বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
২৮ কার্তিক ১৪৩২

কতজন রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছেন, জানতে চান হাইকোর্ট

হাইকোর্ট। ফাইল ছবি
আপডেটেড
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:০০

কক্সবাজারে বসবাসরত কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ৬ জুনের ভেতর কক্সবাজারের ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ তালিকা আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়নে ভোটার হওয়া ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার কত রোহিঙ্গা নাগরিকত্ব পেয়ে ভোটার হয়েছেন তার তালিকা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই সঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হয় রিটে। এ ছাড়া ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ঘোষিত তফসিলে নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ বন্ধ বা স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

স্থানীয় ভোটার মো. হামিদুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া এ রিট করেন।

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৩৮ জন রোহিঙ্গা। তাদের তালিকাযুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। এ ছাড়া একই ইউনিয়নে সাড়ে তিন শ রোহিঙ্গা নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।

বিষয়:

গাইবান্ধায় সাঁতার সাফল্যে সনদ পেল ৩০ ক্ষুদে সাঁতারু

সনদ গ্রহণ করছেন কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বিনতে বিল্লাহ।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া ৩০ জন শিক্ষার্থী সফলভাবে সাঁতার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে সনদ পেয়েছে। বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।

ক্ষুদে সাঁতারুদের হাতে এই সনদ তুলে দেন সাঁতার প্রশিক্ষণ-২০২৫ এর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথী ও স্কাউটের দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সুধীরচন্দ্র বর্মণ। এর আগে টানা ১০ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু হয় গত ২ নভেম্বর। প্রশিক্ষণে গাইবান্ধা কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুবিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এরমধ্যে গাইবান্ধা কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ জন, গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ জন, মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ জন ও জুবিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর অঞ্চলের স্কাউটের যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান, ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এহসানুল কবির, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ, জেলা স্কাউটের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সম্পাদক মালেক সরকার, সদর উপজেলা স্কাউট সম্পাদক রেজাউল করিম, কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরিন খাতুন, সাঁতার প্রশিক্ষক নাছিমা বেগম ইতি, সহযোগী আশিকুর রহমান আশিক, সোহানুর রহমান সোহানসহ অভিভাবকরা।

কোরআন তিলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে অভিনন্দন জানান এবং সাঁতারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘সাঁতার শুধু একটি খেলা নয়, এটি জীবন বাঁচানোর দক্ষতা। ছোটবেলা থেকেই এই প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও সাহস জোগাবে।’

জেলা শহরের জেলা পরিষদের বড় আয়তনের পুকুরে টানা ৯ দিন এই সাঁতার প্রশিক্ষণ দেন জেলা স্কাউট সভপতি সাইফুল ইসলাম, নারী প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন নাছিমা বেগম ইতি ও তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন আশিক ও সোহান।


টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সভা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তাহিরপুর প্রতিনিধি

‎টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

‎‎টাঙ্গুয়ার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংগঠনের নেতারা, হাওর পাড়ের গ্রামের লোকজন ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ মতবিনিময় সভাটি করছে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন। সভায় উপস্থিত বক্তারা টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেগুলো সমস্যা চিহ্নিত করেছেন তা হলো টাঙ্গুয়ার হাওরের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য এবং নৌকার মাঝি ও কমিউনিটি গার্ডদের হাওরে মাছ, পাখি মারাসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা বন্ধ করতে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরের ভেতরে ছোট ছোট বিলগুলো মাছ আহরণের জন্য খাস কালেকশন বন্ধ করতে হবে। ইলেকট্রনিক শর্ট দিয়ে মাছ মারা বন্ধ করতে হবে। বিষ টোপ দিয়ে পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। সংরক্ষিত এলাকায় হাস, গরু মহিষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে হবে। পলিথিন ব্যাগ ও প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। গাছকাটা বন্ধ করতে হবে এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে হবে। বক্তারা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের ৮২গ্রামের ৪১ টি সংগঠনে ১২৫০ জন সদস্য আছে টাঙ্গুয়ার হাওরের রক্ষনাবেক্ষণে কাজ করছে এবং এই হাওরের ৫২ টা বিলের মধ্যে ১২ অভয়ারণ্য। ‎

‎এ সময় বক্তব্য রাখেন, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক, তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরুখ আলম শান্তনু

তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন, ২ নং দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মোরাদ, টাঙ্গুয়ার হাওর গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ করির, এনজিও সংস্থা সিএনআরএস এর সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বে থাকা সাইফুল চৌধুরীর প্রমুখ।


বাঁশির সুরেই জীবন চলে কৃষ্ণ দাসের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বাঁশিতে সুরের মূর্ছনা। সুরে সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সবুজ ছায়ায় ঘেরা চা বাগানে বাঁশিতে সুর তোলেন কৃষ্ণ দাস। ৪৫ বছর বয়সী এ তরুণ একজন বাঁশিপ্রেমিক। শখের বসে শিখেছেন বাঁশি বাজানো। সুরের জাদুতে তাকে ঘিরে ভিড়। কারও প্রিয় গানের সুর তোলার আবদার। বাঁশির সুরেই জীবন চলে কৃষ্ণ দাসের। মন মাতানো শ্রুতিমধুর সুর-ছন্দে বাজানো বাঁশের বাঁশি প্রাচীন একটি ঐতিহ্যবাহী বাদ্য যন্ত্র। যা রাজদরবার থেকে শুরু করে সর্বজনীন বিনোদনপ্রেমী বাঙালির সুস্থ বিনোদন ধারার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। এ বাঁশি দিয়ে মরমি সুরের দোলায় গানের বাণীকে ফুটিয়ে তোলা যায়।

বাঁশিপ্রেমিক কৃষ্ণ দাস এর বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রী গোবীন্ধপুর। পরিবারের আর্থিক অসংগতিতে অভাব মাথায় নিয়েই যেন জন্ম নিয়েছেন কৃষ্ণ দাস। দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য কৈশোর থেকেই বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কিন্তু পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচেনি। ছোট থেকেই বাঁশির প্রতি দুর্বলতা কৃষ্ণ দাসের।

উপজেলার মাধবপুর লেকের দেখা যায়, বাঁশি দিয়ে মুখে তুলছেন নানা সুর। বাঁশির সুরেলা সুর লেকে আসা পর্যটকদের বিমোহিত করে তুলে। এ সময় সুরপাগল নানা বয়সি মানুষ হুমড়ি খেয়ে বাঁশির সুর শুনেন।

স্থানীয়রা জানান, শখের বসে শেখা বাঁশি ঘিরেই এখন তাঁর জীবন। পাড়ার আড্ডায়, চায়ের দোকানে, বিয়ে বাড়ি, লেকের পারে বা যেকোনো অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজান কৃষ্ণ দাস। এতে খুশি হয়ে অনেকেই তাঁকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। বিশেষ করে পর্যটন এলাকাতে চোখে পড়ে তাঁকে। গভীর রাতে যখন সে বাঁশি বাজায় তখন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। জীবন সংগ্রামে হৃদয় অন্যদের উদারহণ। তাকে নিয়ে গর্ব করাই যায়।’

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মহিমা পাল জানান, ‘অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করতে গেলে বংশীবাদক হিসেবে কদর থাকে না। এ জন্য বাঁশিকেই বেছে নেন জীবিকা হিসেবে। বাঁশিতে সুরের মূর্ছনা। বাঁশির সুর যেন সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। পর্যটন এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় শুনা যায় হৃদয় কাঁপানো সুরের মূর্ছনার। শখের বসে শিখেছিলেন বাঁশি বাজানো, আর বর্তমানে সেই বাঁশির সুরেই তার জীবন চলে।’

এ বিষয়ে কৃষ্ণ দাস জানান, ‘আমার জন্ম ভারতের কলকাতায়। সেখানেই বাঁশি বাজানো শেখা। মা বাবা মারা যাওয়ার পর সেই ছোটকালে বাংলাদেশে চলে আসি। বর্তমানে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে বসবাস করছি। ছেলে ও মেয়ে নিয়ে ভালোই চললে এখন আর চলতে পারিনা। আগে বাশিঁর সুর শোনে মানুষ টাকা দিত, এখন সুর শুনলেও টাকা দেয়না। তারপরও বাঁশি বাজানো আমার বন্ধ হবে না। আত্মার সঙ্গে এই সুর মিশে গেছে, তবে এই বাঁশির সুরে এখন আর জীবন যেন চলছে না।’ তিনি বলেন, মানুষ বাশের বাঁশির সুর শুনতে চায়। তারা মন দিয়ে শোনে এটাই আমার তৃপ্তি। যাওয়ার বেলায় ১০-২০ টাকা দেয়,সেই টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে।’

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘বাঁশির সুর উপমহাদেশের সংগীতে একটি অনন্য সংযোজন। এক সময়ের জনজীবনে বেশ চর্চা থাকলেও আধুনিক সভ্যতার যুগে বাঁশির সুর হারিয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় বাঙালি সংঙ্কৃতির অনুসঙ্গ সুরের মোহনা ছড়ানো এই বাঁশি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার আরও আন্তরিক হওয়া উচিৎ। বংশীবাদক কৃষ্ণদাসকে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।


বদলগাছী হর্টিকালচারের গাছের চারায় স্বপ্ন বুনছেন উদ্যোক্তারা

*কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন *২৭ জাতের চারা পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তারা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর বদলগাছী হর্টিকালচার সেন্টার থেকে উন্নত জাতের ফলদ, মসলা ও শোভাবর্ধনকারী গাছের চারা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তারা। বর্তমানে এই কেন্দ্র থেকে অন্তত ২৭ জাতের বিভিন্ন চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। উন্নতমানের চারা সুলভ মূল্যে পাওয়া যাওয়ায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন প্রান্তিক কৃষি উদ্যোক্তারা। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে রাজস্ব আয়। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় অনেক উদ্যোক্তা পর্যাপ্ত চারা পাচ্ছেন না। উৎপাদন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি চারার উৎপাদন ও বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নওগাঁসহ উত্তরাঞ্চল কৃষি উদ্ভাবনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ধান ও সবজির জন্য পরিচিত কৃষিপ্রধান জেলা নওগাঁ এখন আমের জেলা হিসেবেও সুপরিচিত। জেলার বদলগাছী উপজেলার জিধিরপুর গ্রামে ২০১৪ সালে প্রায় সাড়ে চার একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয় বদলগাছী হর্টিকালচার সেন্টার। শুরুতে উৎপাদন কম হলেও গুণগত মান ভালো থাকায় দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় কেন্দ্রটি। এখানে আম, লিচু, কদবেল, আঠাবিহীন কাঁঠাল, পেয়ারা, করমচাসহ অন্তত ২৭ জাতের চারা পাওয়া যায়। প্রতিটি চারার দাম ২ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে থাকায় উদ্যোক্তারা সহজেই মানসম্মত চারা সংগ্রহ করতে পারছেন।

হর্টিকালচার সেন্টারের চারাগুলো উন্নত জাতের হওয়ায় কৃষকরা পাচ্ছেন উচ্চ ফলন, ভালো পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধী গাছ। এতে উৎপাদন খরচ কমছে, ফলন বাড়ছে এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

জেলার মান্দা উপজেলার পাজরভাঙা গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা অপূর্ব সাহা বলেন, বাড়ির পাশে ছোট জায়গায় ফলের বাগান করার ইচ্ছে থেকেই বদলগাছী হর্টিকালচার সেন্টার থেকে আম্রপালি ও বারি-৪ জাতের ৮৫টি চারা কিনেছি। প্রতিটির দাম ৬০ টাকা, যা বাইরের নার্সারির তুলনায় ৪০-৫০ টাকা কম। দূরত্ব সত্ত্বেও উন্নতমানের চারা পেয়ে আমি সন্তুষ্ট।

উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা আজমল হুদা জানান, চাহিদা বাড়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ফল ও শোভাবর্ধনকারী গাছের ওপর কাজ করা হচ্ছে। উন্নত মাতৃগাছ থেকে কাটিং ও কলমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হয়, যা গুণগত মান নিশ্চিত করে।

হর্টিকালচার সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (এলআর) কৃষিবিদ মো. নাছরুল মিল্লাত বলেন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের সহযোগিতার মাধ্যমে পতিত ও অনাবাদী জমিকে ফলবাগানের আওতায় আনা হচ্ছে। উন্নত জাতের চারা সুলভ মূল্যে সরবরাহের ফলে উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন। তবে জমির পরিমাণ কম হওয়ায় উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। অন্তত ১০ একর জমি হলে উৎপাদন ও রাজস্ব উভয়ই আরও বৃদ্ধি পেত।”

হর্টিকালচার সেন্টারের তথ্যানুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এক লাখ পিস চারা বিক্রির মাধ্যমে ৭ লাখ টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের বছরগুলোতে রাজস্ব আয় ছিল—

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬ লাখ ৯৯ টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২৫ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬২ টাকা।

এছাড়া চারা উৎপাদন ও পরিচর্যার কাজে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা মজুরিতে চারজন শ্রমিকের স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

হর্টিকালচার সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নাছরুল মিল্লাত আরও জানান, গত তিন বছরে জেলায় ২০টি আনারস, ৫০টি মসলা, ১০০ বস্তা আদা এবং আমসহ বিভিন্ন প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে আমবাগানে আনারস চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা সম্ভাবনাময় ফসল হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে।


ডিএমপি কমিশনার যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করুন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকাবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, অপরিচিত কাউকে আশ্রয় দেবেন না। নিজের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করুন। কোন দুর্বৃত্তের হাতে চলে যাচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখবেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অন্যের মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাড়া নিয়ে কোনো দুর্বৃত্ত যেন নাশকতা না করতে পারে, সেজন্য যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করে নেবেন। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে জানাবেন।
শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল ১-১১ নভেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এছাড়া গত দুই দিনে রাজধানীতে ৯টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। এসব ঘটনায় গত দুই দিনে ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ দুটি দল ও তাদের অঙ্গ-সংগঠন অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য ১৪টি ঝটিকা মিছিল করেছে। ঢাকার বাইরে থেকে লোকজন ঢাকায় এসে টাকার বিনিময়ে মিছিল করে আবার ঢাকার বাইরে চলে যায়। এসব ঘটনায় অক্টোবর থেকে ৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, হেলমেট ও মাস্ক পরে ভোর বেলায় কিংবা ব্যস্ত সময়ে ককটেল বিস্ফোরণ করা হচ্ছে। ককটেল বিস্ফোরণ করানোর জন্য অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
আগামী ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোনো আশঙ্কা নেই ও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ঢাকাবাসী তৎপরতা রুখে দেবে। ওইদিন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় মোতায়েন থাকবেন।


শখের বসে শেখা বাঁশি কৃষ্ণের জীবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহউদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বাঁশিতে সুরের মূর্ছনা। সুরে সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সবুজ ছায়ায় ঘেরা চা বাগানে বাঁশিতে সুর তোলেন কৃষ্ণ দাস। ৪৫ বছর বয়সী এ তরুণ একজন বাঁশিপ্রেমিক। শখের বসে শিখেছেন বাঁশি বাজানো। সুরের জাদুতে তাকে ঘিরে ভিড়। কারও প্রিয় গানের সুর তোলার আবদার। বাঁশির সুরেই জীবন চলে কৃষ্ণ দাসের। মন মাতানো শ্রুতিমধুর সুর-ছন্দে বাজানো বাঁশের বাঁশি প্রাচীন একটি ঐতিহ্যবাহী বাদ্য যন্ত্র। যা রাজদরবার থেকে শুরু করে সর্বজনীন বিনোদনপ্রেমী বাঙালির সুস্থ বিনোদন ধারার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। এ বাঁশি দিয়ে মরমি সুরের দোলায় গানের বাণীকে ফুটিয়ে তোলা যায়।

বাঁশিপ্রেমিক কৃষ্ণ দাস এর বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রী গোবীন্ধপুর। পরিবারের আর্থিক অসংগতিতে অভাব মাথায় নিয়েই যেন জন্ম নিয়েছেন কৃষ্ণ দাস। দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য কৈশোর থেকেই বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কিন্তু পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচেনি। ছোট থেকেই বাঁশির প্রতি দুর্বলতা কৃষ্ণ দাসের।

উপজেলার মাধবপুর লেকের দেখা যায়, বাঁশি দিয়ে মুখে তুলছেন নানা সুর। বাঁশির সুরেলা সুর লেকে আসা পর্যটকদের বিমোহিত করে তুলে। এ সময় সুরপাগল নানা বয়সি মানুষ হুমড়ি খেয়ে বাঁশির সুর শুনেন।

স্থানীয়রা জানান, শখের বসে শেখা বাঁশি ঘিরেই এখন তাঁর জীবন। পাড়ার আড্ডায়, চায়ের দোকানে, বিয়ে বাড়ি, লেকের পারে বা যেকোনো অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজান কৃষ্ণ দাস। এতে খুশি হয়ে অনেকেই তাঁকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। বিশেষ করে পর্যটন এলাকাতে চোখে পড়ে তাঁকে। গভীর রাতে যখন সে বাঁশি বাজায় তখন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। জীবন সংগ্রামে হৃদয় অন্যদের উদারহণ। তাকে নিয়ে গর্ব করাই যায়।’

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মহিমা পাল জানান, ‘অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করতে গেলে বংশীবাদক হিসেবে কদর থাকে না। এ জন্য বাঁশিকেই বেছে নেন জীবিকা হিসেবে। বাঁশিতে সুরের মূর্ছনা। বাঁশির সুর যেন সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। পর্যটন এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় শুনা যায় হৃদয় কাঁপানো সুরের মূর্ছনার। শখের বসে শিখেছিলেন বাঁশি বাজানো, আর বর্তমানে সেই বাঁশির সুরেই তার জীবন চলে।’

এ বিষয়ে কৃষ্ণ দাস জানান, ‘আমার জন্ম ভারতের কলকাতায়। সেখানেই বাঁশি বাজানো শেখা। মা বাবা মারা যাওয়ার পর সেই ছোটকালে বাংলাদেশে চলে আসি। বর্তমানে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে বসবাস করছি। ছেলে ও মেয়ে নিয়ে ভালোই চললে এখন আর চলতে পারিনা। আগে বাশিঁর সুর শোনে মানুষ টাকা দিত, এখন সুর শুনলেও টাকা দেয়না। তারপরও বাঁশি বাজানো আমার বন্ধ হবে না। আত্মার সঙ্গে এই সুর মিশে গেছে, তবে এই বাঁশির সুরে এখন আর জীবন যেন চলছে না।’

তিনি বলেন, মানুষ বাশের বাঁশির সুর শুনতে চায়। তারা মন দিয়ে শোনে এটাই আমার তৃপ্তি। যাওয়ার বেলায় ১০-২০ টাকা দেয়,সেই টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে।’

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘বাঁশির সুর উপমহাদেশের সংগীতে একটি অনন্য সংযোজন। এক সময়ের জনজীবনে বেশ চর্চা থাকলেও আধুনিক সভ্যতার যুগে বাঁশির সুর হারিয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় বাঙালি সংঙ্কৃতির অনুসঙ্গ সুরের মোহনা ছড়ানো এই বাঁশি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার আরও আন্তরিক হওয়া উচিৎ। বংশীবাদক কৃষ্ণদাসকে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।’


সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল ৩১ গাড়ি নিলামে অবিক্রিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে আমদানি করা বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রি না হওয়ায় সেগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে বুধবার (১২ নভেম্বর) এনবিআর একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে।

এনবিআর বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাবেক সংসদ সদস্যদের বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে কি না, জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস নির্দেশনা চেয়েছিল।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৩১টি গাড়ির মোট প্রদেয় শুল্ক-করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। উচ্চমূল্যের এসব গাড়ির এককপ্রতি প্রদেয় শুল্ক-করের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং এককপ্রতি প্রদেয় সর্বনিম্ন শুল্ক-করের পরিমাণ ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।

এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী, সমুদয় শুল্ক-কর পরিশোধপূর্বক আমদানি করা ৩১টি গাড়ি আমদানিকারকরা খালাস করেননি বিধায় কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৯৪(৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। কোনো নিলামকারী গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য বিড না করায় গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি না করে জনস্বার্থে যথাযথ ব্যবহারের বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অতি মূল্যবান গাড়িগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের জন্য বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট গাড়ির আমদানিকারক ভবিষ্যতে প্রযোজ্য সমুদয় শুল্ক ও কর পরিশোধ করে গাড়িগুলো আইনি পদ্ধতিতে খালাস করতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ এবং শুল্কায়ন সংক্রান্ত আইন, বিধি ও আদেশ মেনে খালাস করতে পারবেন।

যদি প্রযোজ্য শুল্ক-কর আদায়পূর্বক গাড়িগুলো ভবিষ্যতে আমদানিকারকের অনুকূলে খালাস করা হয়, তবে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সেই গাড়িগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেবে।


অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৯

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর মাসে দেশে ৪৬৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন। এ সময়ে আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৮০ জন। বুধবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অক্টোবরে রেলপথে ৫২টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। তথ্যমতে, নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় নিহত ১২ জন ও ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৩২টি দুর্ঘটনায় ৫২৮ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩১০ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৩৭ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৬.২৪ শতাংশ, নিহতের ৩৭.৫২ শতাংশ ও আহতের ১০.৭০ শতাংশ।

এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ১২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ বিভাগে ২০টি, এতে ২৭ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৩৯ জন চালক, ১১৯ জন পথচারী, ২৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৮ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন শিক্ষক, ৯৭ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ১ জন আইনজীবী, ২ জন সাংবাদিক, প্রকোশলী ৩ জন এবং ১৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন র্যাব সদস্য, ১ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন আইনজীবী, ৩ জন প্রকোশলী, ১৩৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৯৯ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩৫ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষক ও ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।

এ সময় সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত ৭৭২টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৫.৯০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১.২৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৬.০৬ শতাংশ বাস, ১২.৮০ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪.২৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮.৪১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৪.৭৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৮৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.১৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯.৬১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৪.৬৯ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং ০.৬৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষ ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবরে সংঘঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪২.৪৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩.৬৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৭.২৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.৬৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.২৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৬৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।


সাঁথিয়া সরকারি কলেজে আন্তঃবিভাগ গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি

সাঁথিয়া সরকারি কলেজে আন্তঃবিভাগ গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর,২০২৫ খ্রি.) থেকে শুরু হয়েছে।

খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আহসান হাবিব এবং সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম শওকত আলী খান। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।

উদ্বোধনী খেলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ১–০ গোলে মানবিক একাদশ শ্রেণি দলকে পরাজিত করে। দ্বিতীয় ম্যাচে মানবিক দ্বাদশ শ্রেণি ২–১ গোলে সমাজকর্ম বিভাগকে হারিয়ে জয় অর্জন করে। উৎসবমুখর পরিবেশে ফুটবলপ্রেমি শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল গোটা কলেজ প্রাঙ্গণ।


অধিক লাভের আশায় খিরা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

খিরা চাষ ও উৎপাদনে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা দেশের অন্যতম উৎসস্থল। এ এলাকায় প্রতিবছর প্রায় ৪শত হেক্টর জমিতে খিরার আবাদ হয়। উপজেলার উত্তর এলাকায় খিরার জন্য বেশ সমৃদ্ধ। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নে কম বেশি খিরার আবাদ হয়ে থাকে। এখানকার উৎপাদিত খিরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। মূলত ঢাকা,চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় এখানকার খিরা। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,অকাল বৃষ্টির কারণে অনেক নিচু জমি প্লাবিত হওয়ায় খিরার ফলন এ বছর কিছুটা কম হবে।

খিরা চাষে তিন মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। স্বপ্ল সময়ে অধিক ফলনে আর্থিকভাবে কৃষক হয় লাভবান। তবে বর্তমানে খিরা উৎপাদন সামগ্রীর দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তা আছে কৃষকদের মাঝে। তবে দিনদিন বাড়ছে খিরার আবাদ। উপজেলার অন্যতম পাইকারী খিরার বাজার দাউদকান্দি সদরের পুরাতন ফেরীঘাটে অবস্থিত। খিরার মৌসুমে বাজারটি সন্ধ্যার পর জমজমাট হয়ে ওঠে। কৃষক, আড়তদার আর পাইকারদের পদচারণায় বাজারটি হয়ে উঠে সরগরম।

সরেজমিনে দেখা যায়, জমিতে কৃষকরা পার করছেন ব্যস্ত সময় । কেউ মাটি নরম করছেন কেউ মনোযোগী গাছের পরিচর্যায় । কৃষক মো. সোলায়মান কয়েক বছর ধরে সফলভাবে খিরা চাষ করছেন। এবছরও তিনি সাত কানি জমিতে খিরা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত বছরের মতো এবারও ভালো ফলনের আশা করছি। আগের বছরের চেয়ে এবার বেশি খিরা তুলতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপজেলার উত্তর ইউনিয়েনের শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, প্রতিনিয়ত বাড়ছে কীটনাশক, সার,বীজ ও শ্রমিকের মূল্য। এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। ফলে কমছে লাভের হার। যদিও নানা সমস্যা আছে তবু তিনি মনে করেন সঠিক পরিচর্যা করলে খিরা চাষ করলে ভালভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিন পর ফসল উঠা শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিগার সুলতানা যায়যায়দিনকে বলেন, প্রতিবছর দাউদকান্দির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়ে থাকে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির কারণে দাউদকান্দির উত্তরাঞ্চলের অনেক জমি এখনো পানির নিচে রয়েছে। ফলে এবার কিছুটা কম চাষাবাদ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোগবালাই দমন ও ফলন বৃদ্ধির উপযুক্ত দিকনির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে, যাতে কৃষকরা সহজেই লাভজনক ফলন পেতে পারেন।


কুষ্টিয়ায় বাউল গুরু শফি মণ্ডলের খেলাফত দিবসে ‘সুধাসিন্ধু ভাব আশ্রমে’ আধ্যাত্মিক সাধুসঙ্গ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর থেকে আতিয়ার রহমান

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ ছমিলপাড়া এলাকায় প্রখ্যাত বাউল শিল্পী ফকির শফি মণ্ডলের ৩য় খেলাফত দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনব্যাপী সাধুসঙ্গ ও গ্রামীণ মেলা।

গতকাল সন্ধায় ' ভক্তি সংগীত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী এই সাধুসঙ্গের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। সারারাত চলবে বাউল সাধক লালন সাঁইয়ের গান, বাণী ও দর্শনের আসর। বুধবার সকালে বাল্যসেবা এবং দুপুরে পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে একদিনের এ আয়োজন।

খেলাফত দিবসকে ঘিরে হোসেনাবাদ হিসনা নদীর তীরে অবস্থিত ফকির শফি মণ্ডলের ‘সুধাসিন্ধু ভাব আশ্রম’ প্রাঙ্গণে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মেলায় স্থানীয় কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প, গ্রামীণ খেলনা ও নানা লোকজ পণ্যের পাশা পাশি নানা ধরনের খাবারের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা।

সাধুসঙ্গে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত অসংখ্য বাউল, ফকির ও ভক্তজন আশ্রমে সমবেত হন। অনুষ্ঠানস্থলজুড়ে সৃষ্টি হয় এক আধ্যাত্মিক ও উৎসবমুখর পরিবেশ।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা থেকে আগত ভক্ত সাব্বির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “গুরুর প্রতিটি খেলাফত দিবসে আমি আসি। মূলত এখানে গুরু শির্ষের ভাব বিনিময়ের একটি আসর বসে। সবার সাথে দেখা হয়, ভালো লাগে।”

এদিকে, বাইরে মেলার দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা দুই দিন আগেই দোকান বসিয়েছেন। প্রতি বছর এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। ব্যবসায়ীরাও জানান, বেচাকেনা ভালো হচ্ছে এবং উৎসবের আমেজে তারা আনন্দিত।

এ বিষয়ে সাধুসঙ্গের আয়োজক কমিটির সদস্য ও ফকির শফি মণ্ডলের জামাতা মুকুল হোসেন বলেন, “২৪ ঘণ্টাব্যাপী এই সাধুসঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তবৃন্দ এসেছেন। অনেকে রাতেই পৌঁছাবেন। সন্ধ্যার ভক্তির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে, আর বুধবার দুপুরে পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি হবে।”

এদিকে, সাধুসঙ্গ ও ‘সুধাসিন্ধু ভাব আশ্রম’ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত গ্রামীণ মেলার নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে দৌলতপুর থানা পুলিশ।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, “মেলা এলাকা ও আশেপাশে আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসছেন, তাই যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়— সে বিষয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”

শফি মণ্ডল বাংলাদেশের খ্যাতনামা বাউল ও সুফি সংগীতশিল্পী। তিনি ১৯৫২ সালের ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আহাদ আলী মণ্ডল ছিলেন ইমাম। ছোটবেলা থেকেই সংগীতে আগ্রহী শফি মণ্ডল ১৯৭৯ সালে ভারতের সাধন মুখার্জির কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম নেন এবং পরে ফকির সুলতান শাহের দীক্ষায় লালন সাঁইয়ের পথ অনুসরণ করেন।

১৯৯৫ সালে তার প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় এবং ১৯৯৮ সালে “লালনের দেশে” তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। বর্তমানে তিনি তরুণদের বাউল সংগীত শিক্ষা দিচ্ছেন এবং লালন দর্শন প্রচারে নিবেদিত। ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর তিনি খিলাফত গ্রহণ করেন।


নেত্রকোনায় নিরাপদ খাদ্য ও ভেজালবিরোধী প্রতিরোধ অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম, নেত্রকোনা

নেত্রকোনায় নিরাপদ খাদ্য বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শহরের পৌর জয়ের বাজার ও মেছুয়া বাজারে এই অভিযান পরিচালনা করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। অভিযানে মনিটরিং সেলের সদস্যরা বিভিন্ন খাদ্য দোকান, মসলার মিল, মিষ্টির দোকানসহ খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে পরিদর্শন করেন। এ সময় ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচারপত্র ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। অভিযানের সময় কোর্টের সামনে অবস্থিত ‘জয় গুরু দই ঘরসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে খাদ্যপণ্যের মান যাচাইয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিছু পণ্যে অনুমোদিত রঙ, লেবেলবিহীন মোড়ক এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য শনাক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্মকর্তারা। জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, খাদ্য ভেজালে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি সকল স্তরের মানুষকে ভেজাল খাদ্য বর্জন ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানান। অভিযানে দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এ বি চৌধুরী নাদিম, কবি ও সাংবাদিক সৈয়দ সময় উপস্থিত থেকে কার্যক্রমটি পর্যবেক্ষণ করেন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের এই নিয়মিত অভিযানকে স্থানীয়রা স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, এমন উদ্যোগ বাজারে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্যের প্রবণতা কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।


নওগাঁয় জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ২ কি.মি. সড়কের কাজ বন্ধ

আঞ্চলিক মহাসড়কে বেড়েছে জনদুর্ভোগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সবুজ হোসেন, নওগাঁ

জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে সড়কের পীচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট-বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ। আগামী এক বছরেও রাস্তার কাজ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধনে করে সড়ক উন্নয়নের কাজ করার দাবি স্থানীয়দের।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন ৩টি আঞ্চলিক ও ৩টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারিতে ৭ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয়। কাজের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যেখানে ব্যায় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা। কাজটি করছেন ‘জামিল ইকবাল- মাহফুজ খান লিমিটেড জয়েন ভেঞ্চার’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের সময় শেষ হয়েছে আরো প্রায় দুই মাস আগে। যেখানে ৭ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কের কাজ এখনো বাঁকী। সদর উপজেলার ঠ্যাংভাঙ্গা মোড়, পাহাড়পুর বাজার ও র্কীত্তিপুর বাজার সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ কিলোমিটার। এ তিনটি জায়গায় সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট-বড় খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় ভাঙা সড়কে ছোট-বড় যানবাহন চলছে হেলেদুলে। এতে মাঝেমধ্যে ঘটছে দূর্ঘটনা। বর্ষায় খান্দাখন্দে বৃষ্টির জমে থাকা পানি, আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি। এতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। ভাঙা সড়কে চলাচলে প্রায় ভ্যান ও বাসের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। এতে আয়ের একটি অংশ চলে যাচ্ছে যন্ত্রাংশ মেরামতে।

পালশা গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারণে নিয়মিত ভ্যানের যন্ত্রাংশ বিশেষ করে বিয়ারিং নষ্ট এবং টায়ার কেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এতে সপ্তাহে অন্তত ২০০-২৫০ টাকা ভ্যান মেরামতে খরচ হয়। যেখানে আয়ের একটি অংশ চলে যাচ্ছে।

মাহাবুব আলম নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন- মোটরসাইকেলের সামনে মেয়েকে বসিয়ে নিয়ে নওগাঁ শহরের দিকে আসছিলাম। কীর্ত্তিপুর বাজারে মোটরসাইকেলের সামনের চাকা গর্তে নেমে যাওয়ায় উল্টে পড়ে যায়। এতে মেয়ের পায়ে বাম পায়ের হাঁটুতে ব্যাথা হয়। আর আমার ডান পায়ের হাটু জখম হয়। বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ১০০ টাকার মতো খরচ হয়।

কীর্ত্তীপুর বাজারে সড়কের পাশে দোকানী হাসান আলী বলেন, সড়কের এমন বেহাল দশা যে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বর্ষার সময় সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে পথচারীরা বুঝতে না পারায় যানবাহন নামিয়ে দিয়ে উল্টে পড়ে যায়। আবার শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর ধুলাবালি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশিতে ভুগতে হচ্ছে। আমরা দ্রুত এ সড়ক সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানাই।

প্রজেক্ট ম্যানেজার রিফাত হাসান বলেন- জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সড়ক উন্নয়ন কাজ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি সড়ক সংস্কার ও পানি ছিটানোয় বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। এতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বন্ধ আছে সড়ক উন্নয়ন কাজ। জমি অধিগ্রহনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখছেন। তবে অধিগ্রহণ কাজ শেষ হলেই সড়কের কাজ শুরু হবে।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহেল রানা বলেন, জমি অধিগ্রহণে ঠ্যাংভাঙ্গা মোড়ে ৮৫০ টি আবেদনের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫০টির শুনানি হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪টি চেক বিতরণ করা হয়েছে। আরো ১২টি চেক প্রকিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া পাহাড়পুর বাজার ও কীর্ত্তীপুর বাজারে জমি অধিগ্রহণের আবেদন নেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির কাজ করা হচ্ছে। তবে আগামী এক বছরের কাজ শেষ হতে পারে বলে জানান তিনি।


banner close