বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১ আশ্বিন ১৪৩২

টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে ২ রেল নিরাপত্তা সদস্য আটক

টিকিটিসহ আটক রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ২ সদস্য
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৪ জুলাই, ২০২২ ০৮:৪৬

চট্টগ্রামে রেলের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৭। তাদের নাম- হাবিলদার রবিউল হোসেন (৩৯) ও সিপাহী ইমরান হোসেন (২৭)। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম জিআরপি থানার পাশ থেকে তাদের আটক করা হয়।

র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) জ্যৈষ্ঠ এএসপি মো. নুরুল আবছার দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদে জানা যায়, চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের রেলওয়ে থানার (জিআরপি) পাশে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পোশাক পরিহিত অবস্থায় উচ্চমূল্যে রেলের টিকিট বিক্রি করছে। এ তথ্যে রাতে অভিযান চালিয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে টিকিটসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। এসময় ঢাকাগামী বিভিন্ন ট্রেনের ৯ টি টিকিটি ও টিকিটি বিক্রির ১০ হাজার ৩২০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা টিকিটি কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জুলাই থেকে রেলের অগ্রীম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রথম দিন বিক্রি করা হয় জুলাইয়ের টিকিট। অগ্রীম টিকিট বিক্রির শেষদিন মঙ্গলবার। এদিন জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে। একইদিন সকাল ৭টায় ঈদে ঘরমুখো মানুষ নিয়ে প্রথম চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে সূবর্ণ এক্সপ্রেস।

বিষয়:

লালপুরে ৭ দফা দাবিতে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে শ্রমিকদের গেট মিটিং

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের লালপুরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ৭ দফা দাবিতে গেট মিটিং (ফটক সভা) করেছে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার মিলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তাদের উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- পে-কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো ওয়েজ কমিশনের শ্রমিকদের ৫ শতাংশ প্রণোদনার বকেয়া ও ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধার টাকা প্রদান, দক্ষ জনবল তৈরির স্বার্থে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ী পদে অভ্যন্তরীণভাবে সমন্বয় বা পদায়ন, মৌসুমি ও স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে কর্মরত দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নীতিমালা অনুযায়ী হাজিরা প্রদানসহ অন্য আরও ৪টি দাবি জানানো হয়।

সভায় শ্রমিক-কর্মচারীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভুগছেন তারা। বকেয়া প্রণোদনার টাকা না পাওয়া এবং মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ী পদে সমন্বয় না হওয়ায় কর্মপরিবেশ দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাত দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। একই সঙ্গে চিনিশিল্পকে দুর্নীতি মুক্ত করারও দাবি জানান শ্রমিক-কর্মচারীরা।

গেট মিটিংয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের সিবিএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম অমলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন পিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মমিন প্রমুখ।


ত্রিশালে ননী ফল চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন রফিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোক্ষপুর ইউনিয়নের কৈতরবাড়ী গ্রামের রফিকুল ইসলাম ননী ফল চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। তিনি প্রবাস থেকে ফিরে এসে প্রথমে কমলা ও খেজুর বাগান করেছিলেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। এরপর তিনি ঔষধি বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি তার দুই একর জমিতে ননী ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। বাগানে ৩০০টি ননী ফলের গাছ রয়েছে। বর্তমানে গাছগুলোতে ফল ধরেছে। ননী ফল সাধারণত ক্যান্সার প্রতিরোধক এবং আরও অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বলে পরিচিত। দেশ-বিদেশে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়া যায়।

রফিকুল ইসলামের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তার বাগান থেকে ননী ফল ও এর গাছের পাতা সংগ্রহ করতে আসেন। ঢাকার বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি তার কাছ থেকে ফল সংগ্রহ করেন। এই ফল চাষে তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করছেন।

রফিকুল ইসলাম জানান, ননী ফলের অনেক গুণাগুণ, তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা তার বাগান থেকে এটি সংগ্রহ করছেন। এতে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান। তিনি সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে ননী ফলের চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান জানান, আমি শোনেছি তিনি একজন ভালো উদ্যোক্তা। তার বাগানে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ রয়েছে। আমি সরেজমিনে গিয়ে বাগানটি পরিদর্শন করব এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।


দিনাজপুরে আউশের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দিনাজপুর জেলায় এবার আধুনিক প্রদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা আউশ ধানের বাম্পার ফলন অর্জিত করতে সক্ষম হয়েছে। এতে খুশি কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আউশ ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে হয়েছে।
কৃষি বিভাগের গবেষণায় উদ্ভাবন করা উপশী জাতের ব্রি-৯৮ আউশ ধান চাষে জেলায় বাম্পার ফলন অর্জিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার ১৩টি উপজেলায় ৫ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। মৌসুমের শুরুতেই গত মে মাসে জেলার ১৩টি উপজেলাতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে আউশ ধানের নতুন উদ্ভাবন করা ব্রি-৯৮ জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বিতারণ করা হয়েছিল।
আউশ ধান চাষ সফলভাবে অর্জিত করতে, কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়ে আউশ ধান চাষে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
জেলা সদর উপজেলার চেহেলগাজী ইউনিয়নের কর্ণাই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. রেজাউল করিম জানান, কর্ণাই গ্রামে সমবায় ভিত্তিতে কৃষকরা এবার আউশ ধানের ব্রি ধান-৯৮ জাত চাষ করেছেন। আউশ ধান চাষের সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে অর্জিত ফসল ঘরে তুলতে পেয়ে কৃষকরা খুব খুশি। এক একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মণ ধানের ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের বিনা মূল্যে দেওয়া বীজ, সার ও কীটনাশক ধান চাষে ব্যবহার করে অনাবাদি জমি অধিক উৎপাদনশীল হয়ে উঠেছে। বর্তমান বাজারে কাঁচা ধান সাড়ে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ধানের খড় বিক্রি করে বাড়তি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ধান বিক্রির পাশাপাশি খড় বিক্রিতেই কৃষকরা তাদের খরচের একটা অংশ ওঠাতে পারছেন।
জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মহনপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. শরিফুল ইসলাম (৪২) জানান, চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে বীজতলা তৈরি করে ব্রি-৯৮ জাতের আউশ ধান চারা রোপণ করা হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরামর্শে সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। ভাদ্র-আশ্বিনের এই সময় মাঠজুড়ে অর্জিত আউশ ধানের সোনালি শোভা কৃষকদের মন ভরে তোলেছে। কৃষকরা তাদের অর্জিত ধান কাটতে শুরু করেছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ধানকাটা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধান কাটার পর আবার ওই জমিতে আগাম জাতের আলু চাষের প্রস্তুতি শুরু করবেন কৃষকরা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কৃষকরা আউশ ধান ঘরে তোলে, আবার ওই একই জমিতে আলু চাষ করার পরিকল্পনা করেছে।
সদর উপজেলার, কর্ণাই গ্রামের কৃষকরা বলছেন, নতুন জাতের আউশ ধান চাষে সাফলতা তাদের এনে দিয়েছে। ওই গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রাজ্জাক (৪৭) জানান, এ বছর তিনি ৭৫ শতক জমিতে আউশ ধান চাষ করেছে। তার অর্জিত জমি থেকে ৬৫ মণ আউশ ধান পেয়েছে। ওই ধান বিক্রি করে আগাম জাতের আলুর চাষ করবেন।
ওই গ্রামের আদিবাসী কৃষক লুকাস মার্ডী বলেন, গত বছর থেকে সমবায় ভিত্তিতে আউশ ধান চাষ শুরু করেছি। এবার উন্নত জাতের ব্রি ধান-৯৮ আউশ ধানের আবাদ করেছি এবং বেশ ভালো ফলন পেয়েছি।
সমবায়ের মাধ্যমে আউশ ধান চাষ করায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম এবং ভালো ফলন অর্জিত হয়েছে।
আগামী বছর এই জাতের আউশ ধান বেশি করে আবাদ করার আশা রয়েছে তার।
অপর কৃষক মৃণাল কান্তি জানান, তিনি দেড় একর জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছে। এখন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়ে গেছে। এই সময়টা কৃষকদের কিছুটা অভাব থাকে। এখন ধান ঘরে তোলা কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। ধান বিক্রি করে আলু চাষের খরচ পুষিয়ে যাবে।
সদর কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলের জমি একটু উচুঁ এবং লালমাটি হওয়ায় শুধু রবি শস্যে চাষে ব্যবহার করা হতো। আমন বা ইরি-বোরো ধান এখানে চাষ করা হতো না। সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আউশ চাষ শুরু করা হয়েছে। এখন সেই জমিতেই ৩টি করে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে বিনা মূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ দিয়ে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায়, কৃষকরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম জানান, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলা ৬৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষে বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আউশ ধান চাষে কৃষকরা স্বল্প সময়ে ফলন পেয়েছেন। নতুন উদ্যোগ গ্রহণে আউশ ধান চাষে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আগামীতে আরও অধিক কৃষক আউশ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, সে বিষয় কৃষি বিভাগ কাজ করছেন বলে তিনি ব্যক্ত করেন।


সুনামগঞ্জে পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠনের যৌথ মানববন্ধন

পরিবেশবাদী সংগঠনের যৌথ মানববন্ধন। ছবি: দৈনিক বাংলা 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

‘হাওর ভরাট ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’- এই স্লোগানের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে

সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠন মঙ্গলবার দুপুরে যৌথভাবে

মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেছেন,

‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নে বিভোর, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক, সে জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চাই আমরাও। তবে এর প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তন করতে হবে।

মানববন্ধনে ‘আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদ’ এবং হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারাও সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন।

সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি। পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ

পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) সভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. তৈয়বুর রহমান বাবুল, পরিবেশবাদী সংগঠন হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম-সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা আহ্বায়ক, যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমনুদ্দোজা আহমদ, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইজাজুল হক চৌধুরী নাছিম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ফসলি হাওর ‘দেখার হাওর’। এই হাওরে এসে সংযুক্ত হওয়া মহাসিং নদী এবং এর শাখা উপশাখা, অসংখ্য জলমহাল, খাল- বিল, নদী মিলিয়ে অর্ধ শতাধিকেরও বেশি জলাশয় রয়েছে। হাওরে কেবল জমির পরিমাণ ৪৫ হাজার ৮৫৯ হেক্টর। এর মধ্যে কৃষি ২৪ হাজার ২১৪ এবং অকৃষি ২১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর। হাওরের একাংশে (শান্তিগঞ্জের জয়কলস মৌজায়) ১২৫ একর বোর জমি (আংশিক আমন, পতিত ও গুরস্থান) অধিগ্রহণ করতে চায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস করতে চান তারা, এর দুইপাশে থাকা দুটি ব্রিজের নিচ দিয়ে হাওরের পানি প্রবাহিত হয়ে কালনী নদীতে গিয়ে মিশেছে।

পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘কোথায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে, এই প্রস্তাব আমরা দিচ্ছি না। তবে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হতে হবে। হাওর ভরাট করে বিশাল ক্যাম্পাস হলে বৃহৎ এই হাওরের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। দুটি ব্রিজের (আহসান মারা ও জয়কলস) নিচ দিয়ে যাওয়া খালে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে বোর জমি ও জলাশয়ের ক্ষতি হবে। যার নেতিবাচক প্রভাব সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ পূর্ব এলাকার জনবসতির ওপর পড়বে।

প্রসঙ্গত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে (২০২৩-২৪) শিক্ষাবর্ষে রসায়ন, গণিত, পদার্থ ও কম্পিউটার বিষয়ে ১২৮, দ্বিতীয় ব্যাচে (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষে ১৪৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এখানে ১৭ জন শিক্ষক এবং ২৭ জন স্টাফ রয়েছেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কিছু ভবন, একটি মাদ্রাসা, একটি কলেজসহ কিছু ঘরবাড়ি ভাড়া নিয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির সুত্র (স্মারক নম্বর ৩৭.০০.০০০০.০৭৬.৯৯.০০২-১৪১) উল্লেখ করে লেখেন- গেল চার জুন ২০২৩ তারিখে স্মারক নম্বর সুবিপ্রবি/১৪৭ মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় বরাবর সুনামগঞ্জ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণের ও প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। ওই পত্রের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১২৫ (একশ’ পঁচিশ একর) জমির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করেছেন। এরপর জেলাবাসী ও পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলন এবং একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় জমি অধিগ্রহণের অগ্রগতি স্থগিত রয়েছে।


ডাসারে হতদরিদ্র্য পরিবার সরকারি সাহায্য থেকে সুবিধাবঞ্চিত

এই ঝুপড়ি ঘরে থাকে হতদরিদ্র্য পরিবারটি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূয়ালী গ্রামের মো. আমির ঘরামীর ছেলে দিনমজুর রুবেল ঘরামী। বসবাস করেন একটি ঝুপড়ি ঘরে। অভাব-অনটন ও নিদারুণ দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনোদিন এক-আধ বেলা খেয়ে না খেয়ে সংসারের ঘানি টেনে জীবনযাপন করছেন। যেদিন দিনমজুরের কাজ না জোটে সেদিন মানুষের কাছে হাত পেতে, সাহায্য-সহযোগিতা চেয়ে যা জোটে তাই নিয়ে কখনো খেয়ে, কখনো আধাপেটা খেয়ে-না-খেয়ে থেকেও তার ও পরিবারের সদস্যদের কষ্ট করতে হয়।

কৃষিকাজ, দিনমজুরী করে কোনোরকমে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বেঁচে আছেন তিনি। নিরিহ প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় এলাকার মানুষেরা তাকে ভালোবেসে অনেক সময় সাহায্য সহযোগিতাও করেন। তবে আজও তাদের পরিবারটি কোনো ধরনের সরকারি-বেসরকারি গৃহ কিংবা আর্থিক অনুদান পায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবেল মানুষের জমিতে কাজ করে সামান্য যা আয় করেন, তা দিয়ে ঠিকমতো খাবার জোটানোও সম্ভব হয় না। অনেক সময় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয় তাদের। অত্যন্ত গরীব ও সরলসোজা প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের চোখেও তিনি তেমন পড়েন না। অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত সহজ-সরল এ গরীব মানুষ ও পরিবারটি সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় পড়ার যোগ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর অনেকেই সরকারি ঘর ও অন্যান্য অনুদান পেলেও প্রকৃত হতদরিদ্র্য ও অসহায় পরিবার রুবেল ঘরামী চোখের আড়ালে পড়ে সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফ-উল-আরেফিন বলেন, পরিবারটির বিষয়ে আমরা জেনেছি। অতি দ্রুত তাদের একটি সরকারি ঘর এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও সরকারের গৃহীত সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় আরো যে সব কর্মসূচী চলমান রয়েছে- পর্যাক্রমে সেগুলোরও আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে এ অসহায় পরিবারটির জন্য।


লাল মাটিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বাণিজ্যিক পেঁপে চাষে সফল কৃষক

মধুপুরে কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা
মধুপুর গড়ে পেপে বাজারজাত করার জন্য প্যাকিং করা হচ্ছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাবিবুর রহমান, মধুপুর (টাঙ্গাইল)

মধুপুরের প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে আনারস কলার পরেই পেঁপে তৃতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে। এক সময় আনারস ছিল প্রধান অর্থকরি ফসলের তালিকায় সেরা।

কলার পরেই এখন পেঁপে। পেঁপে দীর্ঘদিন চাষাবাদ হলেও অন্যান্য ফসলকে টপকাতে

পারেনি। উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপের বীজ বাজারে আসার পরেই সূচক এগিয়ে যায়। এক লাফেই এগিয়ে যায় কয়েকধাপ।এখন চাষিরা মনে করছে কলাকে পিছনে ফেলে যেতে পারে পেঁপে চাষ। কারণ হিসেবে কৃষকরা মনে করছে পেঁপে নানাভাবে আবাদ করা যায়।

একক ফসল হিসেবেও চাষে ফলন ও দামে কোন প্রভাব পড়ে না। অল্প সময়ে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ আসে। রোগ জীবাণু কম হওয়ায় ফলন হয় বেশি। কেজি দামে বিক্রির সুযোগ থাকায় ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনাটাও কমে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে সবজি হিসেবে বাজারে ভালো দাম আসে। সব দিক চিন্তা করে লাল মাটির মধুপুর গড় অঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল জাতের থাই টপলেডি পেঁপে কৃষকের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা দখল করে দিচ্ছে অধিক লাভ। সবুজ হলুদ রংয়ের পেঁপেতে কৃষকরা হচ্ছে লাল। রঙিন স্বাবলম্বী জীবনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি ও কৃষক এমনটাই জানিয়েছে কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, চলছি মৌসুমে ১ হাজার ৫৬ হেক্টর জমি পেঁপে চাষ হয়েছে।

উন্নত হাতের পেঁপে এ সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকাকে বেগবান করছে। লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সরজমিনে মধুপুরের ২৫ মাইল বাজার থেকে দোখলা সড়ক দিয়ে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে আনারসের বাগানে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলে থাকা পেপে দৃশ্য।

গাছাবাড়ি বিট অফিসের সামনেই বড় বড় পেঁপের বাগান। সবজু গাছে গাছে গোড়া থেকে আগ পর্যন্ত পেঁপে আর পেঁপে।

গাছাবাড়ি গ্রামের গিয়ে কথা আব্দুল হক নামের এক কৃষকের সাথে। গাছাবাড়ি গ্রামের আব্দুল হক (৫০) জানান, সে এ বছর ৩২ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছে। সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছে।

পেঁপে পরিপক্ব হয়ে গেছে। শুধু বাগান থেকেই পেঁপেই বিক্রি করেছে প্রায় কোটি টাকার উপরে। সামনে বছর আনারস বিক্রি করবে। বাড়তি ফসল থেকে এ বছর কোটি টাকার উপরে পেয়েছে পেঁপে থেকেই।

আরেক গ্রামের শাজাহান আলী, এ বছর ২৪ বিঘা জমিতে আনারসের সাথে সাথী হিসেবে আদা পেঁপে কচু চাষ করেছে। মফিজ উদ্দিন (৪৮) সে তার ৩২ বিঘা জমিতে মিশ্র ফসল চাষ করেছে। আনারসের সাথে পেঁপে চাষ করেছে। তাদের মতো মধুপুরের অনেক কৃষক বাণিজ্যিক ভাবে পেঁপে চাষ করেছে। আবহাওয়া ও ফলন দাম ভালো পাচ্ছে। তাদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

সামনে এগিয়ে গেলেই দেখা যায় ২৫ মাইল- শোলাকুড়ি পাকা সড়কের পাশে বসে কয়েকজন শ্রমিক বসে বসে খবরের কাগজ দিয়ে পাকা পেপে মোড়াচ্ছ। পাশেই বাগান। কেউ কেউ বাগান থেকে খাচি দিয়ে পাকা পেঁপে নিয়ে আসছে। কেউ কেটে দিচ্ছে। হাগুড়াকুড়ি গ্রামের শাকিব (৩০) জানালেন তারা পাইকার মোফাজ্জলের কেনা পেঁপের বাগানে নিয়মতি কাজ করে। নটাকুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম (৩২) জানান, খবরের কাগজ দিয়ে মোড়ালে পেঁপেগুলো ভালো থাকে, নষ্ট হয় না। শোলাকুড়ি গ্রামের মফিজুল জানালেন,তাদের ব্যাপারী প্রায় চার কোটি টাকার পেঁপের বাগান কিনেছে।এভাবে পেপারে মুড়িয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের

বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছে। ৬০-৯০ টাকা কেজি দামে মোকামে বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানালেন তারা।

তবে শুধু এখানেই নয় এমন দৃশ্য এখন মধুপুর গড়ের বিভিন্ন গ্রামেই দেখা যায়।

কৃষক পাইকার ব্যাপারী ফড়িয়া ট্রাক শ্রমিক লেবারদের ব্যস্ত সময় পার করছে বলেও জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।

লাল মাটির গড় অঞ্চল কৃষি ফসল চাষের জন্য উর্বর এলাকা। বর্তমান ব্যাগিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফলে পেঁপে নষ্ট হয় না, ভালো ফলন ও সুফল পাচ্ছে কৃষকরা।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, মধুপুরের মাটি ও আবহাওয়া সব ফসলের জন্যই বিশেষ উপযোগী। আনারস কলার পাশাপাশি অর্থকরী ফসলের মধ্যে পেঁপে এগিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশির কারণে সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তিনি বলেন, উন্নত জাতের টপ লেডি, রেড লেডি, সুইট লেডি আবাদের ফলে আর্থিক লাভ বেশি পাচ্ছে। এ বছর ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার পেঁপের বাণিজ্যের সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।


আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ে মধ্যে ন্যায়বিচার পাবো : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। ছবি : বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষী জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, দ্রুত সময়ে ন্যায়বিচার পাবো।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম আজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন সরকারের যে নৃশংসতা ছাত্র-জনতার ওপর হয়েছিল, অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম দাবি ছিল এই বিচার প্রক্রিয়া যাতে যথাসময়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়। আমরা আশা করছি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার পাবো। শেখ হাসিনার এ মামলায় হয়তো আমি শেষ সাক্ষী। আমার সাক্ষ্য নেওয়ার পর এ মামলা রায়ের দিকে যাবে।’

এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, তবে শুধু এই মামলাটিই নয়, সারা দেশে আরও নির্যাতন, নিপিড়ন, গুম-খুন হয়েছিল তার অনেক মামলা রয়েছে। ফলে এ বিচারপ্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ সময় চলবে। নির্বাচনের পরেও যাতে এ বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়, বিচারপ্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে, সেই প্রতিশ্রুতির জন্য একটা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছি। সকল রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে যেন সেই প্রতিশ্রুতি থাকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।

এদিকে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় আজকে নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে না। আশা করি আগামীকাল নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করবেন।

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার ৪৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।


অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের সরসপুর গ্রামের ‘ছায়া নীড় সেবাকেন্দ্রে’ আশ্রিত ঠিকানাহীন এক বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনকে আসামি হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পারভীন আক্তার। ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন প্রায় আট মাস ধরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও কাপাসিয়া থানার ওসির কাছে ধর্ণা দিয়েও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না।

পারভীন আক্তার জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ সন্ধ্যার পর তিনি ওই প্রতিবন্ধী যুবতীকে রাতের ভাত রান্না হয়েছে কিনা তা দেখতে পার্শ্ববর্তী রান্নাঘরে পাঠানোর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সে ঘরে ফিরে আসেনি। এ সময় তিনি রান্নাঘরে গিয়ে তাকে খুঁজে পাননি। এ সময় আশপাশের বাসা বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে খোজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাননি। দুদিন পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী তরুল গ্রামের কাজলের স্ত্রী নামে একজন ফোনে তাকে ওই মেয়েটি তাদের বাড়িতে আছে বলে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তার প্রতিবেশি দেবর ও তার আশ্রমে কর্মরত দিনমজুর মোশারফ হোসেনকে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে আশ্রমে নিয়ে আসার জন্য পাঠান।

পরে আশ্রমে নিয়ে এসে নিখোঁজের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই মেয়েটি জানায়, তরুল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সিয়াম (১৯), নাজিমউদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৫) ও কামাল হোসেনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩০) ওই রাতে তাকে রান্নাঘরের পাশ থেকে জোর করে তুলে নিয়ে সিয়ামদের বাড়ির পাশে একটি ভাঙ্গা ঘরে নিয়ে যায় এবং দুই রাতে তারা তিনজন পালাক্রমে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে তিনি কাপাসিয়া থানায় ওই তিনজনের নামে একটি মামলা করলে পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।

কিন্তু পরে ওই প্রতিবন্ধী তার আশ্রমের এক সাথীর কাছে জানায়, মোশারফ হোসেন আশ্রমে নিয়ে আসার সময় এক জঙ্গলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিল। এবং বিষয়টি প্রকাশ হলে তাকে মেরেও ফেলার হুমকি দিয়েছিল। এ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি থানা পলিশকে মোশারফের নাম আসামিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করলেও তার কথা আমলে নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে হাজির হয়ে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় ফোন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অভিযুক্ত মোশারফ পার্শ্ববর্তী কড়িহাতা ইউনিয়নের পাকিয়াব গ্রামের বাসিন্দা।

অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনের মোবাইল নম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ মামলাটি তিনি কাপাসিয়া থানায় যোগদানের অনেক আগেই হয়েছে। একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ মামলার বাদি যদি আর কোনো আসামি অর্ন্তভুক্ত করার আবেদন জানান, তবে আইনগতভাবে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশের অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য আসবে না: শরীফুল আলম

বক্তব্য রাখছেন শরীফুল আলম। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশের অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য আসবে না। তাই অতি দ্রুত দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ভৈরব কেবি মডেল পাইলট হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন।

এ সময় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভৈরব বাজার থেকে মেন্দিপুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলকে ইকোনমিক জোন ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, মাদক ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার প্রবীণ ও যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।

এছাড়া ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ জাহিদুল হক জাবেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.এইচ.এম আজিমুল হক, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চেম্বার সদস্য ও ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল কোরআন তেলাওয়াত। স্বাগত বক্তব্য, বিগত সভার প্রস্তাব পাঠ ও অনুমোদন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাৎসরিক নিরীক্ষিত অডিট রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন, সম্মানিত চেম্বার সদস্যবৃন্দদের সাধারণ আলোচনা ও উন্নয়ন প্রস্তাব, চেম্বারের সকল সম্মানিত সদস্যদের সম্মানে সম্মাননা স্মারক প্রদান, সেরা করদাতা, নারী উদোক্তাদের সম্মাননা প্রদান ও মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে ।


কাপ্তাই ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বন্যহাতির তাণ্ডব

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বন্যহাতির তাণ্ডব। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে গত এক মাস ধরে অবস্থান করছে একদল বন্যহাতি। ১৭ সদস্যের এই হাতির দলে সম্প্রতি দুটি নতুন শাবকেরও জন্ম হয়েছে। তবে এদের তাণ্ডবে বাগানের শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, চা গাছপালা এবং বাগানের ভেতরের কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাগানের ২ নম্বর সেকশনে বসবাসকারী বহু শ্রমিক ইতিমধ্যেই বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এ সময় তিনি, তার স্ত্রী ও সন্তানরা কোনোমতে ঘর থেকে পালিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে প্রাণে রক্ষা পান।

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার গভীর রাতে হাতির গর্জন শুনতে পাই। হঠাৎ একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা করে ভেতরে ঢুকতে চাইছিল। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে ঘরের পেছন দিয়ে বের হয়ে বোটে উঠে এপারে চলে আসি।’

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা জানান, প্রায় প্রতিদিনই হাতির দল বাগানে হানা দিচ্ছে। কখনো পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ করেই আবার বাগানে নেমে এসে গাছপালা ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে শ্রমিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, ‘হাতিরা শান্তিপ্রিয় প্রাণী। তারা নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। বাদ্য-বাজনা, বাঁশির সুর কিংবা উচ্চ শব্দ তারা সহ্য করতে পারে না। গত সোমবার শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশি বাজানো হলে হাতির দল চা বাগান ছেড়ে গভীর বাঁশবনে চলে যায়।’

এ বিষয়ে কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, ‘দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাই আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।’


সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভারতীয় নাগরিক!

সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় নাগরিক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী। এছাড়াও জালিয়াতি করে শ্বশুরের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ডে দেখা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লি, ৪৬৭ এলাকার নির্মল কুমারের ছেলে। সুখরঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১। তিনি পাবনা পৌরসভাধীন রাধানগর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয়ে বাংলাদেশে সরকারি চাকরি করছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলাদেশের সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের চাকরি করছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী ভারতের নাগরিক, সেখানে তার জমিজমা ও ফ্লাট বাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতে থাকেন। ছোট ছেলে বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণের জন্য তাকে পাবনায় রেখে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। মাঝেমধ্যে ১৫দিন/১ মাস ছুটি নিয়ে তারা ভারতে যান।

সুখ রঞ্জনের শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতি করে তিনি নিজের নামে করে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আমার বাবা শহরের মুরগি পট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। বর্তমানে আমি সেই বাড়িতে বসবাস করি। বাবা মারা যাওয়ার পর ওই জমি আমার মায়ের নামে লিজ দেয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে কিছু না জানিয়ে শুধুমাত্র আমার বোনকে (সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর স্ত্রী) একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। যিনি বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতেই বসবাস করেন।এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছে। আমার বাড়িতে বসবাস করে এখন আমাকেই বাড়ি ছাড়া করতে চায়’।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতোমধ্যেই আমি সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবো এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারব।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, এইসব কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা ওর ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা আসেনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি সব ডকুমেন্টস আছে।


শ্রীমঙ্গলে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষে চমক, কৃষকের মুখে হাসি

শ্রীমঙ্গলে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজেশ ভৌমিক, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ছাত্রাবট গ্রামে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া, যা এলাকায় সাড়া ফেলেছে। লালতীর সীড লিমিটেডের অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় এই লাউ জাতটি চাষ করে তিনি অল্প সময়ে লাভবান হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকসহ অনেক কৃষক ‘ডায়না’ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

জাহাঙ্গীর মিয়া ও কৃষক গনি মিয়া যৌথভাবে প্রথমবারের মতো ৫৬ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষ করেন। বর্তমানে তাদের মাঠে সারি সারি গাছে ঝুলছে অগণিত লাউ। চারা লাগানোর মাত্র ৫০-৫৫ দিনের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের গড় ওজন ২থেকে ৩কেজি। এ জাতের লাউ টানা তিন মাস ধরে ফল দিতে সক্ষম।

চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে মাঠ থেকে লাউ বিক্রি করা হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। প্রথম পর্যায়ে তারা প্রায় ৫২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। কৃষকরা আশা করছেন, এই মৌসুমে লাখ টাকার বেশি আয় করতে সক্ষম হবেন।

সফল কৃষক গনি মিয়া বলেন, ‘লাউ চাষে তেমন খরচ নেই। অন্য ফসলের তুলনায় লাউ চাষে খরচ কম লাগে। বর্তমানে বাজারে লাউয়ের চাহিদা অনেক। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ক্রেতারা সরাসরি বাগান থেকে লাউ কিনে নিচ্ছেন। উৎপাদন শেষ হলে আমরা টমেটো ও শিম চাষ করবো। সঠিক যত্নের মাধ্যমে ভালো লাভবান হওয়া সম্ভব।’

স্থানীয় কৃষক বিকাশ সরকার জানান, ‘জাহাঙ্গীর মিয়া ও গনি মিয়া খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চাষে সফল হয়েছেন। তাদের সাফল্য দেখে আমাদেরও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখন এই জাতের লাউ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ বীজের উৎস প্রতিষ্ঠান লালতীর সিড লিমিটেড। ডিভিশন ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘হাইব্রিড ‘ডায়না’ অধিক ফলনশীল, আকর্ষণীয় এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর জন্য উপযোগী। এটি বোতল আকৃতির ও উজ্জ্বল সবুজ রঙের। উচ্চ তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা সহনশীল, লম্বায় ৩০-৩৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। কৃষকদের জন্য এটি অত্যন্ত লাভজনক এবং সারা বছর চাষ করা যায়। তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীর ও গনি মিয়ার সফলতা দেখেই অন্যান্য কৃষকরাও অনাবাদি জমি কাজে লাগিয়ে লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে শ্রীমঙ্গলসহ সারাদেশে সবজি চাষের প্রসার ঘটবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এবার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ৫২ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করা হচ্ছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি লাউ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আমরা নিয়মিত কৃষকদের জমি পরিদর্শন করছি এবং কীটনাশক ব্যবস্থাপনা, নতুন জাতের প্রচার ও সম্প্রসারণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি। ধানচাষের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’


উত্তরাঞ্চলের মানুষের আতঙ্ক বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়ক

বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়ক। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি

দেশের উত্তরাঞ্চলগামী ট্রাক, বাস ও প্রাইভেটকার প্রতিদিনই ছুটে চলে নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক ধরে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সড়ক এখন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। নাটোরের বনপাড়া থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির পাশাপাশি স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই।

ব্যস্ততম এই মহাসড়কে রয়েছে একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। সরু সড়ক, যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিংই দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি তাদের।

২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর মহাসড়কের রেজুর মোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাকে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৩৮ জন। এরপর থেকে প্রতি বছরই বেড়েছে মৃত্যুর মিছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সড়কে ঘটেছে ১১৪টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে নিহত হয়েছেন ৩৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১২৪ জন।

বনপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, প্রতিদিনই দুর্ঘটনার খবর শুনতে হয়। আমরা দোকানে বসেও আতঙ্কে থাকি, কখন কী ঘটে যায়।’

চলনবিল এলাকার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, বেপরোয়া গতি আর ওভারটেকিংই মূল সমস্যা। এভাবে দুর্ঘটনা বাড়তে থাকলে মানুষের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়বে।

স্থানীয় কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন কলেজে আসা-যাওয়ার সময় ভয় নিয়ে পথ পাড়ি দিতে হয়। রাস্তা যদি দ্রুত চার লেনে উন্নীত হয়, আমরা অনেকটা নিশ্চিন্তে চলাচল করতে পারব।

অন্যদিকে কয়েকজন চালক জানান, অতিরিক্ত গতি ও অদক্ষ চালকদের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে চলছে। অনেক সময় সরু অংশে একসঙ্গে একাধিক গাড়ি ওভারটেক করতে গিয়ে সংঘর্ষ হয়।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান সরকার জানান, মহাসড়কটি চার লেনে সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমে যাবে। এলাকাবাসীর দাবি এই পথে চলাচলকারীদের একমাত্র দাবি—ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সম্প্রসারণ, ওভারস্পিড ও ওভারটেকিং নিয়ন্ত্রণ এবং মহাসড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নীত করা।


banner close