শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
১ ভাদ্র ১৪৩২
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর

মা-বাবা হারানো ২১ শিশু বড় হচ্ছে অরকা হোমসে

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০৯
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা
প্রকাশিত
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা
প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০৮

আজ ২৪ এপ্রিল, সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে একটি ৯ তলা ভবন ধসে ঘটেছিল বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অন্যতম বড় শিল্প দুর্ঘটনা। বিশ্ব ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা বলা হয় একে। সে দিনের সেই ভয়াল দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়েছিল ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিককে। আর সে দিন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়। তাদের মধ্যে অনেকে বেঁচে থাকলেও আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণে বাধ্য হয়েছেন।

লোমহর্ষক এই ট্র্যাজেডির শিকার অনেকেরই সন্তান নিঃসঙ্গতা আর অর্থাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পথের সারথি হলেও অত্যন্ত মমতার আশ্রয়ে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বেড়ে উঠছে ২১ জন শিশু, কিশোর-কিশোরী। যাদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউবা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে আজীবনের জন্য। এ ছাড়াও আরও ৩২ জন এতিম-অসহায় শিশু-কিশোর-কিশোরীর ঠিকানা হয়েছে অরকা হোমস। বাবা-মা হারানো বিভিন্ন জেলার এসব শিশুর লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনসহ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে জেলার অরকা হোমস নামের প্রতিষ্ঠানটি।

অরকা হোমসের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায়। পরে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে অরকা-হোমস প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেছে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (অরকা)।

অরকা হোমস কার্যালয় সূত্র জানায়, ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলাবিশিষ্ট দুটি এবং পরবর্তীতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ৫২ জন এতিম অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরী আশ্রয় পেয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন মেয়ে, ৩১ জন ছেলে। তাদের মধ্যে ২১ জন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ঘটনায় এতিম হওয়া শিশু। এখানে থেকেই তারা লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৯ জন মেয়ে, ১২ জন ছেলে।

এদের মধ্যে ২০১৪ সালে অরকা হোমস যখন গাইবান্ধায় প্রতিষ্ঠিত হয় তখন রানা প্লাজা ধসে মাকে হারিয়ে ভর্তি হয় সব থেকে কম বয়সি শিশু সৌরভ। তখন সৌরভের বয়স মাত্র ছয় বছর। সেই সৌরভের বয়স এখন ১৭। সে বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সৌরভের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বলমুইপাড়া গ্রামে। ছয় বছরে বয়সে আসা শিশু সৌরভের তখনকার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবই জেনে গেছে সৌরভ। প্রতিবছরই পড়ে পত্রিকার পাতায়, দেখে টেলিভিশনে।


একান্ত সাক্ষাৎকারে দৈনিক বাংলার গাইবান্ধার এ প্রতিবেদককে সৌরভ জানায়, তারা বাবা বাদশা মিয়া কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম পোশাক শ্রমিকের কাজ নেন। তার মা ওই ভবনের তিন তলায় পোশাক শ্রমিকের অপারেটর ছিলেন।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তিনি। এরপর এতিম সৌরভের জায়গা হয় অরকা হোমসে।

সৌরভ জানায়, ‘শুনেছি আমার বয়স যখন ছয় বছর; তখন মা রানা প্লাজায় মারা যান। ধ্বংসযজ্ঞের ১৬ দিন পর মাকে খুঁজে পান বাবা-ভাই ও আমার স্বজনরা। মায়ের দেহ নাকি তখন গলে পচে গেছে, কিন্তু তার গলায় থাকা পোশাক কারখানার আইডি কার্ড দেখে আমার মাকে চিনতে পারেন আমার বাবা।

এ ছাড়া সৌরভ আরও জানায়, শুনেছি মায়ের উপার্জনে আমাদের পরিবার চলত। মা চলে যাওয়ার পর বাবা নিরূপায় হয়ে আমাকে এখানে রেখে যান। আমার ভাই বড় হয়ে বিয়ে করে সংসার করছেন। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এখন আমার খোঁজ-খবর রাখছেন দাদা। এখানে আমি ভালো আছি।

মাকে মনে পড়ে কি না জানতে চাইলে সৌরভ বলে, ‘সব সয়ে গেছে’। ছয় বছরের শিশু থাকতেই মাকে হারিয়েছি তো। এখন খুব একটা কষ্ট হয় না। তবে প্রতিবছর এই দিনটি আসলে সাংবাদিক এবং বিভিন্নভাবে মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। তখন মনে হয় আমারও একজন মা ছিলেন।

সৌরভ জানায়, বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আর কাজ করতে গিয়ে আমার মা জীবন দিয়েছেন। একটা মাহারা শিশুর আশ্রয় হয়েছে অরকা হোমসে। আমিও এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অসহায়-এতিম ছেলে-মেয়েরা বিনা টাকায় খেয়ে-থেকে পড়ালেখা করতে পারবে।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ম্যানেজার মিল্লাত মণ্ডল প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই অরকা হোমসে আছেন। সৌরভের বিষয়ে জানতে চাইলে স্মৃতিচারণ করে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ২০১৪ সালে সৌরভ যখন এখানে আসে তখন ওর বয়স ছয় বছর। তখন এটি প্রসারিত ছিল না, ছিল না জনবলও। ও (সৌরভ) তখন বিছানায় পেশাব করত, আমি পরিষ্কার করতাম। এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে আসার পর প্রায় টানা এক মাস সৌরভ প্রায় সার্বক্ষণিক মায়ের জন্য, বাড়ির জন্য কেঁদেছে। ওকে আমরা সবাই অনেক স্নেহে মানুষ করেছি। কারণ সব থেকে ছোট এবং কম বয়সের ছিল সৌরভ।

এ সময় তিনি আরও বলেন, মাহারা সৌরভ অনেক ভদ্র এবং নম্র। সৌরভ প্রচণ্ড মেধাবী। সে এখানে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসে প্রথম ছিল। আর এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে সৌরভ। এ সময় সৌরভের আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে প্রাণ ভরে দোয়া করেন- সৌরভ জীবনে অনেক বড় হোক।

শুধু সৌরভই নয়, আল-আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, বীথিসহ হোমসে আশ্রয় হওয়া সবারই আছে প্রায় একই রকম শোকগাথা ইতিহাস। তবে, এতিম-অসহায় এই শিশুদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করেই চলেছে অরকা হোমস।

প্রকৃতির ছায়াঘেরা অরকা হোমসের ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের ভেতরেই ভবন, স্কুল, চারতলা ভবনের একটিতে থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিনতলার অপর ভবনটিতে। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে। আছে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা। এ ছাড়া তাদের দেখভালের জন্য রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, একজন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, নারী কেয়ারটেকারসহ আটজন। তাদের জন্য রয়েছে ২২ জন গৃহশিক্ষক। রয়েছেন শরীরচর্চার শিক্ষকও। ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। নামাজের জন্য ক্যাম্পাসেই রয়েছে পাকা মসজিদ।

গাইবান্ধা অরকা হোমসের পরিচালক মো. জাহিদুল হক জানান, ২০১৪ সালে মাত্র ৮টি শিশু নিয়ে অরকা হোমসের যাত্রা শুরু হয়। এখন এখানে শিশু রয়েছে ৫২টি। তার মধ্যে ২১টি শিমু রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বাবা-মা হারানো; বাকিরা এতিম অসহায়। তাদের পড়াশোনা থেকে সবকিছুই আমরা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এই ২১ জন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানকার ৩১ শিশু-কিশোরের কেউ মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে, কেউ কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হচ্ছে, আবার কারও কর্মসংস্থান হওয়ায় অরকা হোমস ছেড়ে চলেও গেছে।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে থাকা অরকার সদস্যদের আর্থিক সহায়তায়ই মূলত হোমসের ব্যয় মেটানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুদান প্রদানে বিজিএমইএ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ হোমস-সংশ্লিষ্টদের।


কুড়িগ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে হত্যার বিচার ও আসামী গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।

উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।

পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।

এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


ভালুকায় ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।

এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।


নওগাঁয় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।

স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।

বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।


সিলেটে পাথর লুটের ঘটনায় মামলা: ২ হাজার আসামির সবাই অজ্ঞাত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট প্রতিনিধি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।

এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র‌্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।

সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।


মেহেরপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ ইমান ডাকাত গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি

মেহেরপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মোঃ ইমান আলী ওরফে ইমান ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।

গ্রেপ্তার ইমান আলী শিবপুর গ্রামের মৃত আমির শেখের ছেলে। সেনা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল মোনাখালী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তার বাড়ি ঘেরাও করে। পরে তল্লাশির সময় তার কাছ থেকে মার্কিন তৈরি একটি ৭.৬৫ মি.মি. পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

ইমান আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, বিস্ফোরক ও নাশকতাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


খুলনায় কৃষি ব্যাংকের লকার ভেঙে ‘১৬ লাখ টাকা’ লুট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনায় কৃষি ব্যাংকের পূর্ব রূপসা শাখা থেকে লকার ভেঙে প্রায় ১৬ লাখ টাকা লুট করার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে এ লুটের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ব্যাংক বন্ধ ছিল। রাতে পাহারাদার ছিল না। এরপর গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকের কলাপসিবল গেটের তালা কাটা দেখে চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি বুঝে রূপসা থানায় জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

স্থানীয়রা বলছেন, ব্যাংকের ওই শাখায় প্রায় ২০ লাখ টাকা ছিল। সেখান থেকে ১৬ লাখ টাকা গায়েব হয়ে গেছে।

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা ব্যাংক থেকে এবং আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতরাতে (বৃহস্পতিবার) ব্যাংকে কোনো প্রহরী ছিল না। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’


ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, দোয়ারায় নিহত ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি 

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার বিকালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন— লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা বীরাঙ্গনা কাঁকন বিবির মেয়ের জামাই আব্দুল মতিন ও একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আকবর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিকালে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নিলে আব্দুল মতিন ও আকবর গুরুতর আহত হন। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান, সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন, তাদের দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।


জন্মাষ্টমী: হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আজ (শনিবার) বন্ধ রয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসাধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।

হিলি কাস্টমস সিএঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফেরদৌস রহমান জানান, আজ শনিবার সারা দেশে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শুভ জন্মাষ্টমী উদযাপন করছে। দিনটি উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় এই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব ধরণের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামীকাল (রবিবার) থেকে পুনরায় বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীরা বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচল করতে পারবেন।’

এ বিষয়ে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দীন জানান, সরকারি ছুটির কারণে আজ কাস্টমসের সব বিভাগ বন্ধ থাকবে। তবে আগামীকাল থেকে কাস্টমস অফিস খোলাসহ পণ্য আমদানি-রপ্তানিও পুনরায় শুরু হবে।


বাজারে আগুন, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সব ধরনের সবজির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে, যার প্রভাব গতকাল শুক্রবারও রাজধানীর বাজারে দেখা গেছে। কোনো সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে নাই। চলতি মাসের শুরুতে ডিমের দাম কম ছিল। কিন্তু এখন ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৩০ টাকা বেড়েছে। মাস দেড়েক আগে দাম কম থাকলেও বাজারে চড়া চালের দামও। পাশাপাশি গত দুই সপ্তাহ ধরেই দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আদা ও এলাচের। বাড়তি দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত।

সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভালো মানের গোল বেগুন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম দ্বিগুণ, বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকা কেজিতে। লম্বা জাতের বেগুনের দাম ১৬০-১৮০ টাকা এবং সাদা জাতের বেগুন কেজিপ্রতি ১২০-১৪০ টাকা।

ঝিঙা, ধুন্দল, শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে; ঢেঁড়স, পটোল, কাকরোল কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। ৮০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে শুধু পেঁপে—৪০ টাকা কেজি। প্রতি পিস জালি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, লাউ ১০০-১৫০ টাকা।

বাজারে বরবটি প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুমুখী ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেড়েছে কাঁচামরিচেও—কেজিপ্রতি ২২০-২৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, সবজির এমন নাগালবিহীন দামে খরচ মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। খরচের ধাক্কা সামলাতে পরিমাণ কমিয়ে কিনতে হচ্ছে সবজি।

উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা একজন কর্তা বলেন, ‘বেগুনের দাম শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়লাম। এক সপ্তাহে বেগুনের দাম কেজিতে ১০০ টাকা কী করে বাড়ে! বেগুন না কিনে পেঁপে কিনে বাসায় যাচ্ছি।’

আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সাধারণত এক কেজির নিচে কোনো সবজি কেনা হয় না। আজকে তিন রকমের সবজি আধা কেজি করে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। সবজির দাম শুনে মানতেই পারছি না। গত এক বছরের মধ্যে এবারই সবজির দাম এত বেশি।’

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এতে করে অনেক ক্রেতাই সবজি না কিনে ফিরে যাচ্ছেন, অনেকে কিনছেন আধা কেজি বা ২৫০ গ্রাম করে। সব মিলিয়ে তাদেরও মুনাফা কম হচ্ছে।

রাজধানীর কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার ভোরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির প্রতিটির দাম ছিল বাড়তি। মৌসুমের এ সময়ে ফলন কম হওয়ায় সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন বিক্রেতারা।

কাওরান বাজার সবজির আড়তের বিক্রেতা নূর ইসলাম জানান, পাল্লাপ্রতি সবজির দাম বেড়েছে ১০০-২০০ টাকা। এতে করে প্রতি কেজি সবজিতে খরচ বাড়ছে। অক্টোবর মাস আসলে সবজির দাম আবার কমে আসবে বলে জানান তিনি।

আরেক ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, মার্চ থেকে মাঠে সবজির পরিমাণ কমতে থাকলেও চাহিদা আগের মতোই থাকে। তাই সবজির দাম বাড়ে এ সময়ে। এ ছাড়া রাস্তায় গত বছরের তুলনায় এ বছর বাড়তি খরচ বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শুধু সবজি নয়, উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজও। গত সপ্তাহের ৭৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকায়। পাইকারি বাজারে পাল্লাপ্রতি পেঁয়াজের দাম ৪০০-৪৩০ টাকা।

এর বাইরে দাম বেড়েছে ডিমের। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। সাদা ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৩০-১৩৫ টাকা।

স্থানভেদে সোনালি এবং ফার্মের মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। সোনালি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৪০ টাকায়, ফার্ম ১৭০-১৮৫ টাকা। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস—কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা; খাসির মাংস কেজিপ্রতি ১১০০-১২০০ টাকা।

বাজারে দাম বেড়েছে প্রতিটি মাছের; কেজিতে ৫০-২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। কাঁচকি মাছের দাম গত সপ্তাহে ৫০০ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে ৬০০ টাকা। চাপিলা মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা। পোয়া মাছ সাইজভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকায়। শিং-মাগুর কেজিপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা।

বড় মাছের মধ্যে রুই কেজিপ্রতি ৩৮০-৪২০ টাকা, কাতল ৪০০-৪৮০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-২৮০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২৫০ টাকা, নদীর পাঙাশ ৮০০-১০০০ টাকা, বোয়াল ৮০০-১২০০ টাকা, আঁড় মাছ ১ হাজার টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়েছে ইলিশ মাছেরও। এক কেজির নিচে মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়, ছোট সাইজের ইলিশ ১২০০-১৬০০ টাকা। এক কেজির ওপরে ইলিশের দাম ২০০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজি এবং পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে বাজারের প্রতিটি পণ্যের দামে। দাম কমাতে সিন্ডিকেটের কারসাজি, পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি এবং বাজার মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেন তারা।


‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায় আর খাওয়ার অভাবে’

স্ত্রী-দুই সন্তানকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীর পবা উপজেলায় একটি বাড়িতে দুই সন্তানসহ এক দম্পতির লাশ পাওয়া গেছে। পারিলা ইউনিয়নের বামনশিকড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। | বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) গভীর রাত থেকে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভোরের মধ্যে যেকোনো সময় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত ৪ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশে পাওয়া একটি চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’

ঘটনা জানাজানি হয় শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে। তারপর দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই এলাকার বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম (৩৫), স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮) এবং তাদের ছেলে মাহিন (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (২)। মাহিন খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। আর মিনারুল কৃষি কাজ করতেন।

পরিবারের সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনারুল আগে একসময় জুয়া খেলতেন। পরে ছেড়ে দেন। এ জন্য তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন। দেড় বছর আগে বাবা রুস্তম আলী ধানিজমি বিক্রি করে ঋণের একটা অংশ দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপরও তার দুই লাখ টাকা ঋণ ছিল। এই ঋণের জন্য প্রতি সপ্তাহে তাকে ২ হাজার ৭০০ টাকার বেশি কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু কিস্তি চালাতে পারছিলেন না মিনারুল। বাবাকে মিনারুল আর কিছু জমি বিক্রি করে পুরো টাকা পরিশোধ করতে বলেছিলেন। কিন্তু বাবা জমি বিক্রি করতে চাননি। এ নিয়ে মা–বাবার সঙ্গে মিনারুল কথা বলা বন্ধ করে দেন। এমনকি ছেলেমেয়েদেরও মিশতে দিতেন না।

চিঠিতে লেখা হয়, ‘আমি মিয়ারুল যেসব লেখা লেখব, সব আমার নিজের কথা। লিখে যাচ্ছি এই কারণে আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাব। এই মরার জন্য কারো দোষ নাই। কারণ লেখে না গেলে বাংলার পুলিশ কাকে না কাকে ফাসা টাকা খাবে। আমি মিনারুল প্রথমে আমার বোকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলাতে ফাঁস দিয়ে মরেছি। আমাদের ৪ জনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার বো বাচ্চা না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না যায়। আমাদের ৪ জনকে কাপন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা টাকা যেন না দেয়। এটা আমার কসম। ইতি মিনারুল, আসসালামু আলাইকুম।’

অপর একটি চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘আমি নিজ হাতে সবাকে মারলাম। এই কারণে যে আমি একা যদি মরে যাই,আমার বো, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। আমরা মরে গেল ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো হলো। কারো কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’

এই দুটি চিঠি লাশের পাশে পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার পর সোয়া ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মিনারুল স্ত্রী-সন্তানদের শ্বাস রোধ করে হত্যা করে নিজে ‘আত্মহত্যা’করেছেন। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় মামলা হবে। তিনি বলেন, একটা চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে তিনি ঋণগ্রস্ত ও আর্থিক অনটনের কথা লেখেছেন। সিআইডির ফরেনসিক টিম ও পিবিআই এসেছে। তারা ক্রাইম সিনের আলামতগুলো সংগ্রহ করবে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।

স্থানীয় পারিলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ আলী বলেন, মিনারুল ঋণগ্রস্ত ছিলেন। তাকে সপ্তাহে ২ হাজার ৭০০ টাকার বেশি কিস্তি দিতে হতো। তিন দিন আগে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে চালসহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনেছেন। বর্ষাকালে কাজকর্ম ছিল না। এ জন্য চাপে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকালে ঘটনা জানার পর দ্রুত এখানে আসি। পরে পুলিশকে জানাই। সে আগে জুয়া খেলত, পরে আর খেলেনি। ঋণের একটি টাকা মিনারুলের বাবা পরিশোধ করেছেন। এ জন্য পাঁচ কাটা জমিও বিক্রি করেছিলেন। আরেকটি ঋণ টানছিল মিনারুল।’

মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী বলেন, ‘ছেলের কিছু ঋণ ছিল। সেটা খুব বেশি না। নতুন করে কোনো ঋণ আছে কি না, তা জানি না। আগে যেটা ঋণ করেছিল, সেটা ধানিজমি বিক্রি করে দিয়েছি। পরে আর কবে কবে ঋণ করেছিল, সেটা জানি না।’

মিনারুলের মা আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘কোনো গন্ডগোল ছিল না। ভরণপোষণ আমিই দিই। ধারদেনা ছিল, মাটি (জমি) বিক্রি করে আমি দিয়েছি। আবার নতুন করে ধার করেছে। আজ সকালে মাছ কিনে আনলে ডাকাডাকি করি। পরে দেখি ছেলে ঝুলে আছে। নাতিকে আমিই মানুষ করেছি। আমার ওখানেই থাকত। কীভাবে কী হয়ে গেল।’ একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।


নিখোঁজের ৫ দিন পর ভৈরবে মেঘনা নদী থেকে যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

বাজিতপুর থেকে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ভৈরবে মেঘনা নদী থেকে রাকিব (২৭) নামের এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভৈরবের লুন্দিয়া এলাকায় নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভৈরব নৌ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১০ আগস্ট বিকেলে রাকিব বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে একই উপজেলার কুকরাই গ্রামের বন্ধু শাওনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়ায় নিহতের ভাই রিয়াজ মিয়া বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বাজিতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে ভৈরবের মেঘনায় লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাকে সনাক্ত করি।

এ বিষয়ে ভৈরব নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, লুন্দিয়া এলাকা থেকে রাকিবের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা নদীতে ফেলে দিয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।


ভৈরবে হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়া (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে সিপিসি-২, র‌্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প।

সে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার কালিপুর মধ্যপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে।

শুক্রবার দুপুরের দিকে শহরের কালিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা যায়, সিপিসি-২, র‌্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প এর আভিযানিক দল নরসিংদী জেলার বেলাবো থানা এলাকায় সিএনজি ডাকাতির পর সিএনজি ড্রাইভারকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় নরসিংদীর বেলাবো থানার মামলা নং-০১(০১)১৫, ধারা-৩৯৬/২০১ এর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে শুক্রবার শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মুহিত কবির জানান, হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


কুড়িগ্রামে পানি কমলেও ভাঙন আতংকে তিস্তা পাড়ের মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। ফলে কিছুটা স্বস্থিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা। শুক্রবার হঠাৎ করে দুধকুমার নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কমতে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপূত্রনদসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি।

এদিকে পানি কমলেও তিস্তা নদী অববাহিকায় ৪টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পরেছে। জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বজরা ইউনিয়নের কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হওয়ায় লোকজন বাড়ি সড়াতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সর্দার জানান, ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু না করায় চলতি সপ্তাহে ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকীতে রয়েছে ১০টি বাড়িসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এরমধ্যে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।

ওই এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোন সময় দুটি স্কুল নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।

সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী আমার ২ বিঘা জমি খেয়ে গেছে। আমার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে আমরা নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।

এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা জানান, আমি ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৩২০টি শুকনা খাবার প্যাকেট রয়েছে। এছাড়াও জিআর’র চাহিদা প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে দুধকুমার নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। তবে শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে পানি কমলেও জলাবদ্ধতার কারণে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের কাস ইউনিয়নের ফান্দের চরে ৪ থেকে ৫টি নীচু বাড়িতে পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জনিয়েছে। একইভাবে ওই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নীচু এলাকায় অবস্থিত দুটি বাড়িতে পানি উঠছে বলে স্থানীয় যুবক আশরাফুল ও কাদের জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু নিচু বাড়ি জলবন্দী রয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও জানান, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙন বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন সরকার জানান, প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের কাছে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মে.টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। নগদ টাকা রয়েছে ১৪লাখ। তালিকা পেলেই আমরা সাথে সাথে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে দিবো। তারপরও প্রতি উপজেলায় ৩২০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার সরবরাহ করা আছে।


banner close