই হতো।
সাঁথিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দাসুদেব সরকার জানান, আগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা রাত ৩ টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক আসিফ রায়হান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পৌরসভার পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের দুর্ঘটনায় পৌরসভা সবসময় সবার পাশে থাকবে।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিজু তামান্না বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগুনে বাড়ি পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন সবসময় অসহায় মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে।’
শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্রাম্যমাণ শীতের পোশাকের বাজার। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ড পৌর ফল মার্কেট সংলগ্ন ফুটপাতজুড়ে অস্থায়ী দোকানগুলোতে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে পুরো এলাকা এখন শীতের বাজারে মুখর।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিশুদের সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, কম্বল, মাফলার, টুপি থেকে শুরু করে বয়স্কদের শাল, সুয়েটার ও জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। তুলনামূলক কম দামে এসব পোশাক পাওয়া যাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষেরাই এখানকার প্রধান ক্রেতা।
ক্রেতা শরিফুল ইসলাম জানান, বড় বড় শপিং মলে গিয়ে সাশ্রয়ী দামে শীতের কাপড় পাওয়া কঠিন। সেখানে যে দামে পাওয়া যায়, ফুটপাতে তার অর্ধেক দামেই ভালো মানের পোশাক মিলছে। তাই পরিবারের সবার জন্য প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় এখান থেকেই কিনেছেন তিনি।
স্থানীয় গার্মেন্টস কর্মী আছিয়া বলেন, ‘আমার বেতন কম, সংসারের খরচ বেশি। বড় শপিং মল থেকে কেনাকাটা করা সম্ভব নয়। তাই বাচ্চাদের জন্য ফুটপাত থেকেই শীতের কাপড় কিনছি। আমরা বড়রা শীত সহ্য করতে পারি, কিন্তু বাচ্চারা পারে না। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
ফুটপাতের বিক্রেতা মেবারক মিয়া জানান, শীত পড়তেই বেচাকেনা অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতারা আসছেন। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের কাপড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অনেকেই একসঙ্গে দুই-তিনটি করে সোয়েটার, টুপি ও মোজা কিনে নিচ্ছেন।’
এদিকে রাস্তার পাশে দোকান বসানোর কারণে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা এখন উৎসবমুখর। শীত আরও বাড়লে বেচাকেনাও আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ইতিহাসে ১ ডিসেম্বর দিনটি শুধু একটি তারিখ নয়- এটি এক বেদনাঘন অতীত, এক রক্তঝরা স্মৃতি, এক গভীর শোকের দিন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ প্রহরে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের ন্যাশনাল জুট মিলে সংঘটিত হয়েছিল দেশের অন্যতম নৃশংস গণহত্যা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পৈশাচিক ব্রাশ ফায়ারে মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারান ১৩৬ জন নিরীহ শ্রমিক, কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধার সহযোগী। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সংঘটিত এই হত্যাযজ্ঞ আজও প্রজন্মকে নাড়া দিয়ে যায়।
সোমবার শীতের কুয়াশায় মোড়া সকাল যেন আরও বিষণ্ণ হয়ে ওঠে শহীদদের স্মরণে। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সর্বস্তরের মানুষ শহীদ গণকবরস্থানে পৌঁছে একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মুহূর্তেই পুরো এলাকায় নেমে আসে নিস্তব্ধতায়। শহীদদের নামে শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের চোখে ছিল অশ্রুসিক্ত শোক, হৃদয়ে বেদনার ঢেউ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন স্থানীয় আলেমরা।
বিভিন্ন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণরা জানান, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর সকালে শ্রমিকরা যখন নাস্তার বিরতিতে ছিলেন, ঠিক তখনই শীতলক্ষ্যা নদীর ওপার ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি সেনারা নদী পেরিয়ে হঠাৎ আক্রমণ চালায়।
মিলের ভেতরে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম করে একে একে শ্রমিক, কর্মকর্তা ও সাধারণ কর্মচারীদের ধরে ফেলে। এরপর মিলের পশ্চিম পাশে লাইনে দাঁড় করিয়ে বর্বর ব্রাশ ফায়ার চালানো হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলতে থাকা এই বর্বরতায় প্রাণ হারান ১৩৬ জন বাঙালি।
ভয়াবহতার চিহ্ন- ৩ দিন লাশ পড়ে থাকে মিল প্রাঙ্গণে হত্যাকাণ্ড শেষে পাকিস্তানি বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেওয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। আতঙ্কে কেউ মিলের ভেতরে প্রবেশ করতে সাহস করেননি টানা ৩-৪ দিন। স্বাধীনতার পর এলাকাবাসী মিলের ভেতরে ঢুকে দেখতে পান- অগণিত বিকৃত লাশ, গলিত দেহাবশেষ এবং শনাক্তকরণ অসম্ভব হয়ে পড়া বহু শহীদের অবশিষ্টাংশ। পরে মিলের দক্ষিণ পাশে বড় একটি গর্ত করে সবাইকে গণকবরে দাফন করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভ ও মসজিদ- যে স্থাপনা ধরে রেখেছে বেদনার ইতিহাস। শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে মিল কর্তৃপক্ষ গণকবরস্থলে নির্মাণ করেছে ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’ শিরোনামের একটি স্মৃতিস্তম্ভ।
এছাড়া শহীদদের রুহের মাগফিরাতের জন্য সেখানে একটি পাকা মসজিদও নির্মাণ করা হয়েছে। এসব স্থাপনা আজও মনে করিয়ে দে- এই মাটিতে ১৩৬ জন বীরের রক্তের দাগ লেগে আছে। এই গণহত্যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত, বেদনাবিধুর অধ্যায় হিসেবে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে।
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে প্রকৃতিরও রূপ বদলায়। আর সেই সূত্র ধরেই চলনবিল কখনো থৈ থৈ পানিতে টইটম্বুর- মাছের ভাণ্ডার, কখনো মাঠজুড়ে ফসলে ভরা সবুজের সমারোহ, কখনো মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ আবার কখনো পাখির কলরবে মুখর পরিবেশ।
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত চলনবিল এখন নানা অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত। প্রতি বছরের মতো এবারও খাবারের সন্ধানে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে নানা রূপ বৈচিত্র্যের পাখি। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে মিঠা পানির মাছের সন্ধানে এসব অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে বিলটিতে। শীত মৌসুমে অতিথি পাখির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল। বিলে পাখিদের কোলাহল, কলরব, ডানা মেলে অবাধ বিচরণ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। অতিথি পাখিদের আগমনে পুরো চলনবিল এলাকাই এখন দৃষ্টিনন্দন।
‘চলনবিলের ইতিকথা এবং জেলা পাবনার ইতিহাস’ গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগের ৬ জেলার ১ হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ছিল চলনবিল। বর্তমানে সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরের তিন জেলার ১০টি উপজেলার ৬২টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৬০০ গ্রাম নিয়ে বৃহত্তর চলনবিল। বিলে রয়েছে ২১টি নদ-নদী, ৭১টি নালা-খাল ৯৩টি ছোট বিল। ১৮২৭ সালে জনবসতি এলাকা বাদ দিলে চলনবিলের জলমগ্ন অংশের আয়তন ছিল ৫০০ বর্গমাইলের বেশি। ১৯০৯ সালে চলনবিল জরিপের এক প্রতিবেদনে চলনবিলের আয়তন দেখানো হয় ১৪২ বর্গমাইল। এর মধ্যে ৩৩ বর্গমাইল এলাকায় সারা বছর পানি জমে থাকে। যদিও অনেকগুলোর অস্তিত্ব এখন আর নেই।
সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বরে চলনবিল থেকে পানি নামতে শুরু করে। এ সময় খাবার সংগ্রহের জন্য চলনবিলে ঝাঁকে ঝাঁকে বক, কানা বক, ইটালি, শর্লি, পিয়াজ খেকো, ত্রিশুল, বাটুইলা, নারুলিয়া, লালস্বর, কাঁদোখোচা, ফেফি, ডাহুক, বালিহাঁস, পানকৌড়ি, শামকৈলসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে আগমন করছে। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এই সকল পাখি চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে ও গাছে অবস্থান করে। তবে কিছু দেশি প্রজাতির পাখি সবসময় থাকে এই বিলে। সাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও অতিথি পাখি আসে এই চলনবিলে।
স্থানীয়রা জানান, ‘বর্তমানে পাখিপ্রেমীরাও হরেক রকম পাখি দেখতে আসছেন এ বিলে। চলনবিলে সাধারণত হারগিলা, ভাঁড়ই, ছোট সারস, শালিক, চড়ুই, বড় সারস, কাঁদোখোঁচা, নলকাক, ডাহুক, হুটটিটি, চখাচখি, বুনোহাঁস, রাতচোরা, বালিহাঁস, বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়। তবে এ বছর বালিহাঁস, বক ও রাতচোরা প্রজাতির পাখি বেশি দেখা মিলছে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারি এ সুযোগে জাল, বিষটোপ, কারেন্ট জাল, বিভিন্ন ধরনের ফাঁদে প্রাণ দিচ্ছে বিভিন্ন জাতের পরিযায়ী পাখি ও খাঁচার মাধ্যমে অতিথি পাখি শিকার করছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
প্রত্যন্ত বিলাঞ্চল থেকে শিকার করা এ সকল পাখি বারুহাঁস, বস্তুল, দিঘরীয়া, গুল্টা, রানীরহাট, বিনসাড়া, ভাদাস, নাদোসৈয়দপুর, গুরুদাসপুর, কাছিকাটাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে বিক্রি করা হয়। প্রতিটি বক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, রাতচোরা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা জোড়া, বালিহাঁস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করছে। তবে ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান থাকলেও তার কোনো প্রয়োগ নেই।
পরিবেশবিদরা জানান, পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বাড়ায় না, পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকামাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। কিন্তু কিছু অসাধু চক্র আইন অমান্য করে পরিযায়ী পাখি শিকারে তৎপর হয়ে উঠেছে। এমনটা চলতে থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
পরিবেশ অধিদপ্তর নাটোরের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এগুলো আমাদের কাজ নয়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তর আছে, আপনারা তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
পাবনা জেলা প্রশাসক শাহেদ মোস্তফা দৈনিক বাংলাকে বলেন, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণ ও পাখি শিকারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির দৈনিক বাংলাকে বলেন, আপনারা জানেন চলনবিল একটা দুর্গম এলাকা, সেখানকার বিচ্ছিন্ন চলাচল ব্যবস্থা আমাদের প্রতিবন্ধকতা। তারপরও আমরা নিয়মিত জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখি রক্ষায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
জামালপুরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদে ও ৪ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে পূর্ন কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই জেলার সবগুলো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নিজ নিজ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে করে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্ধের দিনগুলোতে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর কথা জানান শিক্ষকরা।
চার দফা দাবী গুলো: পৃথক অধিদপ্তরে শিক্ষকদের এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড ধরে ৪ স্তর বিশিষ্ট পদ সোপান। বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান। দীর্ঘদিন প্রমোশন বঞ্চিত শিক্ষকদের দ্রুত প্রমোশনের ব্যবস্থা করা ও অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য অ্যাডভান্স ইনক্রিমেন্ট আগের মত বহাল রাখার দাবি জানান।
কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ–রুটে নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় মা–মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপমুখী স্পিডবোট নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে উল্টে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-সেন্টমার্টিন পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মরিয়াম খাতুন (৩৫) ও তাঁর ৫ বছর বয়সী মেয়ে মাহিমা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন,“সেন্টমার্টিন থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় পৌঁছালে প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে কাছাকাছি থাকা একটি স্পিডবোট গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে। এতে মা–মেয়ে দুজন প্রাণ হারান।”
নিহত মরিয়ামের ভাই বশির আহমেদ জানান,“বোন আর ভাগনিটিকে নিয়ে টেকনাফে ফিরছিলাম। হঠাৎ ঢেউ এসে স্পিডবোট উল্টে দেয়। পরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বোনের ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল—সেই পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।”
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসিফ আলভী বলেন,“হাসপাতালে আনার আগেই মা–মেয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত আরও দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরী বলেন,“দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। কীভাবে স্পিডবোটটি উল্টে গেল, তা তদন্ত করা হচ্ছে।”
রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় ভেজাল সারবিরোধী বিশেষ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শরীফ নেওয়াজ। প্রসিকিউশনে ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অভিযান চলাকালে ভেজাল সার বিক্রির দায়ে সাগর দত্ত কাটি গ্রামের নলিনী কান্ত বৈরাগীর পুত্র সুশান্ত বৈরাগী (৫৪)–কে ভোক্তা অধিকার ও সংশ্লিষ্ট আইনের আওতায় ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়। পাশাপাশি জব্দ করা ভেজাল সার ঘটনাস্থলেই বিনষ্ট করা হয়।
জনস্বার্থে ভেজালবিরোধী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
খুলনায় আদালতের সামনে প্রকাশ্যে দুইজনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে আসেন রূপসার বাগমারা এলাকার রাজন ও হাসিব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানা, জামিনে থাকা ওই দুই আসামি আদালতে হাজিরা দিয়ে আদালত ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রেখে চা পান করতে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচজন দুর্বৃত্ত হেঁটে এসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা দুজন মাটিতে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তাদের। দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।
এদিকে, এ ঘটনার কারণে পুরো আদালত চত্বরে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আদালতের আইনজীবীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জামিনে থাকা দুই আসামি হাজিরা শেষে আদালত ফটকের সামনে মোটরসাইকেল রেখে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচজন হামলাকারী হেঁটে এসে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।’
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভেলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইবি শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বরিশাল জেলাকে ভোলা জেলার সাথে যুক্ত করা ২২ লাখ ভোলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। ভোলা জেলা বাংলাদেশের একটি ব-দ্বীপ এলাকা যেখানে ৫৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাস মজুত রয়েছে। এখান থেকে রাষ্ট্র নিচ্ছে কিন্তু আমাদের সহযোগিতা করছে না। আমরা চিকিৎসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। একটি রোগী যদি ভোলা থেকে রেফার করা হয় বরিশালে কিন্তু নদীতে ঝড়-তুফানের কারণে ওই স্থানে তাকে মৃত্যুর শয্যায় শয্যায়িত হয়ে হয়। একজন শিক্ষার্থীকে চাকরি পরিক্ষার জন্য রাজধানীতে সঠিক সময় উপস্থিত হতে পারছে না কারণ রাতে লঞ্চ পারাপার বন্ধ থাকে।
তারা আরও বলেন, ভোলা ও বরিশাল জেলায় সেতু এখন সময়ের দাবি। ইন্টিরিম সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। এদিকে সেতু উপদেষ্টা ভোলা জেলায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিল যে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কার্যক্রম শুরু করবেন। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারেন নাই। তারা অজুহাত দিচ্ছেন পরিবেশের নাকি সমস্যা হবে। আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে। ভোলা জেলা থেকে আপনারা সম্পদ আহরণ করছেন; কিন্তু বিনিময় কী দিচ্ছেন? ১৭ হাজার কোটি টাকার সেতু স্থাপন করে সহযোগিতা করতে পারছেন না। ইন্টিরিমের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো আরও সমৃদ্ধ করতে ভোলা জেলায় সেতু স্থাপন করে আশার আলো দেখাবে বলে প্রত্যাশা করি।
ফেনীতে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আসামি গ্রেপ্তার, প্রসেস জারি, তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও চার্জশিট দাখিল, ফৌজদারী কার্যবিধি ও মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। গত শনিবার বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ এর সভাপতিত্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
ওই কনফারেন্সে ফেনী জেলা প্রশাসক এর প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার এর প্রতিনিধি, সিভিল সার্জন এর প্রতিনিধি, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, সহকারী পরিচালক, বিজিবি, ব্যাটলিয়ন ৪, ফেনী, র্যাব-০৭ এর প্রতিনিধি এবং জেলার বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাসহ ফেনী জেলায় কর্মরত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেটরা, সিআইডিসহ সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য ইউনিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই কনফারেন্সে ফোকাল পার্সন হিসেবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট কাজী মো. আবু জাহের বাদল।
কনফারেন্সে আদালত চত্বরসহ অন্যান্য সরকারি অফিসের নিরাপত্তা জোরদার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়াও কনফারেন্সে আসামি গ্রেপ্তার, প্রসেসজারী, তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও চার্জশীট দাখিল ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টসহ সাক্ষী উপস্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়।
কনফারেন্সে বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ আদালত চত্বরের নিরাপত্তাসহ সরকারি অফিসসমূহের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।
মামলার সিংহভাগ কাজই তদন্তকারী সংস্থা করে থাকেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, মেডিকেল সনদ, আলামত জব্দকরণ, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন সংগ্রহ, ডিএনএ টেস্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, ভিকটিমের জবানবন্দি, বিশেষজ্ঞের মতামত, এজাহারকারী/ নালিশকারীর বক্তব্য রেকর্ড ও সংগ্রহে বিচ্যুতি হলে মামলায় বিরূপ ফল হয়। এজন্য সকল তদন্তকারী সংস্থা ও এজেন্সিকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ
করে দ্রুত মামলা নিস্পত্তির স্বার্থে মেডিকেল সনদ সরবরাহসহ পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দ্রুত সরবরাহের জন্য সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিকে আরও দায়িত্ববান হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুত মামলা নিস্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট মামলার সাক্ষী উপস্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ গুরুত্বসহকারে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকদেরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।